মোজা, পাগড়ি, টুপি, ব্যান্ডেজ এবং হিজাবের উপর মাসেহ করা

মহান রাব্বুল আ’লামীন ইসলামকে কঠিন করে আমাদের উপর চাপিয়ে দেননি। আল্লাহ পবিত্র তাই তিনি তাঁর বান্দাদেরকে পবিত্র করতে চান। তাই তিনি তাঁর রাসুল (স) এর মাধ্যমে আমাদেরকে সহজ করে তাঁর দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন। “আমি আপনার জন্য সহজ শরীয়ত সহজ করে দেব। ”[সূরা-আ’লা-৮]। ওজুও এ থেকে ব্যতিক্রম নয়। পবিত্র থাকার একটা শর্ত হল ওজু। বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ওজুর মুল বিধান অর্থাৎ ফরজগুলো আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। যেমন:

১) মোজার উপর মাসেহ করা:

মোজার উপর মাসেহ করার সময়সীমা: ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) ... সুরাইয়া ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে এলাম মোযার ওপর মাসেহ করার মাস’আলা জিজ্ঞেস করতো তিনি বললেন, আবূ তালিবের পূত্র (আলী (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে এ মাসআলা জিজ্ঞেস কর। কারণ সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সফর করত। অতঃপর আমরা তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসাফিরের জন্য তিন দিন রাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং মুকীমের জন্য একদিন এক রাত। [সহীহ মুসলিম-৫৩০, ৫৩২]

মোজা মাসেহ করার নিয়ম: পায়ের পাতার উপর অর্থাৎ পায়ের উপরের অংশে শুধু মাসেহ করতে হবে। নিচের অংশে মাসেহ মাসেহ করা যাবেনা। হাতের মধ্যে হালকা একটু পানি নিয়ে পায়ের আঙ্গুলগুলোর অগ্রভাগ থেকে টেনে গোড়ালি পর্যন্ত এসে শেষ করতে হবে। মুহাম্মাদ ইবনুস সাব্বাহ .... মুগীরা ইবনু শোবা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মোজার উপর মাসেহ্ করতেন। এই ছাদীছের রাবী মুহাম্মাদ ছড়া অন্যদের বর্ণনায় মোজার উপরের অংশে মাসেহ্ করার কথা উল্লেখ আছে। [আবু দাউদ-১৬১, মান হাসান, সহীহ মুসলিম-৫১৩] মুহাম্মাদ ইবনুল আলা ..... আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ধর্মের মাপকাঠি যদি রায়ের (বিবেক-বিবেচনা) উপর নির্ভরশীল হত, তবে মোজার উপরের অংশে মাসেহ্ না-করে নিম্নাংশে মাসেহ্ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হত। রাবী আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর মোজার উপরের অংশে মাসেহ্ করতে দেখেছি। [সুনানে আবু দাউদ-১৬২, ১৬৪ মান সহীহ]

ওযুর ৪ ফরজের মধ্যে ১টি হল দুই পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত ধৌত করা। মুকিম হোক বা মুসাফির যেকোন অবস্থায়ই হোক না কেন উভয় অবস্থাই মোজার উপর মাসেহ করা বৈধ। তবে মোজা পরার আগে ওযু করে নিতে হবে। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। আমি তাঁর মোজাদ্বয় খুলতে চাইলে তিনি বললেনঃ ওদুটো থাকুক, আমি পবিত্র অবস্থায় ওদু’টি পরেছিলাম। (এই বলে) তিনি তার ওপর মাসেহ করলেন। [সহীহ বুখারী-১৮২] ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) .... মুগীর ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–কে উযূ (ওজু/ওযু/অযু) করিয়েছি। তিনি উযূর সময় মোজা দু’টির উপর মাসেহ করলেন ও সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।” [সহীহ বুখারী-২০২, ২০৩, ২০৪, ২০৫, ২০৬] মোজার উপর মাসেহ করার আরো অসংখ্য সহীহ হাদিস আছে। চামড়ার মোজা এবং সুতি কাপড়ের মোজার দুটোর উপরই মাসেহ করা জায়েয। মোজা পড়তে হবে দুপায়ের টাকনু পর্যন্ত। চামড়ার মোজার উপর মাসেহ করার ব্যাপারে কোন ইকতেলাফ নেই, কিন্তু সুতি কাপড়ের মোজার উপর ইকতেলাফ আছে। ইমাম আবু হানিফা(র) প্রথম প্রথম এটা অনুমতি দিতেননা। পরে উনি নিজেও করেছেন এবং অনুমতিও দিয়েছেন। 

২) পাগড়ির উপর মাসেহ করা:

ওযুর ৪ ফরজের এক ফরজ হল মাথা মাসেহ করা। সাধারণভাবে ওযূতে মাথার পরিবর্তে পাগড়ি না খুলে পাগড়ির উপর মাসেহ করা জায়েজ। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু বাযী (রহঃ) মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছনে রয়ে গেলেন। আমিও তাঁর সাথে পেছনে পড়লাম। তিনি হাজত পূরণ করে বললেন, তোমার সাথে কি পানি আছে? আমি একটি পানির পাত্র নিয়ে এলাম। তিনি উভয় হাতের কব্জা পর্যন্ত এবং মুখমন্ডল ধূইলেন তারপর উভয় বাহু বের করতে চাইলেন; কিন্তু জোববার আস্তিনে আটকে গেল। এতে জোববার নিচ থেকে তিনি হাত বের করলেন এবং জোববাটি কাঁধের ওপর রেখে দিলেন। উভয় হাত ধুইলেন, মাথার সম্মুখভাগ এবং পাগড়ি ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। [সহীহ মুসলিম-৫২৪-৫২৫, ৫২৭, সুনানে নাসাঈ-১০৮, মান সহীহ] অপরদিকে “আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মদ ইবনুল আলা (রহঃ) বিলাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় মোযা ও পাগড়ীর ওপর মাসেহ করেছেন।” [সহীহ মুসলিম- ৫২৯, ৫৩০, সহীহ বুখারী-২০৫ সুনানে নাসাঈ-১০৪, ১০৬ মান সহীহ, সুনানে ইবনে মাজাহ-৫৬১-৫৬২, মান সহীহ, তিরমিজি-১০১, মান সহীহ, আবু দাউদ-১৪৬,১৫০ মান সহীহ]

সাহাবী ও তাবঈদের একধিক ফিকহবিদ বলেনঃ পাগড়ির সাথে সাথে মাথা মাসেহ না করে কেবল পাগড়ি মাসেহ করলে যথেষ্ট হবে না। সুফইয়ান ছাওরী, মালিক ইবনু আনাস, ইবনু মুবারক ও ইমাম শাফিঈ (রহঃ) এর বক্তব্য এ-ই। আবূ হানীফা ও তার মতাবলম্বী বিদ্বানগণ, মালিক ও শাফেঈ (রাহি.) এর মতে, শুধু গাপড়ীর উপর মাসাহ বৈধ নয়। বরং নাসিয়াহ তথা মাথার অগ্রভাগ সহ মাসাহ বৈধ। এ ক্ষেত্রে মাথার অগ্রভাগ মাসাহ ফরয এবং পাগড়ীর উপর মাসাহ অতিরিক্ত। যেহেতু তারা মাথার কিছু অংশ মাসাহ করা বৈধ করেন! কিন্তু ইমাম শাফেঈ বলেন, ‘‘যদি পাগড়ীর উপর মাসাহ করার হাদীসটি সহীহ হয় তাহলে আমার মতে, শুধু পাগড়ীর মাসাহ করা বৈধ’’। যেহেতু পাগড়ীর উপর মাসাহ করার হাদীসটি সহীহ, সুতরাং শুধু পাগড়ীর মাসাহ করা বৈধ হওয়াটা তারই অভিমত। ইমামন আহমাদ, ইসহাক্ব, আবূ সাওর, আওযায়ী, ইবনু হাযম, ইবনে তাইমিয়াহ এবং সাহাবীদের মধ্য হতে আবূ বকর, উমার, আনাস প্রমুখ এর অভিমত কেবল পাগড়ি মাসেহ করলেই যথেষ্ট হবে।

৩) মহিলাদের মাথার ওড়না, ঘোমটা বা হিজাবের উপর দিয়ে মাসেহ করা:

উপরেল্লিখিত হাদিসগুলো থেকে জানা গেল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ীর উপর মাসেহ করেছেন। এর উপর ভিত্তি করে কিয়াস করে ইবনে হাযমসহ কিছু আলেম, মহিলাদের মাথার হিজাব বা ওড়নার উপর মাসেহ করা বৈধ বলে ফতোয়া প্রদান করেছেন। তবে রাসূল (স) যেভাবে মাথার সন্মুখভাগের পাগড়ির ভিতর আঙ্গুল ঢুকিলে চুলের সস্মুখভাগের উপর একটু মাসেহ করেছেন সেভাবে করে এরপর হিজাবের উপর মাসেহ করতে হবে। তাই সরাসরি এ ব্যাপারে দলীল না পাওয়ার কারণে শাইখুল ইসলাম তাইমিয়া (রহ.) ও আধুনিক যুগের শাইখ উসাইমীন (রহ.) প্রমূখ বলেন, “মাথা খুলে মাসেহ করলে পর পুরুষ দেখার সম্ভাবনা, মাথায় মেহদী দিয়ে কাপড়ের মাধ্যমে চুল বাধা থাকলে বা খোলার পর পূণরায় বাধা কষ্টকর হলে মাথার হিজাব/উড়নার উপর মাসেহ করতে কোন অসুবিধা নেই। আর এমনটি না হলে তার উপর মাসেহ না করাই উত্তম। কেননা, এ ব্যাপারে কোন সহীহ দলীল বর্ণিত হয় নি।” [যাদুল মুস্তাকনা ১/২৩৯] ইবনু আবী শাইবাহ “আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, উম্মুল মুমেনীন উম্মে সালামা রা. তাঁর মাথার ওড়নার উপর দিয়ে মাসেহ করেছেন। সুতরাং, বিশেষ কোন ওজর থাকলে মহিলাদের মাথার ওড়ানা বা হিজাবের উপর মাসেহ করা জায়েয রয়েছে। তবে হিজাবের ভিতর হাত ঢুকিয়ে কান মাসেহ করে নিতে হবে।

৪) ওযূতে টুপির উপর মাসাহ:

জমহুর উলামার মতে, ওযূতে মাথার পরিবর্তে টুপির উপর মাসাহ বৈধ নয়। কেননা মাথা মাসাহ ফরয। মূলতঃ জমহুরের নিকট পাগড়ীর উপর মাসাহ করার হুকুম দেয়া হয়েছে, তা খোলা কষ্টকর হওয়ার কারণে। [ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ১/৩৮৪; উছায়মীন, আশ-শারহুল মু’মতে ১/২৫৪; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, ক্লিপ নং ১৯০]। অন্যদিকে ইবনু হাযম, ইবনু তাইমিয়া ও মুহাক্কিক একদল বিদ্বানের মতে, টুপির উপর মাসাহ জায়েয। আল-মুহালস্না (২/৫৮), মাজমূ’ আল ফাতাওয়া (২১/১৮৪-১৮৭, ২১৪)। যেহেতু রাসূল () পাগড়ীর বা অনুরূপ পোষাক বিশেষের উপর মাসাহ করেছেন। সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে, সরাসরি মাথায় পানি স্পর্শ করানো ফরয নয়। যে কোন বস্ত্ত বিশেষ মাথায় পরিধান করা হলে তার উপর মাসাহ বৈধ। যদিও তা ফরযের স্থানকে আচ্ছাদনকারী নাও হয় এবং তা খোলে ফেলাও কষ্টকর না হয়। আর এটাই অধিক বিশুদ্ধ মত। (আল্লাহ্‌ই অধিক অবগত আছেন)।

৫। ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ:

কাষ্টফলক দ্বারা ভাঙ্গা হাড়কে জোড়া লাগানোর জন্য ব্যান্ডেজ করা এবং সুস্থ্য হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় ব্যান্ডেজ করা। জমহুর উলামা, চার ইমামসহ অনেকের মতে, ওযূর অঙ্গ-প্রত্যেঙ্গর মধ্যে হাতের কব্জি, পা প্রভৃতিতে যে কাঠের ফলক ব্যবহার করা হয়, এর উপর মাসাহ করা জায়েয।


তাদের দলীল গুলো নিম্নরূপ:

(১) জনৈক ব্যক্তির শরীরে আঘাত লাগা মর্মে বর্ণিত জাবেরের হাদীস। তার ব্যাপারে রাসূলের উক্তি ‘‘তার জন্যে যখমের উপর ব্যান্ডেজ ব্যবহার করাই যথেষ্ট হতো এবং সে তার উপর মাসাহ করলেই চলতো’’। এ হাদীসটি যঈফ।

(২) ইবনু উমারের উক্তি: ‘‘যে ব্যক্তির ব্যান্ডেজযুক্ত যখম থাকবে, সে ওযূর সময়ে যখমের উপর শুধু মাসাহ করবে এবং ব্যান্ডেজের আশেপাশের জায়গা ধৌত করবে’’। এ ক্ষেত্রে সাহাবাদের কেউ ইবনে উমারের বিরোধিতা করেছেন বলে জানা যায় না। [ইবনু আবী শাইবাহ-১/১২৬, বায়হাকী-১/২২৮] এ হাদীসের সনদ সহীহ।

(৩) মোজার মাসাহ এর উপর কিয়াস বা অনুমান করেও এর দলীল দেয়া যায়। যেহেতু কোন প্রয়োজন ছাড়াই মোজার উপর মাসাহ জায়েয, অতএব প্রয়োজনের তাগিদে কাষ্ট ফলকের উপর মাসাহ জায়েয হওয়া আরও অধিক যুক্তিযুক্ত। তবে হাযমের মতে, কাষ্ট ফলকের উপর মাসাহ করার কোন প্রয়োজন নেই। বরং এ স্থানের হুকুম অতীত হয়ে গেছে। [আল-মুহালস্না-২/৭৪]

 

উপকারিতা:

১। জাবীরা বা ব্যন্ডেজের উপর মাসাহ করা ওযূ ও গোসল উভয় অবস্থায় বৈধ, কেননা ব্যন্ডেজ প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। ছোট বা বড় নাপাকী কোন অবস্থায় খোলার প্রয়োজন নেই। যা মোজা মাসাহ এর হুকুম থেকে আলাদা। এটা এক ধরনের ছাড়।

২। ব্যান্ডেজের ক্ষেত্রে পবিত্র অবস্থা ও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যবহারের কোন শর্ত আরোপ করা যাবেনা। পবিত্রতাবস্থায় ব্যান্ডেজ পরিধান করতে হবে এমন কোন শর্ত আরোপ করা যাবেনা। কেননা শরীয়াত প্রণেতা মাসাহ বৈধ করার মাধ্যমে ক্ষতি ও কষ্ট লাঘবের যে উদ্দেশ্য করেছেন এটা তার বিপরীত। এছাড়া ব্যান্ডেজের বিষয়টি বাধ্যতামূলক যা আকষ্মিক চাপিয়ে দেয়া হয়, যা মোজার বিপরীত। উপরন্ত কুরআন-হাদীস ও ইজমা থেকে এর কোন দলীলও নেই। অনুরূপ ভাবে ব্যন্ডেজের উপর মাসাহ এর কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। বরং যখন তা খোলে ফেলা হবে অথবা আক্রান্ত অংশ আরোগ্য পাবে তখন মাসাহ বৈধ হবে না।

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: মোজা, পাগড়ি, টুপি, ব্যান্ডেজ এবং হিজাবের উপর মাসেহ করা
মোজা, পাগড়ি, টুপি, ব্যান্ডেজ এবং হিজাবের উপর মাসেহ করা
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2021/07/massage.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2021/07/massage.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy