বছরের বারো মাসের চারটি মাস বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন। এই
চার মাসের অন্যতম হলো জিলহজ মাস। আল্লাহ তা’আলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি, যা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ তা’আলা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি
মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান’ (সুরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ৩৬)। এই চার মাস হলো জিলক্কদ, জিলহজ্জ,
মহররম ও রজব। এসব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, কলহবিবাদ
সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জিলহজ্জ মাসের ১ম ১০ দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
‘কসম ভোরবেলার। কসম ১০ রাতের। [সূরা ফজর-১-২] বিখ্যাত তাফসিরবিদ ইবন
কাসীর রহ. বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যিলহজ মাসের দশ দিন।
জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত দিনে রোজা পালন করা, দিনে-রাতে বেশি বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত। যথা: নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাহমিদ-তাহলিল-তাসবিহ [তাহলিল
(লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ) তাকবীর (আল্লাহু আকবার) তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ)], দোয়া-দরুদ, তওবা-ইস্তিগফার ইত্যাদি। উলামায়ে কেরাম
বলেছেন: যিলহজ মাসের ১ম দশদিন সর্বোত্তম দিন, আর রমযান মাসের
শেষ দশ রাত, সব চেয়ে উত্তম রাত।
১) প্রথম ১০ দিনের সৎ কাজ:
ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহর নিকট
যে কোনো দিনের সৎ আমলের চেয়ে যিলহজ্জ মাসের দশ প্রথম দিনের আমল অধিক প্রিয়। লোকেরা
জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদও নয়কি?
তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়।
তবে, যে ব্যক্তি তার জান-মাল নিয়ে জিহাদে বের হয় এবং কোনো
একটি নিয়েও ফিরে না আসে তার কথা স্বতন্ত্র। [সূনানে আবূ দাউদ-২৪৩৮, ইবনে মাজাহ-১৭২৭, মান-সহীহ, সহীহ বুখারী-৯১৮, ই.ফা.]
ইবনু ‘আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আযহা’র (যুলহিজ্জার) দশ
দিনে যে নেক আমল করা হয়, তার চাইতে আল্লাহর নিকট অধিক পবিত্র,
অধিক সাওয়াবের আর কোনো নেক আমল নেই।” জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর পথে জিহাদও কি নয়? তিনি বলেন,
“আল্লাহর পথে জিহাদও নয়, তবে, যে ব্যক্তি তার জান-মালসহ আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হয়, কিন্তু এর কোন কিছু নিয়েই সে আর ফিরে আসে না (তার মর্যাদা অনেক)।” তিনি
(বর্ণনাকারী) বলেন, সাঈদ ইবনু যুবাইর যখন (যুলহাজ্জের) প্রথম
দশকে উপনীত হতেন, তখন তিনি তাঁর সাধ্যানুযায়ী সর্বাধিক কঠোর
সাধনা করতেন। [সুনানে আদ-দারেমি-১৮১১, মান সহীহ]
২) হজ্জ ও উমরা আদায় করা:
‘-আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ ঘরের হজ্ব সমাপন করা তাদের
অবশ্যই কর্তব্য। যারা সেখানে যাবার সামর্থ রাখে এবং যদি কেউ অবিশ্বাস করে অর্থাৎ সামর্থ
থাকা সত্ত্বেও হজ্ব না করে তাহলে সে জেনে রাখুক আল্লাহ বিশ্বজগতের কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী
নন।‘ [সূরা ইমরান-৯৭]
নবীজি (ﷺ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জ
করেছে এবং তাতে কোনো অশ্লীল আচরণ করেনি, কোনো পাপে লিপ্ত হয়নি,
সে সেদিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে গেল, যেদিন তার
মা তাকে প্রসব করেছে।’ [মুসলিম (৩১৬১, ইফা)]
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ একটি উমরা পরবর্তী উমরা পর্যন্ত
মাঝখানের শুনাহসমূহের কাফফারা স্বরুপ এবং ক্রটিমুক্ত হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া
আর কিছু নয়। [সহীহ মুসলিম-৩১৫৯, ইফা.]
৩) চুল ও নখ না কাটা
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কুরবানী
করার ইচ্ছা রাখলে, যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশক শুরু হয়ে গেলে
সে যেন নিজের চুল ও চামড়ার কোন কিছু না ধরে অর্থাৎ না কাটে। অন্য এক বর্ণনায় আছে,
সে যেন কেশ স্পর্শ না করে ও নখ না কাটে। অপর এক বর্ণনায় আছে,
যে ব্যক্তি যিলহাজ্জ মাসের নব চাঁদ দেখবে ও কুরবানী করার নিয়্যাত
করবে সে যেন নিজের চুল ও নিজের নখগুলো কর্তন না করে। [মিশকাত-১৪৫৯, মান-সহিহ, সহীহ মুসলিম-৪৯৫৬,ই.ফা, নাসায়ী-৪৩৬৪, ইবনু
মাজাহ্-৩১৪৯, আহমাদ-২৬৪৭৪]
৪) আরাফাত দিবসের অর্থাৎ হজ্জের দিনের রোজা
আরাফার দিন, অর্থাৎ ৯ জিলহজ্জ
নফল রোজা রাখা বিশেষ সুন্নত আমল। তবে আরাফায় উপস্থিত হাজি সাহেবদের জন্য এই রোজা প্রযোজ্য
নয়। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)
বলেন, ‘আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ
তাআলা তার (রোজাদারের) বিগত এক বত্সরের ও সামনের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন’ [ইবনের
মাজাহ-১৭৩০, তিরমিযী-৭৪৯, আহমাদ-২২০২৪,
আবু দাউদ-২০৯৬, মান-সহীহ]
নোট: আরাফাত ময়দানের বাইরে যারা আছেন অর্থাৎ যারা হজ্জ
করছে না,
এ দিন তাদের করণীয় হচ্ছে রোযা রাখা। আরাফাহ দিবসের রোযার সম্পর্ক
আরাফাত ময়দানে হাজীগণের অবস্থানের সাথে। তাই রোযা রাখতে হবে আরাফাহ দিবসে। নিজ নিজ
দেশের ৯ই জিলহজ্জ নয়।
৫) প্রথম ৯ দিনের রোজা:
জিলহজ্জের প্রথম ৯ দিনের রোজা সুন্নত হও সম্পর্কে বিতর্ক
আছে। যেমন :
পক্ষের হাদিস: হুনাইদাহ ইবনু খালিদ (রহ.) তার স্ত্রী
থেকে এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোনো এক স্ত্রী সূত্রে বর্ণনা
করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যিলহজ মাসের নয় তারিখ পর্যন্ত, আশুরার দিন,
প্রত্যেক মাসে তিনদিন, মাসের প্রথম সোমবার
ও বৃহস্পতিবার সওম রাখতেন।[সুনান আবু দাউদ-২৪৩৭ (তাহকিককৃত)]
বিপক্ষের হাদিস: আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কখনো (যিলহজ (হজ্জ)
মাসে) দশদিন সওম পালন করতে দেখিনি।[সুনান আবুদাউদ-২৪৩৯ (তাহকিককৃত
৬) ঈদের সালাত আদায় করা:
হাজ্জাজ (ইবনু মিনহাল) (রহঃ) ... বারাআ (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুতবা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের আজকের এ
দিনে আমরা যে কাজ প্রথম শুরু করব, তা হল সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করা। এরপর ফিরে আসব এবং কুরবানী করব। তাই যে এরূপ করে সে আমাদের রীতিনীতি সঠিকভাবে
পালন করল। [সহীহ বুখারী-৯০৩] ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। আর সালাত শেষে খুতবা
দিতেন। [সহীহ বুখারী-৯০৯]
৭) তাকবীর বলা:
‘আরাফার দিনের ফজর থেকে শুরু করে তাশরীকের দিনের
শেষ পর্যন্ত, তথা যিলহজ মাসের তেরো তারিখ আসর পর্যন্ত তাকবীর
বলা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট
দিনসমূহে।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২০৩] জিলহজ মাসের ৯ তারিখ
ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর একবার তাকবির বলা ওয়াজিব (ইলাউস
সুনান, খণ্ড-৮, পৃষ্ঠা: ১৪৮)।
৮) কোরবানী করা: “তোমার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর
ও (পশু) নাহর (কুরবানি) কর।” [সূরা আল-কাউসার, আয়াত: ২] কুরবানির
দিনটি হলো বছরের শ্রেষ্ঠ দিন। আব্দুল্লাহ ইবন কুরত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহর নিকট দিবসসমূহের মাঝে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কুরবানির দিন,
তারপর পরবর্তী তিনদিন”। [সুনান আবু দাউদ-১৭৬৫] জিলহজের ১০,
১১ ও ১২ যেকোনো দিন, কোনো ব্যক্তির মালিকানায়
নিত্যপ্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা এর সমমূল্যের
সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। পুরুষ ও নারী সবার জন্য এ বিধান প্রযোজ্য
[বাদায়েউস সানায়ে ৫/৬৩, আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫;
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া,
৫/২৯২]। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানী করে না,
সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের ধারে কাছেও না আসে। [সুনান ইবনে মাজাহ-৩১২৩,
মান-সহীহ] আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ কাজটি সর্বোত্তম?
তিনি বলেনঃ উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা এবং কোরবানীর দিন কোরবানী করা।
[সুনান ইবনে মাজাহ-২৯২৪, মান-সহীহ] ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। ইতোমধ্যে কোরবানীর ঈদ এসে গেলো। আমরা একটি উট দশজনে
এবং একটি গরু সাতজনে শরীক হয়ে কোরবানী করলাম। [সুনান ইবনে মাজাহ-৩১৩১, মান সহীহ]
সংক্ষেপে এই দশকের বিশেষ আমল-
· সকল কাজের জন্য খালিসভাবে নিয়ত করা, যেন আমাদের
সাধারণ সব কাজগুলোও ইবাদাতে রূপ নেয়।
· কুরবানি করতে ইচ্ছুক (সামর্থবান) ব্যক্তি যেন চুল, দাড়ি, নখ, লোম,
অবাঞ্ছিত লোম না কাটেন।
· এক থেকে নয় তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা। ৯টি রোজা না রাখলেও আরাফার দিনে যেন
অবশ্যই রোজা রাখা হয়।
· বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা।
· তাওবা/ইস্তেগফার করা।
· সর্বদা জিকির করা, বিশেষ করে তাসবিহ=সুবহানাল্লাহ,
তাহমিদ=আলহামদুলিল্লাহ্, তাহলিল=লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ, তাকবির-আল্লাহু আকবার জিকির করা।
· তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা।
· দান-সাদকা করা বেশি করে।
· বেশি বেশি করে বাবা মায়ের সেবা করা।
· আত্মীয় ও প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেয়া।
· মাফ করে দেওয়া ও মাফ চেয়ে নেওয়া।
· গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে ফিরিয়ে রাখা
· বেশি করে দ্বীনের দাওয়াতের কাজ করা।
· হজ্জ ফরজ হলে হজ্জ আদায় করতে যাওয়া।
· আরাফার দিন দোয়া করা। এই দিনের দোয়অ ইনশাআল্লাহ কবুল হবে।
· আরাফার দিন এই দোয়অ অনেক বেশি করে পড়া, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ‘শ্রেষ্ঠ দোয়া হচ্ছে আরাফাত দিবসের দোয়া আর
আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণ যা বলেছি তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি
শাই’ইন ক্বাদীর’। (একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।)
· ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পুরুষ-মহিলা
প্রত্যেকের উপর তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব।
৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ
নামাজের পর পুরুষ-মহিলা প্রত্যেকের উপর তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। ‘আল্লাহু আকবার..
আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার..
ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’