তাফসির

৭২৪২। মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এ হচ্ছে (সে সব হাদিস) যা আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। এ কথা বলে তিনি কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে একটি হাদিস হচ্ছে এই যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ বনী ইসরাইলদের বলা হয়েছিল, তোমরা (বিজিত নগরীতে) দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সময় সিজদাবনতঃ হয়ে প্রবেশ কর এবং বলে হিত্তাতুন (তউবা—মাফ করে দাও) তাহলে আমি তোমাদের গুনাহসমুহ মাফ করে দেব, কিন্তু তাঁরা শব্দটি পরিবর্তন করে নিতম্বের উপর হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে প্রবেশ করল এবং বলল “যবের শিষে দানা দাও, যব চাই, গম চাই”।

৭২৪৩। আমর ইবনু মুহাম্মদ ইবনু বুকায়র আন-নাকিদ, হাসান ইবনু আলী আল-হুলওয়ানী ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ওফাতের পূর্ব (সময়) হতে ওফাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আল্লাহ্‌ তা’আলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি অনবরত ওহী নাযিল করেন। যে দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন সেদিন তাঁর প্রতি বিপুল পরিমান ওহী নাযিল হয়।

৭২৪৪। আবূ খায়সামা যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রাঃ) তারিক ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদী লোকেরা উমার (রাঃ)-কে বললো, তোমরা এমন একটি আয়াত পাঠ করে থাকো তা যদি আমাদের সম্পর্কে নাযিল হতো- তবে এ দিনটিকে আমরা উৎসবের দিন হিসাবে গ্রহণ করতাম। উমার (রাঃ) বললেন, আমি জানি, ঐ আয়াতটি কখন, কোথায় ও কোন দিন নাযিল হয়েছিল। আর যখন তা নাযিল হয়েছিল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাড়ী কোথায় অবস্হান করছিলেন তাও জানি। আয়াতটি আরাফার দিন নাযিল হয়েছিল; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আরাফাতেই অবস্থান করছিলেন। রাবী সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, (আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং পূর্ণ করে দিলাম তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহকে। ) আয়াতটি যেদিন নাযিল হয়েছিল তা জুমুঁআর দিন ছিল কিনা, এ ব্যাপারে আমি সন্দিহান।

৭২৪৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) তারিক ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহুদী উমার (রাঃ)-কে বললো, (আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং পূর্ণ করে দিলাম তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহকে। ) -এ আয়াতটি আমাদের ইয়াহুদী সম্প্রদায় সম্পর্কে নাযিল হলে এ দিনটিকে আমরা উৎসব দিবস হিসাঁবে পালন করতাম। আমরা জানি, কোন দিন এ আয়াতটি নাযিল হয়েছে। রাবী বলেন, এ কথা শুনে উমার (রাঃ) বললেন, যে দিন, যে সময় এ আয়াতটি নাযিল হয়েছে সে দিন ও সে সময় সম্পর্কে আমি সম্যক অবগত আছি। এ আয়াতটি নাযিল হওয়ার সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় ছিলেন, তাও আমি জানি। এ আয়াতটি মুযদালিফার রাতে নাযিল হয়েছে। তখন আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে আরাফাতে ছিলাম।

৭২৪৬। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) তারিক ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহুদী -ব্যক্তি উমার (রাঃ)-এর নিকট এসে বললো, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনাদের কিতাবের মধ্যে এমন একটি আয়াত আপনারা পাঠ করে থাকেন। যদি তা আমাদের ইয়াহুদী সম্প্রদায় সম্পর্কে নাযিল হত তাহলে ঐ দিনটিকে আমরা উৎসব দিবস হিসাবে গ্রহণ করতাম। উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, আয়াতটি কি? সে বলল, আয়াতটি পড়লঃ (আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং পূর্ণ করে দিলাম তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহকে। ) -এ কথা শুনে উমার (রাঃ) বললেন, যে দিন, যে স্থানে আয়াতটি নাযিল হয়েছে অবশ্যই আমি তা জানি। আয়াতটি জুমূআর দিন আরাফাতের ময়দানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে।

৭২৪৭। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ ও হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) উরওয়া ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ)-কে মহান আল্লাহর ইরশাদ:তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে দুই, তিন অথবা চার- এর ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, হে ভাগ্নে! যে সব ইয়াতীম মেয়েরা তাদের তত্ত্বাবধানকারী গার্জিয়ানদের সম্পদের অংশীদার হতো তার সম্পদের লোভ ও রুপ-যৌবনের আকর্ষণ হেতু উক্ত গার্জিয়ান তাকে অন্যরা যে পরিমাণ মোহরানা দিয়ে বিয়ে করতে প্রস্তুত ইনসাফের দাবী অনুযায়ী উক্ত পরিমাণ মোহরানা দিয়ে বিয়ে করতে চাইতো না। এ আয়াতে তাদেরকে ঐসব ইয়াতীমদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে তাদের মোহরানা প্রদানের ব্যাপারে সর্বোত্তম নিতী অনুসরণ করলে তা স্বতন্ত্র কথা। অন্যথায় তাদের পছন্দমত অন্য মেয়েদের বিয়ে করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উরওয়া (রাঃ) বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর কিছু লোক বিষয়টি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জানতে চাইলে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ এবং লোকেরা আপনার নিকট নারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা জানতে চায়। বলুন, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সন্মন্ধে ব্যবস্হা জানানো হল এবং ইয়াতীম নারী সম্পর্কে-যাদের প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না অথচ তোমরা তাদেরকে বিবাহ করতে চাও ও অসহায় শিশুদের সমন্ধে এবং ইয়াতীমদের প্রতি তোমাদের ন্যায়বিচার সম্পর্কে যা কিতাবে তোমাদেরকে শুনান হয় তাও পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেন। এবং যে সৎকাজ তোমরা কর আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত। ” আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর ইরশাদ ‘অমা ইয়ুতলা আলিকুম ফিলকিতাব’ এর দ্বারা প্রথম আয়াতটিকে বুঝানো হয়েছে, যার মধ্যে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তোমরা যদি আশংকা কর যে ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না তবে বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে দুই, তিন অথবা চার। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর ইরশাদ:’অতারগাবুনা আন তানকিহুহুন্না’ এর মানে হচ্ছে, অর্থ-সম্পদ ও রুপ-যৌবন কম থাকার কারণে তোমাদের কেউ ইয়াতীম-মেয়েদেরকে বিবাহ করতে অপছন্দ করলে-তাদেরকে অর্থ সম্পদ ও রুপ যৌবনবতী ইয়াতীম ন্ত্রীলোককে পছন্দ হলেও বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে অর্থ-সম্পদ ও রুপ-যৌবন না থাকার কারণে অপছন্দনীয় হলেও যদি ইনসাফের ভিত্তিতে মোহরানা দেয়া হয় তবে বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

৭২৪৮। হাসান হুলওয়ানী ও আবদ ইবনু হুমায়দ উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ)-কে আল্লাহর ইরশাদঃ তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেহোদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না-এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। অতঃপর রাবী ইউনুসের সুত্রে যুহরী (রহঃ) থেকে বিষ্মিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৭২৪৯। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুবায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। অইল্লাহ ইরশাদ, “তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবেনা” এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি ঐ পুরুষ সন্মন্ধে নাযিল হয়েছে; যার তত্ত্বাবধানে রয়েছে একজন ইয়াতীম মহিলা এবং এ পূরুষই হচ্ছে তাঁর অলী ও অভিভাবক। আর এ মেয়েটির আছে কিছু ধন-সম্পদ। কিন্তু তার পক্ষ সমর্থন করার জন্য সে ব্যতীত আর কেউই নেই। অলী এই ধরনের মেয়েকে তার সম্পদের উদ্দেশ্যে বিয়ে করে তাকে কষ্ট দিতে এবং তার সাথে নিষ্ঠুরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে না। এ ব্যক্তি সম্পর্কেই আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না তবে বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে দুই তিন অথবা চার অর্থাৎ যে মহিলাদেরকে আমি তোমদের জন্য হালাল করেছি তাদেরকে বিবাহ কর এবং এই ইয়াতীম মেয়েদেরকে ছেড়ে দাও যাদের প্রতি তুমি নিষ্ঠুর আচরণ করেছ।

৭২৫০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ “এবং ইয়াতীম নারী সম্পর্কে তাদের প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না- অথচ তোমরা তাদেরকে বিবাহ করতে চাও ও অসহায় শিশুদের সমন্ধে এবং ইয়াতীমদের প্রতি তোমাদের ন্যায় বিচার সম্পর্কে যা কিতাবে তোমাদেরকে শুনান হয় তাও পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেয়-” সম্পর্কে বলেন, এ আয়াতটি ঐ ইয়াতীম মেয়ে সমন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, যে এমন এক পূরুষের তত্ত্বাবধানে রয়েছে, যার সাথে সে সম্পদের মধ্যে শরীক আছে। কিন্তু সে তাকে বিয়ে করা পছন্দ করছে না এবং অন্য কোন ব্যক্তির সাথে তার বিবাহ হোক এটাও পছন্দ করছে না এই আশংকায় যে, সে তার সস্পদের অংশীদার হয়ে যাবে। অবশেষে সে তাকে এমনই ছেড়ে রাখছে; নিজেও তাকে বিয়ে করছেন এবং অন্য কারো নিকট বিবাহ দিচ্ছেও না।

৭২৫১। আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ “এবং লোকেরা অ্যপনার নিকট নারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা জানতে চায়, বলুন, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সমন্ধে ব্যবস্হা জানিয়ে দিচ্ছেন,- এর ব্যাখ্যায় বলেন, আয়াতটি ঐ ইয়াতীম মেয়ে সম্পর্কে নাযিল হয়েছে, যে রয়েছে এমন এক পুরুষের তত্ত্বাবধানে যার সম্পদের এমনকি খেজুর বাগানেরও উক্ত নারী অংশীদার। সে তাকে বিয়ে করতেও আগ্রহী নয় এবং অন্যের নিকট বিয়ে দিতেও ইচ্ছ্বুক নয়। কেননা তাহলে সে তার সম্পদের অংশীদার হয়ে হলবে। ফলে সে তাকে এমনই ফেলে রাখছে।

৭২৫২। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ “এবং যে বিত্তহীন সে যেন সংগত পরিমাণ ভোগ করে এর ব্যাখ্যায় বলেন- এ আয়াতটি ইয়াতীমের মালের ঐ অবিভাবক সমন্ধে নাযিল হয়েছে, যে তার সম্পদের তত্ত্বাবধান করছে এবং উহা দেখাশুনা করয়ে যদি তত্ত্বাবধানকারী ব্যক্তি মুখাপেক্ষী হয় তবে সে সংগত পরিমাণ উহা ভোগ করবে।

৭২৫৩। আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর ইরশাদঃ যে অভাবমুক্ত সে যেন নিবৃত থাকে এবং যে বিত্তহীন সে যেন সংগত পরিমাণ ভোগ করে, এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি ইয়াতীমের তত্তাবধানকারী ব্যক্তি সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, সে যদি বিত্তহীন হয় তবে সে যেন তার সম্পদ হতে সংগত পরিমাণ ভোগ করে।

৭২৫৪। আবূ কুলায়ব (রহঃ) হিশামের সুত্রে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৭২৫৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ “যখন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছিল উচ্চাঞ্চল ও নিন্মাঞ্চল হতে- তোমাদের চক্ষু বিস্ফারিত হয়েছিল, তোমাদের প্রাণ হয়েছিল কণ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সমন্ধে নানাবিধ ধারনা পোষণ করছিলে”- এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি খন্দকের দিন অবতীর্ণ হয়েছে।

৭২৫৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়াশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর ইরশাদ করেনঃ কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশংকা করে তবে তারা আপোষ-নিস্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোন দোষ নেই এবং আপোষ-নিস্পত্তই শ্রেয়” এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি ঐ মহিলা সন্মন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, যে এমন একজন পূরুষের নিকট ছিল, যার সাহচর্যে সে দীর্ঘ দিন ছিল। এখন সে তাকে তালাক দিতে চাচ্ছো আর মছিলা বলছে, আমাকে তালাক দিওনা বরং আমাকে তোমার কাছে থাকতে দাও। তবে তুমি আমার পক্ষ হতে মুক্ত। তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়।

৭২৫৭। আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর বলেছেনঃ “কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশংকা করে তবে তারা আপোষ –নিস্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোন দোষ নেই এবং আপোষ-নিম্পত্তই শ্রেয়” এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি ঐ মহিলা সম্পর্কে নাযিল হয়েছে, যে এমন একজন পূরুষের নিকট ছিল, সম্ভবত সে তার প্রতি বড় একটা ভালবাসা ও আকর্ষণ অনুভব করে না। অথচ সে তার দীর্ঘ সাহচর্যে ছিল এবং তার সন্তান-সন্ততিও রয়েছে। এদিকে স্বামীও তাকে তালাক দেয়া পছন্দ করছে না। তখন উক্ত মহিলা তাকে বলছে, তুমি আমার পক্ষ হতে মুক্ত।

৭২৫৮। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) আমাকে বলেছেনঃ হে ভাগ্নে! লোকদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা তাদের সমালোচনা করেছে।

৭২৫৯। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) হিশামের সুত্রে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৭২৬০। উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয আবূ বারী (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কুফাবাসী লোকেরা আল্লাহর ইরশাদঃ “কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ি হবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য মহা শাস্তি প্রস্তুত করবেন ” সম্পর্কে মতবিরোধ করলে আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম এবং তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ আয়াত শেষ পর্যায়ে অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং কোন আয়াত উহাকে রহিত করতে পারেনি।

৭২৬১। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না ও ইবনু বাশশার (অন্য সনদে) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) শুবা (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৭২৬২। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না ও মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইবনু আবযা আমাকে নিম্ন বর্ণিত আয়াত দুটি সম্পর্কে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার জন্য নির্দেশ দিলেন। তন্মধ্যে প্রথমটি হলোঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করলে” এর হুকুম সম্পর্কে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন কোন আয়াত এ আয়াতটিকে রহিত করেনি। আর দ্বিতীয় আয়াতটি হচ্ছে, ‘“এবং তারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহকে ডাকে না। আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারন ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এ গুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে”। এ সম্পর্কে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এ আয়াতটি মুশরিকদের সম্পর্কে অবতীর্ন হয়েছিল।

৭২৬৩। হারুন ইবনু আবদূল্লাহ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এবং তারা আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহকে ডাকে না। আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এ গুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুন করা হবে এবং সেখানে হবে হীন অবস্হায়। ” উক্ত আয়াতটি মক্কায় অবতীর্ণ হবার পর মুশরিকরা বলতে আরম্ভ করল যে, ইসলাম গ্রহণ করলে আমাদের কি ফায়দা হবে, অথচ আমরা আল্লাহ সাথে শরীক করেছি, যাদেরকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, আমরা তাদেরকে হত্যা করেছি এবং আমরা অবৈধ যৌন ব্যভিচার করেছি। তখন আল্লাহ তায়ালা নাযিল করলেন, “তারা নয় যারা তাওবা করে ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। আল্লাহ তাদের পাপ পরিবর্তন করে দিবেন পূণ্যের দ্বারা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালূ। ” অতঃপর ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করল এবং ইসলাম সম্পর্কে যথাযথ উপলব্ধি হাসিল করল এরপর হত্যা করল, তার তাওবা গ্রহণ যোগ্য নয়।

৭২৬৪। আব্দুল্লাহ ইবনু হাশিম ও আবদুর রহমান ইবনু বিশর আবাদী (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুঁমিন ব্যক্তিকে হত্যা করে তার তাওবা কবুল হবে কি? তিনি বললেন, না, কবুল হবে না। অতঃপর আমি তার নিকট সূরা ফুরকানে বর্ণিত নিন্মোক্ত আয়াতটি পাঠ করলাম, “যারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহকে ডাকে না। আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যাভিচারও করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে। ” তিনি বললেন, এতো হচ্ছে মাক্কী আয়াত। মাদানী আয়াত উহাকে রহিত করে দিয়েছে আর তা হলো। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতাবে কোন মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম। ” তবে ইবনু হাশিমের বর্ণনায় রয়েছে যে, অতঃপর আমি তার নিকট সূরা ফূরকানে উল্লেখিত ‘ইল্লামান তাবা অ আমানা’ আয়াতটি পাঠ করলাম।

৭২৬৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, হারুন ইবনু আব্দুল্লাহ ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু উতবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তুমি কি জান? হারুন (রহঃ) বলেন, তিনি বলেছেন, কুরআনের সর্বশেষ নাযিলকৃত পূর্ণাঙ্গ সূরা কোনটি! আমি বললাম, হাঁ, তা হল,’সূরা আননাসর’। তিনি বললেন, তুমি সত্য বলেছো। ইবনু আবূ শায়বার বর্ননায় ‘আখিরু’ এর স্হলে ‘তায়লামি আয়্যুসুরা’ বাক্যটি উল্লেখ আছে।

৭২৬৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) আবূ উমায়স (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ উমায়স তার বর্ণনায় ‘ইখিরু সূরা’ বলেছেন। এবং তিনি ইবনু সুহায়ল না বলে শুধু আবদুল মজীদ শব্দটি উল্লেখ করেছেন।

৭২৬৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আহমদ ইবনু আবদা আযযাব্বী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি একটি ক্ষুদ্র বকরীর পাল চরাচ্ছিল, এমন সময় কতিপয় মুসলমান তার নিকট পৌছলে সে বলল, ‘আসসালামূ আলাইকুম। এতদূসত্ত্বেও তারা তাকে পাকড়াও করল। অতঃপর তারা তাকে হত্যা করতঃ তার এ “ক্কুদ্র বকরীর পালটি নিয়ে নিল। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল হলোঃ ‘যারা তোমাদেরকে সালাম করে, ইহ জীবনের সম্পদের আকাংক্ষায় তাকে বলো না, তুমি মুমিন নও”। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, তবে কেউ কেউ ‘আসসালামু’ আলিফ ব্যতীত পাঠ করেছেন।

৭২৬৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (অন্য সনদে) মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও বাশশার (রহঃ) বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনসারী লোকেরা হজ্জ সমাপন করত বাড়ী প্রত্যাবর্তনের পর দরজা দিয়ে প্রবেশ না করে পেছন দিক থেকে প্রবেশ করতো। অতঃপর এক আনসারী সাহাবী দরজা দিয়ে প্রবেশ করলে এ ব্যাপারে তাকে কিছু বলা হলে “পাচাৎ দিক দিয়ে তোমাদের গৃহে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নেই” এ আয়াতটি নাযিল হল।

৭২৬৯। ইউনূস ইবনু আবদুল আলা সাদাফী (রহঃ) ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের ইসলাম গ্রহণ করা ও নিন্মোক্ত আয়াত তথা- ‘যারা ঈমান আনে তাদেরকে হৃদয় ভজি-বিগলিত হওয়ার সময় কি আসেনি আল্লাহর স্বরণে। -”-এর দ্বারা আমাদেরকে পরিহাস করার মাঝে চার বছরের ব্যবধান।

৭২৭০। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (অন্য সনদে) আবূ বকর ইবনু নাফি (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহিলাগণ উলঙ্গ অবস্হায় বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতো এবং বলতো কে আমাকে একটি কাপড় ধার দিবেই উদ্দেশ্য এর দ্বারা স্বীয় জননেন্দ্রীয় ঢাকা। এবং এও বলতো, আজ খুলে যাচ্ছে কিয়দাংশ বা পূর্ণ অংশ। তবে যে অংশটা খুলে উহা আমি আর কখনো হালাল করবো না। তখন নাযিল হল, প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান করবে।

৭২৭১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু উবায় ইবনু সালুল তার দাসীকে বলতো, যাও, এবং ব্যভিচারের মাধ্যমে পয়সা উপার্জন করে নিয়ে এসো। তখন আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন, “তোমাদের দাসীদেরকে সততা রক্ষা করতে চাইলে পার্থিব জীবনের ধন-লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিনা হতে বাধ্য করবে না। আর যে তাদেরকে বাধ্য করে তবে তাদের উপর জবর দস্তির পর, আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালূ”।

৭২৭২। আবূ কামিল জাহদারী (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু উবায় এর দুজন দাসী ছিল। একজনের নাম মুসায়তা এবং অপর জনের নাম ছিল উমামা। সে তাদের থেকে ব্যাক্তিচার কামনা করছিল। তাই তারা এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট অতিযোগ করলো। তখন আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেনঃ “তোমাদের দাসীদের সততা রক্ষা করতে চাইলে পার্থিব জীবনের ধন-লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিনা হতে বাধ্য করবে না। আর যে তাদেরকে বাধ্য করে তবে তাদের উপর জবরদস্তির পর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালূ-।

৭২৭৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ “তারা যাদেরকে আহবান করে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে এর ব্যাখ্যায় বলেন, একদা একদল জ্বিন মুসলমান হলো। তাদের পূজা করা হতো। কিন্তু ইবাদতকারী এ লোকগুলো তাদের ইবাদতই আকড়ে থাকলো। অথচ জ্বিনেরা ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

৭২৭৪। আবূ বকর ইবনু নাফি আবাদী (রহঃ) আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মহান আল্লাহর ইরশাদ করেনঃ “তারা যাদেরকে আহবান করে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে এর ব্যাখ্যায় বলেন, একদল মানুষ কতিপয় জিনের পূজা করতো: অতঃপর জিনের দলটি ইসলাম গ্রহণ করলো। কিন্তু এ লোকগুলো তাদের ইবাদতের উপর আকড়ে থাকে। তখন নাযিল হচ্ছেনঃ তারা যাদেরকে আহবান করে, তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে। বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) সুলায়মান (রাঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৭২৭৫। হাজ্জাজ ইবনু শাঈর (রহঃ) আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মহান আল্লাহর ইরশাদ করেছেনঃ তারা যাদেরকে আহবান করে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি আরবের এক দল লোক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তারা কতিপয় জিনের পূজা করতো। অতঃপর জিনেরা তো মুসলমান হলো; কিন্তু তাদের ইবাদতকারী এ মানুষগুলো তা অনুধাবন করলো না। তখন নাযিল হলো, “তারা যাদেরকে আহবান করে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে।”

৭২৭৬। আব্দুল্লাহ ইবনু মুতী (রহঃ) সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট বললাম, সূরা তাওবা। তিনি বললেন, না বরং এ হচ্ছে অপদস্তকারী সূরা। এ সূরাতে কেবল ‘মিনহুম মিনহুম’ বলা হয়েছে। ফলে লোকেরা মনে করতে লাগল যে, এ সূরায় আমাদের কেউ আলোচনা ছাড়া বাকী থাকবে না। অতঃপর আমি বললাম, সূরা আনফাল। একথা শুনে তিনি বললেন, এ তো হচ্ছে সূরা বদর। এরপর আমি সূরা হাশরের কথা উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, এতো বনূ নবীর সম্প্রদায় সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।

৭২৭৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উমার (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মিম্বরে বসে খূৎবা প্রদান করতঃ প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা এবং গুনকীর্তন করে বললেন, আম্মা বাদঃ মদ হারাম হওয়ার বিধান যেদিন নাযিল হওয়ার নাযিল হয়েছে। তা পাঁচটি জিনিস হতে বানানো হয়, গম, যব, খেজুর,আঙ্গুর এবং মধু হতে। আর যা মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে লুপ্ত করে দেয়, তাই মদ। হে লোক সকল! আমার কামনা। যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট দাদা, কালালা (পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি) এবং সুদের কতিপয় অধ্যায় সম্পর্কে বলে যেতেন।

৭২৭৮। আবূ কুরায়ব (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মিম্বরে বসে ভাষণরত অবস্হায় এ কথা বলতে শুনেছি যে, হে লোক সকল! মদ হারাম হওয়ার বিধান নাযিল হয়েছে তা পাঁচটি জিনিস হতে বানানো হয়। আঙ্গূর, খেজুর, মধু, গম ও যব হতে। আর যা মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে বিলূপ্ত করে দেয় তাই মদ। হে লোক সকল! আমার মনের আকাংক্ষা, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিন্মোক্ত কতিপয় বিষয়ে সুম্পষ্ট বলে যেতেন তবে তো আমরা এ সমন্ধে চুড়ান্ত সিদ্ধাস্তে পৌছে যেতে পারতাম। আর তা হচ্ছে, দাদা, কালালা এবং সুদের কতিপয় বিষয়াদি সম্পর্কিত বিধান।

৭২৭৯। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (অন্য সনদে) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ হায়্যান (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে ইবনু উলায়্যা আবূ ইদরীসের মত তার হাদীসে (আঙ্গুর) শব্দটি উল্লেখ করেছেন। আর রাবী ঈসা ইবনু (রহঃ)-এর মত তার হাদীসের মধ্যে (কিসমিস) শব্দটি উল্লেখ করেছেন।

৭২৮০। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি কসম করে বলতেন, “তারা দুটি বিবাদমান পক্ষ তাদের প্রতিপালক সমন্ধে বিতর্ক করে আল্লাহর এ ইরশাদ ঐ লোকদের ব্যাপারেই নাযিল হয়েছে, যারা বদরের দিন লড়াই করার জন্য যুদ্ধ ক্ষেত্রে নেমেছিল। এদের একদিকে ছিলেন আলী, হামযা ও উবায়দা ইবনুল হারিস (রাঃ) আর অন্য দিকে ছিলো, রাবী আর দুই পূত্র উকবা ও শায়বা এবং ওয়ালীদ ইবনু উকবা।

৭২৮১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (অন্য সনদে) মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি কসম করে বলতেন,‘হা যানি খাসমানি’ আয়াতটি নাযিল হয়েছে-অতঃপর হুশায়মের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

 

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: তাফসির
তাফসির
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/tafsir.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/tafsir.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy