৪৩৪৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াইয়া তামিমী (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাঁকে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তার থলে এবং তার বাধন ভাল করে চিনে রাখবে। তারপর এক বাহক পর্যন্ত এর ঘোষণা দেবে। এই সময়ের মধ্যে যদি এর মালিক আসে তবে তাকে তাঁ দিয়ে দিবে। অন্যথায় তা তোমার ইখতিয়ারভূক্ত। তারপর সে হারানো ছাগল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেনঃ তা তোমার জন্য অথবা তোমার ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। তারপর সে হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বললেনঃ এ নিয়ে তোমার ভাবনা কী? তার সাথে আছে পানির মশক (পেটের মধ্যে পানি ধারণের থলে) জুতার মত পায়ের পাতা (মরুভূমিতে ঢলার উপযোগী)। সে নিজেই পানির ঘাটে যাবে এবং গাছের পাতা খাবে যতক্ষন না মালিক তাকে পেয়ে যায়। ইয়াহইয়া (রহঃ) বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি ‘আফা সাহা’ পড়েছেন।
৪৩৫০। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালিদ
জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেনঃ তুমি
এক বছর পর্যন্ত উহার প্রচার করবে এবং তুমি থলি ও বাঁধন চিনে রাখবে। তারপরে তুমি তা
খরচ করতে পার। আর যদি তার প্রকৃত মালিক আসে, তবে তাকে তা আদায় করে দিবে। তারপর সে বললো, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! হারানো বকরির কী হুকুম? তিনি বললেনঃ তা তুমি নিয়ে রাখ। কেননা, এটি তুমি
নিবে কিংবা তোমার ভাই নিবে কিংবা নেকড়ে নিয়ে যাবে। তারপর সে বললো, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! তবে যদি হারানো উট হয়। বর্ণনাকারী বলেনঃ তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগাম্বিত হলেন, এমনকি তাঁর উভয় গণ্ডদ্বয় লাল হয়ে গেল। অথবা
তিনি বলেছেনঃ তার চেহারা লাল হয়ে গেল। তারপর তিনি বললেনঃ তাকে নিয়ে তোমার-ভাবনা কী? তার সাথে
আছে তার জুতো আর পানির মশক যতক্ষন না তার মালিক তাকে পেয়ে যায়।
৪৩৫১। আবূ তাহির (রহঃ) রাবিআ ইবনু আবূ আব্দুর রহমান (রহঃ) থেকে একই সুত্রে
মালেক (রাঃ)-এর হাদীসের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা
করেছেন যে, একব্যক্তি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এলঁ তখন আমি তার সঙ্গে
ছিলাম। সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো। বর্ণনাকারী বলেনঃ, আমর (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেনঃ যে, যখন এর
কোন দাবীদার না আসে তখন তা খরচ করে দেবে।
৪৩৫২। আহমাদ ইবনু উসমান ইবনু হাকীম আওদী (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালেদ জুহানী (রাঃ)
থেকে বর্ণিত যে, এক
ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এল অতঃপর তিনি
ইসমাঈল ইবনু জাফর (রাঃ) এর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি এও বলেছেনঃ, “তখন তাঁর
পবিত্র মুখমণ্ডল ও ললাট লাল হয়ে গেল এবং তিনি রাগান্বিত হলেন। আর তা এক বছর ঘোষণা
করবে। তারপর তিনি বলেছেনঃ, যদি এর মালিক না আসে, তবে তা
তোমার নিকট আমানত হিসেবে থাকবে।
৪৩৫৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) কানাব (রহঃ), রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবা যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সোনার অথবা রুপার হারানো বস্তু
প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেনঃ তুমি এর বন্ধন ও থলে চিনে রাখবে; তারপর এক
বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিবে। এরপরও যদি তুমি মালিকের সন্ধান না পাও, তবে তা
তুমি খরচ করতে পার। কিন্তু তা তোমার নিকট আমানত হিসেবে থাকবে। যদি কাল প্রবাহের
কোন দিন এর দাবীদার আসে তবে তা তুমি তাকে দিয়ে দিবে। তারপর সে হারানো উট সম্পর্কে
তাঁকে জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেনঃ এতে তোমার কী-! তুমি এ প্রসঙ্গ ছাড়। কেননা এর
সাথে এর জুতা আছে এবং পানি সংরক্ষণের থলে আছে। সে নিজেই পানির ঘাটে যেতে পারে এবং
বৃক্ষ থেকে খেতে পারে। অবশেষে একদিন তার মনিব তাকে পেয়ে যাবে। তারপর সে বকরি সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বললেনঃ তুমি সেটি নিয়ে যাও। কেননা, তা তুমি
নিবে অথবা তোমার ভাই নিবে অথবা নেকড়ে নিয়ে যাবে।
৪৩৫৪। ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। রাবীআ
(রহঃ) অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, ‘তিনি এতে এত রাগাম্বিত হলেন যে, তাঁর
গণ্ডদ্বয় লাল হয়ে গেল”। তারপর অবশিষ্ট হাদীস উল্লিখিত বর্ণনাকারীদের অনুরুপ বর্ননা
করেছেন। তিনি আরো বর্ণনা করেন যে, তারপর যদি এর মালিক আসে এবং তার থলে এবং
(মুদ্রার) সংখ্যা ও বন্ধন সঠিক ভাবে চিনতে পারে, তবে তাকে তা দিয়ে দিবে। অন্যথায় তা তোমারই।
৪৩৫৫। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে হারানো বস্তু প্রাপ্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেনঃ, তা তুমি এক
বছর পর্যন্ত প্রচার করবে। এর মধ্যে যদি সেটি চিনা যায় তবে তুমি এর থলে ও বন্ধন
চিনে রাখবে। তারপর তুমি তা খেতে পারবে। তারপর যদি তার মালিক আসে, তবে তা
তাকে দিয়ে দিবে।
৪৩৫৬। ইসহাক ইবনু মানূস (রহঃ) যাহহাক ইবনু উসমান (রহঃ) থেকে এই একই সুত্রে
বর্ণনা করেন। আর তিনি তাঁর হাদীসে বলেছেনঃ যে, যদি তা চিনা যায়, তবে তাকে তা দিয়ে দেবে। অন্যথায় তুমি তার থলে, তার বন্ধন, তার আবরণ ও
(মূদ্রার) সংখ্যা চিনে রাখবে।
৪৩৫৭। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার ও আবূ বাকর ইবনু নাফে (রহঃ) সুওয়ায়দ ইবনু গাফলা (রহঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমি এবং যায়িদ ইবনু সুহান ও সালমান ইবনু রাবীয়া
যুদ্ধে গিয়ে ছিলেন। আমি একটি ছড়ি পেয়ে তা উঠিয়ে নিলাম। তখন আমার সঙ্গীদ্বয় আমাকে
বললেনঃ, তুমি
তা রেখে দাও। আমি বললাম, না বরং আমি এটির ঘোষণা করব। যদি এটির মালিক
আসে তো ভাল, অন্যথায়
আমি এটি নিয়ে ব্যবহার করব। তিনি বলেনঃ, আমি উভয়ের কথা প্রত্যাখ্যান করলাম। তারপর যখন
আমরা যুদ্ধ থেকে ফিরে এলাম, তখন এক সময়, আমার হজ্জে যাওয়ার সুযোগ এল। তখন আমি মদিনায়
গেলাম এবং উবায় ইবনু কা”ব (রাঃ) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। আমি ছড়ির ঘটনা এবং
সঙ্গীদ্বয়ের কথা তাকে বললাম। তিনি বললেনঃ, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর যামানায় একটি থলে পেয়েছিলাম। তাতে একশ- দ্বীনার ছিল। আমি সেটি নিয়ে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ তুমি তা
এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা দেবে। বর্ণনাকারী বললেনঃ, আমি তার ঘোষণা দিলাম, কিন্তু তা
চিনে নিতে পারে এমন কাউকে পেলাম না। পরে আমি তার কাছে এলাম, তখন তিনি
বললেনঃ আরো এক বছর পর্যন্ত প্রচার কর। তারপরও আমি তার কোন দাবীদার গেলাম না।
তারপর আবার আমি তার কাছে এলাম। তখন তিনি বললেনঃ আরো এক বছর তার ঘোষণা দাও। তারপরও
আমি কাউকে সেটির দাবীদার পেলাম না। তিনি বললেনঃ তুমি এটির সংখ্যা, থলের তার
বন্ধন সংরক্ষণ করে রাখবে। যদি এর মালিক আসে, তবে ভাল। অন্যথায় তুমি তা ভোগ করবে। তারপর তা
আমি ভোগ করলাম। তারপর যখন মক্কায় এলাম তখন সেচির মালিকের সাক্ষাৎ পেলাম।
বর্ণনাকারী সন্দেহ করে বলেনঃ, আমার খেয়াল নেই যে, তিনি কি
তিন বছরের কথা বলেছিলেন, না এক বছরের।
৪৩৫৮। আবদুর রহমান ইবনু বিশর আবদী (রহঃ) সূওয়ায়দ ইবনু গাফলা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ,
একদা আমি যায়িদ ইবনু সোহান এবং সালমান ইবনু রাবীয়া (রহঃ) এর সাথে বের হলাম।
এবং আমি একটি ছড়ি পেলাম। তারপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের অনুরুপ (তা আমি ব্যবহার
করলাম-”) পর্যন্ত বর্ণনা করেন। শুবা (রাঃ) বলেনঃ, পরে আমি তাঁকে- দশ বছর পর বলতে শুনেছি যে, তিনি উহা
এক বছর পর্যন্ত প্রচার করেছিলেন।
৪৩৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নূমান
মুহাম্মাদ ইবনু হাতেম ও আব্দুর রাহমান ইবনু বাশর (রহঃ) সকলেই সালমা ইবনু কুহাইল
(রহঃ) থেকে একই সুত্রে শুবা (রাঃ) এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। উল্লিখিত
সকলের বর্ণিত হাদীসেই তিন বছর, কথাটি উল্লেখ আছে। আর সুফিয়ান, যায়িদ ইবনু
আবূ উনায়সা ও হাম্মাদ ইবনু সালামা (রহঃ) এর হাদীসে রয়েছে, ঁযদি কোন
ব্যক্তি এরপর আসে এবং তার গণনা, (থলে) ও তার বন্ধনের বর্ণনা দিতে পারে, তবে তাকে
তা দিয়ে দিবে।” আর সুফিয়ান (রহঃ) ওয়াকী (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে একটু অতিরিক্ত
বর্ণনা করেছেন, অন্যথায়
তা তোমার মালের মতই। আর ইবনু নূমাইর (রহঃ) এর বর্ণনায় অন্যথায় তুমি তা ব্যবহার
করতে পারবে বর্ণিত হয়েছে।
৪৩৬০। আবূ তাহির ও ইউনূস ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) আব্দুর রহমান ইবনু উসমান তায়মী
(রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজী দের হারান বস্তু তুলে নিতে
নিষেধ করেছেন।
৪৩৬১। আবূ তাহির ও ইউনূস ইবনু আব্দূল আলা (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ)
থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হারানো বস্তু উঠিয়ে রাখল সে
যদি তা প্রচার না করে তবে সে পথভ্রষ্ট।
৪৩৬২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যেন কোন ব্যক্তির পশুর দুধ তার অনুমতি
ব্যতীত দোহন না করে। তোমাদের কেউ কি ইহা পছন্দ করবে যে, তার
প্রকোন্ঠে কিছু সঞ্চিত হোক, তারপর অন্য কেউ তার ধনাগার ভেঙ্গে খাদ্য
সামগ্রী বের করে নিয়ে যাক। এমনিভাবে পশুদের স্তন, তাদের ধনাগার সূরুপ, তাতে তারা
তাদের খাদ্য সামগ্রী সঞ্চয় করে। অতঃপর, কেউ যেন কারো পশুর দুগ্ধ মালিকের অনুমতি ব্যতীত
দোহন না করে।
৪৩৬৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু
নূমাইর, আবূ
রাবি, আবূ
কামিল, যুহায়র
ইবনু হারব, ইবনু
আবূ উমার ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফে (রহঃ) সকলেই ইবনু উমার (রাঃ) এর সুত্রে নরী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মালেক (রাঃ) এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
কিন্তু লাইস ইবনু সা’দ (রহঃ) তার বর্ণিত হাদীসে এবং “তার খাদ্য সামগ্রী স্হানান্তর
করে নিয়ে যায়” অংশটি মালিক (রাঃ) এর বর্ণনার অনুরুপ বর্ণিত রয়েছে।
৪৩৬৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ শুরাইহ আদবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমার দু
কান শুনেছে এবং দু-চক্ষু দেখেছে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কথা বলছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে
সে যেন উত্তমরুপে আপন মেহমানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তখন সাহাবীগণ বললেনঃ-
ইয়া রাসুলুল্লাহ উত্তমরুপে মানে কী? তখন তিনি বললেনঃ, তার একদিন ও এক রাত্রি। আর (সাধারণভাবে)
মেহমানদারীর সময়কাল তিন দিন। এর চাইতে বেশি দিন মেহমানদারী করা, তার জন্য
সাদাকা স্বরুপ। তিনি আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন
(মেহমানের সাথে) উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে।
৪৩৬৫। আবূ কুরাইব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) আবূ শুরাইহ খোযাঈ (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মেহমানদারী তিন দিন এবং
উত্তমরুপে মেহমানদারী একদিন ও একরাত্রি কোন মুসলমান ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে সে
তার ভাই এর নিকট অবস্হান করে তাকে পাপে নিপতিত করবে। তখন সাহাবাগণ বললেনঃ, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! কিভাবে সে তাকে পাপে নিপতিত করবে। তিনি বললেনঃ, সে য
(মেহমান) তার নিকট (এমন সময়) অবস্হান করবে, অথচ তার (মেযবানের) নিকট এমন কিছু নেই, যদ্বারা এ
সে তার মেহমানদারী করবে।
৪৩৬৬। মুহাম্মাদ ইবনু মুছান্না (রহঃ) আবূ শুরায়হ খোযা-য়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ, আমার
দু-কান শুনেছে, আমার
দুচক্ষু দেখেছে এবং আমার অন্তর সুস্বণ রেখেছে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন। তারপর লাইস এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তাতে
তিনি উল্লেখ করেছেন,
কারো জন্যে বৈধ নয় , তার ভাই এর নিকট যততদিন অবস্হান করা, যা-তে সে
তাকে পাপে নিপতিত করে। বাকী অংশ ওয়াকী এর বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ।
৪৩৬৭। কুতাইবা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনু রুমহ (রহঃ) উভয়ে ওকবা ইবনু আমির
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমরা বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি আমাদের
(বিভিন্ন স্থানে) প্রেরণ করেন। আমরা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে উপনীত হই; যারা
আমাদের মেহমানদারী করে না। এ সম্পর্কে আপনি-কি মনে করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ যদি তোমরা কোন সম্প্রদায়ের কাছে উপনীত হও, আর তারা
তোমাদের জন্য এমন সব আসবাব পত্র প্রদান করার হুকুম করে যা মেহমানদারীর জন্য
প্রয়োজন, তবে
তোমরা তা গ্রহণ করবে। আর যদি তারা তা না করে তবে তোমরা তাদের থেকে মেহমানদারীর হক
আদায় করে নেবে, যা
তাদের করনীয়।
৪৩৬৮। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। এ সময় এক
ব্যক্তি সাওয়ারীতে আরোহণ করে তার কাছে এলো এবং ডানে-বামে তাকাতে লাগলো। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ- যার কাছে পরিভ্রমণের কোন
অতিরিক্ত যানবাহন থাকে, সে যেন তা দিযে তাকে সাহায্য করে, যার কোন
যানবাহন নেই। আর যার কাছে অতিরিক্ত খাদ্য সামগ্রী থাকে; সে যেন তা
দিয়ে তাকে সাহায্য করে যার খাদ্য সামগ্রী নেই। তারপর তিনি বিভিন্ন প্রকার সম্পদের
এরুপ বর্ণনা দিলেন। এমনকি আমাদের ধারণা হল যে, অতিরিক্ত সম্পদের মধ্যে আমাদের কারো কোন
অধিকার নেই।
৪৩৬৯। আহমাদ ইবনু ইউসুফ আযদী (রহঃ) সালামা (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ, আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে এক যুদ্ধে গিয়েছিলাম। তখন
আমাদের মধ্যে খাদ্যের অভাব দেখ। দিল। অবশেষে আমাদের কিছু সাওয়ারী যবেহ করতে মনস্হ
করেছিলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশে আমরা আমাদের
খাদ্য সামগ্রী একত্রিত করলাম। আমরা একটি চামড়া বিছালাম এবং এতে লোকদের খাদ্য
সামগ্রী জমা করা হল। বর্ণনাকারী বলেনঃ, আমি সেটির প্রশস্ততা অনুমান করার জন্য দাড়ালাম
এবং আমি আন্দাজ করলাম সেটি একটি ছাগল বসার স্থানের সমান। আর আমরা চৌদ্দশ”। রাবী
বলেনঃ, আমরা
সকলেই তৃপ্তির সাথে খেলাম। তারপর আমরা আমাদের নিজ নিজ খাদ্য রাখার থলে পুর্ণ করে
নিলাম। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র জন্য
কি পানি আছে। বর্ণনাকারী বলেনঃ, এক ব্যক্তি তার পাত্রে সামান্য পানি নিয়ে এগিয়ে
এল। তিনি তা একটি বড় পাত্রে ঢেলে দিলেন। এরপর আমরা চৌদ্দশ লোক সকলেই তার থেকে
পানি ঢেলে ঢেলে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলাম। তারপর আরো আটজন লোক এসে বললো, ওযুর জন্য
কি পানি আছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উযূ
(ওজু/অজু/অযু) শেষ হয়ে গেছে।