৬৫৩৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিলাওয়াত করলেনঃ “তিনই তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যার কতক আয়াত সুম্পষ্ট দ্যর্থহীন; এইগুলো কিতাবের মূল অংশ আর অন্যগুলো রুপক। যাদের অন্তরে সত্য-লংঘন প্রবণতা রয়েছে, শুধু উভই ফিতনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা রুপক তার অনুসরণ করে। বস্তুতঃ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না; আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, আমরা এতে বিশ্বাস করি, সমস্তই আমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে আগত এবং বোধশক্তি সস্পন্নরা ব্যতীত অপর কেউ শিক্ষা “গ্রহণ করে না। ” (৩- ৭) তিনি (আয়িশা) বললেন, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সে সব লোকদের দেখতে পাবে যারা সা’দৃশ্যপূর্ণ আয়াতের অর্থের সন্ধানে ব্যাপৃত, এরাই সে সব ব্যক্তি, যাদের কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন, তখন আমরা তাদের থেকে দূরে থাকবো।
৬৫৩৪। আবূ কামিল ফূযায়ল ইবনু
হুসায়ন জাহদারী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে গেলাম। তিনি বলেন, তখন
তিনি কুরআনের একটি আয়াত সম্পর্কে দু’ব্যক্তির মতবিরোধের আওয়ায শুনতে পান।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের মাঝে আসলেন, তখন তাঁর চেহারায় গোস্যার চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল।
তিনি বললেনঃ তোমাদের পূর্ববতীরা আল্লাহর কিতাবে মতবিরোধ করার দরুণ ধ্বংস হয়ে
গিয়েছে।
৬৫৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) জুনদুব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেনঃ তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক যতক্ষন পর্যন্ত না তোমাদের অন্তর ও মুখ
অনুকুল থাকে। আর যখন অন্তর ও মুখ প্রতিকুল হয় তখন উঠে যাবে।
৬৫৩৬। ইসহাক ইবনু মানসূর
(রহঃ) জুনদুব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যতক্ষন পর্যন্ত তোমাদের অন্তরের আকর্ষণ
বদ্ধমূল থাকে ততক্ষন কুরআন তিলাওয়াত কর। আর যখন প্রতিকুলতা এসে পড়ে তখন উঠে যাবে।
৬৫৩৭। আহমাদ ইবনু সাঈদ ইবনু
সাখার দারেমী (রহঃ) আবূ ইমরান (রাঃ) বলেন, আমরা
কুফাতে ছোট ছিলাম। তখন জুনদুব (রাঃ) বলেন যে, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক তাদের
দুজনের হাদীসের অনুরুপ।
৬৫৩৮। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও ওয়াকী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা মন্দ সেই ব্যক্তি, যে সর্বাপেক্ষা ঝগড়াটে।
৬৫৩৯। সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের
নীতি-পদ্ধতি পুরোপুরিভাবে অনুসরণ করবে, এক
বিঘত এক বিঘতের সাথে ও হাত হাতের সাথে, এমনকি
তারা যদি তিনি সাপের গর্তে প্রবেশ করে থাকে তাহলেও তোমরা তাদের অনুসরণ করবে। আমরা
আরয করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! পূর্ববর্তী উম্মাত বলতে তো আমাদের কতিপয় সংগী (রহঃ) যায়িদ
ইবনু আসলাম (রহঃ) থেকে এই সনদে তার অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ)-এর সুত্রে যায়িদ ইবনু আসলাম (রহঃ) তাঁর অনুরুপ হাদীস
উল্লেখ করেছেন।
৬৫৪০। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেনঃ অতিশয় উক্তিকারী ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি এই কথাটি তিনবার বলেছেন।
৬৫৪১। শায়বান ইবনু ফাররুখ
(রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেনঃ কিয়ামতের আলামত সমূহের অন্যতম হল ইলম উঠে যাওয়া, মুর্খতা প্রতিষ্ঠিত হওয়া, মদ্যপান ও ব্যাভিচারের প্রসার ঘটা।
৬৫৪২। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রাঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের কাছে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করব, যা আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি এবং আমার পরে কেউ
তা তোমাদের কাছে বর্ণনা করেনি? আমি তাঁর কাছে শুনেছি যে, কিয়ামতের আলামত সমূহের অন্যতম হচ্ছে ইলম উঠে
যাবে, মূর্খতা প্রকাশ পাবে, যিনা বিস্তৃত হবে, মদ্যপান প্রচলিত হবে, পূরুষ (এর সংখ্যা) হরাস পাবে, নারীরা অবশিষ্ট থাকবে, এমনকি পঞ্চাশ জন নারীর জন্য একজন পুরুষ
তত্ত্বাবধায়ক থাকবে।
৬৫৪৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) অন্য সুত্রে আবূ কুরায়ব (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু বিশর ও আবাদা (রহঃ) বর্ণিত
হাদীসে তো তোমাদের কাছে আমার পরে কেউ বর্ণনা করবে না। আমি রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ উল্লেখ আছে। এরপর তিনি (আবদা) তার
অনুরুপ উল্লেখ করেছেন।
৬৫৪৪। মুহাম্মাদ ইবনু
আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও আবূ সাঈদ আশাজ্জ (রহঃ) আবূ ওয়ায়িল (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ও আবূ মূসা আশ
আরী (রাঃ) -এর সংগে উপবিষ্ট ছিলাম। তারা উভয়ে বললেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের নিকটবর্তী কালে এমন এক সময়
আসবে যখন ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে। সে সময় মূর্খতা অবতীর্ণ হবে এবং ‘হারাজ’ বৃদ্ধি
পাবে। হারাজ মানে হত্যা।
৬৫৪৫। আবূ বকর ইবনু নাদর
ইবনু আবূ নাদর (রহঃ) আবদুল্লাহ ও আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কাসিম ইবনু যাকারিয়া (রহঃ)
শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
আবদুল্লাহ (রাঃ) ও আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ)-এর সংগে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তাঁরা হাদীস
আলোচনা করছিলেন। তাঁরা বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ এরপর তারা ওয়াকীহ ও ইবনু নুমায়র (রাঃ) -এর হাদীসের
অনুরুপ বর্ণনা করেন।
৬৫৪৬। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা, আবূ কুলায়ব, ইবনু নূমায়র ও ইসহাক হানযালী (রহঃ) আবূ মূসা
(রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৬৫৪৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
আবূ ওয়ায়িল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
আবদুল্লাহ (রাঃ) ও আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) -এর সংগে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তাঁরা হাদীস
আলোচনা করছিলেন। আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার অনুরুপ বলেছেন।
৬৫৪৮। হারামালা ইবনুুইয়াহইয়া
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের সময় নিকটবর্তী হলে ইলম উঠিয়ে
নেওয়া হবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে, কৃপণতা পাবে এবং হারাজ বেড়ে যাবে। লোকেরা বলল, হারাজ, কি? তিনি বললেন, কতল
(হত্যা)।
৬৫৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর
রহমান দারেমী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেছেনঃ যুগ নিকটবর্তী, ইলম হরাস পাবে। এরপর তার
অনুরুপ উল্লেখ করেন।
৬৫৫০। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত যে, নাবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যুগ নিকটবর্তী হলে ইলম উঠিয়ে নেওয়া
হবে। এরপর মামার (রহঃ) তাদের ইউনুস ও শুআয়ব) এর হাদীসের অনুরুপ উল্লেখ করেন।
৬৫৫১। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর, ইবনু নুমায়র,আবূ
কুরায়ব ও আমর নাকিদ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবূ তাহির (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বলেন, যুহরী হুমাইদ থেকে আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে
বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ। তবে সালিম, হাম্মাম
ও আবূ ইউনূস (রহঃ) (কৃপণতা ছড়িয়ে পড়বে) কথাটি উল্লেখ করেননি।
৬৫৫২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) -কে বলতে ওনেছি। তিনি বলেছেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা মানুষের অন্তর
থেকে ইলম কেড়ে নেবেন না। তবে তিনি আলিম শ্রেনীকে কবয করে ইলম তুলে নেবেন। যখন কোন
আলিম থাকবে না তখন লোকেরা মূর্খ লোকদের নেতা বানিয়ে নেবে। তাদের কাছে ফাতওয়া
চাওয়া হবে এবং তারা না জেনে ফাতওয়া দিবে। এতে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে এবং
লোকদেরও পথভ্রষ্ট করবে।
৬৫৫৩। আবূ রাবী আতাকী, ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব আবূ
কুরায়ব ইবনু আবূ উমর, মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও আবূ
বকর ইবনু নাফি (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) থেকে জারীর বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ। হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) উমর ইবনু
আলী (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে এইটুকু বাড়িয়ে বলেছেন। এরপর আমি (উরওয়া) এক বছরের মাথায়
(পরে) আবদুল্লাহ ইবনু আমর(রাঃ) -এর সংগে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলামঃ
তিনি হাদীসটি যেমন বলেছিলেন, আমাকে অনুরুপ বললেন। তিনি
বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি।
৬৫৫৪। মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আতস (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে হিশাম ইবনু উরওয়া বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ।
৬৫৫৫। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
তুজায়বী (রহঃ) উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আয়িশা (রাঃ) বললেন, হে আমার ভগ্নীপূত্র! আমার কাছে খবর এসেছে যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) আমাদের সংগে হজ্জ
পালন করতে এসেছেন। তুমি তাঁর সংগে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসা কর। কেননা, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
-থেকে বহু জ্ঞান অর্জন করেছেন। তিনি (উরওযা) বলেন, তখন
আমি তাঁর সংগে সাক্ষাৎ করে তাঁর নিকট এমন অনেক বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, যা তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। উরওয়া (রহঃ) বলেন, সে
সব বিষয়ের মধ্যে একটি ছিল এই যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা মানুষের কাছ থেকে ইলম উঠিয়ে নেবেন না। তবে তিনি
আলিমদের কবয করে নেবেন। সুতরাং তাদের সংগে ইলমও উঠে যাবে। আর মানুষের মাঝে অবশিষ্ট
থাকবে জাহিল নের্তৃবৃন্দ। তারা-না জেনে লোকদের ফাতওয়া দিবে। ফলে তারা গোমরাহ হবে
এবং তাদেরও গোমরাহ করবে। উরওয়া (রহঃ) বলেন, আমি
যখন এই হাদীসটি আয়িশা (রাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করলাম তখন তিনি একে শুরুড়ত্ব পূর্ণ
মনে করলেন এবং অস্বীকার করে বললেন, তিনি
(আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) কি তোমাকে হাদীস শুনিয়েছেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) -কে এটি বলতে শুনেছেন? উরওয়া
(রহঃ) বললেন, যখন এক আগন্তুক এল তখন তিনি
তাকে (উরওয়া কে) বললেন, নিশ্চয়ই ইবনু আমর (রাঃ) আগমন
করেছেন। তার সংগে সাক্ষাৎ কর। এরপর তাকে সেই হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কর যা ইলম
বিষয়ে তিনি তোমার কাছে উল্লেখ করেছেন। উরওয়া (রহঃ) বললেন, তখন আমি তার সংগে দেখা করে তাঁকে জিজ্ঞাসা
করলাম। তখন তিনি তা আমার কাছে উল্লেখ করলেন, যেমন
প্রথমবার তা বর্ণনা করেছিলেন। উরওয়া বলেন, যখন
আমি তাকে (আয়িশা (রাঃ) কে) বিষয়টি অবহিত করলাম তখন তিনি বললেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) -কে সত্যবাদী বলে
জানি এবং তিনি এই হাদীসে কিছু মাত্র বেশী কিংবা কম করেননি।
৬৫৫৬। যূহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কয়েকজন বেদুঈন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এল। তাদের পরিধানে ছিল পশমী বস্ত্র। তিনি তাদের
শোচনীয় অবস্হা দেখলেন। তারা ছিল অভাবে পতিত। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) লোকদের (তাদেরকে) দান-খয়রাত করার জন্য উৎসাহিত করলেন। লোকেরা সাদাকা
দিতে ইতস্তত করছিল। এমনকি এর প্রতিক্রিয়া তাঁর চেহারায় প্রতিভাত হল। রাবী বলেন, এরপর একজন আনসারী ব্যক্তি একটি রুপার (টাকার)
থলে নিয়ে এলেন। এরপর আরেকজন এলেন। এরপর একের পর এক আসতে লাগলেন, অবশেষে তার চেহারায় খুশীর চিহ্ন ফূটে উঠল। তখন
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামে কোন ভাল
রীতি প্রচলন করবে এবং পরবর্তীকালে সে অনুযায়ী আমল করা হয় তাহলে আমলকারীর
পূরুস্কারের সমপরিমাণ সাওয়াব তার জন্য লিপিবদ্ধ করা হবে। এতে তাদের পূরস্কারে কোন
রুপ ঘাটতি হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন রীতি প্রচলন করবে এবং তারপরে সে অনুযায়ী
আমল করা হয় তাহলে ঐ আমলকারীর মন্দ ফলের সমপরিমাণ গুনাহ তার জন্য লিপিবদ্ধ করা হবে।
এতে তাদের গুনাহ কিছুমাত্র হরাস হবে না।
৬৫৫৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ)
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খুতবা দিলেন এবং লোকদের সাদাকা করার জন্য
উৎসাহিত করলেন। এরপর জারীর বর্নিত হাদীসের মর্ম অনূযায়ী।
৬৫৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার
(রহঃ) জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা কোন ভাল কাজের প্রচলন করে
না, যার উপর তার পরে আমল করা হয়। এরপর তিনি পূরো
হাদীসটি উল্লেখ করেন।
৬৫৫৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর
কাওয়ারীরী, আবূ কামিল ও মুহাম্মাদ ইবনু
আবদুল মালিক (রহঃ) জারীর (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
থেকে বর্ণিত। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) অন্য সুত্রে আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আরেক সুত্রে উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) জারীর (রাঃ) সুত্রে নাবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এই হাদীসের অনুরুপ।
৬৫৬০। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হিদায়াতের দিকে আহবান জানায়
তার জন্য সে পথের অনুসারীদের পূরস্কারের অনুরুপ পূরস্কার রয়েছে। এতে তাদের
পূরস্কার থেকে কিছুমাত্র ঘাটতি হবে না। আর যে ব্যক্তি গোমরাহীর দিকে আহবান জানাবে
তার উপর সে পথের অনুসারীদের গোনাহের অনুরুপ গোনাহ বর্তাবে। এতে তাদের গোনাহসমুহ
কিছুমাত্র হালকা হবে না।