জুমআ

১৮২৪ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া তামিমী, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনু মুহাজির ও কুতায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ)- থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ জুমুআর সালাতে যেতে ইচ্ছা করলে সে যেন গোসল করে নেয়।
১৮২৫ কুতায়বা ইবনু যাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের কেউ জুমুআয় এলে সে যেন গোসল করে নেয়।
১৮২৬ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৮২৭ হারামালা ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে অনুরুপ বলতে শুনেছি।
১৮২৮ হারামালা ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) জুমুআর দিনে সমবেত লোকদের সামনে খুৎবা প্রদান করছিলেন। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীদের মধ্য হতে জনৈক ব্যাক্তি মসজিদে প্রবশে করলেন। উমর (রাঃ) তাকে জোরে ডেকে বললেন, এই কোন সময়? ঐ ব্যাক্তি বললেন, আমি আজ কাজে ব্যস্ত ছিলাম, ঘরে ফিরে না যেতেই আযান শুনতে পেলাম, তাই আমি উযূ (ওজু/অজু/অযু)র অতিরিক্ত কিছুই করতে পারি নি। উমর (রাঃ) বললেন; শুধুমাত্র ওযুই করেছ। অথচ তোমার জানা আছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করে আসার জন্য আদেশ করতেন।
১৮২৯ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুমুআর দিনে উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) লোকদের সামনে খুৎবা প্রদান করছিলেন, তখন উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) মসজিদে প্রবেশ করলেন। উমর (রাঃ) তারপ্রতি ইংগিত করে বললেনঃ ঐ সমস্ত লোকের কি অবস্হা, যারা আযান হয়ে যাওয়ার পর মসজিদে আগমনে বিলম্ব করে। উসমান (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আযান শোনার পর আমি উযূ (ওজু/অজু/অযু)র অতিরিক্ত আর কিছু করি নি। অতঃপর এসে গিয়েছি। উমর (রাঃ) বলেলেন, আপনি কেবল ওযুই করেছেন। আপনারা কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেন নি? তিনি বলেছেন, তোমাদের কেউ জুমুআর জন্য আগমন করলে অবশ্য গোসল করে নিবে।
১৮৩০ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,জুমুআর দিনে গোসল করা প্রত্যেক সাবালক ব্যাক্তির উপর ওয়াজিব।
১৮৩১ হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুসলমানগণ তাদের স্ব স্ব গৃহ হতে এবং আওয়াল (মদিনার নিকটবর্তী চতূর্পার্শের গ্রাম সমূহ) হতে জুমুআর জন্য আগমন-করতেন। তারা আবা পরিধান করে আসতেন। এগুলিতে ধুলাবালি লেগে যেত এবং ঘাম মিশ্রিত হয়ে এগুলি হতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ত। এদের মধ্যহতে এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আগমন করল। তখন তিনি আমার গৃহে ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা যদি এদিনের জন্য অধিক পবিত্রতা হাসিল করতে? (তবে কতই না উত্তম হত)।
১৮৩২ মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবী ছিলেন। তাদের কাজের জন্য অন্য কোন লোক ছিল না। তাদের ঘর্মাক্ত দেহে দুর্গন্ধ ও উকুন হয়ে যেত, তখন তাদেরকে বলা হল, তোমরা যদি জুমুআর জন্য গোসল করে নিতে তা হলে ভাল হত।
১৮৩৩ আমর ইবনু সাওয়াদ আমিরী (রহঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক সাবালক ব্যাক্তির উপর শুক্রবারে গোসল করা ও মিসওয়াক করা কর্তব্য এবং সামর্থ অনুযায়ী সুগন্ধি ব্যবহার করবে। তবে বুকায়র আব্দুর রহমানের নাম উল্লেখ করেননি এবং সুগন্ধির ব্যাপারে বলেছেন, নিজের স্ত্রীর সুগন্ধি হলেও (তা করবে)।
১৮৩৪ হাসান হুলওয়ানী ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) তাঊস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। ইবনু আব্বাস (রাঃ) জুমুআর দিনে গোসল করা সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী উল্লেখ করেন। তাঊস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, সুগন্ধি ব্যবহার করবে অথবা তৈল ব্যবহার করবে যদি এ তার পরিবারে মউযূ (ওজু/অজু/অযু)দ থাকে? তিনি উত্তর দিলেন আমি তা জানি না।
১৮৩৫ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও হারুন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) উভয়ে ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে উক্ত সনদে হাদীস বর্ণনা করেন।
১৮৩৬ মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমানের উপর আল্লাহ পাকের হক হল প্রতি সাত দিন অন্তর গোসল করবে, মাথা ও শরীর ধৌত করবে।
১৮৩৭ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি জুমুআর দিনে জানাবাতের মত গোসল করবে, অতঃপর দিনের প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করবে, সে যেন আল্লাহর পথে একটি উটনী কুরবানী করল। আর যে ব্যাক্তি পরবর্তী সময়ে গমন করল সে যেন গাভী কুরবানী করল। যে ব্যাক্তি তারপর গমন করল সে যেন একটা ভেড়া কুরবানী করল। যে ব্যাক্তি তারপর গমন করল সে যেন একটা মুগরী কুরবানী করল। যে ব্যাক্তি তারপর গমন করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। ইমাম যখন খুৎবা প্রদানের জন্য বের হন তখন ফিরিশতাগণ মনোযোগ সহকারে খূৎবা শোনার জন্য উপস্থিত হন।
১৮৩৮ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনু মুহাজির (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমুআর দিনে ইমামের খুৎবা প্রদানকালে তুমি যদি তোমার সঙ্গীকে বল চুপ থাক- তরে তুমি অনর্থক কথা বললে।
১৮৩৯ আব্দুল মালিক ইবনু শুআয়ব ইবনু লায়স (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি উক্ত হাদীসের অনুরুপ।
১৮৪০ মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উক্ত হাদীসের উভয় সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে রাবী ইবনু জুরায়য (রহঃ) বলেছেন, ইবরাহীম ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কারীয।
১৮৪১ ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমুআর দিন ইমাম খুৎবা দেওয়ার সময় তুমি যদি তোমার সাহলকে বল চুপ থাক- তাহলে তুমি অনর্থক কথা বললে। আবূ যিনাদ (রহঃ) বলেন, শব্দটি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর গোত্রের ভাযা। প্রকৃতপক্ষে তা হবে ।
১৮৪২ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিন সম্পর্কে আলোচনা করলেন এবং বললেন, তাতে এমন একটি মুহত্ব আছে, কোন মুসলিম বান্দা সালাত রত অবস্থায় সে মুহূর্ত পেলে আল্লাহর নিকট কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাকে তা দিবেন। কুতায়বা বর্ণিত রিওয়ায়াতে এটুকু অতিরিক্ত রয়েছে যে, হাত দ্বারা ইশারা করে সময়ের স্বল্পতা বুঝিয়েছেন।
১৮৪৩ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমুআর (দিবসে) এমন একটি মুহত্ব রয়েছে, কোন মুসলিম বান্দা সালাতে দাঁড়ান অবস্হায় সে মুহত্বটি পেলে এবং আল্লাহর নিকট কোন সাওয়াব প্রার্থনা করলে, আল্লাহ অবশ্যই তাকে তা দিবেন এবং হাত দ্বারা ইশারা করে – সময়ের স্বল্পতা বর্ণনা হয়েছে।
১৮৪৪ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উপরোক্ত হাদীঁসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৮৪৫ হুমায়দ ইবনু মাসআদা বাহিলী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন।
১৮৪৬ আবদুর রহমান ইবনু সাল্লাম জুমাহী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমুআর দিনে একটি বিশেষ মুহুত্ব রয়েছে। কোন মুসলমান সে মুহূর্তটিতে আল্লাহর নিকট কোন কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাকে দিবেন। এ মুহুত্বটি অতি অল্প।
১৮৪৭ মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সুত্রে বর্ণিত। এ বর্ণনায় তিনি “এ মুহূর্তটি অতি অল্প উল্লেখ করেননি”।
১৮৪৮ আবূ তাহির, আলী ইবনু খাশরাম, হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রাঃ) আবূ বুরদা ইবনু আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমারঃ পিতাকে জুমুআর দিনের বিশেষ মুহত্বটি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছ কি? আমি বললাম, হাঁ, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ইমামের বলা থেকে সালাত শেষ করার মধ্যবর্তী সময়ে।
১৮৪৯ হারামালা ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রা,) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দিনগুলোর মধ্যে যাতে সূর্য উদয় হয় তন্মধ্যে জুমুআর দিনই সর্বোত্তম। সে দিন আদমকে সৃষ্টি করা হয়। সে দিনে জান্নাতে প্রবেশ করান হয় এবং সে দিনে জান্নাত হতে বের করা হয়।
১৮৫০ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূর্য উদয়ের দিবসগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমুআর দিবস। সে দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়। তাকে ঐ দিন জান্নাতে প্রবেশ করান হয়। তাঁকে তা থেকে ঐ দিন বের করা হয়। আর কিয়ামত ও হবে জুমূআর দিবসে।
১৮৫১ আমরুন নাকিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের আগমন ঘটেছে সবার শেষে কিন্তু কিয়ামতের দিনে আমরা অগ্রগামী থাকব। সকল উম্মা তকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পুর্বে এবং আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের পর। তারপর যে দিবসটি আল্লাহ আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে সে দিবস সষ্পর্কে হিদায়াত দান করেছেন। অন্যেরা এ বিষয়ে আমাদের পাশ্চাতে রয়েছে। ইয়াহুদীরা পরের দিন নাসারারা তারও পরে।
১৮৫২ ইবনু উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুনিয়াতে আমাদের আগমন ঘটেছে সবার শেষে। কিন্তু কিয়ামতের দিনে আমরা অগ্রগামী থাকব। পূর্বের হাদীসে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৮৫৩ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের আগমন সবার শেষে। কিন্তু আমরা কিয়ামতের দিবসে থাকব সবার প্রথমে জান্নাতে প্রবেশ কারীদের মধ্যে অগ্রগামী। তবে তাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে এবং আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের পর। তারা মতবিরোধ করেছে, আর আল্লাহ পাক আমাদেরকে বিরোধপূর্ণ বিষয়ে হিদায়াত দিয়েছেন সত্যের ব্যাপারে। এ হল ঐ দিন সষ্পর্কে তারা মতবিরোধ করেছে এবং আল্লাহ আমাদেরকে এ ব্যাপারে হিদায়াত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের জন্য জুমুআর দিন। ইয়াহুদীদের পরের দিন, নাসারারা তারও পরে। ১৮৫৪ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , আমাদের আগমন সবার শেষে কিন্তু কিয়ামতের দিনে থাকব সবার প্রথমে। তবে তাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্ব এবং আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের পর। এ হল তাদের ঐ দিন যা তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু এতে তারা মতানৈক্য করল কিন্তু আল্লাহ এ বিষয়ে আমাদের সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন। তারা এ বিষয়ে আমাদের পশ্চাতবর্তী। ইয়াহুদীদের জন্য কাল (শনিবার) এবং নাসারাদের জন্য এর পরের দিন (রোববার)।
১৮৫৪ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , আমাদের আগমন সবার শেষে কিন্তু কিয়ামতের দিনে থাকব সবার প্রথমে। তবে তাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্ব এবং আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের পর। এ হল তাদের ঐ দিন যা তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু এতে তারা মতানৈক্য করল কিন্তু আল্লাহ এ বিষয়ে আমাদের সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন। তারা এ বিষয়ে আমাদের পশ্চাতবর্তী। ইয়াহুদীদের জন্য কাল (শনিবার) এবং নাসারাদের জন্য এর পরের দিন (রোববার)।
১৮৫৫ আবূ কুরায়ব ও ওয়াসিল ইবনু আবূল আলা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা উভয় বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ পাক জুমুআর দিনের ব্যাপারে আমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সঠিক পথের সন্ধান দেননি। ইয়াহুদীদের জন্য হল শনিবার এবং নাসারাদের জন্য রোববার। আল্লাহ পাক আমাদেরকে (এ পৃথিবীতে) পাঠালেন এবং জুমুআর দিন সম্পর্কে সঠিক পথ দেখালেন এবং জুমুআ, শনিবার ও রোববারকে ধারাবাহিক করে দিলেন। এভাবে তারা কিয়ামত দিবসে আমাদের পেছনে থাকবে। দুনিয়াবাসীদের মধ্যে আমাদের আগমন ঘটেছে সবার শেষে এবং কিয়ামতের দিবসে আমরা থাকব সবার প্রথমে। সকল সৃষ্টির মধ্যে প্রথমে আমাদের ফয়সালা করা হবে। আর ওয়াসিলের বর্ণনায় সবার মধ্যে।
১৮৫৬ আবূ কুরায়ব হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমুআর ব্যাপারে আমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করা হয়েছে এবং আল্লাহ আমাদের পূর্ববর্তীদেরকে হিদায়াত করেননি। অতঃপর ইবনু ফুযায়লের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করা হয়েছে।
১৮৫৭ আবূ তাহিল, হারামালা ও আমর ইবনু সাওয়াদ আন-আমিরী (রহঃ) আবূ আবদুল্লাহ আগার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, শুক্রবার দিন মসজিদের প্রতিটি দরজায় ফিরিশ্তারা অবস্হান গ্রহণ করে এবং আগমনকারীদের নাম ক্রমানূসারে লিপিবদ্ধ করতে থাকে। ইমাম যখন (মিম্বরে) বসেন, তারা শুটিয়ে নেয় এবং যিকর (খূৎবা) শোনার জন্য আসেন। মসজিদে যে আগে আসে তার উদাহরণ সে ব্যাক্তির মত যে একটি উটনী কুরবানী করেছে। তার পরবর্তী জনের। দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি গাভী কুরবানী করেছে। তার পরবর্তী জলের দৃষ্টান্ত তার মত যে ভেড়া কুরবানী করল এবং তার পরবর্তী জনের দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি মুরগি দান করল। পরবর্তী জনের দৃষ্টান্ত তার মত যে একটি ডিম দান করল।
১৮৫৮ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহিয়া ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হার্দীস বর্ণনা করেছেন।
১৮৫৯ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মসজিদের প্রতিটি দরজায় ফিরিশ্তা নিয়োজিত রয়েছেন। যারা প্রথমে আসে তাদের নাম ক্রমানূসারে লেখা হয়। (মসজিদে প্রথমে আগমনকারীর) দৃটান্ত দেয়া হয়েছে উটের কুরবানী সাথে। (এভাবে) পর্যাক্রমে দৃটান্ত দিয়েছেন। এমনকি একটি ডিমের মত ক্ষুদ্র বস্তু দানের উপমা দিয়েছেন। ইমাম যখন মিম্বরে বসেন তখন ফিরিশতাগণ লিপিসমুহ গুটিয়ে নেন এবং তাঁরা যিকর শোনার জন্য উপস্থিত হন।
১৮৬০ উমাইয়া ইবনু বিসতাম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমুআর দিনে যে ব্যাক্তি গোসল করে অতঃপর জুমুআর জন্য যায় এবং সমর্থ অনুযায়ী সালাত আদায় করে, এরপর ইমাম খূৎবা সমাপ্ত করা পর্যন্ত নীরবে থাকে, এরপর ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করে। তবে তার এ জুমুআ হতে পরবতীঁ জুমুআ পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরো তিন দিনের শুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।
১৮৬১ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি উত্তমরুপে ওযু করে, এর পর জুমুআতে আসে, মনোনিবেশ সহকারে নীরব থাকে, তবে তখন থেকে (পরবর্তী)জুমুআ পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরো তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। যে (অহেতুক) কংকর স্পর্শ করল সে অনর্থক কাজ করল।
১৮৬২ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে (জুমুআর) সালাত আদায় করে প্রত্যার্বতন করতাম এবং আমাদের উষ্ট্রীকে বিশ্রাম করতে দিতাম। হাসান (রহঃ) বলেন, আমি জাফর (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কোন মুহূর্তে হত? তিনি বললেন, সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পর।
১৮৬৩ কাসিম ইবনু যাকারিয়া ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্দুর রহমান আদ দারিমী (রহঃ) জাফর (রহঃ) থেকে তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণিত যে, তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সময়ে জুমুআর সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, জুমুআর সালাত আদায় করার পর আমরা আমাদের উটগুলোর দিকে প্রত্যাবর্তন করতাম এবং সেগুলোর বিশ্রামের ব্যবস্হা করতাম। আবদুল্লাহর বর্ণনায় একথা অতিরিক্ত আছে যে, “যখন সূর্য ঢলে যেত”। উটগুলো ছিল পানি বহনকারী উট।
১৮৬৪ আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা’নাব, ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা দুপুরের সালাত ছাড়া দুপুরের আহার ও বিশ্রাম করতাম না। ইবনু হুজর (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় অতিরিক্ত বলেছেন যে,- “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে”।
১৮৬৫ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া ও ইসহাক ইবরাহীম (রহঃ) সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূর্য মধ্যাকাশ হতে ডলে যাওয়ার, পর আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে জুমুআর সালাত আদায় করতাম। এর পর ছায়া অনুসরণ করতে করতে প্রত্যাবর্তন করতাম।
১৮৬৬ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে জুমুআর সালাত আদায় করতাম এবং প্রত্যাবর্তন করতাম। তখন আমাদের ছায়া গ্রহন করার মত প্রাচীরে কোন ছায়া হত না।
১৮৬৭ উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর কাওয়ারীরী ও আবূ কামিল জাহদারী (রাঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিনে দাঁড়িয়ে খূৎবা দিতেন। এরপর বসে পূনরায় দাঁড়াতেন যেমন তোমরা বর্তমানে করে থাক।
১৮৬৮ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া, হাসান ইবনু রাবী ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর-খুৎবা হত দু’টি। তিনি উভয়ের মাঝে বসতেন। কুরআন পাঠ করতেন এবং লোকদের উপদেশ দিতেন।
১৮৬৯ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খূৎবা দিতেন। এর পর বসে পূনরায় দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন। যে ব্যাক্তি তোমাকে বলে যে, তিনি বসে খুৎবা দিতেন সে মিথ্যা বলেছে। আল্লাহর কসম, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে দু-হাজারের ও অধিক বার সালাত আদায় করেছি।
১৮৭০ উসমান ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিনে দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন। একবার সিরিয়া হতে একটি ব্যবসায়ী দল এসে পৌছল। সংবাদ পেয়ে ১২ জন লোক ব্যতীত সবাই সে দিকে ছুটে গেল। তখন সূরা জুমুআর এ আয়াতটি অবর্তীর্ণ হলঃ “যখন তারা দেখল ব্যবসায় ও কৌতুক তখন তারা তোমাকে দাঁড়ান অবস্হায় রেখে সে দিকে ছুটে গেল। (৬২:১১)
১৮৭১ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) হুসায়ন (রহঃ) থেকে উপরোক্ত সনদে বর্ণিত। রাযী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুৎবা দিতেন। “কিন্তু তিনি দাড়িয়ে– এ শব্দটি বলেননি।
১৮৭২ রিফা’আ ইবনু হায়সাম ওয়াসিতী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা জুমুআর দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন কিছু ছাতূর চালান এসে পৌছল। লোকেরা সে দিকে বেরিয়ে গেল। কেবলমাত্র বার জন থাকল। আমি। ছিলাম তাদের মধ্যে একজন। রাবী বলেন, তখন আল্লাহ পাক এ আয়াত নাযিল করলেন-“যখন তারা দেখল ব্যবসায় ও কৌতুক তখন তারা তোমাকে দাঁড়ান অবস্হায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। (৬২:১১)
১৮৭৩ ইসমাঈল ইবনু সালিম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা জুমুআর দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ান ছিলেন। তখন একটি বাণিজ্য কাফেলা এসে মদিনায় পৌছল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ সে দিকে ছুটে গেলেন। এমনকি মাত্র বারজন যাদের মধ্যে আবূ বাকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) ব্যতীত আর কেউ ছিলেন না। রাবী বলেন, তখন এ আয়াত নাযিল হল “যখন তারা দেখল ব্যবসায় ও কৌতুক তখন তারা সে দিকে ছুটে গেল।
১৮৭৪ মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ উবায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন আব্দুর রহমান ইবনু উম্মুল হিকাম বসে খুৎবা দিচ্ছে। এখন তিনি বললেন, দেখুন এই অধমের প্রতি সে বসে খূতবা দিচ্ছে অথচ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেনঃ “যখন তারা দেখল ব্যবসায় ও কৌতুক তখন তারা তোমাকে দাড়ান অবস্হায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল–। (৬২:১১)
১৮৭৫ হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত যে, তাঁরা উভয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে মিম্বরের সিঁড়িতে বলতে শুনেছেন, যারা জুমুআ পরিত্যাগ করে, তাদেরকে এ কাজ হাত অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। নতুবা আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। অতঃপর তারা অবশ্যই গাফিলদের অন্তরভুক্ত হয়ে যাবে।
১৮৭৬ হাসান ইবনু রাবী ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। তার সালাত ও খূৎবা ছিল মধ্যম ধরনের (দীর্ঘও নয় একেবারে সরূক্ষিপ্ত নয়)।
১৮৭৭ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) জাবির সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। তার সালাত ও খুৎবা ছিল মধ্যম ধরনের।
১৮৭৮ হাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুতবা দিতেন তখন তার চক্ষুদ্বয় রক্তিম বর্ণ , স্বর উচু হত এবং কঠোর রাগ প্রকাশ পেত। মনে হত তিনি যেন আক্রমণকারী বাহিনী সম্পর্কে সতর্ক করেছেন বলতেন তারা তোমাদের সকালে আক্রমণ করবে এবং বিকেলে আক্রমণ করবে। তিনি আরো বলতেন, আমি প্রেরিত হয়েছি এমন অবস্থায় যে, আমি ও কিয়ামত এ দুটির ন্যায় এবং মধ্যম অংগুলী ও শাহাদাত অংগুলী মিলিয়ে দেখাতেন এবং বলতেন আম্মাবাদ, উত্তম বাণী হল আল্লাহ পাকের কিতাব এবং সর্বোত্তম হিদায়াত হল- মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিদায়াত। নিকৃষ্ট বিষয় হলো বিদআত নতুন আবিকৃত বিষয়সমূহ। সকল বিদ আতই হল পথ ভ্রষ্টতা। এর পর বলতেন, আমি প্রত্যেক মুমিনের জন্য তার প্রাণ হতে অধিক প্রিয়তর। যে মৃত ব্যাক্তি মাল সম্পদ রেখে যায়, তা তার পরিবার পরিজনদের জন্য। আর যে মৃতব্যাক্তি ঝণ অথবা ছোট ছেলে মেয়ে রেখে যায় তাদের দায়িত্ব আমার উপর।
১৮৭৯ আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিন খুৎবা দিতেন। প্রথমে আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ণনা করতেন। তারপর বক্তব্য রাখতেন। ঐ সময় তাঁর কন্ঠ স্বর উচু হয়ে যেত। অতঃপর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১৮৮০ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রাঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের উদ্দেশ্যে খুৎবা দিতেন। এতে তিনি আল্লাহ পাকের যথাযোগ্য হামদ ও সানা বর্ণনা করতেন এবং বলতেন, যাকে আল্লাহ পাক হিদায়াত করেন তাকে কেউ বিপথগামী করতে পারবে না এবং তিনি যাকে হিদায়াত না করবেন তাকে কেউ হিদায়াত করতে পারবে না। সর্বোৎকৃষ্ট কিতাব হল আল্লাহর কিতাব। এরপর সাকাফীর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৮৮১ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যিমাদ (রাঃ) মক্কায় আগমন করলেন। তিনি ছিলেন আযদ শানূয়া গোত্রের লোক। তিনি আসীব-এর (উপরি ব্যারাম, জ্বীনের আসর ইত্যাদি) ঝাঁড় ফুঁক করতেন। তিনি মক্কার কতিপয় নির্বোধ লোককে বলাবলি করতে শুনলেন যে “মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাদ”। যিমাদ বললেন, আমি যদি এ লোকটিকে দেখতাম, হয়ত আমার হাতে আল্লাহ তাঁকে শিফা দিতেন। রাবী বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি ঐ সব ব্যাধির ঝাড় ফুক করে থাকি আর আল্লাহ আমার হাতে যাকে ইচ্ছা শিফা দান করেন। আপনি কি ঝাড়-ফুক করতে ইচ্ছুক? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, -সকল হামদ ও প্রশংসা আল্লাহরই জন্য, আমি তাঁরই হামদ বর্ণনা করছি, তাঁরই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন কেউ তাকে গোমরাহ করতে পারে না। আর যাকে তিনি হিদায়াত করেন না, তাকে কেউ হিদায়াত করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি এক লা-শরীক এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও তাঁরই রাসুল। “আম্মা বাদ, রাবী বলেন, (যিমাদ) বললেন, আপনার বাক্যগুলো পূনরাবৃত্তি করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার পূনরাবৃত্তি করলেন। রাবী বলেন, যিমাদ (রাঃ) বলেন, অনেক গণক, যাদুকর ও কবিদের কথাবার্তা শুনেছি কিন্তু আপনার এ বাক্যগুলোর মত আর শুনিনি। আপনার এ বাক্যগুলো সাগরের গভীরতায় পৌছে গিয়েছে। রাবী বলেন যিমাদ (রাঃ) বললেন, হাত বাড়িয়ে দিন আমি আপনার কাছে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করব। রাবী বলেন, রাসুলুইল্লহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বায়আত করে নিলেন। এর পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বায়আত কি তোমার কাওমের উপর প্রযোজ্য? তিনি বললেন, হ্যা আমার কাওমের উপরও প্রযোজ্য। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ছোট সেনাদল প্রেরণ করলেন। তারা যিমাদের (রাঃ) গোত্রের নিকট দিয়ে অতিক্রম করল। সেনাপ্রধাণ তার সৈন্যদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি যিমাদের কাওমের নিকট থেকে কোন জিনিস গ্রহন করেছ? তখন তাদের মধ্যে থেকে এক ব্যাক্তি বলল, আমি একটি পানির (উযূ (ওজু/অজু/অযু)র) পাত্র নিয়েছি। সেনানায়ক বললেন, তা ফিরিয়ে দাও। এ মানুষগুলো হল যিমাদের (রাঃ)-এর গোত্রের লোক”।
১৮৮২ সূরায়জ ইবনু ইউনূস (রাঃ) আবূ ওয়াইল (রহঃ) বলেন, আম্মার (রাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ খুৎবা প্রদান করলেন। তিনি যখন (মিম্বর হতে) নেমে এলেন, তখন আমরা বললাম, হে আবূল ইয়াকযান! আপনি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ খুৎবা দিয়েছেন। যদি কিছুটা দীর্ঘ করতেন (তবে আরো ভাল হত)। তিনি (আম্মার) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, সালাতকে ও খূৎবাকে সংক্ষিপ্ত করা মানুষের জ্ঞান ও বুদ্বির পরিচায়ক। সালাতকে ও খূৎবাকে সংক্ষিপ্ত কর। কোন কোন বয়ান অনেক সময় যাদূর ন্যায় হয়ে থাকে।
১৮৮৩ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সম্মুখে খুৎবা প্রদান করল। সে তার খুৎবায় বলল, যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করল, সে সঠিক পথের অনুগামী হল, আর যে ব্যাক্তি উভয়ের নাফরমানী করল সে পথভ্রষ্ট হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি মন্দ খতীব, তুমি এরুপ বল- যে ব্যাক্তি আল্লাহর নাফরমানী করল এবং তাঁর রাসুলের নাফরমানী করল”। ইবনু নুমায়র (রহঃ) বলেন, সে পথভ্রষ্ট হবে।
১৮৮৪ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক হানযালী (রহঃ) সাফওয়ান ইবনু ইয়ালা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে মিম্বরে উপর থেকে পড়তে শুনেছেন- “তারা চীৎকার করে বলবে, হে মালিকঁ- (৪৩:৭৭)
১৮৮৫ আবদুল্লাহ ইবনু আব্দুর রহমান দারিমী (রহঃ) আমর বিনত আবদুর রহমান (রাঃ) তার জনৈকা বোন থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি –“কাফ ওয়াল কুরআনুল মজীদ সূরাটি জুমু-আর দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ থেকে শুনে মুখস্ত করেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক জুমুআয় এ সূরাটি মিম্বরে থেকে পাঠ করতেন।
১৮৮৬ আবূ তাহির (রহঃ) আমরা (রাঃ) তাঁর বড় বোন বিনত আব্দুর রহমান (রহঃ) থেকে সুলায়মান ইবনু বিলালের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৮৮৭ মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) হারিস ইবনু নূমান (রাঃ) এর জনৈকা কন্যা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি -কাফ সূরাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মুখ থেকে শুনে কণ্ঠস্হ করেছি। তিনি প্রতি শুক্রবার ঐ সূরাটি খুৎবায় পাঠ করতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পাক ঘর ও আমাদের পাক ঘর অভিন্ন ছিল।
১৮৮৮ আমরুন নাকিদ (রহঃ) উম্মে হিশাম বিনত হারিসা ইবনু নুঁমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রন্ধনশালা দু-কিন্বা দেড় বছর অভিন্ন ছিল। আমি “কাফ ওয়াল কুরআনিল মাজীদ- সূরাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখ থেকে শুনে মুখস্ত করেছি। তিনি প্রতি ওক্রবার মিম্বরে থেকে লোকদের খুৎবা প্রদান কালে এ সূরা পাঠ করতেন।
১৮৮৯ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) হুসায়ন (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমারা ইবনু রুয়াইবা (রাঃ) বিশর ইবনু মারওয়ানকে মিন্বরে দাড়িয়ে উভয়ে হাত উঠাতে দেখলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ হাত দুটিকে ধবংস করে দিন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ অংগুলী দ্বারা ইশারা কবা ব্যতীত অন্য কিছু দেখিনি। রাবী শাহাদাত অংগুলীর প্রতি ইশারা করলেন।
১৮৯০ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) সোয়ন ইবনু আব্দুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বিশর ইবনু মারওয়ানকে জুমুঁআর দিনে উভয় হাত তুলতে দেখেছি। তখন উমারা ইবনু কয়াইবা (রাঃ) বললেন, অতঃপর উপরোক্তরুপ বর্ণনা করেন।
১৮৯১ আবূর রাবী যাহরানী ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুঁআর খুৎবা দিচ্ছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, হে অমুক! তুমি সালাত আদায় করেছ কি? সে বলল, না। তিনি বললেন, দাড়াও সালাত আদায় করে নাও।
১৮৯২ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইয়াকুব দাওরাকী (রহঃ) জাবির (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। হাম্মাদ (রহঃ) যেরুপ রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন ইবনু উলায়্যা (রহঃ) তদ্রুপ বর্ণণা করেন। কিন্তু তিনি দু’রাক’আত সালাতের কথা উল্লেখ করেননি।
১৮৯৩ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু-আর দিন খুৎবা দিচ্ছিলেন। তিনি বললেন, তুমি সালাত আদায় করেছ কি? সে বলল না বললেন, দাড়াও দু’রাকআত সালাত আদায় করে নাও। আর কুতায়বার বর্ণনা ছিল। উনি বললেন, দু’রাকআত সালাত আদায় করে নাও।
১৮৯৪ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি- ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যাক্তি মসজিদে এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিন মিম্বরের উপর থেকে খুৎবা দিচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি দু-রাক’আত সালাত আদায় করেছ? সে বলল, না। তিনি বললেন, তুমি দু-রাক’আত সালাত আদায় করে নাও।
১৮৯৫ মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুৎবা দিচ্ছিলেন। তিনি বললেন, তোমাদের কেউ জুমুআর দিনে (মসজিদ) এল আর তখন যদি ইমাম (হুজরা থেকে) বের হয়ে থাকেন, তবে সে দু- রাকআত সালাত আদায় করে নেবে।
১৮৯৬ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূলায়ক গাতফানী (রাঃ) শুক্রবার দিনে (মসজিদে) এলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরের উপরে বসা ছিলেন। সুলায়ক (রাঃ) সালাত আদায় না করে বসে পড়লেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি দু-রাক’আত সালাত আদায় করেছ? তিনি বললেন, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি দাড়াও দু-রাকআত সালাত আদায় করে নাও।
১৮৯৭ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সূলায়ক গাতফানী (রাঃ) জুমআর দিনে এলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুৎবা দিচ্ছিলেন। তখন সুলায়ক (রহঃ) বসে পড়লেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে সূলায়ক! তুমি দাঁড়িয়ে সংক্ষেপে দু-রাকআত সালাত আদায় করে নাও। তারপর বললেন, তোমাদের কেউ জুমুআর দিন মসজিদে এলে, ইমাম তখন খুৎবারত থাকলে সংক্ষিপ্ত আকারে দু- রাকআত সালাত আদায় করে নেবে।
১৮৯৮ শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) আবূ রিফা’আ (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট পৌছিলাম, তখন তিনি খুৎবা দিচ্ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! একজন মূসা ফির এসেছে সে দ্বীন সম্পর্কে জানতে চায়। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন খুৎবা বন্ধ করে আমার দিকে অগ্রসর হলেন এবং আমার নিকট এসে পৌছলেন। অতঃপর একটি কুরসী আনা হল, আমার ধারণা এর পায়াগুলো ছিল লোহার। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর বসলেন, এবং আল্লাহ তাঁকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা থেকে তিনি আমাকেও শিখালেন। এরপর তিনি পুনরায় খুৎবা দিতে লাগলেন এবং খুৎবা শেষ করলেন।
১৮৯৯ আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কা’নাব (রহঃ) ইবনু আবূ রাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মারওয়ান আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে মদিনায় তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে মক্কায় চলে গেলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাদের নিয়ে জুমুআর দিন সালাত আদায় করলেন। তিনি সূরা জুমুঁআর পর দ্বিতীয় রাক’আত সূরা মুনাফিকুন পড়লেন। রাবী বলেন, মসজিদ হতে তাঁর প্রত্যাবর্তন কালে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হল। আমি তাকে বললাম, আপনি এমন দুটি সূরা পাঠ করলেন যে দুটি সূরা আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) কুফায় পাঠ) করতেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিন পাঠ করতে শুনেছি।
১৯০০ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও কুতায়বা (রহঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনু আবূ রাফি (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, মারওয়ান আবূ হুরায়রা (রাঃ) -কে তার স্হলাভিষিক্ত নিযুক্ত করলেন। এ কথা উপরোক্ত হাদীস অনুযায়ী। তবে হাতিমের বর্ণনায় এ কথা রয়েছে যে, তিনি সূরা জুমুআ পাঠ করলেন প্রথম রাকঃআতে এবং দ্বিতীয় রাকআতে পাঠ করলেন ইয়া জাআকাল মুনাফিকুন। আবদুল আযীযের রিওয়ায়াতে সুলায়মান ইবনু বিলালের হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে।
১৯০১ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক (রহঃ) নূমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় ঈদে এবং জুমুআর সালাতে ও পাঠ করতেন। রাবী বলেন, ঈদ ও জুম্মা একই দিনে একত্রিত হয়ে পড়লে উক্ত সূরা দুটি উভয় সালাতে পাঠ করতেন।
১৯০২ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মদ মুনতাশির (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণিত।
১৯০৩ আমরুন নাকিদ (রহঃ) উবায়াদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যাহহাক ইবনু কায়স (রহঃ) নূ”মান ইবনু বাশীর (রাঃ)-এর নিকট পত্র মারফত জানতে চইলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিনে সূরা জুমুআ ব্যতীত অন্য কোন সূরা পাঠ করতেন? তিনি উত্তরে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, পাঠ করতেন।
১৯০৪ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিন ফজরের সালাতে সুরা : পাঠ করতেন এবং জুমুআর সালাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা জুমু-আ ও সূরা মুনাফিকুন পাঠ করতেন।
১৯০৫ ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরায়ব (রাঃ) সুফিয়ান হতে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৯০৬ মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) মুখাওওয়াল থেকে উক্ত সালাতে উভয় সূরা পাঠ করা সম্পর্কে সুফিয়ানের বর্ণনার অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১৯০৭ যুহায়র ইবনু (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম্মার দিনে ফজরে সূরা -আলিফ লাম মীম তানযীল- ও হাল আতা- পাঠ করতেন।
১৯০৮ আবূ তাহির (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিন ফজরের প্রথম রাকঃআতে আলিফ লাম মীম তানযীল ও দ্বিতীয় রাকআতে হাল আতা- পাঠ করতেন।
১৯০৯ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ জুমুআর সালাত আদায় করলে তারপর চার রাকআত সালাত আদায় করবে।
১৯১০ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা জুমুআর পর সালাত আদায় করলে চার রাকআত আদায় করবে। আমর এর বর্ণনায় এ কথা অতিরিক্ত রয়েছে যে, ইবনু ইদ্রীস বলেন, সূহায়ল (রাঃ) বলেছেন যে, যদি তোমার তাড়াহুড়ো থাকে তবে মসজিদে দু’রাকআত ও বাড়ীতে গিয়ে দু’রাকআত পড়ে নাও।
১৯১১ যুহায়র ইবনু হারব, আমরুন নাকিদ ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে কেউ জুমুআর পর সালাত আদায় করতে চায় সে যেন চার রাকআত আদায় করে। তবে জারীর (রাঃ)-এর হাদীসে –“তোমাদের মধ্যে”- বাক্যটি নাই।
১৯১২ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া, মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণিত যে, তিনি জুমুআর সালাত শেষে চলে যেতেন এবং ঘরে গিয়ে দু-রাকআত পড়ে নিতেন। এরপর তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এরুপ করতেন।
১৯১৩ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) নাফি- (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নফল সালাতের বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, জুমুআর পর তিনি কোন সালাত আদায় করতেন না। তবে বাড়ীতে ফিরে দুই রাকআত আদায় করতেন। ইয়াহিয়া (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি সালাত আদায় করতেন অথবা অবশ্যই করতেন।
১৯১৪ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর পর দু’রাকআত সালাত আদায় করতেন।
১৯১৫ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) উমর ইবনু আতা ইবনু আবূল খুয়ার (রহঃ) থেকে বর্ণিত। নাফি ইবনু জুবায়র (রহঃ) তাকে সায়েব ইবনু উখতে নামির (রহঃ)-এর নিকট প্রেরণ করলেন-একটি বিষয়ে প্রশ্ন করতে যা সালাত আদায় করার সময় মু’আবিয়া তার নিকট থেকে লক্ষ্য করেছিলেন। তিনি বললেন- হাঁ। আমি তার সঙ্গে মাকসূরায়১ জুমুআ আদায় করেছি। যখন তিনি (মুআবিয়া) প্রবেশ করলেন তখন আমাকে ডেকে আনলেন এবং বললেন, তুমি আর এরুপ করো না। যখন তুমি জুমুআর সালাত আদায় কর, তখন অন্য কোন সালাত আদায় কর না যে পর্যন্ত কথাবার্তা না বল অথবা বেরিয়ে না যাও। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এরুপ নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা যেন এ সালাতকে অন্য সালাতের সাথে মিলিয়ে না ফেলি যতক্ষন কথা না বলি অথবা বেরিয়ে না যাই।
১৯১৬ হারূন ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) উমর ইবনু আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাফি ইবনু জুবায়র (রহঃ) তাকে সায়েব ইবনু ইয়াযিদ ইবনু উখতে নামিরের নিকট প্রেরণ করলেন। অতঃপর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করলেন। তবে বললেন, যখন তিনি সালাম ফিরালেন তখন আমি আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে গেলাম। তিনি ‘ইমাম’ শব্দটি উল্লেখ করেননি।
 
নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: জুমআ
জুমআ
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/jumya.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/jumya.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy