১৯৯৫ আবূ কামিল জাহদারী ফূযয়াল ইবনু হুসায়ন ও উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যাদের মৃত্যু অত্যাসন্ন তাকে লা-ইলাহ ইল্লাহ-” তালকীন (কলেমা পাঠ) করতে থাক যেন সে শুনে আল্লাহকে স্বরণ করে।
১৯৯৬
কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) সুলায়মান ইবনু বিলাল (রহঃ)
সবাই ঐ সনদে বর্ণনা করেছেন।
১৯৯৭ উসমান, আবূ বাকর
ইবনু আবূ শায়রা ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের
মুমূর্ষ ব্যাক্তিদেরকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” তালকীন করবে।
১৯৯৮
ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, কোন মুসলমান
যখন কোন বিপদে পতিত হয়, তখন সে যদি আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন”
বলে এবং এ দু’আ পাঠ করে “হে আল্লাহ! আমাকে বিপদে ধৈর্য ধারণের সাওয়াব দান কর এবং
এর চেয়ে উত্তম প্রতিদান দিয়ে ধন্য কর”। তবে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিয়ে ধন্য
করবেন। যখন আবূ সালামার (তাঁর স্বামী)ইন্তেকাল হল তখন আমি বললাম, আবূ সালামা
(রাঃ) থেকে কে উত্তম হতে পারে? তাঁর পরিবারই প্রথম পরিবার যারা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে হিজরত করেছিল। এর পর আমি ঐ
দুআ পাঠ করলাম। ফলে আল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার
জন্য দান করলেন। উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট হাতিব ইবনু আবি বালতায়াকে দিয়ে বিবাহের
পয়গাম পাঠালেন। আমি বললাম, আমার একটি মেয়ে রয়েছে আর আমি একটু অভিমানী। তিনি বললেন, তোমার মেয়ের
জন্য আমি দুআ করছি যেন আল্লাহ তার সূব্যবস্হা করে দেন এবং এটাও দুআ করছি যে, তিনি তোমার
অভিমানকে দুর করে দেন।
১৯৯৯ আবূ
বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু সাফিনা (রহঃ) বলেন, তিনি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী উম্মে সালামা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন
যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, কোন
মানুষের উপর যখন কোন বিপদ আসে তখন যদি সে বলে “ইন্না লিলাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি
রাজিউনঁ”- হে আল্লাহ! আমাকে বিপদে ধৈর্যধারণের ক্ষমতা দাও এবং উত্তম প্রতিদান দান
কর- তবে আল্লাহ তাকে ধৈর্য ও উত্তম প্রতিদান দিবেন। উম্মে সালামা (রহঃ) বলেন, যখন আবূ
সালামার ইন্তেকাল হল তখন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর
নির্দেশ অনুযায়ী দুআটি পাঠ করলাম। ফলে আল্লাহ আমাকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দান করলেন।
২০০০
মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সহধর্মিনী উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি আবূ উসামার হাদীসের
অনুরুপ। তবে রাবী অতিরিক্ত আরো বর্ণনা করেছেন যে, উম্মে
সালামা (রাঃ) বলেছেন, যখন আবূ সালমার ইন্তেকাল হল, তখন আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী আবূ সালামা (রাঃ) থেকে কে ভাল হতে পারে? তারপর
আল্লাহ আমার ইচ্ছাকে সুদৃঢ় করে দিলেন। আমি ঐ দুআ পাঠ করে নিলাম। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বিবাহ করলাম।
২০০১ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন
কোন রোগী অথবা মৃত প্রায় ব্যাক্তির নিকট উপস্থিত হও, তখন তার
সম্পর্কে ভাল মন্তব্য কর। কেননা ফিরিশতাগণ তোমাদের কথার উপর আমীন বলে থাকেন। উম্মে
সালামা (রাঃ) বলেন, যখন আবূ সালামার (তাঁর স্বামী) ইন্তেকাল করল, তখন আমি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাড়ি এর কাছে এসে বললাম, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! আবূ সালামা (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বলেন, তুমি এ দু’আ
পড় হে আল্লাহ! আমাকে এবং তাঁকে ক্ষমা করে দাও এবং আমাকে তাঁর পর উত্তম প্রতিদান
দিন। তিনি বলেন, আমি ঐ দুআ পাঠ করলাম। আল্লাহ আমাকে তাঁর চেয়ে উত্তম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দান করলেন।
২০০২ যুহায়র
ইবনু হারব (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ সালামা (রাঃ)-এর কাছে গেলেন। তখন তার চোখগুলো
উল্টো রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোখগুলো বন্ধ করে দিলেন
এবং বললেন, রুহ যখন নিয়ে যাওয়া হয়, তখন চোখ তৎপ্রতি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এ কথাশুনে তার পরিবারের লোকেরা
উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলেন। তিনি বললেন, তোমরা
নিজেদের জন্য অমঙ্গলজনক কোন দুঁআ কর না। কেননা ফিরিশতাগণ তোমাদের কথার উপর আমীন
বলে থাকেন। তিনি তারপর বললেন হে আল্লাহ! তোমরা আবূ সালামাকে মাফ করে দাও, হিদায়াত
প্রাপ্তদের মধ্যে তার দরজাকে বুলন্দ করে দাও এবং তার উত্তরাধিকারীদের মধ্য থেকে
প্রতিনিধি নিযুক্ত কর। হে রাব্বুল আলামীন! আমাদেরকেও তাকে মাফ করে দাও তার জন্য
কবরকে প্রসস্ত করে দাও এবং তার কবরকে আলোকময় করে দাও।
২০০৩
মুহাম্মাদ ইবনু মূসা কাত্তান ওয়াসিতী (রহঃ) খালিদুল হাযযা (রহঃ) এ সনদে অনুরুপ
বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, তার উত্তরাধিকারীদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি
নিযুক্ত কর এবং বলেছেন, হে আল্লাহ! তার কবরকে প্রশস্ত করে দাও। কিন্তু তিনি শব্দ বলেন নি। তিনি আরো
বলেন যে, খালিদুল হাযযা (রহঃ) বলেছেন, ছটি দু’আর পর সপ্তম আরেকটি দুআ করেছিলেন, যা আমি ভুলে
গেছি।
২০০৪
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি
মানুষের দিকে লক্ষ্য কর না? যখন সে মারা যায় তখন তার চোখ উপরের দিকে উল্টে থাকে। সাহাবীগণ বললেন, হ্যা। তিনি
বললেন, এ হল সে মুহুত্বটি যখন তার চোখ তার রুহের দিকে চেয়ে থাকে।
২০০৫
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আলা (রহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণনা করেছেন।
২০০৬ আবূ
বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) সালামা (রাঃ) বলেন, যখন আবূ
সালামা (রাঃ) মারা গেলেন তখন আমি বললাম, প্রবাসী
প্রবাস ভুমিতে মারা গিয়েছেন। তার জন্য আমি এত কাদবো যে, দীর্ঘদিন
ধরে মানুষ তা চর্চা করবে। আমি কান্নার জন্য প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছিলাম। এমন সময়ে
মদিনার পাশ্ববর্তী উচু অঞ্চলের জনৈকা মহিলা আমার কান্নায় অংশ-গ্রহণ করার জন্য
আসাছিল। পথিমধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাঁর
সাক্ষাৎ হয়। তিনি দু’বার বললেন, তোমরা কি এমন ঘরে শয়তানকে পূনরায় প্রবেশ
করাতে চাও, যে ঘর হতে আল্লাহ তাকে বের করে দিয়েছেন। তখন আমি কান্না থেকে বিরত থাকলাম, কান্না
ত্যাগ করলাম।
২০০৭ আবূ
কামিল জাহদারী (রহঃ) উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেবে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, তখন তার
কন্যাদের একজন তাঁকে ডেকে পাঠালেন এবং তাকে সংবাদ দিলেন যে, তাঁর এক
সন্তান মৃত্যু মুখে রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বার্তা
বাহককে বললেন, তুমি ফিরে গিয়ে তাকে বল, আল্লাহ পাক যা কিছু নিয়ে নেন সেটার মালিক
তিনি। আবার যা দান করেন তার মালিকও তিনি। তাঁর কাছে প্রত্যেকটি জিনিসেরই একটি
সময়সীমা রয়েছে। তাকে বলো, সে যেন সবর করে, ধৈর্যধারণ করে এবং সাওয়াবের আশা রাখিে। এ সংবাদ পৌছে দিয়ে বার্তাবাহক পূনরায়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট ফিরে এসে বলল, তিনি (যয়নব)
কসম দিয়ে আপনাকে অবশ্যই যেতে বলেছেন। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়ালেন। তার সাথে দাড়ালেন সা’দ ইবনু উবাদা ও
মু’আয ইবনু জাবাল। আমি ও (উসমা) তাঁদের সাথে রওনা হলাম। শিশুটি তার কাছে তুলে ধরা
হল, তখন তার রুহ বের হওয়া কালীন গড়গড় শব্দ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন পূরাতন মশকে
পানি নাড়াচাড়ার শব্দ হচ্ছে এ দৃশ্য দেখা তাঁর চোখ- থেকে অশ্রু ঝরতে লাগল। তখন
সা’দ (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ কি? তিনি বলেন, এ হল রহমত যা আল্লাহ তার বান্দাদের অন্তরে রেখে দিয়েছেন। আল্লাহ তাঁর
বান্দাদের মধ্যে হতে দয়ালু বান্দাদের প্রতি রহম করে থাকে।
২০০৮
মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র, আবূ বাকর
ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আসিম আল আহওয়াল (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে
হাম্মাদের হাদীসটি দীর্ঘ ও পূর্ণাঙ্গ।
২০০৯ ইউনুস
ইবনু আবদুল আলা সাদাফী ও আমর ইবনু সাওওয়াদ আমিরী (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) পীড়িত হলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখার জন্য গেলেন। তাঁর সাথে আবদুর রহমান ইবনু আউফ, সা’দ ইবনু
আবূ ওয়াক্কাস ও আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) ছিলেন। যখন তাঁর কাছে গেলেন তখন তাঁকে
অজ্ঞান অবস্হায় পেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আর কি ওফাত
হয়েছে? উপস্থিত লোকেরা বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাঁর মৃত্যু হয়নি। তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কাদতে দেখে সাহাবাগণও কাদতে লাগলেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি
শুনো নি, আল্লাহ অন্তরের ব্যথা ও চোখের অশ্রুর জন্য কাউকে শাস্তি দেন না। তিনি জিহবার
দেকে ইঙ্গিত করে বললেন, আল্লাহ শান্তি দেন বা দয়া করেন এর কারণে।
২০১০
মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না আন-আনাযী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলাম, তখন জনৈক
আনসারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তাঁকে সালাম করলেন, এর পর
আনসারী প্রস্হান করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনসারী
ভাই! আমার ভাই সাহদ উবাদা কেমন আছে? উত্তর দিলেন, ভাল।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের
মধ্যে কে তার খোঁজ খবর নিতে যাবে? এ বলে তিনি
দাঁড়ালেন, আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়ালাম। আমরা দশ জনের অধিক ছিলাম। আমাদের কারো পায়ে জুতা, মোজা, মাথায় টুপি
এবং গায়ে জামা ছিল না। আমরা সে খসখসে রাস্তা দিয়ে চলছিলাম এবং তার কাছে গিয়ে
পৌহুলাম। আমাদেরকে দেখেঁ তার গোত্রের লোকজন তাঁর নিকট হতে সরে গেলেন এবং
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- ও তার সাহল সাহাবীরা তা কাছে এলেন।
২০১১
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার আল আবদী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রকৃত
ধের্য ধারণ করা হল পড়িত বিপদাপদের প্রথম মূহূর্তে।
২০১২
মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রহঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্তানের মৃত্যু শোকে ক্রন্দনরত জনৈকা মহিলার
নিকট দিয়ে গমন করছিলেন। তিনি তাঁকে বললেন, আল্লাহকে ভয়
কর এবং ধৈর্যধারণ কর। মহিলা উত্তর দিল, তুমি আমার
বিপদ কি উপলব্ধি করবে? যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে গেলেন, তখন বলা হল
তিনি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন। তখন তাকে মৃত্যুর মত
ভয়ে পেয়ে বসলো। তৎক্ষণাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরজায়
হাযির হল। সে তার দরজায় কোন দারোয়ানের বাধা পায়নি। সে বলল, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! আমি আপনাকে চিনতে পারি নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, সবর তো হয় বিপদাগমনের প্রথম মূহূর্তে অথবা বলে ছিলেন, বিপদের
প্রথম লগ্নে।
২০১৩
ইয়াহিয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) উকবা ইবনু মুকরিম আল আমী ও আহমাদ ইবনু ইবরাহীম
আদ-দাওয়াকী (রহঃ) সবাই শুবা (রাঃ) হতে উক্ত সনদে উসমান ইবনু উমর (রহঃ)-এর হাদীসের
ন্যায় ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তবে আবদুস সামাদের হাদীসে এ রুপ রয়েছে: নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের পার্শে অবস্হানরত জনৈক মহিলার দিকে গমন
করলেন।
২০১৪ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু
উমর) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) আহত
হয়ে যাওয়ার পর হাফসা (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন। উমর (রাঃ) বললেন, হে কন্যা!
থেমে যাও, তুমি কি জানো না, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত
ব্যাক্তিকে তার পরিবারবর্গের কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেয়া হয়।
২০১৫
মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) উমর (রাঃ) হতে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত
ব্যাক্তিকে কবরে শাস্তি দেয়া হয় তার পরিবারবর্গের রোদন বিলাপের কারণে।
২০১৬ আলী
ইবনু হুজর আস’সা’দী (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন উমর
(রাঃ)-কে বর্শা দ্বারা আহত করা হল তখন তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন এবং তাঁর জন্য
চীৎকার করে রোদন করা হচ্ছিল। যখন তিনি চেতনা ফিরে পেলেন তখন তিনি বললেন, তোমরা কি
জান না? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত
ব্যাক্তিকে জীবিতদের বিলাপের কারণে শাস্তি দেয়া হয়।
২০১৭ আলী ইবনু
হুজর (রহঃ) আবূ বুরদা (রহঃ) তাঁর পিতা [ আবূ মূসা আশআরী (রাঃ)] সুত্রে বলেছেন, উমর (রাঃ)
যখন আক্রান্ত হলেন তখন সুহায়ব (রাঃ) হে ভাই! বলে কাদতে লাগলেন। উমর (রাঃ) তাকে
বললেন, হে সুহায়ব! তুমি কি জানো না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, নিশ্চয়ই মৃত ব্যাক্তিকে জীবিতদের মাতম ও বিলাপের কারণে শাস্তি দেয়া হয়।
২০১৮ আলী
ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন উমর
(রাঃ) আক্রান্ত হলেন তখন সুহায়ব (রাঃ) সংবাদ পেয়ে তাঁর বাড়ী হতে আগমন করলেন এবং
উমর (রাঃ)-এর নিকটে প্রবেশ করে তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে কাদতে লাগলেন। উমর (রাঃ) তাঁকে
বললেন, কাঁদছ কেন? তুমি কি আমার জন্য কাদছ? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যা আল্লাহর কসম! আপনার জন্য কাঁদছি হে আমীরুল মুমিনীন! উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, তুমি অবশ্যই
জানো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার জন্য
বিলাপ ও মাতম -করা হবে তাকে কবরে আযাব দেয়া হবে। রাবী বলেন, আমি এ কথাটি
মূসা ইবনু তালহার নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আয়িশা (রাঃ)
বলতেন, (যাদের আযাব দেয়া হবে) তারা হল ইয়াহুদী।
২০১৯ আমরুন
নাকিদ (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর
(রাঃ)-কে যখন বর্শা মেরে আহত করা হল, তখন হাফসা
(রাঃ) উচ্চস্বরে কাঁদতে লাগলেন। উমর (রাঃ) বললেন, হে হাফসা!
তুমি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুননি, যে
ব্যাক্তির উপর উচ্চস্বরে বিলাপ করা হয় তাকে শাস্তি দেয়া হয়। সুহায়ব (রাঃ) ও
কান্নাকাটি করছিলেন। তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে সূহায়ব!
তুমি কি জানো না, যার জন্য বিলাপ করা হয় তাকে আযাব দেয়া হয়।
২০২০ দাঊদ
ইবনু রুশায়দ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু
উমর (রাঃ) এর পাশে বসা ছিলাম। আমরা উম্মে আবান বিনতে উসমানের জানাযার অপেক্ষা
করছিলাম তার নিকট আমর ইবনু উসমানও বসে ছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-কে হাতে ধরে নিয়ে আসলেন। আমার মনে হয় তাঁকে ইবনু উমর (রাঃ) এর অবস্হান
সম্পর্কে বলা হয়েছিল। তিনি এসে আমার পাশে বসলেন, আমি তাদের
দু’জনের মধ্যে ছিলাম। তখন হঠাৎ গৃহ হতে (কান্নার) আওয়াজ আসল, তখন ইবনু
উমর (রাঃ) তিনি যেন আমরকে ইঙ্গিত করে নিষেধ করতে বললেন। তিনি উঠে গিয়ে তাদেরকে
নিষেধ করলেন এবং ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি মৃত ব্যাক্তিকে আযাব
দেয়া হয় তার পরিবারবর্গের মাতম বিলাপের কারণে। ইবনু উমর (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর
ন্যায় এ কথাটি বিশেষ করে ইয়াহুদী সম্পর্কে তা বলেননি। তখন ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমরা আমিরুল
মুমিনীন উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা বায়দা নামক স্থানে
পৌহুলাম তখন দেখতে পেলাম, এক ব্যাক্তি বৃক্ষের ছায়ায় অবতরণ করে বিশ্রাম করছিল তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার
পক্ষ হতে গিয়ে জেনে এসো ঐ ব্যাক্তি কে? আমি গিয়ে
জানতে পারলাম ঐ ব্যাক্তি সুহায়ব (রাঃ)। আমি তাঁর নিকট এসে বললাম আপনি আমাকে আদেশ
করেছিলেন, জেনে আসার জন্য আমি জেনে এসেছি ঐ ব্যাক্তি কে? ঐ ব্যাক্তি
সূহায়ব। তিনি বললেন তাকে বল, আমাদের সঙ্গে মিলিত হতে। আমি বললাম, তার সাথে
তাঁর পরিবার রয়েছেন। তিনি বললেন, থাকুক না পরিবারসহ আসতে বল। কখনো আয়্যুব
এরুপ বলেছেন, তাকে আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে আদেশ কর। যখন আমরা মদিনায় পৌঁছলাম, তার কিছু
কাল পরেই আমীরুল মুমিনীন (রাঃ) আক্রান্ত হলেন। সুহায়ব (রাঃ) আসলেন এবং -ওয়া
আখাহ–হে ভাই -ওয়া সাবিহা- হে আমাদের সাহল, বলে চীৎকার
করতে লাগলেন। উমর (রাঃ) বললেন, তুমি কি জানো নি, তুমি কি
শুনোনি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মৃত ব্যাক্তিকে তার
পরিবার বর্গের কোন কোন কান্নাকাটির কারণে আযাব দেয়া হয়। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ
কিন্তু শর্তহীনভাবে বলেছেন, শুধু ইয়াহুদীদের জন্য এ হুকুম তা যূক্ত করে বলেন নি। আর উমর (রাঃ) বলেছেন, কোন কোন
কান্না! তখন আমি উঠে আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট গমন করলাম এবং ইবনু উমর (রাঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে
তাকে অবহিত করলাম। আয়িশা (রাঃ) বললেন, না না
আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা কখনো বলেন নি যে, মৃত
ব্যাক্তিকে কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেয়া হবে। বরং তিনি বলেছেন, কাফিরের উপর
আল্লাহ শাস্তি বৃদ্ধি করে দেন তার পরিবাবর্গের বিলাপের কারণে। আল্লাহ পাকই হাসি
কান্না দিয়ে থাকেন। একজনের পাপের বোঝা আরেক জনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন না। আয়িশা
(রাঃ)-এর নিকট যখন উমর ও ইবনু উমর (রাঃ)-এর বক্তব্য পৌছলো, তখন তিনি
বললেন, তোমরা এমন দু- ব্যাক্তি হতে হাদীস বর্ণনা করছ যারা মিথ্যা বলেননা এবং তাদের
প্রতি মিথ্যা আরোপ করা যায় না। কিন্তু শ্রুতিতে ভুল হতে পারে।
২০২১
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ)
বলেন, উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-এর এক মেয়ে মক্কায় ইন্তেকাল করলেন। আমরা তার জানাযার
জন্য হাযির হলাম। তখন ইবনু উমর ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হাযির হলেন। আবূ মুলায়কা (রহঃ)
বলেন, আমি তাদের দু’জনের মধ্যে বসা ছিলাম। আমি প্রথমে একজনের নিকট বসা ছিলাম, পরে আরেকজন
আসলেন এবং আমার পাশে বসলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর, আমর ইবনু
উসমানকে বললেন, তিনি তাঁর সম্মুখে ছিলেন, তুমি তাদেরকে কান্নাকাটি হতে কেন নিষেধ
করছ না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত
ব্যাক্তিকে শাস্তি দেয়া হয় তার পরিবারের লোকদের কান্নাকাটির কারণে। ইবনু আব্বাস
(রাঃ) তখন বললেন, উমর (রাঃ) ও এরুপ কিছু বলতেন। অতঃপর হাদীস বর্ণনা করলেন, আমি উমর
(রাঃ)-এর সাথে মক্কা হতে রওনা হলাম, প্রত্যাবর্তন
করলাম, যখন আমরা বায়দা নামক স্থানে পৌহুলাম, হঠাৎ দেখতে
পেলাম একটি কাফিলা বৃক্ষের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণ করছে; তখন আমাকে
আদেশ করলেন যাও, গিয়ে দেখ, এ কাফিলা কাদের? আমি গিয়ে দেখলাম ঐ ব্যাক্তি সুহায়ব (রাঃ)। আমি এসে তাকে খবর দিলাম। তিনি বললেন, তাকে ডেকে
নিয়ে এসো, আমি পুনরায় সুহায়বের নিকট গমন করলাম এবং বললাম, চলুন আমীরুল
মুমিনীনের সাথে সাক্ষাৎ করুন। যখন উমর (রাঃ) শক্রর আক্রমণে আড়ে হলেন, সুহায়ব
(রাঃ) কেঁদে কেঁদে গৃহে প্রবেশ করলেন এবং বলতে লাগলেন, হে আমার ভাই, হে আমার
সাহল! উমর (রাঃ) বললেন, হে সুহায়ব! আমার জন্য কাঁদছো? অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত ব্যাক্তিকে তার পরিবারবর্গের কোন কোন কান্নার কারণে শাস্তি দেয়া হয়। যখন
উমর (রাঃ) -এর ইন্তেকাল হয়ে গেল, তখন আমি এ কথা আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে
উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ উমরের প্রতি রহম করুন, দয়া করুন, আল্লাহর
কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা বলেন নি যে, মৃত
ব্যাক্তিকে তার কারো কান্নাকাটির কারণে আল্লাহ আযাব দেন। বরং রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে, আল্লাহ
কাফিরদের জন্য তাদের পরিবারবর্গের কান্নার কারণে আযাব প্রদান করে দেন। আয়িশা (রাঃ)
বলেন, তোমাদের জন্য আল্লাহর কুরআনই যথেষ্ট, “একজনের
পাপের বোঝা অন্য জনের ঘাড়ে দেয়া হবে না।” ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ সময়ে এ কথাও বলেন, “আল্লাহই
হাসান এবং তিনি কাঁদান”।, ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, ইবনু উমর
(রাঃ) তা শুনে কিছুই বলেন নি।
২০২২ আব্দুর
রহমান ইবনু বিশর (রহঃ) ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, আমরা উম্মে
আবান বিনত উসমানের জানাযায় ছিলাম। তার পর তিনি উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু
রাবী আমর এ হাদীসটি উমর (রাঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত
মারফু হিসেবে বর্ণনা করেন যেমন আয়্যুব ও ইবনু জুরায়জ (রহঃ) করেছেন, এ দু’জনের
হাদীস আমরের হাদীসের চাইতে পূর্ণাঙ্গ।
২০২৩
হারামালা ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জীবিতদের
ক্রন্দনের কারণে মৃত ব্যাক্তিকে আযাব দেয়া হয়।
২০২৪ খালফ
ইবনু হিশাম ও আবূর রাবী যাহরানী (রহঃ) উরওয়া (রাঃ) বলেন, আয়িশা
(রাঃ)-এর সন্মুখে ইবনু উমরের এ কথা আলোচনা করা হল, মৃত
ব্যাক্তিকে তার পরিবারবর্গের ক্রন্দনের কারণে শাস্তি দেয়া হয়।আয়িশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ আবূ
আব্দুর রহমানের প্রতি দয়া ও রহম করুন, যা কিছু
জেনেছিলেন তা স্মরণ রাখতে পারেন নি। প্রকৃত ব্যাপার হল, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখ দিয়ে জনৈক ইয়াহুদীর শবদেহ নিয়ে যাওয়া
হচ্ছিল। ইয়াহুদীরা তার জন্য বিলাপ করছিল, তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছিলেন, তোমরা বিলাপ
করছ অথচ তাকে আযাব দেয়া হচ্ছে।
২০২৫ আবূ
কুরায়ব (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) বলেন, আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে উল্লেখ করা হচ্ছে যে, ইবনু উমর
(রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, “মৃত
ব্যাক্তিকে কবরে তার পরিজনদের রোদনের কারণে আযাব দেয়া হয়। আয়িশা (রাঃ) বললেন, আসল কথা হলো, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তাকে আযাব
দেয়া হয় শুনাহ বা পাপের কারণে, অথচ তার পরিবারবর্গ এখন তার উপর
কান্নাকাটি করছে আর এ হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সে কথার
অনুরুপ, গর্তের নিকট যখন তিনি বদর যুদ্ধের দিন কুপের পাড়ে দাঁড়ালেন যাতে বদরে নিহত
মুশরিকদের লাশ ছিল এবং তাদের সম্বোধন করে যা বলার বলছিলেন এবং এ কথাও বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আমি
যা বলছি তারা তা শুনছো কিন্তু ইবনু উমর (রাঃ) ভুল বুঝেছেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, কাফিররা এখন
জানতে পারছে যে আমি যে সব কথা বলতাম তা সত্য। তারপর আয়িশা (রাঃ) পাঠ করলেন ‘-তুমি, শুনাতে
সমর্থ হবেনা যারা কবরে আছে কেননা তারাতো মৃত”। তিনি বললেন যখন তারা তাদের
জাহান্নামে ঠিকানায় পৌছে যাবে।
২০২৬ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রাঃ) হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে আবূ উসামার
হাদীসের মর্মানুযায়ী রিওয়ায়াত করেছেন, তবে আবূ
উসামার হাদীসই পূর্ণাঙ্গ।
২০২৭
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে তার নিকট বলা হল যে, ইবনু উমর
(রাঃ) বলেছেন, জীবিতদের কান্নার কারণে মৃতদেরকে আযাব দেয়া হয়। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ আবূ
আব্দুর রহমানকে ক্ষমা করুন, নিশ্চয়ই তিনি মিথ্যা বলেননি। কিন্তু তিনি ভুলে গিয়েছেন, অথবা ভুল
করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈকা ইয়াহুদী মহিলার কবরের নিকট
দিয়ে যাচ্ছিলেন, যার উপর বিলাপ করা হচ্ছিল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, এরা এর জন্য কাঁদছে, অথচ তাকে তার কবরে আযাব দেয়া হচ্ছে।
২০২৮ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আলী ইবনু রাবিয়া (রহঃ) বলেন, কুফা নগরীতে
সর্বপ্রথম কারযা ইবনু কা’বের উপর বিলাপ করা হয়। মুগিরা ইবনু শু’বা (রাঃ) বললেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, মৃত
ব্যাক্তির জন্য বিলাপ করা হয় তাকে কিয়ামতের দিন সে সব বিষয়ের কারণে শাস্তি দেয়া
হবে যেগুলো নিয়ে বিলাপ করা হয়েছে।
২০২৯ আলী
ইবনু হুজর আস-সা’দী এবং ইবনু আবূ উমর (রহঃ) মুঘীরা ইবনু শুবা (রাঃ) সুত্রে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২০৩০ ইবনু
আবূ উমর (রহঃ) মুঘীরা ইবনু শুবা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২০৩১ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) আর মালিক আশ-আরী (রাঃ) বর্ণনা
করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার
উম্মাতের মধ্যে জাহিলিয়াত বিষয়ের চারটি জিনিস রয়েছে যা তারা ত্যাগ করছে না। বংশ
মর্যাদা নিয়ে গর্ব, অন্যের বংশের প্রতি কটাক্ষ, গ্রহ-নক্ষত্রের মাধ্যমে! বৃষ্টি
প্রার্থনা এবং মৃতদের জন্য বিলাপ করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আরো বলেন, বিলাপকারিনা যদি তার মৃত্যুর পূর্বে তাওবা না করে, তবে
কিয়ামতের দিনে তাঁকে দাঁড় করানো হবে, তখন তার
দেহে আলকাতরার আবরণ থাকবে এবং খসখসে লোহার পোষাক থাকবে।
২০৩২ ইবনুল
মূসান্না ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) বলেন, যখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যায়িদ ইবনু হারিস, জাফর ইবনু
আবূ তালিব ও আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-এর শাহাদতের সংবাদ পৌছ্ল তখন তিনি বসে
পড়লেন। তাঁর চেহারা মুবারকে দুঃখ ও চিন্তার চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। আয়িশা
(রাঃ) বলেন, আমি দরজার ফাক দিয়ে দেখতেপাচ্ছিলাম তখন এক ব্যাক্তি এসে বললো, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! জাফর (রাঃ)-এর স্ত্রী ও পরিবারের মহিলারা কান্নাকাটি করছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি গিয়ে
তাদেরকে নিষেধ কর। সে গেলো এবং পুনরায় ফিরে এসে বললো, তারা তার
কথা শুনেনি। তিনি দ্বিতীয়বার তাকে নির্দেশ দিলেন, সে যেন গিয়ে
তাদের নিষেধ করেন, সে গিয়ে পূনরায় ফিরে এসে বললো, আল্লাহর কসম, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! তারাই আমাদের উপর প্রবল রইলো। আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, যাও, তুমি তাদের
মুখে মাটি ডুকিয়ে দাও। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি (মনে
মনে) বললাম, আল্লাহ তোমার নাক ধুলি ধুসরিত করুন। আল্লাহর কসম, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে নির্দেশ তোমাকে দিয়েছেন তা তুমি করতেও পারবে না
আর তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কেও বিরক্ত করতে ছাড়নি।
২০৩৩ আবূ
বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ), আবূ তাহির, আহমাদ ইবনু ইবরাহীম আদ দাওরাফী (রহঃ) ইয়াহহিয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে
অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে তবে আবদুল আযীযের (রহঃ) বর্ণনায় রয়েছে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিরক্ত করতে ছাড়ছ না।
২০৩৪ আবূর
রাবী আয-যাহরানী (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের থেকে
বায়আত গ্রহণকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন, “আমরা যেন
বিলাপ না করি,। কিন্তু এ অঙ্গিকার পাচজন মহিলা ব্যতীত কেউ পূর্ণ করেনি। তারা হলেন, উম্মে
সুলায়ম, উম্মুল আঁলা, আবূ সাবুরার মেয়ে মুআযের শ্ত্রী বা আবূ সাররার মেয়ে ও মুআযের স্ত্রী।
২০৩৫ ইসহাক
ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের থেকে বায়আত গ্রহণকালে এ অঙ্গিকারও
নিয়েছিলেন যে, আমরা যেন বিলাপ না করি”। কিন্তু পাচজন ব্যতীত অন্য কেউ সে অঙ্গীকার পূর্ণ করে
নি, তাদের মধ্যে উম্মু সুলায়ম (রাঃ) একজন।
২০৩৬ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।বলেন, যখন এ আয়াত
নাযিল হল, হে নাবী! মুমিন মাহিলারা যখন তোমার কাছে এসে বায়আত করে এ মর্মে যে, তারা
আল্লাহর সঙ্গে কোন শরীক করবে না এবং সৎকার্যে তোমাকে অমান্য করবে না” (মুমতাহানঃ
১২) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বলেন, তন্মধ্যে বিলাপও ছিল। তখন আমি বললাম , ইয়া
রাসুলাল্লাহ! অমুক পরিবার ব্যতীত কারণ, তারা
জাহিলিয়াতের যুগে আমাকে বিলাপে সহানুভূতি দেখাত। তাই তাদের প্রতি সহানূভুতি দেখান
আমার জরুরী। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অমুক পরিবার
ব্যতীত।
২০৩৭
ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বলেন, আমাদের
জানাযার পিছনে যেতে নিষেধ করা হতো কিন্তু আমাদের উপর কঠোরতা আরোপ করা হয়নি।
২০৩৮ আবূ
বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমাদের জানাযার পিছনে যেতে নিষেধ করা হত। আমাদের উপর কঠোরতা আরোপ করা হয়নি।
২০৩৯
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলেন, তখন আমরা
তাঁর কন্যাকে গোসল দিচ্ছিলাম। তিনি বললেন, তাকে তিনবার
গোসল দাও, পাঁচবার কিংবা প্রয়োজন মনে করলে আরও অধিকবার, বরই বৃক্ষের
কচি পাতা দ্বারা পানি গরম করে। সর্বশেষ কর্পূর কিংবা কিছুটা কর্পূর দিবে। যখন গোসল
শেষ করবে, তখন আমাকে সংবাদ দিবে। আমরা গোসল শেষ করে তাকে সংবাদ দিলাম। তিনি তাঁর
ইয়ারবন্দ দিলেন এবং বললেন, এটা তাঁর শরীরের সাথে লাগিয়ে পরিয়ে দাও।
২০৪০
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা তাঁর
মাথার চুল তিনভাগে বিন্যস্ত করেছিলাম।
২০৪১
কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূর রাবী যাহরানী ও ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ুব (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যাদের একজনের [যায়নাব (রাঃ)]
ইন্তেকাল হল। ইবনু উলায়ইয়ার বর্ণনায় আছে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসলেন, তখন আমরা
তাঁর কন্যাকে গোসল দিচ্ছিলাম। আর মালিকের হাদিসে রয়েছে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলেন যখন তাঁর কন্যার ইন্তেকাল হয়।
ইয়াযীদ ইবনু যুরাই (রহঃ) এর হাদিসের অনুরুপ।
২০৪২
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে
এভাবে বলেছেন, তিনবার পাঁচবার সাতবার অথবা এর চেয়েও অধিক যদি তোমরা প্রয়োজন মনে কর। হাফসা
(রাঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, আমরা তাঁর
মাথার চুল তিনভাগে বিন্যস্ত করেছিলাম।
২০৪৩
ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, তাকে গোসল
করাও বিজোড় সংখ্যায়, তিনবার অথবা পাঁচবার অথবা সাতবার। রাবী বলেন, উম্মে
আতিয়্যা (রাঃ) বলেছেন , তাঁর মাথার তিন ভাগে বিন্যস্ত করেছিলাম।
২০৪৪ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা যায়নাব (রাঃ)
ইন্তেকাল করলেন তখন আমাদের বললেন, তাঁকে ভিজোড় সংখ্যায় গোসল দাও। তিনবার
অথবা পাঁচবার এবং পঞ্চমবারে কপৃর কিংবা কর্পূরের কিছু অংশ মিশিয়ে দাও। যখন তোমরা
গোসল শেষ কর তখন তাকে আবৃত কর। উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বলেন, আমরা তাকে
আবৃত করলাম। তখন তিনি আমাদের তাঁর ইযারবন্দ দিয়ে বললেন, (কাফন
হিসাবে) ভিতরে দিয়ে দাও।
২০৪৫ আমরুন
নাকিদ (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-আমাদের নিকট এলেন তখন আমরা তার কন্যাদের একজনকে গোসল
দিচ্ছিলাম। তিনি বললেন, তাকে ভিজোড় সংখ্যায় গোসল দাও, পাচবার অথবা
এর চেয়েও অধিক। তারপর আয়্যুব ও আসিমের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। রাবী হাদীসে
এ কথাও বলেছেন যে, তিনি বলেছেন, আমরা তাঁর কেশ তিন ভাগে বিভক্ত করেছিলাম। দু-পাশে ও মাঝখানে।
২০৪৬
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যখন নির্দেশ দিয়েছিলেন, তখন তাকে
বলেছিলেন, তার ডান দিক থেকে গোসল আরম্ভ কর। আর তার অযূর অংগগুলো প্রথম ধোও।
২০৪৭
ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব, আবূ বাকর আবূ শায়বা ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মেয়েকে গোসল দেয়ার ব্যাপারে তাদেরকে বলেছিলেন
যে, তোমরা তাঁর ডান দিক থেকে এবং ওযুর অংগগুলো থেকে আরম্ভ কর।
২০৪৮
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া তামিমী, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ
ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) খাববাব ইবনু আরাত (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আল্লাহর রাস্তায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে হিজরত করেছিলাম। আমাদের প্রতিদান আল্লাহর নিকট প্রাপ্য
রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকে বিদায় নিয়েছেন, তাঁদের
প্রতিদানের প্রাপ্য তারা (দুনিয়াতে) ভোগ করেননি। এদেরই একজন হলেন, মুস-আব ইবনু
উমায়র (রাঃ)। তিনি উহুদ যুদ্ধে শহীদ হন। তাকে কাফন দেয়ার জন্য একটি ছোট চাঁদর
ব্যতীত কিছু পাওয়া যায়নি। যখন আমরা চাঁদর দ্বারা তাঁর মাথা আবৃত করতাম তখন তার পা
দুটি বেরিয়ে পড়ত। আর যখন তা তাঁর পায়ের উপর রাখতাম তখন তাঁর মাথা বেরিয়ে পড়ত। এতে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা
চাঁদরখানি মাথার দিক দিয়ে রাখ এবং দু-পায়ের উপর ইযখির ঘাস দিয়ে দাও আর আমাদের
মধ্যে এমন ও অনেক রয়েছে। যাদের ফল পেকেছে এবং তিনি তা উপভোগ করেছেন।
২০৪৯ উসমান
ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মিনজাব ইবনু হারিস তামিমী ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আমাশ (রহঃ) থেকে উক্ত
সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২০৫০
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তিনটি সাদা সাহুলী সূতি কাপড়
দিয়ে কাফন দেয়া হয়েছিল কাপড়গুলোর মধ্যে কামিস ও পাগড়ী ছিল না। আর হুল্লা (দুটি
চাঁদর) যা তাঁর কাফনের জন্য ক্রয় করা হয়েছিল এবং পরে তা বাদ দেয়া হয় এ সম্পর্কে
লোকেরা বিভ্রান্তিতে পড়ে। আর তাকে কাফন দেয়া হয়েছিল সাদা সাহুলী তিন কাপড়ে।
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বকর (রাঃ) সেটি গেলেন এবং বললেন, আমি এ
পোষাককে সংরক্ষণ করে রাখব আমার কাফন দেয়ার জন্য। তারপর বললেন, যদি আল্লাহ
পাক তার নাবীর জন্য এ কাপড় পছন্দ করতেন তবে অবশ্যই এ দ্বারা তাঁর কাফন দেয়া হত।
তাই তিনি তা বিক্রি করে এর মূল্য সাদাকা করে দিলেন।
২০৫১ আলী
ইবনু হুজর আস সা’দী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর শরীর মুবারক প্রথমে ইয়ামনী কাফনে আবৃত করা হল
যে কাপড় আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বকর (রাঃ)-এর ছিল। এর পর তা খুলে ফেলা হলো এবং ইয়ামন
দেশের সাহুল স্থানে তৈরী তিনটি কাপড় দেয়া হল-ঐগুলোর মধ্যে কামিস, পাগড়ী ছিল
না। আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর পোষাক উঠিয়ে রাখলেন এবং বললেন, এ দ্বারা
আমার কাফন দেয়া হবে। এর পর বললেন, যে কাপড়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাফন দেয়া হয়নি সে কাপড়ে কাফন দেয়া হবে? তাই তিনি তা
সাদাকা করে দিলেন।
২০৫১ আবূ
বাকর আবূ শায়বা ও ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণিত।
তাঁদের হাদীসে আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বাকর (রাঃ)-এর ঘটনা বর্ণিত নেই।
২০৫৩ ইবনু
আবূ উমর (রহঃ) আবূ সালামা (রাঃ) বলেন, আমি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কয়টি কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া
হয়েছে। উত্তরে তিনি বললেন, তিনটি সাহুলী কাপড় দ্বারা।
২০৫৪ যুহায়র
ইবনু হারব ও হাসান হুলওয়ালী ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ)
বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ইন্তেকালের পর ইয়ামনী চাঁদর
দ্বারা কাফন দেয়া হয়েছে।
২০৫৫ ইসহাক
ইবনু ইবরাহীম, আবদ ইবনু হুমায়দ ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্দুর রহমান দারিমী (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে
এ সনদে একই রকম বর্ণনা রয়েছে।
২০৫৬ হারুন
ইবনু আবদুল্লাহ ও হাজ্জাজ ইবনু শা ঈর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন খূৎবা প্রদান করলেন এবং তাঁর
সাহাবীদের মধ্যে একজনের কথা বললেন। তিনি মারা গেলেন এবং অসষ্পূর্ণ কাফন দিয়ে রাতে
তাকে দাফন দেয়া হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযার সালাত আদায় করে
রাতে মৃত ব্যাক্তিকে দাফন করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তবে যদি একান্ত বাধ্য হয়।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, তোমরা
তোমাদের মৃত ভাইকে উত্তম কাফন দ্বারা দাফন কর।
২০৫৭ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মৃতকে
তাড়াতাড়ি দাফন করে দাও। যদি সে ব্যাক্তি সৎকর্মশীল হয় তবে তাকে কল্যাণের দিকে
অগ্রসর করে দিলে। আর যদি অন্য কিছু হয় তবে মন্দকে তোমাদের কাঁধ হতে সরিয়ে দিলে।
২০৫৮
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি আবদ ইবনু হুমায়দ ও ইয়াহিয়া ইবনু হাবীব (রহঃ) আবূ হুরায়রা
(রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তবে সনদে রাবী মামার
(রহঃ) বলেন, আমার জানা মতে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে
সম্পর্কিত করে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
২০৫৯ আবূ তাহির, হারামালা
ইবনু ইয়াহিয়া ও হারুন-ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমরা মৃত
ব্যাক্তিকে তাড়াতাড়ি দাফন করবে। যদি সে সৎকর্মশীল হয়, তবে তাকে
তোমরা কল্যানের নিকটবর্তী করে দিলে। আর যদি অন্য কিছু হয় তবে মন্দকে তোমাদের কাঁধ
থেকে সরিয়ে দিলে।
২০৬০ আবূ
তাহির, হারামালা ইবনু ইয়াহিয়া ও হাররূন ইবনু সাঈদ আন-আয়লী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি
জানাযার সালাত আদায় করা পর্যন্ত হাযির থাকল সে এক কিরাত (পরিমাণ) সাওয়াব পাবে। আর
যে ব্যাক্তি দাফন করা পর্যন্ত হাযির থাকলো সে দু”কিরাত পরিমাণ সাওয়াব পাবে। বলা
হলো, দু”কিরাত কি? তিনি বললেন, দুটি বিরাট পাহাড়ের মতো। অন্য রাবী বলেন, ইবনু উমর
(রাঃ) জানাযার সালাত আদায় করে চলে যেতেন। যখন আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীসটি ইবনু
উমরের কাছে পৌছলো তখন তিনি বললেন, বহু কিরাত আমি নষ্ট করে দিয়েছি।
২০৬১ আবূ
বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে এবং তিনি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (কিরাত হলো) দু’টি পাহাড়, পর্যন্ত
বর্ণিত আছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরবর্তী অংশ বর্ণনা করেননি।
আর আবদুল আ’লা-এর বর্ণনায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং রাজ্জাকের বর্ণনায় কবরে না রাখা
পর্যন্ত- বর্ণিত রয়েছে।
২০৬২ আবদুল
মালিক ইবনু শুআয়ব ইবনু লায়স (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মা’মারের হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত আছে। তবে এভাবে বলেছেন যে
শব দেহের অনুসরণ করে দাফন করা পর্যন্ত।
২০৬৩
মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি
জানাযার সালাত আদায় করল, কিন্তু দাফন পর্যন্ত সাথে থাকল না তার জন্য এক কিরাত পরিমাণ সাওয়াব। আর যে
ব্যাক্তি মৃত্যের সাথে দাফন করা পর্যন্ত থাকল। তার জন্য দু-কিরাত পরিমাণ সাওয়াব
রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হলো দু কিরাত কি? তিনি বললেন, ছোট কিরাত
উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ।
২০৬৪ মুহাম্মাদ
ইবনু হাতিম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যাক্তি জানাযার সালাত আদায় করল তার জন্য এক কীরাত পরিমাণ সাওয়াব আর যে
ব্যাক্তি মৃতের সাথে থাকলো তাকে কবরে রাখা পর্যন্ত তরে তার জন্য দু”কীরাত পরিমাণ
সাওয়ার রয়েছে। রাবী বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আবূ হুরায়রা কীরা ত কি? তিনি বললেন, উহুদ
পাহাড়ের সমপরিমাণ।
২০৬৫ শায়বান
ইবনু ফাররুখ (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি
জানাযায় উপস্থিত থাকতে তার জন্য এক কিরাত সাওয়াব। ইবনু উমর (রাঃ) এ কথা শুনে বললেন, আবূ হুরায়রা
(রাঃ)আমাদের কাছে বহু হাদীস বর্ণনা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে লোক
পাঠালেন। সে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আবূ হুরায়রার কথার সত্যতা স্বীকার করলেন। তখন
ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, আমরা তো অনেক কীরাত নষ্ট করে দিয়েছি।
২০৬৬
মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু (রাঃ) আমির ইবনু সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে
বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) এর নিকট বসাছিলেন। হঠাৎ গৃহকর্তা খাববাব
(রাঃ) আগমন করলেন এবং বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু উমর- তুমি শুননি, আবূ হুরায়রা
(রাঃ) কী বলেছেন? তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যাক্তি
তার ঘর হতে জানাযার সাথে বের হল, জানাযার-সালাত আদায় করলো। অতঃপর দাফন করা
পর্যন্ত সাথে থাকল তবে সে দু-কীরাত সাওয়াব পাবে। প্রত্যেক কীরাত উহুদ পাহাড়ের সমান
হবে। আর যে ব্যাক্তি জানাযার সালাত শেষে চলে আসলো সে উহুদ পাহাড় সমপরিমাণ (এক
কীরাত) সাওয়াব পাবে। তখন ইবনু উমর (রাঃ) খাব্বাবকে আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট পাঠালেন।
আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর বর্ণনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে তিনি যা বলেন, পুনরায় ফিরে
এসে তাঁকে তিনি কি বললেন তা অবহিত করতে। অতঃপর ইবনু উমর (রাঃ) মসজিদ হতে এক মুষ্ঠি
কংকর হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগলেন। ইতিমধ্যে তাঁর কাছে দুত ফিরে এসে বললেন, আয়িশা (রাঃ)
বলেছেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) সত্য বলেছেন। ইবনু উমর (রাঃ) তার হাতের কংকরগুলো নিক্ষেপ
করে বললেন, আমরা অনেক কীরাত নষ্ট করে দিয়েছি।
২০৬৭
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
আযাদকৃত গোলাম সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি
জানাযার সালাত আদায় করল তার জন্য এ কীরাত সাওয়াব হবে আর যদি সে দাফন কার্যে
উপস্থিত থাকে, তবে দু- কীরাত সাওয়াব পাবে। প্রত্যেক কীরাত উহুদ পাহাড়ের সমান।
২০৬৮ ইবনু
বাশশার, ইবনুল মুনান্না ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) সবাই কাতাদা (রহঃ) হতে এই সনদে
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আর সাঈদ ও হিশামের বর্ণনায় রয়েছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে কীরাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি- বললেন, তা হল উহুদ
পাহাড়ের মত।
২০৬৯ হাসান
ইবনু ঈসা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্ণিত কোন মৃত ব্যাক্তি যার উপর মুসলমানের এক দল জানাযার সালাত আদায় করবে, যাদের
সংখ্যা একশতে পৌছে এবং তাদের প্রত্যেক তার জন্য সূপারিশ করে তবে তাদের সুপারিশ
গ্রহন করা হবে। আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমি এ হাদীস
শুআয়ব ইবনু হাবহাবকে জানালাম। তিনি বললেন, আনাস ইবনু
মালিক (রাঃ) ও আমার নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই
হাদীস শুনেছেন বলে বর্ণনা করেছেন।
২০৭০ হারুন
ইবনু মারুফ, হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী ও ওয়ালীদ ইবনু শুজা সাকুনী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার এক ছেলে কুদায়দ অথবা উলফান নামক
স্থানে ইন্তেকাল করলেন। তখন -তিনি বললেন, হে কুরায়ব!
দেখো তো, তার জানাযার জন্য কি পরিমাণ মানুষ সমবেত হয়েছে। আমি বেরিয়ে দেখলাম, কিছু লোক
সমবেত হয়েছে। আমি তাঁকে এ খবর দিলাম। তিনি বললেন, তাদের
সংখ্যা কি চল্লিশ হবে? আমি বললাম হ্যা। তিনি বললেন, শবদেহ বের কর। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, যখন কোন
মুসলমানের ইন্তেকাল হয় এবং তার জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক অংশ নেয় যারা আল্লাহ
পাকের সাথে কোন কিছুকে শরীক করে না, তখন তার
ব্যাপারে তাদের সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হয়।
২০৭১
ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক
ব্যাক্তির (মৃত্যুর পর তার) জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং মানুষ তার সম্পর্কে
প্রশংসা করল অথবা কথা হচ্ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ওয়াজিব
হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে। (আরেকবার) অন্য একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং তার সম্পর্কে
খারাপ মন্তব্য কথা হচ্ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ,ওয়াজিব
হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে তখন উমর (রাঃ) বললেন, আমার
পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসগীত হোক। একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার
সম্পর্কে প্রঁশংসাসূচক মন্তব্য করা হচ্ছিল। তখন আপনি বললেন, ওয়াজিব
হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে। এর পর আর একটি জানাযা সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল যার
সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য হচ্ছিল তখন বললেন- ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব
হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার
সম্পর্কে তোমরা ভাল মন্তব্য করেছ। তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়েছে আর যার সম্পর্কে
তোমরা খারাপ মন্তব্য করেছ, তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়েছে। তোমরা পৃথিরীতে আল্লাহ পাকের সাক্ষী, তোমরা
পৃথিবীতে আল্লাহ পাকের সাক্ষী, তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহ পাকের সাক্ষী।
২০৭২ আবূর
রাবী যাহরানী ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাবী
আব্দুল আযীয (রহঃ) কর্তৃক আনাস (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত – হাদিসটি অর্থ- আনুযায়ী
বর্ননা করেন। তবে আবদুল আযীযের হাদিসটি পুর্নাঙ্গ।
২০৭৩
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ কাতাদা ইবনু রিবঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
তিনি বললেন, সে শান্তি লাভ করেছে এবং লোকেরাও তার, নিকট থেকে
শান্তি পেয়েছে। তারা (সাহাবীগণ) বললেন, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! এর অর্থ কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মুমিন
বান্দা দুনিয়ার দুঃখ ও কষ্ট থেকে শান্তি লাভ করে এবং পাপী বান্দার মন্দ হতে
আল্লাহর বান্দা, গাছ পালা ও জীবজন্তু স্বস্তি পায়।
২০৭৪
মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুত্রে বর্ণনা করেন। ইয়াহিয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর হাদীসে আছে যে, মুমিন
বান্দা দুনিয়ার কষ্ট-ক্লেশ থেকে সান্তি লাভ করে এবং আল্লাহর রহমতের দিকে যাত্রা
করে।
২০৭৫
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দিন নাজ্জাশীর মৃত্যু হল সে দিন লোকজনকে তার
প্রতি শোক প্রকাশের জন্য আহবান জানালেন এবং সাবাইকে নিয়ে সালাতের স্থানে বেড়িয়ে
পড়লেন এবং অতিরিক্ত চার তাকবীর বললেন।
২০৭৬ আব্দুল
মালিক ইবনু শু’আয়ব ইবনু লায়স (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবিসিনিয়ার
অধিপতি নাজ্জাশীর যে দিন মৃত্যু হয সে দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে তার মৃত্যুর খবর দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, সাঈদ ইবনু
মূসা য়য়্যিব (রহঃ) আমাকে বলেছেন যে, আবূ হুরায়রা
(রাঃ) তাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাদের নিয়ে সালাতের স্হান কাতার করলেন। এরপর তিনি সালাত আদায় করলেন এবং
এতে (অতিরিক্ত) চার তাকবীর বললেন।
২০৭৭ আমরুন
নাকিদ, হানান আন-হুলওয়ানী ও আবদুর ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে উভয় সনদে
উকায়ল (রহঃ)-এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে।
২০৭৮ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসহামাহ নাজ্জাশীর জানাযায় সালাত আদায় করেছেন এবং
এ সালাতে (অতিরিক্ত) চার তাকবীর বলেছেন।
২০৭৯
মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ আল্লাহ
পাকের একজন নেককার বান্দা আসহামাহ নাজ্জাসী (রহঃ) ইন্তেকাল করেছেন। এরপর তিনি
দাঁড়ালেন এবং আমাদের ইমামতি করলেন এবং নাজ্জাশীর জন্য জানাযার সালাত আদায় করলেন।
২০৮০ মুহাম্মাদ
ইবনু উবায়দ আন-শুবারী (রহঃ) ও ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের এক
ভাই ইন্তেকাল করেছেন, তোমরা দাড়াও এবং তার জানাযার সালাত আদায় কর। রাবী বলেন, আমরা উঠলাম, আর তিনি
আমাদের দু,কাতারে দাঁড় করালেন।
২০৮১ যুহায়র
ইবনু হারব, আলী ইবনু হুজর ও ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, তোমাদের এক
ভাই (নাজ্জাশী) ইন্তেকাল করেছেন। তোমরা দাঁড়াও এবং তার জানাযার সালাত আদায় কর।
যুহায়র (রহঃ)-এর বর্ণনায় তোমাদের ভাই উল্লেখ আছে।
২০৮২ হানান
ইবনুুর রাবী ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) শাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিত
যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাফন করার পর (মৃতব্যাক্তির)
কবরের নামনে জানাযার সালাত আদায় করলেন এবং এতে (অতিরিক্ত) চার তাকবীর বলেছিলেন।
শায়বানী বলেন, আমি শাবীকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনার কাছে
এ হাদীস কে বর্ণনা করেছে? তিনি বললেন, নির্ভরযোগ্য রাবী আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)। এ পর্যন্ত হল হাসান (রহঃ)
থেকে বর্ণিত হাদীসের শব্দাবলী। কিন্তু ইবনু নুমায়র (রাঃ)-এর বর্ণনায় আছে যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করলেন এবং সাহাবীরা তাঁর
পিছনে কাতার করলেন। আর তিনি চার তাকবীর বললেন। আমি আমর (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম এ
হাদীসটি তোমার কাছে কে বর্ণনা করেছে? তিনি বললেন, নির্ভরযোগ্য
রাবী ইবনু আব্বাস (রাঃ)।
২০৮৩
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া, হাসান ইবনু রাবী , ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মদ ইবনু হাতিম, উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) সকলেই ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-এর মাধ্যমে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ করেছেন। তবে
তাদের কারো হাদীসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযায় চার তাকবীর
বলেছেন এ কথা নেই।
২০৮৪ ইসহাক
ইবনু ইবরাহীম হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও আবূ গাসসান মুহাম্মদ ইবনু আমর রাযী (রহঃ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর মাধ্যমে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কবরে
সালাত আদায় করা সম্পর্কে। শায়বানীর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন। তাদের হাদীসেও
চারবার তাকবীর বলেছেন- এ কথা নেই।
২০৮৫
ইবরাহীম ইবনু আর আরা সামী (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক কবরের উপর জানাযার সালাত আদায় করেছেন।
২০৮৬ আবূর
রাবী যাহরানী ও আবূ কামিল ফূযায়ল ইবনু হুসায়ন জাহদারী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন কালো মোটা। অথবা একজন যুবক মসজিদ ঝাড় দিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কয়েক দিন না পেয়ে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। লোকেরা
তাকে জানালেন, সে মারা গিয়াছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমাকে
জানাওনি কেন? রাবী বলেন, তারা যেন তাঁর ব্যাপারটি তুচ্ছ মনে করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আমাকে তার কবর দেখিয়ে দাও। তারা (কবরটি) দেখিয়ে দিলেন। তিনি ঐ কবর সামনে
রেখে জানাযার সালাত আদায় করলেন। তারপর বললেন, এ কবরগুলো
তাদের জন্য অত্যন্ত- অন্ধকার। আল্লাহ পাক আমার সালাতের কারণে তাদের জন্য কবরকে
আলোকোজ্জ্বল করে দেবেন।
২০৮৭ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা
(রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যায়দ ইবনু আরকাম) (রাঃ) জানাযার সালাতে
চার তাকবীর বলতেন। একবার জানাযায় পাঁচবার তাকবীর বলেছিলেন। তাকে আমি জিজ্ঞাসা করলে
তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পাঁচবার বলেছেন।
২০৮৮ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়রা, আমরুন নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) আমির ইবনু রাবীয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন, যখন তোমরা
জানাযা দেখবে তখন যে পর্যন্ত জানাযা তোমাদের আগে চলে না যাওয়া অথবা (মাটিতে) না
রাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকবে।
২০৮৯
কুতায়বা ইবনু সাঈদ মুহাম্মদ, ইবনু রুমহ হারামালা (রহঃ) সকাল ইবনু
শিহাব (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণনা করেন। তবে ইউনূসের হাদীস আছে যে, –তিনি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, কুতায়বা
ইবনু সাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) আমর ইবনু রাবীয়া (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি (নাবী)
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা
জানাযা দেখতে পাও এবং তার সাথে যদি না যাও তবে জানাযা এগিয়ে না যাওয়া অথবা মাটিতে
না রাখা পর্যন্ত দাড়িয়ে থেকেো।
২০৯০ আবূ
কামিল, ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম, ইবনুল মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) সকলেই নাফি (রহঃ) হতে উক্ত সনদে
লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ)-এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে ইবনু জুরায়জের হাদীসে
আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন
কোন জানাযা দেখ, তখন তোমরা জানাযার সঙ্গে না গেলে জানাযা এগিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে
থেকেো।
২০৯১ উসমান
ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা
জানাযার অনুগামী হও তখন জানাযা মাটিতে না রাখা পর্যন্ত বসবে না।
২০৯২ যুরায়জ
ইবনু ইউনূস, আলী ইবনু হুজর ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে
বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা
কোন জানাযা দেখ, তখন দাড়িয়ে যাও। যে ব্যাক্তি জানাযার অনুগামী হয়, সে যেন
জানাযা (মাটিতে) না রাখা পর্যন্ত না বসে।
২০৯৩ সূরায়জ
ইউনুস, আলী ইবনু হুজর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি জানাযা
নিয়ে যাওয়ার সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দাঁড়িয়ে
গেলেন, আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়ালাম এবং বললাম, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! এ জানাযা একজন ইয়াহুদী মহিলার। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, মৃত্যু হল ভীতিকর ব্যাপার। অতএব কোন জানাযা দেখলে দাঁড়িয়ে যেও।
২০৯৪
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ মুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি জাবির
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পাশ দিয়ে একটি জানাযা যাচ্ছিল, এবং তা
দৃষ্টির অন্তরালে না যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন।
২০৯৫ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) জাবির
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
তার সাহাবীগণ একজন ইয়াহুদীর জানাযা দৃষ্টির আড়ালে না যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে
থাকলেন।
২০৯৬ আবূ
বকর আবূ শায়বা (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে
বর্ণিত যে, কায়স ইবনু সা’দ ও সাহল ইবনু হুনায়িফ দু-জনই কাদিসিয়ায় অবস্হায় করছিলেন। তাদের
পাশ দিয়ে একটি জানাযা যাচ্ছিল। এতে তারা দুজনই দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাদেরকে বলা হল
যে, এ জানাযাটি একজন কাদিসিয়াবাসীর। তাঁরা দুঁজনই বললেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে একটি জানাযা যাচ্ছিল, তিনি
দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। তখন তাঁকে বলা হয়েছিল জানাযাটি ইয়াহুদীর। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, সে কি মানুষ
নয়?
২০৯৭ কাসিম
ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) আমর ইবনু মুররা (রাঃ) উক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন। এতে রয়েছে যে, তারা দু-জন
বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম, তখন আমাদের
নিকট দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
২০৯৮
কুতায়রা ইবনু সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনু মুহাজির (রহঃ) ওয়াকিদ ইবনু আমর সা’দ ইবনু মু’আয (রহঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একটি জানাযা উপলক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এমতাবস্হায় নাফি ইবনু জুবায়র
(র)আমাকে দাড়ানো দেখতে পেলেন। জানাযা মাটিতে রাখার অপেক্ষায় তিনি বসে ছিলেন।
আমাকে বললেন, দাঁড়িয়ে থাঁকছ কেন? আমি বললাম, আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটির কারনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। তখন নাফি”
(রহঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে দাঁড়াতেন পরে তিনি বসতেন।
২০৯৯
মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) মাসউদ ইবনু হাকাম আনসারী (রাঃ) থেকে
বর্ণিত যে, তিনি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্বে দাঁড়াতেন কিন্তু পরে তিনি বসতেন। নাফি ইবনু
জুবায়র (রহঃ) ওয়াকিদ ইবনু আমর (রহঃ) কে জানাযা মাটিতে না -এরাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে
থাকতে দেখেছেন বলে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
২১০০ আবূ
কুরায়ব (রহঃ) ইয়াহিয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) উক্ত সনদে (বর্ণনা করেছেন)।
২১০১ যুহায়র
ইবনু হারব (রহঃ) আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দাঁড়াতে দেখেছি, তাই আমরাও
দাড়িয়েছি। আর তিনি বসেছেন, তাই আমরাও বসেছি। অর্থাৎ জানাযায়।
২১০২
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর আল মূকাদ্দামী ও উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) শু’বা (রাঃ)
থেকে উক্ত সনদে (বর্ণনা করেছেন)।
২১০৩ হারুন
ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) আউফ ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক জানাযার সালাত আদায় করলেন, আমি তার
(পঠিত) দুআ মুখস্ত করেছি। হে আল্লাহ! মৃত্যু ব্যাক্তিকে ক্ষমা কর, দয়া কর, তাকে
শান্তিতে রাখ, তাকে মাফ কর, তার অবস্হানকে মর্যাদা দান কর, তার কবরকে
প্রশস্ত কর, পানি বরফ এবং শিলাবৃষ্টি দ্বারা তাকে ধৌত কর, অপরাধ থেকে
তাকে পবিত্র কর, যেমন সাদা কাপড়কে ময়লামুক্ত করা হয়। হে আল্লাহ! তার দুনিয়ার বাসভবন হতে উত্তম
বাসভবন তাকে দান কর, তার পরিবার হতে উত্তম পরিবার, তার স্ত্রী হতে উত্তম স্ত্রী দান কর, তাকে
জান্নাতে দাখিল কর এবং রক্ষা কর কবরের আযাব হতে, জাহান্নামের
আযাব হতে। আউফ ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দুআ শুনে আমি আকাঙ্খা করলাম সেই মৃত ব্যাক্তি
যদি আমি হতাম।
২১০৪ আব্দুর
রহমান ইবনু জুবায়র (রহঃ) আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২১০৫ ইসহাক
ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) মুআবিয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) হতে উভয় সনদে ইবনু ওহাবের হাদীসের
অনুরুপ বর্নিত রয়েছে।
২১০৬ নাসর
ইবনু আলী আল-জাহযামী, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, আবূ তাহির ও হারুন ইবনু সাঈদ আন- আয়লী (রহঃ) আউফ ইবনু মালিক আলআ শজায়ী (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানাযার সালাত আদায় করা অবস্হায়
বলতে শুনেছি, তাকে দয়া কর, তাকে শাস্তিতে রাখ, তার অবস্হানকে , মর্যাদাপূর্ণ কর, তাকে মাফ করে দাও, তার কবরকে প্রশস্ত করে দাও, তাকে পাক- পবিত্র করে দাও, পানি দ্বারা, বরফ দ্বারা, শিলাবৃষ্টির
পানি দ্বারা; তাকে গুনাহ হতে এভাবে পরিষ্কার করে দাও, যেমন সাদা
কাপড়কে পরিষ্কার-করা হয় ময়লা হতে। তাকে তার ঘর হতে উত্তম ঘর দান কর, তার পরিবার
হতে উত্তম পরিবার, তার ন্ত্রী হতে উত্তম স্ত্রী দান কর। তাকে কবরের আযাব হতে ও দোযখের আযাব হতে
রক্ষা কর। আউফ (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এ মৃত ব্যাক্তির জন্য
দুআর কারণে আকাঙ্ক্ষা করেছিলাম যদি এ মৃত ব্যাক্তি আমি হতাম।
২১০৭
ইয়াহহিয়া ইবনু ইয়াহহিয়া তামীমী (রহঃ) সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইমামতিতে (জানাযার) সালাত আদায়
করেছি। উম্মে কাব (রাঃ) নিফাস অবস্হায় ইন্তেকাল করেছিলেন। তার জানাযার সালাত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদায় করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায়ের সময় তার সিনা বরাবর না
দাঁড়িয়ে মাঝামাঝি স্থানে দাঁড়িয়েছিলেন।
২১০৮ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) হুসায়ন (রাঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণনা
করেছেন। তবে তারা উম্মে কাব (রাঃ)-এর কথা বলেন নি।
২১০৯
মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও উকবা ইবনু মুকরাম আম্মি (রহঃ) সামুরা ইবনু জুনদুব
(রাঃ) বলেন, আমি -এরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে যুবক ছিলাম। আমি
তাঁর নিকট থেকে অনেক কিছু মুখস্ত করে নিতাম। এখানে আমার চেয়ে অধিক বয়সী সাহাবী
থাকার কারণে আমি কথা বলা থেকে বিরত থাকি। নিফাস অবস্হায় ইন্তেকাল করেছে এমন এক
মহিলার জানাযার সালাত আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পেছনে
দাঁড়িয়ে আদায় করেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে সিনা
বরাবর না দাঁড়িয়ে তার মাঝামাঝি স্থানে দাঁড়িয়েছিলেন। এর পর ইবনুল মূসান্নার
রিওয়ায়াতে আছে যে, রাবী বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু বুরায়দা (রাঃ) আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, “তার জানাযার
সালাতে তিনি তার মাঝামাঝি স্থানে দাড়িয়ে ছিলেন।
২১১০ ইয়াহযা
ইবনু ইয়াহহিয়া ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জ্বীনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামহীন একটি ঘোড়া আনা হল ইবনু দাহদাহের জানাযা হতে প্রত্যাবর্তন- কালে তিনি
তাতে আরোহন করেন। আর আমরা সবাই তার পাশাপাশি হেঁটে চলছিলাম।
২১১১
মুহাম্মাদ ইবনুল মুনান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনু দাহদাহের জানাযা আদায় করলেন।
তারপর জ্বীনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামহীন একটি ঘোড়া আনা হল। একজন লোক
ঘোড়ার লাগাম ধরে রাখল, তিনি তাতে আরোহন করলেন। ঘোড়া তাঁকে নিয়ে ছুটতে লাগল, আমরাও তাঁর
পিছনে পিছনে দ্রুত চললাম। রাবী বলেন, তখন আমাদের
মধ্য থেকে এক ব্যাক্তি বলল, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইবনু
দাহদাহের জন্য জান্নাতে ফলের গুচ্ছ ঝূলান বা লটকান রয়েছে। আর শুবা (রহঃ) বলেছেন, আবূদ দাহদাহ
(রাঃ)-অর জন্য।
২১১২ ইয়াইয়া
ইবনু ইয়াইয়া (রহঃ) আমির ইবনু সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রহঃ) থেকে বর্নিত যে, সা’দ ইবনু
আবূ ওয়াক্কাস (রহঃ) তাঁর মৃত্যু পিড়ার আক্রান্ত অবস্হায় বললেন, আমার জন্য
যেন বুগলী (লাহাদ) কবর তৈরী করা হয় এবং তবে যেন কাঁচা ইট লাগান হয় যেভাবে কাঁচা ইট
লাগানো হয়েছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবরে।
২১১৩
ইয়াহহিয়া ইবনু ইয়াহহিয়া , আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কবরে লাল একটি চাঁদর দেয়া
হয়েছিল। ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, রাবী আবূ জামরার নাম নাসর ইবনু ইমরান। আর
রাবী আবূ তাইয়্যাহ-এর নাম হল ইয়াযিদ ইবনু হুমায়দ। তাঁরা দু-জন সারাখস-এ মারা যান।
২১১৪ আবূ
তাহির আহমাদ ইবনু আমর হায়ীন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) সূমামা ইবনু শুফাই (রহঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ফূযালা ইবনু উবায়দের সাথে রোম দেশে রুদিস নামক স্থানে ছিলাম। তখন আমাদের
একজন নাহল ইন্তেকাল করলেন। ফূযালার নির্দেশক্রমে তাঁর কবরের উপরের মাটি সমান করে
দিলাম। তারপর তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কবর সমান করে দেয়ার জন্য
বলতে শুনেছি।
২১১৫
ইয়াহহিয়া ইবনু ইয়াহহিয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব, আবূল
হায়্যাজ আসা’দী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আলী (রাঃ)
আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে ঐ কাজে পাঠাব যে কাজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়ে ছিলেন? কাজটা হল সকল মূর্তিকে বিলুপ্ত এবং উচু
কবরকে ভেঙ্গে দিবে।
২১১৬ আবূ
বাকর ইবনু খাল্লাদ আল বাহিলী (রহঃ) হাবীব (রহঃ) হতে উক্ত সনদে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, মূর্তি
বিলূপ্ত এবং ছবি ধ্বংস করে দিবে।
২১১৭ আবূ
বাকর আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের উপর চুনা লাগানো, তার উপর বসা, কবরের উপর
গৃহনির্মাণ বা পাকা করতে নিষেধ করেছেন।
২১১৮ হারুন
ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ যুবায়ার
(রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ শুনেছেন।
২১১৯
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কবরে চুনা
লাগাতে নিষেধ করা হয়েছে।
২১২০ যুহায়র
ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ
যদি জ্বলন্ত কয়লার উপর বসে পড়ে এবং তার কারণে তার কাপড় পুড়ে শরীর পর্যন্ত পৌছে যায়, তা তার জন্য
কারো কবরের উপর বসা অপেক্ষা উত্তম হবে।
২১২১
কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আমরুন নাকিদ (রাঃ) সূহায়ল (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ
বর্ণিত।
২১২২ আলী
ইবনু হুজর সা’দী (রহঃ) আবূ মারসা’দ গানাভী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা কবরের উপরে বসো না এবং তা সামনে রেখে
সালাত আদায় করো না।
২১২৩ হাসান
ইবনু রাবী বাজালী (রহঃ) আবূ মারসা’দ আল গানাভী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলতে শুনেছি তোমরা কবরকে সামনে করে
সালাত আদায় করো না এবং কবরের উপর বসো না।
২১২৪ আলী
ইবনু হুজর সা’দী ও ইসহাক ইবনু ইববরাহীম হানযালী (রহঃ) আব্বাস ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু
যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত যে যে, আঁয়িশা (রাঃ) আদেশ করলেন, সা’দ ইবনু
আবূ ওয়াক্কাসের জানাযা মসজিদে রেখে তার উপর আদায় করা হোক। এতে লোকেরা তাঁর এ
আদেশকে অপছন্দ করল, তখন তিনি বললেন, মানুষ কত তাড়াতাড়ি ভুলে গেল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সুহায়ল ইবনু বায়যার সালাতে জানাযা মসজিদের অভ্যন্তরেই আদায় করেছিলেন।
২১২৫
মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আব্বাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)
সুত্রে বর্ণনা করেন যে, সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-এর ইন্তেকালে পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনীগণ তাঁর জানাযা মসজিদে নিয়ে আমার জন্য সংবাদ পাঠালেন, যাতে তারা
তাঁর উপর জানাযার সালাত আদায় করতে পারেন। তাঁরা তাই করলেন এবং তাঁর জানাযার তাঁদের
হুজরার সামনে রাখা হল। তাঁরা তাঁর উপর সালাতে জানাযা আদায় করলেন- এরপরতার জানাযা
বাবুল জানাইয দিয়ে যা মাকায়াদের দিকে অবস্হিত ছিল বের করা হল। এরপর তাঁদের নিকট
সংবাদ পৌছল যে, লোকেরা একে দোষনীয় মনে করেছে। তারা বলেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর যুগে জানাযা নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা হত না। আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে এ
সংবাদ পৌছলে তিনি বললেন, মানুষনা জেনে অতি তাড়াতাড়ি সমালোচনা মুখর হয়ে উঠল। তারা মসজিদের ভিতর জানাযা
নিয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের প্রতি দোষারোপ করল। অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সুহায়ল ইবনু বায়যার (রাঃ)-এর জানাযার সালাত মসজিদেরর অভ্যন্তরেই আদায়
করেছেন। ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, সূহায়ল ইবনু দাদ তিনি ইবনুল বায়যা যার মা
ছিলেন বায়যা।
২১২৬ হারুন
ইবনু আবদুল্লাহ ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ)
থেকে বর্ণিত যে, সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-এর ইন্তেকালের পর আয়িশা (রাঃ) বললেন, তাঁকে
মসজিদে নিয়া যাও। যেন আমিও তাঁর জানাযার সালাত আদায় করতে পারি। তাঁর এ কথাটি
নাপছন্দ করা হল। তিনি বললেন, আল্লার কসম! নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়যার দু-পূত্র সুহায়ল ও তার ভাইয়ের জানাযা মসজিদেই আদায়
করেছিলেন।
২১২৭
ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া তামিমী, ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব ও কুতায়রা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আমার ঘরে অবস্থানের পালার রাতের শেষভাগে
গারাকাদে বাকীতে গিয়ে বলতেন “আলসালামু আলাইকুম”- ও মুমিন বান্দাদের বাসস্হান, তোমাদেরকে
যা ওয়াদা করা হয়েছে আল্লাহ তাআ’লা তা তোমাদের দিয়েছেন, আগামীকালে
জন্য যা ওয়াদা করা হয়েছে তা (বলছিলেনঃ) দিবেন। আমরাও ইনশা আল্লাহ তোমাদের সাথে
মিলিত হব। হে আল্লাহ! বাকীউল গারকাদের বাসিন্দাদেরকে ক্ষমা করে দাও। কিন্তু
কুতায়বা “তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে- কথাটি বলেন নি।
২১২৮ হারুন
ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) মুহাম্মদ ইবনু কায়স (রহঃ) বলেন, আমি আয়িশা
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমি কি তোমাদের কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আমার কথা বলব না? আমরা বললাম, হাঁ অবশ্যই
বর্ণনা করুন। ইমাম মুসলিম (রহঃ) হাজ্জাজ আওয়ার (রহঃ) থেকে যিনি শুনেছেন এরুপ
উস্তাদ থেকে জনৈক কুলায়শী আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে মুহাম্মদ ইবনু কায়স ইবনু মাখরামা
ইবনু মুত্তালিব (রহঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি একদিন বলেন, আমি কি
তোমাদেরকে আমার ও আমার মায়ের কথা শুনাবো না? রাবী
আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আমরা মনে করলাম, তিনি তার জন্য ধাত্রী-মায়ের কথা বলতে চাচ্ছেন। এরপর তিনি বললেন, আয়িশা (রাঃ)
বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আমার কথা
শুনাবো না? আমরা বললাম, হাঁ নিশ্চয়ই বর্ণনা করুন। রাবী বলেন তিনি বললেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পালার যে রাতে আমার কাছে ছিলেন যে রাতে তিনি
বাইরে থেকে এসে চাঁদর রেখে দিলেন, জুতা খুলে নিলেন এবং জুতা দুটি তার পায়ের
দিকে রেখে চাঁদরের এক কিনারা বিছানার উপর বিছিয়ে দিলেন এবং শুয়ে পড়লেন। তিনি
এতটুকু সময় অপেক্ষা করেন যতটুকু সময়ে তিনি আমার ঘুমিয়ে পড়ার ধারণা করলেন। তখন অতি
সন্তর্পণে চাঁদর নিলেন, জুতা পরলেন ও দরজা খুলে বেরিয়ে গেলেন। তারপর সাবধানে দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন।
আমিও আমার উড়না মাথায় দিলাম, জামা পরে নিলাম এবং ইযার বেঁধে নিলাম।
তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে পিছনে রওনা হলাম।
তিনি গারাকাদে বাকীতে পৌছে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। তিনবার হাত উঠালেন। তারপর
ফিরে আসতে লাগলেন, আমিও রওনা হয়ে পড়লাম। দ্রুতগতিতে আসতে লাগলেন, আমিও আমার
গতি বাড়িয়ে দিলাম। তিনি দৌড়াতে শুরু করলেন আমিও দৌড়াতে লাগলাম। তিনি ঘরে এসে
পৌছলেন, আমিও তাঁর পূর্বক্ষণে এসে পৌহুলাম এবং ঘরে প্রবেশ করেই শুয়ে পড়ার সাথে সাথে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে প্রবেশ করলেন এবং বললেন, হে আয়িশা!
কী হয়েছে?তুমি ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস গ্রহণ করছ কেন?আমি বললাম, কিছুই না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বলে
দাও, নতুবা সর্বজ্ঞ সূক্ষ্মমদর্শি আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিবেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আমি
বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান। অতঃপর ঘটনা বর্ণনা করলাম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেলেন, আমার সামনে
একটি মানুষের দেহের ছায়ার ন্যায় দেখা যাচ্ছিল তা হলে সে ছায়া তুমিই ছিলে? আমি বললাম, হাঁ। তখন
তিনি আমার বুকে একটি ধাক্কা মারলেন, তাতে আমি
ব্যাথা পেলাম। তারপর বললেন, তুমি কি ধারণা করেছিলে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল তোমার প্রতি অবিচার করবে? আয়িশা বললেন, হাঁ, তাই। অনেক
সময় মানুষ গোপন রাখতে চায়, আর আল্লাহ তা প্রকাশ করে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, জিবরীল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসেছিলেন। যখন তুমি আমাকে বের হতে দেখেছিলে। এসে
আমাকে তিনি ডাকলেন এবং তোমার থেকে ব্যাপার গোপন রাখতে চাইলেন। আমি তাঁর
ইচ্ছানূযায়ী তোমার থেকে গোপন রাখলাম তিনি তোমার ঘরে প্রবেশ করতে চাচ্ছিলেন না
যেহেতু তুমি কাপড় রেখে দিয়েছিলে। আর আমি ধারণা করলাম তুমি ঘুমিয়ে পড়েছে, তাই তোমাকে
জাগানো পছন্দ করি নি এবং আমার আশংকা হল তুমি (একাকীঁ) ভয় পাবে। জিবরীল (আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) বললেন, আপনার রব আপনাকে আদেশ করেছেন, গারাকাদে বাকীতে গিয়ে তাদের জন্য ক্ষমা
প্রার্থনা করুন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা
করলাম, হে আল্লাহর রাসুল তাদের জন্য আমরা কী বলব? রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এভাবে বল-
কবরবাসী মুমিন মুসলমানদের প্রতি সালাম, আল্লাহ
অগ্রগামী পশ্চাৎগামী সবার প্রতি দয়া করুন আমরাও ইনশাআল্লাহ অবশ্য তোমাদের সাথে
মিলিত হব।
২১২৯ আবূ বাকর
ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে শিক্ষা দিতেন যখন তারা কবরস্থানে গমন
করতেন, তিনি তখন তাদের লক্ষ্য করে বলতেন, (আবূ বকর
(রাঃ) এর বর্ণনা অনুযায়ী) আলসালামু আলা আহলিদ দিয়ার এবং যুহায়র এর বর্ণনা
“আসসালামু আনায়কুম” কবরবাসী মুমিন ও মুলমানদের উপর সালাম বর্ষিত হউক ইনশাআল্লাহ
আমরাও অবশ্য তোমাদের সাথে মিলিত হব। আমাদের এবং তোমাদের সবার জন্য আল্লাহর নিকট
শান্তি ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি।
২১৩০
ইয়াহিয়া ইবনু আয়্যুব ও মুহাম্মদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি আমার
আম্মার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুমতি আমার রবের নিকট চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে
অনুমতি দেয়া হয়নি। অতঃপর কবর যিয়ারত করার অনুমতি চেয়েছিলাম, তখন অনুমতি
দেয়া হয়েছে।
২১৩১ আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আম্মার কবর যিয়ারত করলেন এবং কাদলেন, উপস্থিত
সবাইও কাদলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি
আল্লাহর নিকট তাঁর জন্য ইস্তিগফার করার অনুমতি চেয়েছিলাম, আমাকে
অনুমতি দেয়া হয়নি, অতঃপর তাঁর কবর যিয়ারত করার অনুমতি চেয়েছিলাম, তখন অনুমতি
দেয়া হল। তোমরা কবর যিয়ারত করতে থাক, কবর পরকাল
স্বরণ করিয়ে দেয়।
২১৩২ আবূ
বকর আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ)
বুরায়দা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি কবর
যিয়ারত করা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করতাম এখন তোমরা যিয়ারত কর। তিন দিনের অধিক
কুরবানীর গোশত খেতে নিষেধ করতাম, এখন যত দিন সম্ভব সংরক্ষণ করে খেতে থাক
এবং নাবীয (খেজুর ড়িজানো পানি) পান করা হতে নিষেধ করতাম। (মশক ব্যতীত অন্যান্য
পাত্রে) এখন সকল পাত্রে পান কর। কিন্তু নেশা হয় এমন অবস্হায় নয়। ইবনু নুমায়র তার
বলেছেন।
২১৩৩
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) সুলায়মান ইবনু বুরায়দা (রহঃ)
তার পিতার সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। অন্য সুত্রে
ইবনু আবূ উমর, মুহাম্মাদ ইবনু রাফি , আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আবদুল্লাহ বুরায়দা (রহঃ) তাঁর পিতার সুত্রে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তবে তারা সবাই আবূ সিনান (রহঃ) এর
মর্মের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২১৩৪ আউন ইবনু সাল্লাম আল-কুফী (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এক ব্যাক্তির জানাযা আনা হল, যে তার দ্বারা আত্নহত্যা করেছে, তিনি তার জানাযা পড়েন নি।