হেবা

৪০১৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব (রহঃ) উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমি একটি উত্তম ঘোড়া আল্লাহর রাস্থায় দান করেছি। কিন্তু সে ব্যক্তি ঘোড়াটির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করতে অক্ষম থাকে। আমার ধারণা হলো সে উহা সস্তা দামে বিক্তি করে দিবে। আমি এ ব্যাপারে রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ, তুমি উহা খয়িদ- করবে না এবং তোমার দানকে ফিরিয়ে আনবেনা। কেননা, যে ব্যক্তি আপন দান ফিরিয়ে নেয়, সে সেই কুকুরের ন্যায়। যে বমি করে তা আবার খায়।

৪০১৯। যুহায়র ইবনু হারব ও আব্দুর রহমান ইবনু মাহদী (রহঃ) মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণনা করেন। তবে এতে তিনি অতিরিক্ত বলেনঃ যে, তুমি তা খয়ীদ করবে না, যদি এক দিরহামের বিনিময়েও সে তোমাকে তা দিয়ে দেয়।

৪০২০। উমাইয়া ইবনু বিসতাম (রহঃ) উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্তায় দান করেন। পরে তিনি তার মালিকের নিকট ঘোড়াটি দেখতে পান যে, সে তাকে নষ্ট করে ফেলেছে। সে লোকটি ছিল দরিদ্র। তাই তিনি তা কিনে নেওয়ার ইচ্ছা করেন। তখন তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে এ বিষয়টি তাকে বললেনঃ। তিনি বললেনঃ, তুমি তা খরিদ করবে না, যদিও সে তোমা কে তা এক দিরহামের বিনিময়ে দেয়। কেননা, যে ব্যক্তি আপন দান ফিরিয়ে নেয়, সে সেই কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে তা আবার খায়।

৪০২১। ইবনু আবূ উমার (রহঃ) যায়িদ ইবনু আসলাম (রহঃ) এর সুত্রে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। তবে মালিক ও রাওহ (রহঃ)- এর হাদীস পূর্ণাজ্ঞ ও অধিক নির্ভরযোগ্য।

৪০২২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমাহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আল্লাহর রাস্থায় একটি ঘোড়া দান করেন। পরে তিনি তা নষ্ট হতে দেখেন। তখন তিনি তা খরিদ করতে চাইলেন এখং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তুমি তা খরিদ করো না এবং তোমার দানের বস্তুকে ফিরিয়ে নিও না।

৪০২৩। কুতায়বা ও ইবনু রুমহ (রহঃ) কায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে এবং মূকাদ্দামী, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না, ইবনু নুমায়র, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) উবায়দূল্লাহ (রহঃ) থেকে উভয়ে বর্ণনা করেন নাফি- সুত্রে ইবনু উমার (রাঃ) থেকে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত হাদীস মালিক (রহঃ) এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৪০২৪। ইবনু আবূ উমার ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমার (রাঃ) একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্থায় দান করেন। এরপর তিনি উহাকে বিক্রি হতে দেখেন। তখন তিনি উহা খরিদ করার ইচ্ছা করেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জিজ্ঞাসা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমার! তোমার দানের বস্তুকে ফিরিয়ে নিওনা।

৪০২৫। ইবরাহীম ইবনু মূসা রাযী ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার দান ফিরিয়ে লেয় তার উদাহরণ ঐ কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে এবং পূনরায় তার বমি খেয়ে ফেলে।

৪০২৬। আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুুূল আলা (রহঃ) আওযাঈ (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমি মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনু হুসায়ন (রহঃ)-কে উক্ত সনদে অনুরুপ বলতে শুনেছি।

৪০২৭। হাজাজ ইবনু শাইর (রহঃ) আবদূর রাহমান ইবনু আমর (রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত যে, মুহাম্মাদ ইবনু ফাতিমা বিনত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত সনদে হাদীসটি তাঁদের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৪০২৮। হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী এবং আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, ঐ ব্যক্তির উদাহরণ, যে দান করে তা ফিরিয়ে আনে সেই কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে পরে তরে বমি খেয়ে ফেলে।

৪০২৯। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বীয় দান প্রত্যাহার কারী আপন বমি পূনরায় ভক্ষণকারীর ন্যায়।

৪০৩০। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) কাতাদা (রাঃ)-এর সুত্রে এই সনদে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন।

৪০৩১। ইসহাক ইবনু ইবরাহিম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিজের দান প্রত্যাহার কারী ন্যাড়ি কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে ও পরে সে তার বমি পুনরায় ভক্ষণ করে।

৪০৩২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয় ইয়াহইয়া (রহঃ) নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, তাঁর পিতা তাঁকে সঙ্গে করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসেন। অতরপর বলেনঃ যে, আমি আমার এ পুত্রকে আমার একটি গোলাম দান করেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তোমার সকল পুত্রকে কি এভাবে দান করেছ তিনি বললেনঃ, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তা হলে তুমি উহা ফিরিয়ে নাও।

৪০৩৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমার পিতা আমাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসেন এবং বলেনঃ যে, আমি আমার এই পুত্রকে একটি গোলাম দান করেছি। তিনি বললেনঃ, তোমার সকল পুত্রকে দান করেছ কী? তিনি বললেনঃ, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে তা ফিরয়ে নাও।

৪০৩৪। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ইবনু উযায়না (রহঃ) থেকে এবং কুতায়বা ও ইবনু রুমহ (রহঃ) লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে, হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইউনূস (রহঃ) থেকে, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) মামার (রহঃ) থেকে, তারা সকলেই যুহরী (রহঃ) এর সুত্রে উক্ত সনদে এ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে ইউনুস ও মামার (রহঃ)-এর বর্ণনায় ‘আকুল্লু বানিকাহ’ এবং লায়স ও ইবনু উয়ায়না (রহঃ)-এর বর্ণনায় ‘আকুল্লু অলাদিকা’ এবং মুহাম্মাদ ইবনু নুমান ও হুমায়দ ইবনু আব্দুর রহমান থেকে লায়স এর বর্ণনায় বাশীর নূমানকেঃ সঙ্গে নিয়ে আসে বলা হয়েছে।

৪০৩৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) নূমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, তাঁকে তার পিতা একটি গোলাম দান করেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, এ গোলামটি কিসের! তিনি বললেনঃ, একে আমার পিতা আমাকে দান করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তার সকল ভাইদেরকে তুমি দান করেছ কী, যেভাবে-একে দান করেছ? তিনি বললেনঃ, না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে তা ফিরিয়ে নাও।

৪০৩৬। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) নূমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমাকে আমার পিতা তার সম্পদ থেকে কিছু দান করেন। আমার মা আমরা বিনত রাওয়াহা (রহঃ) বললেনঃ, আমি সন্তুষ্ট হতে পারছি না, যতক্ষন না আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাক্ষী রাখেন। এরপর আমার পিতা আমাকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আসেন, আমার দানের উপর তাকে সাক্ষী রাখার জন্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ, এরুপ কাজ কি তুমি তোমার আর সব পূত্রদের সঙ্গে করেছ? তিনি বললেনঃ, না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমার সন্তানদের মধ্যে সমতা বিধান কর। তখন আমার পিতা চলে আসেন এবং সে দান ফিরিয়ে নেন।

৪০৩৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) নুঁমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁর মা বিনত রাওয়াহা (রাঃ) তার পিতার নিকট স্বীয় পুত্রের জন্য তার সস্পদ থেকে কিছু দান করার অনুরোধ করলেন। এক বছর যাবত তিনি এ ব্যাপারে টালমাটাল করেন। পরে তার আগ্রহ সৃষ্টি হলো। বিনত রাওয়াহা (রাঃ) বললেনঃ, আমার পূত্রকে যা দান করবেন তার উপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সাক্ষী না রাখা পর্যন্ত আমি খূশি হবো না। তখন আমার পিতা আমার হাত ধরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন। সে সময় আমি বালক ছিলাম। তিনি বললেনঃ, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এর মা বিনত রাওয়াহার অধিক হয়েছে যে, আমি তাঁর পূত্রকে যা দান করেছি আপনাকে তার সাক্ষী রাখি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, হে বাশীর! এ ছাড়া তোমার কি আর কোন পূত্র আছে বললেনঃ, তিনি বললেনঃ হ্যা। তিনি বললেনঃ, তুমি কি তাদের সকলকে এরুপ দান করেছ? তিনি বললেনঃ, না। তখন তিনি বললেনঃ, তাহলে আমাকে সাক্ষী রেখো না। কারণ, আমি যুলমের ব্যাপারে সাক্ষী হই না।

৪০৩৮। ইবনু নুমায়র (রহঃ) নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, এ ছাড়া কি তোমার আরও পূত্র আছে তিনি বললেনঃ, হাঁ। তিনি বললেনঃ তাদের সবাইকে কি এভাবে দান করেছ বললেনঃ, না। তিনি বললেনঃ তা হলে আমি যুলুমের ব্যাপারে সাক্ষী হরো না।

৪০৩৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পিতাকে বললেনঃ, আমাকে যুলুমের ব্যাপারে সাক্ষী রেখো না।

৪০৪০। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) নূমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমার পিতা আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলেন। তারপর বললেনঃ, ইয়া রাসুলুল্লাহ!আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি নুমানকে আমার সম্পদ থেকে অমুক অমুক কে দান করেছি। তিনি বললেনঃ, তোমার সকল পূত্রদেরও কি তুমি তা দান করেছ, যেরুপ নুমানকে দান করেছ? তিনি বললেনঃ, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তাহলে আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে এর সাক্ষী রাখো। তারপর বললেঃ ন, তুমি কি চাও যে, তারা সবাই তোমার প্রতি সদ্যবহার করুক তিনি বললেনঃ, হ্যা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তাহলে এরুপ করো না।

৪০৪১। আহমাদ ইবনু উসমান নাওফালী (রহঃ) – নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমার পিতা আমাকে কোন এক জিনিস দান করেন। পরে তিনি আমাকে সহ রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আগমন করেন তাঁকে সাক্ষী করার জন্য। তিনি বললেনঃ, তোমার সকল পুত্রকে কি এভাবে দান করেছ তিনি বললেনঃ, না। তিনি বললেনঃ, তুমি কি তাদের থেকে সদ্যব্যাবহার আশা করো না? যেমন আশা করো এর থেকে তিনি বললেনঃ, হ্যা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তাহলে আমি সাক্ষী হবোনা। ইবনু জাওন বলেনঃ, আমি এ হাদীসটি মুহাম্মদের নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেনঃ, আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেনঃ তোমরা তোমাদের পূত্রদের মধ্যে সমতা বিধান করো।

৪০৪২। আহমাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ইউনুস (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, বাশীরের স্ত্রী তাকে বলেনঃ, আমার পূত্রকে আপনার গোলামটি দান করে দিন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমার পক্ষে সাক্ষী রাখুন। তিনি রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেনঃ, অমূকের কন্যা (আমার স্ত্রী আমার কাছে আবেদন করেছে, যেন আমি তার পূত্রকে আমার গোলামটি দান করে দেই। আর সে বলেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পক্ষে সাক্ষী করুন। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তার কি আরও ভাই আছে? তিনি বললেনঃ, হ্যা। এরপর তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তাদের সকলকে কি দান করেছ, যেরুপ ওকে দান করেছ তিনি বললেনঃ, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তাহলে এটি ঠিক হবে না। আর ন্যায়ের উপর ব্যতীত আমি সাক্ষী হবোনা।

৪০৪৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, যে ব্যক্তিকে এবং যার উত্তরসূরিদেরকে কিছু দান করা হলো, তবে তাকে যা দান করেছে, তারই হয়ে যাবে। এরপরে যে দান করেছে তা তার কাছে ফিরে আসবে না। কেননা, সে এমনভাবে দান করেছে, যার মধ্যে মীরাস প্রবর্তিত হয়েছে।

৪০৪৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে শুনেছি, যদি কোন ব্যক্তি আগের কোন ব্যক্তি এবং উত্তর সূরিদেরকে জর জীবৎকালের জন্য দান করে, তাহলে সে তার কথা দ্বারা তার মধ্যে স্বীয় অধিকার কেটে দিল এবং সে বস্তু তারই হবে যার জন্য দান করা হয়েছে এবং তার উত্তরসুরীদের জন্যও। অবশ্য ইয়াহইয়া তাঁর হাদীসের প্রথম অংশে বলেছেনঃ, যদি কোন ব্যক্তিকে ব্জীবিতকালের জন্য দান করা হয় তবে তা তার জন্য ও উত্তরসূরীদের জন্য হয়ে যাবে।

৪০৪৫। আব্দুর রহমান ইবনু বিশর আবদী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, যে কোন ব্যক্তি কাউকে তার জীবৎকালের জন্য এবং তার আওলাদদের জন্য দান করবে, এরুপ বলে যে, আমি তোমাকে তা দিলাম এবং তোমার আওলাদদের যতদিন পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে, কেউ জীবিত থাকে, তরে উহা তারই হয়ে যাবে যাকে দান করা হলো। তা তার মালিকের নিকট আর ফিরে আসবে না। কারন সে এমনভাবে দান করেছে যার মধ্যে উত্তরাধিকার প্রবর্তন হয়ে গেছে।

৪০৪৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে জীবৎকালের দান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কার্যকরী বলে গণ্য করেছেন, তা হলো এই যে, সে বলে, ‘এ তোমার ও তোমার উত্তরাধিকারীদের জন্য। কিন্তু সে যদি বলে যে, এ তোমার জন্য যতদিন তুমি জীবিত আছ, তবে তা তার মালিকের নিকট ফিরে আসবে। মামার বলেনঃ, এ ফাতওয়াই দিতেন।

৪০৪৭। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যক্তির জন্য যার জীবৎকালের জন্য ও তার উত্তরসূরির জন্য দান করা হয়, ফয়সালা দিয়েছেন যে, তা তার জন্য চিরস্থায়ী হবে। জায়িয নয় তাতে কোন শর্ত বা ব্যাতিক্রম আরোপ করা। রাবী আবূ সালামা (রাঃ) বলেনঃ, কারণ হলো, সে এমনভাবে দান করেছে যার মথ্যে উত্তরাধিকার প্রযোজ্য হয়েছে। তাই মীরাসের দ্বারা তার শর্ত খণ্ডিত হয়েছে।

৪০৪৮। উবায়দুল্লাহ ইবনু উমার কাওয়ারীরী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জীবিৎকালের জন্য দান তারই প্রাপ্য যাকে তা দান করা হয়েছে।

৪০৪৯। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পরবর্তী অংশ অনুরুপ বর্ননা করেন।

৪০৫০। আহমাদ ইবনু ইউনুস ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের সম্পর্তী আটকিয়ে রেখো, নষ্ট করো না। কেননা, ষে ব্যক্তি চির জীবনের জন্য দান করে তবে তা তারই হয়ে যাবে যাকে দান করা হলো, তার জীবিত অবস্হায়, মৃত অবস্হায় এবং তার উত্তরাধিকারীদের জন্য।

৪০৫১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদা ওয়ারিস ইবনু আবদুস সামাদ (রহঃ) জাবির (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, উপরোক্ত আবূ খায়সামরে হাদীসের মর্মানূসারে। তবে আইউবীর এর বর্ণনায় কিছু অতিরিক্ত আছে। তিনি বলেছেনঃ আনসারগণ মুহাজিরদেরকে জীবৎকালের জন্য দান করতেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ, তোমরা তোমাদের সম্পদ নিজেদের জন্য সংরক্ষিত রাখো।

৪০৫২। মুহাম্মদ ইবনু রাফি ও ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, মদিনার জনৈক মহিলা তার একটা বাগান তার এক পূত্রকে জীবৎকালের জন্য দান করেন। পরে পূত্রটি মারা যায় এবং তারপর মহিলাটিও মারা যায়। পূত্র নিজের সন্তান রেঁখে যায়। আর তার ছিল কয়েকজন ভাই, যারা দানকারীনীর পূত্র। তারপর দানকারীনীর পূত্ররা বললো, বাগানটি আমাদের কাছে ফিরে এসেছে। আর যাকে দান করা হয়েছিল তার পূত্ররা বললো বরং এ এছাড়া আমারটি পিতার, তার জীবদ্দশায় ও মৃত অবস্হায়। এরপর তারা উসমান (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম তারিক (রহঃ) এর নিকট বিচার চাইল। তিনি জাবির (রাঃ)-কে ডেকে পাঠালেন। জাবির (রাঃ) সাক্ষ্য দেন, জীবৎকালীন দান তারই প্রাপ্য যাকে দান করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নির্দেশ দিয়েছেন। তারিক তদনূযায়ী ফয়সালা দেন। তারপর তিনি খলীফা আব্দুল মালিককে এ ঘটনা লিখে জানান এবং জাবিরের সাক্ষ্য দান সম্পর্কেও তাঁকে অবগত করেন। আবদুল মালিক বলেনঃ, জাবির (রাঃ) সত্যই বলেছেনঃ। পরে তারিক (রহঃ) এ হুকুম জারি করেন। কাজেই বাগানটি আজ পর্যন্ত দানকৃত ব্যক্তির বংশধরদের অধিকারে রয়েছে।

৪০৫৩। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত জাবির (রাঃ) এর হাদীসের প্রেক্ষিতে তারিক (রহঃ) জীবৎকালের জন্য দান তার ওয়ারিসদের অনুকুলে বলে ফয়সালা দেন।

৪০৫৪। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জীবৎকালের জন্য দান বৈধ।

৪০৫৫। ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব হারিসী (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জীবৎকালের জন্য দান দানকৃত ব্যক্তির পরিজনের মীরাসে পরিগণিত।

৪০৫৬। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, জীবৎকালের জন্য দান করা বৈধ।

৪০৫৭। ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব (রহঃ) সাঈদ সূত্রে কাতাদা (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণনা করেন। তবে সাঈদ বলেছেনঃ তার পরিজনদের মীরাসে পরিগণিত অথবা বলেছেন জায়িয।

 

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: হেবা
হেবা
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/heba.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/heba.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy