২৩৬৬ ইয়াহইয়া ইবনু আয়ুব, কুতায়বা ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, রমযান মাস এলে জান্নাতের দরজাসমুহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমুহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানকে শিকলবন্ধি কর হয়।
২৩৬৭ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমযান আরম্ভ হলে রহমতের দরাজাসমুহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমুহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং
শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়।
২৩৬৮ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও
হুলওয়ানী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যখন রমযান আসে এরপর তিনি
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২৩৬৯ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি
রমযান সম্পর্কে আলোচনা করে বললেন, তোমরা চাঁদ না দেখে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করো না এবং চাঁদ না দেখা পর্যন্ত ইফতারও করো না। আর
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন পূর্ণ করা।
২৩৭০ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযান মাসের কথা আলোচনা করলেন। তারপর তিনি তাঁর উভয় দুহাত দ্বারা ইংগিত প্রদান করে
বললেন দুমাস তো এতো দিনে আর-এতো দিনে হয়। দফায় তিনি বৃদ্ধাঙ্গূলীটি বন্ধ করে
নিলেন। এরপর বললেন, তোমরা চাঁদ দেখে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভংগ করবে- এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। যদি আকাশ মেঘে ঢাকা
থাকে, তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।
২৩৭১ ইবনু নুমায়র (রহঃ)
উবায়দুল্লাহ (রহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণনা করেন যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মাস
তো এতো দিনে এতো দিনে, এতো দিনে হয়। যদি আকাশ মেঘে
ঢাকা থাকে, তবে ত্রিশ দিন পুর্ণ করবে।
হাদীসটি আবূ উসামা কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ।
২৩৭২ উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ
(রহঃ) উবায়দুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসের কথা আলোচনা করে বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়। এ সময় তিনি তাঁর হস্ত
দ্বয়ের আঙ্গুল দ্বারা ইংগিত করে বললেন মাস এতো দিনে হয়, মাস এতো দিনে হয়, মাস
এতো দিনে হয়। তারপর বললেন, তোমরা পূর্ন কর। কিন্তু
ত্রিশ দিনের কথা উল্লেখ করেননি।
২৩৭৩ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ)
ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মাস
ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে। তাই তোমরা চাঁদ না দেখে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
আরম্ভ করবে না এবং চাঁদ না দেখে ইফতারও করবে না। যদি আকাশ মেঘে ঢাকা থাকে, তবে তা পূর্ন করবে।
২৩৭৪ হুমায়দ ইবনু মাসআদা
বাহিলী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।
যখন চাঁদ দেখবে তখন তোমরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আরম্ভ করবে এবং যখন তোমরা
চাঁদ দেখবে তখন ইফতার করবে। তবে আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলে (মাস) পূর্ণ করবে।
২৩৭৫ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা যখন চাঁদ দেখবে তখন
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আরম্ভ করবে এবং যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার করবে। তবে
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ রোযা পূর্ণ করবে।
২৩৭৬ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ) ইবনু উমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মাস ঊনত্রিশ রাত্র বিশিষ্ট
হয়ে থাকে। তাই তোমরা চাঁদ না দেখে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আরম্ভ করবে না
এবং চাঁদ না দেখে ইফতার করবেনা। হ্যা, যদি
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে। যদি আকাশ মেঘে ঢাকা থাকে তবে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে।
২৩৭৭ হারুন ইবনু আবদুল্লাহ
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, মাস এতো দিনে, এতো
দিলে, এতো দিনে হয়ে থাকে।
তৃতীয়বারে তিনি তার বৃদ্ধাঙ্গুলীটি বন্ধ করে রাখলেন।
২৩৭৮ হাজ্জাজ ইবনু শাইর
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাস
ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।
২৩৭৯ সাহল ইবনু উসমান (রহঃ)
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, মাস এতো দিনে, এতো দিনে এবং এতো দিনে হয়ে থাকে। এ সময় প্রথম
তিনি দশ আঙ্গুলে, দিতীয়বার দশ আঙ্গুলে এবং
তৃতীয়বার নয় আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন।
২৩৮০ উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, মাস এতো দিনে এতো দিনে এবং
এতো দিনে হয়ে থাকে। এ সময় তিনি তাঁর হস্থদ্বয় উত্তোলন করলেন এবং আঙ্গূলগুলো উঠিয়ে
রাখলেন। তারপর তৃতীয়বার ইংগিত করার সময় ডান অথবা বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গূলটি গুটিয়ে
রাখলেন।
২৩৮১ মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।
এ সময় বর্ণনাকারী শু’বা (রহঃ) তাঁর উভয় হাত দ্বারা তিনবার ইংগিত করলেন এবং
তৃতীয়বার একটি বৃদ্ধাঙ্গুল গুটিয়ে রাখলেন। উকবা বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন, মাস ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে। এ সময় তিনি তাঁর উভয়
হাত তিনবার উত্তোলন করে ইংগিত করলেন।
২৩৮২ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ)
ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমরা উম্মী জাতি। লিখতে জানি
না, হিসাব-নিকাশও করতে জানি না। তবে মাস এতো দিনে, এতো দিনে এবং এতো দিনে হয়ে থাকে। তৃতীয়বার হস্থ
ইংগিতের সময় তিনি তাঁর বৃদ্ধাঙ্গূলটি গুটিয়ে নেন। এরপর (আবার বললেন) মাস এতো দিনে, এতো দিনে, এতো
দিনে হয়ে থাকে। অর্থাৎ পূর্ণ ত্রিশ দিনে মাস হয়ে থাকে।
২৩৮৩ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) আসওয়াদ ইবনু কায়স (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত আছে। তবে দ্বিতীয়
মাসটি ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে এ কথাটি এ হাদীসের মধ্যে উল্লেখ নেই।
২৩৮৪ আবূ কামিল জাহদারী
(রহঃ) সা’দ ইবনু উবায়দা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) এক ব্যাক্তির নিকট শুনলেন, তিনি বলছেন, অর্ধরাত্রি
অর্ধমাস। তখন তিনি তাকে বললেন, কিসে তোমাকে জানালো আজ
অর্ধরাত্রি অর্ধমাস। অথচ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট
শুনেছি, তিনি দুইবার দুই হাতের দশ
আঙ্গূল দিয়ে ইংগিত করে বললেন, মাস এতো দিনে হয়, মাস এতো দিনে হয়। এরপর তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলীটিকে
শুটিয়ে রেখে তৃতীয়বার বললেন মাস এভাবে হয়ে থাকে।
২৩৮৫ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যখন তোমরা চাঁদ দেখবে তখন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আরম্ভ করবে এবং যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার করবে। যদি আকাশ
মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন সিয়াম পালন করবে।
২৩৮৬ আব্দুর রহমান ইবনু
সাল্লাম জুমাহী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, চাঁদ দেখে সিয়াম পালন শুরু
করবে এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। যদি মেঘে আকাশ ঢেকে যায় তবে সংখ্যা পূর্ণ করবে।
২৩৮৭ উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, চাঁদ দেখে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। যদি আকাশ
মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায় তবে ত্রিশ দিন পুরা করবে।
২৩৮৮ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন চাঁদের কথা আলোচনা করে বললেন, তোমরা যখন চাঁদ দেখবে তখন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আরম্ভ করবে এবং যখন চাঁদ দেখবে তখন ইফতার করবে, যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ
করবে।
২৩৮৯ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ তোমরা রমযানের একদিন বা দুদিন পূর্বে (নফল) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করবে না। হ্যা, যদি কোন ব্যাক্তি এ সময়
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে অভ্যস্ত থাকে, তবে সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে
পারে।
২৩৯০ ইয়াহইয়া ইবনু বিশর
হুরায়রী, ইবনু মূসান্না ও আবূ উমর এবং
যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস
বর্ণনা করেছেন।
২৩৯১ আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম পণ করলেন যে, তিনি এক মাস পর্যন্ত তাঁর
বিবিদের কাছে যাবেন না। যুহরী (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) এর সুত্রে আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন ঊনত্রিশ রাত্র
অতিবাহিত হয়ে গেল, আমি তা হিসাব রাখছিলাম। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন এবং আমার থেকেই আরম্ভ
করলেন। এ সময় আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো
একমাস পর্যন্ত আমাদের নিকট না আসার শপথ করেছেন অথচ আপনি ঊনত্রিশ তারিখের পরই চলে
আসলেন আমি তো গুণে রেখেছি। তখন তিনি বললেন, মাস
তো উনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।
২৩৯২ মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ও
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
মাসের জন্য তাঁর স্ত্রীদের থেকে পৃথক হয়ে গেলেন। এরপর ঊনত্রিশ দিন পর তিনি আমাদের
নিকট বের হয়ে এলেন। আমরা বললাম আজ তো ঊনত্রিশতম দিবস। তখন তিনি তাঁর উভয় হাত দিয়ে
তিনবার ইশারা করে শেষবার একটি আঙ্গূল গুটিয়ে রেখে বললেন, মাস তো এভাবেও হয়ে থাকে।
২৩৯৩ হারবন ইবনু আবদুল্লাহ ও
হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর
ন্ত্রীদের থেকে এক মাসের জন্য পৃথক হয়ে গেলেন। তারপর ঊনত্রিশতম দিবসে ভোর বেলা
তিনি আমাদের নিকট আসলেন। কেউ কেউ বললেন, ইয়া
রাসুলুল্লাহ আজ তো ঊনত্রিশতম দিনের ভোর – বেলা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।
এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় হাতের সমস্ত আঙ্গুল খুলে দুবার
ইংগিত করলেন এবং তৃতীয়বার ইংগিত করলেন নয় আঙ্গুল দ্বারা।
২৩৯৪ হারুন ইবনু আবদুল্লাহ
(রহঃ) উম্মু সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারের কিছু সংখ্যক লোকের নিকট এক মাস
পর্যন্ত যাবেন না বলে শপথ করলেন। এরপর যখন ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেল, তখন তিনি সকাল বা বিকালে তাদের নিকট আগমণ
করলেন। তখন তাকে বলা হল, হে আ ল্লাহর নাবী! আপনি তো
একমাস পর্যন্ত আমাদের নিকট আসবেন না বলে শপথ করেছিলেন। তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।
২৩৯৫ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও
মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন।
২৩৯৬ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) সা-দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাঁর এক হাত অপর হস্তের উপর মেরে বললেন, মাস
এভাবে এভাবে হয়ে থাকে। তৃতীয়বার তিনি একটি আঙ্গূল গুটিয়ে রাখলেন।
২৩৯৭ কাসিম ইবনু যাকারিয়্যা
(রহঃ) সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমবার দশ, দ্বিতীয়
বার দশ এবং তৃতিয়বার নয় আঙ্গুল দ্বারা ইশারা কঁরে বললেন, মাস এভাবে এভাবে এবং এভাবে হয়ে থাকে।
২৩৯৮ মুহাম্মাদ ইবনু
আবদুল্লাহ ইবনু কুহযায (রহঃ) ইসমাঈল ইবনু আবূ খালিদ (রহঃ) থেকে এ সনদে উপরোক্ত
দূটো অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২৩৯৯ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) কুরায়ব (রহঃ) থেকে
বর্ণিত যে- উম্মুল ফযল বিনত হারিস তাকে সিরিয়ায় মু’আবিয়া (রাঃ)-এর নিকট পাঠালেন।
(কুরায়ব বলেন) আমি সিরিয়ায় পৌহুলাম এবং তার প্রয়োজনীয় কাজটি সমাধা করে নিলাম। আমি
সিরিয়া থাকা অবস্হায়ই রমযানের চাঁদ দেখা গেল। জুমূ-আর দিন সন্ধ্যায় আমি চাঁদ
দেখলাম। এরপর রমযানের শেষভাগে আমি মদিনায় ফিরলাম। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)আমার
নিকট জিজ্ঞাসা করলেন এবং চাঁদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। এরপর জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোন দিন চাঁদ দেখেছ? আমি বললাম, আমরা
তো জুমূ-আর দিন সন্ধায় চাঁদ দেখেছি। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি নিজে দেখেছ কি? আমি বললাম, হ্যা, আমি দেখেছি এবং লোকেরাও দেখেছে। তারা সিয়াম
পালন করেছে এবং মুআবিয়া (রাঃ)-ও সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন। তিনি
বললেন, আমরা কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায়
চাঁদ দেখেছি। আমরা সিয়াম পালন করতে থাকব, শেষ
পর্যন্ত ত্রিশ দিন পূর্ণ করব অথবা চাঁদ দেখব। আমি বললাম, মু-আবিয়া (রাঃ)-এর চাঁদ দেখা এবং তাঁর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা আপনার জন্য যথেষ্ট নয় কি? তিনি বললেন, না, যথেষ্ট নয়। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এরুপ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
২৪০০ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আবূল বুখতারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা
উমরা – করার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম এবং ‘বাতনে নাখলা’- নামক স্থানে উপস্থিত হলাম তখন
আমরা (রমযানের) চাঁদ! দেখতে পেলাম। এ সময় কেউ কেউ বলতে লাগলেন এ তো তিন তারিখের
চাঁদ। আবার কেউ কেউ বললেন, এ তো দুই তারিখের চাঁদ।
তারপর আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাত করলাম এবং বললাম, আমরা তো চাঁদ দেখেছি। কিন্তু আমাদের কেউ কেউ
বলছেন, এ দু রাত্রির চাঁদ। আবার কেউ
কেউ বললেন, এ এক রাত্রির চাঁদ। তখন তিনি
জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোন রাত্রে চাঁদ
দেখেছ? আমরা বললাম, অমুক অমুক রাত্রে। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, দেখার সুবিধার্থে আল্লাহ একে
বঁর্ধিত করে করেছেন। মূলত এ ঐ রাত্রিরই চাঁদ যে রাত্রে তোমরা দেখেছো।
২৪০১ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূল
বুখতারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘যাতু
ইরক- নামক স্থানে অবস্হানকালে আমরা রমযানের চাঁদ দেখতে পেলাম। তখন আমরা এক
ব্যাক্তিকে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গাঠালাম, তাঁকে
এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, চাঁদ দেখার সুবিধার্থে
আল্লাহ তা’আলা তা বর্ধিত করে দিয়েছেন। চাঁদ যদি মেঘে ঢাকা থাকে, তবে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ন করবে।
২৪০২ ইয়াহহিয়া ইবনু ইয়াহহিয়া
(রহঃ) আবূ বাকরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেছেন, ঈদের মাস দুটিতে পর পর ঘাটতি
(ঊনত্রিশ দিনে) হয় না। এ মাস দুটি হল, রমযান
ও যুলহিজ্জাহ।
২৪০৩ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, দু ঈদের মাস দুটি পর পর
ঘাটতি (ঊনত্রিশ দিন) হয় না। খালিদের হাদীসের মধ্যে আছে, ঈদের মাস দুটো হল, রমযান ও যুলহিজ্জাহ।
২৪০৪ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন
–’তোমরা পানাহার কর যতক্ষন রাত্রির কালো রেখা হতে উষার শুভ্র-এরেখা সুস্পষ্ট রুপে
তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। নাযিল হল , তখন
আদী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার
বালিশের নীচে একটি কালো ও একটি সাদা রুইয়ের রশি রেখে দিয়েছি। এগুলোর দ্বারা আমি
রাত্র ও দিনের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে থাকি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার বালিশ তো খুব চওড়া।
এতো রাতের আধার এবং ভোরের আলো।
২৪০৫ উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর
কাওয়ারীরি (রহঃ) সালে ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’তোমরা পানাহার কর যতক্ষন রাত্রির কৃষ্ণ রেখা
হতে উষার শুভ্র-এরেখা সুপ্সষ্ট রুপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়’- নাযিল হল, তখন লোকেরা একটি কালো এবং একটি সাদা রশি রাখত।
তারা উভয় রশি সুষ্পষ্টভাবে প্রতিভাত না হওয়া পর্যন্ত খেতে থাকত। এরপর আল্লাহ
তা’আলা পদটি নাযিল করে বিষয়টিকে সুম্পষ্ট করে দিলেন।
২৪০৬ মুহাম্মাদ ইবনু সাহল
তামীমী ও আবূ বকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন –’তোমরা পানাহার কর যতক্ষন রাত্রির কৃষ্ণ
রেখা হতে উষার শুভ্র-এরেখা সুপ্সষ্ট রুপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়’ – নাযিল হল, তখন লোকেরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করতে চাইলে প্রত্যেকেই দুপায়ে কালো ও সাদা সূতা বেঁধে নিত এবং সাদা ও কালো বর্ণ
সূস্পষ্টরুপে প্রতিভাত না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে থাকত। এরপর অভূল্লাহ তা-আলা
পদটি নাযিল করলেন। তখন সকলেই জানতে পারল যে, সাদা
ও কালো রেখার অর্থ হল, রাত এঁর অন্ধকার ও দিন (এর
আলো)।
২৪০৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ)
আবদুল্লাহ (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেছেন, বিলাল (রাঃ) রাত্রে আযান
দেন। তোমরা ইবনু উম্মে মাকতুমের আযান না শোনা পর্যন্ত পানাহার কর।
২৪০৮ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, বিলাল (রাঃ) রাত্রের আযান
দেন। সূতরাং ইবনু মাকতুমের আযান না শুনা পর্যন্ত পানাহার কর।
২৪০৯ ইবনু নুমায়র (রহঃ) ইবনু
উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দু-জন মুয়াযযিন ছিল-বিলাল এবং ইবনু উমে মাকতূম
(রাঃ) যিনি ছিলেন অন্ধ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বিলাল তো রাত্রে আযান দেয় সূতরাং ইবনু উম্মে
মাকতূম আযান না দেয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার কর। রাবী বলেন, তাদের দু-জনের আযানের মধ্যে তেমন ব্যবধান ছিল
না। শুধু এতটুকু ব্যবধান যে, বিলাল (রাঃ) নামতেন এবং ইবনু
উম্মে মাকতুম (রাঃ) উঠতেন।
২৪১০ ইবনু নুমায়র (রহঃ)
আয়িশা (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২৪১১ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ও ইবনু মূসান্না (রহঃ) উবায়দুল্লাহ
(রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে ইবনু নূমায়রের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৪১২ যুবায়র ইবনু হারব (রহঃ)
ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিলালের
আযান বা আহবান যেন তোমাদের কাউকে সেহরী থেকে বিরত না রাখে। কেননা সে তো আযান দেয়
বা আহবান করে যেন, মুসল্লী লোকেরা বাড়ি ফিরে
যায় এবং ঘুমন্ত লোকেরা জাগ্রত হয়। এরপর তিনি বুক উত্তোলন করত আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে
রেখে বললেন, এ ফজরের সময় নয়। তারপর
আঙ্গুলগুলো প্রশস্ত করে বললেন যতক্ষন না এরুপ হবে।
২৪১৩ ইবনু নুমায়র (রহঃ)
সুলায়মান তায়মী (রহঃ) -এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এতে
বর্নিত আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম হাত উত্তোলন করে আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখা অবস্হায় বললেন, এ ফজরের সময় নয়। তারপর তিনি মাটির দিকে হাত
নামিয়ে ফেললেন। এরপর তিনি শাহাদাত অঙ্গুলীকে শাহাদাত অঙ্গুলীর উপর রেখে উভয় হাত
সম্প্রসারিত করে বললেন, এ হল ফজরের সময়।
২৪১৪ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) সুলায়মান তায়মী (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ হাদীস
বর্ণনা করেন। মুতামিরের হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
বানী- পর্যন্ত এসে শেষ হয়েছে। তবে ইসহাক বলেন, জারীরের
হাদীসে বর্ণিত আছে যে, তিনি ইশারা করে বললেঁন, এ ফজরের সময় নয়। বরং ফজরের সময় হচ্ছে এই অর্থাৎ
পূর্বাকাশে বিস্থৃত রেখা প্রতিভাত হওয়ার সময় ফজরের ওয়াক্ত হয়। লাল রেখা উদ্ভাসিত
হবার সময় নয়।
২৪১৫ শায়বান ইবনু ফাররুখ
(রহঃ) সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, বিলালের আহবান যেন তোমাদেরকে সেহরী খাওয়া থেকে
ধোকায় না ফেলে এবং এ শুভ্র রেখাও; যতক্ষন
পর্যন্ত না তা বিস্তৃত হয়ে প্রতিভাত হয়।
২৪১৬ যুহায়র ইরন হারব (রহঃ)
সামূরা ইবনু জুনদুব (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদেরকে ধোকায় না ফেলে এবং শুভ্র রেখা যা
স্থম্ভের মত দেখা যায় যতক্ষণ না তা বিস্তৃত উদ্ভাসিত হবে।
২৪১৭ আবূর রবী যাহরানী (রহঃ)
সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- বিলালের আযান এবং আকাশ প্রান্তে এ লাল রেখা যেন
তোমাদেরকে সেহরী খাওয়ার ব্যাপারে ধোকায় না ফেলে যতক্ষন পর্যন্ত না এ শুভ্র রেখা
পূর্বাকাশে এভাবে বির্স্থিত হয়। হাম্মাদ (রহঃ) বলেন,এ
সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উভয় হাত দ্বারা আড়াআড়ি হওয়ার
প্রতি ইংগিত করেছেন।
২৪১৮ উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয
(রহঃ) সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, বিলালের আযান এ শুভ্ররেখা
যেন তোমাদেরকে ধোকায় না ফেলে যতক্ষন পর্যন্ত না সুবহে সা’দিক সুস্পষ্টরুপে
প্রতিভাত হয়।
২৪১৯ ইবনুল মুনান্না (রহঃ)
সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম অনুরুপ আলোচনা করেছেন।
২৪২০ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা যুহায়র ইবনু হারব ও
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, তোমরা সেহরী খাও সেহরীতে
বরকত রয়েছে।
২৪২১ কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, আমাদের ও কিতারীদের সিয়ামের
মধ্যে পার্থক হল সেহরী খাওয়া।
২৪২২ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূত-তাহির (রহঃ)
মূসা ইবনু উলায়্যা (রহঃ)-এর সূত্রে এ সনদে এ অনুরুপ হাদীস বর্ণিত আছে।
২৪২৩ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সেহরী খেয়ে সালাতে দাঁড়ালাম। {রাবী
আনাস (রাঃ) বলেন} আমি যায়দ ইবনু সাবিত
(রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, সেহরী ও আযানের মধ্যে কত
সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন -পঞ্চাশ আয়াত
পড়ার মত সময়ের।
২৪২৪ আমরুন নাকিদ ও ইবনু
মুনান্না (রহঃ) কাতাদা (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ হাদিস বর্ননা করেছেন।
২৪২৫ ইয়াহহিয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন যতদিন মানুষ বিলম্ভ না করে ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের উপর
থাকবে।
২৪২৬ কুতায়বা ও যুহায়র ইবনু
হারব (রহঃ) সাহল ইবনু সা-দ (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন:
২৪২৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও
আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) আবূ আতিয়্যা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও মাসরুক (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট গেলাম
এবং তাঁকে বললাম হে উম্মুল মুমিনীন! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
সাহাবীদের দুই ব্যাক্তির মধ্যে এক ব্যাক্তি ইফতার ও সালাতে ত্বরাম্বিত করে এবং
অন্য এক ব্যাক্তি ইফতার ও সালাত বিলম্ব করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন সে কোন ব্যাক্তি; -যে ইফতার ও সালাত ত্বরাম্বিত করে? আমরা বললাম আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)। তিনি
বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরুপই করতে।। আবূ কুরায়ব বলেন অপরজন হলেন, আবূ মূসা (রাঃ)।
২৪২৮ কুরায়ব (রহঃ) আবূ
আতিয়্যা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ও মাসরুক (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট
গেলাম। এরপর মাসরুক (রহঃ) তাকে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-এর সাহাবীদের মধ্যে দুই ব্যাক্তি যারা কল্যাণজনক কাজে কোন প্রকার অবহেলা প্রদর্শন
করেনা। তাঁদের একজন মাগরিব এবং ইফতারের মধ্যে তরা করেন। আর অপর জন মাগরিব ও ইফতারে
বিলম্ব করেন। তিনি বললেন সে কোন ব্যাক্তি; যে
মাগরিব ও ইফতার ত্বরা করেন? তিনি বললেন তিনি আবদুল্লাহ
(রাঃ) আয়িশা (রাঃ) বললেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরুপ করতেন।
২৪২৯ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া
আবূ কুরায়ব ও ইবনু নূমায়র (রহঃ) উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যখন রাত আসে দিন চলে যায় এবং
সূর্য অদৃশ্য হয়ে যায়- তখনি সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে। ইবনু নূমায়র (রহঃ) শব্দটি
উল্লেখ করেননি।
২৪৩০ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রমযান মাসে কোন এক
সফরে আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গীছিলাম। সূর্য ডুবে
গেলে বললেন হে অমূক! অবতরণ কর এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল ইয়া
রাসুলুল্লাহ! এখনো দিন রয়েগেছে। পুনরায় তিনি বললেন। অবতরণ কর এবং আমাদের জন্য ছাতু
গুলিয়ে আন। তখন সে অবতরণ করল এবং ছাতু গুলিয়ে তাঁর নিকট পেশ করলে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এবং হাত দ্বারা ইংগিত করে বললেন , সূর্য যখন এদিক থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং রাত্র
যখন এদিক থেকে ঘনিয়ে আসবে তখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে।
২৪৩১ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন এক সফরে সাহাবিরা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে ছিলাম। যখন সূর্য অদৃশ্য হয়ে গেল তখন
তিনি এক ব্যাক্তিকে বললেন- অবতরণ কর এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল ইয়া
রাসুলুল্লাহ! সন্ধ্যা হতে দিন। পূনরায় তিনি বললেন, অবতরণ
কর এবং আমাদের জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, দিন
আমাদের আরো বাকী রয়েছে। এরপর সে অতরণ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর জন্য ছাতু গুলিয়ে আনল! তিনি পান করলেন –এবং হাতদ্বারা পূর্বদিকে
ইংগিত করে বললেন। যখনী তোমরা দেখবে যে এদিক থেকে রাত্র ঘনিয়ে আসছে তখন সিয়াম
পালনকারীর ইফতারের সময় হবে।
২৪৩২ আবূ কামিল (রহঃ)
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর সাথে ভ্রমণ করলাম। এ সময় তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত
ছিলেন যখন সূর্য অদৃশ্য হয়ে গেল তখন তিনি বললেন যে অমুক! তুমি অবতরণ কর এবং আমাদের
জন্য ছাতূ গুলিয়ে আন। এরপর তিনি ইবনু মূসহির এবং আঁব্বাদ ইবনু আওআমের অনুরুপ
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
২৪৩৩ ইবনু আবূ উমর ইসসাক
উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয ও ইবনু মূসান্না (রহঃ) ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ইবনু মুসহির আব্বাদ ও আবদূল ওয়াহিদ (রহঃ)-এর
অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁদের কারো হাদীসের মধ্যে রমযান মাসের কথা
উল্লেখ নেই। অনূরুপভাবে হুশায়ম ব্যতীত কারো বর্ণনায় ‘ এবং যখন রাত্র এদিক থেকে ঘনিয়ে
আসে’ এ কথাটিও উল্লেখ নেই।
২৪৩৪ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহিয়া
(রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতে নিষেধ
করেছেন। এতে সাহাবাগণ বললেন- আপনি তো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করে থাকেন।
তিনি বললেন আমার অবস্হা তোমাদের মত নয়। আমাকে খাওয়ান ও পান করান হয়।
২৪৩৫ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
ও ইবনু নূমায়র (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল আরম্ভ করলেন। তা দেখে সাহাবাগণও
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল আরম্ভ করলেন। এরপর তিনি তাদেরকে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতে নিষেধ করলেন। এতে তাঁকে প্রশ্ন করা হল আপনি তো
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করছেন। উত্তরে তিনি বললেন। আমিতো তোমাদের মত
নই। আমাকে তো খাওয়ান হয় এবং পনি করান হয়।
২৪৩৬ আব্দুল ওয়ারিস ইবনু
আবদুস সামাদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে অনুরুপ বর্ননা করেছেন। তবে এতে রমযান মাসের কথা উল্লেখ নাই।
২৪৩৭ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতে নিষেধ করেছেন। তখন মুসলমানদের
এক ব্যাক্তি বললেন- হে আল্লাহর রাসুল! আপনিতো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল
করে থাকেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের মধ্যে আমার মত কে জাগে? আমি রাত্রি যাপন করি এমতাবস্হায় যে আমার
প্রতিপালক আমাকে খাওয়ান এবং আমাকে পান করান। সাহাবাগণ সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করলে তিনি তাদের সাথে
একদিন এবং পরে আরেক দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করলেন। এরপর তারা চাঁদ
দেখলেন তখন তিনি বললেন- চাঁদ আরো দেরীতে দেখা গেলে আমিও সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল দীর্ঘায়িত করতাম। তারা সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করলে তিনি শাস্তি ,স্বরুপ এ ব্যবস্থা -গ্রহণ করেন।
২৪৩৮ যুহায়র ইবনু হারব ও
ইসহাক (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল থেকে বিরত
থাক। সাহাবাগণ বললেন, হেঁ আল্লাহর রাসুল! আপনি তো
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করে থাকেন? তিনি
বললেন, এ ব্যাপারে তোমরা তো আমার
মত নও। আমি এমতাবস্হায় রাত্রি যাপন করি যে, আমার
প্রতিপালক আমাকে পানাহার করান। তা তোমরা তোমাদের সামর্থ্যে যতটুকু কুলায় ততটুকু
আমল কর।
২৪৩৯ কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এতে এর স্হলে বাক্যটি বর্নিত আছে।
২৪৪০ ইবনু নূমায়র (রহঃ) আবূ
হুরায়রা (রাঃ) এঁর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বণিঁত। তিনি
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতে নিষেধ করেছেন। অতঃপর বর্ননাকারী আবূ যুরআ
(রহঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ননা করেলেন।
২৪৪১ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ)
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রমযান মাসে একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করছিলেন। আমি তার পাশে এসে দাঁড়ালাম! এরপর অন্য এক
ব্যাক্তি এসেও তাঁর পাশে দাঁড়ালেন। এভাবে আমরা এক দল লোক হয়ে গেলাম। এরপর নরী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বুঝতে পারলেন যে আমরা তাঁর পেছনে আছি তখন তিনি
সালাত সংক্ষেপ করে ফেললেন। তারপর তিনি আপন গৃহে চলে গেলেন এবং এমন (দীর্ঘ) সালাত
আদায় করলেন যে এভাবে তিনি আমাদের সাথে সানাত আদায় করতেন না। সকালে আমরা তাকে
বললাম- রাত্রে আপনি আমাদের সম্পর্কে বুঝতে পেরেছিলেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যা তাইতো আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে
ঐ কাজের যা আমি করেছি। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের
শেষভাগে আবার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতে আরম্ভ্র করলেন। এ দেখে
কতিপয় সাহাবাও সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল শুরু করলেন। তখন নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন লোকদের কি হল তারা যে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল আরম্ভ করেছে! তোমরাতো আমার মত নও। আল্লাহর -শপথ! যদি
মাস দীর্ঘায়িত হতো তবে আমি এমনভাবে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতাম যার
ফলে সীমালংঘনকারীগণ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করা ছেড়ে দিত।
২৪৪২ আসিম ইবনু নযর তায়মী
(রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রমযান মাসের প্রথমাংশে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল আরম্ভ করলেন।
এ দেখে মুসলমানদের কতিপয় লোক সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল আরম্ভ করে দিলেন।
এ সংবাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পৌছার পর তিনি বললেন
যদি আমাদের জন্য মাস দীর্ঘায়িত করে দেয়া হতো তবে আমি এমনভাবে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতাম যাতে সীমালংঘনকারীগণ তাদের সীমালংঘন করা ছেড়ে
দিত। এরপর বললেন, তোমরা তো আমার মত নও অথবা
বললেন, আমি তো তোমাদের মত নই। কারণ
আমার প্রতিপালক তো আমাকে পানাহার করান।
২৪৪৩ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও
উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দয়াবশত
সবাইকে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করতে নিষেধ করেছেন। সাহাবাগণ বললেন
আপনি তো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) বিসাল করেন। তিনি বললেন আমি তো তোমাদের মত
নই। আমাকে তো আমার প্রতিপালক পানাহার করান।
২৪৪৪ আলী ইবনু হুজর (রহঃ)
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় তাঁর কোন
কোন স্ত্রীকে চুমু দিতেন। তারপর তিনি হেসে দিলেন।
২৪৪৫ আলী ইবনু হুজর সা’দী ও
ইবনু আবূ উমর (রহঃ) সুফয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুর রহমান ইবনু কাসিম (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা
করলাম, তুমি কি তোমার আব্বাকে আয়িশা
(রাঃ) থেকে এ কথা বর্ণনা করতে শুনেছ যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় তাঁকে
চুমু দিতেন? তিনি কিছুক্ষণ নীরব থেকে
বললেন, হ্যা শুনেছি।
২৪৪৬ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্থায় আমাকে চুমু
দিতেন। তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে, যে নিজের কামোদ্দীপনাকে
আয়ত্বে রাখতে পারে যেমন আয়ত্বের রাখতে সক্ষম ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কামোদ্দীপনাকে।
২৪৪৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও সুজা ইবনু মাখলাদ (রহঃ) আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় (স্ত্রীদেরকে) চুম্বন ও
ষ্পর্শ করতেন। তবে প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ রাখায় তোমাদের সবার চেয়ে তিনি অধিকতর
শক্তিশালী ছিলেন।
২৪৪৮ আলী ইবনু হুজর ও যুহায়র
ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় চুমু
দিতেন। তিনি তাঁর প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে তোমাদের সকলের চেয়ে অধিকতর
ক্ষমতাবান ছিলেন।
২৪৪৯ মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্থায় (স্ত্রীদেরকে) স্পর্শ করতেন।
২৪৫০ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও মাসরুক (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট গেলাম
এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি
তাঁর স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করতেন? তিনি বললেন, হ্যা করতেন। তবে তিনি তার প্রবৃত্তিকে
নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে তোমাদের সকলের চেয়ে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ছিলেন অথবা
বললেন, তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে যে
তার প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম? এ
ব্যাপারে আবূ আসিম সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
২৪৫১ ইয়াকুর আদ-দাওরাকী
(রহঃ) আসওয়াদ এবং মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। একদা তাঁরা দু’জন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা
করার জন্য আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট গমন করলেন। এরপর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৪৫২ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় তাকে চুমু দিতেন।
২৪৫৩ ইয়াহইয়া ইবনু বিশর
হার্রীরী (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন।
২৪৫৪ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ-বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়ামের মাসেও (স্ত্রীদেরকে)
চুমু দিতেন।
২৪৫৫ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রমযান
মাসে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাঁর স্ত্রীদেরকে চুমু দিতেন।
২৪৫৬ মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্হায়
(ন্ত্রীদেরকে) চুমু দিতেন।
২৪৫৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ)
হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র অবস্বায় চুমু দিতেন।
২৪৫৮ আবূর-এরাবী যাহরানী, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) হাফসা (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ
হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৪৫৯ হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী
(রহঃ) উমর ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ব্যাক্তি চুম্বন করতে পারে কি? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন কথাটি উম্মে সালমাকে জিজ্ঞাসা কর। (তাকে জিজ্ঞাসা করার পর)
তিনি বললেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরুপ করেন। এরপর তিনি
বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তো
আপনার আগে পরের সমূদয় গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন শোন আল্লার শপথ! আমি আল্লাহ তায়ালাকে তোমাদের সকলের
চেয়ে অধিক ভয় করি।
২৪৬০ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাঁর আলোচনায় বললেন, জানাবাত অবস্হায় কারো ভোর হলে তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
হবে না। এরপর এ কথাটি আমি আবদুর রহমান ইবনু হারিস (রাঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম।
কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করলেন। তাঁরপর আবদুর রহমান চললেন। আমিও তাঁর সাথেসাথে
চললাম। আমরা আয়িশা (রাঃ) এবং উম্মু সালামা (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। এরপর আবদুর রহমান
তাঁদের উভয়কে এ সমন্ধে জিজ্ঞাসা করলেন। তারা বললেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহতিলাম ব্যাতিরেকে ও জানাবাতের অবস্থায় ভোর করতেন
এবং স-ওম পালন করতেন। এরপর আমরা মারওয়ানের নিকট আসলাম এবং আব্দুর রহমান তার সাথে এ
নিয়ে আলোচনা করলেন। এরপর মারওয়ান বললেন আমি তোমাকে কসম দিয়ে বলছি, তুমি আবূ হুরায়রার নিকট যাও এবং তার কথাটি রদ
করে দাও। এরপর আমি আবূ হুরায়রার নিকট গেলাম। এ সময় আবূ বকর (রাঃ) আবদুর রহমানের
সাথে ছিলেন। আব্দুর রহমান এ নিয়ে আবূ হুরায়রার সঙ্গে আলোচনা করলেন। আবূ হুরায়রা
(রাঃ) বললেন- তোমার নিকট তাঁরা উভয়েই কি এ কথা বলেছেন? তিনি বললেন হ্যা, তাঁরা
উভয়েই এ কথা বলেছেন। তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন- বস্তুত তাঁরাই সর্বাধিক অবগত।
তারপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাঁর এ কথাটিকে ফযল ইবনু আব্বাসের প্রতি সম্পর্কিত করে
বললেন আমি এ কথাটি ফযলের ইবনু আব্বাস) থেকে শুনেছিলাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে শুনিনি। রাবী বলেন এরপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ বিষয়ে তাঁর মত
পরিবর্তন করেন। বর্ণনাকারী বলেন- আমি আব্দুল মালিককে জিজ্জাসা করলাম। তারা রমযানের
কথা বলেছে কি? তিনি বললেন হ্যা অনুরুপই
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহতিলাম ব্যতিরেকেও জানাবাত অবস্হায় ভোর
করতেন। এরপর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।
২৪৬১ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমধর্মিনা আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন রমযান মাসে ইহতিলাম ছাড়াই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর
জানাবাত অবস্হায় ফজরের সালাতের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।
২৪৬২ হায়ান ইবনু সাঈদ আয়লী
(রহঃ) আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা
মারওয়ান তাকে উম্মু সালামা (রাঃ)-এর-নিকট পাঠালেন ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করার জন্য যার জানাবাতের অবস্হায় ভোর হল, সে
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে কি? তিনি
বললেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর ইহতিলাম ব্যতিরেকে স্ত্রী
সহবাসের কারণে গোসল ফরয হওয়া অবস্থায় ভোর-হতো এরপর ইফতারও করতেন না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
র কাযাও করতেন না।
২৪৬৩ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সহধর্মিনা আয়িশা এবং উম্মু সালামা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা উভয়ই বলেন, রমযান
মাসে ইহতিলাম ছাড়াই স্ত্রী সহবাসের কারণে জানাবাতের অবস্হায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভোর হতো, এরপর তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।
২৪৬৪ ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, ফতোয়া জিজ্ঞাসা করার জন্য এক
ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নিকট এল। এ সময় তিনি দরজার পেছন
থেকে কথাগুলো শুনছিলেন। লোকটি বলল, ইয়া
রাসুলুল্লাহ! জানাবাতের অবস্হায় আমার ফজরের সালাতের সময় হয়ে যায়, এমতাবস্হায় আমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করতে পারি কি? উত্তরে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, জানাবাতের
অবস্হায় আমারও ফজরের সালাতের সময় হয়ে যায় আমি তো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করি। এরপর লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো
আমাদের মত নন। আল্লাহ তাআলা আপনার পূর্বাপর সমুদয় গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।। তখন
তিনি বললেন- আল্লাহর শপথ! আমার আশা, আমি
আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে সর্বাধিক ভয় করি এবং আমি সর্বাধিক অবগত ঐ বিষয় সম্পর্কে- যা
থেকে আমার বিরত থাকা আবশ্যক।
২৪৬৫ আহমদ ইবনু উসমান
নাওফেলী (রহঃ) সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উম্মু সালামা
(রাঃ)-কে প্রশ্ন করলেন জানাবাতের অবস্হায় যার ভোর হয় সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করবে কি? তিনি বললেন ইহতিলাম ছাড়াই
জানাবাতের অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এঁর ভোর হতো এবং
তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।
২৪৬৬ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু
নুমায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামএর নিকট এসে বললেন হে আল্লাহর রাসুল! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি। তিনি বললেন
কিসে তোমাকে ধ্বংস করেছে? সে বলল আমি রমযানে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত অবস্হায় আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বললেন
তোমার কোন ষ্ক্রীতদাস আছে কি যাকে তুমি আযাদ করে দিতে পার? সে বলল না। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি
ক্রমাগত দুই মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে? সে বলল, না।
পূনরায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেননা, তুমি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, না।
তারপর সে বসে গেল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নিকট এক টূকরা
খেজুর আনা হঁল। তিনি লোকটিকে বললেন এগুলো সদকা করে দাও। তখন সে বলল আমার চেয়েও
অভাবী লোককে সদকা করে দিব? (মদিনার) দুটি কংকরময় ভূমির
মধ্যস্হিত স্থানে আমার পরিবারের চেয়ে অভাবী পরিবার আর একটিও নেই। এ কথা শুনে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন। এমনকি তাঁর সামনের দাঁতগুলো প্রকাশ
হয়ে পড়ল। তখন তিনি বললেন, তাহলে যাও এবং তোমার
পরিবারকে খেতে দাও।
২৪৬৭ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু মুসলিম যুহুরী (রহঃ)-এর সূত্রে সনদে ইবনু উয়ায়না (রহঃ) এর
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এ হাদীসের মধ্যে এর পর শব্দটি উল্লেখ রয়েছে এবং এতে
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর হাসির কথা উল্লেখ নেই।
২৪৬৮ ইয়াহিয়া ইবনু ইয়াহইয়া , মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা (রহঃ) আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি রমযান মাসে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে এ
সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রশ্ন করল। তখন
তিনি বললেন- তোমার কোন ক্রীতদাস আছে কি? সে
বলল, না। তিনি আবার বললেন, তুমি দুই মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করতে পারবে কি? সে বলল না। তখন তিনি বললেন
তাহলে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও।
২৪৬৯ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি-
(রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণনা করেন যে- এক ব্যাক্তি রমযানের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভেংগে ফেলার কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে এর কাফফারা হিসেবে একটি গোলাম আযাদ করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর
তিনি ইবনু উয়ায়নার অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।
২৪৭০ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি-
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন এক ব্যাক্তি রমযানোর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভেংগে ফেলার কারণে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে নির্দেশ দিলেন হয় তো সে একটি গোলাম আযাদ করবে অথবা দুই মাস সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে অথবা ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়ায়।
২৪৭১ আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)
যুহরী (রহঃ) থেকে এ সনদে ইবনু উয়ায়নার অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৪৭২ মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ
ইবনু মুহাজির (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমি জ্বলে গিয়েছি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কেন? সে বলল, রমযানের
দিনে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বললেন তাহলে সদকা দাও, সদকা দাও। সে বলল আমার নিকট কিছুই নেই।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বসার জন্য নির্দেশ দিলেন।
এমতাবস্হায় দুই টুকরি ভর্তি খাদ্য আসল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে এগুলো সদকা করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন।
২৪৭৩ মুহাম্মাদ ইবনু মূসা
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক
ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নিকট আসলেন। অতঃপর
বর্ণনাকারী হাদীসটি বর্ণনা করলেন। তবে এ হাদীসের প্রথমে শব্দ দুটো উল্লেখ নেই এবং
এতে দিনের কথাটিও উল্লেখ নেই।
২৪৭৪ আবূত-তাহির (রহঃ) নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সহধর্মিনা আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রমযান মাসে মসজিদের মধ্যে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নিকট এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল!
আমি তো জ্বলে গিয়েছি, আমি তো জ্বলে গিয়েছি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার, কি হয়েছে তার? সে
বলল আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি। তিনি বললেন, তাহলে
সদকা কর। সে বলল- আল্লাহর শপথ! হে আল্লাহর নাবী! আমার কিছুই নেই এবং এ ব্যাপারে
আমি সক্ষম নই। তিনি বললেন, বস। সে বসল, লোকটি বসা থাকতেই এক ব্যাক্তি গাধা হাকিয়ে আসল।
এর উপর ছিল খাদ্য। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঐ অগ্নিদগ্ধ লোকটি কোথায় যে কিছুক্ষণ আগে
এসেছিল? লোকটি দাড়াল। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এগুলো
সদকা করে দাও। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের
ছাড়া অন্য লোকদেরকে সদকা করে দিব? আল্লাহর শপথ আমরা অত্যন্ত
ক্ষুধার্ত, আমাদের কিছুই নেই। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে
এগুলো তোমরা খেয়ে ফেল।
২৪৭৫ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সা’দ (রহঃ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন- (মক্কা) বিজয়ের বছর রমযান মাসে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত
অবস্থায় সফরে বের হলেন। অতঃপর কাদীদ নামক স্থানে পৌছাবার পর তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভেংগে ফেললেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে যখন কোন নতুন বিষয় প্রকাশ পেত তাঁর সাহাবাগণ তা অনুসরণ করতেন।
২৪৭৬ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা আমরুননাকিদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে এ
সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইয়াহইয়া বলেন, সুফয়ান
(রহঃ) বলেছেন যে, আমি জানি না এ কার কথা
অর্থাৎ তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর শেষোক্ত কথাটিগ্রহন
করতেন।
২৪৭৭ মুহাম্মদ ইবনু রাফি
(রহঃ) যুহরি (রহঃ) থেকে এ সনদের সাথে বর্ণনা করেছেন। যুহরী (রহঃ) বলেন, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন না করা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এঁর সর্বশেষ কাজ। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর শেষোক্ত কাজকেই গ্রহণ করা হতো। তিনি বলেন, রমযানের তের দিন অতিবাহিত হবার পর ভোরে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা প্রবেশ করেন।
২৪৭৮ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে এ সনদে লায়সের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু
শিহাব (রহঃ) বলেন, সাহাবাগণ প্রত্যেক নতুন
বিষয়ের অনুসরণ করতেন। যে বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর কাছ
থেকে প্রকাশ পেত এবং সাহাবাগণ একে রহিতকারী ও অধিকতর বলিষ্ঠ মনে করতেন।
২৪৭৯ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক
সময় রমযান মাসে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে বের হলেন। যখন তিনি উসফান নামক স্থানে পৌছলেন তখন তিনি
পানি ভর্তি একটি পাত্র আনার জন্য বললেন এবং লোকদেরকে দেখাবার জন্য দিনেই তা পান
করে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভেংগে ফেললেন এবং এ অবস্হায় তিনি মক্কা প্রবেশ
করলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
(সফরে কখনো) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন আবার কখনো ইফতার করেছেন তাই
কেউ ইচ্ছা করলে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারে আবার কেউ ইচ্ছা করলে
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন ছেড়ে দিতে পারে।
২৪৮০ আবূ কুরায়ব (রহঃ) ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে
ব্যাক্তি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে তার প্রতি দোষারোপ করো না এবং তার
প্রতিও না যে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দেয়। কেননা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের অবস্থায (কখনো) সিয়াম পালন করেছেন (আবার
কখনও) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিয়েছেন।
২৪৮১ মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মক্কা বিজয়ের বছর রমযান
মাসে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত অবস্হায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মক্কার উদ্দেশ্যে বের হলেন। এরপর যখন তিনি কুরাউল গামীম নামক স্থানে
পৌছলেন তখন লোকেরাও সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত ছিল। এরপর তিনি একটি পানির
পাত্র চাইলেন। এমনকি লোকেরা তার দিকে তাকাতে লাগল। এরপর তিনি পানি পান করলেন। তখন
তাঁকে বলা হল কতিপয় লোক সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত রয়েছে। তিনি বললেন তারা
অবাধ্য তারা অবাধ্য।
২৪৮২ কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) জাফর (রহঃ) থেকে এ সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি অতিবিক্ত বর্ননা
করেছেন। যে অতঃপর তাঁকে বলা হল মানুষের জন্য সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করা কষ্টাতীত হয়ে পড়েছে। আপনি কি করছেন তারা সেদিকে তাকিয়ে আছে। একথা শুনে তিনি
আসরের পর এক পাত্র পানি চাইলেন।
২৪৮৩ আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা- মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক সফরে
ছিলেন। এসময় তিনি এক ব্যাক্তিকে দেখতে পেলেন লোকেরা তার কাছে জটলা করে আছে এবং
তাকে ছায়া করে আছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তার কি হয়েছে? তারা বললেন লোকটি সিয়াম পালনকারী। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সফরে
তোমাদের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা কোন নেকীর কাজ নয়।
২৪৮৪ উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয
(রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
ব্যাক্তিকে দেখলেন। এরপর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৪৮৫ আহমেদ ইবনু উসমান
নাওফেলী (রহঃ) শুবা (রাঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। শুবা বলেন, এ সনদে ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীরের মাধ্যমে
অতিরিক্ত এ কথাও আমার নিকট পৌছেছে যে, তিনি
বলেছেন আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যে সুবিধা দিয়েছেন তা গ্রহণ করা তোমাদের জন্য
অপরিহার্য। আমি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন
সে মুখস্ত বলতে পারেনি।
২৪৮৬ হাদ্দাব ইবনু খালিদ
(রহঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রমযানের
ষোল দিন অতিবাহিত করার পর আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে
যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এ সময় আমাদের কেউ সিয়াম পনিন করছিলেন, আবার কেউ তা ছেড়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু এতে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভংগকারীকে কোন
দোষারোপ করেনি এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভংকারীও সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীকে কোন প্রকার দোষারোপ করেনি।
২৪৮৭ মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর
মুকাদ্দমী, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) কাতাদা (রহঃ) থেকে এ সনদে হাম্মামের হাদীসের অনুরুপ
বর্ণনা করেছেন। তবে তায়মী- উমর ইবনু আমির ও হিশামের বর্ণনায় রমযানের আঠার দিন
অতিবাহিত হয়েছে কথাটি বর্ণিত আছে। সাঈদের বর্ণনায় বার রমযান এবং শুবার বর্ণনায়
সতের অথবা ঊনিশ রমযানের কথা উল্লেখ রয়েছে।
২৪৮৮ নাসর ইবনু আলী জাহযামী
(রহঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে রমযান মাসে সফর করতাম কিন্তু
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীকে তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র
কারণে দোষারোপ করা হতো না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গকারীকেও তার সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গের কারণে দোষারোপ করা হতো না।
২৪৮৯ আমরুন নাকিদ (রহঃ) আবূ
সাঈদ খুদরী (রহঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রমযান
মাসে আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএব সাথে ষুদ্ধে অংশ গ্রহণ
করতাম। এ সময় আমাদের কেউ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন আবার কেউ সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়েও দিয়েছেন। কিন্তু সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালনকারী সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঈকারীকে খারাপ মনে করতেন না এরং সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গকারীও সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীকে খারাপ
মনে করতেন না। তারা মনে করতেন, যার সামর্থ্য আছে সে-ই সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করছে, এটাই তার জন্য উত্তম। আর যে
দূর্বল সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিয়েছে, এটাও তার জন্য উত্তম।
২৪৯০ সাঈদ ইবনু আমর আশ আসী, সাহল ইবনু উসমান সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ ও হুসায়ন
ইবনু হুরায়স (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) ও জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে
বর্নিত। তারা উভয়েবলেন,আমরা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সফর করেছিলাম এমত অবস্থায় সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালঙ্কারী সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন এবং
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভংগকারী সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভংগ করেছেন।
কিন্তু এতে কেউ একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করেননি।
২৪৯১ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- রমযান মাসে সফরকালে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র বিধান কি? এ
সমন্ধে আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞানা করার পর তিনি বললেন রমযান মাসে আমরা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে সফর করেছি। এ সময় সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কারী ব্যাক্তি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
ভঙ্গকারী ব্যাক্তির কোন নিন্দা করেনি এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গকাকারী
ব্যাক্তিও সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীর কোন নিন্দা করেনি।
২৪৯২ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি সফরের উদ্দেশ্যে বের হলাম এবং সিয়াম
পালন করলাম। লোকেরা আমাকে বলল তুমি পূনরায় সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর।
তখন আমি বললাম আনাস (রাঃ) আমাকে বলেছেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ সফরকালে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীকে কোন দোষারোপ করেনি। অনুরুপ ভাবে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গকারীও সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীকে কোন
প্রকার দোষারোপ করেনি। অতঃপর আমি ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ)এর সাথে সাক্ষাত করলাম।
তিনি আয়িশা (রাঃ) থেকে আমাকে অনুরুপ হাদীস শুনালেন।
২৪৯৩ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর
সাথে আমরা সফরে ছিলাম। আমাদের কেউ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন আবার
কেউ ছেড়ে দিয়ের্ছেন। এরপর প্রচণ্ড গরমের সময় আমরা এক প্রান্তরে অবতরণ করলাম। চাঁদর
বিশিষ্ট লোকেরা আমাদের মধ্যে সর্বাধিক ছায়া লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের কেউ কেউ
নিজ হাত দ্বারা সূর্যের কিরণ থেকে নিজেকে রক্ষা করছিলেন। অবশেষে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ল এবং সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ত্যাগকারীরা সুস্হ থাকল। এরপর তারা তাঁবু খাটালো এবং উটকে
পানি পান করালো। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আজ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পরিত্যাগকারী
সওয়াব অর্জন করে নিল।
২৪৯৪ আবূ কুরায়ব (রহঃ) আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক
সফরে ছিলেন। তখন কেউ কেউ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করলেন আবার কেউ কেউ
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিলেন। এরপর যারা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারা শক্তিমত্তার সাথে কাজ করলেন এবং সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ব্যাক্তিগণ সহজে দুর্বল হয়ে পড়লেন। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজ সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পরিত্যাগকারীরা নেকী অর্জন করে নিল।
২৪৯৫ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) কাযাআ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনএকদা আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর নিকট
গেলাম। তাঁর নিকট মানুষের খুব ভিড় ছিল। যখন লোকজন পৃথক হয়ে এদিক ওদিক চলে গেল তখন
আমি বললাম, আমি আপনার নিকট ঐসব কথা
জিজ্ঞাসা করব না যা লোকেরা জিজ্ঞাসা করেছে। আমি তাকে সফরের অবস্থায় সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত
অবস্হায় মক্কার দিকে রওনা করলাম। এরপর একস্থানে আমরা অবতরণ করলাম। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এখন
তোমরা শক্রদের নিকটবর্তী হয়ে গিয়েছ। এখন ইফতারই তোমাদের জন্য শক্তিশালী থাকার উপায়
এবং এ তোমাদের জন্য বিশেষ এক অবকাশ। তখন আমাদের কতক লোক সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করল আবার কতক লোক ইফতার করল। এরপর আমরা অন্য এক
স্থানে অবতরণ করলাম। তখন তিনি বললেন ভোরেই তোমরা শত্রুর মুকাবিলা করবো। সুতরাং
ইফতার তোমাদের জন্য শক্তি বর্ধক। তাই তোমরা ইফতার কর। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামএর এ নির্দেশ অবশ্য পাননীয় ছিল। তাই আমরা সকলে ইফতার করলাম। এরপর
আমরা দেখেছি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে সফরের
অবস্থায় সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতাম।
২৪৯৬ কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রাঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন হামযা ইবনু আমর আসলামী (রাঃ)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সফরের অবস্থায় সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা সষ্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যদি তোমার
ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর আর যদি ইচ্ছা না হয় তবে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দাও।
২৪৯৭ আবূর-এরবী যাহরানী
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন হামযা ইবনু আমর আসলামী (রাঃ)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ!
আমি তো অনবরত সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করি। সফরের অবস্থায়ও সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করব কি? তিনি
বললেন- যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর আর যদি ইচ্ছা
না হয় তবে ছেড়ে দাও।
২৪৯৮ ইয়াইয়াহ ইবনু ইয়াহইয়া
(রাঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে এ সনদে হাম্মাদ ইবনু যায়দের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন (তিনি
বলেন) আমি সর্বদা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করি।
২৪৯৯ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা
ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তবে এ
হাদীসের মধ্যে— স্থলে— বর্নিত হয়েছে। অর্থাৎ আমি সর্বদা সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করি। সুতরাং সফরে আমি কি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করব?
২৫০০ আবূত-তাহির ও হারুন
ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) হামযা ইবনু আমর আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ, সফরের অবস্থায় সিয়াম পালনের ক্ষমতা আমার রয়েছে।
এ সময় পালন করলে আমার কোন গুনাহ হবে কি? তিনি
বললেন, এটা আল্লাহর পক্ষ হতে এক
বিশেষ অবকাশ, যে তা গ্রহন করবে, তাঁর জন্য উত্তম। আর যদি কেউ সিয়াম পালন করতে
চায়, তবে তাঁর কোন গুনাহ হবে না। হারুন তাঁর হাদিসের
মধ্যে—“এটা অবকাশ” কথাটি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু মান আল্লাহু “আল্লাহর পক্ষ হতে”
কথাটি উল্লেখ করেন নি।
২৫০১ দাউদ ইবনু রুশায়দ (রহঃ)
আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক প্রচণ্ড গরমের দিনে রমযান মাসে আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সফরে বের হলাম। গরম এত
প্রচণ্ড ছিল যে, আমাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ
হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিল। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহ (রাঃ) ব্যাতিত আমাদের মাঝে কেউই সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ছিল না।
২৫০২ আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা
কা’নাবী (রহঃ) উম্মু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ দারদা (রাঃ) বলেছেন যে, প্রচণ্ড গরমের দিনে কোন এক সফরে আমরা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। গরম এত প্রচণ্ড ছিল যে, লোকেরা নিজ নিজ হাত মাথার উপর রেখে দিয়েছিল। আর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূদল্লাহ ইবনু রাওয়াহ (রাঃ)
ব্যাতিত আমাদের মাঝে কেউই সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ছিল না।
২৫০৩ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম উমায়র সুত্রে উম্মুল ফযল
বিনতে হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, লোকেরা
আরাফার দিন তাঁর নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম পালন
(করা না করা) সম্পর্কে আলোচনা করছিল। তাদের কেউ কেউ বলল, তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত আর কেউ
কেউ বলল তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত নন। কাজেই আমি তাঁর নিকট এক পেয়ালা
দুধ পাঠালাম এবং তিনি উটের উপর বসা ছিলেন। তিনি তা পান করলেন।
২৫০৪ ইসহাক ইবনু ইবরাহিম ও
ইবনু আবূ উমর (রহঃ) সুফয়ান ইবনু উয়ায়না আবূ নযর (রহঃ) থেকে এ সনদে হাদিস বর্ণনা
করেছেন। তবে এতে উটের উপর বসা ছিলেন কথাটি উল্লেখ করা হয়নি। আর আবূ উমায়রকে উম্মুল
ফযলের আযাদকৃত গোলাম বলা হয়েছে।
২৫০৫। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) সালিম আবূন-নাযর (রহঃ) থেকে এ সনদে ইবনু উয়ায়নার অনূরুপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। এখানেও উমায়রকে উম্মুল ফযলের আযাদকৃত গোলাম বলা হয়েছে।
২৫০৬। হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) – এর আযাদকৃত গোলাম উমায়র বর্ণনা করেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর
স্ত্রী মায়মুনা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কতিপয় সাহাবা আরাফার দিন তাঁর সিয়াম পালনের
ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করলেন। (উম্মুল ফাযল (রাঃ) বলেন) আমরাও সেখানে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর -সাথে ছিলাম। এ সময় আমি তাঁর নিকট এক পেয়ালা
দূধ পাঠিয়ে দিলাম। তখন তিনি আরাফার ময়দানে ছিলেন। তিনি তা পান করে নিলেন।
২৫০৭। হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ)- এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- লোকেরা
আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করলেন। এরপর মায়মুনা
(রাঃ) তাঁর নিকট এক পাত্র দুধ পাঠিয়ে দিলেন। এ সময় তিনি ‘মাওকাফ’- এ অবস্থান
করছিলেন। তখন তিনি তা পান করে নিলেন। আর লোকেরা তাঁর দিকে তাকিয়ে রইল।
২৫০৮। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরায়শরা
জাহিলী যুগে আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সিয়াম পালন করত। রাসুল্ললাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এ দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।
যখন তিনি মদিনায় হিজরত করলেন, তখনও তিনি আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন এবং লোকদেরকে তা
পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর যখন রমযানের সিয়ামকে ফরয করা হল, তখন যার ইচ্ছা সে আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত আর যার ইচ্ছা, সে তা ছেড়ে দিত।
২৫০৯। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রাঃ) ইবনু নুমায়র থেকে এবং তিনি হিশাম (রাঃ) থেকে এ সনদে
অনুরুপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তবে ইবনু নুমায়র এ হাদীসের প্রথমাংশে “রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন” এ
কথাটির উল্লেখ নেই। অবশ্য এ হাদীসের শেষাংশে বলেছেন, “তিনি
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা) ছেড়ে দেন। সুতরাং যার ইচ্ছা সে এ দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পানন করত -এবং যার ইচ্ছা সে ছেড়ে দিত ”এবং তিনি
বর্ণনাকারী জারীরের মত এ কথাটিকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বানীর
অন্তর্ভুক্ত করেননি।
২৫১০। আমরুন-নাকিদ (রহঃ)
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জাহিলী যুগে আসূরার দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা হতো। এরপর যখন ইসলামের আবির্ভাব হল- তখন যার
ইচ্ছা সে এ দিনের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিত।
২৫১১। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রমযানের
সিয়াম ফরয হওয়ার পূর্বে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিনে সিয়াম পালন করার নির্দেশ দিতেন। যখন রমযানের সিয়াম ফরয
করা হল ,তখন যার ইচ্ছা সে আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিলে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিত।
২৫১২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও
মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরায়শরা জাহিলী যুগে আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত। রমযানের সিয়াম
ফরয হওয়ার পূর্বে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার নির্দেশ দিতেন। রমযানের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ফরয হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, যার ইচ্ছা সে এদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে, আর
যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দেবে।
২৫১৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও ইবনু নুয়ামর (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জাহিলী যুগে লোকেরা আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র
দিন সিয়াম পালন করত। রমযানের সিয়াম ফরয হওয়ার পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এদিন সিয়াম পালন করেছেন এবং মুসলমানগণও। যখন রমযানের সিয়াম
ফরয হল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন আল্লাহর
দিনসমূহের একটি দিন। সুতরাং যার ইচ্ছা সে এ দিন সিয়াম পালন করবে, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দেবে।
২৫১৪। মুহাম্মদ ইবনুল
মূসান্না, যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ বকর
ইবনু শায়বা (রহঃ) উবায়দুল্লাহ (রহঃ) থেকে এ সনদে বর্ণনা করেছেন।
২৫১৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও
ইবনু রুমহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সম্পর্কে রা
সূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আলোচনা করা হলে তিনি বললেন, এ দিনে জাহিলী যুগে লোকেরা সিয়াম পালন করত।
তোমাদের মধ্যে যে এ দিনে সিয়াম পালন কন্নতে আগ্রহী, সে
এ দিনে সিয়াম পালন করতে পারে। আর যে অপছন্দ করে, সে
ছেড়ে দিতে পারে।
২৫১৬। আবূ কুরায়ব (রহঃ)
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন
সম্পর্কে রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, জাহিলী যুগে লোকেরা এ দিনে সিয়াম পালন করত।
যদি কেউ এ দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে চায়, সে এ দিনে সিয়াম পালন করবে। আর কেউ যদি এ দিনে
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন না করতে চায়, সে
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে না। আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর অভ্যস্ত দিনে না
হলে আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন না।
২৫১৭। মুহাম্মাদ ইবনু আহমদ
ইবনু আবূ খালফ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিবসের সিয়াম সম্পর্কে কথা তোলা হ’ল। তারপর রাওহ (রহঃ)
লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ)-এর অনুরুপই বর্ণনা করেছেন।
২৫১৮। আহমদ ইবনু উসমান
নওফেলী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
নিকট আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিবস সম্পর্কে কথা তোলা হলে তিনি বললেন, এ দিনে জাহেলী যুগে লোকেরা সিয়াম পালন করত। যার
ইচ্ছা সে এ দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে আর যার ইচ্ছা সে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে না।
২৫১৯। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আব্দুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আশ’আস ইবনু কায়স (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর নিকট
গেলেন। তখন তিনি দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, হে আবূ মুহাম্মদ! তুমি খাবার জন্য কাছে এসো।
তিনি বললেন, আজ কি আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র
দিন নয়? তিনি বললেন, তুমি কি জানো আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা) দিবস
কি? আশ’আস (রহঃ) বললেন, সে আবার কি? তিনি
বললেন, রমযানের সিয়াম ফরয হওয়ার
পূর্বে এ দিনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম পালন করতেন। যখন
রমযানের সিয়াম ফরয হল তখন তা ছেড়ে দেয়া হ’ল। রাবী আবূ কুরায়ব (রহঃ) (আরবি লিখা) এর
স্থলে (আরবি লিখা) বলেছেন।
২৫২০। যুহায়র ইবনু হারব ও
উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আমাশ (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে
তাঁরা বলেছেন,(আরবি লিখা আছে) “যখন রমযানের
বিধান নাযিল হ’ল তখন তিনই তা ছেড়ে দেন।”
২৫২১। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) কায়স ইবনু সাকান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন আশ’আস ইবনু
কায়স (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর কাছে এলেন। এ সময় তিনি আহার করছিলেন। তিনি আশ’আসকে
লক্ষ্য করে বললেন, হে আবূ মুহাম্মদ! নিকটে এসো, খানা খাও। তিনি বললেন, আমি তো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করছি। এ কথা শুনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আমরা
এ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতাম। পরে তা ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
২৫২২। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আশ’আস
ইবনু কায়স (রহঃ) ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর নিকট গেলেন। সেটা আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র
দিন ছিল। তখন খানা খাচ্ছিলেন। এ দেখে আশ’আস (রহঃ) বললেন, হে আবূ আবদুর রহমান! আজ তো আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন। তিনি বললেন, রমযানের
সিয়াম ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনে সিয়াম পালন করা হতো। কিন্তু রমযানের সিয়াম ফরয হলে
এ দিনের সিয়াম পালন ছেড়ে দেয়া হয়। এখন তুমি যদি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) না
রেখে থাক তবে খাও।
২৫২৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু সমুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন আমাদেরকে সিয়াম পালনের নির্দেশ দিতেন। তিনি এ
ব্যাপারে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করতেন এবং এ বিষয়ে তিনি আমাদের খোজ-খবর নিতেন।
কিন্তু যখন রমযানের সিয়াম ফরয হ’ল, তখন
তিনি আমাদেরকে আদেশও করেননি, নিষেধও করেননি এবং কোন
খোঁজ-খবর আর নেন নি।
২৫২৪। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) ইউনুস (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে এবং তিনই হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ)
থেকে বর্ণিত যে, তিনি একদিন মু-আবিয়া ইবনু
আবূ সুফয়ান (রাঃ)-কে মদিনায় ভাষণ দিতে শুনলেন, অর্থাৎ
যখন মদিনায় এসেছিলেন, তখন আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র
দিবসে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, হে মদিনাবাসী! তোমাদের আলিমগণ কোথায়? আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-কে এদিন সম্পর্কে বলতে শুনেছি যে, এ
হল আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা) দিবস। তোমাদের উপর এদিনের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ফরয করেননি। তবে আমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করছি। তাই তোমাদের মধ্যে যে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পছন্দ করে, সে পালন করবে আর যে পছন্দ করেনি সে করবে না।
২৫২৫। আবূ তাহির (রহঃ) ইবনু
শিহাব (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
২৫২৬। ইবনু আবূ উমর (রহঃ)
যুহরী (রহঃ) থেকে এ সনেদ বর্ণনা করেন, তিনি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ দিন সম্পর্কে বলতে শুনেছেন যে, আমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী। যে
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনের ইচ্ছা করে, সে
যেন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে, অতঃপর
তিনি মালিক এবং ইউনূস বর্ণিত হাদীসের অবশিষ্ট অংশ উল্লেখ করেননি।
২৫২৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হিজরত করে) মদিনায় এলেন এবং তিনি ইয়াহুদীদেরকে
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সিয়াম পালন করতে দেখতে পেলেন। এরপর তাদেরকে এ
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর তারা বলল, এ
সে দিন, যে দিন আল্লাহ মূসা (আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ও বনী – ইসরাঈলকে ফির-আউনের উপর বিজয়ী করেছেন। তাই এর সম্মানার্থে
আমরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে থাকি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, আমরা তোমাদের চেয়েও মূসা
(আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অধিক নিকটবর্তী। অতঃপর তিনি এ দিনে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার নির্দেশ দিলেন।
২৫২৮। ইবনু বাশশার ও আবূ বকর
ইবনু নাফি” (রহঃ) আবূ বিশর (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে
হাদীসে (আরবি লিখা আছে)(তারা এ বিষয়ে জ্জিজ্ঞাসা করল) এ স্হলে (আরবি লিখা
আছে)(তিনি তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন) বাক্যটি বর্নিত আছে।
২৫২৯। ইবনু আবূ উমর (রহঃ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় এসে ইয়াহুদীদেরকে আসূরার দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনরত দেখতে পেলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা
এটা কোন দিনের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করছ? তারা বলল, এ
মহান দিনে আল্লাহ তায়ালা মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি
দিয়েছেন এবং ফির আউন ও তার কওমকে ডুবিয়ে দিয়েছেন। এরপর মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে এ দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন।
তাই আমরাও এ দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করছি। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমরা
তো তোমাদের থেকে মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অধিক নিকটবর্তী এবং হকদার। অতঃপর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করলেন এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার জন্য সকলকে নির্দেশ দিলেন।
২৫৩০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) আয়্যুব (রহঃ) থেকে এ সনদের সাথে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, ইবনু সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) ইবনু সাঈদের নাম
উল্লেখ করেননি।
২৫৩১। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদী সম্প্রদায় আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)
দিবসের সম্মান প্রদর্শন করত এবং তারা এ দিনকে ঈদ বলে গণ্য করত। অতঃপর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরাও
এ দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর।
২৫৩২। আহমদ ইবনুল মুনযির
(রহঃ) কায়স (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এতে অতিরিক্ত
বর্ণনা করেছেন যে,আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, খায়বরের ইয়াহুদীরা আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত। তারা এ দিনকে
ঈদরুপে পালন করত এবংতারা তাদের মহিলাদেরকে অলংকার ও উত্তম পোশাকে সুসজ্জিত করত।
এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরাও এদিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন কর।
২৫৩৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও আমরুন-নাকিদ (রহঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনু আবূ ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে আশূরা
(আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিনে সিয়াম পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বললেন, এ দিন ব্যতীত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন দিনকে অন্য দিনের তূলনায় উত্তম
মনে করে সেদিনে সিয়াম পালন করেছেন বলে-আমার জানা নেই। অনুরুপভাবে রমযান ব্যতীত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন মাসকে অন্য মাসের তুলনায় শ্রেষ্ঠ
মনে করে সিয়াম পালন করেছেন বলেও আমার জানা নেই।
২৫৩৪। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি-
(রহঃ) উবায়দূল্লাহ ইবনু আবূ ইয়াযীদ (রহঃ)-এর সূত্রে সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন।
২৫৩৫। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) হাকাম ইবনু আরাজ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে পৌছিলাম। এ সময়
তিনি যমযমের কাছে চাঁদর বিছানো অবস্হায় বসা ছিলেন। তখন আমি তাঁকে বললাম! আমাকে
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা) দিবসের সিয়াম পালন সম্পর্কে সংবাদ দিন। উত্তরে তিনি
বললেন, মুহাররম! মাসের চাঁদ দেখার
পর তুমি এর তারিখগুলো শুণে রাখবে। এরপর নবম তারিখে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
অবস্হায় তোমার যেন ভোর হয়। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি
সেদিন সিয়াম পালন করেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যা, করেছেন।
২৫৩৬। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) হাকাম ইবনু আরাজ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যমযমের কাছে ইবনু আব্বাস (রাঃ) চাঁদর পেতে বসে
থাকা অবস্হায় আমি তাকে আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিবসে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। এরপর তিনি হাজিব ইবনু
উমর (রহঃ)-এর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৫৩৭। হাসান ইবনু আলী
দাওয়ানী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যখন আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সিয়াম পালন করেন এবং লোকদেরকে সিয়াম পাননের
নির্দেশ দেন তখন সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইয়াহূদ এবং
নাসারা এ দিনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইনশা
আল্লাহ আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও সিয়াম পালন করব। বর্ণনাকারী বলেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এমতাবস্হায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর ইন্তেকাল হয়ে যায়।
২৫৩৮। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমি যদি আগামী বছর বেচে থাকি তবে মূহাররমের
নবম তারিখেও সিয়াম পালন করব। আবূ বকর (রহঃ) বলেন, নবম
তারিখই হচ্ছে আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন।
২৫৩৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তিকে নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে যেন লোকদের মধ্যে এ কথা ঘোষণা করে যে যে
সিয়াম পালন করেনি, সে যেন সিয়াম পালন করে এবং
যে আহার করেছে, সে যেন রাত পর্যন্ত তার সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পূর্ণ করে।
২৫৪০। আবূ বকর ইবনু নাফি-
আবদী (রহঃ) রুবায়্যি বিনত মুয়াওয়ায ইবনু আফরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন ভোরে এক ব্যাক্তিকে মদিনার পার্শবর্তী আনসারী
সাহাবীদের জনপদে এ নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, সে
যেন এ ঘোষণা করে দেয় যে সিয়ামরত অবস্হায় যার ভোর হয়েছে, সে যেন তার দিনকে পূর্ণ করে। আর যার ইফতার
অবস্হায় ভোর হয়েছে, সে যেন তার দিনের অবশিষ্ট
অংশ পানাহার থেকে বিরত অবস্হায় পূর্ন করে। এরপর আমরা এ দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতাম এবং আমাদের ছোট ছোট সন্তানদেরকেও আল্লাহ চাহে
তো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনে অভ্যস্ত করে তুলতাম। আমরা তাদেরকে মসজিদে
নিয়ে যেতাম এবং তাদের জন্য পশমের খেলনা বানিয়ে দিতাম। যখন তারা খাওয়ার জন্য কাঁদত, তখন আমরা তাদেরকে সে খেলনা প্রদান করতাম। এমনি
করে ইফতারের সময় হয়ে যেত।
২৫৪১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) খালিদ ইবনু যাকওয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি সাবায়্যি বিনত
মুয়াওয়ায (রাঃ) থেকে আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারীদের জনপদে তার দূতগণকে প্রেরণ করলেন। এরপর
বিশর (রহঃ)-এর অনুরুপ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তবে এ হাদীসের মধ্যে তিনি বর্ণিত আছে
যে- আমরা তাদের জন্য পশমের খেলনা তৈরি করতাম এবং-আমরা তা আমাদের সাথে নিয়ে যেতাম।
তারা যখন আমাদের কাছে খাবার চাইত তখন তাদেরকে আমরা সে খেলনা প্রদন করতাম। তারা এ
নিয়ে- খেলাধুলা করত। এমনিভাবে তারা তাদের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পূর্ণ করত।
২৫৪২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) ইবনু আযহারের গোলাম আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈদের দিন আমি উমর ইবনুল খাত্তাবের সংগে উপস্থিত
ছিলাম। তিনি ঈদগাহে এসে সালাত আদায় করলেন এবং লোকদের দিকে মুখ করে ভাষণ দানকালে
বললেন, এ দুটি এমন দিন যে দু-দিনে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন। এক হ’ল, ঈদুল ফিতরের দিন,আর
হ’ল ঐ দিন, যে দিন তোমরা কুরবানীর গোশত
খেয়ে থাক।
২৫৪৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুঁদিন সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন। এক হল
কুরবানীর দিন- আর দ্বিতীয় হল ঈদুল ফিতরের দিন।
২৫৪৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) কাযাআ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে একটি হাদীস শ্রবণ করেছি। হাদীসটি আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে।
তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আপনি এ হাদীস শুনেছেন কি? তিনি
বললেন, যে কথা আমি রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনিনি এমন কথা তাঁর -দিকে সম্বোধন করে আমি
বলতে পারি কি? আমি শুনেছি তিনি বলেছেন, দু-দিন সিয়াম পালন করা শুদ্ধ নয় ঈদূল আযহার দিন
এবং ঈদূল ফিতরের দিন।
২৫৪৫। আবূ কামিল জাহদারী
(রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু-দিন অর্থাৎ ঈদূল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর দিন
সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন।
২৫৪৬। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) যিয়াদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি ইবনু উমর (রাঃ)-এর নিকট এসে বললেন, আমি এক দিন সিয়াম পালন করার মান্নত করেছিলাম।
ঘটনাক্রমে তা ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিতরের দিন হয়ে গেছে। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা মান্নত পূরা করার নির্দেশ
দিয়েছেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ দিন সিয়াম পালন করতে
নিষেধ করেছেন।
২৫৪৭। ইবনু নুমায়র (রহঃ)
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতর এবং ঈদূল আযহা এ দু’ দিন সিয়াম পালন
করতে নিষেধ করেছেন।
২৫৪৮। সুরায়জ ইবনু ইউনুস
(রহঃ) নূবায়শা হুযালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আইয়্যামে তাশরীক পানাহারের দিন।
২৫৪৯। মুহাম্মাদ ইবনু
আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) নুবায়শা (রহঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ খালিদ বলেছেন
আমি অবুল মালীহ- এর সাথে সালাত কবে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। তিনি আমাকে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বুশায়মের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে
এ হাদীসে অতিরিক্ত রয়েছে যে, এদিন আল্লাহকে স্বরণ করার
দিন।
২৫৫০। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কা’ব ও আউস ইবনু হাদসান (রাঃ)-কে আইয়্যামে তাশরীকের সময় পাঠালেন এবং
বলে দিলেন তোমরা ঘোষণা করে দাও যে, মুমিনগণই
জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং আইয়্যামে মিনা (আইয়্যামে তাশরীক) পানাহার করবার দিন।
২৫৫১। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)
ইবরাহীম ইবনু তাহমান (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এ হাদীসের মধ্যে
‘ফানাদা’ এর স্হলে ‘ফানাদায়া’ বর্ণিত আছে। অর্থাৎ এক বচনের স্হলে দ্বিবচনের সাথে
কথাটি বর্নিত আছে।
২৫৫২। আমরুন-নাকিদ (রহঃ)
মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ ইবনু জাফর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফরত অবস্হায় জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জুম্মার দিন সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন কি? তিনি
বললেনঃ হ্যা আমি এ ঘরের মালিকের শপথ করে বলছি।
২৫৫৩। মুহাম্মদ ইবনু রাফি
(রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ ইবনু জাফর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন। এরপর উক্তরুপ-হাদীস নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
২৫৫৪। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমুঁঅরর দিন সিয়াম
পালন না করে। (যদি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে চায়) তবে জুমুআর আগে বা
পরে যেন এক দিন যোগ করে সিয়াম পালন করে।
২৫৫৫। আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী (রহঃ) বলেন, রাতসমূহের
মাঝে তোমরা কেবল জুমূআর রাতকে সালাত ও জাগ্রত থাকাঁর জন্য নির্ধারন করে নিও না।
অনুরুপভাবে দিনসমূহের মধ্যে কেবল জুমু-আর দিনকে সিয়াম পালনের জন্য নির্দিষ্ট করে
নিও না। তবে তা যদি তার নিয়মিত সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার দিনে পড়ে
তাহলে সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে।
২৫৫৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,’ অ আলাল্লাজ্বীনা ’ যারা সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে সক্ষম তাদের জন্য ফিদয়া হচ্ছে মিসকীনের খাদ্য
দান-এ আয়াত অবর্তীর্ণ হওয়ার পর যার ইচ্ছা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিত
এবং ফিদয়া প্রদনি করত। এরপর পরবর্তী আয়াত নাযিল হলে এ আয়াত রহিত হয়ে যায়।
২৫৫৭। আমর ইবনু সাওয়াদ আমিরী
(রহঃ) সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে রমযান মাসে জামাদের অবস্হা এ ই ছিল যে, আমাদের যে ইচ্ছা করত সে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত। আর যে ইচ্ছা করত, সে
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিত এবং ফিদয়া প্রদান করত। এরপর তিনি (তোমাদের
মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে) এ আয়াত অবর্তীর্ণ হয়।
২৫৫৮। আহমদ ইবনু আবদুল্লাহ
ইবনু ইউনূস (রহঃ) আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আয়িশা (রাঃ)-কে
বলতে শুনেছি যে, আমার উপর রমযানের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কাযা থেকে যেত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
পক্ষ হতে আমার প্রতি বিভিন্ন প্রকার পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকার কারণে। শাবান মাস
ব্যতীত আমি তা আদায় করতে পারতাম না।
২৫৫৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তরে এ
হাদীসের মধ্যে রয়েছে যে, এবং রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কারণে? শাবানের
পূর্বে আমার জন্য তা পালন সম্ভব হতো না।”
২৫৬০। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি
(রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এতে
রয়েছে যে ইয়াহইয়া (রহঃ) বলেন আমার ধারণা, এ
বিলম্ভ করা মূলত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে থাকার
কারণেই হয়েছিল।
২৫৬১। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না ও আমরুন-নাকিদ (রহঃ) ইয়াহইয়া (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তবে এ হাদীসের মধ্যে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে লিপ্ত থাকার কথা উল্লেখ
নেই।
২৫৬২। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ
উমর মক্কী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের মঝে এমন অনেকে আছেন
যে! তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে রমযানের সিয়াম
পালনে সক্ষম হতেন না। শাবান না আসা পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে থাকার কারণে আমার পক্ষে কাযা আদায় করা সম্ভব হতো না।
২৫৬৩।হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী ও
আহমদ ইবনু ঈসা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমযানের কাযা দায়িত্বে থাকা অবস্হায় যদি কোন ব্যহক্ত মৃত্যুবরণ
করে! তার পক্ষ হতে তার অভিভাবকগণ সিয়াম পালন করবে।
২৫৬৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে- জনৈকা মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললেন, আমার
মা মৃত্যুবরণ করেছেন। তার এক মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কাযা আছে। এ কথা
শুনে বললেন, যদি তার উপর কোন ঝণ থাকত
তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করতে? তিনি বললেন, হয়, নিশ্চয়ই।
তখন তিনি বললেন- আল্লাহর ঝণ পরিশোধ করার অধিক হকদার।
২৫৬৫। আহমদ ইবনু উমর আন
ওয়াকিঈ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা মুত্যৃবরণ
করেছেন। তার উপর রয়েছে এক মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কাযা। আমি তার
পক্ষ হতে এ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কাযা আদায় করতে পারি কি? তিনি বললেন যদি তোমার মায়ের উপর কোন ঋন থাকত
তাহলে তুমি তা পরিশোধ করতে কি? তিনি বললেন, হ্যা নিশ্চয়ই। তিনি বললেনঃ তাহলে আল্লাহর ঋণ
পরিশোধের অধিক হকদার সুলায়মান (রহঃ) বলেন, হাকাম
ও সালামা ইবনু কুহায়ল উভয়ের বলেছেন, যখন
মুসলিম বাততীন (রহঃ) হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন- খ্রিষ্টান আমরা সকলে সেখানে উপস্থিত
ছিলাম। তারা বললেন, আমরা ঐ হাদীসটি মুজাহিদ
(রহঃ)-কে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি।
২৫৬৬। আবূ সাঈদ আশাজ্জ (রহঃ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরুপ হাদীস
বর্ণনা করেছেন।
২৫৬৭। ইসহাক ইবনু মানসূর, ইবনু আবূ খালফ ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ইবনু
আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, জনৈকা মহিলা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন ষে আল্লাহর রাসুল! আমার মা
মৃত্যু বরণ করেছেন। তার উপর মান্নতের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কাযা রয়েছে।
আমি তার পক্ষ হতে এ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আদায় করতে পারি কি? তখন তিনি বললেন যদি তোমার মায়ের উপর কোন ঋণ
থাকত এবং তুমি তা পরিশোধ করে দিতে, তবে
তা তার পক্ষ হতে আদায় হতো কি? সে বলল, হ্যা। তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের পক্ষ হতে তুমি
সিয়াম পালন কর।
২৫৬৮। আলী ইবনু হুজর সা’দী
(রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট বসা ছিলাম। এমতাবস্হায় জনৈকা
মহিলা এসে বললেন! আমি আমার মায়ের জন্য একটি দাসী সদকা করেছিলাম। তিনি মৃত্যুবরণ
করেছেন। একথা শুনে তিনি বললেন, তুমি তো তোমার সওয়াব পেয়ে
গিয়েছ। তবে উত্তরাধিকার তোমার নিকট তা ফিরিয়ে দিয়েছে। তখন ঐ মহিলা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! তার উপর এক মাসের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কাযা রয়েছে। আমি তার পক্ষ হতে ঐ সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আদায় করতে পারি কি? তিনি
বললেন, তুমি তার পক্ষ হতে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। অতঃপর মহিলা বললেন, তিনি তো তখনও হাজ্জ (হজ্জ)ও আদায় করেননি আমি
তার পক্ষ হতে হাজ্জ (হজ্জ) আদায় করতে পারি কি? তিনি
বললেন, তুমি তার পক্ষ হতে হাজ্জ
(হজ্জ) আদায় কর।
২৫৬৯। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। অতঃপর তিনি ইবনু
মুসহির (রহঃ)-এর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে তিনি বলেছেন, দুই মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)।
২৫৭০। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)
বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, জনৈকা
মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এলেন। অতঃপর তিনি অনুরুপ
হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন এক মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)।
২৫৭১। ইসহাক ইবনু মানসুব
(রহঃ) সুফয়ান (রহঃ) থেকে এ সনদে (অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন) তবে এ হাদীসের মধ্যে
দুই মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কথা বর্ণিত আছে।
২৫৭২। ইবনু আবূ খালফ (রহঃ)
বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- জনৈকা মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলেন। তাদের হাদীসের অনুরুপ বর্ননা করেন এবং বলেন, এক মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)।
২৫৭৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা, আমরুন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু
হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, তোমাদের সিয়ামরত কোন
ব্যাক্তিকে যদি খানা খাওয়ার জন্য আহবান করা হয়, তবে
তার বলা উচিত, আমি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী।
২৫৭৪। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের
কারও যদি কোন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনরত অবস্হায় ভোর হয়, তবে সে যেন স্ত্রী সম্ভোগ ও অন্যায় আচরণ না
করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা ঝগড়া-বিবাদ করে, তবে
সে যেন বলে আমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী, আমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী।
২৫৭৫। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
তূজায়বী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে
বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ ইরশাদ করেন, আদম সন্তানের যাবতীয় আমল তার নিজের জন্য।
কিন্তু সিয়াম, তা আমারই জন্য এবং আমিই তার
প্রতিদান দিব। (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন) যার হাতে
মুহাম্মদ এর প্রাণ তাঁর শপথ, সিয়াম পালনকারী ব্যাক্তির মুখের
গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের সুগন্ধি হতেও উৎকৃষ্ট।
২৫৭৬। আবদুল্লাহ ইবনু
মাসলামা ইবনু কা-নাব ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সিয়াম
হল ঢাল।
২৫৭৭। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি-
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ
ইরশাদ করেন, আদম সন্তানের যাবতীয় আমল তার
নিজের জন্য। কিন্তু সিয়াম, তা আমারই জন্য। আমিই এর
প্রতিদান দেব। সিয়াম হল ঢাল। তোমাদের কারো সিয়াম পালনের দিন সে যেন স্ত্রীর সাথে
উপগত হয় এবং শোরগোল না করে। যদি কেউ তাকে গালমন্দ করে অথবা কেউ যদি তার সাথে ঝগড়া
বিবাদ করে তবে সে যেন বলে আমি একজন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী। যার
হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর শপথ! সিয়াম পালনকারী
ব্যাক্তির মুখের গন্ধ কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক
উত্তম। সিয়াম সাধনাকারী ব্যাক্তির খুশির বিষয় দুটি, যখন
সে ইফতার করলো তখন ইফতার-এর কারণে সে আনন্দ লাভ করল এবং যখন সে তার রবের সাথে
সাক্ষাত হবে- তখন সে তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কারণে আনন্দিত হবে।
২৫৭৮। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ সাঈদ
আশাজ্জ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আদম সন্তানের প্রতিটি আমল দশ
গুন থেকে সাতশত গুণ বাড়ইয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ তা-আলা বলেন, কিন্তু সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম); সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আমার জন্য এবং
আমিই এর প্রতিদান দিব। কারণ সে আমারই জন্য তার কামাচার এবং পানাহার বর্জন করে।
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ব্যাক্তির জন্য খূশির বিষয় দুটি। একটি খূশি
ইফতারের সময়, আরেকটি খুশি তার প্রতিপালকের
সাথে সাক্ষাতের সময়। সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কারণে যে দুর্গন্ধ হয়, তা আল্লাহর কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক
উৎকৃষ্ট।
২৫৭৯। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আমারই জন্য এবং
আমিই এর প্রতিদান দিব। সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ব্যাক্তির খূশির সময়
দুটি। যখন ইফতার করবে, তখন খূশি হবে এবং যখন
আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে, তখন খূশি হবে। যার হাতে
মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর শপথ! সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারী ব্যাক্তির মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের
সুগন্ধির চেয়েও অধিক উত্তম।
২৫৮০। ইসহাক ইবনু উমর ইবনু
সুলায়ত বুযালী (রহঃ) সিনানের পিতা যিবার ইবনু মুররা (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ
হাদীস বর্ণিত আছে। তবে এ হাদীসে আছে, “যখন
সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে, তখন আল্লাহ তাকে প্রাতদান
দিবেন; এতে সে আনন্দিত হবে।
২৫৮১। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে রায়য়ান নামক
একটি তোরণ আছে। কিয়ামতের দিন এটি দিয়ে সিয়াম পালনকারী লোকেরা (জান্নাতে) প্রবেশ
করবে। তাদের ছাড়া আর কেউ তাদের সঙ্গে এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। তাদেরকে
বলা হবে- সিয়াম পালনকারী লোকেরা কোথায়? অতঃপর
তারা সে তোরণ দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। তাদের শেষ লোকটি প্রবেশ করার পরই
দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর আর কেউ প্রবেশ করবে না।
২৫৮২। মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ
ইবনু মুহাজির (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যদি কোন ব্যাক্তি (জিহাদ অতিযানে) সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে, তবে
এ এক দিনের সিয়াম পাননের বিনিময়ে আল্লাহ তা’আলা তার মূখমণ্ডলকে জাহান্নামের অগ্নি
থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে রাখবেন।
২৫৮৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) সুহায়ল (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ননা করেছেন।
২৫৮৪। ইসহাক ইবনু মানসুর ও
আবদুর রহমান ইবনু বিশর আবদী (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে এ কথা বলতে শুনেছি, যে
ব্যাক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ অভিযানে একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে, আল্লাহ তা-আলা তার মুখমন্ডলকে জাহান্নামের
অগ্নি থেকে সত্তর বছরের ব্যবধান করে দিবেন।
২৫৮৫। আবূ কামিল ফূযায়ল ইবনু
হুসায়ন (রহঃ) উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে আয়িশা! তোমার নিকট
(খাওয়ার মত) কোন কিছু আছে কি? আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ!
আমার নিকট কিছুই নেই। তখন তিনি বললেন, তাহলে
আমি সিয়াম পালন করছি। আয়িশা (রাঃ) বলেন, অতঃপর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে চলে গেলেন। ইত্যবসরে আমাদের
নিকট কিছু হাদিয়া আসল কিংবা তিনি বলেছেন, দর্শনার্থী
কতিপয় লোক আমাদের নিকট আসলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ফিরে আসলে আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ! আমাদের কিছু
হাদিয়া দেয়া হয়েছে কিংবা তিনি বলেছেন, কতিপয়
দর্শনার্থী আমাদের নিকট এসেছেন। আমি আপনার জন্য কিছু খাবার সযত্নে রেখে দিয়েছি।
তিনি বললেন, তা কি? আমি বললাম, হায়স
অর্থাৎ ঘি এবং পনির মিশ্রিত খেজুর। তিনি বললেন, নিয়ে
আস। তখন আমি তা নিয়ে এলাম। তিনি তা খেলেন। তারপর বললেন- আমি ভোরে সিয়াম পাননের
নিয়্যত করেছিলাম। বর্ণনাকারী তালহা (রহঃ) বলেন, আমি
এ হাদীস মুজাহিদ (রহঃ)-এর নিকট বর্ণনা করার পর তিনি বললেন, এ কাজটি ঐ ব্যাক্তির মত যে তার মাল থেকে সদকা
বের করল। সে ইচ্ছা করলে তা দান করতে পারে- আর ইচ্ছা করলে রেখেও দিতে পারে।
২৫৮৬। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার
নিকট এসে বললেন, তোমাদের নিকট কোন কিছু আছে
কি? আমি বললাম, না।
তিনি বললেন, তাহলে আমি সিয়াম পালন করছি।
এরপর আরেক দিন তিনি আমাদের কাছে এলেন। আমরা বললাম, ইয়া
রাসুলাল্লাহ! আমাদের জন্য হায়স ঘি এবং পনির মিশ্রিত খেজুর হাদিয়া পাঠান হয়েছে।
তিনি বললেন, তুমি তা আমাকে দেখাও, আমার তো ভোর হয়েছে সায়িম অবস্হায়। তারপর তিনি
তা আহার করলেন।
২৫৮৭। আমর ইবনু মুহাম্মাদ
নাকিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, সিয়াম পালনকারী যদি ভুলক্রমে
খায় বা পান করে তবে, সে তার সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পূর্ন করবে। কেননা আল্লাহ তাআলাই তাকে আহার করিয়েছেন ও
পান করিয়েছেন।
২৫৮৮। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম
নাবীরমযান ব্যতীত অন্য কোন সময়ে পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করেছেন কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম!
রমযান ব্যতীত অন্য সময়ে তিনি পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেননি, এমনকি তিনি ইন্তেকাল করেছেন। তবে বিশেষ কারণ
ব্যতীত তিনি রমযানের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভংগ করতেন না।
২৫৮৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আয (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আমি আয়িশা (রাঃ) -কে বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি
পুর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) (নফল) পালন করেছেন? তিনি বললেন, রমযান
ব্যতীত পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন কি না আমি তা জানি না, এমন কি তিনি ইন্তেকাল করেছেন।
২৫৯০। আবূর-রবী যাহরানী
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম।
তিনি বললেন, তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন, এমনকি
আমরা বলতাম তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেই যাবেন। আবার তিনি ইফতার
অবস্হায় থাকতেন এমনকি আমরা বলাবলি করতাম, তিনি
সিয়াম ভংগ করেই চলেছেন (আর সিয়াম পালন করবেন না)। তিনি (আরও) বলেন মদিনায় তাশরীফ
নেয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে রমযান ব্যতীত পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করতে দেখিনি।
২৫৯১। কুতায়বা (রহঃ)
আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা
করলামঃ পুর্ববর্তী হাদীসের অনুরুপ কিন্তু এই সনদে হিশাম ও “মুহাম্মাদের নাম উল্লেখ
করেন নি”।
২৫৯২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে (নফল) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করে যেতেন- এমন কি আমবা বলাবলি করতাম, হয়ত
তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছাড়বেন না। আবার কখনও তিনি একাধারে (দীর্ঘদিন)
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন নাঃ এমন কি আমরা বলাবলি করতাম, হয়ত তিনি আর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করবেন না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে একমাত্র রমযান মাস
ছাড়া কখনও পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে দেখিনি। আমি তাকে
শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে অধিক সংখ্যক (নফল) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করতে দেখিনি।
২৫৯৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও আমরুন-নাকিদ (রহঃ) আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আয়িশা
(রাঃ)-কে রাসুলুল্লাহ -এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম।
তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যেতেন এমনকি আমরা বলতাম সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছেন (আবার কখনও ভংগ করবেন না)। আবার কখনও তিনি
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিতেন, এমনকি
আমরা বলতাম, তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছেড়ে দিয়েছেন (আর কখনো সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করবেন না)। আমি তাঁকে শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এত অধিক (নফল) সংখ্যা পালন
করতে দেখিনি। তিনি যেন গোটা শাবান মাসই সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন।
তিনি সামান্য (কয়টি দিন) ব্যতীত গোটা শাবান মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করতেন।
২৫৯৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাস ব্যাতীত বছরের অন্য কোন মাসে এত অধিক
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন না। তিনি বলতেনঃ তোমরা যথাসাধ্য অধিক
পরিমাণে ভাল কাজ কর। কারণ আল্লাহ তা’আলা সওয়াব দিতে কখনও ক্লান্ত হন না বরং তোমরাই
আমল করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়। ”আরও বলতেনঃ “বান্দা যে কাজ নিরবিচ্ছিন্নভাবে করতে
পারে, তাই আল্লাহর কাছে অধিক
প্রিয়- তার পরিমাণ কম হলেও।”
২৫৯৫। আবূর রবী যাহরানী
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একমাত্র রমযান মাস ব্যতীত কখনও পূর্ণমাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করেননি। তিনি যখন (নফল) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন তা একাধারে করে
যেতেন। এমনকি লোক মনে করত না, আল্লাহর শপথ! তিনি আর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছাড়বেন না। আবার কখন, তিনি
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা হতে বিরত থাকতেন। যাতে লোকেরা মনে করত
আল্লাহর শপথ!তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবেন না। (কেবল মাত্র
রমযানের পূর্ণ মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার জন্য মুসলমানদের
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহানাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি মাসের কয়েক
দিন করে নফল সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন। কিন্তু শাবান মাসে সর্বাধিক
সংখ্যক সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন। কারণ শাবান মাস হচ্ছে রমযান
মাসের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার মাস।)
২৫৯৬। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার
ও আবূ বকর ইবনু নাফি (রহঃ) আবূ বিশর (রহঃ) এই সনদ সুত্রে তিনি হাদীস বর্ণনা করেছেন
ও বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসার পর থেকে কখনও একাধারে পুরো মাস সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেননি।”
২৫৯৭। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) উসমান ইবনু হাকীম আনসারী (রহঃ) বলেন আমি সাঈদ ইবনু
জুবায়র (রাঃ) এর কাছে রজব মাসে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করলাম। তখন সেটা রজব মাস। তিনি উত্তরে বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যেতেন- এমনকি আমরা মনে
করতাম তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ছাড়বেন না। আবার কখনও তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) থেকে বিরত থাকতেন -এমনকি আমরা মনে করতাম, তিনি হয়ত আর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করবেন না।
২৫৯৮। আলী ইবনু হুজর ও
ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) উসমান ইবনু হাকীম (রহঃ)-এর সূত্রে এই সনদে উপরুক্ত
হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে।
২৫৯৯। যুহায়র ইবনু হারব-
ইবনু আবূ খালফ ও আবূ বকর ইবনু নাফি (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করে যেতেন, এমন কি বলা হতো তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যাচ্ছেন, তিনি
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যাচ্ছেন। আবার তিনি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন হতে বিরত থাকতেন, এমনকি
বলা হতো তিনি বিরত থাকছেন তিনি বিরত থাকছেন।
২৬০০। আবূত-তাহির ও হারামালা
ইবনু ইয়াহইয়া (রাঃ) আবদুল্লাহ আমর ইবনুল আস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে
অবহিত করা হল যে, তিনি (আবদুল্লাহ) বলেন, আমি অবশ্য সারা রাত (ইবাদতে) দাড়িয়ে থাকব এবং
সারা দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করব- যতদিন জীবিত থাকি। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি
কি একথা বলেছ? আমি তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমিই একথা বলেছি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি
তা করতে সক্ষম হবে না। অতএব তুমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর ও ছেড়ে দাও
এবং ঘূমাও আবার জেগে ইবাদত কর। তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। কারন প্রতিটি নেকীর বিনিময়ে তার দশগুন সওয়াব
রয়েছে। আর এটা পূর্ণ বছর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার সমতূল্য। আমি
বললাম, আমার এর চেয়েও অধিক পরিমাণ
করার সামর্থ্য আছে। তিনি বললেন, তাহলে একদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে দুইদিন ছেড়ে নাও। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে
আল্লাহর রাসুল! আমি এর চেয়েও অধিক করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে তুমি একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন কর, একদিন ছেড়ে দাও। আর এটাই
হচ্ছে দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এবং তা
সর্বোত্তম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)। আমি বললাম আমি আরও অধিক করতে সক্ষম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর চেয়ে
উত্তম কিছু নেই। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন- আমি যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথামত প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করার নিয়ম গ্রহণ করতাম তবে তা আমার জন্য পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদের তূলনায়
অধিক পছন্দনীয় হতো।
২৬০১। আবদুল্লাহ ইবনু
মুহাম্মাদ রুমী (রহঃ) ইয়াহইয়া (রহঃ) বলেন, আমি
ও আবদল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ রওনা হয়ে আবূ সালামার নিকট গেলাম। আমরা তাঁর কাছে একজন লোক
পাঠালাম। তিনি বের হয়ে আমাদের নিকট এলেন। তাঁর বাড়ির সামনেই ছিল মসজিদ এবং আমরা
সেঁখানেই তার অপেক্ষায় ছিলাম। তিনি বললেন, তোমরা
ইচ্ছা করলে আমার বাড়িতেও যেতে পার। আর চাইলে এখানেও বসতে পার। আমরা বললামঃ- না বরই
আমরা এখানেই বসি এবং আপনি আমাদের (হাদীস) বর্ণনা করুন। তিনি বললেন আমার কাছে
আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুুূল আস (রাঃ) বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন আমি সারা বছর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতাম এবং সারা রাত কুরআন পাঠ করতাম। একথা শুনে নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উল্লেখ করা হয়েছে অথবা তিনি বলেছেনঃ
(অধস্তন রাবীর সন্দেহ) আমাকে ডেকে পাঠান হয়েছে। আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হলাম। তিনি
আমাকে বললেন আমাকে অবহিত করা হয়েছে যে- তুমি সারা বছর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর এবং সারা রাত্র কুরআন পাঠ কর। আমি বললামঃ সে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি এরদ্বারা কল্যাণ লাভেরই
প্রত্যাশী। তিনি বললেন তাহলে প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করাই তোমার জন্য যথেষ্ট। আমি বললাম হে আল্লাহর নাবী! আমি এর চেয়েও অধিক
সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেনঃ তোমার উপর তোমার স্ত্রীর অধিকার রয়েছে তোমার সাক্ষাত
প্রার্থীর তোমার উপর অধিকার রয়েছে। এবং তোমার দেহেরও তোমার উপর অধিকার রয়েছে। অতএব
আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। কারণ তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে সর্বাধিক
ইবাদতকারী। আমি বললাম হে আল্লাহর নাবী! দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কি? তিনি বললেনঃ তিনি একদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন একদিন ছেড়ে দিতেন। তিনি আরও বললেন তুমি প্রতি
মাসে একবার (পূর্ণ) কুরআন তিলওয়াত খতম কর। আমি বললাম হে আল্লাহর নাবী! আমি এর
চেয়েও অধিক পড়তে সক্ষম। তিনি বললেনঃ তাহলে প্রতি বিশ দিনে একবার কুরআন খতম কর। আমি
বললাম হে আল্লাহর নাবী! আমি এর চেয়েও অধিক পড়তে সক্ষম। তিনি বললেন তাহলে দশদিনে
-একবার কুরআন খতম কর। আমি বললামঃ হে আল্লাহর নাবী! আমি এর চেয়েও বেশি পড়তে সক্ষম।
তিনি বললেনঃ তাহলে সপ্তাহে একবার খতম কর এর অধিক নয়। কারণ তোমার উপর তোমার স্ত্রীর
অধিকার আছে। তোমার দেহেরও অধিকার আছে। আবদুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন আমি নিজের উপর কঠোরতা করেছি ফলে আমি কঠোরতায় নিক্ষিপ্ত হয়েছি। নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আরও বললেনঃ তুমি জান না হয়ত তুমি দীর্ঘজীবি
হবে। অতএব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যা বলেছেন আমি তা গ্রহণ
করলাম। আমি যখন বার্ধক্যে উপনীত হলাম তখন আকাঙ্ক্ষা করতাম আহা আমি যদি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দেয়া অবকাশ গ্রহগ করতাম।
২৬০২। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) থেকে এই সনদে পূর্বোক্ত হাদীস বর্নিত হয়েছে।
তবে এই সুত্রে “প্রতি মাসে তিন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করার কথার
পর আরও আছে কেননা তোমার জন্য প্রতিটি ভাল কাজের পরিবর্তে তার দশগুন প্রতিদনি
রয়েছে। অতএব তা এক বছর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনের সমানই হল। এই হাদীসে
আরও উল্লেখ আছে। আমি (আবদুল্লাহ) বললাম, আল্লাহর
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাউদ (জা)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
কিরুপ ছিল? তিনি বললেন, অর্ধ বছর (সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করা)” এই সুত্রে কুরআন তিলওয়াত সম্পর্কে কিছু উল্লেখ নাই এবং নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একথা উল্লেখ নাই ”তোমার উপর তোমার স্ত্রীরও অধিকার রয়েছে।
বরং এতে উল্লেখ আছে “তোমার উপর তোমার সন্তানেরও অধিকার রয়েছে।”
২৬০৩। কাসিম ইবনু যাকারিয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন তুমি প্রতি মাসে একবার কুরআন খতম কর। আমি বললাম, আমার এর অধিক সামর্থ্য আছে। তিনি বললেন প্রতি
বিশ দিনে একবার কুরআন খতম কর। আমি বললাম, আমার
এর অধিক সামর্থ্য আছে। তিনি বললেন, তাহলে
প্রতি সপ্তাহে একবার কুরআন খতম কর, এর
অধিক নয়।
২৬০৪। আহমদ ইবনু ইউসূফ আযদী
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবদুল্লাহ! তুমি অমুক ব্যাক্তির মত হয়ো
না যে সারা রাত জেগে ইবাদত করত পরে তা পরিত্যাগ করে।
২৬০৫। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ
কথা পৌছল যে আমি একাধারে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যাচ্ছি এবং রাতে
সালাত আদায় করে চলছি। অতএব তিনি আমাকে ডেকে পাঠালেন (অথবা রাবীর সন্দেহ) হলমি তাঁর
সাথে সাক্ষাত করলাম। তিনি বললেন আমাকে অবহিত করা হয়েছে যে তুমি সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যাচ্ছ এবং তা ছাড়ছ না এবং রাতব্যাপি সালাত আদায়
করে চলেছ। তুমি (এরুপ) করো না। কেননা তোমার চোখের একটি দাবি রয়েছে তোমার দেহের
একটি অধিকার রয়েছে এবং তোমার স্ত্রীর একটি অধিকার রয়েছে। অতএব সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর এবং ছেড়ে দাও, সালাত
আদায় কর আবার ঘূমাতে যাও। প্রতি দশ দিনে একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
কর এতে তুমি নয় দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পাননের সওয়াব পাবে। আমি বললাম-
হে আল্লাহর নাবী! আমি নিজেকে এর চেয়ে বেশি সামর্থ্যবান মনে করি। তিনি বললেন তাহলে
দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মত সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। আমি
বললামঃ দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিভাবে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন? তিনি বললেন তিনি একদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন- একদিন ছেড়ে দিতেন এবং (যুদ্ধক্ষেত্র থেকে)
পলায়ন করতেন না যখন (শক্র বাহিনীর) সন্মুখীন হতেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেনঃ- সে
আল্লাহর নাবী! কে আমার জন্য এ সবের জামিন হবে? অধঃস্তন
রারী আতা (রহঃ) বলেনঃ একাধারে সঁওমের প্রশংসা কী ভাবে বর্ণনা করেছেন। আমি জানি না
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি একাধারে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে সে মূলত সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করেনি। যে সর্বদা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করল সে মূলত সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেনি যে ব্যাক্তি হামেশা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করল সে মূলত সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেনি।
২৬০৬। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে এই সুত্রে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং বলেছেনঃ
আবূ আব্বাস শায়র (রহঃ) তাকে অবহিত করেছেন। ইমাম মুসলিম বলেন, তিনি হলেন আবূ আব্বাস আস-সায়েব ইবনু ফাররুখ
(রহঃ) তিনি মক্কার অধিবাসী এবং বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ছিলেন।
২৬০৭। উবায়াদুল্লাহ ইবনু
মূআয (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে
আবদুল্লাহ আমর! তুমি তো একাধারে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে যাচ্ছ।
সারা রাত ইবাদতে দাড়িয়ে থাক। তুমি এরুপ করলে-তাহতে তোমার-চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং
দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলবে। যে ব্যাক্তি সর্বদা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করল, সে মূলত সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)-পালন করল
না। মাসে তিন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। পূর্ণ মাস সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনের সমতূল্য। আমি বললাম, আমি
এর চেয়েও বেশি সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, দাঊদ
(আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ন্যায় সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। তিনি একদিন
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন এবং একদিন ছেড়ে দিতেন এবং পলায়ন করতেন না
যখন তিনি শক্রর সম্মুর্খীন হতেন।
২৬০৮। আবূ কুরায়ব (রহঃ)
হাবীব ইবনু আবূ সাবিত (রহঃ) থেকে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এতে আরও আছে, এবং তুমি শ্রান্ত-ক্লান্ত হয়ে পড়বে।”
২৬০৯। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে বললেন, আমাকে তোমার সম্পর্কে অবহিত
করা হয়েছে যে, তুমি সারাটিরাত দাঁড়িয়ে
সালাত আদায়া কর এবং দিনের বেলা রোযা রাখ? আমি
বললাম, আমি অবশ্য করি। তিনি বলেন, তুমি এরুপ করতে গেলে অনিদ্রার কারণে তোমার-চোখ
কোটরাগত হবে এবং তুমি দুর্বল হয়ে পড়বে। তোমার চোখের হক রয়েছে, তোমার দেহের হক রয়েছে এবং তোমার পরিবার-পরিজনের
হক রয়েছে। অতএব তুমি রাতে ইবাদতও করবে এবং নিদ্রাও যাবে। সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)ও পালন করবে, আবার
তা বাদও দেবে।
২৬১০। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর
নিকট পছন্দনীয় সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) হচ্ছে দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এবং তাঁর নিকট পছন্দনীয় সালাত হচ্ছে দাউদ (আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সালাত। তিনি অর্ধরাত ঘূমাতেন। অতঃপর এক-তৃতীয়াংশ রাত ইবাদতে
থাকতেন। অতঃপর এক-ষষ্ঠাংশ রাত ঘূমাতেন। তিনি একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করতেন এবং একদিন বাদ দিতেন।
২৬১১। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) হচ্ছে দাউদ (আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)। তিনি বছরের অর্ধেক কাল সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন। মহান আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় সালাত
হচ্ছে দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সালাত। তিনি অর্ধ রাত ঘূমাতেন, অতঃপর সালাতে দাড়াতেন, অতঃপর শেষ রাতে ঘুমিয়ে যেতেন। অর্ধরাত
অতিক্রান্ত হওয়ার পর এক-তৃতীয়াংশ রাত ইবাদত করতেন। রাবী ইবনু জুরায়জ (রহঃ) বলেন, আমি আমর ইবনু দ্বীনারকে বললামঃ আমর ইবনুল আস
(রাঃ) কি একথা বলতেন যে, তিনি অর্ধরাত অতিক্রান্ত
হওয়ার পর এক-তৃতীয়াংশ রাত ইবাদতে থাকতেন? তিনি
বললেন- হ্যাঁ।
২৬১২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবূ কিলাবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে
আবূল মালীহ (রহঃ) অবহিত করেছেনঃ তিনি বলেছেন, আমি
তোমার পিতার সাথে আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তিনি আমাদের নিকট বললেন, যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আমার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে
উল্লেখ করা হলে তিনি আমার কাছে এলেন। আমি তাঁর জন্য একটি চামড়ার তাকিয়া পেতে
দিলাম। তাতে খেজুরের অনুশ ভর্তি ছিল। তিনি মাটির উপর বসে গেলেন এবং তাকিয়াটি তাঁর
ও আমার মাঝে পড়ে থাকল। তিনি আমাকে বললেন প্রতি মাসে তিন দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়? আমি বললাম, ইয়া
রাসুলুল্লাহ (আমি এর অধিক সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে সক্ষম)! তিনি
বললেন, তাহলে পাচদিন। আমি বললামঃ
ইয়া রাসুলল্লাহ (আমি এর চেয়ে বেশি সামর্থ্য রাখি)! তিনি বললেন, তাহলে সাত দিন? আমি
বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি এর
অধিক সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে নয় দিন! আমি বললাম।
ইয়া রাসুলুল্লাহ (আমি এর অধিক সামর্থ্য রাখি)। তিনি বললেন, তাহলে এগার দিন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ! (আমি এর অধিক সামর্থ্য রাখি)।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দাউদ
(আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)-এর উপর কোন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) নেই। তিনি বছরের অর্ধেক অর্থাৎ একদিন যদি এ সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন আরেক দিন বাদ দিতেন।
২৬১৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে বলেন, তুমি একদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করলে পরের দিনের সওয়াব পাবে। তিনি বলেন, আমি আরও অধিক রাখতে সক্ষম। তিনি বললেন, তুমি দুই দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন কর। তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোর সওয়াব পাবে। তিনি বললেন, আমি আরও অধিক সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
রাখতে সক্ষম। তিনি বললেন, তুমি তিন দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোরও সওয়াব পাবে। তিনি বললেন, আমি আরও অধিক রাখতে সক্ষম। তিনি বললেন, তুমি চার দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন কর, তাহলে অবশিষ্ট দিনগুলোরও
সওয়াব লাভ করবে। তিনি বললেন, আমি আরও অধিক রাখতে সক্ষম।
তিনি বললেন, তুমি দাউদ (আলাইহি
ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর যা আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)। তিনি পর্যায়ক্রমে একদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন এবং পরের দিন বাদ দিতেন।
২৬১৪। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হেঁ
আবদুল্লাহ ইবনু আমর! আমি জনিতে-পেরেছি যে, তুমি
দিনের বেলা-সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর, এবং
রাতের বেলা সালাতে থাক তুমি এরুপ করো না। কারন তোমার উপর তোমার দেহের একটি অংশ
(হক) রয়েছে তোমার উপর তোমার চোখের অংশ-রয়েছে এবং তোমার উপর তোমার স্ত্রীর অংশ
রয়েছে। তুমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)ও পালন কর এবং বাদও দাও। প্রতি মাসে তিন
দিন করে “সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর এবং এটাই হল সারা বছরের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) (-এর নিয়ম)। আমি বললামঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম! আমার আরও শক্তি আছে। তিনি বললেন, তাহলে
দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)-এর মত সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। পর্যায়ক্রমে একটি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন কর এবং-একদিন বাদ দাও। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলতেন হায়! আমি যদি সহজটার উপর-আমল
করতাম।
২৬১৫। শায়বান ইবনু ফাররুখ
(রহঃ) মুআযাহ আলআদাবইয়্যা (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী
আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে জানতে চাইলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি প্রতি মাসে তিন দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন? তিনি
বললেনঃ হ্যা। আমি পূনরায় তাকে-জিজ্ঞাসা করলাম, মাসের
কোন কোন দিন তিনি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)-পালন করতেন? আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তিনি মাসের যে কোন দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে দ্বিধা করতেন না।
২৬১৬। আবদুল্লাহ ইবনু
মুহাম্মাদ ইবনু আসমা যুবাঈ (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাবী (রহঃ) তাকে বললেন অথবা (অধঃস্তন রাবীর
সন্দেহ) তিনি কোন- ব্যাক্তিকে বলেছেন এবং তিনি তা শুনছিলেন, হে অমুক! তুমি কি এ মাসের মধ্যভাগে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছি লে? সে
বলল, না। তিনি বললেন, যখন
তুমি তা ভংগ করবে তখন দুই দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে।
২৬১৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
তামীমী ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, আপনি কিভাবে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন
করেন? তার এই কথায় রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্তুষ্ট হলেন। উমর (রাঃ)তার অসন্তোষ লক্ষ্য করে
বললেন, আমরা আল্লাহর উপর (আমাদের)
প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামের উপর (আমাদের) দ্বীন
হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর আমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিসেবে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আল্লাহর কাছে তাঁর ও তার রাসূলের
অসন্তোষ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি। ” উমর (রাঃ) কথাটি বার বার আওড়াতে থাকলেন এমনকি
শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অসন্তোষের ভাব দূরীভূত
হল। তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! যে
ব্যাক্তি সারা বছর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে তার অবস্হা কিরুপ? তিনি বললেনঃ সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করেনি-এবং ছেড়েও দেয়নি। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, যে পর্যায়ক্রমে দুই দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করে ও একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ত্যাগ করে, তার অবস্হা কিরুপ? তিনি বললেন, এই
সামর্থ্য কার আছে? (অর্থাৎ সামর্থ্য) থাকলে বেশ
ভাল কথা। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, যে
ব্যাক্তি একদিন পর একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে তার অবস্হা কিরুপ? তিনি বললেন, এটা
দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)। তিনি আবার জিজ্ঞাসা
করলেন যে একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে ও একদিন করে না, তার অবস্হা কিরুপ? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, আমি আশা করি যে আমার এতটা
শক্তি হোক। তিনি পূনরায় বললেন, প্রতি মাসে তিন দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা এবং রমযান মাসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
এক রমযান থেকে পরবর্তী রমযান পর্যন্ত সারা বছর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালনের সমান। আর আরাফাত দিবসের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে আমি আল্লাহর
কাছে আশাবাদী যে, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও
পরবর্তী বছরের গুনাহর ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে। আর আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তাতে পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহের কাফফারা হয়ে
যাবে।
২৬১৮। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ কাতাদা আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত
যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। এতে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্তুষ্ট হলেন। তখন উমর (রাঃ) বললেন আমরা আল্লাহর
উপর (আমাদের) প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামের উপর (আমাদের) দ্বীন
হিসেবে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর (আমাদের) রাসুল হিসেবে এবং আমাদের কৃত বায়-আতের উপর আমরা
সন্তুষ্ট। অতঃপর সারা বছর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করা হল। তিনি বললেন সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেনি, ইফতারও করেনি সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করেনি এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)হীনও থাকেনি। অতঃপর একাধারে দুই দিন
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা ও এক দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন এভাবে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনের সামর্থ্য কার আছে? অতঃপর
একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন ও দু দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
ত্যাগ করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেনঃ- আল্লাহ যেন আমাদের এরুপ সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনের সামর্থ্য দান করেন। অতঃপর একদিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা ও একদিন না করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি
বললেনঃ তা আমার ভাই দাঊদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)।
অতঃপর সোমবারের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি
বললেনঃ- এই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনই আমি নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি বা
আমার উপর (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে। আরও বললেন, প্রতি
মাসে তিন দিন এবং গোটা রমযান মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করাই হল সারা
বছর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনের সমতুল্য। অতঃপর আরাফাত দিবসের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের শুনাহের
কাফফারা হয়ে যাবে। অতঃপর আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, তাতে
বিগত বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। এই হাদীসে শুবার বর্ণনায় আরও আছে, অতঃপর সোমবার ও বৃহস্পতিবারের সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। কিন্তু আমাদের মতে
বৃহস্পতিবারের কথা ভুলবশত বর্ণিত হয়েছে, তাই
আমরা তার উল্লেখ থেকে বিরত থাকলাম।
২৬১৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয
আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) শুবা (রহঃ) -এর সুত্রে এই
সনদে উপরোক্ত হাদীস বর্নিত হয়েছে।
২৬২০। আহমদ ইবনু সাঈদ
আদ-দারিমী (র) গায়লান ইবনু জারী (রহঃ)-এর সুত্রে এই সনদে শুবার সুত্রে বর্ণিত
হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এই সুত্রে তিনি (গায়লান) সোমবারের উল্লেখ করেছেন
তিনি বৃহস্পতিবারের উল্লেখ করেননি।
২৬২১। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সোমবারের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলে তিনি বলেন, ঐদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি
এবং ঐদিন আমার উপর (কুরআন) নাযিল হয়েছে।
২৬২২। হাদ্দাব ইবনু খালিদ
(রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অথবা অপর কাউকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি শাবান মাসের মধ্যভাগে সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছিলে? তিনি
বললেন, না। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যখন-তুমি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)
পালন করনি, তখন দুই দিন সাওম
(রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করে নিও।
২৬২৩। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি এ মাসের মধ্যেভাগে
কিছু দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেছিলে? সে বলল, না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি
তার বদলে রমযানের সিয়াম শেষ করে দুই দিন সিয়াম পালন করবে।
২৬২৪। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
ব্যাক্তিকে বললেন, তুমি কি এবং মাসের অর্থাৎ
শাবান মাসের মধ্যেভাগে কিছু দিন সিয়াম পালন করেছ? সে
বলল, না। তিনি তাকে বললেন, রমযানের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন শেষ
করে তুমি এক দিন বা দুই দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। এ সম্পর্কে
শুবার সন্দেহ রয়েছে এবং রাবী বলেন, আমার
ধারণা যে, তিনি দুই দিনের কথা বলেছেন।
২৬২৫। মুহাম্মাদ ইবনু কুদামা
ও ইয়াহইয়া লু’লুই (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু হানী ইবনু আখী মুতাররিফ থেকে এই সনদে
অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৬২৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমযানের
সিয়ামের পর সর্বোত্তম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররমের
সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এবং ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হচ্ছে রাতের
নামায।
২৬২৭। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে জিজ্ঞাসা করা হল, ফরয সালাতসমূহের পর কোন সালাত এবং রমযান মাসের
সিয়ামের পর কোন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সর্বোত্তম? বললেন, ফরয
সালাতসমূহের পর গভীর রাতের সালাত সর্বোত্তম এবং রমযান মাসের সিয়ামের পর আল্লাহর
মাস মুহাররমের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সর্বোত্তম।
২৬২৮। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আব্দুল মালিক ইবনু উমায়র (রাঃ) থেকে এই সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত
হয়েছে।
২৬২৯। ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ আয়্যুব
আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যাক্তি রমযান মাসের সিয়াম পালন করল, তারপর শাওয়াল মাসে ছয় দিনকে তার অনুগামী করল
(অর্থাৎ ৬টি সিয়াম পালন করল), সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।
২৬৩০। ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবূ
আয়্যুব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
২৬৩১। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আবূ আয়্যুব (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ
বর্নিত।
২৬৩২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কতিপয় সাহাবীকে স্বপ্নে দেখান হল যে, (রমযানের) শেষ সাত দিনের মধ্যে কদরের রাত রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি মনে করি যে, শেষের সাতদিন সম্পর্কে তোমাদের সকলের স্বপ্ন
পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ। অতএব যে ব্যাক্তি তা অন্বেষণ করবে, সে যেন রমযানের শেষ সাতদিনের রাত গুলোতে তা
অম্বেষণ করে।
২৬৩৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্নিত। তিনি বলেন, (রমযানের) শেষ সাতদিনের
রাতগুলোতে লায়লাতুল কদর অন্বেষণ কর।
২৬৩৪। আমরুন-নাকিদ ও যুহায়র
ইবনু হারব (রহঃ) সালিম (রহঃ) থেকে তার পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি (পিতা) বলেন, এক ব্যাক্তি (রমযানের) ২৭ তম রাতে লায়লাতুল কদর
দেখতে পেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাকেও তোমাদের মত স্বপ্ন দেখান হয়েছে যে, তা রমযানের শেষ দশকে নিহিত আছে। অতএব এর বেজোড়
রাত গুলোতে তা অনুসন্ধান কর।
২৬৩৫। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) সালিম ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তার পিতা আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেনঃ আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে লায়লাতুল কদর সম্পর্কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কতিপয় লোককে দেখান হল যে, তা রমযানের প্রথম সাতদিনের মধ্যে, আবার কতিপয় লোককে দেখান হয়েছে যে, তা শেষ সাতদিনের মধ্যে। অতএব (রমযানের) শেষ
দশবেরে মধ্যে তা অন্বেষণ কর।
২৬৩৬। মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) উকবা ইবনু হুরায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ইবনু উমর
(রাঃ)-কে বলতে শুনেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা
রমযানের শেষ দশদিনে কদরের রাত অনুসন্ধান কর। তোমাদের কেউ যদি দূর্বল অথবা অপারগ
হয়ে পরে, তবে সে যেন শেষ সাত রাতে
অলসতা না করে।
২৬৩৭। মুহাম্মদ ইবনু
মূসান্না (রহঃ) জাবালা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাঃ)-কে নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে
ব্যাক্তি কদরের রাত অনুসন্ধান করতে চায় সে যেন (রমযানের) শেষ দশকে তা অনুসন্ধান
করে।
২৬৩৮। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা
(রমযানের) শেষ দশকে কদরের রাত অনুসন্ধান কর অথবা তিনি বলেছেনঃ শেষের সাত রাতে।
২৬৩৯। আবূ তাহির ও হারামালা
ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, আমাকে স্বপ্নে কদরের রাত
দেখনি হয়েছিল। অতঃপর আমার পরিবারের কেউ আমাকে ঘূম থেকে জাগানোর ফলে আমাকে তা
ভূলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা তা শেষ দশকে অম্বেষণ কর। রাবী হারামালা (রহঃ)
বলেছেন, আমি তা ভুলে গেছি। ”
২৬৪০। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (রমযানের) মাঝের দশকে ইতিকাফ করেন। অতঃপর ২০তম দিন
অতিবাহিত হওয়ার পর এবং ২১তম দিনের সূচনাতে তিনি নিজ বাসস্থানে ফিরে-আসেন এবং তাঁর
সঙ্গে যারা ইতিকাফ করেন, তারাও নিজ নিজ আবাসে
প্রত্যাবর্তন করেন। অতঃপর একবার রমযান মাসের মাঝের দশকে ইতিকাফ করলেন- যে রাতে
তাঁর ইতিকাফ হতে ফিরে আসার কথা, সে রাতে (পূনরায়) ইতিকাফ
আরম্ভ করলেন ও লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন।
এরপর তিনি বললেন, আমি সাধারণত এই (মধ্যম) দশকে
ইতিকাফ করতাম। এরপর শেষ দশকেও ইতিকাফ করা আমার কাছে সমীচীন মনে হল। অতএব যে ব্যাক্তি
আমার সাথে ইতিকাফ করতে চায়, সে যেন নিজ ইতিকাফের স্থানে
অবস্হান করে। আমি এই (কদরের) রাত স্বপ্নে দেখেছিলাম কিন্তু আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া
হয়েছে। অতএব তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোত তা অনুসন্ধান কর। আমি স্বপ্নে নিজেকে
পানি ও কাদার মধ্যে সিজদা করতে দেখেছি। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, ২১তম রাতে আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়। তিনি
যখন ফজরের সালাত থেকে ফিরলেন, তখন আমি তাঁর মুখমন্ডল কাদা
ও পানিতে সিক্ত দেখলাম।
১৬৪১। ইবনু আবূ উমর (রহঃ)
আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান। মাসের মাঝের দশকে ইতিকাফ করতেন। অবশিষ্ট
বর্ণনা পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরুপ। তবে এই বর্ণনায় আছে, “সে যেন তার ইতিকাফের স্থানে অবস্থান করে। তিনি
আরো বলেন, তাঁর কপাল মুবারক কাদা ও
পানিতে সিক্ত ছিল।
২৬৪২। মুহাম্মাদ ইবনু আবূল
আলা (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রমযান মাসের প্রথম দুদশকে ইতিকাফ করলেন। এরপর তিনি মাঝের দশকেও একটি ড়ূকী তাঁবুর
মধ্যে ইতিকাফ করলেন এবং তাবুর দরজায় একটি চাটাই ঝূলান ছিল। রাবী বলেন, তিনি নিজ হাতে চাটাই ধরে তা তাঁবুর কোণে রাখলেন
এরপর নিজের মাথা বাইরে এনে লোকদের সাথে কথা বললেন এবং তারাও তাঁর নিকট এগিয়ে এল।
তিনি বললেন, এই রাতের অনুসন্ধানকল্পে আমি
(রমযানের) প্রথম দশকে ইতিকাফ করলাম। অতঃপর মাঝের দশকে ইতিকাফ করলাম। এরপর আমার
নিকট একজন আগন্তুক (ফিরিশতা) এসে আমাকে বলল, লায়লাতুল
কদর শেষ দশকে নিহিত আছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি ইতিকাফ করতে চায়, সে যেন ইতিকাফ করে। লোকেরা তাঁর সংগে (শেষ
দশকে) ইতিকাফ করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, স্বপ্নে আমাকে তা কোন এক বেজোড় রাতে দেখনি
হয়েছে এবং আমি যেন সেই রাতে কাদা ও পানির মধ্যে ফজরের সিজদা করছি। (রাবী বলেন)
২১তম রাতের ভোরে উপনীত হয়ে ফজরের সালাতে দাঁড়ালেন এবং আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষিত
হল। ফলে ছাদ থেকে মসজিদে পানি বর্ষিত হল এবং আমি স্বচক্ষে কাদা ও পানি দেখতে পেলাম। তিনি ফজরের সালাত শেষে যখন বের
হয়ে এলেন তখন তাঁর কপাল ও নাকের ডগা সিক্ত ও কর্দমাক্ত ছিল। আর তা ছিল রমযানের শেষ
দশকের প্রথম (বা ২১তম) রাত।
২৬৪৩। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না (রহঃ) আবূ সালামা (রাঃ) বলেনঃ আমরা পরস্পর কদরের রাত সম্পর্কে আলোচনা
করছিলাম। এরপর আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর নিকট এলাম এবং ছিলেন আমার বন্ধু। আমি
তাকে বললাম, আপনি কি আমাদের সাথে খেজুর
বাগানে যাবেন না? তিনি একটি চাঁদর পরিহিত
অবস্হায় বের হলেন। আমি তাকে বললাম, আপনি
কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে লায়লাতূল কদর সম্পর্কে কিছু
বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যা। আমরা রমযান মাসের মাঝের দশকে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সংগে ইতিকাফ করলাম। আমরা ২১তম দিন ভোরে
(ইতিকাফ থেকে) বের হলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের
উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে বললেন, আমাকে স্বপ্নযোগে কদরের রাত
দেখান হয়েছিল, কিন্তু আমি তা ভুলে গেছি
অথবা আমাকে তা ভূলানো হয়েছে। তোমরা শেষ দশ দিনের প্রতিটি বেজোড় রাতে তা অম্বেষণ
কর। আমি আরও দেখেছি যে, আমি কাদা ও পানির মধ্যে
সিজদা করছি। অতএব যে ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর
সঙ্গে ইতিকাফ করেছে, সে যেন পূনরায় তার ইতিকাফে ফিরে
যায়। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আময়ী (ইতিকাফের অবস্হায়)
ফিরে গেলাম। আমরা আকাশে কোন মেঘ দেখতে পাইনি। ইতিমধ্যে একখণ্ড মেঘ এল এবং আমাদের
উপর বৃষ্টি বর্ষিত হল, এমন কি মসজিদের ছাদ হতে পানি
প্রবাহিত হল। মসজিদের ছাদ খেজুর ডালার ছাউনিযুক্ত ছিল। ফজরের সালাত আদায় করা হল
এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কাদা ও পানির মধ্যে সিজদা দিতে
দেখলাম, এমন কি আমি তাঁর কপালে কাদার
চিহ্ন দেখতে পেলাম। –
২৬৪৪। আবদ ইবনু হুমায়দ, আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান দারিমী (রহঃ)
ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) থেকে এই সনদ সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ
বর্ণিত হয়েছে। তবে এই সুত্রে উভয়ের (মামার ও আল-আওযাঈ) বর্ননায় আছেঃ রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত শেষ করে ফিরলেন তখন আমি তাঁর কপালে ও
নাকের ডগায় কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম।
২৬৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না ও আবূ বকর ইবনু খাল্লাদ (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কদরের রাত অন্বেষণের উদ্দেশ্যে তা তাঁর কাছে সুস্পষ্ট হওয়ার
পূর্বে রমযানের মধ্যেই দশ দিন ইতিকাফ করলেন। দশদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি তাঁবু
তুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। অতএব তা শুটিয়ে ফেলা হল। অতঃপর তিনি জানতে পারলেন যে, তা শেষ দশ দিনের মধ্যে আছে। তাই তিনি পূনরায়
তাঁবু খাটানোর নির্দেশ দিলেন। তা খাটান হল। এরপর তিনি লোকদের নিকট উপস্থিত হয়ে
বললেন হে লোক সকল! আমাকে কদরের রাত সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল এবং আমি তোমাদের তা
জানানোর জন্য বের হয়ে এলাম। কিন্তু দুই ব্যাক্তি পরস্পর ঝগড়া করতে করতে উপস্থিত হল
এবং তাদের সাথে ছিল শয়তান। তাই আমি তা ভুলে গেছি। অতএব তোমরা তা রমযান মাসের শেষ
দশ দিনে অন্বেষণ কর। তোমরা তা ৯ম, ৭ম ও ৫ম রাতে অন্বেষণ কর।
রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আবূ সাঈদ! আপনি সংখ্যা সম্পর্কে আমাদের
তুলনায় অধিক জ্ঞানী। তিনি বললেন, হ্যা, আমরাই এ বিষয়ে তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। আমি
বললাম ৯ম, ৭ম ও ৫ম সংখ্যাগুলো কি? তিনি বললেন, যখন
২১তম রাত অতিবাহিত হয়ে যায় এবং ২২তম রাত শুরু হয় এই হচ্ছে ৯ম তারিখ ২৩ রাত
অতিক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী রাত হচ্ছে ৭ম তারিখ এবং ২৫তম রাত অতিবাহিত হওয়ার পরের
দিনটি হচ্ছে ৫ম তারিখ। ইবনু খাল্লাদের বর্ণনায় ‘ইয়াহতাফান’ -এর শব্দের স্হলে
‘ইয়াখতাসামান’ শব্দের উল্লেখ আছে।
২৬৪৬। সাঈদ ইবনু আমর ইবনু
সাধী ইবনু ইসহাক ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আশআস ইবনু কায়স আল-কিনদী ও আলী ইবনু খাশরাম
(রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমাকে
কদরের রাত দেখান হয়েছিল। অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাকে ঐ রাতের ভোর সম্পর্কে
স্বপ্নে আরও দেখান হয়েছে যে, আমিপানি ও কাদার মধ্যে সিজদা
করছি। রাবী বলেন, অতএব ২৩তম রাতে বৃষ্টি হল
এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে (ফজরের) সালাত আদায়
করে যখন ফিরলেন, তখন আমরা তাঁর কপান ও নাকের
ডগায় কাদা ও পানির চিহ্ন দেখতে পেলাম। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ
ইবনু উনায়স (রাঃ) বলতেন, তা ছিল ২৩তম।
২৬৪৭। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমযান মাসের শেষ দশ দিনে তোমরা কদরের রাত
ইবনু নূমায়রের বর্ণনায়) অন্বেষণ কর এবং (ওয়াকী-এর বর্ণনায়) সন্ধানে সচেষ্ট হও।
২৬৪৮। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ও
ইবনু আবূ উমর (রহঃ) যির ইবনু হুবায়শ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি উবাই ইবনু
কা’ব (রাঃ)-কে বললাম, আপনার ভাই আবদুল্লাহ ইবনু
মাসউদ (রাঃ) বলেন যে ব্যাক্তি গোটা বছর রাত জাগরণ করে- সে কদরের রাতের সন্ধান
পাবে। তিনি (উবাই) বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন, এর দ্বারা তিনি একথা বুঝাতে চাচ্ছেন যে- লোকেরা
যেন কেবল একটি রাতের উপর ভরসা করে বসে না থাকে। অথচ তিনি অবশ্যই জানেন যে, তা রমযনি মাসে শেষের দশ দিনের মধ্যে এবং ২৭তম
রজনী। অতঃপর তিনি শপথ করে বললেন! তা ২৭তম রজনী। আমি (যির) বললাম, হে আবূল মুনযির! আপনি কিসের ভিত্তিতে তা বলছেন? তিনি বললেনঃ- বিভিন্ন আলামত ও নিদর্শনের
ভিত্তিতে- যে সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অবহিত
করেছেন। যেমন! সেদিন সূর্য উঠবে কিন্তু তাতে আলোক রশ্মি থাকবে না।
২৬৪৯। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না (রহঃ) উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) কদরের রাত সম্পর্কে বলেন, আল্লাহর শপথ! কদরের রাত সম্পর্কে আমি খুব ভাল
করেই জানি। শু’বা বলেন, আমার জানামতে তা হচ্ছে সেই
রাত যে রাতে জেগে ইবদিত করার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তা হচ্ছে রমযানের ২৭তম রজনী। তা হচ্ছে সেই রাত যে রাতে
আমাদেরকে ইবাদত করার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ
দিয়েছেন। ” এই বাক্যটুকু সম্পর্কে শুবা সন্দেহে পতিত হয়েছেন এবং বলেছেন, আমার এক বস্তু তার শায়খের সুত্রে আমার নিকট ঐ
কথা বর্ণনা করেছেন।
২৬৫০। মুহাম্মাদ ইবনু আববাদ
ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে কদরের রাত সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা
করছিলাম। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কে সেই (রাত)
স্বরন রাখবে, যখন চাঁদ উদিত হরে থালার
একটি টূকরার ন্যায়।