৩৯৯৫। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান কাফিরের ওয়ারিস হবে না এবং কাফিরও মুসলমানের ওয়ারিস হবে না।
৩৯৯৬। আব্দুল আলা ইবনু হাম্মাদ
নারসী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ অংশীদারদের প্রাপ্য অংশ দিরে দাও। অতঃপর যা বেচে থাকে তা নিকটতম পুরুষ
লোকের প্রাপ্য।
৩৯৯৭। উমাইয়া ইবনু বিসতাম আল
আয়শী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অংশীদারদের অংশ প্রদান কর। তারপর যে অংশ অবশিষ্ট থাকবে তা
নিকটতম পুরুষের প্রাপ্য।
৩৯৯৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সম্পদ অংশীদারদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব
অনুযায়ী বণ্টন কর। তারপর যে অংশ অবশিষ্ট থাকে তা নিকটতম পুরুষের প্রাপ্য।
৩৯৯৯। মুহাম্মাদ ইবনু আলা
আবূ কুরায়ব হামদানী (রহঃ) ইবনু তাউস (রহঃ)-এর সুত্রে উপরোক্ত হাদীস ওহায়ব ও রাওহ
ইবনু কাসিমের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
৪০০০। আমর ইবনু মুহাম্মাদ
ইবনু বুকায়র নাকিদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমি একবার পিড়িত হই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বাকর (রাঃ) পায়ে হেঁটে আমাকে দেখতে আসেন। আমি অজ্ঞান হয়ে
পড়ি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযূ করেন এবং আর অবশিষ্ট পানি
আমার উপর ছিটিয়ে দেন। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বললাম, হে
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি আমার সম্পদ কিরুপে বন্টন করবো? তিনি আমাকে কোন উত্তর দেন নাই, মীরাস সংক্রান্ত আয়াত (অর্থঃ লোকে আপনার নিকট
ব্যবস্হা জানতে চায়, বলুন, পিতামাতাহীন নিসন্তান ব্যক্তি সমন্ধে
তোমাদেরকে আল্লাহ জানাচ্ছেন ) নাযিল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।
৪০০১। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম
ইবনু মায়মূন (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর
(রাঃ) পায়ে হেঁটে বনূ সালামায় আমাকে দেখতে আসেন। তাঁরা আমাকে অজ্ঞান অবস্হায় পান।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনতে বলেনঃ। এরপর অযু করেন এবং
তা-থেকে কিছু পানি আমার উপর ছিটিয়ে দেন। আমি জ্ঞান লাভ করে বললামঃ, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার সম্পদ কিভাবে বন্টন
করবো তখন নাযিল হয়ঃ আল্লাহ তোমাদের সন্তান সমন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন; এক পূত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান।
৪০০২। উবায়দুল্লাহ ইবনু উমার
কাওয়ারীরী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম দেখতে আসেন। আমি রোগাক্রান্ত ছিলাম। তার সংগে ছিলেন আবূ বাকর (রাঃ)।
তাঁরা উভয়েই পায়ে হেঁটে আসেন। তিনি আমাকে বেহুশ অস্হায় দেখতে পান। এরপর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু করেন এবং অবশিষ্ট পানি র কিছু
আমার উপর ছিটিয়ে দেন। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-কে দেখতে পেলাম। আমি বললামঃ,-হে
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি আমার সম্পদ কিভাবে বন্টন করবো? আমাকে তিনি কিছুই উত্তর দিলেননা। পরে মীরাসের
আয়াত নাযিল হয।
৪০০৩। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম
(রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমার কাছে আগমন করেন। আমি তখন রোগে বেহুশ ছিলাম। তিনি অযূ করেন। তাঁর অযুর পানির
কিছু অংশ আমার উপর লোকেরা ছিটিয়ে দেয়। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কালানা অবস্হায় আমার মীরাস
বন্টন হবে। এরপর মীরাসের আয়াত অবতীর্ণ হয়। আমি মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদিরকে বললাম
তিনি বললেনঃ, এরুপই অবতীর্ন হয়েছে।
৪০০৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) নযর ইবনু হুমায়ল ও আবূ আমির আকাদী (রহঃ) থেকে এবং মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না
(রহঃ) ওহাব ইবনু জারীর (রহঃ) থেকে এবং তারা সকলেই শুবা (রহঃ) থেকে উক্ত হাদীস
বর্ণনা করেন। ওহাল ইবনু জারীর এর হাদীসে আছে ‘ফারাইয এর আয়াতনাযিল হলো’। আর নযর ও
আকাদীর বর্ণনায় আছে ফারয এর আয়াত নাযিল হলো’। কিন্তু তাদের কারও বর্ণনায়ই একথা
নেই যে, শুবা ইবনু মূনকাদিরকে
বলেছেনঃ।
৪০০৫। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ
বাকর মুকাদ্দামী ও মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) মাদান ইবনু আবূ তালহা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এক জুম-আর খুতবা দেন। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বাকর (রাঃ) এর উল্লেখ করেন। এরপর বলেনঃ, আমি আমার পরে এমন কোন বিষয় রেখে যাব না, যা আমার নিকট কালালার চেয়ে বেশী জটিল। আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আর কোন বিষয় নিয়ে বারবার
জিজ্ঞাসা করিনি, যেমন বারবার জিজ্ঞাসা করেছি
কালালা- সম্পর্কে। আর তিনিও অন্য কোন বিষয়ে এমন কঠোরতা আমাকে দেখাননি যেরুপ
কঠোরতা দেখিয়েছেন এ বিষয়ে। এমন কি তিনি তাঁর আঙ্গুল আমার বুকের উপর চেপে ধরেন এবং
বলেনঃ, হে উমার! গ্রীষ্মকালে
অবতীর্ণ সূরা নিসার শেষের আয়াত কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়? আর আমি যদি জীবিত থাকি তবে এ ব্যাপারে এমন
ফয়সালা করবো যা দেখে ফয়সালা করবে সেই ব্যক্তি যে কুরআন পড়ে আর যে কুরআন পড়ে না
উভয়ে।
৪০০৬। আবূ বাকর ইবনু আবূ
শায়বা, যুহায়র ইবনু হারব, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু রাফি (রহঃ) কাতাদার
সুত্রে এই সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেন।
৪০০৭। আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ)
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, কুরআনের
সর্বশেষ যে –আয়াত নাযিল হয় তাহলো ।
৪০০৮। মুহাম্মাদ ইবনু
মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ ইসহাক (র-) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ, আমি বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াত কালালার আয়াত এবং
সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরা বারাআত।
৪০০৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সর্বশেষ
অবতীর্ণ পূর্ণাঙ্গ সূরা, সূরা তাওবা আর সর্বশেষ
অবতীর্ণ আয়াত কালালার আয়াত।
৪০১০। আবূ কুরায়ব (রহঃ)
বারাআ (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে অতিরিক্ত এ কথা বলেনঃ যে, সর্বশেষ অবতীর্ণ পূর্নাঙ্গ সুরা।
৪০১১। আমর-নাকিদ (রহঃ) বারআ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, সর্বশেষ অবতীর্ণ আয়াত।
৪০১২। যুহায়র ইবনু হারব ও
হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
নিকট যদি এমন লাশ আসতো যার উপর ঋণ থাকতো, তবে
তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, সে কি তার ঋণ পরিশোধের জন্য
ঐ পরিমাণ সম্পদ রেখে গেছে যা দ্বারা ঋণ পূরা হতে পারে যদি জানান হতো যে, সে ঋণ পুরো করার পরিমাণ সম্পদ রেখে গেছে, তবে তিনি তার জানাযা পড়াতেন। অন্যথায় বলতেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়ো। যখন
আল্লাহতাকে সম্পদের প্রাচুর্যের পথ খুলে দেন, তখন
তিনি বলেনঃ যে, আমি মুমিনদের জন্য তাদের
নিজেদের অপেক্ষাও বেশি নিকটবর্তী। সুতরাং যে ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত অবস্হায় মারা যাবে, তার সে ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব আমার উপর। আর যে
লোক সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য।
৪০১৩। আবদুল মালিক ইবনু
শুআয়ব ইবনু লায়স, যূহায়র ইবনু হারব ও ইবনু
নুমায়র (রহঃ) এর সত্রে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেন।
৪০১৪। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি’
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ, ঐ সত্তার শপথ যার হাতে
মুহাম্মাদের প্রাণ, পৃথিবীর উপর এমন কোন মুমিন
নাই, যার সবচেয়ে নিকটতম লোক আমি নই। সূতরাং যে লোক
ঋণ- অথবা সন্তান রেখে যাবে। আমি হবো তার অভিভাবক। আর তোমাদের ‘ কেউ যদি সম্পদ রেখে
যায় তবে সে মাল পাবে তার ঘনিষ্ঠ আত্নীয় সে যেই হোক না কেন।
৪০১৫। মুহাম্মদ ইবনু রাফি
(রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) এর সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, এগুলো আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। অতঃপর তিনি
কতগুলো হাদীস বর্ণনা করেন। তারমধ্যে একটি এই যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, আল্লাহর
কিতাব অনুযায়ী অন্য সব লোক অপেক্ষা আমি মুমিনদের সবচেয়ে নিকটবর্তী। সুতরাং তোমাদের
মধ্যে যে ব্যক্তি ঋণ অথবা নিঃম্বল পরিজন রেখে যায় আমাকে জানাও, আমি তার অভিভাবক। আর তোমাদের মধ্যে যে সস্পদ
রেখে যায়, তার সস্পদের অধিকারী হবে তার
ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সে যেই থাকুক।
৪০১৬। উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আয আম্বারী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, যে ব্যক্তি সম্পদ ছেড়ে যায়, তা তার ওয়ারিসদের প্রাপ্য। আর যে নিঃস্বল পরিজন
রেখে যায় তারা আমাদের দায়িত্বে।
৪০১৭। আবূ বাকর ইবনু নাফি’
(রহঃ) গুনদুর থেকে এবং যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আব্দুর রহমান ইবনু মাহদী (রহঃ) থেকে
উভয়ে শুবা (রহঃ) থেকে উপরোক্ত সনদে বর্ণনা করেন। অবশ্য শুনদুর বর্ণিত হাদীসে আছে, আর যে ব্যক্তি নিঃসম্বল পরিজন রেখে যায় আমি
তাদের অভিভাবক হবো।