ক্রয়বিক্রয়

৩৬৫৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়হইয়া তামীমী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলামা ও মূসাবাযা শ্রেনীর ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন।

৩৬৬০। আবূ কুরায়ব ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।

৩৬৬১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নূমাযুর ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণিত আছে।

৩৬৬২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত আছে।

৩৬৬৩। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুলামাসা ও মুনাবাযা এ দু প্রকার কেনা-বেচা নিষেধ করেছেন। “মুলামাসা”-মানে চিন্তা ভাবনা না করেই ক্রেতা ও বিক্রেতা পরস্পারের কাপড় স্পর্শ করা। আর “মুনাবাযা” মানে (ক্রেতাও বিক্রেতা) উভয়ে একে অন্যের প্রতি কাপড় ছুড়ে দেওয়া এবং কারো নিক্ষিপ্ত কাপড়ের প্রতি লক্ষ্য না রাখা।

৩৬৬৪। আবূ তাহির ও হারামালা ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দু-ধরনের কেনা-বেচা করতে ও দু-প্রকার কাপড় পড়তে নিষেধ করেছেন। কেনা-বেচার মধ্যে তিনি “মুলামাসা” ও “মুনাবাযা” নিষেধ করেছেন। ‘মুলামাসা- হল। (ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে) একজন অপরজণের কাপড় হাত দ্বারা স্পর্শ করা রাতে হোক কিংবা দিনে হোক। এরুপ করা ছাড়া (মাল) উণ্টিয়ে-পাল্টিয়ে দেখা হয় না। আর “মুনাবাযা” হল, পরস্পর একজনের প্রতি অপরজনের কাপড় ছুড়ে মারা এবং এরুপ করলেই ভালরুপে দেখে শুনে রাজী হওয়া ছাড়াই উভয়ে র মধ্যে কেনা-বেচা সম্পন্ন হয়ে যেত।

৩৬৬৫। আমরুন নাকিদ (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে একই সূত্রে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন।

৩৬৬৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পাখর খন্ড নিক্ষেপের মাধ্যমে কেনা-বেচা ও প্রতারনামূলক ক্রয়-বিক্রয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।

৩৬৬৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি হাবালূল হাবলা” শর্তে কেনা বেচা নিষেধ করেছেন।

৩৬৬৮। যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহিলী যুগের লোকেরা “হাবালূল হাবালা- শর্তে উটের গোশত কেনাবেচা করত। “হাবালুল হাবালা-, হল এমন শর্তে উটনী খরিদ করা যে, এর ঝড়া হওয়ার পর ঐ বাচ্ছা গর্ভধারণ করলে মূল্য পরিশোধ করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের বিক্রয় নিষেধ করেছেন।

৩৬৬৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যেন অপরের দামের উপর দাম চড়িয়ে কোন বস্তু ক্রয় না করে।

৩৬৭০। যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন কোন লোক যেন তার আপন ভাইয়ের খরিদ করার সময় বেশী দাম বলে ক্রয় না করে এবং কেউ যেন তার অপর ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপরে তার অনুমতি ছাড়া প্রস্তাব না পাঠায়।

৩৬৭১। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – বলেছেনঃ কোন মুসলমান যেন অপর মুসলমানের দামের উপর দাম না বলে।”

৩৬৭২। আহমাদ ইবনু ইবরাহীম দাওরাকী, মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মুআয (রহঃ) ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কোন ভাইয়ের দরদাম করার সময় কেউ যেন ঐ জিনিসের দরদাম না করে। দাওরকীর রিওয়ায়াতে ‘আলা সাও আখি’ এর স্থলে ‘আলা সাই মাতি আখিহি’ বলা হয়েছে।

৩৬৭৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেনার উদ্দেশ্যে কাফিলার সাথে আগেই গিয়ে সাক্ষাৎ করা যাবে না। তোমাদের কেউ যেন অপরের দাম বলার সময় দাম না বলে। কেনার উদ্দেশ্যে ছাড়া মালের দাম বলে বৃদ্ধি করো না। শহরবাসী যেন পল্লীতে গিয়ে লোকের থেকে খরিদ না করে। আর উট ও বক্বরীর ওলানে দুধ জমা করে রেখ না। এ অবস্হায় কেউ তা খরিদ করলে তার জন্য দু-পথের এক পথ অবলম্বনের অনুমতি রয়েছে- হয় সে তা রেখে দিবে, না হয় সে তা ফেরৎ দিবে এক সা খেজুরসহ।

৩৬৭৪। উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আম্বারী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন- পণ্য দ্রব্য নিয়ে আগমনকারীদের সাথে সামনে অগ্রসর হয়ে খরিদ করার উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎ করতে শহরে লোকদেরকে এগিয়ে গিয়ে গ্রাম্য লোকের থেকে পণ্য ক্রয় করতে কোন নারীকে তার বোনের তালাক দিতে বলতে, মূল্য বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে দাম বলতে, বিক্রয়ের পূর্বে দোহন না করে ওনানে দুধ জমা করে রাখতে এবং অপর ভাইয়ের দরদামের উপর দরদাম করতে।

৩৬৭৫। আবূ বকর ইবনু নাফি, মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না ও আবদুল ওয়ারিস ইবনু আবদুস সামাদ শুবা (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্পনা করেন। তবে গুনদুর ও ওয়াহব এর হাদীসে আছে, তিনি নিষেধ করেছেন। আর আবদুস সামাদের হাদীসে আছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন, যেমনটি আছে শুবা থেকে মুঁআয বর্ণিত হাদীসে।

৩৬৭৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। খরিদ করার ইচ্ছা ব্যতীত মূল্য বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে দাম বলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।

৩৬৭৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনুল মূসান্না ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, পণ্যদ্রব্য বাজারে পৌছার পূর্বে অগ্রগামী হয়ে ক্রয়ের জন্য যেতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। এ হল ইবনু নূমায়রের বর্ননা। আর অপর দু-জন বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে এপিয়ে গিয়ে পণ্য বহনকারী কাফিলার সাথে সাক্ষাৎ করতে নিষেধ করেছেন।

৩৬৭৮। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ও ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উবায়দুল্লাহ (রহঃ) হতে ইবনু নূমায়রের বর্ননার অনূরুপ হাদীসে বর্ননা করেছেন।

৩৬৭৯। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি পণ্যদ্রব্য আসার পথে এগিয়ে গিয়ে খরিদ করতে নিষেধ করেছেন।

৩৬৮০। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পণ্য বহনকারীদের সাথে অগ্রগামী হয়ে সাক্ষাৎ করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।

৩৬৮১। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা অগ্রগামী হয়ে কাফেলার সাথে মিলিত হয়ো না। যদি কেউ এরুপ করে এবং তার থেকে কোন বস্তু খরিদ করে তবে বিক্রিতা মালিক বাজারে পৌছার পর (বিক্রয় বহাল রাখা বা বাতিল করার ব্যাপারে তার ইখতিয়ার থাকবে।)

৩৬৮২। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমরুন নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শহুরে লোক যেন পল্লী-লোকের পক্ষ হয়ে বিক্রয় না করে। যুহায়র বর্ণনা (রহঃ) করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শহুরে লোককে পল্লী লোকের পক্ষ হয়ে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।

৩৬৮৩। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অগ্রগামী হয়ে পণ্যবহনকারী কাফিলার সাথে মিলিত হতে এবং শহরবাসীকে পল্লীবাসীর পক্ষ হয়ে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী (তাঊস) বলেন, আমি ইবনু আব্বাসকে জিজ্ঞাসা করলাম, শহর বাসী পল্লীবাসীর পক্ষ হয়ে বিক্রি করার অর্থ কি? তিনি বললেন, সে তার দালাল হবে না।

৩৬৮৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী ও আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শহরের লোকগ্রামের লোকের পক্ষ হয়ে বিক্রয় করতে পারবে না। লোকেদের একজনে র দ্বারা অপরজনের রিযকের যে সুবিধা আল্লাহ সৃষ্টি করে রেখেছেন সে ব্যবস্হা চালু থাকতে দাও।

৩৬৮৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমরুন নাকিদ (রহঃ) জাবির (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৬৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, গ্রামের লোকের পক্ষ হয়ে শহরের লোকের বিক্রয় থেকে আমাদেরকে বারণ করা হয়েছে চাই সে ভাই হোক বা পিতা।

৩৬৮৭। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে যে, শহরের লোক যেন গ্রামের লোকের পক্ষ হয়ে বিক্রয় না করে।

৩৬৮৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি অদোহিত ফূলান ওলান বিশিষ্ট বকরী খরিদ করে, তবে বাড়ী নিয়ে দোহনের পরে সে ইচ্ছা করলে রাখতে পারে আবার ইচ্ছা করলে ফেরতও দিতে পারে। ফেরত দিলে এক সা খেজুর ও সাথে দিবে।

৩৬৮৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ওলান ফূলান বকরী ক্রয় করবে, তিন দিন পর্যন্ত তার জন্য অবকাশ থাকবে। ইচ্ছা করলে রাখতে পারে, আর যদি ফেরত দেয় তবে সে সাথে এক সা খেজুরও দিবে।

৩৬৯০। মুহাম্মাদ ইবনু আমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ওলান ফুলান বকরী ক্রয় করবে, তিন দিন পর্যন্ত তার জন্য অবকাশ থাকবে। সে যদি উক্ত বকরী ফেরত দেয় তবে তার সাথে এক সা খাদ্য বস্তুও দিবে। এজন্য উৎকৃষ্ট গম দেওয়া জরুরী নয়।

৩৬৯১। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ওলানে দুধ ফূলান বকরী কিনবে তার জন্য অবকাশ থাকবে। ইচ্ছা করলে ক্রয় বহাল রাখবে আর এক সা খেজুর সহ ফেরৎ দিবে- এজন্য উত্তম গম দেওয়া জরুরী নয়।

৩৬৯২। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) উপরে উল্লিখিত হাদীসটি আবদুল ওয়াহব থেকে উপরোক্ত সূত্রে বর্ণনা করেন। অবশ্য আবদুল ওয়াহবের বর্ণনায় ‘শাতু’ এর স্থলে ‘আনামু’ আছে।

৩৬৯৩। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) হুমাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন। হুমাম (রহঃ) বলেন যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কয়েকটি হাদীস আমাদের নিকট বর্ণনা করেন এবং বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি ওলান ফূলান জন্তু বা বকরী খরিদ করে তবে দুধ দোহনের পরে তার অবকাশ থাকবে। হয় তা রেখে দিবে অথবা এক সা খুরমা সহ ফেরত দিবে।

৩৬৯৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াইয়া, আবূর রাবী আতাকী ও কুতায়বা (রহঃ) ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেনঃ যে ব্যাক্ত কোন খাদ্য বস্তু ক্রয় করবে সে হস্তগত করার পুর্বে বিক্রি করতে পারবে না। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি মনে করি সকল বস্তুর বেলায় এই একই হুকুম।

৩৬৯৫। ইবনু আবূ উমর, আহমাদ ইবনু আবদা, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আমর ইবনু দ্বীনার (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৩৬৯৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্ত খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করবে এবং হস্তগত হবের পূর্বে তা বিক্রয় করতে পারবে না”। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার ধারণা খাদ্র দ্রব্যে যে নির্দেশ, অন্যান্য বস্তুতে এই একই নির্দেশ।

৩৬৯৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুয়ায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি খাদ্য বস্তু ক্রয় করবে, সে তা পরিমাপ করার বিক্রি-করতে পারবে না। বর্ণনাকারী তাঊস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু আব্বাসের নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, এর কারণ কি? তিনি বললেন, তুমি কি লক্ষ্য কর নাই যে, লোকজন স্বর্ণ ও খাদ্য দ্রব বাকীতে ক্রয় করে? আবূ কুরায়ব “বাকী” শব্দটি উল্লেখ করেন নাই।

৩৬৯৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা কানাবী ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ খাদ্য দ্রব্য খরিদ করলে তা পুরোপুরি হস্তগত করার আগে যেন বিক্রি না করে।

৩৬৯৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করতাম। তখন তিনি এই মর্মে আদেশ দিয়ে আমাদের কাছে লোক পাঠাতেন যে, এ মাল বিক্রি করার পূর্বে যেন ক্রয়ের স্হান হতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়।

৩৭০০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি খাদ্যবস্তু ক্রয় করবে সে তা পুরোপুরি হস্তগত করার আগে বিক্রি করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা কাফিলা থেকে খাদ্য দ্রব্য খরিদ করতাম। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা স্হানান্তরিত করার পূর্বে বিক্রি করতে আমাদের নিষেধ করেছেন।

৩৭০১। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি খাদ্য বস্তু ক্রয় করবে সে ততক্ষন পর্যন্ত তা বিক্রি করতে পারবে না, যতক্ষন না হস্তগত করে ও নিজের অধিকার তাতে প্রতিষ্ঠিত করে।

৩৭০২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে সে তা হস্তগত করার আগে বিক্রি করতে পারবে না।

৩৭০৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর সময়ে অনুমান করে খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করে স্হানান্তর করার পূর্বে বিক্রি করলে লোকদের শাস্তি দেওয়া হত।

৩৭০৪। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দেখেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে লোকেরা অনুমান করে খাদ্য দ্রব্য খরিদ করত এবং নিজেদের থাকার জায়গায় না নিয়েই ক্রয় স্হলে তা বিক্রি করে দিত। এ কারণে তাদের শাস্তি দেওয়া হত। ইবনু শিহাব (রহঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তার পিতা অমুমান করে খাদ্য বস্তু ক্রয় করত। এরপর তা বাড়ী নিয়ে আসত।

৩৭০৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করবে সে তা পরিমাপ করার আগে বিক্রি করতে পারবে না। আবূ বকরের বর্ণনায় ‘মানিশতারা’ এর স্হলে ‘মানিবতায়া’ রয়েছে।

৩৭০৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা মারওয়ানকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি সূদী কেনাবেচা বৈধ করে দিয়েছেন? মারওয়ান বললেনঃ না, আমি তা করি নাই। আবূ হুরায়রা (রাঃ) পুনরায় জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি রেশন কার্ড বিক্রি বৈধ করে দিয়েছেন? অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য দ্রব্য পূর্ণ বুঝে বুঝে পাওয়ার আগে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। এরপর মারওয়ান এক বক্তূতায় তা করতে লোকদের নিষেধ করে দেন। রাবী সূলায়মান (রহঃ) বলেনঃ আমি দেখলাম যে, মানুষের কাছ থেকে সরকারী কর্মচারীগণ রেশন কার্ড ফিরিয়ে নিচ্ছে।

৩৭০৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু জুরায়জ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ তুমি যখন কোন খাদ্য বস্তু ক্রয় কর, তখন তা পুরোপুরি বুঝে পাওয়ার আগে বিক্রি করো না।

৩৭০৮। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন নির্দিষ্ট পরিমাণ খুরমার বিনিময়ে স্তুপাকৃত খুরমা বিক্রি করতে যার পরিমাপ জানা নাই।

৩৭০৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন অনুরুপ ভাবে বিক্রয় করতে। তবে বর্ণনাকারী রাওহা (রহঃ) হাদীসের শেষ অংশ উল্লেখ করেন নাই।

৩৭১০। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই অপরের উপর (ক্রয় বিক্রয় ভঙ্গ করার) ইখতিয়ার থাকবে, যতক্ষন তারা একে অপর থেকে আলাদা না হয়। তবে ইখতিয়ারের শর্তে ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকলে তা ভিন্ন কথা।

৩৭১১। যুহায়র ইবনু হারব, মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, আবূ বকর ইবনু আবূ-শায়বা ও ইবনু নুমায়র ইবনু উমর (রাঃ) থেকে, যুহায়র ইবনু হারব ও আলী ইবনু হুজর এবং আবূর রাবী ও আবূ কামিল (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে, ইবনুল মূসান্না ও ইবনু আবূ উমর এবং ইবনু রাফি (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উপরে উল্লিখিত নাফি থেকে মালিক এর বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৭১২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে। বর্ণিত। তিনি বলেন, দুই ব্যক্তিপরস্পর কেনাবেচা করলে যতক্ষন তারা একে অন্যের থেকে আলাদা না হয় বরং একত্রিত থাকে ততক্ষন তাদের প্রত্যেকেরই কেনাবেচা বাতিল করার ইখতিয়ার থাকবে। কিংবা যদি একজন অপরজনকে ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার ইখতিয়ার প্রদান করে এবং এরুপ শর্তে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হয় তবে এ ক্রয়-বিক্রয় বহাল থাকবে। আর যদি ক্রয়-বিক্রয়ের পর তারা একজন অন্যজন থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং উভয়ের কেউ-ই ক্রয়-বিক্রয়কে প্রত্যাখ্যান না করে থাকে তবে তাও বহাল থাকবে।

৩৭১৩। যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা যখন ক্রয় বিক্রয় সম্পূর্ন করে তখন তাদের প্রত্যেকেরই ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাখ্যান কবার ব্যাপারে অবকাশ থাকে যতক্ষন পর্যন্ত তারা একে অন্যের থেকে আলাদা না হয়ে যায়। অথবা যদি ক্রয় বিক্রয় খিয়ারের শর্তে হয়ে থাকে তখনও খিয়ার বহাল থাকবে।

৩৭১৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে কেনা-বেচা চুড়ান্ত হবে না ষতক্ষন না তারা পরস্পর আলাদা হয়ে না যায়। কিন্তু খিয়ারের শর্তে ক্রয়-বিক্রয় হলে; (পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেও খিয়ার বহাল থাকবে)।

৩৭১৫। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও আমর ইবনু আলী (রহঃ) হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জ্ঞেতা ও বিক্রেতার জল্যে পরষ্পর আলাদা হবার পূর্ব পর্যন্ত খিয়ার থাকবে। উভয়ে যদি সত্য কথা বলে এবং দোষ-ক্রটি বর্ণনা করে দেয় তবে তাদের কেনা-বেচায় বরকত হবে। আর যদি তারা কেনা-বেচার মধ্যে মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ-ক্রটি গোপন রাখে তবে তাতে বরকত থাকবে না।

৩৭১৬। আমর ইবনু আলী (রহঃ) হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন। মুসলিম ইবনু হাজ্জাজ (রহঃ) বলেন, হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) কাবার ভিতরে ভূমিষ্ট হন ও একশ বিশ বছর জীবিত থাকেন।

৩৭১৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জানাল যে, ক্রয়-বিক্রয়ে তাকে ধোকা দেওয়া হয়। তখন তিনি বললেনঃ তুমি যার সাথে কেনা-চেনা করবে তাকে বলে দিও, কোন প্রকার ধোকা থাকবে না। এরপর থেকে যখনই সে কিছু খরিদ করত, তখনই বলে দিত কোন প্রকার ধোকা থাকবে না।

৩৭১৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে আবদুল্লাহ ইবনু দ্বীনার (রহঃ) থেকে অনূরুপ বর্ণনা করেন। তবে এদের বর্ণিত হাদীসে এ কথাটি নেই যে, এরপর থেকে সে যখনই কিছু খরিদ করত তখনই বলে দিত কোন প্রকার ধোকা থাকবে না-।

৩৭১৯। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফল ব্যাবহারোপযোগী হওয়ার পূর্বে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। নিষেধ কয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই।

৩৭২০। ইবনু নুমায়র (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৩৭২১। আলী ইবনু হুজর সা’দী ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাকার আগে খেজুর বিক্রি করতে এবং সাদা হওয়ার আগে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মুক্ত হওয়ার পুর্বে ছড়া বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। আর তিনি নিষেধ করেছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই।

৩৭২২। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আহারযোগ্য হওয়ার আগে ও প্রকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পূর্বে তোমরা ফল খরিদ করো না। বর্ণনাকারী বলেন, খাওয়ার যোগ্য হওয়ার অর্থ লাল বর্ণও মেটে লাল বর্ণ ধারণ করা।

৩৭২৩। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) ইয়াহইয়া (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণনা করেন, তিনি যতক্ষন না তা আহারযোগ্য হয়। এর পরবর্তী অংশ উল্লেখ করেননি।

৩৭২৪। ইবনু রাফি (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবদুল ওয়াহব বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৭২৫। সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মালিক ও উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৩৭২৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আহারযোগ্য না হওয়ার আগে তোমরা ফল বিক্রি করো না।

৩৭২৭। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) সুফিয়ান (রহঃ)-এর সুত্রে এবং ইবনুল মূসান্না (রহঃ) শুবা (রহঃ) সুত্রে আবদুল্লাহ ইবনু দ্বীনার (রহঃ) থেকে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। অবশ্য শুবার বর্ণনায় এতটুকু অতিরিক্ত আছে যে, ইবনু উমর (রাঃ)-এর কাছে আহারযোগ্য হওয়ার অর্থ কি, জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়া।

৩৭২৮। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন অথবা তিনি বলেন, আমাদের নিষেধ করেছেন ফল পরিপক্কতা লাভের পূর্বে তা বিক্রি করতে।

৩৭২৯। আহমাদ ইবনু উসমান নাওফলী ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফল আহারযোগ্য হওয়ার আগে বিক্রি করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।

৩৭৩০। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূল বুখতারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আববাস (রাঃ)-এর নিকট গাছের খেজুর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাছের খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন যতক্ষন না তা খাওয়া হয় বা খাওয়ার উপযোগী হয় এবং ওযন করা যায়। রাবী বলেন, আমি ইবনু আববাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম কি ভাবে ওযন করবে? তখন তার পাশেই অবস্হানকারী জনৈক ব্যক্তি উত্তর দিল পরিমাপ করবে।

৩৭৩১। আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ফল খাওয়ার উপযোগী হওয়ার আগে তোমরা খরিদ করো না।

৩৭৩২। ইয়াইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু নুমায়র ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ভিন্ন সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, খাওয়ার উপযোগী হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং শুকনা খেজুরের বিনিময়ে রসযুক্ত তাজা খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন,”যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়া ধরনের কেনা-বেচার অনুমতি দান করেছেন। ইবনু নুমায়র তাঁর বর্ণনায় ‘আন তুবায়ু’ শব্দটি বৃদ্ধি করেছেন।

২৭৩৩। আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) আবূ হুবায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ফল খরিদ করো না খাওয়ার উপযোগী হওয়ার আগে এবং তাজা রসযুক্ত খেজুর খরিদ করো না খুরমার বিনিময়ে। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, সালিম তাঁর পিতা আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সম্পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৩৭৩৪। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ইবনুল মূসায়্যিব (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা ও মুহাকালা নিষেধ করেছেন। মুযাবানা হল, গাছের খেজুর খুরমার ক্রয়-বিক্রয় করা। আর মুহাকালা হল, ক্ষেতের শস্য অনুমান করে সংগৃহীত শস্যের বিনিময়ে বিক্রি করা এবং প্রস্তুত করা গমের পরিবর্তে জমি বর্গা দেওয়া। ইবনু শিহাব (রহঃ) সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ফল খাওয়ার উপযোগী হওয়ার আগে ক্রয় করো না। আর খুরমার বদলে তাজা খেজুর খরিদ করো না। সালিম (রহঃ) আব্দুউল্লাহ ইবনু সাবিত (রাঃ) সূত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, অতঃপর- আরায়া- শ্রেনীর ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে তাজা অথবা শুকনা খেজুরের ক্রয়-বিক্রয়ে অনুমতি দান করেছেন। এ ছাড়া অন্য কোন ফলের ব্যাপারে তিনি অনুমতি দেননি।

৩৭৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়ার মালিককে এ অনুমতি দিয়েছেন যে, সে আরায়াকৃত গাছের তাজা খেযুরে অনুমান করে শুকনা খেজুরে বিনিময়ে বিক্রি করতে পারবে।

৩৭৩৬। ইয়াহয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) যায়েদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়া পদ্ধতির অনুমতি প্রদান করেছেন। বাড়ীর মালিক আরায়া করা ফল অনুমান করে খুরমার বিনিময়ে রাখতে পারে তাজা রসযুক্ত খেজুর খাওয়ার জন্য।

৩৭৩৭। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) নাফি (রহঃ) থেকে একই সুত্রে উক্তরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৩৭৩৮। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর সুত্রে উক্তরুপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি কিছু অতিরিক্ত বলেছেন যে, খেজুর গাছের আরায়া হল নির্দিষ্ট সংখ্যক গাছ কোন কাওমকে দান করা। এরপর তারা ঐ গাছ গুলোর খেজুর অনুমান করে শুকনা খেজুরের বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়।

৩৭৩৯। মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনু মুহাজির (রহঃ) যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়া পদ্ধতির ক্রয়-বিক্রয়ে অনুমানে পরিমাণ নির্ধারন করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন। ইয়াহইয়া বলেন, আরায়া হল নিজে পরিবারবর্গকে তাজা রসাল খেজুর খাওয়াবার জন্য গাছের ঝূলন্ত খেজুর অনুমান দ্বারা পরিমাণ করে ওকনা খেজুরের বিনিময়ে খরিদ করে রাখা।

৩৭৪০। ইবনু নুমায়র (রহঃ) যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -ফুদ নকৃত খেজুর অনুমানে পরিমাপ করে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।

৩৭৪১। ইবনুল মূসান্না (রহঃ) উবায়দুল্লাহ সূত্রে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন এবং বলেন, তা অনুমান করে গ্রহণ করবে।

৩৭৪২। আবূর রাবী, আবূ কামিল ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) রাফি (রহঃ) সূত্রে উক্ত সনদে বর্ণনা করেন যে, আরায়া ধরনের ক্রয়-বিক্রয় অনুমানের ভিতিতে করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমতি প্রদান করেছেন।

৩৭৪৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা কানাবী (রহঃ) সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছে, এটাই সুদ, এটাই!মুযাবানা-। অবশ্য তিনি আরায়াকৃত দু-একটা খেজুর গাছের বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। বাড়ীর মালিক এর পরিমাণ অনুমান করে শুকনা খেজুরের রেখে দিবে এবং তাজা ফল খাবে।

৩৭৪৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) বাশীর ইবনু ইয়াসার (রহঃ)-এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কতিপয় সাহাবী থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়াকত খেজুর গাছের ফল অনুমান করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।

৩৭৪৫। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) বাশীর ইবনু ইয়াসার (রহঃ)-এর সূত্রে তার মহল্লার বসবাসকারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কয়েকজন সাহাবী থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন রাবী সাকাফী (রহঃ) সুলায়মান ইবনু বিলাল (রহঃ) বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন। অবশ্য ইসহাক ও ইবনু মূসান্না সুদ- এর স্হলে মুযাবানা- বলেছেন। আর ইবনু আবূ উমর সুদ- বলেছেন।

৩৭৪৬। আমরুন নাকিদ ও ইবনু নূমাহা (রহঃ) সাহল ইবনু আবূ হাসমার সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উপরোক্ত বর্ণনায় অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।।

৩৭৪৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও হাসান হুলওয়ানী (রহঃ) রাফি ইবনু খাদীজ ও সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা- অর্থাৎ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে গাছের কাচা খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন, কিন্তু আরায়ার মালিকগণ ব্যতীত। কেননা তাদেরকে তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন।

৩৭৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা ইবনু কানাব ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়া শ্রেনার ক্রয়-বিক্রয়ে ফলের পরিমাণ অনুমানের ভিত্তিতে পাঁচ ওসকের কম বা পাঁচ ওসকের মধ্যে করার জন্য অনুমতি প্রদান করেছেন। দাঊদের এ ব্যাপারে সন্দেহ যে, কথা এভাবে বলেছেন- পাচ বা পাচের কম। তখন মালিক বললেন, হাঁ।

৩৭৪৯। ইয়াহইয়া ইবনু তামীমী (রহঃ) ইবনু উমর (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা থেকে নিষেধ করেছেন। মুযাবানা হল বৃক্ষের তাজা খেজুর পরিমাপ করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা এবং গাছের তাজা আঙ্গুর পরিমাপ করে কিশমিশের বিনিময়ে বিক্রি করা।

৩৭৫০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবান করতে নিষেধ করেছেন। আর মুযাবানা হল বৃক্ষের তাজা খেজুর অনুমানে খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা ও কাচা আঙ্গুর পরিমাপ নির্ধারণ করে কিশমিশের বিনিময়ে বিক্রি করা এবং ক্ষেতের গম অনুমানে পরিমাপ করে সংগৃহীত গমের বিনিময়ে বিক্রি করা।

৩৭৫১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) উবায়দুল্লাহ (রহঃ) সুত্রে উক্ত সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৩৭৫২। ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন, হারুন ইবনু আবদুল্লাহ ও হুসায়ন ইবনু ঈসা (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা থেকে নিষেধ করেছেন। মুযাবানা হল গাছের খেজুর পরিমাপ করে খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা এবং কাঁচা আঙ্গূর পরিমাপ করে কিশমিশের বিনিময়ে বিক্রি করা। আর যে কোন ফল অনুমানের ভিত্তিতে বিক্রি করতেও তিনি নিষেধ করেছেন।

৩৭৫৩। আলী ইবনু হুজর ও যূহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা থেকে নিষেধ করেছেন। মুযাবানা হল বৃক্ষের মাথায় যে খেজুর আছে তার পরিমাণ অনুমান করে পরিমাণ খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা- এই শর্তের উপর যে, যদি বেশী হয় তবে তা আমার থাকবে। আর যদি কম হবতবে সে ক্ষতি আমার উপরই বর্তাবে।

৩৭৫৪। আবূর রাবী ও আবূ কামিল (রহঃ) আয়্যুব (রহঃ)-এর মূত্রে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করে ন।

৩৭৫৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা থেকে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ বাগানে যদি খেজুর গাছ থাকেতবে তার কাঁচা খেজুর পরিমাপ করে খুরমার বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করা। আর যদি আঙ্গূর থাকে তবে তা পরিমাপ করে কিশমিশের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করা। আর যদি তা ক্ষেতের ফসল হয় তবে তাকে কি পরিমাণ খাদ্য হবে তা অনুমান করে সেই পরিমাণ খাদ্য ক্রয় করা- এ সব থেকে নিষেধ করেছেন।

৩৭৫৬। আবূ তাহির, ইবনু রাফি ও সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে নাফি (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে হাদীসটি অন্যান্যের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৭৫৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি নর খেজুরের রেনূ প্রবিষ্ট করান খেহুর গাছ বিক্রি করে তবে ঐ গাছের খেজুর বিক্রেতার প্রাপ্য। অবশ্য ক্রেতা যদি খেজুর নেওয়ার শর্ত করে থাকে তবে তা তার হবে।

৩৭৫৮। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না, ইবনু নুমায়র ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন তাবিরকৃত খেজুর গাছ যদি মূলসহ” ক্রয় করা হয় এবং ক্রেতা যদি ফল পাওয়ার শর্তআরোপ না করে থাকে, তবে তার ফল তাবির কারীরই প্রাপ্য।

৩৭৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি খেজুর গাছে তাবির করার পর মূল গাছটি বিক্রি করে দিলে ঐ গাছের খেজুর তাবিরকারী পাবে, যদি ক্রেতা ফল পাওয়ার- শর্ত করে না থাকে।

৩৭৬০। আবূর রাবী, আবূ কামিল ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) নাফিরে সুত্রে এই হাদীস উপরোক্ত রুপ বর্ণনা করেন।

৩৭৬১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তাবিরকৃত খেজুর গাছ খরিদ করবে সে যদি উক্ত গাছের ফল পাওয়ার শর্ত না করে থাকে তবে ঐ গাছের ফল বিক্রেতার প্রাপ্য এবং কেউ যদি গোলাম খরিদ করে এবং উক্ত গোলামের মাল পাওয়ার শর্ত না করে থাকে তবে সে মাল বিক্রেতারই প্রাপ্য।

৩৭৬২। ইয়াইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে এই হাদীস অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৭৬৩। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে অনুরুপ বলতে শুনেছি।

৩৭৬৪। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালা, মুযাবানা, মুখাবারা ও খাওয়ার যোগ্য হওয়ার আগে ফল ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন। আর আরায়া ছাড়া দ্বীনারও দিরহামের বিনিময় ব্যতীত ফল বিক্রি করা যাবে না।

৩৭৬৫। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (বা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন অতঃপর তিনি উপরের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৭৬৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখাবারা, মুহাকানা, মুযাবানা এবং খাওয়ার উপযোগী হওয়ার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। আর দিরহাম ও দ্বীনারের বিনিময় ছাড়া ফল বিক্রি করা যাবে না, কিন্তু আরায়াঁর বিনিময়ে যাবে। আতা (রহঃ) বলেন, ক্রয়-বিক্রয়ের ঐ ধরনগুলো সম্পর্কে জাবির (রাঃ)আমাদেরকে ব্যাখ্যা দান করেছেন; মুখাবারা হল- এক ব্যক্তিকে শস্যহীন শুন্য খেত প্রদান করে। এরপর সে তাতে ফসল উৎপন্ন করে এবং উৎপন্ন ফসলে অংশ গ্রহণ করে। আর মুযাবানা হল- গাছের তাজা খেজুর অনুমানে পরিমাপ করে খূরমার বিনিময়ে বিক্রি করা। আর মুহাকালা ফসলের মধ্যে অনুরুপ পদ্ধতিতে হয়ে থাকে অর্থাৎ- ক্ষেতের বিদ্যমান শস্যকে অনুমানে পরিমাপ করে সংগৃহীত শস্যের বিনিময়ে বিক্রি করা।

৩৭৬৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালফ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালা, মুযাবানা, মুখাবারা এবং খেজুর লাল বা মেটে লাল অথবা খাদ্যোপযোগী হওয়ার পূর্বে খরিদ করতে নিষেধ করেছেন। মুহাকালা হল-ক্ষেতের শস্য নির্ধারিত পরিমাণ খাদ্যের বিনিময়ে বিক্রি করা। মুযাবান হচ্ছে- গাছের খেজুর কয়েক ওসক খুরমার বিনিময়ে বিক্রি করা। মুখাবার! বলা হয়- এক তৃতীয়াংশ, এক চতূর্থাংশ বা এইরুপ নির্দিষ্ট কোন অংশকে। যায়িদ (রহঃ) বলেন, আমি আতা ইবনু আবূ রাবাহকে জিজ্ঞাসা করলাম- আপনি কি জাবির ইবনু আবদুল্লাহকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এইরুপ বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হাঁ।

৩৭৬৮। আবদুল্লাহ ইবনু হাশিম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা, মুহাকালা, মুখাবারা এবং ফল পাকার আগে বিক্রি করতে নিষেধ-করেছেন। রাবী বলেন, আমি সাঈদকে জিজ্ঞাসা করলাম পাকার অর্থ কি? তিনি বললেন, লাল বর্ণ বা মেটে লাল বর্ণ ধারণ করা এবং খাওয়ার উপযোগী হওয়া।

৩৭৬৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর কাওয়ারীরী ও মুহাম্মদ ইবনু উবায়দ গুবারী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালা, মুযাবানা, মুআওমা ও মুখাবারা থেকে নিষেধ করেছেন। উভয়ের একজনে বলেন, কয়েক বছরের জন্য বিক্রি করার নাম মুআওমা। তিনি নিষেধ করেছেন কিছু অংশ বাদ দেওয়া হতে আর অনুমতি দিয়েছেন আরায়া করতে।”

৩৭৭০। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) জাবির (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি এ কথাটি উল্লেখ করেননি যে, কয়েক বছরের জন্য বিক্রি করার নাম মুআওমা।

৩৭৭১। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি বর্ণা দিতে কয়েক বছরের জন্য বিক্রি করতে এবং ফল পরিপক্কতা লাভ করার আগে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।

৩৭৭২। আবূ কামিল জাহদারী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি বর্গা দিতে নিষেধ করেছেন।

৩৭৭৩। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “বলেছেনঃ যার কাছে জমি আছে সে যেন তা চাষাবাদ করে। যদি সে নিজে তা না করে তবে যেন তার কোন ভাইকে চাষাবাদ করতে দিয়ে দেয়।

৩৭৭৪। হাকাম ইবনু মূসা (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কতিপ সাহাবীর প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যার নিকিট প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি আছে সে যেন তা চাষাবাদ করে অথবা তার কোন ভাইকে (চাষাবাদ করতে) দেয়। আর যদি সে তা অস্বীকার করে তাহলে তার জমি সে আটকিয়ে রাখুক।

৩৭৭৫। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শ্রমের উপরে বা ফসলের অংশ দিয়ে জমি বর্গা নিতে নিষেধ করেছেন।

৩৭৭৬। ইবনু নূমায়র (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার জমি আছে সে যেন তাতে চাষাবাদ করে। তা যদি সে না পারে অথবা অক্ষম হয়, তাহলে সে যেন তার অপর কোন মুসলিম ভাইকে (চাষাবাদ করতে) দেয়। কিন্তু বর্গা দিবে না।

৩৭৭৭। শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) হাম্মাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, সুলায়মান ইবনু মূসা (রহঃ) আতা-কে জিজ্ঞাসা করল আপনার নিকট জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কি এ কথা বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার জমি আছে সে যেন তা চাষবাদ করে অথবা তার অপর ভাইকে চাষ করার জন্য প্রদান করে। উহা বর্গায় দিবে না। তিনি বললেন- হাঁ।

৩৭৭৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখাবারা থেকে নিষেধ করেছেন।

৩৭৭৯। হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার নিকট অতিরিক্ত জমি আছে সে যেন তা চাষাবাদ করে অথবা আবাদ করার জন্য তার অপর ভাইকে দেয়। তোমরা উহা বিক্রি করো না। (রাবী বলেন) আমি সাঈদকে জিজ্ঞাসা করলাম, বিক্রি করো না এ কথা কি বর্ণা দেওয়া? তিনি বললেন হাঁ।

৩৭৮০। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সময়ে জমি বর্গায় নিতাম এবং প্রাপ্য হিসেবে শস্য মাড়াই করার পর ছড়ায় যা কিছু অবশিষ্ট থাকত তা এবং এ ধরনের নগণ্য কিছু ভাগ পেতাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যার জমি আছে সে উহা আবাদ করুক অথবা তার অপর ভাইকে আবাদ করাক অন্যথায় সে নিজেই ধরে রাখুক।

৩৭৮১। আবূ তাহির (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আমলে আমরা খালের পার্শবর্তী জমিতে তৃতীয়াংশ ও চতূর্থাংশ ফসলের বিনিময়ে জমি বর্গা নিতাম। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথায় দাড়িয়ে বললেন, জমি যার সেই তাতে চাষ করবে। আর যদি সে তা না করে তবে যেন তার ভাইকে আবাদ করতে দেয়। যদি তার ভাইকে তা না দেয়- তবে সে যেন তা আটকিয়ে রাখে।

৩৭৮২। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি- যার জমি আছে সে যেন তা দান করে অথবা শুনেছি যার জমি আছে সে যেন তা ধার দেয়।

৩৭৮৩। হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) আ’মাশ (রহঃ)-এর সূত্রে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। অবশ্য তিনি বলেছেন যে, সে যেন তা চাষ করে অথবা অন্য লোককে চাষ করতে দেয়।

৩৭৮৪। হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জমি বর্গা দিতে নিষেধ করেছেন। বুকায়র (রহঃ) নাফি”র সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের জমি বর্ণায় দিতাম। এরপর রাফি ইবনু খাদীজের হাদীস শুনে তা পরিত্যাগ করি।

৩৭৮৫। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালি জমি দুই বা তিন বছরের জন্য বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।

৩৭৮৬। সাঈদ ইবনু মানসুর, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমরুন নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েক বছরের জন্য জমি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। ইবনু আবূ শায়বার বর্ণনায় আছে- কয়েক বছরের জন্য ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।

৩৭৮৭। হাসান হুলওয়ানী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার জমি আছে সে যেন তা চাষ করে অথবা তার অপর ভাইকে তা আবাদ করতে দেয়। এতে যদি সে অসম্মত হয়- তা হলে তার জমি যেন সে আটকিয়ে রাখে।

৩৭৮৮। হাসান হুলওয়ানী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মূযাবানা ও হুকুল থেকে নিষেধ করতে শুনেছেন। তখন জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, মুযাবানা হল কাঁচা খেজুরের সাথে খুরমা বিনিময় করা। আর হুকুল হল জমি বর্গা দেওয়া।

৩৭৮৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালা ও মুযাবানা থেকে নিষেদ করেছেন।

৩৭৯০। আবূ তাহির (রহঃ) আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবান ও মূ-হাকালা থেকে নিষেধ করেছেন। মুযাবানা হল খেজুর গাছের মাথার ঝূলন্ত ফল খরিদ করা, আর মুহাকালা হল জমি ইজারা দেওয়া।

৩৭৯১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আউর রাবী আতাকী (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মুখাবারা করায় কোন দোষ মনে করতাম না। এভাবে যখন প্রথম বছর গত হল, তখন রাফি (রাঃ) বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজ থেকে নিষেধ করেছেন।

৩৭৯২। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আলী ইবনু হুজর, ইবরাহীম ইবনু দ্বীনার ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আমর ইবনু দ্বীনার (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেন। অবশ্য ইবনু উয়ায়না (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে অতিরিক্ত আছে যে- এরপর এ কারণে আমরা তা পরিত্যাগ করি।

৩৭৯৩। আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাফি (রহঃ) আমাদেরকে আমাদের ভূমি থেকে লাভবান হতে বাধা দান করেছেন।

৩৭৯৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) তাঁর জমি ইজারা দিতেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যুগে এবং আবূ বকর,উমর, উসমান ও মুআবিয়া (রাঃ)-এর খিলাফত কালের প্রথম যুগ পর্যন্ত। এরপর মুআবিয়া (রাঃ)-এর খিলাফতের শেষ দিকে তাঁর কাছে এ সংবাদ গেল যে, রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) এ সংক্রান্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিষেধ সূচক হাদীস বর্ণনা করছেন। ইবনু উমর (রাঃ) তাঁর নিকট উপস্হিত হলেন। আমিও তার সাথে ছিলাম। এরপর তিনি তার নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি ইজারা দিতে নিষেধ করতেন। এরপরে ইবনু উমর (রাঃ) তা ত্যাগ করেন। এরপর হতে যখন তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হত, তিনি বলতেন- ইবনু খাদীজ (রাঃ)বলেছেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ থেকে নিষেধ করেছেন।

৩৭৯৫। আবূর রাবী, আবূ কামিল ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) আয়্যুব (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেন। ইবনু আলিয়্যার বর্ণনায় আয়্যুব (রহঃ) বলেছেন যে, এরপর ইবনু উমর (রাঃ) তা পরিত্যাগ করেন এবং আর কখনও জমি ইজারা দেননি।

৩৭৯৬। ইবনু নুমায়র (রহঃ) নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, একদা আমি ইবনু উমরের সাথে রাফি ইবনু খাদীজের নিকট গেলাম। বালাত নামক স্হানে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হল। তিনি তাকে জানালেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি ইজারা দিতে নিষেধ করেছেন।

৩৭৯৭। ইবনু আবূ খালফ ও হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি একবার রাফির নিকট আসেন। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এই হাদীস উল্লেখ করেন।

৩৭৯৮। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) জমি বর্ণা দিতেন। নাফি বলেন এরপর রাফি বর্ণিত একটি হাদীস তাকে জানান হলো। রাবী বলেন, তিনি আমাকে সাথে নিয়ে তার নিকট গেলেন। তিনি জনৈক চাচার সুত্রে হাদীস বর্ণনা করলেন। তাতে উল্লেখ আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি বর্ণা দিতে নিষেধ করেছেন। রাবী বলেন, এরপর থেকে ইবনু উমর (রাঃ)-এ কাজ ত্যাগ করেন এবং আর কখনও জমি বর্গা দেননি।

৩৭৯৯। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আওন থেকে উক্ত হাদীস বর্ণিত। রাবী বলেন, এরপর তিনি তার চাচার সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বলে শোনান।

৩৮০০। আবদুল মালিক ইবনু শুআয়ব ইবনু লায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নিজের জমি বর্গা দিতেন। পরে তার কাছে এ সংবাদ পৌছায় যে, রাফি- ইবনু খাদীজ (রাঃ) আনসারী জমি বর্গা দিতে নিষেধ করে থাকেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসা করেন, হে ইবনু খাদীজ! জমি বর্গার ব্যাপারে আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কি হাদীস বর্ণনা করেছেন? রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) আবদুল্লাহকে বললেন, আমি আমার দু-জন চাচার নিকট শুনেছি- যারা বদরের ষুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তারা পরিবারবর্গের নিকট বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি বর্গা দিতে নিষেধ করেছেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সময়ে আমি ভাল করেই জানতাম যে, জমি বর্গা দেওয়া যায়। এরপর আবদুল্লাহ (রহঃ) ভীত হলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হয়ত এমন কিছু বলেছেন, যা তিনি জানতে পারেন নি। সুতরাং জমি বর্গা দেওয়া ত্যাগ করেন।

৩৮০১। আলী ইবনু হুজর সা’দী ও ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) রাফি খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে জমির মুহাকালা করতাম এবং এক তৃতীয়াংশ, এক চতুর্থাংশ বা নিদিষ্ট পরিমাণ খাদ্যের বিনিময়ে ইজারা দিতাম। এরপর একদা আমার এক চাচা আমাদের নিকট এসে বললেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এমন একটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছেন যা আমাদের জন্য লাভজনক ছিল। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুমের আনুগত্য করা আমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর। তিনি আমাদেরকে জমি মুহাকালা করতে এবং তৃতীয়াংশ, চতুর্থাংশ বা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যের বিনিময়ে ইজারা দিতে নিষেধ করেছেন। আর জমির মালিককে নিজে চাষ করতে বা অপরের দ্বারা চাষ করাতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং ইজারা ইত্যাদি দিতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

৩৮০২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,আমরাজমির মুহাকালা করতাম এবং এক তৃয়াংশও এক চতুর্থাশের উপর ইজারা দিতাম। এরপর ইবনু আলিয়্যার হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৮০৩। ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব, আমর ইবনু আলী ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইয়ালা ইবনু হাকীম (রাঃ)-এর সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৮০৪। আবূ তাহির (রহঃ) রাফির সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিনা করেন। কিন্তু তাতে তার জনৈক চাচার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

৩৮০৫। ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যুহায়র ইবনু রাফি (রহঃ) তাঁর চাচা ছিল। রাফি বলেন, যুহায়র একদা আমার নিকট এসে বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এমন একটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছেন যা আমাদের জন্য ছিল লাভ জনক। আমি বললাম, তা কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তাই তো সঠিক। তিনি বললেন, আমার নিকট তিনি জিজ্ঞাসা করেছেন, কিভাবে তোমরা মুহাকালা কর? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা খালের পার্শস্হ জমির ফসলের শর্তে কিংবা খুরমা বা যবের কয়েক ওসক প্রদানের শর্তে জমি বর্গা দিয়ে থাকি। তিনি বললেন, আর এরুপ করো না। তোমরা নিজেরা চাষ কর অথবা অপরকে দিয়ে চাষ করাও, তা না হলে ফেলে রাখ।

৩৮০৬। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) রাফি (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উপরোক্ত হাদীস বর্ণিত। কিন্তু এতে তার চাচা যুহায়রের নাম উল্লেখ নেই।

৩৮০৭। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) হানযালা ইবনু কায়স (রহঃ)-এর সুত্রে বর্ণিত যে, তিনি রাফি ইবনু খাদীজের নিকট জমি বর্ণা দেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমি বর্গা দিতে নিষেধ করেছেন। রাবী বলেন, তখন আমি বললাম:স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিনিময়েও কি নিষেধ? তিনি বললেন, স্বর্ণ ও বৌপ্যের বিনিময়ে হলে কোন দোষ নাই।

৩৮০৮। ইসহাক (রহঃ) হানযালা ইবইন কায়স আনসারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাফি ইবনু খাদীজকে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিনিময়ে জমি বর্গা দেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেন এতে কোন দোষ নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আমলে লোকেরা পানির ধারার পার্শবর্তী অংশ, খালের অগ্রভাগের সিক্ত অংশ ও ক্ষেতের অন্যান্য সুবিধার শর্তে জমি বর্গা দিত। এতে কখনও এ অংশ বিনষ্ট হতো ও অপর অংশ ভাল থাকত। আবার কখনও এ অংশ ভাল থাকত আর অপর অংশ বিনষ্ট হত। আর এ ধরনের বর্গায় বঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই তে না। এ কারণে তিনি এ থেকে নিষেধ করেন। আর যদি নির্দিষ্ট পরিমাণের বিনিময়ে বর্গা দেওয়া হয, তাহলে তাতে কোন দোষ নেই।

৩৮০৯। আমরুন নাকিদ (রহঃ) রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আনসারদের মধ্যে সবচেয়ে অধিক পরিমাণ জমির মালিক ছিলাম। এই শর্তে আমরা জমির ইজারা দিতাম যে, এই অংশ আমাদের আর ঐ অংশ তাদের। এরপর অনেক সময় এই অংশে ফসল উৎপন্ন তে আর ঐ অংশে কিছূ হত না। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজ থেকে আমাদেরকে নিষেধ করেন। আর রৌপ্যের বিনিময়ে ইজারা দিতে তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেন নি।

৩৮১০। আবূর রাবী ও ইবনুল মূসান্না (রহঃ) – ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর সুত্রে উক্তরুপ বর্ণনা করেন।

৩৮১১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু সায়িব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু মাকালের নিকট মুযারাআ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বললেন, নাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) আমাকে জানিয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযারাআ থেকে নিষেধ করেছেন। ইবনু আবূ শায়বার বর্ণনায় কথাটি এরুপ আছে যে, তিনি তা থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি আরো বলেছেন- আমি ইবনু মা’কালের নিকট জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি আবদুল্লাহব নাম উল্লেখ করেন নাই।

৩৮১২। ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু সায়ব (রহঃ)-এর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবদুল্লাহ ইবনু মাকালের নিকট উপস্হিত হই এবং মুযারা আ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি জানান, সাবিত (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযারাআ করতে নিষেধ করেছেন এবং ইজারা দিতে আদেশ করেছেন আর বলেছেন- এতে কোন দোষ নেই।

৩৮১৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আমর (রাঃ)-এর সুত্রে বর্ণিত যে, মুজাহিদ তাঊসকে বললেনঃ আপনি আমাদের সাথে ইবনু রাফি- ইবনু খাদীজের নিকট চলুন এবং তদীয় পিতার সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসটি শ্রবণ করুন। রাবী আমর (রাঃ) বলেন, তখন রাবী তাঊস (রহঃ) মুজাহিদকে তিরস্কার করেন বললেন, আল্লাহর কসম! আমি যদি জানতাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজ থেকে নিষেধ করেছেন তবে আমি তা করতাম না। কিন্তু তাদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী অর্থাৎ ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ- কোন ব্যক্তির পক্ষে তার কোন জমি অপর ভাইকে মুফতে চাষাবাদ করতে দেওয়া তার উপর নিদিষ্ট পরিমাণ ফসলের চুক্তিতে দেওয়া অপেক্ষা উত্তম।

৩৮১৪। ইবনু আবূ উমর (রহঃ) তাঊস (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি মুখাবারা করতেন। আমর বলেন, আমি তাঁকে বললাম, হে আবূ আব্দুর রহমান! আপনি যদি এই মুখাবারা করা ছেড়ে দিতেন (তবে তা উত্তম হত)। কেননা লোকেরা ধারণা করে থাকে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখাবারা করতে বারণ করেছেন। বললেন, হে আমর! তাদের মধ্যে যিনি শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী অর্থাৎ ইবনু আব্বাস, তিনি আমাকে বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে নিষেধ করেননি। তিনি শুধু বলেছেন, তোমাদের কোন ভাইকে মুফতে জমি চাষাবাদ করতে দেওয়া নিদিষ্টি পরিমাণ ফসলের চুক্তিতে দেওয়া অপেক্ষা উত্তম।

৩৮১৫। ইবনু আবূ উমর, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৩৮১৬। আবদ ইবনু হুমায়দ ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রাঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কারর জমি তার অপর ভাইকে মুফতে চাষাবাদ করতে দেওয়া নির্দিষ্ট পরিমাণ ফসলের চুক্তিতে দেওয়া অপেক্ষা উত্তম। রাবী বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ একেই বলা হয় “হাকল” আর আনসারদের পরিভাষায় বলা হয় “মুহাকালা”।

৩৮১৭। আবদুল্লাহ ইবনু আব্দুর রহমান দারিমী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যার জমি আছে সে যদি তা অপর ভাইকে মুফতে চাষাবাদ করতে দেয় তবে তার জন্য তা উত্তম।

 

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: ক্রয়বিক্রয়
ক্রয়বিক্রয়
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/buysell.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/11/buysell.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy