তাহারাত(পবিত্রতা)

৪২৭ ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ)&hصلى الله عليه وسلمllip;&hصلى الله عليه وسلمllip; আবূ মালিক আশ আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, পবিত্রতা হল ঈমানের অংশ। “আলহামদুলিল্লাহ” (শব্দটি) পাল্লাকে ভরে দেয়। “সূবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ (পাল্লাকে) ভরে দেয়, কিম্বা [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন] আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবতীঃ স্থান ভরে দেয়। সালাত (নামায/নামাজ) হল আলো, সাদাকা হল প্রমাণিকা, ধৈর্য হল জ্যোতি। কুরআন তোমার পক্ষে কিংবা বিপক্ষে দলীল। প্রত্যেক মানুষ প্রত্যহ আপন সত্তাকে বিক্রি করে, তখন কেউ সত্তার উদ্ধারকারী হয় আর কেউ হয় ধবংস কারী। সাঈদ ইবনু মানসূর, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ কামিল জাহদারী (রহঃ)&hصلى الله عليه وسلمllip;&hصلى الله عليه وسلمllip;মুস আব ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) অসুস্হ ইবনু আমিরকে দেখতে গিয়েছিলেন। তখন ইবনু আমির তাকে বললেন, হে ইবনু উমর! আপনি কি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করেন না? ইবনু উমর (রাঃ)বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তাহারাত ব্যতিরেকে সালাত (নামায/নামাজ) কবুল হয় না। খিয়ানতের সম্পদ থেকে সাদাকা কবুল হয় না। আর তুমিতো ছিলে বসরার শাসনকর্তা। মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ)&hصلى الله عليه وسلمllip;&hصلى الله عليه وسلمllip;শু’বা (রহঃ) থেকে, অন্য সুত্রে আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইসরাঈল (রহঃ) থেকে, সকলে সিমাক ইবনু হারব (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৪২৮ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুত্রে কয়েকটি হাদীস বর্ননা করেছেন। (তন্মধ্যে একটিতে তিনি বলেন) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারোর উযূ (ওজু/অজু/অযু) ভেঙ্গে গেলে তার সালাত (নামায/নামাজ) কবুল হয় না উযূ (ওজু/অজু/অযু) করার পূর্ব পর্যন্ত।

৪২৯ আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু সারহ ও হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া তূজীবী (রহঃ) উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি চাইলেন। এরপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে আরম্ভ করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন), তিনি [উসমান (রাঃ)] তিনবার তাঁর হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুইলেন এরপর কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। এরপর তিনবার তার মুখমন্ডল ধুইলেন। এবং ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুইলেন। অতঃপর বাম হাত অনুরুপভাবে ধুইলেন। অতঃপর তিনি মাথা মাসেহ করলেন। এরপর তার ডান পা টাখনু পর্যন্ত ধুইলেন এরপর বাম পা অনুরুপভাবে ধুইলেন। এরপর তিনি বললেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমার এ উযূ (ওজু/অজু/অযু) করার ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে দেখেছি। এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু)র শেষে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি আমার এ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং দাঁড়িয়ে এরুপে দু-রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে যে, সে সময়ে মনে মনে অন্য কোন কিছু কল্পনা করেনি, সে ব্যাক্তির পুর্বের সকল শোনাহ মাফ করে দেয়া হবে। ইবনু শিহাব বলেন, আমাদের আলিমগণ বলতেন যে, সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য কারোর এ নিয়মের উযূ (ওজু/অজু/অযু)ই হল পরিপূর্ণ উযূ (ওজু/অজু/অযু)।

৪৩০ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) হুমরান মাওলা উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি . উসমান (রাঃ)-কে দেখেছেন যে, . উসমান (রাঃ) পানির পাত্র আনতে নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি দু-কব্জির উপর তিনবার পানি ঢাললেন এবং উভয়টি ধুয়ে নিলেন। তারপর তাঁর ডান হাত পাত্রের ভিতর প্রবেশ করিয়ে তিনি কুলি করলেন এবং নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তিনি তাঁর মুখমন্ডল ধৌত করলেন- তিনবার, দুঁ হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন তিনবার। তারপর মাথা মাসেহ করলেন। এরপর উভয় পা ধুইলেন তিনবার। এরপর তিনি – বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমার এ উযূ (ওজু/অজু/অযু) করার ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং এর পরে এরুপে দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে যাতে সে মনে মনে ভিন্ন কোন কল্পনা করেনি তার পূর্ববতী সকল শোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

৪৩১ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, উসমান ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) হুমরান মাওলা উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি মসজিদের চত্বরে ছিলেন এমন সময়ে আসরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য মুয়াজ্জ্বীন আসলেন। . উসমান (রাঃ) উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি আনতে নির্দেশ দিলেন, অতঃপর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি বলঁলেন, আল্লাহর কসম আমি তোমাদেরকে একটি হাদীস শোনাব-যদি আল্লাহর কিতাবে একটি আয়াত না থাকত তাহলে কখনোই আমি তোমাদেরকে হাদীস শোনাতাম না। আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, যেই মুসলিম ব্যাক্তি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু)কে সুন্দরভাবে আদায় করবে, অতঃপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে সেই ব্যাক্তির এই সালাত (নামায/নামাজ) ও তার পূর্ববর্তী সালাত (নামায/নামাজ)-এর মধ্যবতী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

৪৩২ আবূ কুরায়ব, আবূ উসামা থেকে, অন্য সুত্রে যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ কুরায়ব ওয়াকী (রহঃ) থেকে অন্য সুত্রে ইবনু আবূ উমার সুফিয়ান থেকে আবার সকলে হিশামের মাধ্যমে উপরোক্ত সুত্রেও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে আবূ উসামার সুত্রে অতিরিক্ত বলা হয়েছে যে, “অতঃপর সে তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)কে সুন্দর রুপে করে তারপর ফরয সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে”।

৪৩৩ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) হুমরান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, . উসমান (রাঃ)উযূ (ওজু/অজু/অযু)র কাজ সেরে বললেন যে, আল্লাহর কসম আমি তোমাদেরকে একটি হাদীস শোনাব। আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহর কিতাবের মধ্যে একটি আয়াত না থাকত তাহলে আমি তোমাদেরকে কখনোই হাদীসটি শোনাতাম না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কোন ব্যাক্তি যখন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু)কে উত্তমরুপে আদায় করে তারপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তখন তার সালাত (নামায/নামাজ) ও পূর্ববর্তী সালাত (নামায/নামাজ)-এর মধ্যবতী সকল শোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। উরওয়া (রহঃ) বলেন, আয়াতটি হলঃ “আমি যে সকল স্পষ্ট নিদর্শন ও পথনির্দেশ অবতীর্ণ করেছি মানুষের জন্য কিতাবে, তা সূস্পষ্টভাবে বলে দেয়ার পরেও যারা তা গোপন রাখে, আল্লাহ তাদেরকে লানত দেন এবং অভিশাপকারীরাও তাদেরকে অভিশাপ দেয়”। (সূরা ২: ১৫৯)

৪৩৪ আবদ ইবনু হুমায়দ ও হাজ্জাজ ইবনু শাইর (রহঃ) আমর ইবনু সাঈদ ইবনুল আতা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উসমান (রাঃ)-এর নিকট উপস্হিত ছিলাম। এমন সময়ে তিনি পানি আনার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, কোন মুসলিম ব্যাক্তির যখন কোন ফরয সালাত (নামায/নামাজ)-এর ওয়াক্ত হয় আর সে সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু) কে উত্তমরুপে আদায় করে, সালাত (নামায/নামাজ)-এর বিনয় ও রুকুকে উত্তমরূপে আদায় করে তা হলে যতক্ষন না সে কোন কবীরা গোনাহে লিপ্ত হবে, তার এই সালাত (নামায/নামাজ) তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহের জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আর এ অবস্হা সর্বযুগেই বিদ্যমান।

৪৩৫ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আহমদ ইবনু আবদা আযযাব্বী (রহুমরান মাওলা উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-এর নিকট উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি আনলাম। অতঃপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন, তারপর তিনি বললেন, লোকজন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনেক হাদীস বর্ণনা করে থাকে। আমি ওসব – জানিনা তবে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখেছি তিনি আমার এ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেছেন। তারপর বলেছেন, যে ব্যাক্তি এভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে তার পূর্ববর্তী সকল শোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর তার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় ও মসজিদের দিকে গমনের সাওয়াব থাকবে অতিরিক্ত। ইবনু আবদা-এর সনদে কথাটি বাদ দিয়ে কেবল বলা হয়েছে।

৪৩৬ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উসমান (রাঃ)উযূ (ওজু/অজু/অযু)র আসনে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে বসে বললেন যে, আমি কি তোমাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা দেখাব? তারপর তিনি তিন তিন বার ধুয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। কুতায়বা (রহঃ) আনাস (রাঃ)সুত্রে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, আনাস (রাঃ) বলেছেন, তখন উসমান (রাঃ)-এর পাশে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীদের কয়েকজন উপস্হিত ছিলেন।

৪৩৭ আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রাঃ) হুমরান ইবনু আবান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি . উসমান (রাঃ)-কে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি দিতাম। আর তিনি প্রত্যহ গোসল করতেন। . উসমান (রাঃ)বলেছেন, আমাদের এ সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর, মিস’আর বলেন, আমার মনে হয় সালাত (নামায/নামাজ)টি ছিল আসরের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস বর্ননা করতে মনস্থ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি ঠিক করতে পারছিলাম না যে তোমাদেরকে একটি হাদীস শোনাব না নীরব থাকবো। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! যদি তা কল্যাণকর হয় তাহলে আমাদেরকে বলুন, আর অন্য কিছু হলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভাল জানেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যে, কোন মুসলমান যখন পবিত্রতা অর্জন করে এবং আল্লাহ তার উপর যে পবিত্রতা অপরিহার্য করেছেন তা পূর্ণাঙ্গরুপে অর্জন করে এবং তারপর এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তাহলে এ সকল সালাত (নামায/নামাজ) তাদের মধ্যবর্তী সময়ের সকল শোনাহের কাফফারা হয়ে যায়।

৪৩৮ উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয তাঁর পিতার সুত্রে, অন্য সনদে মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উসমান (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ যেভাবে আদেশ করেছেন সেভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু)কে পূর্ণভাবে করে তাঁর পাঁচ ওয়াক্তের ফরয সালাত (নামায/নামাজ) তাদের মধ্যবতী সময়ে (শোনাহের) কাফফারা হয়ে যায়। ইবনু মুআযের হাদীসে এভাবেই বলা হয়েছে। কিন্তু গুনদুর বর্ণিত হাদীসে বিশরের নেতৃত্বের কথা কিম্বা ফরয সালাত (নামায/নামাজ)-এর কথা উল্লেখ নেই।

৪৩৯ হারুন ইবনু সাঈদ আল আইলী (রহঃ) হুমরান মাওলা উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উসমান (রাঃ) খুব উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখেছি, তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেছেন এবং উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেছেন তারপর বলেছেন, যে ব্যাক্তি এ নিয়মে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এবং তারপর কেবল সালাত (নামায/নামাজ)-এর উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে বেরিয়ে যায়, তার বিগত সকল শোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

৪৪০ আবূ তাহির ও ইউনুস ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এবং পরিপূর্নভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে, অতঃপর ফরয সালাত (নামায/নামাজ)-এর উদ্দেশ্যে হেঁটে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, কিম্বা তিনি বলেন, জামাআতের সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, কিম্বা তিনি বলেন, মসজিদে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, আল্লাহ সেই ব্যাক্তির গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দিবেন।

৪৪১ ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পাঁচ সালাত (নামায/নামাজ) এবং এক জুম্মা থেকে আরেক জুম্মা পর্যন্ত এসব তাদের মধ্যবতী সময়ের জন্য কাফফারা হয়ে যায় যতক্ষন পর্যন্ত কবীরা গুনাহে লিপ্ত না হয়।

৪৪২ নাসর ইবনু আলী আল জাহযামী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পাঁচ সালাত (নামায/নামাজ) এবং এক জুমুআ থেকে আরেক জুমুআ পর্যন্ত এসব তাদের মধ্যবতী সময়ের জন্য কাফফারা স্বরুপ।

৪৪৩ আবূ তাহির ও হারুন ইবনু সাঈদ আল আইলী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ পাচ সালাত (নামায/নামাজ), এক জুমূআ থেকে আরেক জুমুআ পর্যন্ত এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পর্যন্ত এইসব তাদের মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা হয়ে যাবে, যদি সে কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।

৪৪৪ মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ইবনু মায়মুন (রহঃ) উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের উট চরানোর দায়িত্ব নিজেদের উপরে ছিল। আমার পেলা এলে আমি উট চরিয়ে বিকেলে ফিরিয়ে নিয়ে এলাম। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে পেলাম, তিনি দাঁড়িয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তখন আমি তাঁর এ কথা শুনতে পেলাম, “যে মুসলমান সুন্দর রুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে তারপর দাঁড়িয়ে দেহ ও মনকে পুরোপুরি তার প্রতি নিবদ্ধ রেখে দুই রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। ” উকবা বলেন, কথাটি শুনেআমি বলে উঠলাম ওহ, কথাটি কত উত্তম! তখন আমার সামনের একজন বলতে লাগলেন, আগের কথাটি আরো উত্তম। আমি সে দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিনি উমর (রাঃ)। তিনি আমাকে বললেন তোমাকে দেখেছি, এইমাত্র এসেছা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আগে বলেছেন, তোমাদের যে ব্যাক্তি কামিল বা পূর্ণ রুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এই দু’আ পাঠ করবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নাই, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসুল” তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতের প্রবেশ করতে পারবে।

৪৪৫ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) উকবা ইবনু আমীর জুহানী (রাঃ) রাসুল থেকে উপরের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এই বর্ণনায় বলেছেনঃ “যে ব্যাক্তি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে পাঠ করবেঃ “আমিসাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি এক, তার কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসুল”।

৪৪৬ মুহাম্মদ ইবনুুস সাববাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ ইবনু আসিম আনসারী (রাঃ) যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহচর্য লাভ করেছিলেন। রাবী বলেন, তাঁকে বলা হল যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র মত উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে আমাদের দেখিয়ে দিন। তখন তিনি পানির পাত্র আনালেন। তারপর তা থেকে দুই হাতের উপর পানি ঢেলে উভয় হাত তিনবার ধুইলেন, তারপর পাত্রে হাত ঢূকিয়ে পানি নিয়ে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন একই আজলা দিয়ে। এরুপ তিনবার করলেন। আবার পানিতে হাত ঢূকিয়ে পানি নিয়ে আবার মুখমন্ডল ধুইলেন। দুই হাত কনুই পর্যন্ত দুইবার করে ধুইলেন। তারপর হাত ঢূকিয়ে বের করে মাথা মাসেহ করলেন- দুই হাত সামনের দিকে আনলেন ও পিছন দিকে নিলেন। তারপর উভয় পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধুইলেন, এরপর বললেনঃ এরুপ ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)।

৪৪৭ কাসিম ইবনু যাকারিয়্যা, খালিদ ইবনু মাখলাদ, সুলায়মান ইবনু বিলাল, আমর ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) থেকে ঐ সুত্রেই বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ‘পায়ের গ্রন্থি’ পর্যন্ত শব্দটি উল্লেখ করেননি।

৪৪৮ ইসহাক ইবনু মূসা আনসারী, মান (রহঃ) মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) থেকে আমর ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) উপরোক্ত সুত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এতে বলেছেন, “কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিলেন তিনবার” আর আজলার কথা বলেন নি। অবশ্য “সম্মুখের দিকে আনলেন ও পিছনের দিকে নিলেন- কথার পর বৃদ্ধি করেছেন, “মাথার সম্মুখ থেকে পেছন পর্যন্ত মাসহ করেছেন এভাবে যে, মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে মাসহ আরম্ব করলেন, এরপর উভয় হাত গ্রীবা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন; পুনরায় উভয় হাত ফিরিয়ে আনলেন যে স্হান থেকে আরম্ভ করেছিলেন সে স্থান পর্যন্ত, তারপর উভয় পা ধুইলেন।

৪৪৯ আবদুর রহমান ইবনু বিশর আবদী (র আমর ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) থেকে পূর্ব বর্ণিত সনদের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসের রাবী বলেনঃ অতঃপর তিনি তিনবার তিন অঞ্জলী দিয়ে কুলি করেন, নাকে পানি দেন ও নাক ঝেড়ে নেন। তিনি আরো বলেনঃ এরপর সম্মুখ থেকে পেছনে এবং পিছন থেকে সম্মুখে (হাত নিয়ে) একবার মাথা মাসহ করেন। রাবী বাহয বলেনঃ উহায়ব আমাকে হাদীসটি লিখিয়েছেন, উহায়ব বলেনঃ আমর ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আমাকে এই হাদীসটি দুইবার লিখিয়েছেন।

৪৫০ হারুন ইবনু মারুফ, হারুন ইবনু সাঈদ আলআয়লী এবং আবূততাহির (রহঃ)আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ ইবনু আসিম মাযিনী আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলকে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে দেখেছেন। তিনি প্রথমে কুলি করলেন, নাক ঝাড়লেন। তারপর তিনবার মুখ ধুইলেন, তিনবার ডান হাত এবং বাম হাত তিনবার। আর এমনটি পানি দিযে মাথা মাসেহ করলেন, যা হাতের অবশিষ্ট পানি নয়। তারপর উভয় পা পরিষ্কার করে ধুইলেন। আবূত তাহির (রহঃ) বলেন, ইবনু ওহাব (রহঃ) হাদীসটি আমর ইবনুল হারিসের সুত্রে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন।

৪৫১ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আমরুন নাকিদ ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঢেলা ব্যবহার করবে, তখন বেজোড় সংখ্যার ঢেলা নিবে। আবার যখন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে তখন নাকে পানি দিয়ে তা ঝেড়ে নিবে।

৪৫২ মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এগুলি . আবূ হুরায়রা (রাঃ)আমাদের কাছে মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। তারমধ্যে এও ছিল যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে তখন দুই নাসারন্ধ্রে পানি টেনে নিবে, এরপর ঝেড়ে ফেলবে।

৪৫৩ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে, সে যেন নাক ঝাড়ে, আর যে ইসতিনজা করবে, সে যেন বেজোড় সংখ্যক ঢেলা ব্যবহার করে।

৪৫৪ সাঈদ ইবনু মানসূর এবং হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা ও আবূ সাঈদ আল খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বাকী অংশ পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ।

৪৫৫ বিশর ইবনুল হাকামী আবদী (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ ঘূম থেকে উঠবে সে যেন প্রথমত (পানি দিয়ে) তিনবার নাক ঝেড়ে নেয়। কারণ শয়তান নাসারন্ধ্রে রাত্রি যাপন করে।

৪৫৬ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনু রাফিঁ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন ঢেলা ব্যবহার করবে তখন রেজোড় সংখ্যক নিবে।

৪৫৭ হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী, আবূত তাহির ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) সালিম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাসের ইন্তেকালের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহ-ধর্মিনী আয়িশার কাছে উপস্থিত হই। সে সময়ে আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকরও এলেন এবং তাঁরা সেখানে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে লাগলেন। তখন আয়িশা (রাঃ)বললেনঃ হে আবদুর রহমান! পূর্ণভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করো। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একথা বলতে শুনেছি যে, আফসোস ঐ গোড়ালীগুলোর জন্য, যেগুলোর ঠিকানা হবে জাহান্নাম।

৪৫৮ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে গেলেন! এরপর তিনি আয়িশা (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৫৫৯ মুহাম্মদ ইবনু হাতিম ও আবূ মা’নরুককাশী (রহঃ) সালিম মাওলা মাহযী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ও আবদুল রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ)মা’ন ইবনু আবূ ওয়াককাসের জানাযার উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমরা . আয়িশা (রাঃ) এর ঘরের দরজার সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন তিনি আয়িশা (রাঃ)সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৪৬০ সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) সালিম মাওনা শাদ্দাদ ইবনু হাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। তখন তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

৪৬১ যুহায়র ইবনু হারব এবং ইসহাক (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আমরা মক্কা থেকে মদিনার দিকে ফিরছিলাম। রাস্তায় এক যায়গায় পানি ছিল। তখন কিছু লোক জলদী আসরের সময়ে এগিয়ে গেল এবং তাড়াহুড়া করে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করল। অতঃপর আমরা যখন তাদের নিকট গিয়ে পৌছিলাম, দেখলাম তাদের পায়ের গোড়ালি এমনভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যে, তাতে পানি পৌছেনি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আফসোস ঐ গোড়ালিগুলোর জন্যযেগুলোর ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অতএব পূর্ণভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) সম্পাদন কর।

৪৬২ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) সুফিয়ান সুত্রে এবং ইবলুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার শু’বা (রহঃ) সুত্রে উভয়ে উক্ত সনদে মানসূর থেকে বর্ণনা করেন, তবে ও বা বর্ণিত হাদীসে পূর্ণভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) সম্পাদন করবে”, – কথাটি নাই। এই হাদীসের সনদে “ আবূ ইয়াহইয়া” শব্দের সহিত “আল আরাজ” যুক্ত আছে।

৪৬৩ শায়বান ইবনু ফাররুখ ও আবূ কামিল জাহদারী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কোন এক সফরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের পিছনে পড়ে যান। অবশেষে তিনি আমাদের পেলেন যখন আসরের সময় উপস্হিত। আর আমরা উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে -গিয়ে পা মাসহ করছি। তখন তিনি ঘোষণা দিলেন, আফসোস, ঐ গোড়ালি গুলোর জন্য, যেগুলোর ঠিকানা জাহান্নাম।

৪৬৪ আবদুর রাহমান ইবনু সাল্লাম জুমাহী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে দেখলেন, সে তার গোড়ালি ধোয়নি। তখন তিনি বললেন, আফসোস ঐ গোড়ালি গুলোর জন্য, যেগুলোর ঠিকানা জাহান্নাম।

৪৬৫ কুতায়বা, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি কয়েকজন লোককে দেখলেন, তারা পাত্র থেকে পানি নিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করছে। তখন তিনিবললেনঃ পূর্ণ রুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) কর। কারণ, আমি আবূল কাসিম -কে বলতে শুনেছিঃ আফসোস ঐ গোড়ালিগুলোর জন্য, যেগুলোর স্হান হবে জাহান্নাম!

৪৬৬ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আফসোস, ঐ গোড়ালিগুলোর জন্য, যেগুলোর স্হান হবে জাহান্নাম।

৪৬৭ সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে তার পায়ের উপর নখ পরিমাণ অংশ ছেড়ে দেয়। তা দেখে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যাও, আবার ভালভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে আস। লোকটি ফিরে গেল। তারপর (পূনরায়) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল।

৪৬৮ সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ এবং আবূ ততাহির (রহঃ) শব্দগুলো আবূ ততাহির থেকে গৃহীত, আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলমান কিংবা বলেছেন , কোন মুমিন বান্দা যখন যখন উযূ (ওজু/অজু/অযু) তখন মুখ ধোয়ার সাথে অথবা বলেছেন, পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার ঐ সকল শোনাহ বের হয়ে যায় যার দিকে তার দুচোখের দৃষ্টি পড়েছিল; এবং যখন দুইহাত ধোয়, তখন, পানির সাথে অথবা বলেছেন, পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার ঐ সকল শোনাহ বের হয়ে যায়। যেগুলো তার দু হাতে ধরেছিল। এবং যখন দুটূ পা ধোয় তখন পানির সাথে অথবা বলেছেন, পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার ঐ সকল শোনাহ বের হয়ে যায় যেগুলোর দিকে তার দুপা অগ্রসর হয়েছিল; ফলে (উযূ (ওজু/অজু/অযু)র শেষে) লোকটি “তার সমুদয় শোনাহ থেকে সস্পূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়ে উঠে।

৪৬৯ মুহাম্মাদ ইবনু মা’মার রিবঈ আলকায়সী (রহঃ) উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এবং তা উত্তমরুপে করে, তার দেহ থেকে সমুদয় শোনাহ বের ধুয়ে যায়, এমন কি তার নখের ভিতর থেকেও (গুনাহ) বের হয়ে যায়।

৪৭০ আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ), কাসিম ইবনু যাকারিয়া ইবনু দ্বীনার ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) নূ’আয়ম ইবনু আবদুল্লাহ আল মুজমির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে দেখলাম। তিনি তার মুখমন্ডল ধুইলেন এবং পরিপূর্ণ ও উত্তমরুপেই তা ধুইলেন। এরপর তিনি ডান হাত ধুইলেন এমন কি বাহুর কিছু অংশও ধুয়ে ফেললেন। তারপর বাম হাত ও বাহুর কিছু অংশসহ ধুয়ে ফেললেন। এরপর মাথা মাসহ করলেন। তারপর পর ডান পা ধুইলেন এমনকি গোছারও কিছু অংশ ধুয়ে ফেললেন। তারপর বাম পা গোছার কিছু অংশসহ তিনি ধুয়ে ফেললেন। তারপর বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এভাবেই উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে দেখেছি তিনি আরো বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পরিপূর্ণ ও উত্তমরুপে করার কারণে কিয়ামতের দিন তোমাদের মুখমন্ডল জ্যোর্তিময় এবং হাত পা উজ্জ্বল হবে। অতএব, তোমাদের যার ইচ্ছা সে যেন তার মুখমন্ডলের নূর এবং হাত-পায়ের দীপ্তি বাড়িয়ে নেয়।

৪৭১ হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) নু’আয়ম ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে দেখলেন। অতঃপর তিনি (আবূ হুরায়রা) তাঁর মুখমন্ডল এবং উভয় হাত ধুইলেন। এমনকি ধুইতে উভয় কাঁধ পর্যন্ত পৌছে যাবার উপক্রম হল। তারপর উভয় পা ধুইলেন এবং গোছা ধুয়ে নিলেন। তারপর বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাত কিয়ামতের দিন উযূ (ওজু/অজু/অযু)র বঁদৌলতে মুখমন্ডল নূরানী এবং হাত-পা উজ্জ্বল অবস্হায় আসবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে তার মুখমন্ডলের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে চায় সে ষেন তা করে।

৪৭২ সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার হাউয হবে আদন থেকে আয়লার যত দুরত্ব তার থেকেও বেশী দীর্ঘ। আর তা হবে বরফের থেকেও সাদা এবং দুধ মধু থেকেও মিস্টি। আর তার পাত্রের সংখ্যা হবে তারকা রাজির চেয়েও অধিক। আমি কিছু সংখ্যক লোককে তা থেকে ফিরিয়ে দিতে থাকব যেমনিভাবে লোকে তার হাউয থেকে অন্যের উট ফিরিয়ে দেয়। সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! সেদিন কি আপনি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? তিনি বললেন, “হ্যা তোমাদের এমন চিহ্ন হবে যা অন্য কোন উাম্মাতের হবে না। উযূ (ওজু/অজু/অযু)র বদৌলতে তোমাদের মুখমন্ডল নুরানী ও হাত-পা দীপ্তিমান অবস্হায় তোমরা আমার কাছে আসবে।

৪৭৩ আবূ কুরায়ব ও ওয়াসিল ইবনু আতা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উম্মাত হাউযের পাড়ে আমার কাছে আসবে আর আমি তখন (অন্যান্য উম্মাতের) লোকজনকে সে হাউয থেকে ফিরিয়ে দিতে থাকব যেমনিভাবে লোকে অন্যের উটকে নিজের উট থেকে ফিরিয়ে রাখে। সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য়াল্লাহ! আপনি কি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? তিনি বললেন, হ্যা, তোমাদের এমন এক চিহ্ন থাকবে যা তোমাদের ছাড়া অন্য কারো থাকবে না। (আর তা হল) তোমরা আমার কাছে আসবে মুখমন্ডল নূরানী এবং হাত-পা দীপ্তিমান অবস্হায়। এটা হবে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র কারণে। আর তোমাদের মধ্য থেকেই একটি দলকে আমার কাছে আসতে ধাঁধা দেয়া হবে তাই তারা আমার কাছে আসতে পারবে না। তখন আমি বলব, প্রভু! এরা তো আমার লোকজন! তখন এর জবাবে একজন ফেরেশতা আমাকে বলবে, আপনি কি জানেন, এরা আপনার পরে কী অঘটন ঘটিয়েছিল?

৪৭৪ উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার হাউয আদন থেকে আয়লার যত দুরত্ব তার চেয়েও বড় হবে। সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, আমি সে হাউয থেকে (অন্যান্য) লোকজনকে দূর করে করে দেব যেমনিভাবে লোকে অপরিচিত উটকে তার হাউয থেকে দূর করে দেয়। সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তখন কি আপনি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? তিনি বললেন, হ্যা, তোমরা আমার কাছে এ অবস্হায় আসরে যে, উযূ (ওজু/অজু/অযু)র কারণে তোমাদের মুখমন্ডল নূরানী হবে এবং তোমাদের হাত-পা ঝলমল করতে থাকবে। তোমাদের ছাড়া আর কারো এরকম হবে না।

৪৭৫ ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, সুরায়জ ইবনু ইউনুস, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কবরস্হানে এসে বললেন, তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। এটা মুমিনদের ঘর। ইনশা আল্লাহ আমরাও তোমাদের সাথে এসে মিলব। আমার বড় ইচ্ছা হয় আমাদের ভাইদেরকে দেখি। সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বললেন, তোমরা তো আমার সাহাবী। আর যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তারা আমাদের ভাই। সাহাবায় কিরাম আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার উম্মাতের মধ্যে যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনবেন? তিনি বললেন, “কেন, যদি কোন ব্যাক্তির কপাল ও হাত-পা সাদাযুক্ত ঘোড়া ঘোর কালো ঘোড়ার মধ্যে মিশে যায় তবে সে কি তার ঘোড়াকে চিনে নিতে পারে না? তাঁরা বললেন, হ্যা, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, তাঁরা (আমার উম্মাত) সেদিন এমন অবস্হায় আসবে যে, উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ফলে তাদের মুখমন্ডল হবে নূরানী এবং হাত-পা দীণ্ডিময়। আর হাউযের পাড়ে আমি হব তাদের অগ্রনায়ক। জেনে রাখ, কিছু সংখ্যক লোককে সেদিন আমার হাউয থেকে হটিয়ে দেয়া হবে যেমনিভাবে পথহারা উটকে হটিয়ে দেয়া হয়। আমি তাদেরকে ডাকব, এসো এসো। তখন বলা হবে, “এরা আপনার পরে (আপনার দ্বীনকে) পরিবর্তন করে দিয়েছিল। তখন আমি বলব, দূর হ, দূর হ। ”

৪৭৬ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর এবং ইসহাক ইবনু মূসা আনসারী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরস্হানে গেলেন ও বললেন, “তোমাদের ওপর শাস্তি বর্ষিত হোক। এটা মুমিনদের – ঘর। আর আমরা ইনশা আল্লাহ তোমাদের সাথে এসে শামিল হবো। ইসমাঈল ইবনু জাফর-এর বর্ণিত (পূর্বের) হাদীসের অনুরুপ। তবে মালিক-এর হাদীসে “ স্হলে (অবশ্যই কিছু লোককে আমার হাউয থেকে হটিয়ে দেয়া হবে) রয়েছে।

৪৭৭ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর পেছনে দাড়িয়ে ছিলাম তিনি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য উযূ (ওজু/অজু/অযু) করছিলেন। অতঃপর তিনি হাত (ধোয়ার সময়) লম্বা করে দিলেন এমন কি (ধুইতে ধুইতে) বগল পর্যন্ত পৌছলেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, হে আবূ হুরায়রা! এটা কেমন উযূ (ওজু/অজু/অযু)! তিনি বললেন, হে ফারুখের বংশধর! তোমরা এখানে আছ নাকি? আমি যদি জানতাম যে তোমরা এখানে আছ, তাহলে আমি এরকম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতাম না। (এ জন্য এরকম করেছি যে), আমি আমার দোস্ত মুহাম্মাদ -কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মু’মিনের যে পর্যন্ত তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি পৌছবে- সে পর্যন্ত অলঙ্কার পরানো হবে।

৪৭৮ ইয়াহইয়া ইবনু আইউব (রহঃ), কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন (কাজের) কথা বলব না, যদ্বারা আল্লাহতায়ালা পাপরাশি দূর করে দিবেন এবং মর্যাদা উচু করে দিবেন? সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, হ্যা, অবশ্যই ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, তা হল, অসুবিধা ও কষ্ট সত্ত্বেও পরিপূর্ণভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা, মসজিদে আসার জন্য বেশী পদচারণা এবং এক সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর অন্য সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য অপেক্ষা করা। জেনে রাখ, এটাই হল রিবাত (তথা নিজকে আটকে রাখা)।

৪৭৯ ইসহাক ইবনু মূসা আল আনসারী (রহঃ)আলা ইবনু আবদুল রাহমান থেকে এই সনদে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত আছে। কিন্তু শু’বার বর্ণিত হাদীসটিতে , শব্দটির উল্লেখ নেই। আবার মালিকের বর্ণিত হাদীসে , শব্দটি দুবার উল্লিখিত হয়েছে।

৪৮০ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আমর আননাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুমিন’দের ওপর (যুহায়র-এর হাদীসে আছে আমার উম্মাতের উপর) যদি কষ্ট সাধ্য না হত তাহলে প্রত্যেক সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য মিসওয়াকের আদেশ দিতাম।

৪৮১ আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) মিকদামের পিতা সুরায়হ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -তাঁর-ঘরে ঢূকে সর্ব প্রথম কোন কাজটি করতেন? তিনি বললেন, সর্বপ্রথম মিসওয়াক করতেন।

৪৮২ আবূবাকর ইবনু নাফি আল আবদী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর ঘরে প্রবেশ করতেন তখন প্রখমেই মিসওয়াক করতেন।

৪৮৩ ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে গেলাম তখন মিসওয়াকের এক পাস তার জিহবার উপর ছিল।

৪৮৪ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ)হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাহাজ্জুদের জন্য উঠতেন তখন মিসওয়াক দিয়ে মুখ পরিস্কার করতেন।

৪৮৫ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ)- থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে তাহাজ্জুদের জন্য উঠতেন এরপর অনুরুপ বর্ননা রয়েছে। এ হাদীসে তাহাজ্জুদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

৪৮৬ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ)থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে উঠতেন তখন মিসওয়াক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতেন।

৪৮৭ আবদ ইবনু হুমায়দ (ব) ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, একবার তিনিরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে রাত যাপন করেছিলেন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ রাতে উঠলেন। বেরিয়ে এসে তিনি আকাশের দিকে তাকালেন। এরপর আলে-ইমরানের এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন , থেকে – পর্যন্ত। এরপর ঘরে ফিরে এসে মিসওয়াক করলেন এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ), আদায় করলেন। তারপর শুয়ে পড়লেন। তারপর আবার-উঠে বাইরে রেরিয়ে গেলেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে এ উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করলেন। তারপর ফিরে এসে মিসওয়াক করলেন, উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

৪৮৮ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা, আমর আন নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত (তথা সুন্নাত) পাচটি অথবা ভিনি বলেছেন, পাঁচটি কাজ ফিতরাতের অন্তভুক্ত-খাতনা করা, ক্ষোর কার্য করা (নাভির নিচের পশম কাটা) নখ কাটা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং গোঁফ ছাঁটা।

৪৮৯ আবূ ততাহির ও হারামালা ইবনু ইয়াইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত পাঁচটি। খাতনা করা, ক্ষোর কার্য (নাভির নিচের পশম কাটা) করা, গোঁফ ছাটা, নখ কাটা এবং বগলের পশম উপড়ে ফেলা।

৪৯০ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরজ ন্য গোঁফ ছাটা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং নাড়ির নীচের পশম কাটার সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে যে- চল্লিশ দিনের অধিক যেন না যায়।

৪৯১ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা গোঁফ কেটে ফেল এবং দাড়ি লম্বা কর।

৪৯২ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোঁফ ছাটতে এবং দাড়ি লন্বা করতে নির্দেশ দিয়েছে।

৪৯৩ সাহল ইবনু উসমান (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সা) বলেন, তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধাচরণ কর- গোফ কেটে ফেল এবং দাড়ি লম্বা কর।

৪৯৪ আবূবকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা গোঁফ কেটে ফেল এবং দাড়ি লম্বা কর-(এভাবেই) তোমরা অগ্নি পুজকদের বিরুদ্ধাচরণ কর।

৪৯৫ কুতায়বা ইবনু সাঈদ, আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দশটি কাজ ফিতরাতের অন্তভুক্ত- গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেয়া, নখ কাটা, নাক কানের ছিদ্র এবং আঙ্গুলের গিরাসমুহ ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাড়ির নিচের পশম কাটা এবং পানি দ্বারা ইসতিনজা করা। হাদীসের রাবী মুস’আব বলেন, দশম কাজটির কথা আমি ভুলে গিয়েছি। সম্ভবত সেটি হবে কুলি করা। এ হাদীসের বর্ণনায় কুতায়বা আরো একটি বাক্য বাড়ান যে, ওয়াকী বলেন, অর্থ ইসতিনজা করা।

৪৯৬ এই হাদীস আবূকুরায়ব-এর সুত্রে মুস আব ইবনু শায়বা (রহঃ) থেকে একই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে। অবশ্য তিনি বলেন যে, তার পিতা বলেন, আমি দশম কাজটির কথা ভুলে গিয়েছি।

৪৯৭ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) সালমান (রাঃ)থেকে বর্ণিত। একবার তাঁকে বলা হল, তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদেরকে সব কাজই শিক্ষা দেন এমনকি পেশাব পায়খানার পদ্ধতিও! তিনিবললেন, হ্যা, তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেন, পায়খানার বা পেশাবের সময় কিবলামুখী হয়ে ;বসতে, ডান হাত দিয়ে ইসতিনজা করতে, তিনটি টিলার কম দিয়ে ইসতিনজা করতে এবং গোবর বা হাড় দিয়ে ইসতিনজা করতে।

৪৯৮ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) সালমান (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুশরিকরা একবার আমাকে বলল, আমরা দেখছি তোমাদের সঙ্গী [রাসুল ] তোমাদেরকে সব কাজই শিক্ষা দেন এমনকি পেশাব পায়খানার নিয়ম নীতিও তোমাদেরকে শিক্ষা দেন! (জবাবে) তিনি বললেন, হ্যা, তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেন ডান হাতে ইসতিনজা করতে, (ইসতিনজার সময়) কিবলামুখী হয়ে বসতে এবং তিনি আমাদেরকে আরো নিষেধ করেছেন গোবর অথবা হাড় ইসতিনজা করতে। তিনি বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন তিনটি ঢেলার কম -দিয়ে ইসতিনজা না করে”।

৪৯৯ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) জাবির (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাড় অথবা গোবর দিয়ে মুছতে (ইসতিনজা করতে) নিষেধ করেছেন।

৫০০ যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবূ আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমরা পায়খানায় যাও তখন কিবলার দিকে মুখ করে বসোনা এবং পিছা করে বসো না- পেশাব করতেও না, পায়খানা করতেও না; বরং পূর্বদিকে অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বস। আবূ আইউব (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমরা শাম (সিরিয়া) গেলাম। সেখানে আমরা দেখলাম যে, শৌচাগারগুলো কিবলার দিকে মুখ করে নির্মাণ করা হয়েছে। তখন আমরা অন্য দিকে মুখ ফিবিয়ে বসতাম এবং আল্লাহর কাজে মাগফিরাত চাইতাম। রাবী ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) বলেন, এ সম্পর্কে আমি সুফিয়ানকে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, হ্যা শুনেছি।

৫০২ আবদুল্লাহ ইবনু মাসালামা ইবনু কা’নাব (রহঃ) ওয়াসি ইবনু হাববান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা মসজিদে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম। আর আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তখন কিবলার দিকে পিছা করে হেলান দিয়ে বসেছিলেন। অতঃপর আমি সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে তাঁর দিকে ঘুরে বসলাম। তখন আবদুল্লাহ (রাঃ)বললেন, কিছু লোকে বলে, “তুমি যখন ইসতিনজা করতে বসবে তখন কিবলার দিকে মুখ করে বসো না এবং বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে না”। অথচ একবার আমি একটি ঘরের ছাদের ওপর উঠে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দু’টি ইটের ওপর বসা অবস্হায় দেখলাম। তিনি তখন ইস্তিঞ্জার জন্য বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে বসেছিলেন।

৫০৩ আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার আমার – বোন হাফসা (রাঃ)-এর ঘরের ছাদে উঠলম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ইসতিনজায় বসা অবস্হায় দেখতে পেলাম। তিনি শাম (সিরিয়া) এর দিকে মুখ করে এবং কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে বসেছিলেন।

৫০৪ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রাঃ) আবূ কাতাদা (রহ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যেন পেশাব করার সময় তার পুরুষাঙ্গ ডান হাত দিয়ে না ধরে এবং পায়খানার পর ডান হাত দিয়ে যেন ইসতিনজা (কুলুখ ব্যবহার) না করে এবং (পানি পান করার সময়) পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ফেলে।

৫০৫ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন পায়খানায় (শৌচাগারে) যায় তখন সে যেন ডান হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ না করে।

৫০৬ ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে, ডান হাত দিয়ে পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করতে এবং ডান হাত দিয়ে ইসতিনজা করতে নিষেধ করেছেন।

৫০৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু)-গোসল, চুল আচড়ান এবং জুতা পরার বেলায় ডান দিক থেকে শুরু করতে ভালোবাসতেন।

৫০৮ উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সব কাজেই জুতা পারায়, চুল আচড়ানোতে এবং পবিত্রতা অর্জনে ডান দিক থেকে শুরু করতে ভাল বাসতেন।

৫০৯ ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু -হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (বা) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা লানতের দুটি কাজ থেকে দূরে থাক। সাহাবারা আরয করলেন, সে কাজ দুটি কি? ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, মানুষের (যাতায়াতের) রাস্তায় অথবা তাদের (বিশ্রাম নেয়ার) ছায়ায় পেশাব পায়খানা করা।

৫১০ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বাগানে ঢুকলেন। একটি বদনা সহ একজন বালক তার পেছনে গেল। সে ছিল আমাদের সকলের চেয়ে বয়ঃকনিষ্ঠ। সে বদনাটি একটি কুল গাছের কাছে রেখে দিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রয়োজন শেষ করে আমাদের কাছে এলেন। তিনি পানি দিয়ে ইসতিনজা করেছিলেন।

৫১১ আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা (ব) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শৌচাগারে থাকতেন, তখন আমি এবং আমার মতই একটি বালক পানির লোটা ও একখানা লাঠি বয়ে নিয়ে যেতাম। অতঃপর তিনি পানি ইসতিনজা করতেন।

৫১২ যুহায়র ইবনু হারব ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইসতিনজার জন্য যেতেন, তখন আমি তার কাছে পানি নিয়ে যেতাম। তিনি তা নিয়ে ইসতিনজা করতেন।

৫১৩ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবূকুরায়ব (রহঃ) হাম্মাম (রহঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জারীর (রাঃ)একবার পেশাব করলেন। তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তাঁকে বলা, হল আপনি কি এরকম করে থাকেন? তিনি বলেন হ্যা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তিনি পেশাব করেছেন, তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেছেন এবং তাঁর উভয় মোযার ওপর মাসেহ করেছেন। আমাশ বলেন, ইবরাহীম বলেছেন যে, এ হাদীসটি (হাদীস বিশারদ) লোকেরা আগ্রহের সাথে গ্রহণ করেছেন। কারণ জারীর (রাঃ) সূরা মায়িদা নাযিলের পর ইসলাম গ্রহণ করেন।

৫১৪ এ হাদীসটই ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) অপর বর্ণনায় মুহাম্মদ ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আমাশ থেকে এই সনদে আবূ মুঁআবিয়ার হাদীসের অর্থের অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে। তবে ঈসা ও সুফিয়ানের হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে যে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহর সাথী সঙ্গীদের কাছে এ হাদীসটি আনন্দদায়ক বলে মনে হত। কারণ জারীর (রাঃ)ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন সূরা মায়িদা নাযিলের পরে।

৫১৫ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে ছিলাম। তিনি কোন কাওমের ময়লা আবর্জনা ফেলার জায়গায় এসে পৌছলেন। অতঃপর সেখানে দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন, আমি তখন দূরে সরে গেলাম। তিনি বললেন, কাছে এস। আমি তাঁর নিকটে গেলাম এমনকি একেবারে তাঁর গোড়ালির কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। অতঃপর তাঁর উভয় মোযার ওপর মাসে করলেন।

৫১৬ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ ওয়াইল থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) পেশাবের ব্যাপারে খুবই কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তিনি একটি বোতলে পেশাব করতেন এবং বলতেন, বনী ইসরাঈলদের কারো (শরীরের) চামড়ায় যদি পেশাব লাগত তখন সে কাঁচি দিয়ে সে স্থান কেটে ফেলতো। অতঃপর হুযায়ফা (রাঃ) (একথা শুনে) বললেন, আমি চাই যে, তোমাদের সঙ্গী (আবূ মূসা)এ ব্যাপারে এত কঠোরতা না করলেই ভাল হত। (কারণ) একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংগে পথ চলছিলাম। তিনি একটি দেয়ালের পিছনে জনৈক কাওমের আবর্জনা ফেলার জায়গায় পৌছলেন। অতঃপর তোমরা যেমনভাবে দাঁড়াও, তেমনি দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন। আমি তাঁর থেকে দরে সরে গেলাম। তিনি আমার দিকে ইশারা করলেন। অতঃপর আমি এলাম এবং একেবারে তার গোড়ালির কাছে এসে দাঁড়ালাম। তিনি তাঁর প্রয়োজন শেষ করলেন।

৫১৭ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত পূরণের জন্য বের হলেন। তারপর মুগীরা (রাঃ)একটি পানি ভর্তি বদনা নিয়ে তারঅনুসরণ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত শেষ করলে তিনি তাঁকে পানি ঢেলে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং উভয় মোযার উপর মাসেহ করলেন। ইবনু রুমহ’এর বর্ণনায় শব্দের স্হলে শব্দের উল্লেখ রয়েছে।

৫১৮ এ হাদীসটি মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি তাঁর মুখমন্ডল ও উভয় হাত ধুইলেন এবং মাথা মাসেহ করলেন। তারপর উভয় মোযার উপর মাসেহ করলেন।

৫১৯ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ তিনি এক স্হানে থেমে হাজত পূরণ করলেন। এরপর ফিরে এলেন এবং আমার কাছে রাখা একটি বদনা থেকে আমি তার উপর পানি ঢেলে দিলাম। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এরপর তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।

৫২০ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুসায়ব (রহঃ) মুগীবা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সফরে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে ছিলাম। তিনি বললেন, মুগীরা বদনা (সঙ্গে) নাও। আমি বদনা (সঙ্গে) নিলাম। তারপর তাঁর সাথে বেরিয়ে পড়লাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাটতে হাটতে আমার থেকে আড়ালে চলে গেলেন। তারপর তিনি তার হাজত পূরণ করলেন ও ফিরে এলেন। তখন তাঁর গায়ে ছিল একটি শামী জোববা যার আস্তিন ছিল চাপা (অপ্রশস্ত)। তিনি আস্তিন থেকে তার হাত বের করার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু (অপ্রশস্ত হওয়ার কারণে) তা আটকে গেল। অতঃপর তিনি জোব্বার নিচ থেকে তাঁর হাত বের করলেন। আমি তার ওপর পানি ঢেলে দিলাম। তিনি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য যেমন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা হয়-তেমনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তাঁর উভয় মোযার ওপর মাসেহ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

৫২১ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আর্লী ইবনু খাশরাম (রহঃ) মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত পূরণের জন্য বের হলেন। (হাজত শেষে) তিনি যখন ফিরে এলেন তখন বদনা নিয়ে আমি তাঁর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি তাঁর উভয় হাত ধুইলেন। তারপর মুখমন্ডল ধুইলেন। তারপর উভয় বাহু ধোয়ার ইচ্ছা করলেন, কিন্তু জোববায় (অপ্রশস্ততার কারণে) তা আটকে গেল। তিনি জোববার নিচে দিয়ে বের করে উভয় বাহু ধুয়ে ফেললেন এবং মাথা মাসেহ করলেন ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর আমাদের সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

৫২২ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ নুমায়র (রহঃ) মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সফরে এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, “তোমার সাথে কি পানি আছে”? আমি বললাম, হ্যা। তিনি তাঁর সাওয়ারী থেকে নেমে পড়লেন। তারপর হাটতে হাঁটতে রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন। তখন আমি বদনা থেকে তাঁকে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি তাঁর মুখমন্ডল ধুইলেন তখন তাঁর গায়েছিল একটি পশমের জোববা। তিনি তা থেকে হাত বের করতে না পেরে জোববার নিচ দিয়ে বের করলেন। তারপর তাঁর উভয় বাহু ধুইলেন এবং মাথা মাসেহ করলেন। আমি তাঁর উভয় মোযা খুলে দিতে চাইলাম কিন্তু (বাধা দিয়ে) তিনি বললেন, ওভাবেই থাকতে দাও। কারণ আমি ও দুটি পবিত্র অবস্হায় পায়ে দিয়েছি। (এই বলে) তিনি তার উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।

৫২৩ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করালেন। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। মুগীরা (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সা] বললেনঃ আমি এ দুটিকে পবিত্রাবস্ত্রায় পরেছি।

৫২৪ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু বাযী (রহঃ) মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছনে রয়ে গেলেন। আমিও তাঁর সাথে পেছনে পড়লাম। তিনি হাজত পূরণ করে বললেন, তোমার সাথে কি পানি আছে? আমিএকটি পানির পাত্র নিয়ে এলাম। তিনি উভয় হাতের কব্জা পর্যন্ত এবং মুখমন্ডল ধূইলেন তারপর উভয় বাহু বের করতে চাইলেন; কিন্তু জোববার আস্তিনে আটকে গেল। এতে জোববার নিচ থেকে তিনি হাত বের করলেন এবং জোববাটি কাঁধের ওপর রেখে দিলেন। উভয় হাত ধুইলেন, মাথার সম্মুখভাগ এবং পাগড়িও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর তিনি সাওয়ার হলেন এবং আমিও সাওয়ার হলাম। আমরা যখন আমাদের কাওমের কাছে পৌছলাম তখন তারা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিল। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ)তাদের সালাত (নামায/নামাজ) ইমামতি করছিলেন। তিনি তাদেরকে নিয়ে এক রাকআত পড়ে ফেলেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আগমন টের পেয়ে তিনি পিছিয়ে আসছিলেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (সেখানে থাকতে) ইশারা করলেন। এতে তিনি (আবদুর রহমান ইবনু আওফ) তাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি যখন সালাম ফিরালেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। তারপর আমাদের থেকে যে রাক’আত ছুটে গিয়েছিল তা আদায় করলাম।

৫২৫ উমায়্যা ইবনু বিসতাম ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় মোযার ওপর এবং মাথার সম্মুখ ভাগ ও পাগড়ীর ওপর মাসেহ করেন।

৫২৬ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আলী (রহঃ) মুগীরা (রাঃ)-এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।

৫২৭ মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী বাকর বলেন, আমি মুগীরা (রাঃ)-এর পূত্র থেকে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ এবং পাগড়ি ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন।

৫২৮ আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মদ ইবনুল আলা (রহঃ) বিলাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় মোযা ও পাগড়ীর ওপর মাসেহ করেছেন।

৫২৯ এ হাদীসটই সুওয়ায়দ ইবনু সাঈদ (রহঃ) একই সনদে আমাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাদীসে এরুপ রয়েছে যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখেছি ।

৫৩০ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) সুরাইয়া ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে এলাম মোযার ওপর মাসেহ করার মাস’আলা জিজ্ঞেস করতো তিনি বললেন, আবূ তালিবের পূত্র (আলী (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে এ মাসআলা জিজ্ঞেস কর। কারণ সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সফর করত। অতঃপর আমরা তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসাফিরের জন্য তিন দিন রাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং মুকীমের জন্য একদিন এক রাত। এ হাদীসের রাবী সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) যখন তার উস্তাদ আমর (রাঃ)-এর উল্লেখ করতেন তখন তাঁর প্রশংসা করতেন।

৫৩১ ইসহাক (রহঃ) হাকাম (রহঃ) থেকে একই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে।

৫৩২ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) সুরাইয়া ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আয়িশা (রাঃ)-কে মোযার ওপর মাসেহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আলীর কাছে যাও, কারণ এ ব্যাপারে সে আমার চেয়ে বেশী জানে। আমি আলী (রাঃ)-এর কাছে এলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ উল্লেখ করলেন।

৫৩৩ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) বুরায়দা (বা) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতছে মক্কার দিন এক উযূ (ওজু/অজু/অযু) দিয়ে কয়েক (পাচ) ওয়াক্তের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন এবং মোযার উপরমাসেহ করেন। উমার (রাঃ)তাকে বললেন, আপনি আজ এমন কাজ করেছেন যা ইতিপূর্বে আর করেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, উমার! আমি ইচ্ছে করেই এ রকম করেছি।

৫৩৪ নাসর ইবনু আলী আল জাহযামী ওহামিদ ইবনু উমার আল বাকরাবী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ঘূম থেকে উঠে তখন সে যেন তার হাত তিনবার না ধোয়া পর্যন্ত পাত্রে না ঢূকায়। কারণ সে জাননা যে, তার হাত রাতে কোথায় ছিল।

৫৩৫ আবূ কুরায়ব ও আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।

৫৩৬ আবূবাকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।

৫৩৭ সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমাদের কেউ জাগ্রত হবে তখন সে তার হাত পাত্রে ঢূকাবার পূর্বে যেন তা তিনবার ধূয়ে নেয়। কারণ সে জানেনা যে, তার হাত রাতে কোথায় ছিল।

৫৩৮ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ), নাসরা ইবনু আলী (রহঃ), আবূ কুরায়ব (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ও আল হুলওয়ানী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে এই হাদীস বর্ণিত আছে- প্রত্যেকের বর্ণনাতেই (হাত না ধোয়া পর্যন্ত) রয়েছে। তাদের কেউ তিনবারের কথা উল্লেখ করেননি। কেবলমাত্র জাবির (রহঃ), ইবনুল মূসা য়্যিব (রহঃ) আবূ সালামা (রহঃ), আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ), আবূ সালিহ (রহঃ) ও আবূ রাযীন (রহঃ)-এর বর্ননায় তিন বার এর উল্লেখ রয়েছে।

৫৩৯ আলী ইবনু হুজর আসসা’দী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুরে মুখ দিল, তখন সে যেন তা ঢেলে ফেলে, তারপর পাত্রটি সাতবার ধূয়ে ফেলে।

৫৪০ মুহাম্মাদ ইবনুুস সাববাহ (রহঃ) আমাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে। কিন্তু তিনি (সে যেন তা ঢেলে ফেলে)-এর উল্লেখ করেননি।

৫৪১ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্র থেকে যখন কুকুরে পান করবে তখন সে যেন তা সাতবার ধুয়ে ফেলে।

৫৪২ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুর মুখ লাগিয়ে পানকরবে তখন সে পাত্র পবিত্র করার পদ্ধতি হল সাতবার তা ধূয়ে ফেলে। প্রথম বার মাটি দিয়ে (ঘষে ফেলবে)।

৫৪৩ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুরে মুখ লাগিয়ে পান করবে, তখন সে পাত্র পবিত্র করার পদ্ধতি হলো, সাতবার ধুয়ে ফেলা।

৫৪৪ উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ইবনুল মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুর হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে বললেন, তাদের কী হয়েছে যে, তারা কুকুরের পিছনে পড়লো? তারপর শিকারী কুকুর এবং বকরীর (পাহারা দেয়ার) কুকুর রাখার অনুমতি দেন এবং বলেন, কুকুর যখন পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান করবে তখন তা সাতবার ধুইয়ে ফেলবে এবং অষ্টমবার মাটি দিয়ে ঘষে ফেলবে।

৫৪৫ এ হাদীসটই ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আলহারিসী (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনুল ওয়ালীদ (রহঃ) শু’বা (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে। তবে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ-এর বর্ণনায় একটু অতিরিক্ত আছে। তা হল, তিনি বক্বরী পাহারা দেয়ার, শিকার করার এবং চাষাবাদ কারার কুকুর রাখার অনুমতি দিয়েছেন”। ইয়াহইয়া ছাড়া আর কারো বর্ণনায় চাষাবাদের কথা উল্লেখ নেই।

৫৪৬ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ), মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) ও কুতায়বা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্হির পানিতে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন।

৫৪৭ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ)। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যেন পানিতে পেশাব করে পরে তা দিয়ে যেন গোসল না করে।

৫৪৮ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (র। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তুমি এমনটি করো না যে, প্রবাহিত নয় এমন স্থির পানিতে পেশাব করবে তারপর আবার তা থেকে গোসল করবে।

৫৪৯ হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ), আবূ তাহির (রহঃ) ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তোমাদের কেউ যেন নাপাক অবস্থায় স্হির পানিতে গোসল না করে। রাবী বলল, আবূ হুরায়রা তখন সে কিভাবে (গোসল)করবে? তিনি বললেন, পানি উঠিয়ে করবে।

৫৫০ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ)আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করে দিল। তখন কিছু লোকজন তার কাছে গিয়ে দাড়াল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওকে ছেড়ে দাও এবং পেশাব করতে বাধা দিও না। রাবী বলেন, সে যখন পেশাব করল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বালতি পানি চাইলেন। অতঃপর তা সেখালে ঢেলে দিলেন।

৫৫১ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন, একবার এক বেদূঈন মসজিদের মধ্যে এক কোণে দাঁড়িয়ে সেখানেই পেশাব করে দিল। অতঃপর লোকজন এতে হৈ চৈ শুরু করে দিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওকে ছেড়ে দাও। তার পেশাব শেষ হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বালতি পানি আনার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তার পেশাবের ওপর ঢেলে দিলেন।

৫৫২ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইসহাকের চাচা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা মসজিদে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে বসেছিলাম ইতিমধ্যে এক বেদুঈন এল। সে দাড়িয়ে মসজিদেই পেশাব করতে লাগল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ বলতে লাগল, “থাম, থাম”। রাবী বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা ওকে বাধা দিও না, ছেড়ে দাও ওকে। অতঃপর তাঁরা তাকে ছেড়ে দিল, সে পেশাব করা শেষ করল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন, “দেখ এই যে মসজিদগুলো এতে পেশাব করা বা একে কোন রকম নাপাক করা উচিৎ নয়। এ সব তো কেবল আল্লাহর যিকির করা, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা এবং কুরআন তিলাওয়াত করার জন্য”। অথবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ধরনের কিছু বলেছিলেন। রাবী বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাওমের কোন এক লোককে নির্দেশ দিলেন-সে এক বালতি পানি নিয়ে এল। তিনি তা সে পেশাবের ওপর ঢেলে দিলেন।

৫৫৩ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে শিশুদেরকে নিয়ে আসা হত। তিনি তাদের জন্য বরকতের দু’আ করতেন এবং কিছু চিবিয়ে তাদের মুখে দিতেন। একবার একটি শিশুকে তাঁর কাছে আনা হল। অতঃপর শিশুটি তাঁর শরীরে পেশাব করে দিল। অতঃপর তিনি পানি আনিয়ে পেশাবের জায়গায় ঢেলে দিলেন। আর (ভালো করে) তা ধূইলেন না।

৫৫৪ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে একবার একটি শিশুকে আনা হল। শিশু তাঁর কোলে পেশাব করে দিল। অতঃপর পানি আনিয়ে পেশাবে ঢেলে দিলেন।

৫৫৫ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) হিশাম থেকে এই সনদে ইবনু নুমায়রের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।

৫৫৬ মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ইবনুল মুহাজির (রহঃ) কায়স বিনতে মিহসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তার এক শিশু পূত্রকে যে তখনো খাবার খেতে পারত না-নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কোলে দিলেন। শিশুটি পেশাব করে দিল। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] শুধু পানি ছিটিয়ে দেয়ার বেশী আর কিছু করলেন না।

৫৫৭ এ হাদীসটই ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ), আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা (রহঃ), আমর আন নাকিদ (রহঃ) ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) সকলেই ইবনু উয়ায়না (রহঃ)-এর মাধ্যমে (রহঃ) থেকে এই সনদে বর্ণনা করেন এবং তিনি বলেন, অতঃপর তিনি [রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] পানি এনে তা ছিটিয়ে দিলেন।

৫৫৮ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা ইবনু মাসঊদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু কায়স বিনত মিহসান (রাঃ) যিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে বায়আত গ্রহণকারীনী, প্রথম মুহাজির মহিলাদের অন্যতম। তিনি ছিলেন বানূ আসা’দ ইবনু খূযায়মা গোত্রের উককাশা ইবনু মিহসান (রাঃ)-এর বোন। রাবী বলেন, তিনি (উম্মু কায়স) আমাকে জানোান যে, তিনি একবার তার এক পূত্রকে যে তখনো খাবার গ্রহণের বয়সে পৌছেনি তাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে এলেন। উবায়দুল্লাহ বলেন, তিনি আমাকে জানোান যে, তার সে পুত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোলে পেশাব করে দিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনিয়ে তাঁর কাপড়ের ওপর ছিটিয়ে দিলেন, এবং তা ভাল করে ধূলেন না।

৫৫৯ ইয়াইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ)আলকামা (রহঃ) ও আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। একবার এক ব্যাক্তি আয়িশা (রাঃ)-এর মেহমান হল। অতঃপর সকালে সে তার কাপড় ধুতে লাগল। তখন আয়িশা (রাঃ)বললেন, তুমি যদি (কাপড়ে) তা (বীর্য)দেখতে পাও তবে তোমার জন্য শুধু সে জায়গাটা ধুয়ে ফেলাই যথেষ্ট হবে। আর যদি তা না দেখ তবে তার আশে পাশে পানি ছিটিয়ে দিবে। আমি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে তা নখ দিয়ে ভাল করে আচড়ে ফেলতাম। অতঃপর তিনি তা পরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।

৫৬০ উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বীর্য সম্পর্কে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তা (বীর্য) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে নখ দিয়ে আচড়ে ফেলতাম।

৫৬১ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ), ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে করা সম্পর্কে আবূ শা’শা থেকে খালিদের হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত আছে।

৫৬২ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ)-এর সুত্রে ও আয়িশা (রাঃ)থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণিত আছে।

৫৬৩ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আমর ইবনু মায়মুন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সূলায়মান ইবনু ইয়াসার কে জিজ্ঞেস করলাম যে, বীর্য কোন লোকের কাপড়ে লেগে গেলে সে শুধু সেই বীর্য ধুয়ে ফেলবে না কাপড়টাই ধুয়ে ফেলবে? তিনি বললেন, আয়িশা (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বীর্য ধুয়ে ফেলতেন। তারপর সেই কাপড়েই সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য বেরিয়ে যেতেন আর আমি (পেছন থেকে) সে কাপড়ে ধোয়ার চিহ্ন দেখতে পেতাম।

৫৬৪ আবূ কামিল আল জাহদারী (রহঃ), আবূকুরায়ব (রহঃ) ও ইবনু আবূ যায়িদা (রহঃ) এরা সকলেই আমর ইবনু মায়মূন (রহঃ) থেকে এ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনু যায়িদার হাদীসে রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বীর্য ধুইতেন। আর ইবনুল মুবারাক (রহঃ) ও আবদুল ওয়াহিদ (রহঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে ধুয়ে ফেলতাম।

৫৬৫ আহমাদ ইবনু জাওয়াস আল হানাফী আবূ আসিম (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু শিহাব আল খাওলানী (রহঃ)- থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার আয়িশা (রাঃ)-এর মেহমান ছিলাম। (রাতে) আমার কাপড়েই স্বপ্নদোষ হল। আমি সে কাপড় দুটি পানিতে ডুবিয়ে ধুচ্ছিলাম। আয়িশা (রাঃ)-এর এক দাসী আমাকে এরুপ করতে দেখে তাঁকে গিয়ে জানাল। আয়িশা (রাঃ) লোক পাঠিয়ে আমাকে ডেকে বললেন, তুমি তোমার কাপড় দুটিকে এরুপ করছ কেন? তিনি (আবদুল্লাহ ইবনু শিহাব) বলেন, আমি বললাম, ঘুমন্ত ব্যাক্তি তার স্বপ্নে যা দেখে আমি তাই দেখেছি। তিনি বললেন, তুমি কি কাপড় দুটিতে কিছু দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তুমি যদি কিছু দেখ তে, তবে তা ধুয়ে ফেলতে। আমি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাপড় থেকে শুকনো বীর্য নখ দিয়ে আচড়ে ফেলতাম।

৫৬৬ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা অন্য সুত্রে ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বলল, আমাদের কারো কাপড়ে হায়েযের রক্ত লেগে গেলে সে কি করবে? তিনি বললেন, (প্রথমে) তা নখ দিয়ে আচড়ে ফেলবে। এরপর পানি দিযে রগড়িয়ে ফেলবে, তারপর ধুয়ে ফেলবে, তারপর তাতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।

৫৬৭ আবূ কুরায়ব (রহঃ) ও আবূ তাহির (রহঃ)-প্রত্যেকেই হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) থেকে এ সনদে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের হাদীস (উপরোক্ত)-এর অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

৫৬৮ আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ), আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি বললেন, জেনে রাখ এ কবর বাসীদ্বয়কে আযাব দেয়া হচ্ছিল তবে কোন কঠিন (কাজের) দরুন তাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছেনা। তাদের একজন চোগলখুরী করত। আর অপরজন তার পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। তিনি [ইবনু আব্বাস (রাঃ)] বলেন, অতঃপর তিনি খেজুরের একটি কাচা ডাল আনিয়ে দু টুকরা করলেন। তারপর এ কবরের উপর একটি এবং অন্য কবরের উপর একটি পুতে দিলেন। এরপর বললেন, হয়ত বা এদের আযাব কিছুটা লাঘব করা হবে যতদিন পর্যন্ত এ দুটি না শুকিয়ে যাবে।

৫৬৯ এ হাদীসটই আহমাদ ইবনু ইউসুফ আল -আযদী (রহঃ) সুলায়মান আল আ’মাশ থেকে এ সনদে বর্ণিত আছে। তবে তিনি বলেন, আর অপরজন পেশাব থেকে পবিত্রতা অর্জন করত না”।

 


নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: তাহারাত(পবিত্রতা)
তাহারাত(পবিত্রতা)
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/10/taharat.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/10/taharat.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy