আকীদার ক্ষেত্রে তারা আল্লাহ্র
কিতাব এবং রাসূল (সা:) এর সুন্নাহর অনুসারী। আল্লাহ্র সৃষ্টি, কর্তৃত্ব, রাজত্ব, নাম ইত্যাদি বিষয়ে তারা কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সঠিক বিশ্বাস
পোষণ করে থাকেন।
এবাদতের ক্ষেত্রে দেখা যাবে
যে,
তারা রাসূল (সা:) এর সুন্নাহর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নকারী। এবাদতের
প্রকার,
পদ্ধতি, পরিমান, সময়, স্থান এবং এবাদতের কারন ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে রাসূল (সা:) এর
সুন্নাহর অনুস্মরণ করাই তাদের বৈশিষ্ট্য, আপনি তাদের নিকট দ্বীনের ব্যাপারে কোন বিদ্আত খোঁজে পাবেন না।
তারা আল্লাহ্র এবং রাসূল (সা:) এর সাথে সর্বোচ্চ আদব রক্ষা করে চলে।
আখলাক-চারিত্রিক ক্ষেত্রেও
তাদেরকে অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের আধিকারী দেখতে পাবেন। মুসলমানদের কল্যাণ
কামনা করা, অপরের জন্য
উদার মনের পরিচয় দেয়া, মানুষের সাথে হাসি মুখে কথা বলা, উত্তম কথা বলা, বদান্যতা, বীরত্ব এবং অন্যান্য মহান গুণাবলী তাদের চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
পার্থিব বিষয়াদিতে তাদেরকে
দেখা যাবে যে, তারা সততার
সাথে সকল প্রকার লেন-দেন সম্পন্ন করে থাকেন। কাউকে ধোঁকা দেন না। ক্রয়-বিক্রয়ের সময়
তারা দ্রব্যের আসল অবস্থা বর্ণনা করে দেয়। এদিকে ইঙ্গিত করেই রাসূল (সা:) বলেছেন, পৃথক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ক্রেতা-বেক্রেতা উভয়েরই ক্রয়-বিক্রয়
বাতিল করার অধিকার রয়েছে। যদি তারা উভয়েই সত্য বলে এবং দোষ ত্রুটি বর্ণনা করে, আল্লাহ্ তাদের বেচা-কেনায় বরকত দান করেন। আর যদি মিথ্যা বলে
এবং দোষ-ত্রুটি গোপন করে, তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের ভিতর থেকে বরকত উঠিয়ে নেওয়া হয়।
উপরে যে সমস্ত গুণাবলীর আলোচনা
করা হল,
কোন ব্যক্তির মাঝে উক্ত গুণাবলীর কোন বৈশিষ্ট্য অবর্তমান থাকলে
এ কথা বলা যাবে না যে, সে নাজাত প্রাপ্ত দল হতে বের হয়ে গেছে। প্রত্যেকেই আপন আপন আমল অনুযায়ী মর্যাদা
লাভ করবে। তবে তাওহীদের ক্ষেত্রে ত্রুটি করলে নাজাত বা মুক্তি প্রাপ্ত দল হতে বের হয়ে
যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিদ্আতের বিষয়টিও অনুরূপ। কিছু কিছু বিদ্আত এমন আছে, যা মানুষকে নাজী ফির্কা থেকে বের করে দেয়। তবে চরিত্র ও লেন-দেনের
ভিতরে কেউ ত্রুটি করলে সে নাজাত প্রাপ্ত দল থেকে বের হবে না। বরং মর্যাদা কমিয়ে দিবে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত
তারাই,
যারা আকিদা ও আমলের ক্ষেত্রে সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরে এবং তার উপর
ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং অন্য কোন দিকে দৃষ্টি দেয় না। এ কারনেই তাদেরকে আহলে সুন্নাত রুপে
নাম করন হয়েছে। কেননা তারা সুন্নাহর ধারক ও বাহক। তাদেরকে আহলে জামাতও বলা হয়। কারন
তারা সুন্নাহর উপর জামাতবদ্ধ বা ঐক্যবদ্ধ। আপনি যদি বিদ্আতীদের আবস্থার প্রতি দ্রিস্তিপাত
করেন,
তবে দেখতে পাবেন যে, তারা আকীদা ও আমলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলে বিভক্ত। তাদের এ অবস্থা
এটাই প্রমান করে যে, তারা যে পরিমান বিদ্আত তৈরি করেছে সে পরিমান সুন্নাত থেকে দূরে সরে গেছে……[সালেহ
আল উসাইমীন (রহ:)]