৫৭০ আবূবকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ), যূহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতূমতী হয়ে পড়ত তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশে সে পরিধেয় বস্ত্র ভাল করে বেধে নিত। তারপর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে মেলামেশা করতেন।
৫৭১ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) ও আলী ইবনু হুজর সা’দী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমাদের কেউ যখন ঋতূমতী হয়ে
পড়ত, তখন তার পূর্ণ হায়েযের সময়
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পরিধেয় বস্ত্র বেধে নেয়ার হুকুম দিতেন।
তারপর তার সাথে মেলামেশা করতেন। তিনি (আয়িশা (রাঃ) বলেন, তোমাদের মধ্যে কে তার কামভাব সেরুপ আয়ত্তে রাখতে
সক্ষম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরুপ তাঁর কামভাব আয়ত্তে রাখতে সক্ষম ছিলেন?
৫৭২ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর
স্ত্রীগণের সাথে পরিধেয় বস্ত্রের উপরে মেলামেশা করতেন যখন তাঁরা ঋতুমতী হতেন।
৫৭৩ আবূ তাহির (রহঃ),
হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ)
এবং আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী মায়মুনা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে
শুইতেন আর আমি তখন ঋতুমতী থাকতাম এবং আমার ও তার মধ্যে কেবলমাত্র একটি কাপড় থাকত।
৫৭৪ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (ব) উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একটি রেখামুক্ত চাঁদরের নিচে শুয়েছিলাম। ইতি মধ্যেই আমার হায়েয এল। আমি চুপিসারে উঠে
গিয়ে আমার হায়েয-এর কাপড় পরে নিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে
বললেন, তোমার কি হায়িয এসেছে?
আমি বললাম, হ্যা। তিনি “আমাকে (কাছে) ডাকলেন। অতঃপর আমি তাঁর
সাথে চাঁদরটির নিচে শুইলাম। রাবী বলেন, তিনি (উম্মূসা লামা) ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে
(পানি নিয়ে) জানবাত-এর গোসল করতেন।
৫৭৫ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
ইতিকাফ করতেন তখন আমার দিকে তার মাথা ঝুঁকিয়ে দিতেন। আমি তা আচড়ে দিতাম। (ইতিকাফ কালে)
তিনি ঘরে প্রবেশ করতেন না মানাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামক প্রয়োজন (যেমন পেশাব
পায়খানা) ছাড়া।
৫৭৬ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (ইতিকাফে থাকাকালীন) প্রয়োজনের জন্য ঘরে যেতাম। সেখানে রোগী থাকত। আমি চলতে
চলতেই তার খবরাদি জিজ্ঞেস করতাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে
থাকা অবস্হায় প্রয়োজন ছাড়া ঘরে যেতেন না। ইবনু রুমহ (‘তিনি- এর পরিবর্তে) বলেন,
‘যখন তাঁরা ইতিকাফে থাকতেন’…।
৫৭৭ হারুন ইবনু সাঈদ
আয়লী (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, (অনেক সময়) রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফে থাকা অবস্হায় মসজিদ থেকে তাঁর মাথা আমার দিকে
বের করে দিতেন। আমি তা ধুলে দিতাম। আর তখন আমি ঋতূমতী থাকতাম।
৫৭৮ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার
দিকে তাঁর মাথা এগিয়ে দিতেন। আমার হুজুরায় থেকে ঋতুমতী অবস্হায় আমি তাঁর মাথা আচড়ে
দিতাম।
৫৭৯ আবূবকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঋতুমতী অবস্হা- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর মাথা ধুয়ে দিতাম।
৫৮০ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ), আবূবকর ইবনু আবূ শায়বা
ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার
আমাকে বললেন, ‘মসজিদ থেকে আমার জায়সালাত
(নামায/নামাজ)টি (হাত বাড়িয়ে) নিয়ে এস’…। তিনি বলেন, আমি বললাম, আমি তো ঋতুমতী। তিনি বলেন, ‘তোমার হায়িয তো তোমার হাতে নয়”।
৫৮১ আবূ কুরায়ব (রহঃ)
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে জায়সালাত (নামায/নামাজ)
(হাতে বাড়িয়ে) তুলে নিয়ে আসতে আমাকে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম যে, আমি তো ঋতুমতী। তিনি বললেন, তুমি তা আমার কাছে নিয়ে আস। কারণ হায়িয তোমার হাতে
(লেগে) নাই।
৫৮২ যুহায়র ইবনু হারব,
আবূ কামিল ও মুহাম্মাদ ইবনু
হাতিম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মসজিদে থাকাবস্থায় বললেন, হে আয়িশা! আমাকে
কাপড় এনে দাও। তিনি (আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি তো ঋতুমতী। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার হায়িয তোমার হাতে নয়। অতঃপর তিনি তা এনে
দিলেন।
৫৮৩ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হায়িয অবস্হায় পানি পান করে সে পাত্র রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দিতাম। আমার মুখ লাগানো স্থানে তিনি তাঁর মুখ
লাগিয়ে পান করতেন। আমি হায়িয অবস্হায় হাড়ের টূকরা চুষে তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দিতাম। তিনি আমার মুখ লাগানো স্হানে তার মুখ লাগাতেন। যুহায়র
পান করার কথা উল্লেখ করেননি।
৫৮৪ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (অনেক সময়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমার হায়েয অবস্হায় আমার কোলে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করতেন।
৫৮৫ যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ)আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইয়াহুদীরা তাদের মহিলাদের
হায়েয হলে তার সঙ্গে এক সাথে আহার করত না এবং এক ঘরে বাস করত না। সাহাবায়ে কিরাম এ
সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন আল্লাহ
তায়াআলা এ আয়াত নাযিল করলেন: “তারা তোমার কাছে হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও
যে, তা হল নাপাক। সুতরাং হায়েয
অবস্হায় তোমরা মহিলাদের থেকে পৃথক থাকবে । এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, তোমরা (সে সময় তাদের সাথে)
শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ কর। এ খবর ইয়াহুদীদের কাছে পৌছলে। তারা বলল,
এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের
বিরোধিতা করতে চায়। অতঃপর উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) ও আববাদ ইবনু বিশর (রাঃ) এসে বললেন,
ইয়া রাসুলুল্লাহ! ইয়াহুদীরা
এ রকম এ রকম বলছে। আমরা কি তাদের সাথে (হায়িয অবস্হায়) সহবাস করব না? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর
চেহারা মূবারক বিবর্ণ হয়ে গেল। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি তাদের ওপর ভীষণ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা (উভয়ে)
বেরিয়ে গেল। ইতিমধ্যেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে দুধ হাদিয়া
এল। তিনি তাদেরকে ডেকে আনার জন্য লোক পাঠালেন। (তারা এলে) তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন।
তখন তারা বূঝল যে, তিনি তাদের ওপর রাগ
করেননি।
৫৮৬ আবূবকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমার বেশী বেশী মযী বের হত। আমি এ সম্পর্কে
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করতাম। কারণ
তাঁর কন্যা ছিল আমার বিবাহধীন (স্ত্রী। তাই আমি মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদকে (এ সম্পর্কে
জানতে) বললাম, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তিনি বললেন, সে তার পুরুষাঙ্গ ধুলে ফেলবে এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করে নেবে।
৫৮৭ ইয়াহইয়া ইবনু
হাবীব আল হারিসী (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে
মযী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করছিলাম ফাতিমার কারণে। তাই আমি মিকদাদকে বললাম,
তখন -তিনি তাঁকে এ ব্যাপারে
জিজ্ঞাসা করলেন তিনি বললেন, তাতে (মযী বেল হলে)
শুধু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে হয়।
৫৮৮ হারুন ইবনু সাঈদ
আল আয়লী ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)
বলেন, আমি একবার মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদকে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠালাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন যে, কোন লোকের মযী বের হলে সে তখন কি করবে? তিনি বললেন, উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে।
৫৮৯ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম একবার রাতে (ঘূম থেকে) উঠলেন, হাজত পূরণ করলেন, তারপর তার মুখমন্ডল
এবং উভয় হাত ধুইলেন। এরপর ঘুমিয়ে গেলেন।
৫৯০ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া আত তামীমী ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাপাক থাকা অবস্হায় যখন ঘূমাতে ইচ্ছা করতেন তখন ঘূমাবার
সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য যেরুপ উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে হয় সেরুপ উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করতেন।
৫৯১ আবূবাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন নাপাক থাকতেন তখন কিছু খাওয়া অথবা ঘুমাবার ইচ্ছা করলে উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করে নিতেন।
৫৯২ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না, ইবনু বাশশার ও উবায়দুল্লাহ
ইবনু মু’আয (রহঃ) শু’বা (রহঃ) সুত্রে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
৫৯৩ মুহাম্মাদ ইবনু
আবূ বাকর আল মুকাদ্দামী ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা
উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ!
আমাদের কেউ নাপাক অবস্হায় কি ঘূমাতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যা, যখন সে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে।
৫৯৪ মুহাম্মাদ ইবনু
রাফি (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত! উমর (রাঃ) একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর কাছে ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করলেন যে, আমাদের কেউ কি নাপাক অবস্থায় ঘূমাতে পারবে?
তিনি বললেন, হ্যা সে যেন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে তারপর ঘূমায়।
এরপর যখন ইচ্ছা গোসল করে নেয়।
৫৯৫ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বললেন, তিনি রাতে অপবিত্র
হন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তুমি (তখন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং তোমার লজ্জাস্হান
ধুয়ে ফেলবে তারপর ঘূমাবে।
৫৯৬ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আবূ কাছাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ)-কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর বিতর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি (সে সম্পর্কে) হাদীস বর্ণনা করলেন।
(তারপর) আমি বললাম, তিনি নাপাকের সময়
কি করতেন, তিনি কি ঘুমাবার আগে
গোসল করতেন, না গোসল করার আগে
ঘুমাতেন? তিনি (আয়িশা (রাঃ)
বললেন, সবই করতেন। কখনো গোসল করে
ঘূমাতেন আর কখনো উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নিতেন পরে ঘূমাতেন। আমি বললাম, সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি সব কাজেই অবকাশ
রেখেছেন।
৫৯৭ যুহায়র ইবনু হারব
ও হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) মু-আবিয়া ইবনু সালিহ (রহঃ)-এর সুত্রে উক্ত সনদে এ
হাদীসটি বর্ননা করেছেন।
৫৯৮ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও আমর
আন-নাকিদ (যর) আবূ সাঈদ খুদরি (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন
তার স্ত্রীর সাথে মিলবে তারপর আবার মিলতে ইচ্ছা করবে সে যেন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে
নেয়। আবূ বকর তার হাদীস “উভয় মিলনের মধ্যে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে” যদি সে পূনরায় মিলনের
ইচ্ছা করে বাক্যটি বাড়িয়েছেন।
৫৯৯ হাসান ইবনু আহমাদ
ইবনু আবূ শু’আয়ব আল হাররানী (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সকল স্ত্রীর কাছে যেতেন একই গোসলে।
৬০০ যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আনাস ইবনু ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সুলায়ম (রাঃ) যিনি ছিলেন (এ হাদীসের রাবী)
ইসহাকের দাদী-একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বললেন,
আয়িশা (রাঃ) তখন তাঁর কাছে
উপস্হিত ছিলেন-ইয়া রাসুলুল্লাহ! মেয়ে লোক যদি ঘূমে পুরুষে যা দেখে তাই দেখে তবে পুরুষে
যা করে তারও কি তাই করতে হবে বলে আপনি মনে করেন? তখন আয়িশা (রাঃ)বললেন, উম্মু সুলায়ম! তুমি নারী জাতিকে অপমানিত করেছ। তোমার
ডান হাতে মাটি লাগুক। (”হাতে মাটি লাগার” তার এ কথা ছিল ভাল উদ্দেশ্যে) অতঃপর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ)-কে বললেন, বরং তোমার ডান হাতে মাটি লাগুক। (এরপর উম্মু সুলায়ম
এর জবাবে বললেন) হ্যা, উম্মু সুলায়ম! সে
গোসল করে ফেলবে যখন ঐরুপ দেখবে”।
৬০১ আববাস ইবনুল ওয়ালদী
(রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে সেই মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, যে ঘূমে পুরুষ যা দেখে তাই দেখতে পায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, মেয়ে লোক যখন ঐরুপ দেখবে তখন
সে গোসল করবে। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, এ কথায় আমি লজ্জাবোধ করলাম। তিনি বললেন, এ রকমও কি হয়? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
হ্যা, তা না হলে ছেলে মেয়ে তার সদৃশ কোত্থেকে হয়?
পুরুষের বির্য্য, সাদা আর মেয়েলোকের বির্য্য পাতলা, হলুদ। উভয়ের মধ্য থেকে যার বির্য্য ওপরে উঠে যায়
অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়।
৬০২ দাউদ ইবনু রুশায়দ
(ব) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে সেই মেয়েলোক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, পুরুষ ঘূমের মধ্যে যা দেখতে পায় তাই দেখে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, পুরুষের যা হয় (স্বপ্নদোষ)
মেয়েলোকেরও তাই হলে সে গোসল করবে।
৬০৩ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া আত -তামীম (রহঃ) উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু সুলায়ম একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ!
আল্লাহ তা’আলা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না। তাই মেয়েলোকের যখন স্বপ্নদোষ হয় তখন
কি তার ওপর গোসল করা জরুরী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যা, যখন সে বীর্য্য দেখবে। (একথা শুনে) উম্মু সালামা
(রাঃ)বললেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ!
মেয়েলোকেরও স্বপ্নদোষ হয়? তিনি বললেন,
তোমার উভয় হাত ধুলিময় হোক!
তাহলে তার সন্তান কিসের দ্বারা তার সা’দৃশ হয়।
৬০৪ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ), যুহায়র ইবনু হারব
ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) থেকে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের অর্থের অনুরুপ বর্ণিত
আছে। তিনি আরো একটু বাড়ান যে, তিনি (উম্মু সালামা
(রাঃ) বললেন, তুমি নারী জাতিকে
লজ্জিত করেছ।
৬০৫ আবদুল মালিক ইবনু
শুআয়ব ইবনুল লাইস (রহঃ) উম্মুল মুনিনীন . আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি জানোান যে,
আবূ তালহার সন্তানদের মা উম্মু
সুলায়ম (রাঃ) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্থিত হয়ে
– হিশামের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসটিতে ব্যতিক্রম যা রয়েছে তা হল,
আয়িশা (রাঃ) বলেন,
আমি বললাম –‘তোমার অমঙ্গল
হোক! উহ! মেয়েলোক কি ঐরুপ দেখে–?
৬০৬ ইবরাহীম ইবনু
মূসা আর রাযী, সাহল ইবনু উসমান ও
আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে বলল, মেয়েলোকের যখন স্বপ্নদোষ
হবে এবং সে বীর্য্যরস দেখতে পাবে তখন কি সে গোসল করবে? তিনি বললেন, হ্যা। এরপর আয়িশা (রাঃ) মহিলাটিকে বললেন,
তোমার উভয় হাত ধুলিময় হোক
এবং তাতে অস্ত্রের খোচা লাগুক! তিনি (আয়িশা রা) বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, ছেড়ে দাও ওকে (ভৎসনা করো
না) সন্তানের মধ্যে মা-বাপের সা’দৃশ এর কারণেই হয়ে থাকে যখন মেয়েলোকের ডিম্বপুরুষের
বীর্য্যের ওপর প্রাধান্য লাভ করে, তখন সন্তানের আকৃতি
তার মাতৃকুলের অনুরুপ হয়। আর যখন পুরুষের বির্য্য মেয়েলোকের ডিম্বের ওপর প্রাধান্য
লাভ করে তখন তার আকৃতি পিতৃকুলের অনুরুপ হয়।
৬০৭ আল হাসান ইবনু
আলী আলহুল ওয়ানী (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আযাদকৃত গোলাম
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে দাঁড়িয়েছিলাম।
ইতিমধ্যেই ইয়াহুদীদের এক পণ্ডিত ব্যাক্তি এসে বলল, আসসালামু আলাইকা ইয়া মুহাম্মাদ! এরপর আমি তাকে এমন
এক ধাক্কা মারলাম যে, সে প্রায় পড়েই গিয়েছিল
আর কি! সে বলল, তুমি আমাকে ধাক্কা
মারলে কেন? আমি বললাম,
‘ইয়া রাসুলুল্লাহ – বলতে পার
না। ইয়াহুদী বলল, আমরা তাঁকে তাঁর পরিবার
পরিজন যে নাম রেখেছে সে নামেই ডাকি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
আমার নাম মুহাম্মাদ। আমার
পরিবারের লোকই আমার এ নাম রেখেছে। এরপর ইয়াহুদী বলল, আমি আপনাকে (কয়েকটি কথা) জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার কি লাভ হবে, যদি আমি তোমাকে কিছু বলি? সে বলল, আমি আমার কান পেতে শুনব। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে যে লাঠিটি ছিল তা দিয়ে মাটিতে আকা-ঝোকা করলেন। তারপর
বললেন, জিজ্ঞাসা কর। ইয়াহুদী বলল,
যেদিন এক যমীন ও আসমান পেল্টে
গিয়ে কি অন্য যমীন ও আসমানে পরিণত হবে (অর্থাৎ কিয়ামাত হবে) সেদিন লোকজন কোথায় থাকবে?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন; তারা সেদিন পুলসিরাতের
কাছে অন্ধকারে থাকবে। সে বলল, কে সর্ব প্রথম (তা
পার হবার) অনুমতি লাভ করবে? তিনি বললেন,
দরিদ্র মুহাজিরগন। ইয়াহুদী
বলল, জান্নাতে যখন তারা প্রবেশ
করবে তখন তাদের তোহফা কি হবে? তিনি বললেন,
মাছের কলিজার টুকরা। সে বলল,
এরপর তাদের সকালের নাস্তা
কি হবে? তিনি বললেন, তাদের জন্য জান্নাতের ষাড় যবেহ করা হবে যা জান্নাতের
আশে পাশে চরে বেড়াত। সে বলল, এরপরে তাদের পানীয়
কি হবে? তিনি বললেন, সেখানকার একটি ঝর্ণার পানি যার নাম ‘সালসাবীল’-।
সে বলল, আপনি ঠিক বলেছেন। সে আরো বলল
যে, আমি আপনার কাছে এমন একটি বিষয়
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছি যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া পৃথিবীর
কোন অধিবাসী জাননা অথবা একজন কি দুইজন লোক ছাড়া। তিনি বললেন, আমি, যদি তোমাকে তা বলে দই তাতে তোমার কি কোন উপকার হবে? সে বলল, আমি এ আমার কান পেতে শুনব। সে বলল, আমি আপনাকে সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছি।
তিনি বললেন, পুরুষের বীর্য্য সাদা
এবং মেয়েলোকের বীর্য্য হলুদ। যখন উভয়টি একত্রিত হয়ে যায় এবং পুরুষের বীর্য্য মেয়েলোকের
ডিম্বের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে তখন আল্লাহর হুকুমে পূত্র সন্তান হয়। আর যখন মেয়েলোকের
ডিম্বপুরুষের বীর্যের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে তখন আল্লাহর হুকুমে কন্যা সন্তান হয়।
ইয়াহুদী বলল, আপনি ঠিকই বলেছেন
এবং নিশ্চয়ই আপনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । এরপর সে চলে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ লোক আমার কাছে যা জিজ্ঞাসা করেছে, ইতিপূর্বে আমার সে সম্পর্কে কোন জ্ঞানই ছিল না। আল্লাহতায়ালা এক্ষণে আমাকে তা
জানিয়ে দিলেন।
৬০৮ আবদুল্লাহ ইবনু
আবদুর রহমান আদ দারিমী (রহঃ) মু’আবিয়া ইবনু সালাম থেকে এই সনদে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
তবে তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। রাবী যায়িদা তিনি আরো বলেছেন, মাছের কলিজার টূকরা। এবং তিনি ও শব্দ দু’টোকে দ্বিবচন
ব্যবহার না করে একবচন ব্যবহার করেছেন।
৬০৯ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াইয়া আত তামীমী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন প্রথমে উভয় হাত ধূইতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি
ঢেলে লজ্জাস্হান ধুইতেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ
(ওজু/অজু/অযু) করতেন। তারপর পানি নিয়ে তাঁর আঙ্গুল গুলো চুলের গোড়ায় ঢুকাতেন। এমনিভাবে
যখন মনে করতেন যে, তা ভিজে গেছে তখন
মাথায় তিন আজলা পানি ঢালতেন! তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিতেন। তারপর তাঁর উভয় পা
ধুয়ে ফেলতেন।
৬১০ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ, যুহায়র ইবনু হারব,
আলী ইবনু হুজর ও আবূ কুরায়ব
হিশাম থেকে অনুরুপ সনদে উক্ত হাদীসটি বর্নিত আছে। তবে তাদের হাদীসে পা ধোয়ার কথা উল্লেখ
নেই।
৬১১ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুল জানবাত থেকে গোসল কালে প্রথমে তাঁর উভয় হাত
কবজি পর্যন্ত তিনবার ধূইতেন। এরপর আবূ মূআবিয়ার (এই অনুচ্ছেদের প্রথম) হাদীসের অনুরুপ
উল্লেখ করেন। তবে তিনি অনুরুপ উল্লেখ করলেও উভয় পা ধোয়ার ধোয়ার কথা উল্লেখ করেননি।
৬১২ আমর আন নাকিদ
(রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানবাত
থেকে গোসল করতেন তখন পাত্রে হাত ঢুকানোরপূর্বে প্রথমেই তার উভয় হাত ধুইতেন তারপর সালাত
(নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন।
৬১৩ আলী ইবনু ইবনু
হুজর আস সা’দী (রহঃ) আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার খালা মায়মুনা (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেন
যে, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানবাত থেকে গোসলের জন্য পানি এগিয়ে দিলাম। তিনি উভয় হাতের কজা
পর্যন্ত দুইবার অথবা তিনবার ধুইলেন। তারপর উভয় হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন তারপর লজ্জাস্হানে
পানি ঢেলে দিলেন এবং বাম হাত দিয়ে তা ধুয়ে ফেললেন। তারপর তাঁর বাম হাত ভাল করে ঘষলেন।
তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর
আজলা ভরে তিন আজলা পানি মাথার ওপর ঢেলে দিলেন। তারপর তাঁর উভয় পা ধূইলেন। তারপর আমি
তাকে রুমাল দিলাম, কিন্তু তিনি তা :ফেরত
দিলেন।
৬১৪ মুহাম্মাদ ইবনু
সাববাহ, আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা,
আবূ কুরায়ব, আশাজ্জ ও ইসহাক প্রত্যেকেই ওয়াকী থেকে এবং ইয়াহইয়া
ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ কুরায়ব আবূ মু’আবিয়া থেকে উভয়ে আমাশ থেকে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা
করেন। তরে তাদের উভয়ের হাদীসে তিনি আজলা পানি মাথায় ঢেলে দেয়ার কথা নেই। আর ওয়াকী-এর
হাদীসে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পূর্ণ বিবরণ দেয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি কুলি করা এবং নাকে পানি
দেয়ার কথা তার হাদীসে উল্লেখ করেছেন। আবূ মুআবিয়া’র হাদীসে রুমালের কথা উল্লেখ নেই।
৬১৫ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে
রুমাল দেয়া হল, কিন্তু তিনি তা স্পর্শ
করলেন না। তিনি পানি নিয়ে এরুপ করছিলেন অর্থাৎ পানি ঝেড়ে ফেলছিলেন।
৬১৬ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না আল আনাযী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন হিলাব (দুধ দোহন করার পাত্র) এর ন্যায় একটি পানির পাত্র
চেয়ে নিতেন। অতঃপর তা হাত দিয়ে ধরে প্রথমে মাথার ডান দিকে ঢালতেন তারপর বাম দিক,
তারপর উভয় হাত দিয়ে পানি নিয়ে
মাথায় বহায়ে দিতেন।
৬১৭ ইয়াহইয়াহ ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এক ফারাক পরিমাণ পাত্রের পানি দিয়ে জানবাতেরগোসল করতেন।
৬১৮ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ, ইবনু রুমহ, আবূ বাকর আবূ শায়বা, আমর আননাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রহঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ফারাক পরিমাণ
পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করতেন। আর আমি এবং তিনি একই পাত্রে গোসল করতাম। সুফিয়ানের
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে ‘একই পাত্র থেকে”। কুতায়বা বলেন, সুফিয়ান বলেছেন, ফারাক হল তিন সা’র [১] পরিমাণ। [১] এক সা প্রায়
সাড়ে তিন সেরের বররের ওজন বিশেষ।
৬১৯ উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আয আল আম্বারি (রহঃ) আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি এবং আয়িশা (রাঃ)-এর রিযাঈ
(দুধ) ভাই একবার তার কাছে গেলাম। অতঃপর তাঁর রিযাঈ ভাই তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জানবাতের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি একটি পাত্র আনালেন
যা ছিল সা, পরিমান। তারপর তিনি
গোসল করলেন। আমাদের এবং তাঁর মধ্যে পর্দা ছিল তিনি তাঁর মাথায় তিনবার পানি ঢাললেন।
আবূসালামা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রীগণ মাথার এর চুল কেটে তা ওয়াফরার ন্যায় (ঘাড়ের নিম্নভাগ
পর্যন্ত) রাখতেন।
৬২০ হারুন ইবনু সাঈদ
আয়লী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
গোসল করতেন তখন ডান হাত শুরু করতেন। তিনি প্রথমেই ডান হাতে পানি ঢেলে তা ধূয়ে ফেলতেন।
তারপর ডান হাত দিয়ে শরীরের যেখানে নাপাক থাকত সেখানে পানি ঢেলে দিতেন এবং বাম হাত দিয়ে
তা ধুয়ে ফেলতেন। এটা শেষ করে তিনি মাথায় পানি ঢালতেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
উভয়েই জানবাত অবস্হায় একই পাত্র থেকে (পানি দিয়ে) গোসল করতাম।
৬২১ মুহাম্মাদ ইবনু
রাফি (রহঃ) আয়িশা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে গোসল করতেন
যাতে তিন মুদদ বা তার সামান্য কম পানি ধরত।
৬২২ আবদুল্লাহ ইবনু
মাসলাম ইবনু কা’নাব আয়িশা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একি পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) গোসল করতাম। আমাদের উভয়ের হাত ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তাতে লাগত।
এ গোসল ছিল জানবাত থেকে।
৬২৩ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে টূ “? ছত্র থেকে গোসল করত
যা আমার এবং তাঁর মাঝখানে থাকত। তিনি আমার থেকে আগে তাড়াতাড়ি ষূফলতেন। তখন আমি বলতাম,
আমার জন্য একটু রেখে দিন,
আমার জন্য একটু রেখে দিন।
তিনি (আয়িশা (রাঃ) বলেন, যে তাঁরা উভয়েই জানবাত
অবস্হায় ছিলেন।
৬২৪ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রাঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
মায়মূন (রাঃ) আমাকে জানোান
যে, তিনি ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্রে গোসল করতেন।
৬২৫ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকেবর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়মুনা
(রহঃ)-এর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে গোসল করেন।
৬২৬ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) উম্মু সালামা (রহঃ) থেকে থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, তিনি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একই পাত্রে জানবাতেরগোসল করতেন।
৬২৭ উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আয (রহঃ) ও ইবনুল (রহঃ) আনাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন , রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ
মাককুক পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং এক মাককুক পানি দিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন। (মাককুক
শব্দ দ্বাবা এখানে হয়ত মুদূদ বুঝানো হয়েছে)। ইবনুল মূসান্না এর স্হানের, বলেছেন ইবনু মু’আয বলেছেন। কিন্তু এর সাথে করেননি।
৬২৮ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
মুদ্দ পানি দিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন। এক’সা থেকে পাঁচ মুদ্দ পর্যন্ত পানি দিয়ে
গোসল করতেন।
৬২৯ আবূ কামিল আল
জাহদারী (রহঃ) ও আমর ইবনু আলী (রহঃ) সাফীনা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক’সা পানিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর জানবাতের গোসল সস্পন্ন হয়ে যেত এবং এক মুদ্দ পানিতে উযূ (ওজু/অজু/অযু) হয়ে যেত।
৬৩০ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর সাহাবী আবূ বাকর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
সা- পানি দিয়ে গোসল এবং এক মুদ্দ পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন (উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন।
বর্ণনাকারী আবূ রায়হানা বলেন, সাফীনা (রহঃ) বৃদ্ধ
হয়ে গিয়েছিলেন। তাই তার হাদীসের উপর আমি আস্হা স্হাপন করতে পারছি না।
৬৩১ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ), কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) যুবায়র ইবনু মুতঈম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে লোকেরা গোসল নিয়ে তর্ক বিতর্ক করতে লাগল। কেউ কেউ বলল,
আমিতো মাথা এরকম এরকমভাবে
ধুই। তখন রাসুল বললেনঃ আমি তো আমার মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দেই।
৬৩২ মুহাম্মাদ ইবনু
বাশশার (রহঃ) জুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
কাছে একবার জানবাত থেকে গোসলের আলোচনা করা হলে তিনি বললেন আমি তো আমার মাথায় তিনবার
পানি ঢেলে দই।
৬৩৩ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) ও ইসমাঈল ইবনু সালিম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,
সাকীফ-এর প্রতিনিধি দল রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে জিজ্ঞেস করল, আমাদের দেশ হল শীত প্রধান দেশ। সুতরাং কিভাবে গোসল
করতে হবে? তিনি বললেন,
আমি তো আমার মাথায় তিনবার
পানি ঢেলে দেই। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া এবং ইবনু সালিমের বর্ণনার মানে শব্দগত কিছু পার্থক্য
আছে, কিন্তু অর্থের দিক থেকে কোন
পার্থক্য নেই।
৬৩৪ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন তাঁর মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দিতেন। (এ হাদীস শুনে) হাসান
ইবনু মুহাম্মাদ তাকে [জাবির (রাঃ)] বললেন, আমার চুল খুব বেশী। জাবির (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি তাকে বললাম ভ্রাতষ্পূত্র! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
–এর চুল তোমার চুলের চেয়ে অনেক বেশী এবং অনেক সুন্দর ছিল।
৬৩৫ আবূ বকর ইবনু
আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ,
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইবনু
আবূ উমর (রাঃ) উম্মু সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার মাথার বেনী তো খুবই মোটা
এবং শক্ত। আমি কি জানবাতের গোসলের জন্য তা খুলে ফেলব? তিনি বললেন, না, তোমার মাথায় কেবল তিন আজলা পানি ঢেলে দিলেই চলবে। এরপর তোমার সর্বাঙ্গে পানি ঢেলে
দিবে। এ ভাবেই তুমি পবিত্রতা অর্জন করবে।
৬৩৬ আমর আন নাকিদ
ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত আছে। আবদুল রাযযাকের
হাদীসে রয়েছে যে, ‘আমি কি তা হায়িয ও
জানবাতের গোসলের জন্য খূলব? তিনি বললেন,
না”। এরপর ইবনু উয়ায়নার (উপরোক্ত)
হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৬৩৭ আহমাদ ইবনু সাঈদ
আদ দারিমী (রহঃ)-এর সুত্রে আইউব ইবনু মূসা (রহঃ) থেকে এ সনদে হাদীসটি বর্ণিত আছে। সেখানে
উল্লেখ আছে যে, ‘আমি কি তা খুলে তারপর
জানবাত থেকে গোসল করব? সেখানে তিনি হায়েযের
কথা উল্লেখ করেননি।
৬৩৮ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া, আবূ বাকর ইবনু আবূ
শায়বা ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে সংবাদ
পৌছল যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর
(রাঃ) মাহীলাদেরকে গোসলের সময় মাথার চুল (বেনী) খুলে ফেলতে আদেশ দেন। তিনি (আয়িশা
(রাঃ) বললেন, ইবনু আমরের পক্ষে
এ বড়ই আশ্চর্য যে, সে মহিলাদেরকে গোসলের
সময় তদের চুল খুলে ফেলার আদেশ দেয়। সে তাদেরকে একেবারে মাথা মুড়ে ফেলতে আদেশ দেয় না
কেন! আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে গোসল করতাম।
আমি আমার মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেয়ার বেশী কিছু করতাম না।
৬৩৯ আমর ইবনু মুহাম্মাদ
আন নাকিদ ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) আয়িশা (রহঃ) থেকে বর্ণিত! এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল যে, কিভাবে সে তার হায়িয থেকে গোসল করবে? হাদীসের রাবী, বলেন, আয়িশা (রহঃ) উল্লেখ করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভদ্রমহিলাকে
সে কিভাবে গোসল করবে, তারপর সুগন্ধযুক্ত
কাপড় বা তুলা ব্যবহার করে তদ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে এসবই শিক্ষা দিলেন। মহিলা টি
বলল, তা (সুগন্ধযুক্ত কাপড়) দ্বারা
আমি কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করব? তিনি বললেন,
তার দ্বারা পবিত্রতা অর্জন
করবে, সুবহান আল্লাহ! (এত সোজা
কথাও বোঝ না)। এরপর তিনি (মুখ) আড়াল করলেন। (রাবী বলেন) সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না তার মুখের
ওপর হাত দিয়ে আমাদেরকে ইশারা করে দেখালেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তাকে আমার দিকে টেনে আনলাম। আর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বুঝাতে চাচ্ছেন তা আমি বুঝে ফেললাম। অতঃপর আমি
(মহিলাটিকে) বললাম, তুমি তা (সুগন্ধযুক্ত
কাপড় বা তুলা) রক্তের স্হানে (লজ্জাস্হানে) ঝুলিয়ে নিবে। ইবনু আবূ উমর তার বর্ণনায়
– এর স্হানে বলেছেন।
৬৪০ আহমাদ ইবনু সাঈদ
আদ দারিমী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে জিজ্ঞাসা করল সে তুহর (হায়িয থেকে পবিত্র)-এর সময় কিভাবে গোসল করবে?তিনি বললেন, একখন্ড সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা তদ্বারা পবিত্রতা
অর্জন করবে। এরপর সুফিয়ানের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
৬৪১ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আসমা (রাঃ) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে হায়েযের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। বললেন, তোমাদের কেউ পানি এবং বরই-এর পাতা নিয়ে সুন্দরভাবে
পবিত্র হবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভালভাবে রগড়ে ফেলবে যাতে সমস্ত চুলের গোড়া
পর্যন্ত পৌছে যায়। তারপর তার ওপর পানি ঢেলে দিবে। তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় নিয়ে তদ্বারা
পবিত্রতা অর্জন করবে। আসমা বলল তা দিয়ে সে কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে? তিনি বললেন, সুবহান আল্লাহ! তা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করবে। অতঃপর
আয়িশা (রাঃ) তাঁকে যেন চুপিচুপি বলেন দিলেন, রক্ত বের হবার জায়গায় তা ঝুলিয়ে দিবো সে জানবাতের
গোসল সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেন, পানি তদ্বারা সুন্দরভাবে পবিত্র হবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভাল করে রগড়ে
ফেলবে যাতে চুলের গোড়ায় পানি পৌছে যায়। তারপর সর্বাঙ্গে পানি বইয়ে দিবে। আয়িশা (রহঃ)
বললেন, আনসারদের মহিলারা কত ভাল!
লজ্জা তাদেরকে দ্বীন-এর জ্ঞান থেকে ফিরিয়ে রাখে না।
৬৪২ উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আয (রহঃ)শু’বা থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
সূবহান আল্লাহ। তদ্বারা পবিত্রতা
অর্জন করবে, এবং তিনি আড়াল করলেন।
৬৪৩ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আসমা বিনতে শাকাল রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!
আমাদের কেউ যখন হায়িয থেকে পবিত্র হবে তখন সে কি ভাবে গোসল করবে? এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে
এ হাদীসটির মধ্যে জানবাতের গোসলের কথা উল্লেখ করেননি।
৬৪৪ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমা বিনতে আবূ হুবায়শ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার ইসতিহাযা হয়েছে (সব সময়ই
রক্ত ঝরে) কখনো আমি পবিত্র হই না। আমি কি সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে দেব? তিনি বললেন, না, ওটা শিরার , (ধমনী) রক্ত,
হায়িয নয় যখন হায়িয আসবে তখন
সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে দেবে আর যখন তা চলে যাবে তখন তোমার শরীর থেকে রক্ত ধুয়ে ফেলবে
এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
৬৪৫ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) জারীর থেকে বর্ণিত যে, ফাতিমা বিনতে আবূ হুবায়শ ইবনু আবদুল মুত্তালিব ইবনু আসা’দ যিনি আমাদের বংশের একজন
মহিলা ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন ।
৬৪৬ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবা বিনতে জাহশ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মাসআলা জানতে চেয়ে বলল, আমার ইস্তিহাযা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওটা হল একটা শিরার
(ধমনী) রক্ত। তাই তুমি গোসল করে ফেলবে তারপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে। এরপর
সে প্রতি সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময়ই গোসল করত। রাবী নায়স ইবনু সা’দ বলেন,
ইবনু শিহাব (রহঃ) একথা উল্লেখ
করেননি, যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু
হাবীবাকে প্রত্যেক সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময়ই গোসলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বরং এটা
সে নিজের থেকেই করত। ইবনু রুমহ তার বর্ণনায় জাহশের কন্যার কথা বলেছেন উম্মু হাবীবার
নাম উল্লেখ করেননি।
৬৪৭ মুহাম্মাদ ইবনু
সালামা আল মুরাদী (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর শ্যালিকা
এবং আবদুর রহমান ইবনু আওফের স্ত্রী উম্মু হাবীবা বিনতে জাহশ (রাঃ) সাত বৎসর যাবত “ইসতিহাযার
রোগী ছিলেন। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ ব্যাপারে মাসআলা
জানতে চাইলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা হায়িয নয়, বরং ধমনীর (শিরা) রক্ত। তাই তুমি গোসল করে ফেল এবং
সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি তার বোন যায়নাব বিনতে জাহশের কক্ষে একটি
পাত্রে (থেকে পানি নিয়ে) গোসল করতেন। এমনকি পানি রক্তে লাল হয়ে যেত। ইবনু শিহাব বলেন,
আমি এ হাদীসটি আবূ বাকর ইবনু
আবদুর রহমান ইবনুল হারিস ইবনু হিশাম-এর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তা’আলা হিন্দা-এর ওপর রহমত করুন সে যদি এ
ফাতওয়া (মাসআলা) শুনতে পেত! আল্লাহর কসম! সে শুধু কাঁধত। কারণ সে সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করত না (এ মাস’আলা তার জানা ছিলনা। ফলে সালাত (নামায/নামাজ) পড়তে না পারার কারণে
কাঁধত )।
৬৪৮ আবূ ইমরান মুহাম্মাদ
ইবনু জাফর ইবনু যিয়াদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবা বিনত জাহশ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। আর সাত বছর ধরে তার ইসতিহাযা চলছিল। এরপর রাবী আবূ ইমরান
আমর ইবনুল হায়িসের হাদীসের অনুরুপ পর্যন্ত বর্ণনা করে যান এর পরবর্তী অংশ তিনি উল্লেখ
করেননি।
৬৪৯ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জাহশের কন্যার সাত বছর যাবত ইসতিহাযা ছিল। এরপর
পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত।
৬৫০ মুহাম্মদ ইবনু
রুমহ (রহঃ) আয়িশা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। এরপর আয়িশা (রহঃ) বলেন, আমি তার পাত্র দেখেছি রক্তে পরিপূর্ণ। এরপর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার হায়েয যে কয়দিন চলত, সে কয়দিন পরিমাণ তুমি অপেক্ষা কর। তারপর গোসল করে
ফেল এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর।
৬৫১ মূসা ইবনু কুরায়শ
আত তামীমী (রহঃ) উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবা বিনতে জাহশ (রাঃ) যিনি আবদুর রহমান
ইবনু আওফ (রাঃ)-এর স্ত্র ছিলেন-একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-এর কাছে রক্ত সম্পর্কে অভিযোগ করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে
বললেন, তোমার যে কয়দিন হয়েয চলত,
সে কয়দিন পরিমাণ তুমি অপেক্ষা
কর। তারপর গোসল কর। এরপর তিনি প্রতি সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময়ই গোসল করতেন।
৬৫২ আবূ রাবী আযযাহরানী
(রহঃ) মু’আজা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা। আয়িশা
(রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করল, আমাদের কেউ কি তার
হায়িয এর দিনগুলির সালাত (নামায/নামাজ) কাযা করবে? আয়িশা (রাঃ) বললেন, তুমি কি হারুরিয়্যা (খারেজী)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
যুগে আমাদের কারো হায়িয হলে পরে তাকে (সালাত (নামায/নামাজ) কাযা করার নির্দেশ দেয়া
হত না।
৬৫৩ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) মু’আযা থেকে বর্ণিত যে, তিনি আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করলেন ঋতুমতী মহিলা কি সালাত (নামায/নামাজ) কাযা
করবে? আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন
তুমি কি হারুরিয়্যা? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পত্নীগণের হায়েয হত, কি তাদেরকে (সালাত (নামায/নামাজ)
কাযা করার হুকুম দিয়েছেন?
৬৫৪ আবদ ইবনু হুমায়দ
(রহঃ) মু’আযা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করলাম, ঋতুমতী কি হুকুম? সে কি সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কাযা করবে এবং
সালাত (নামায/নামাজ) কাযা করবে না? তিনি বললেন ,
তুমি কি হারুরিয়্যা?
আমি বললাম, আমি হারুরিয়্যা নই, বরং আমি (জানার জন্যই কেবল) জিজ্ঞাসা করছি। তিনি
(আয়িশা রা) বললেন , আমাদের এরুপ হত তখন
আমাদের কে কেবল সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত, সালাত (নামায/নামাজ) কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত
না।
৬৫৫ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) উম্মূ হানী বিনতে আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতহে মক্কার বছর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন আমি তাঁকে এই অবস্হায় পেলাম যে, তিনি গোসল করছিলেন আর তার কন্যা ফাতিমা একটি কাপড়
দিয়ে তাঁকে আড়াল করে রেখেছিল।
৬৫৬ মুহাম্মাদ ইবনু
রুমহ ইবনু মুহাজির (রহঃ) উম্মু হানী বিনতে আবূ তালিব (রহঃ) থেকে বর্নিত। ফাতহে মক্কার
বছর তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এলেন। তিনি তখন মক্কার
-উচু এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করতে
গেলে ফাতিমা তাঁকে আড়াল করে দিল। এরপর তিনি নিজের কাপড় নিয়ে পরিধান করলেন। তারপর আট
রাকআত চাশতের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
৬৫৭ আবূ কুরায়ব (রহঃ)
সাঈদ ইবনু আবূ হিনদ (রাঃ) থেকে এ সনদে বর্ণিত। এবং তিনি বলেন, এরপর তাঁর কন্যা ফাতিমা তাঁর কাপড় দিয়ে তাঁকে আড়াল
করে রেখেছিল। গোসল সমাপন করে তিনি ঐ কাপড় নিয়ে পরিধান করলেন। তারপর দাঁড়িয়ে আট রাকআত
সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর সেটা ছিল চাশতের সময়।
৬৫৮ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
আল হানযালী (রহঃ) মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-এর জন্য পানি রাখলাম এবং তাকে আড়াল করলাম। এরপর গোসল করলেন।
৬৫৯ আবূ বকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন পুরুষ অপর পুরুষের
সতরের দিকে তাকাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সতরের দিকে তাকাবে না; কোন পুরুষ অপর পুরুষের সাথে এক কাপড়ের নিচে শয়ন
করবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে একই কাপড়ের নিচে শয়ন করবে না।
৬৬০ হারুন ইবনু আবদুল্লাহ
ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) যাহহাক ইবনু উসমান (রহঃ) সুত্রে উক্ত সনদে হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন। তারা উভয়েই এর স্হলে এর উল্লেখ করেছেন।
৬৬১ মুহাম্মাদ ইবনু
রাফি (রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ থেকে বর্ণিত। তিনি কয়েকটি হাদীসের উল্লেখ করে বলেন,
এগুলী আবূ হুরায়রা (রাঃ) মুহাম্মাদুর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে
একটি হল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বনী ইসরাঈলরা উলঙ্গ
হয়ে গোসল করত এক অপরের সতরের দিকে তাকাত। আর মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গোসল করতেন
একাকী। তাই তারা বলাবলি করত, আল্লাহর কসম! মূসা
আমাদের সাথে গোসল করে না কারণ তার একশিরা রোগ রয়েছে। একবার তিনি গোসল করতে গিয়ে
একটি পাথরের ওপর তাঁর কাপড় রাখলেন। এরপর পাথরটি তার কাপড় নিয়ে দৌড়াতে লাগল। রাবী বলেন,
মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তার পিছু পিছু ছুটলেন আর বলতে লাগলেন, পাথর! আমার কাপড়, পাথর! আমার কাপড়।
এমনিভাবে বনী ইসরাঈলরা মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর সতর দেখে ফেলল এবং তারা বলল,
আল্লাহর কসম! মূসা র তো কোন
খুত নেই। এরপর পাথর দাঁড়িয়ে গেল এবং তাঁকে দেখা হয়ে গেল। রাবী বলেন, এরপর তিনি তাঁর কাপড় তুলে নিলেন এবং (রাগে) পাথরকে
মারতে শুরু করে দিলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! পাথরের ওপর . মূসা (আ )-এর আঘাতের
ছয়টি কি সাতটি চিহ্ন রয়েছে।
৬৬২ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
আল হানযালী ও মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মায়মূন (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন কাবা নির্মাণ
করা হচ্ছিল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আব্বাস (রাঃ) পাথর বয়ে
নিয়ে যাচ্ছিলেন। আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন
, পাথর বহনের সুবিধার্থে তোমার
লুঙ্গি কাঁধের ওপর তুলে নাও। এরপর তিনি এরুপ করলেন। সাথে সাথেই তিনি (বেহুশ হয়ে) মাটিতে
পড়ে গেলেন। আর তার উভয় চোখ আকাশের দিকে নিবদ্ধ হল। তারপর তিনি দাড়িয়ে বললেন ,
আমার লুঙ্গি! আমার লুঙ্গি!
এর পর তার লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল। ইবনু রাফি তাঁর রিওয়ায়েতে কাঁধের স্হলে ঘাড়ের উল্লেখ
করেছেন।
৬৬৩ যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের
সাথে কা’বা মেরামতের জন্য পাথর বয়ে নিচ্ছিলেন। আর তাঁর পরনে ছিল লুঙ্গি। এরপর তাঁর
চাচা আব্বাস (রাঃ) তাঁকে বললেন , ভাতিজা! তোমার লুঙ্গি
খূলে যদি কাঁধের ওপর পাথরের নিচে রেখে নিতে (তাহলে খুবই ভাল হত)। তিনি লূঙ্গি খূলে
তার কাঁধের ওপর রাখলেন। সাথে সাথেই বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। জাবির (রাঃ) বলেন,
সেদিনের পর থেকে আর কখনো উলঙ্গ
দেখা যায়নি।
৬৬৪ সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া
আল উমাবী (রহঃ) মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আমি একটি ভারী পাথর বয়ে নিয়ে আসছিলাম। আর তখন আমার
পরনে ছিল একটি পাতলা লুঙ্গি। তিনি বলেন, এরপর আমার লুঙ্গি খুলে গেল। পাথরটি তখন আমার কাছে ছিল। তাই আমি লুঙ্গি তুলে নিতে
পারলাম না। এমনিভাবে আমি পাথরটি যথাস্হানে নিয়ে গেলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , তোমার কাপড়ের কাছে
ফিরে গিয়ে তা নিয়ে এস। আর কখনো উলঙ্গ চলোনা।
৬৬৫ শায়বান ইবনু ফাররুখ
ও আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আসমা আদ দুবাঈ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রহঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সাওয়ারির উপরে তাঁর পেছনে বসালেন। অতঃপর তিনি
চুপিচুপি আমাকে একটা কথা বললেন , যা আমি কাউকে বলব
না। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাজত পূরনের সময় যা দিয়ে আড়াল
করতেন তার মধ্যে বেশী পছন্দনীয় ছিল টিলা অথবা ক্ষেতের গাছ।
৬৬৬ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আইউব,
কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ)
আবূ সাঈদ খুদরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক সোমবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সাথে (মসজিদে) কুবা’র দিকে রওয়ানা হলাম। আমরা যখন বানূ সালিম-এর এলাকায়
পৌছিলাম তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতবান-এর বাড়ীর দরজায় গিয়ে
থামলেন এবং তাকে জোরে ডাক দিলেন ও অতঃপর তিনি তার লুঙ্গি মাটি দিয়ে টানতে টানতে বেরিয়ে
এলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , আমরা এ ব্যাক্তিকে তাড়াহুড়ার মধ্যে ফেলেছি। ইতবান
আরয করলেন , ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রী থেকে তাড়াতাড়ি পৃথক হয়ে গেলে এবং ধাতু
নির্গত না হলে তার কি হুকুম (সে গোসল করবে কিনা)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন
, পানি (অর্থাৎ গোসল করা) পানির
(বীর্য্য) ফলেই ফরয হবে।
৬৬৭ হায়ীন ইবনু সাঈদ
আল আয়লী (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, পানির (ধাতু নির্গত
হলে) দ্বারা পানি (গোসল) ফরয হয়।
৬৬৮ উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আয আল আন্বারী (রহঃ) আবূ ল আলা ইবনু শিখখীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর এক হাদীস অপর হাদীসকে মানসূখ (রাতে) করে দেয় যেমনিভাবে কুরআনের
এক আয়াত অপর আয়াতকে মানসূখ করে।
৬৬৯ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না
এবং ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরি (রাঃ)থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারীর (বাড়ীর) কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সংবাদ পাঠালেন। সে বেরিয়ে এল আর তার মাথা থেকে তখন ফোঁটা পানি
ঝরছিল। তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , সম্ভবত আমরা তোমাকে তাড়াহুড়োর মধ্যে ফেলেছি। সে
বলল, হ্যা, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন , যখন (কোন কারণে) তোমাকে তাড়াতাড়ি করতে হয় বির্য্য
নির্গত হবার আগেই উঠে পড়তে হয়। অথবা বীর্য্য ঠেকিয়ে রাখ তখন তোমার ওপর গোসল করা (ফরয)
বরং তোমার ওপর শুধু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা জরুরী। [১] [১] এই হুকুম ইসলামের প্রাথমিক
যূগে ছিল পরে তা রদ হয়ে যায়। সঙ্গমে বীর্য স্খলিত না হলেও গোসল ফরয হবে।
৬৭০ আবূ র-এরাবী আযযাহরানী
(রহঃ) উবাই ইবনু কাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে জিজ্ঞাসা করলাম সেই ব্যাক্তি সম্পর্কে যে ন্ত্রী সহবাস করে তারপর বীর্য্য নির্গত
করে না। তিনি বললেন , ন্ত্রীর (লজ্জাস্থান)
থেকে তার (লজ্জাস্হানে) যা লেগেছে তা ধুয়ে ফেলবে। তারপ উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে এবং
সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
৬৭১ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) উবাই ইবনু কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। যে ব্যাক্তি তার স্ত্রী সহবাস করে
তারপর বীর্য নির্গত করে না-তার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে, সে তার লজ্জাস্হান ধুয়ে ফেলবে এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করবে।
৬৭২ যূহায়র ইবনু হারব
ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) যায়িদ ইবনু খালিদ আন জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার
উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করেন কোন ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে সহবাস
করে এবং বীর্য নির্গত না করে তবে তার হুকুম কি? উসমান (রাঃ) বললেন , সে সালাত (নামায/নামাজ)-এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায়
উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে এবং তার লজ্জাস্হান ধুয়ে ফেলবে। উসমান (রাঃ) বলেন,
আমি এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।
৬৭৩ আবদুল ওয়ারিস
ইবনু আবদুস সামাদ আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে এরুপ শুনেছেন।
৬৭৪ যুহায়র ইবনু হারব
ও আবূ গাসসান আল মিসমাঈ, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না
ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম , বলেন, যখন কেউ তার স্ত্রীর চার হাত-পায়ের মাঝখানে বসবে
এবংতার সাথে মিলবে তখন তাঁর ওপর গোসল ফরয হবে। মাতার এর হাদীসে যদিও বীর্য নির্গত না
করে-বাক্যটি অতিরিক্ত রয়েছে। যুহায়র (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় বলেছেন।
৬৭৫ মুহাম্মাদ আমর
ইবনু আববাদ ইবনু জাবানা ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্নার সুত্রে কাতাদা থেকে অনুরুপ বর্ণিত
আছে। তবেশু’বার হাদীসে “তারপর মিলিত হয় কথাটির উল্লেখ আছে। কিন্তু যদিও বীর্য নির্গত
না করে -কথাটির উল্লেখ নেই।
৬৭৬ মুহাম্মাদ ইবনুল
মূসান্না (রহঃ) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাজির ও আনসারদের একটি দল এ ব্যাপারে মতবিরোধ
করল। আনসারগণ বলল সবেগে অথবা স্বাভাবিক গতিতে নির্গত পানি (বীর্য) বের হওয়া ছাড়া গোসল
ফরয হয় না। আর মুহাজিরগণ বলল, স্ত্রীর সঙ্গে শুধু
মিললেই গোসল ফরয (বীর্য বের হোক বা না হোক)। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন , আমি এ ব্যাপারে তোমাদেরকে শান্ত করছি। এরপর আমি
উঠে গিয়ে . আয়িশা (রাঃ) -এর কাছে (প্রবেশের) অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেয়া হল।
আমি তাকে বললাম, মা! অথবা (তিনি বলেছিলেন)
হে মুমিনদের মা! আমি আপনার কাছে একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই কিন্তু আমি লজ্জাবোধ
করছি। তিনি বললেন , তুমি তোমার গর্ভধারিনী
মাকে যে ব্যাপারে প্রশ্ন করতে পারতে সে ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন করতে লজ্জাবোধ করো না।
আমি তো তোমার মা। আমি বললাম, গোসল কিসে ফরয হয়?
তিনি বললেন , জানোা-শোনা লোকের কাছে তুমি প্রশ্ন করেছ। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন পুরুষ ন্ত্রীর চার হাত-পায়ের মাঝখানে বসবে এবং একের লজ্জাস্হান অপরের লজ্জাস্হানের
সাথে স্পর্শ করবে তখন গোসল ফরয হবে।
৬৭৭ হারুন ইবনু মারুফ
ও হারুন ইবনু সাঈদ আল আয়লী (রহঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার কোন এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞাসা
করল-যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তারপর বীর্য নির্গত হবার পূর্বেই তার পুরুষাঙ্গ
বের করে ফেলে তাহলে কি তাদের উভয়ের ওপর গোসল ফরয হবে? এ সময়ে আয়িশা (রাঃ) সেখানে উপবিষ্ট ছিলেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , আমি এবং এ (আয়িশা (রাঃ) ঐরুপ করি এরপর আমরা গোসল করে ফেলি।
৬৭৮ আবদুল মালিক ইবনু
ওসশু’আয়ব ইবনু লায়স (রহঃ) যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে বলতে শুনেছি যে, অগ্নি স্পর্শ খাবার
খেয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা জরুরী। ইবনু শিহাব বলেন, উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁকে বলেছেন যে,
আবদুল্লাহ ইবনু ইবরাহীম ইবনু
কারিয (রহঃ) তাঁকে জানিয়েছেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা
(রাঃ) -কে মসজিদে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা অবস্হায় পেলেন। এরপর তিনি ( আবূ হুরায়রা (রাঃ)
বললেন, আমি পনিরের টূকরো খাবার কারণে
উযূ (ওজু/অজু/অযু) করছি। কারণ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে
বলতে শুনেছি যে, তোমরা অগ্নি স্পর্শ
খাবার খেয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) কর। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমি সাঈদ ইবনু খালিদ ইবনু আমর ইবনু উসমান-এর নিকট
যখন এ হাদীসটি বর্ননা করছিলাম তখন তিনি আমাকে জানোান যে, তিনি উরওয়া ইবনুুয যুবায়রকে অগ্নি স্পর্শ দ্রব্যাদি
সম্পর্কে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তখন উরওয়া বলেছিল যে,
আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
তোমরা অগ্নিস্পর্শ খাবার
খেয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) কর।
৬৭৯ আবদুল্লাহ ইবনু
মাসলামা ইবনু কা’নাব (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম – একবার একটি বকরীর কাঁধের গোশত খেলেন তারপর সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করলেন কিন্তু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।
৬৮০ যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একবার হাড়ে লাগানো গোশত অথবা গোশত খেলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন কিন্তু
উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না বা পানি স্পর্শ করলেন না।
৬৮১ মুহাম্মাদ ইবনু
সাববাহ (রহঃ) আমর ইবনু উমায়্যা আদ দামরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার দেখলেন যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বকরীর কাঁধের গোশত কেটে খাচ্ছেন। তারপর তিনি [রাসুল ] সালাত
(নামায/নামাজ) আদায় করলেন আর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।
৬৮২ আহমাদ ইবনু ঈসা
(রহঃ) আমর ইবনু উমায়্যা আদ দামরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে দেখলাম তিনি একটি বকরীর কাঁধের গোশত (ছুরি দিয়ে) কাটছেন। এরপর তিনি তা খেলেন। ইতিমধ্যেই
সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য ডাকা হলে। তিনি তখন দাড়িয়ে গেলেন এবং ছুরিটি ফেলে দিলেন।
এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন , কিন্তু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না। আমর বলেন, বুকায়র ইবনুল আশাজ্জ কুরায়বের সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রী মায়মুনা মূসা (রাঃ) থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেন যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর কাছে বসে কাঁধের গোশত খেলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করলেন কিন্তু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না। আমর বলেন, সাঈদ ইবনু আবূ হিলাল-এর সুত্রে আবূ রাফি (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাক্ষী দিচ্ছি
যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য বকরীর পেটের গোশত ভূনা করতাম (তিনি তা খেতেন) তারপর সালাত
(নামায/নামাজ) আদায় করতেন কিন্তু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন না।
৬৮৩ কুতায়বা ইবনু
সাঈদ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
, একবার দুধ পান করলেন। তারপর
পানি আনালেন, এরপর কুলি করলেন এবং
বললেন , এতে তৈলাক্ত পদার্থ রয়েছে।
৬৮৪ আহমাদ ইবনু ঈসা
(রহঃ) , যুহায়র ইবনু হারব,
হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ)
প্রত্যেকেই ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে উকায়ল এর সনদে থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৬৮৫ আলী ইবনু হুজর
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একবার কাপড় পরে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য বের হলেন। ইতিমধ্যেই কিছু কাটা ও গোশত
হাদিয়া এল। এরপর তিনি (তা থেকে) তিন লুকমা খেলেন। তারপর লোকদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করলেন এবং পানি স্পর্শও করলেন না।
৬৮৬ আবূ কুরায়ব (রাঃ)
মুহাম্মাদ ইবনু আমর ইবনু আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা এবং আব্বাস (রাঃ) -এর সাথে ছিলাম। এরপর
তিনি ইবনু হালহালার হাদীস (উপরোক্ত হাদীস)-এর অনুরুপ বর্ণনা করেন। সেখানে উল্লেখ আছে
যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এটা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। আর এ হাদীসের রাবী শুধু
সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। ‘লোকদেরকে নিয়ে- কথাটির উল্লেখ করেননি’।
৬৮৭ আবূ কামিল ফুদায়ল
ইবনু হুসায়ন আল জাহদারী (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-এরকাছে এসে জিজ্ঞেস করল, আমি কি বকরীয় গোশত
খেয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করব? তিনি বললেন ,
তোমার–ইচ্ছা উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করতেও পার আর নাও করতে পার। সে বলল, আমি কি উটের গোশত খেয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করব? তিনি বললেন, হ্যা, উটের গোশত খেয়ে তুমি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে। সে বলল, আমি কি বকরির ঘরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে
পারি? তিনি বললেন , হ্যা। সে বলল, আমি কি উটের ঘরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে
পারি? তিনি বললেন , না।
৬৮৮ আবূ বকর ইবনু
আবূ শায়বা ও কাসিম ইবনু যাকারিয়া প্রত্যেকেই নিজ নিজ সনদে জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ)
থেকে আবূ কামিল-এর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
৬৮৯ আমর আন নাকিদ,
যুহায়র ইবনু হারব এবং আবূ
বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আব্বাদ ইবনু তামীম তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন যে,
তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে সেই ব্যাক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলেন সালাত (নামায/নামাজ)-এর
মধ্যে যার মনে হয় যেন কিছু (বায়ু) বের হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
– বললেন , সে (সালাত (নামায/নামাজ)
ছেড়ে) যাবে না যতক্ষন না (বায়ু বের হবার) শব্দ শুনবে অথবা (তার) গন্ধ পাবে। – আবূ বাকর
ও যুহায়র ইবনু হারব তাঁদের বর্ণনায় উল্লেখ করেন যে, ঐ ব্যাক্তি ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ)।
৬৯০ যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন তার পেটের মধ্যে কিছু অনুভব করে
তারপর তার সন্দেহ দেখা দেয় যে, পেট থেকে কিছু বের
হল কিনা। তখন সে যেন মসজিদ থেকে কখনো বের নাহয় যতক্ষন না শব্দ শোনে অথবা গন্ধ পায়।
৬৯১ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া, আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা, আমর আন নাকিদ ও ইবনু আবূ উমার
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, মায়মুনা (রাঃ) -এর
দাসীকে কেউ একটি বকরী সাদাকা দিল। পরে সে বকরীটি মারা যায়। ইতোমধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মরে পড়ে থাকা বকরীটির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ অবস্হা দেখে তিনি বললেন
, তোমরা কেন এর চামড়া খূলে নিয়ে
তা পাকা করে তা দিয়ে উপকৃত হওনা? সাহাবীগণ বললেন ,
এটা যে মৃত। তিনি বললেন ,
(তাতে কি) এটা খাওয়া হারাম
(চামড়া ব্যবহার করা তো হারাম নয়)।
৬৯২ আবূ তাহির ও হারামালা
(রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরী দেখলেন যা মায়মুনা
(রাঃ) -এর দাসীকে সাদাকা স্বরুপ দেয়া হয়েছিল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন , তোমরা এর চামড়া দিয়ে
উপকৃত হওনা কেন? সাহাবীগণ বললেন ,
এটা তো মৃত। তিনি বললেন ,
এটা তো আহার করা হারাম।
৬৯৩ হাসান আল হুলওয়ানী
ও আবদ ইবনু হুমায়দ এই সনদে ইউনূস-এর রিওয়ায়াত-এর অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
৬৯৪ ইবনু আবূ উমার
ও আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ আয যুহুরি (রহঃ) ইবনু আব্বাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ফেলে দেয়া মরা বকরীর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন যা মায়মুনা (রাঃ)
-এর দাসীকে সাদাকা স্বরুপ দেয়া হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন , তারা এর চামড়া কেন খুলে নিল
না? চামড়াটি পাকা করে তা দিঁয়ে
উপকৃত হত!
৬৯৫ আহমাদ ইবনু উসমান
আন নাওফালী (রহঃ) আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মায়মুনা (রাঃ) তাঁকে জানোান যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন এক স্ত্রীর একটি পেলিত বকরী ছিল সেটি মারা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , তোমরা কেন এর চামড়া খুলে নাওনা, অতঃপর তা দিয়ে উপকৃত হতো।
৬৯৬ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রাঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়মুনা
(রাঃ) -এর দাসীর একটি মরা বকরীর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি বললেন , তোমরা এর চামড়া কেন কাজে লাগাও না?
৬৯৭ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে বলতে শুনেছি যে, চামড়া যখন পাকা (দাবাগাত)
করা হয় তখন তা পবিত্র হয়ে যায়।
৬৯৮ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা, আমর আন নাকিদ,
কুতায়বা ইবনু সাঈদ,
আবূ কুরায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম
(রহঃ) ইবনু আব্বাস থেকে ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়ার হাদীসের অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৬৯৯ ইসহাক ইবনু মানসুর
ও আবূ বাকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) আবূ ল খায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, – আমি আলী ইবনু ওয়ালা আসসাবাঈ কে চামড়ার পোশাক পরিহিত
দেখে তা হাত দিয়ে স্পর্শ করলাম। তিনি বললেন, হাত দিয়ে কি দেখছ? আমি (এ ব্যাপারে) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
-কে জিজ্ঞেস করেছি যে, আমরা পশ্চিমের দেশে
থাকি সেখানে বারবার ও অগ্নিপূজকদের সাথে বসবাস করি। তারা বকরী যবেহ করে আমাদের কাছে
নিয়ে আসে। আমরা তাদের যবেহকৃত জন্তু খাই না। তারা আমাদের কাছে মশক নিয়ে আসে যাতে চর্বি
জাতীয় পদার্থ থাকে “ (তখন আমরা কি করব? )। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন যে, আমরা এ ব্যাপ্যরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করেছিলাম।
তিনি বলেছেন যে, পাকা (দাবাগত) করলেই
তা পবিত্র হয়ে যাবে।
৭০০ ইসহাক ইবনু মানসূর
ও আবূ বাকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) ইবনু ওয়ালা আস সাবাঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস
(রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম যে, আমরা পশ্চিম দেশে
থাকি। সেখানে আমাদের কাছে অগ্নিপূজকরা মশক নিয়ে আসে, যাতে পানি এবং চর্বি জাতীয় পদার্থ থাকে (আমরা সেগুলো
ব্যবহার করব কি? )। তিনি বললেন ,
তা পান করে নাও। আমি বললাম,
এটা কি আপনার নিজের অভিমত?
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন ,
আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, চামড়া পাক (দাবাগাত) করলেই তা পবিত্র হয়ে যায়।
৭০১ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ), থেকে বর্ণিত যে,
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর
কোন এক সফরে আমরা তাঁর সাথে বের হলাম। আমরা যখন বায়দা অথবা যাতুল জায়শ নামক স্হানে
পৌছলাম তখন আমার হার খূলে পড়ে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা
তালাশ করতে সেখানে থেমে গেলেন। আর লোকজনও তারসাথে সাথে থেমে পড়ল। তাদের কাছাকাছি কোথাও
পানি ছিলনা এবং তাদের নিজেদের কাছেও পানি ছিল না। অতঃপর লোকজন আবূ বকর (রাঃ)-এর কাছে
এসে বলতে লাগল, আপনি দেখছেন না আয়িশা
(রাঃ) কি করল? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম – কে আটকে দিয়েছে এবং সেই সাথে সমস্ত লোককে আটকে রেখেছে। অথচ তাদের
কাছাকাছি কোথাও পানি নেই আর না তাদের নিজেদের কাছে পানি আছে। অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) আমার
কাছে এলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উরুর ওপর মাথা রেখে
ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি এসে বললেন, তুমি রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সমস্ত লোকজনকে আটকে রেখেছ। অথচ না তারা পানির কাছাকাছি
রয়েছে, আর না তাদের নিজেদের কাছে
পানি আছে। আয়িশা (রাঃ) বলেন অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) আমাকে ভৎসনা করলেন এবং যতদুর বলার
বললেন। তিনি তার হাত দিয়ে আমার পাজরে আঘাত করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমার উরুর ওপর থাকার কারণে আমি নড়তেও পেললাম না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়েই রইলেন। এমনি করে পানি বিহীনভাবে সকাল হল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা
তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করলেন। তখন উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) যিনি ছিলেন নকীব (দলপতি)
দের অন্যতম বললেন, “হে আবূ বকর তনয়া!
এটাই আপনার প্রথম বরকত নয়”। আয়িশা (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি যে উটের ওপর ছিলাম সেটিকে চলার জন্য উঠালাম।
তখন উক্ত হারটি তার নিচে পাওয়া গেল।
৭০২ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা এবং আবূ কুরায়ব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি আবূ আসমা (রাঃ) থেকে একটি হার ধার নিয়ে ছিলেন।
অতঃপর তা হারিযে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের
মধ্যে কিছু লোককে তা খুঁজতে পাঠালেন। (পথে) তাদের সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হয়ে গেল।
তখন তারা উযূ (ওজু/অজু/অযু) ছাড়াই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তারা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে এ ঘটনা জানালেন। তখন তায়াম্মুমের আয়াত
নাযিল হল। এ সময় উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ)বললেন, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম বদলা দান করুন। আল্লাহর
কসম! আপনার ওপর যখনই কোন সমস্যা এসেছে তখন আল্লাহ তা’আলা আপনার জন্য এর সমাধানের পথ
করে দিয়েছেন এবং মুসলমানদের জন্য তাতে বরকত রেখেছেন।
৭০৩ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া, আবূ বাকর ইবনু আবূ
শায়বা ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি একবার আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ) ও আবূ মূসা (রাঃ)-এর
কাছে বসেছিলাম। তখন আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, হে আবূ আবদুল রহমান! কোন ব্যাক্তি যদি জানবাতওয়ালা হয় (যার ফলে তার গোসল ফরয হয়)
এবং সে এক মাস যাবত পানি না পায় তাহলে সে কিভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে?
আবদুল্লাহ বললেন, সে তায়ামুম করবে না যদিও একমাস পানি না পায়। আবূ
মূসা বললেন, তাহলে সুরা মায়িদার
এ আয়াত (‘যদি তোমরা-পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম কর—’) এরকি হবে?
আবদুল্লাহ বললেন, এ আয়াতের দ্বারা তাদেরকে যদি তায়ামুমের অনুমতি দেয়া
হয়, তাহলে (ধীরে ধীরে এমন এক পর্যায়ে
পৌছবে যে) পানি ঠান্ডা বোধ হলে তারা মাটি দিয়ে তায়ামুম শুরু করবে। আবূ মূসা (রাঃ)
তখন আবদুল্লাহকে বললেন, আপনি কি আম্মারের
বর্ণনা শোনেন নি (তিনি বলেন) যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কোন এক প্রয়োজনে পাঠালেন। (পথিমধ্যে) আমি অপবিত্র হয়ে গেলাম
এবং পানি পেলাম না। তখন আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম চতুষ্পদ জন্তু যেভাবে মাটিতে গড়াগড়ি
দেয়। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে এ ঘটনা বললাম।
তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )বললেন, তোমার জন্য হাত দিয়ে এরুপ করাই যথেষ্ট ছিল-এই বলে
তিনি তাঁর দুই হাত একবার মাটিতে মারলেন। তারপর বাম হাত দিয়ে ডান হাত মাসেহ করলেন এবং
উভয় হাতের কজির উপরিভাগ ও মুখমন্ডল মাসহ করলেন। আবদুল্লাহ বললেন , তুমি কি দেখনি যে, উমার (রাঃ) আম্মার (রাঃ) -এর কথা যথেষ্ট করেননি?
৭০৪ আবূ কামিল আল
জাহদারী (রহঃ) শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) …আবদুল্লাহ (রাঃ) -কে বললেন ,
এরপর আবূ মু’আবিয়ার হাদীসের
অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , তোমার জন্য এরুপ করাই যথেষ্ট ছিল। এই বলে তিনি তার
উভয় হাত মাটিতে মারলেন। অতঃপর ঝেড়ে মুখমন্ডল এবং উভয় হাতের কব্জি মাসহ করলেন।
৭০৫ আবদুল্লাহ ইবনু
হাশিম আন-আবদী- (রহঃ) আবদূর রহমান ইবনু আবযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি উমার (রাঃ) – এর কাছে এসে বলল,
আমি অপবিত্র হয়েছি,
কিন্তু পানি পাইনি (তখন কি
করব?)। তিনি বললেন , তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করোনা। তখন আম্মার
(রাঃ) বললেন , “আমিরুল মুমিনীন! আপনার
কি স্মরণ নেই যে, আমিও আপনি কোন এক
অভিযানে অংশ গ্রহণ করেছিলাম। অতঃপর আমরা উভয়েই অপবিত্র হয়ে পড়লাম। আর ফোটাও পানি পেলাম
না। তখন আপনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন না, কিন্তু আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম এবং সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করলাম। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – কে এ ঘটনা জানালে
(তিনি) বললেন , তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট
ছিল যে, তোমার উভয় হাত মাটিতে মারতে
তারপর তা ঝেড়ে ফেলে তা দিয়ে তোমার মূখমশুল ও উভয় হাতের কব্জি মাসহ করতে” উমার (রাঃ)
বললেন , আম্মার! আল্লাহকে ভয় কর। তিনি
(আম্মার) বললেন , আপনি চাইলে আমি এটা
আর বর্ননা করব না”। হাকাম বলেন, আব্দুর রহমান ইবনু
আবযার পূত্র তাঁর পিতা আবদুর রহমান থেকে আমার কাছে যারর-এর হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, অতঃপর উমার (রাঃ)
বললেন , তোমার বর্ণনার দায়-দায়িত্ব
তোমার উপর।
৭০৬ ইসহাক হবন মানসুর
(রাঃ) আবদূর রহমান ইবনু আবযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে এক ব্যাক্তি উমার (রাঃ)-এর কাছে
এসে বলল, আমি অপবিত্র হয়েছি
এবং পানি পাইনি (তখন কি কবর?)-এর পর রাবী পূর্বোক্ত
হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তাতে অতিরিক্ত আছে যে, আম্মার (রাঃ) বললেন , হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ তায়ালা আমার ওপর আপনার
যে হক রেখেছেন (অর্থাৎ আপনাকে খলীফা বানিয়েছেন) তার প্রতি লক্ষ্য রেখে বলছি: আপনি চাইলে
আমি আর কারো কাছে এ বর্ণনা করব না। মুসলিম বলেন, নায়স ইবনু সা’দ – এর সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর
আযাদকৃত দাস উমায়র থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে,
আমি এবং উম্মুল মুমিনীন মায়মুনা
(রাঃ)-এর আযাদ কৃত দাস আবদুর রহমান ইবনু ইয়াসার একবার আবূল জাহম ইবনুল হারিস ইবনু সিম্মা-আনসারীর
কাছে গেলাম। তখন আবূল জাহম (রহঃ) বললেন , রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বার বির-ই-জামাল (মদিনার নিকটবর্তি
একটি স্হান)-এর দিক থেকে আসছিলেন। অতঃপর পথিমধ্যে এক ব্যাক্তি তার সাথে সাক্ষাৎ করে
সালাম দিল কিন্তু তিনি তার উত্তর দিলেন না বরং একটি দেয়ালের কাছে গিয়ে তাঁর মুখমন্ডল
এবং উভয় হাত মাসহ করলেন। তারপর সালামের জবাব দিলেন।
৭০৭ মুহাম্মদ ইবনু
নুমায়র ইবনু উমার থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি পথ দিয়ে যাচ্ছিল। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন পেশাব করছিলেন। সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে সালাম করল। কিন্তু তিনি তার জবাব দিলেন না।
৭০৮ যুহায়র ইবনু হারব
ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি একবার মদিনার কোন এক রাস্তায় রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তিনি ( আবূ হুরায়রা) তখন (জানবাত) অপবিত্র
অবস্হায় ছিলেন। এই কারণে তিনি আস্তে করে পাশ কেটে চলে গেলেন এবং গোসল করলেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তালাশ করলেন। পরে আসলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন , “ আবূ হুরায়রা। তুমি
কোথায় ছিলে? তিনি বললেন ,
ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার সঙ্গে যখন আমার সাক্ষাৎ হয় তখন আমি অপবিত্রাবস্হায় ছিলাম।
তাই আমি গোসল না করে আপনার মজলিসে বসা ভাল মনে করি নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন , সুবহানাল্লাহ! মুমিন
তো অপবিত্র হয় না।
৭০৯ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) – (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা অপবিত্র থাকা অবস্হায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম –এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
–কে পাশ কেটে চলে গেলেন এবং গোসল করে পরে এলেন, এবং বললেন আমি জানবাত (গোসল ফরয হওয়ার কারণে নাপাক)
অবস্হায় ছিলাম। রাসূলল্লাহ বললেন , মুসলিম তো নাপাক হয়
না।
৭১০ আবূ কুরায়র মুহাম্মাদ
ইবনুল আলা ও ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সব সময়ই আল্লাহর যিকর করতেন।
৭১১ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া আত’তামীমী ও আবূর রাবী আয যাহরানী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম শৌচাগার থেকে বের হলেন। ইতিমধ্যে খানা হাজির করা হল। লোকজন তাকে
উজ়ুর কথা স্মরন করিয়ে দিল। তিনি বললেন , আমি কি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের ইচ্ছা করছি যে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করব?
৭১২ আবূ বাকর ইবনু
আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর কাছে ছিলাম। তিনি পায়খানা থেকে এলেন। খানা হাযির করা হল। তাকে বলা হল আপনি কি উযূ
(ওজু/অজু/অযু) করবেন না? তিনি বললেনঃ কেন আমি
কি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছি যে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করব?
৭১৩ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক
বার পায়খানায় গেলেন। পরে তিনি যখন (পায়খানা সেরে ফিরে) এলেন তখন তার সামনে খানা পেশ
করা হল। অতঃপর তাঁকে বলা হল, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনি কি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবেন না? তিনি বললেন , কেন, সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য?
৭১৪ মুহাম্মদ ইবনু
আমর ইবনু আব্বাদ ইবনু জাবাল (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
শৌচাগার থেকে প্রয়োজন সেরে এলেন তার সামনে খানা পেশ করা হল। তিনি পানি স্পর্শ না করে
(উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করে) তা আহার করলেন। আমর ইবনু দিনার এর বর্ণনায় অতিরিক্ত রয়েছে
যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হল, আপনি যে উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করলেন না? তিনি বললেন ,
আমি তো আর এখন সালাত (নামায/নামাজ)
আদায়ের ইচ্ছা করিনি যে, উযূ (ওজু/অজু/অযু)
করব। আমর ইবনু দ্বীনার বলেন এ হাদীসটি তিনি সাঈদ ইবনুল হুওয়ায়রিস (রহঃ) থেকে শুনেছেন।
৭১৫ ইয়াহইয়া ইবনু
ইয়াহইয়া (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শৌচাগারে প্রবেশ করার সময় বলতেন,
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে
দুষ্ট পুরুষ জ্বীন ও নারী জ্বীন থেকে পানাহ চাচ্ছি।
৭১৬ আবূ বকর ইবনু
আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবদুল আযীয (রহঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণিত আছে।
৭১৭ যূহায়র ইবনু হারব
ও শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, (একবার) সালাত (নামায/নামাজ) শুরু হয়ে যাচ্ছিল। তখন
রাসুল এক ব্যাক্তির সাথে নিভৃতে আলাপ করছিলেন। অতঃপর তিনি এত দেরি করে এসে সালাত (নামায/নামাজ)
শুরু করলেন যে, লোকজন তখন (বসে বসে)
ঘূমাচ্ছিলেন।
৭১৮ উবায়দুল্লাহ ইবনু
মু’আযআল-আনরাবি (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন। একবার সালাত (নামায/নামাজ) শুরু হচ্ছিল।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তির সাথে একান্তে আলাপ করছিলেন।
তিনি এভাবে এতক্ষণ পর্যন্ত আলাপ করতে থাকলেন যে, তাঁর সাহাবীগণ (বসে বসে) ঘুমিয়ে পড়লেন। এরপর তিনি
এসে তাদের সহ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
৭১৯ ইয়াহইয়া ইবনু
হাবীব আল হারিসী (রহঃ) কাতাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ ঘুমিয়ে যেতেন, তারপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন কিন্তু উযূ
(ওজু/অজু/অযু) করতেন না। বর্ণনাকারী শুবা বলেন, আমি কাতাদাকে বললাম আপনি কি নিজে . আনাস (রাঃ)
-এর কাছ থেকে শুনেছেন? তিনি বললেন ,
হ্যা, আল্লাহর কসম”!
৭২০ আহমাদ ইবনু সাঈদ ইবনু সাখর আদ দারিমী (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, (একবার) এশার জামাআত দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তখন এক ব্যাক্তি বলল, আমার কিছু প্রয়োজন আছে। পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে তার সাথে আলাপ করতে লাগলেন। তিনি এতক্ষণ পর্যন্ত আলাপ করলেন যে, উপস্হিত সকলে অথবা কিছু লোক ঘুমিয়ে পড়ল (বসে বসে)। তারপর তাঁরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।