৫১৭৫ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যাক্তি দুনিয়াতে মদ পান করেছে এরপর সে তা থেকে তওবা করেনি, সে ব্যাক্তি আখিরাতে তা থেকে বঞ্চিত থাকবে।
৫১৭৬ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইসরা মিরাজের রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে শরাব ও দুধের দু টি পেয়ালা পেশ করা হয়েছিল। তিনি উভয়টির দিকে নযর করলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহন করেন। তখন জিবরাঈল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সকল প্রসংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত জিনিসের দিকে পথ দেখিয়েছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করতেন তাহলে আপনার উম্মত গুমরাহ হয়ে যেত। যুহরী (রহঃ) থেকে মামার, ইবনু হাদী, উসমান, ইবনু উমর যুবায়দী অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৫১৭৭ মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছ থেকে এমন একটি হাদীস শুনেছি যা আমি ব্যতীত অন্য কেউ তোমাদের বর্ননা করবে না। তিনি বলেন, কিয়ামতের লক্ষন সমূহের কতক হলঃ অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে, ইল্ম (দ্বীনী) কমে যাবে, ব্যাভিচার প্রকাশ্য হতে থাকবে, মদ্যপানের ছাড়াছড়ি চলবে, পূরুযের সংখ্যা কমে যাবে আর নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে, শেষ অবধি অবস্থা এমন দাঁড়াবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর জন্য তাদের পরিচালক হবে একজন পুরুষ।
৫১৭৮ আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ব্যাভিচারী ব্যাভিচার করার সময়ে মুমিন থাকে না, মদ পানকারী মদ পান করার সময়ে মুমিন থাকে না। চোর চুরি করার সময়ে মুমিন থাকে না। ইবনু শিহাব বলেনঃ আবদুল মালিক ইবনু আবূ বকর ইবনু আবদুর রহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম আমাকে জানিয়েছে যে, আবূ বকর (রাঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি বলেন, আবূ বকর উপরোক্ত হাদীসের সংগে এটিও সংয়ুক্ত করতেন যে, ছিনতাইকারী এমন মুল্যবান জিনিস, যার দিকে লোকজন চোখ উঠিয়ে তাকিয়ে থাকে, তা ছিনতাই করার সময়ে মুমিন থাকে না।
৫১৭৯ হাসান ইবনু সাববাহ (রাঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে এমরাবস্থায় যে মদিনার আঙ্গুরের মদের তেমন কিছু অবশিষ্ট ছিল না।
৫১৮০ আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমাদের উপর মদ হারাম ঘোষিত হল। তখন আমরা মদিনায় আমর থেকে প্রস্তুতকৃত মদ অনেক কম পেতাম। সাধারণত আমাদের মদ ছিল কাচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী।
৫১৮১ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলেন (হামদ ও সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর জেনে রাখ) মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাচ প্রকারের জিনিস থেকে আমর, খেজুর মধু, গম, ও যব। আর মদ হল তাই, যা বিবেক-বুদ্ধিকে বিলোপ করে দেয়।
৫১৮২ ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আবূ উবায়দা, আবূ তালহা ও উবাই ইবনু কাব (রাঃ) কে কাচা ও পাকা খেজুর থেকে তিনি মদ পনি করতে দিয়েছিলাম। এমন সময়ে তাদের নিকট জনৈক আগন্তক এসে বলল, মদ হারাম ঘোষিত হসে গেছে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বললেন হে আনাস দাড়াও এবং এগুলো ঢেলে দাও। আমি সেগুলো তখন ঢেলে দিলাম।
৫১৮৩ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) মুতামির তার পিতার সুত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আনাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ একটি আসরে দাড়িয়ে আমি তাদের অর্থাৎ চাচাঁদের ফাযীখ অর্থাৎ কাচা ও পাকা খেজুর থেকে মদ পান করচ্ছিলাম। তখন আমি ছিলাম সকলের ছোট। এমন সময় বলা হলঃ মদ হারাম হয়ে গেছে। তখন তারা বললেনঃ ঢেলে দাও। সুতরাং আমি তা ঢেলে দিলাম। রাবী বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বললাম তাদের শরাব কি ধরনের ছিল? তিনি উত্তর দিলেনঃ কাচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী। তখন আনাস (রাঃ)-এর পুত্র আবূ বকর তখন উপস্থিত ছিলেন) বললেনঃ সেটিই কি ছিলল তাদের মদ? জবাবে আনাস (রাঃ) কোন অসম্মতি প্রকাশ করলেন না। রাবী সুলায়মান আরো বলেন, আমার কতিপয় সংগী আমাকে বর্ণনা করেছেন যে তাঁরা আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন তিনি বলেছেন, সেকালে এটই ছিল তাদের মদ।
৫১৮৪ মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দমী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, মদ হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। আর সেকালে মদ তৈরী হত কাচা ও পাকা খেজুরে থেকে।
৫১৮৫ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে -বিতা- সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বললেনঃ সব নেশা জাতীয় পানীয় হারাম।
৫১৮৬ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে -বিতা- সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। -বিতা- হল মধূ থেকে তৈরী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য। ইয়ামানের অধিবাসীরা তা পান করত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে সব পানীয় দ্রব্য নেশার সৃষ্টি করে তাই হারাম। যুহরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা দুববা (কদূর খোল) এর মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য তৈরী করবে না মুযাফফাতের (আলকাতরা যুক্ত পাত্র) মধ্যেও নয়। যুহরী বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এগুলোর সংগে হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) ও নাফীরের (খেজুর বুক্ষের মূলের খোল) কথাও সংযুক্ত করতেন।
৫১৮৭ আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে খুতুবা নিতে গিয়ে বললেনঃ নিশ্চয়ই মদ হারাম সম্পকীয় আয়াৎ নাযিল হয়েছে। আর তা তৈরি হয় পাঁচটি বস্তু থেকে আঙ্গুর, খেজুর গম, যব ও মধূ। আর খামর (মদ) হল তা যা বিবেক বিলোপ করে দেয়। আর তিনটি এমন বিষয় আছে যে- আমি চাইছিলাম যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে সেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ননা করা পর্যন্ত তিনি যেন আমাদের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন না হবে যান। বিষয়গুলো হলঃ দাদা এর মীরাস কালালা-এর ব্যখ্যা এবং সুদের প্রকার সমুহ। রাবী আবূ হাইয়্যান বলেনঃ আমি বললামঃ হে আবূ আমর! এক প্রকারের পানীয় জিনিস যা সিঞ্চন অঞ্চলে চাউল দিয়ে তৈরি করা হয় তার হুকুম কি? তিনি বললেনঃ সেটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আমলে ছিল না। কিংবা তিনি বলেছেনঃ সেটি উমর (রাঃ)-এর আমলে ছিল না। হাম্মাদ সুত্রে আবূ হাইয়্যান থেকে হাজ্জাজ ‘ইনাবু’ এর স্থলে ‘আযযাবিবু’ কিসমিস বলেছেন।
৫১৮৮ হাফস ইবনু উমর (রহঃ) উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেন, মদ তৈরী করা হয় পাঁচটি জিনিস থেকে। সেগুলো হল কিসমিস খেজুর- গম, যব ও মধু।
৫১৮৯ হিশাম ইবনু আম্মার (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু গানাম আশ আরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আঁমার নিকট আবূ আমের কিংবা আবূ মালেক আশ-আরী বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর কসম! তিনি আমার কাছে মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন আমার উম্মতের মাঝে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে যারা ব্যাভিচার রেশমী কাপড় মদ ও বাদ্যষন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে। অনুরুপভাবে এমন অনেক দল হবে যারা পর্বতের কিনারায় বসবাস করবে বিকাল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে তখন তাদের কাছ কোন অভাব নিয়ে ফকীর আসলে তারা উত্তর জেবে আগামী দিন সকালে তুমি আমাদের নিকট এসো। এদিকে রাতের অধীকারেই আল্লাহ তাদের ধংশ করে দিবেন। পর্বতটি ধসিয়ে দিবেন, আর অবশিষ্ট লোকদের তিনি কিয়ামত দিবস পর্যন্ত বানর ও শুকর বানিয়ে রাখবেন।
৫১৯০ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) সাহল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বিয়ের অনুঠানে দাওয়াত দিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী নববধূ ছিলেন। তাদের মধ্যে পরিবেশনকারিনা সে নববধূ বলেনঃ তোমরা কি জানো আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি জিনিস পান করতে দিয়েছিলাম? (তিনি বলেন) আমি রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রের মধ্যে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।
৫১৯১ ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতগুলো পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। তখন আনসারনগ বললেনঃ সেগুলো ব্যতীত আমাদের কোন উপায় নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ব্যবহার করতে পার। খলীফা (রাঃ) বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আমাদের কাছে সুফিয়ান, মানসূরা সালিম ইবনু আবূল জাদ-জাবির (রহঃ) থেকে এরুপ বর্ণনা করেন।
৫১৯২ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ধরনের পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হল- সব মানূষের নিকট তো মাশক মউযূ (ওজু/অজু/অযু)দ নেই। ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কলসীর জন্য অনূমতি দেন। তবে আলকাতরার প্রলেপ দেওয়া পাত্রের জন্য অনুমতি দেননি।
৫১৯৩ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুব্বা ও মুযাফফাত ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। উসমান (রহঃ) বলেনঃ জারীর (রহঃ) আমাশ (রহঃ) সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
৫১৯৪ উসমান (রহঃ) ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আসওয়াদকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনি কি উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, কোন কোন পাত্রের মধ্যে ‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য তৈরী করা মাকরুহ। তিনি উত্তর করলেনঃ হা। আমি বলেছিলাম, হে উম্মুল মুমিনীন! কোনকোন পাড়ের মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য তৈরী করতে নিষেধ করেছেন? তখন তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অর্থাৎ আহলে বাইতকে দুব্বা ও মুযাফফাত নামক পাত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য তেরি করতে নিষেধ করেছেন। ইবরাহীম বলেন) আমি বললাম আয়িশা (রাঃ) কি জার (-মাটির কলসী) হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) নামক পাত্রের কথা উল্লেখ করেননি? বললেনঃ আমি যা শুনেছি কেবল তাই তোমাকে বর্ননা করেছি। আমি যা শুনি নাই তাও কি আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করবো?
৫১৯৫ মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবুজ বর্ণের কলসী ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। আমি বললামঃ তাহলে সাদা বর্নের পাত্রে (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য) পান করা যাবে কি? তিনি বললেনঃ না।
৫১৯৬ ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) সাহল ইবনু স্বাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর ওলীমা অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেছিলেন। সে দিন তার স্ত্রী নববধূ অবস্হায় সবার খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বললেনঃ আপনারা কি জানেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কিসের রস পান করতে দিয়েছিলাম? আমি তার জন্য রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।
৫১৯৭ মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) আবূল জুওয়ায়রিয়া (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে ঁবাযাক- সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি উত্তর দিলেনঃ মুহাম্মাদ ‘বাযাক’ উৎপাদনের পূর্বে চলে গেছেন। কাজেই যে জিনিস নেশা সৃষ্টি করে থাকে তাই হারাম। তিনি বলেনঃ হালাল পানীয় পবিত্র। তিনি বলেন হালাল ও পবিত্র পানীয় ব্যতীত অন্যান্য পানীয় ঘৃণ্য হারাম।
৫১৯৮ আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিাষ্ট ও মধু পছন্দ করতেন।
৫১৯৯ মুসলিম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন আমি আবূ তালহা আবূ দুজানাএবং সুহায়ল ইবনু বায়দা (রাঃ) কে কাচা ও শুকনো খেজুরের মিশ্রিত রস পান করাচ্ছিলাম। এ সময়ে মদ হারাম ঘোষিত হল, তখন আমি তা ফেলে দিলাম। আমি ছিলাম তাঁদের এবং তাঁদের সবার ছোট। আর সেকালে আমরা এটিকে মদ বলে গণ্য করতাম। আমর ইবনু হারিস বলেনঃ কাতাদা (রহঃ) আমাদের নিকট ‘আন উনসি’ এর স্থলে ‘সামিয়ান্সা’ বর্ণনা করেছেন।
৫২০০ আবূ আসিম (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিসমিস, শুকনো খেজুর, কাঁচা ও পাকা খেজুর মিশ্রন করতে নিষেধ করেছেন।
৫২০১ মুসলিম (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুরমা ও আধাপাকা খেজুর এবং খুরমা ও কিসমিস একত্রিত করতে নিষেধ করেছেন। আর এগুলো প্রত্যেকটিকে থক থকেভাবে ভিজিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম য তৈরি করা যাবে।
৫২০২আবদান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনা যে রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভ্রমণ করানো হয় (মিরাজের রাতে), সে রাতে তাঁর সামনে শেষ করা হয়েছিল দুধের একটি পেয়ালা এবং শরারের একটি পেয়ালা।
৫২০৩ হুমায়দী (রহঃ) উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সিয়াম আদায় করার ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ পোষণ কবেন। তখন আমি তার নিকট দুধ ভর্তি একটি পেয়ালা পাঠালাম। তিনি তা পান করলেন। বর্ণনাকারী সুফিয়ান অনেক সময় এভাবে বলতেন, আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সিয়াম আদায়ের ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ পোষণ করছিল। তখন উম্মুল ফাযল (রাঃ) তাঁর কাছে দুধ পাঠিয়ে দিলেন। হাদীসটি মাউসূল না মুরসাল, এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন এটি উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
৫২০৪ কুতায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)-থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুমায়দ (রাঃ) এক পাত্র দুধ নিয়ে আসলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে রাখলে না কেন? এর উপর একটি কাঠি দিয়ে হলেও ঢেকে রাখা উচিত ছিল।
৫২০৫ উমর ইবনু হাফস (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুমায়দ (রাঃ) নামক এক আনসারী নাকিঁ নামক স্থান থেকে এক পেয়ালা দূধ নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট আসলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে আননি কেন? এর উপর একটি কাঠি স্হাপন করে হলেও ঢেকে রাখা উচিত ছিল। আবূ সূফিয়ান (রহঃ) এ হাদীসটি জাবির (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ননা করেছেন।
৫২০৬ মাহমূদ (রহঃ) বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে রওয়ানা হলেন। তখন তাঁর সংগে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমরা এক রাখালের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে সময়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন খুব পিপাসার্ত। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন একটি পাত্রে ভেড়ার দুধ দোহন করলাম। তিনি তা পান করলেন- আমি খুব আনন্দিত হলাম। এমন সময় সুরাকা ইবনু জুশুম একটি ঘোড়ার উপর আরোহণ করে আমাদের কাছে আসলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বদ দুআর মনস্থ করলে সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আবেদন জানোান যেন তিনি তার প্রতি বদ দূআ না করেন এবং সে যেন নিরাপদে ফিরে যেতে পারে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই করলেন।
৫২০৭ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরাররা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল উপহার হিসেবে প্রদত্ত দূধেল উঠনী কিংবা দূধেল বকরী। যা সকালে একটি পাত্র ভরে দেবে আর বিকালে আরেকটি পাত্র।
৫২০৮ আবূ আসিম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধপান করেছেন এরপর তিনি কুলি করেছেন এবং বলেছেন এর মধ্যে তৈলাক্ততা আছে। ইবরাহীম ইবনু তাহমান (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার কাছে -সিদরাতুল মুনতাহা’ তুলে ধরা হল। তখন দেখলাম চারটি নহর। দুঁটি নহর হল যাহেরী আর দুটি নহর হল বাতেনী। যাহেরী দুটি হল নীল ও ফোরাত। আর বাতেনী দুটি হল, জান্নাতের দুটি নহর। আমার সামনে তিনটি পেয়ালা পেশ করা হল একটি পেয়ালার মধ্যে আছে দুধ, একটি পেয়ালার মধ্যে আছে মধূ আর একটি পেয়ালার মধ্যে আছে শরাব। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহন করলাম এবং পান করলাম। তখন আমাকে বলা হল, আপনি এবং আপনার উম্মত স্বভাবজাত জিনিস লাভ করেছেন। তবে তারা তিনটি পেয়ালার কথা উল্লেখ করেননি।
৫২০৯ আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ তালহা (রাঃ) ছিলেন মদিনার আনসারীদের মধ্যে সবার চাইতে বেশী খেজুর গাছের মালিক। আর তার নিকট তার প্রিয় সম্পদ ছিল -বায়রুহা নামক বাগানটি। সেটি ছিল মসজিদে নববীর ঠিক সামনে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাগানে যেতেন এবং সেখানে অবস্হিত সুপেয় পানি পান করতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, যখন আয়াত অবর্তীর্ণ হল: তোমরা ততক্ষন পর্যন্ত কল্যাণ অর্জন করতে সক্ষম হবে না যতক্ষন তোমরা তোমাদের প্রিয় জিনিস থেকে ব্যয় করবে”। তখন আবূ তালহা (রাঃ) দাড়িয়ে গেলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ ইরশাদ করেছেন যা ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পূণ্য লাভ করবে না। আলে ইমরানঃ ৯২। আর আমার নিকট সবচাইতে প্রিয় সম্পপদ হল ‘বায়রুহাঁ’ নামক বাগান। এটিকে আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য স্বাদকা করে দিলাম এবং আমি আল্লাহর কাছে এটির সাওয়াব এবং এটির সঞ্চয় আশা করি। ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি এটিকে গ্রহন করুন আল্লাহর ইচ্ছায় যেখানে ব্যয় করতে আপনি ভাল মনে করেন! সেখানে ব্যয় করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন খুব ভাল, এটিতো লাভজনক সম্পপদ কিংবা তিনি বলেছেন এটিতো মুনাফা দানকারী সম্পদ। কথাটির মধ্যে রাবী আবদুল্লাহ দ্বিধা পোষণ করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি যা বলেছ, আমি তা শুনেছি। তবে আমি ভাল মনে করি যে, তুমি এটিকে আপন আত্নিয়-স্বজনদের মধ্যে বণ্টন করে দেবে। আবূ তালহা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি এমনটই করবো। এরপর আবূ তালহা (রাঃ) বাগানটি তার আত্মীয়দের মধ্যে এবং তার চাচাত ভাইদেয় মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ইসমাঈন ও ইয়াহইয়া (রাঃ) এর সূত্রে) বর্ণনা করেছেন।
৫২১০ আবদান (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বাড়ীতে এসে দুধ পান করতে দেখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি একটি বকরী দোহন করলাম। এবং কুপ থেকে পানি তুলে তা মিশিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে পেশ করলাম। তিনি পেয়ালাটি নিয়ে পান করেন। তার বাঁদিকে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) ও ডান দিকে ছিল জনৈক বেদুঈন। তিনি বেদুঈনকে তার অবশিষ্ট দুধ দিলেন। এরপর বললেনঃ ডান দিকের রয়েছে অগ্রাধিকার।
৫২১১ আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত সে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক ব্যাক্তির নিকট গেলেন। তার সংগে ছিলেন তাঁর এক সাহাবী। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারীকে বললেনঃ তোমার নিকট যদি মশকে রক্ষিত গত রাতের পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাওা আর না থাকলে আমরা সামনে গিয়ে পান করব। রাবী বলেন লোকটি তখন তার বাগানে পানি আনল। বর্ণনাকায়ী বলেন, লোকটি উত্তর করল ইয়া রাসুলুল্লাহ আমার কাছে গত রাতের পানি আছে। আপনি ঝূপড়ীতে চলুন। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর লোকটি তাদের দুজনকে নিয়ে গেল এবং একটি পেয়ালায় পানি নিয়ে তাতে তার একট বকরীর দুধ দোহন করলা বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন, তারপর তাঁর সংগে আগন্তক লোকটিও পান করলেন।
৫২১২ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় জিনিস ছিল মিষ্টি দ্রব্য ও মধু।
৫২১৩ আবূ নুআয়ম (রহঃ) নাযযাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুফা মসজিদের ফটকে আলী (রাঃ) এর নিকট পানি আনা হলে তিনি দন্ডায়মান অবস্হায় তা পান করলেন। এরপর বললেনঃ লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ দণ্ডীয়মান অবস্থায় পান করাকে মাকরুহ মনে করে, অথচ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তোমরা আনীকে যেরুপভাবে পান করতে দেখলে তিনিও সে রুপ করেছেন।
৫২১৪ আদম (রহঃ) নাযযাল ইবনু সাবরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)-এর সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন ষে, তিনি যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর তিনি মানুষের নানাবিধ প্রয়োজনীয় কাজে কুফা মসজিদের চত্বরে বসে পড়লেন। অবশেষে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের সময় হয়ে গেল। তখন পানি আনা হল। তিনি পানি পান করলেন এবং নিজের মুখমণ্ডল ও উভয় হাত ধৌত করলেন। বর্ননা কারী আদম এখানে তাঁর মাথার কথাও উল্লেখ করেন এবং ধৌত করার কথাও উল্লেখ করেন। এরপর আলী (রাঃ) দাড়ালেন এবং তিনি দাঁড়ান অবস্থায় উযূ (ওজু/অজু/অযু)র উদ্বৃত্ত পানি পান করে নিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ লোকজন দণ্ডায়মান অবস্থায় পান করাকে মাকরুহ মনে করে, অথচ আমি যেমন করেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তেমন করেছেন।
৫২১৫ আবূ নুআয়ম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান অবস্হায় যমযমের পানি পান করেছেন।
৫২১৬ মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) উম্মুল ফাযল বিনত হারিস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক পেয়ালা দুধ পাঠিয়ে ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাতে বিকালে অবস্থান করছিলেন। তিনি নিজ হাতে পেয়ালাটি গ্রহন করেন এবং তা পান করেন। আবূন নাযর থেকে মালিক (তাঁর উটেবু উগর আরোহী অবস্থায় ছিলেন) কথাটি বর্ণনা করেছেন।
৫২১৭ ইসমাঈল (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে পানি মেশানো দুধ পবিরেশন করা হল। তার ডান পার্শে ছিল জনৈক বেদুঈন ও বাম পার্শে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধ পান করলেন। তারপর বেদুঈন লোকটিকে তা দিয়ে বললেনঃ ডানের লোকের অগ্রাধিকার। এরপর তার ডানের লোকের।
৫২১৮ ইসমাঈল (রাঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে শরবত পবিবেশন করা হলে তিনি তা থেকে পান করলেন। তার ডানে ছিল একটি বালক, আর বামে ছিলেন কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাক্তি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালকটিকে বললেনঃ তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে যে, আমি ঐ বয়স্ক লোকদের আগে পান করতে দেই? বালকটি বলল: আল্লাহর কসম! ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার কাছ থেকে আমার ভাগে আসা জিনিসের ক্ষেত্রে আমি কাউকে আমার উপর অগ্রাধিকার দেব না। রাবী বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন পেয়ালাটি তার হাতে তুলে দিলেন।
৫২১৯ ইয়াহইয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক ব্যাক্তির কাছে গেলেন। তার সহয়ে ছিল তাঁর এক সাহাবী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবী সালাম দিলে লোকটি সালামের জবাব দিল। এরপর সে বলল :ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার জন্য আমার পিতা ও মাতা কুরবান, এটি ছিল প্রচণ্ড গরমের সময়। এ সময় লোকটি তার বাগানে পানি দিতে ছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তোমার কাছে গতরাতে মাশকে রাখা পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাতে পার। অন্যথায় আমরা আমাদের সন্মুখস্থ পানি থেকে পান করে নেব। তখন লোকটি বাগানে পানি দিতে ছিল। এরপর লোকটি বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ। আমার কাছে গতরাতে মাশকে রাখা পানি আছে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঝূপড়ীতে নিযে গেল। একটি পাত্রে কিছু পানি ঢেলে তাতে ঘরে পোষা বকরীর দুধ দোহন করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এরপর সে আবার দোহন করল। তখন তার সংগে যিনি ছিলেন তিনি তা পান করলেন।
৫২২০ মূসা’দ্দাদ (রাঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রীয় লোকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাদেরকে অর্থাৎ আমার চাচাঁদেরকে ফাযীখা- নামক শরাব পান করাতে ছিলাম। আমি ছিলাম তাদের মধ্যে সকলেরু চাইতে ছোট। এমন সময় ঘোষণা করা হলঃ শরাব হারাম হয়ে গেছে। তারা বললেনঃ এ শরাবগুলো ঢেলে দাও। আমি তা ঢেলে দিলাম। বর্ণনাকারী (সূলায়মান তায়মী) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ তাদের শরাব কিসের তৈরী ছিল? তিনি বললেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুরের তৈরী। আনাস (রাঃ)-এর পৃত্র আবূ বকর বললেন- (সম্ভবত তিনি তখন উপস্থিত ছিলেন)। এটই ছিল তাদের আমলের শরাব। তাতে আনাস (রাঃ) কোন অস্বীকৃতি প্রকাশ করেননি। সুলায়মান বলেনঃ আমার কতিপয় বদ্ধ আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে তিনি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেনঃ সেকালে এটই ছিল তাঁদের শরাব।
৫২২১ ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সন্ধ্যা হয় তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকিয়ে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু সময় অতিক্রান্ত হল তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করে দেবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে কমপক্ষে পারেগুলোর উপর কোন জিনিস রেখে হলেও। আর (শয়নকালে) তোমরা তোমাদের চেরাগগুলো নিভিয়ে দেবে।
৫২২২ মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন ঘুমাবে তখন চেরাগ নিভিয়ে দেবে দরজা বন্ধ করে ফেলবে, মাশকের মুখ বন্ধ করে দেবে, খাবার ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি আরো বলেছেন অন্তত একটি কাঠ , পাত্রের উপর স্থাপন করে হলেও।
৫২২৩ আদম (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ খূলে, তাতে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।
৫২২৪ মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘ইখতিনাছিল আসকিয়া’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, মামার কিংবা অন্য একজন বলেছেন, -ইখতিনাছ- হল মাশকের মুখ থেকে পানি পান করা।
৫২২৫ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আইউব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইকরামা (রাঃ) আমাদের বললেনঃ- আমি তোমাদের সংক্ষিও এমন কতগুলো কথা জানাবো কি যেগুলো আমাদের কাছে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন? (কথাগুলো হল) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় কিংবা ছোট মশকের মুখে পানি পান করতে এবং প্রতিবেশীকে এর দেয়ালের উপর খুটি গাড়তে বাধা দিতে নিষেধ করেছেন।
৫২২৬ মূসা জাদ (রাঃ) আবূ হুরায়বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।
৫২২৭ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।
৫২২৮ আবূ নূঁআইম (রহঃ) আবদুল্লাহর পিতা আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন পানি পান করবে সে যেন তখন পান-পাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে। আর তোমাদের কেউ যখন পেশাব করবে, সে যেন ডান হাতে তার লজ্জাস্থান , স্পর্শ না করে এবং তোমাদের কেউ যখন শৌচ কাজ করবে তখন সে যেন ডান হাতে তা না করে।
৫২২৯ আবূ আসিম ও আবূ নূআয়ম (রহঃ) সুমামা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনাস (রাঃ)-এর নিয়ম ছিল, তিনি দুই কিংবা তিন নিশ্বাসে পানি পান করতেন। তিনি ধারনা করতেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতেন।
৫২৩০ হাফস ইবনু উমর (রহঃ) ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিৎ। তিনি বলেন হুযায়ফা (রাঃ) মাদায়েন অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তিনি পানি পান করতে চাইলেন। তখন জনৈক গ্রামবাসী একটি রুপার পেয়ালায় পানি এনে তাঁকে দিল। তিনি পানি সহ পেয়ালাটি ছুড়ে মারলেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি এটি ছুড়ে ফেলতাম না কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করা সত্তেও সে তা থেকে বিরত হয়নি। অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিষেধ করেছেন মোটা ও পাতলা রেশমের কাপড় পরিধান করতে, সোনা ও রুপার পান-পাত্র ব্যবহার করতে। তিনি আরো বলেছেনঃ উল্লেখিত জিনিসগুলো হল দুনিয়াতে কাকির সম্প্রদায়ের জন্য আর আখিরাতে তোমাদের জন্য।
৫২৩১ মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ইবনু আবূ লায়লা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা হুযায়ফা (রাঃ)-এর সংগে বাইরে বেরুলাম। এ সময় তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কথা আলোচনা করেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সোনা ও রুপার পাত্রে পান করবে না। আর মোটা বা পাতলা রেশমের কাপড় পরিধান করবে না। কেননা- এগুলো দূনিয়াতে তাদের (অমুসলিম সম্প্রদায়ের)জন্য ভোগ্যবস্তু। আর তোমাদের (মুসলিম সম্প্রদায়ের) জন্য হল আখিরাতের ভোগ্য সামগ্রী।
৫২৩২ ইসমাঈল (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনা উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রুপার পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করায়।
৫২৩৩ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের হুকুম দিয়েছেন এবং সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদের হুকুম দিয়েছেনঃ রোগীর সেবা করতে, জানাযার পেছনে যেতে, তিনি দানকারীর জবাব দিতে দাওয়াতকারীর দাওয়াত গ্রহন করতে বেশী বেশী সালাম দিতে, মাযলুমের সাহায্য করতে এবং কসম ঠিক রাখার সুযোগ কবে দিতে। আর আমাদের তিনি নিষেধ করেছেন: স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে, কিংবা তিনি বলেছেন রুপার পাত্রে পানি পান করতে মায়াসির অর্থাৎ এক জাতীয় নরম ও মসৃণ রেশমী কাপড় কাসসী অর্থাৎ রেশম মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করতে এবং পাতলা কিংবা মোটা এবং অলংকার খচিত রেশমী কাপড় ব্যবহার করতে।
৫২৩৪ আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, লোকজন আরাফার দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সিয়াম পালনের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করলো। তখন আমি তাঁর নিকট একটি পেয়ালায় করে কিছু দুধ পাঠালাম তিনি তা পান করলেন।
৫২৩৫ সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) সাহল ইবনু স্বাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আরবের জনৈকা মহিলার কথা আলোচনা করা হলে, তিনি আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) কে আদেশ দিলেন, সেই মহিলার নিকট কাউকে পাঠাতে। তখন তিনি তার নিকট একজনকে পাঠালে সে আসবে এবং সায়িদা গোত্রের দুর্গে অবতরন করলো। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে এসে তার কাছে গেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুর্গে তার কাছে প্রবেশ করে দেখলেন, একজন মহিলা মাথা ঝুঁকিয়ে বসে আছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার সংগে কথোপকথন করলেন, তখন সে বলে উঠল, আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তখন তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে পানাহ দিলাম। তখন লোকজন তাকে বললো তুমি কি জানো ইনি কে? সে উত্তর করল না। তারা বললঃ ইনি তো আল্লাহর রাসুল। তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে এসেছিলেন। সে বলল, এ মর্যাদা থেকে আমি চির বঞ্চিতা! এরপর সেই দিনই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অগ্রসর হলেন এবং তিনি ও তাঁর সাহাবীগগ অবশেষে বনী সায়িদাহ চত্বরে এসে বসে পড়লেন। এরপর বললেনঃ হে সাহল (রাঃ) আমাদের পানি পান করাও। সাহল (রাঃ) বলেন, তখন আমি তাদের জন্য এই পেইয়ালাটই বের করে আনি এবং তা দিমে তাদের পান করাটা বর্ননাকারী বলেন, সাহল (রাঃ) তখন আমাদের কাছে সেই পেইয়ালা বের করে আন। আমরা তাতে করে পানি পান করি। তিনি বলেছেন পরবর্তীকালে উমর ইবনু আবদন আযীয (রাঃ) তার কাছ থেকে সেটি দান হিসাবে পেতে চাইলে তিনি তাকে তা হেবা করে দেন।
৫২৩৬ হাসান ইবনু মুদরিক (রহঃ) আসিম আহওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ব্যবহৃত একটি পেইয়ালা দেখেছি। সেটি ফেটে গিয়েছিল। এরপর তিনি তা রুপা মিশিয়ে জোড়া দেন। বর্ণনাকারী আসিম বলেন- সেটি ছিল উত্তম, চওড়া ও নযর কাঠের তৈরী। আসিম বলেন আনাস (রাঃ) বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ পেয়ালায় কবার পানি পান করিয়েছি। আসিম বলেনঃ ইবনু সীরীন (রাঃ) বলেছেনঃ পেয়ালাটিতে বৃত্তাকারে লোহা লাগানো ছিল। তাই আনাস (রাঃ) ইচ্চা করে ছিলেন লোহার বৃত্তের খুলে সোনা বা রুপা একটি বৃত্ত স্থাপন করতে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) তাকে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরুপ তৈরী করেছেন তাতে কোন পরিবর্তন করো না। ফলে তিনি সে ইচ্ছা ত্যাগ করেন।
৫২৩৭ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সংগে ছিলাম এ সময় আসরের সময় হয়ে গেল। অথচ আমাদের সংগে বেচে যাওয়া সামান্য পানি ব্যতীত কিছুই ছিল না। তখন সেটুকু একটি পাত্রে রেখে পাত্রটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে পেশ করা হল। তিনি পাত্রটির মধ্যে নিজের হাত ঢ়ুকিয়ে দিলেন এবং আঙ্গুল ছড়িয়ে দিলেন। এরপর বললেনঃ এস যাদের উযূ (ওজু/অজু/অযু) প্রয়োজন আছে। বরকত তো আসে আল্লাহর কাছ থেকে। জাবির (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আঙ্গুলগুলোর ফাক থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। লোকজন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করল এবং পানি পান করল। আমিও আমার উদরে যতটুকু সম্ভব ছিল ততটুকু পান করতে ক্রটি করলাম না। কেননা আমরা জানতাম এটি বরকতের পানি। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে বললাম সে দিন আপনারা কত লোক ছিলেন? তিনি বললেনঃ এক হাজার চারশ- জন। জাবির (রাঃ)-এর সুত্রে আমর অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। সালিম, জাবির (রাঃ) সুত্রের মাধ্যমে হুসাইন ও আমর ইবনু মুররা চৌদ্দশ স্থানে পনেরশোর কথা বলেছেন। সাঈদ ইবনু মূসা য়্যাব জাবির (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ননা করেছেন।