ভরণ পোষণ

৪৯৬০ আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) আবূ মাসউদ থেকে বর্নিত। রাবী বলেনঃ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ এ কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে? তিনি বললেন, (হাঁ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সাওয়াবের আশায় কোন মুসলমান যখন তার পরিববার-পরিজনের জন্য খরচ করে, তা তার সাদাকায় পরিগণিত হয়।

৪৯৬১ ইসমাঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, খরচ কর, হে, আদম সতান আমিও খরচ করবো তোমার প্রতি।

৪৯৬২ ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবা ও মিসকীন-এর জন্য (খাদ্য যোগাতে) সচেষ্ট ব্যাক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের ন্যায় অথবা রাত জেগে ইবাদতকারী ও দিনভর সিয়াম পালনকারীর মত।

৪৯৬৩ মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) স্বাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পরিচর্যার জন্য আসতেন। আমি বললাম, আমার তো মাল আছে। সেগুলো সব আমি ওসিয়্যাত করে যাই? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তবে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ এক-তূতীয়াংশ করতে পার। এক-তূতীয়াংশই বেশী। মানুষের কাছে হাত পেতে ফিরবে ও এরুপ ফকীর অবস্থায় ছেড়ে যাওয়ার তুলনায় তাদেরকে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যাই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য স্বাদকা হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে তাও। আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন এই আশা। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে, আবার অন্যেরা (কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

৪৯৬৪ উমর ইবনু হাফস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল যা দানকরার পরেও মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরন-পোষণ তোমার যিম্মায় তাদের আগে দাও। (কেননা) বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নতুবা তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তিনি কার কাছে রেখে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ হে আবূ হুরায়রা আপনি কি এ হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ এটি আবূ হুরায়রা জামবিলের নয় (বরং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে)।

৪৯৬৫ সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম দান তাই, সা দিয়ে মানুষ অভাবমুক্ত থাকে। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্ব তাদের থেকে আরম্ভ কর।

৪৯৬৬ মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) মাঁমার (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সাওরী (রহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ কোন ব্যাক্তি তার পঁরিবারের জন্য বছরের বা বছরের কিছু অংশের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা সম্পর্কে আপনি কোন হাদীস শুনেছেন কি? মামার বলেনঃ তখন আমার কোন হাদীস স্বরণ হলো না। পরে একটি হাদীসের কথা আমার মনে পড়ল, বা ইবনু শিহাব যূহরী (রাঃ) মালিক ইবনু আওসের সূত্রে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ নাযীরের খেজুর বিক্রি করে ফেলতেন এবং পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখতেন।

৪৯৬৭ সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উমর (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হলাম; এমন সময় তার দারোয়ান ইয়ারফা এসে বলল, উসমান আবদুর রহমান, যুবায়র ও স্বাদ ভেতরে প্রবেশ করার অমুমতি চাইছেন। আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি তাদের অনুমতি দিলেন। মালিক (রহঃ) বলেনঃ তারা প্রবেশ করলেন এবং সালাম করে বললেনঃ এর কিছুক্ষন পর ইয়ারফা এসে বললঃ আলী ও -আব্বাস (রাঃ) অনুমতি চাইলেন আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি হ্যা বলে এদের উভয়কেও অনুমতি দিলেন। তারা প্রবেশ করে সালাম দিয়ে বললেনঃ তারপর আব্বাস বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার ও আলীর মধ্যে ফয়সালা করে দিন। উপস্থিত উসমান ও তার সঙ্গীরাও বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! ত্রদের উভয়ের মধ্যে ফয়সালা করে দিন এবং একজন থেকে অপর জনকে শাস্তি দিন। উমর (রাঃ) বললেনঃ থাম! আমি তোমাদেরকে সেই আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, যার আদেশে আসমান ও যমীন টিকে আছে। তোমারা কি জানো যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের কেউ ওয়ারিস হল না। আমরা সা রেখে যাই তা স্বাদকা। এ কথা দ্বারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে (এবং অন্যানা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গণকে) বুঝাতে চেয়েছেন। সে দলের লোকেরা বললেনঃ নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বলেছেন। তারপর উমর (রাঃ) আলী ও আনাস (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা দু-জন কি জানো যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছেন। তারা বললেনঃ অবশ্যই তা বলেছেন। উমর (রাঃ) বললেন, এ ব্যপারে আমার বক্তব্য হলোঃ এ মালে আল্লাহ তার রাসুলকে একটি বিশেষ অধিকার দিয়েছেন, যা তিনি ছাড়া আর কাউকে দেননি। আল্লাহ বলেছেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদীদের নিকট থেকে তাঁর রাসুলকে যে ‘ফায়’ (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) দিয়েছেন সর্বশক্তিমান পর্যন্ত। (হাশর-৬) একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য নির্ধারিত ছিল। আল্লাহর কসম! তিনি তোমাদের বাদ দিয়ে একাকী ভোগ করেননি এবং কাউকে তোমাদের উপর প্রাধান্য দেননি। এ থেকে তিনি তোমাদের দিয়েছেন এবং কিছু তোমাদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। শেষ পর্যন্ত এ মালটুই অবশিষ্ট থেকে যায়। এ মাল থেকেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারের সারা বছরের খরচ দিতেন। আর যা উদ্বৃত্ত থাকত তা আল্লাহর ব্যবহার্য মালের সাথে ব্যায় করতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনভর এরুপই করেছেন। আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি তোমরা কি এ বিষয় জানো? তারা বললেনঃ হাঁ। এরপর তিনি আলী ও -আব্বাস (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমি আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এ বিষয় জানো? তারা উভয়ে বললেনঃ হ্যা। এরপর আল্লাহ তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দিলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর এ মাল নিজ কবজায় রাখলেন এবং এ মাল খরচের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনুসৃত পদ্বতি অবলম্বন করলেন। আলী ও আব্বাসের দিকে ফিরে “উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা তখন মনে করতে আবূ বকর এমন, এমন। অথচ আল্লাহ জানেন এ ব্যাপারে তিনি সত্য কল্যাণকামী, সঠিক নীতির অনুসারী। আল্লাহ আবূ বকরকে ওফাত দিলেন। আমি বললামঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ)-এর স্থলাভিষিক্ত এর পর আমি দূবছর এ মাল নিজ কবজায় রাখি। আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকরের অনুসৃত নীতির-ই অনুসরণ করতে থাকি। তারপর তোমরা দূজন আসলে; তখন তোমরা উভয়ে, ঐক্যমত ছিলে এবং তোমাদের বিষয়ে সমন্বয় ছিল। তুমি আসলে ভ্রাতুষ্পূত্রের সম্পত্তিতে তোমার অংশ চাইতে। আর এ আসলো শশুরু ের সম্পত্তিতে স্ত্রীর অংশ চাইতে। আমি বলেছিলামঃ তোমরা যদি চাও, তবে আমি এ শর্তে তোমাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি, তোমরা আল্লাহর সহিত ওয়াদা ও অংগীকারবদ্ধ থাকবে যে, এ ব্যাপরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর এবং এর কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পর আমিও যে নীতির অনুসরণ করে এসেছি, সে তোমরা অনুসরন করবে। অন্যথায় এ ব্যাপারে আমার সাথে কোন কথা বলবে না। তখন তোমরা বলেছিলে এ শর্ত সাপেক্ষেই আমাদের কাছে দিয়ে দিন। তাই আমি এ শর্তেই তোমাদের তা দিয়েছিলাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের সকলকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তে এটি তাদের কাছে দেইনি? তারা বললেনঃ হা। তারপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তেই এটি তোমাদের কাছে দেইনি? তারা বললেনঃ হা। তিনি বললেনঃ তবে এখন কি তোমরা আমার কাছে এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা চাইছ? সেই সত্তার কসম! যার আদেশে আসমান-যযীন টিকে আছে আমি কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা দিতে প্রস্তুত নই। তোমরা যদি উল্লেখিত শর্ত পালন করতে অক্ষম হও, তাহলে তা আমার জিম্মায় ফিরিয়ে দাও তোমাদের পক্ষ থেকে আমই এর পরিচালনা করব।

৪৯৬৮ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন! হিনদা বিনত উকরা এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আবূ সুফিয়ান কঠিন লোক। আমি যদি তার মাল থেকে পরিবারের কাউকে কিছু দেই তাহলে আমার গুনাহ হবে কি? তিনি বললেন, না; তবে সঙ্গতভাবে ব্যয় করবে।

৪৯৬৯ ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন মহিলা স্বামীর উপার্জন থেকে বিনা হুকুমে দান করে, তবে সে তার অর্ধেক সাওয়াব পাবে।

৪৯৭০ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, একদা ফাতিমা (রাঃ) যাতা ব্যবহারে তার হাতে যে কষ্ট পেতেন তার অভিযোগ নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আসলেন। তার কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দাস আসার খবর পৌছেছিল। কিন্তু তিনি হুযুর কে পেলেন না। তখন তিনি তার অভিযোগ আয়িশার কাছে বললেনঃ রাসুল ঘরে আসলে আয়িশা (রাঃ) তাকে জানালেন। আলী (রাঃ) বলেনঃ রাতে আমরা যখন শুয়ে পড়েছিলাম, তখন তিনি আমাদের কাছে আসলেন। আমরা উঠতে চাইলাম, কিন্তু তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়ে নিজ স্থানে থাক। তিনি এসে আমার ও ফাতিমার মাঝখানে বসলেন। এমনকি আমি আমার পেটে তার পায়ের শীতলতা অনূভব করেছিলাম। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা যা চেয়েছ তার চেয়ে কল্যাণকর বিষয় সম্বন্ধে তোমাদের অবহিত করব না? তোমরা যখন তোমাদের শয্যাস্থানে যাবে, অথবা বললেনঃ তোমরা যখন তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তেত্রিশবার সূবহানাল্লাহ , তেত্রিশবার আলহামদুলীল্লাহ এবং চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবর – পাঠ করবে। খাদেম অপেক্ষা ইহা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর।

৪৯৭১ হুমায়দী (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ফাতিমা (রাঃ) একটি খাদেম চাইতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আসলেন। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে এর চাইতে অধিক কল্যাণকর বিষয়ে খবর দিব না? তুমি শয়নকালে তেত্রিশবার সূবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলীল্লাহ এবং তেত্রিশবার আল্লাহ আল্লাহ পাঠ করবে। পরে সুফিয়ান বলেনঃ এর মধ্যে যে কোন একটি তেত্রিশবার। আলী (রাঃ) বলেনঃ এরপর থেকে কখনোও আমি এগুলো ছাড়িনি। জিজ্ঞাসা করা হলো সিফফীনের রাতেও না? তিনি বললেনঃ সিফফীনের রাতেও না।

৪৯৭২ মুহাম্মদ ইবনু আরআরা (রহঃ) আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহে কি কাজ করতেন? তিনি বললেনঃ তিনি ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন, আর যখন আযান শুনতেন, তখন বেরিয়ে যেতেন।

৪৯৭৩ মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিনদা বিনত উতবা বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপন লোক। আমাকে এ পরিমাণ খরচ দেন না, যা আমার ও আমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট; তষে তার অজানো্তে যা আমি (চাই) নিতে পারি। তখন তিনি বললেনঃ তোমার ও তোমার সভানের জন্য নিয়মানুসারে যা যথেষ্ট হয় তা তুমি নিতে পার।

৪৯৭৪ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উষ্ঠারোহীনা নারীদের মধ্যে কুরায়াশগোত্রের নারীরা সর্বশ্রেষ্ঠা। অপরজন বলেনঃ কুরায়শ গোত্রের সৎ নারীগণ, তারা সন্তানের প্রতি শৈশবে খুব স্নেহশীল এবং স্বামীর প্রতি বড়ই দরদী তার সম্পদের ক্ষেত্রে। মুআবিয়া ও ইবনু আববাসের সূত্রেও উভয় হাদীসটি বর্ণিত আছে।

৪৯৭৫ হাজ্জাজ ইবনু যিহাল (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে রেশমী পোশাক আসল। আমি তা পরিধান করলে তার চেহারা মোবারকে অসন্তষ্টির চিহ্ন লক্ষ্য করলাম। তাই আমি এটাকে খণ্ড খণ্ড করে আপন মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করে দিলাম।

৪৯৭৬ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাতটি বা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) নয়টি মেয়ে রেখে আমার পিতা ইন্তেকাল করেন। তারপর আমি এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ জাবির! তুমি বিয়ে করেছ? আমি বললাম: হা। তিনি তারপর জিজ্ঞাসা করলেন: কুমারী বিয়ে করেছ না বিধবা? আমি বললামঃ বিধবা! তিনি বললেনঃ কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সাথে প্রমোদ করতে, সেও তোমার সাথে প্রমোদ করতো। তুমিও তাকে হাসাতে, সেও তোমাকে হাসাতো। জাবির (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে বললামঃ অনেকগুলো কন্যা সন্তান রেখে আবদুল্লাহ (তার পিতা) মারা গেছেন তাই আমি ওদের-ই মত কুমারী মেয়ে বিয়ে করা পছন্দ করিনি। আমি এমন মেয়েকে বিয়ে করলাম যে তাদের দেখাশোনা করতে পারে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দিন অথবা বললেনঃ কল্যাণ দান করুন।

৪৯৭৭ আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – এর নিকট এক ব্যাক্তি এলো এবং বললো আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কেন? সে বললোঃ রামাযান মাসে আমি (দিবসে) স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটি দাস মুক্ত করে দাও। সে বললোঃ আমার কাছে কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একাধারে দু-মাস রোযা রাখ। সে বলল: সে ক্ষমতাও আমার নেই। তিনি বলেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও। সে বললো: সে সামর্থ্যও আমার নেই। এ সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এক বস্তা খেজুর এল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন: প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বললোঃ আমি এখানে। তিনি বললেনঃ এগুল দিয়ে স্বাদকা করা সে বললোঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্তকে দিব? সেই সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, মদিনার প্রস্তরময় দু-পার্শের মধ্যে আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কোন পরিবার লেই। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এমন কি তার চোয়ালের দাত মোবারক পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল এবং বললেনঃ তবে তোমাদেরই অনুমতি দেওয়া হল।

৪৯৭৮ মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সালামার সন্তানদের জন্য ব্যয় করলে তাতে আমার কোন সাওয়াব হবে কি? আমি তাদের এ (অভাবী) অবস্থায় ত্যাগ করতে পারি না। তারা তো আমারই সন্তান। তিনি বললেনঃ হ্যা, তাদের জন্য খরচ করলে তুমি সাওয়াব পাবে।

৪৯৭৯ মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিনদা এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ। আবূ সুফিয়ান কৃপন লোক। আমার ও সন্তানের প্রয়োজন মতো আমি যদি তার মাল থেকে কিছু গ্রহণ করি, তবে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেনঃ নিতে পার। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উক্তি যে ব্যাক্তি (ঝণ ইত্যাদির) কোন বোঝা অথবা সন্তান সন্তত্তি রেখে মারা যাবে, তার দায়দায়িত্ব আমার উপর।

৪৯৮০ ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে ঝণগ্রস্ত কোন মৃত ব্যাক্তিকে (জানাযার জন্য) আনা হলে, তিনি জিজ্ঞাসা করতেনঃ সে কি ঝণ পরিষোধ করার মত অতিরিক্ত কিছু রেখে গেছে? যদি বলা হত যে, সে ঝণ পরিশোধ করার মত সম্পদ রেখে গেছে, তাহলে তিনি তার জানাযা পড়তেন। অন্যথায় তিনি মুসলমানদের বলতেনঃ তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়। তারপর আল্লাহ যখন তার জন্য অসংখ্য বিজয়ের দার খুলে দিলেন, তখন তিনি বললেনঃ আমি মুমিনদের নিজেদের চেয়েও বেশী ঘনিঠতর। সুতরাং মুমিনদের মধ্যে সে কেউ ঝণ রেখে মারা গেলে, তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমারই। আর যে ব্যাক্তি সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীবা পাবে।

৪৯৮১ ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার বোন আবূ সুফইয়ানের মেয়েকে আপনি বিবাহ করুন। তিনি বললেনঃ তুমি কি তা পছন্দ কর? আমি বললাম, হ্যা। আমি তো আর আপনার সংসারে একা নই। আমার সঙ্গে এই সৌভাগ্যের অংশীদার, আমার বোনও তাদের অভভুক্ত হোক তাই আমি বেশী পছন্দ করি। তিনি বললেনঃ কিন্তু সে যে আমার জন্য হালাল হবে না? আমি বললাম: ইয়া রাসুলুল্লাহ আল্লাহর কসম! আমাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে আপনি নাকি উম্মে সালামার মেয়ে দুররাকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছেন? তিনি বললেনঃ উম্মে সালামার মেয়েকে? আমি বললামঃ হ্যা। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! সে যদি আমার কোলে পেলিত, পূর্ব স্বামীর ঔরসে উম্মে সালামার গর্ভজাত সন্তান নাও-হতো, তবু সে আমার জন্য হালাল ছিল না। সে তো আমার দুধ-ভাইয়ের কন্যা। সুওয়াহাবা আমাকে ও আবূ সালামাকে দূধ পান করিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের কন্যা ও বোনদের আমার সামণে পেশ করো না। শুয়াইব যুহরী থেকে বর্ননা করেছেন যে, উরওয়া বলেছেনঃ সুওয়ায়বাকে আবূ লাহাব মুক্ত করে দিয়েছিল।

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: ভরণ পোষণ
ভরণ পোষণ
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/10/bharonposhan.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/10/bharonposhan.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy