আহকাম

 ৬৬৫২ আবদান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে ব্যাক্তি আমার নাফরমানী করল, সে আল্লাহরই নাফরঁমানী করল। এবং যে ব্যাক্তি আমার (নির্বাচিত) আমীরের আনুগত্য করল, সে আমারই আনুগত্য করল। আর যে ব্যাক্তি আমার (নির্বাচিত) আমীরের নাফরমানী করল সে আমারই নাফরমানী করল।

৬৬৫৩ ইসমাঈল (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জেনে রেখো! তোমাদের প্রত্যেকেই একজন দায়িত্বশীল; আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব ইমাম, যিনি জনগণের দায়িত্বশীল তিনি তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ গৃহকর্তা তার পরিবারের দায়িত্বশীল; সে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। নারী তার স্বামীর পরিবার, সন্তান-সন্ততির উপর দায়িত্বশীল, সে এসব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কোন ব্যাক্তির দাস স্বীয় মালিকের সম্পদের দায়িত্বশীল; সে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব জেনে রাখ, প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

৬৬৫৪ আবূল ইয়ামান (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, তারা কুরাইশের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মুআবিয়া (রাঃ)-এর নিকট ছিলেন। তখন মুআবিয়া (রাঃ)-এব নিকট সংবাদ পৌছল যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, অচিরেই কাহতান গোত্র থেকে একজন বাদশাহ হবেন। এ শুনে তিনি ক্ষুদ্ধ হলেন এবং দাড়ালেন। এরপর তিনি আল্লাহ তাঁআলার যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন, তারপর তিনি বললেনঃ যা হোক! আমার নিকট এ মর্মে সংবাদ পৌছেছে যে, তোমাদের কতিপয় ব্যাক্তি এরুপ কথা বলে থাকে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বর্নিত নেই। এরাই তোমাদের মাঝে সবচেয়ে অজ্ঞ। সুতরাং তোমরা এ সকল মনগড়া কথা থেকে যা হয়। বক্তাকেই পথভ্রষ্ট করে সতর্ক থাক। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, (খিলাফতের) এ বিষয়টি কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তারা দ্বীনের উপর কায়েম থাকবে। যে কেউ তাদের সঙ্গে বিরোধিতা করে তবে আল্লাহ তাঁআলা তাকেই অধোমুখে নিপতিত করবেন। নুআয়ম (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) সুত্রে শুআয়ব-এর অনুসরণ করেছেন।

৬৬৫৫ আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (খিলাফতের) এই বিষয়টি সর্বদাই কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তাদের থেকে দু-জন লোকও অবশিষ্ট থাকবে।

৬৬৫৬ শিহাব ইবনু আববাদ (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু ধরনের লোক ছাড়া অন্য কারো প্রতি ঈর্ষা করা যায় না। একজন হল ঐমন ব্যাক্তি, যাকে আল্লাহ ধন-সস্পদ দান করেছেন এবং তাকে তা সৎপথে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন। অপরজন হল, যাকে আল্লাহ হিকমাত (সঠিক জ্ঞান) দান করেছেন, সে তার দ্বারা বিচার ফয়সালা করে এবং তা অপরকে শিক্ষা দেয়।

৬৬৫৭ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তোমাদের উপর এরুপ কোন হাবশী দাস-কেও শাসক নিযুক্ত করা হয়, যার মাথাটি কিশমিশের ন্যায় তবুও তার কথা শোন ও তার আনুগত্য কর।

৬৬৫৮ সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ তার আমীর (ক্ষমতাসীন) থেকে এমন কিছু দেখে, যা সে অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে কেউ জামাআত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দুরে সরে মরবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলিয়াতের মৃত্যু।

৬৬৫৯ মুসদ্দাদ (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যতক্ষন পর্যন্ত আল্লাহর নাফরমানীর নির্দেশ দেওয়া না হয়! ততক্ষন পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় সব বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তার মান্যতা ও আনুগত্য করা কর্তব্য। যখন নাফরমানীর নির্দেশ দেওয়া হয়, তখন আর কোন মান্যতা ও আনুগত্য নেই।

৬৬৬০ উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ক্ষুদ্র সৈন্যদল প্রেরন করলেন এবং একজন আনসারী ব্যাক্তিকে তাদের আমীর নিযুক্ত করে সেনাবাহিনীকে তার আনুগত্য করার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি (আমীর) তাদের উপর ক্ষুব্ধ হলেন এবং বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদেরকে আমার আনুগত্য করার নির্দেশ দেননি? তারা বললেনঃ হ্যা। তখন তিনি বলঁলেন, আমি তোমাদের দৃঢ়ভাবে বলছি যে, তোমরা কাঠ সংগ্রহ করবে এবং তাতে আগুন প্রজ্জলিত করবে। এরপর তোমরা তাতে প্রবেশ করবে। তারা কাঠ সংগ্রহ করল এবং তাতে আগুন প্রজ্জলিত করল। এরপর যখন তারা প্রবেশ করতে ইচ্ছা করল- তখন একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। তাঁদের কেউ কেউ বলল আগুন থেকে পরিত্রাণের জন্যই তো আমাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করেছি। তাহলে কি আমরা (অবশেষে) আগুনেই প্রবেশ করব? তাঁদের এসব কথোপকথনের মাঝে হঠাৎ আগুন নিভে যায়। আর তার (আমীরের) ক্রোধও অবদমিত হয়ে পড়ে। এ ঘটনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বললেনঃ যদি তারা তাতে প্রবেশ করত, তাহলে কোন দিন আর এর থেকে বের হত না। জেনে রেখো! আনুগত্য কেবলমাত্র বিধিসম্মত কাজেই হয়ে থাকে।

৬৬৬১ হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরা! তুমি নেতৃত্বের সাওয়াল করো না। কারণ চাওয়ার পর যদি তোমাকে তা দেওয়া হয়, তবে তার দায়িত্ব তোমার উপরই বর্তাবে। আর যদি সাওয়াল ছাড়া তা তোমাকে দেওয়া হয় তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোন বিষয়ের কসম করার পর তার বিপরীত দিকটিকে যদি তার চেয়ে কল্যানকর মনে কর, তাহলে কসমের কাফফারা আদায় করে দিও এবং কল্যাণকর কাজটি বাস্তবায়িত করো।

৬৬৬২ আবূ মামার (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ হে আবদূর রহমান ইবনু সামুরা! নেতৃত্ব চেয়ে নিও না। কেননা, যদি চাওয়ার পর তুমি তা প্রদত্ত হও, তাহলে তার সকল দায়-দায়িত্ব তোমার উপরই অর্পিত হবে। আবূ যদি না চাওয়া সত্তেও তুমি তা প্রদত্ত হও, তাহলে এ ব্যপারে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সহযোগিতা করা হবে। আর কোন বিষয়ে কসম কসার পর তার বিপরীত দিকটিকে যদি উত্তম বলে মনে কর তাহলে উত্তম কাজটি করে ফেল আর তোমার কসমের কাফফারা আদায় করে দিও।

৬৬৬৩ আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ তোমরা নিশ্চয়ই নেতৃত্বের লোভ পোষণ কর, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে। কত উত্তম দুগ্ধদায়িনী এবং কত মন্দ দুগ্ধ পানে বাধাদান কারিনা (এটা) (অর্থাৎ এর প্রথম দিক দুগ্ধদানের ন্যায় তৃপ্তিকর, আর পরিণাম দুধ ছাড়ানোর ন্যায় যন্ত্রণাদায়ক)। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর ভাষ্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

৬৬৬৪ মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমি ও আমার গোত্রের দু-ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট গমন করলাম। সে দু-জনের একজন বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে (কোন বিষয়ে) আমীর নিযুক্ত করুন। অপরজনও অনুরুপ কথা বলল। তখন তিনি বললেনঃ যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ পোষণ করে আমরা তাদেরকে এ পদে নিয়োগ করি না।

৬৬৬৫ আবূ নূআয়ম (রহঃ) হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ (রহঃ) মাকিল ইবনু ইয়াসারের মৃত্যুশয্যায় তাকে দেখতে গেলেন। তখন মাকিল (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমি তোমাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করছি যা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি যে, কোন বান্দাকে যদি আল্লাহ তাআলা জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে কল্যাণকামিতার সাথে তাদের তত্বাবধান না করে, তাহলে সে বেহেশতের ঘ্রাণও পাবে না।

৬৬৬৬ ইসহাক ইবনু মানস্বরু (রহঃ) হাসান বলৃরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন! অঢূমরা মাকিল ইবনু ইয়াসারের কাছে তার ছুযুন্ধ্রষায় আসলাম। এ সময় উবায়দুল্লাহ প্রবেশ করল। তখন মাকিল (রাঃ) বললেনঃ আমি তোমাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করে শোনাব, যা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেনঃ যদি কোন দায়িত্বশীল ব্যাক্তি মুসলিম জনগণের দায়িত্ব লাভ করল এবং তার মৃত্যু হল এ অবস্হায় যে, সে ছিল খিয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।

৬৬৬৭ ইসহাক ওয়াসেতী (রহঃ) তারীফ আবূ তামীমা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি সাফওয়ান (রহঃ), জুনদাব (রাঃ) ও তাঁর সাথীদের কাছে ছিলাম। তখন তিনি তাদের উপদেশ দিচ্ছিলেন। তারা জিজ্ঞাসা করল, আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন কথা শুনেছেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ আমি তাকে বলতে শুনেছি যে, যারা মানুষকে শোনাবার জন্য কোন কাজ করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার এ কথা শুনিয়ে দিবেন। আর যারা অন্যের প্রতি কঠোর ব্যবহার করে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার প্রতিকঠোর ব্যবহার করবেন। তাঁরা পূনরায় বলল, আমাদেরকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেনঃ মানুষের দেহের যে অংশ প্রথম দৃর্শময় হবে, তা হল তার পেট। সুতরাং যে ব্যাক্তি সামর্থ্য রাখে যে একমাত্র পবিত্র (হালাল) খাদ্য ছাড়া আর কিছু সে আহার করবে না, সে যেন তাই করতে চেষ্টা করে। আর যে ব্যাক্তি সামর্থ্য রাখে যে এক আজলা পরিমাণ রক্তপাত ঘটিয়ে তার ও জান্নাতের মাঝে প্রতিবন্দকতা সৃষ্টি করবে না, সে যেন অবশ্যই তা করে। ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর ছাত্র ফেরাবরী) বলেনঃ আমি আবূ আবদুল্লাহ (রাঃ) (ইমাম বুখারী)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমি শুনেছি- এ কথা কি হাদাব বলেছিলেন? তিনি বললেনঃ হ্যা, জুনদাবই।

৬৬৬৮ উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ একবার আমি ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় একজন লোক মসজিদের আঙ্গিনায় আমাদের সাথে সাক্ষাত করে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কিয়ামত কখন হবে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার জন্য কি প্রভুত্ব গ্রহণ করেছ? এতে লোকটি যেন কিছুটা লজ্জিত হল। তারপর বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! রোযা। সালাত (নামায/নামাজ), সাদাকা খুব একটা তার জন্য করতে পারিনি। তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস (কিয়ামতে) তার সাথেই থাকবে।

৬৬৬৯ ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) সাবিত বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে তার পরিবারের একজন মহিলাকে এ মর্মে বলতে শুনেছি যে, তুমি কি অমুক মহিলাকে চেন? সে বলল, হ্যা। আনাস (রাঃ) বললেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তখন একটি কবরের পাশে কাদছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ আল্লাহকে ভয় কর এবং ধৈর্য ধারণ কর। তখন সে বলল, আমার কাছ থেকে সরে যাও, কেননা তুমি আমার মুসীবত থেকে মুক্ত। আনাস (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে অতিক্রম করে চলে গেলেন। এ সময় অপর লোক তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে তাকে জিজ্ঞাসা করল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে কি-বললেনঃ। স্ত্রীলোকটি বলল, আমি তো তাকে চিনতে পারিনি। লোকটি বলল, ইনই তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! তিনি বললেন, পরে সে (স্ত্রীলোকটি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দরজায় আসল। তবে দরজায় কোন দারোয়ান দেখতে পেল না। তখন সে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহর শপথ! আমি আপনাকে চিনতে পারিনি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রথম আঘাতেই ধৈর্য ধারণ করতে হয়।

৬৬৭০ মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ যুহলী (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কায়স ইবনু সা’দ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে এরুপ থাকতেন যেরুপ আমীরের (রাষ্ট্র প্রধানের) সামনে পুলিশ প্রধান থাকেন।

৬৬৭১ মূসা জাদ (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (গভর্নর করে) পাঠালেন এবং তার পশ্চাতে মু’আয (রাঃ) কেও পাঠালেন। অন্য সনদে পরবর্তী অংশ আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত ষে, এক ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহণ করার পর পূনরায় পূর্ব ধর্ম অবলম্বন করে। তার কাছে মু’আয ইবনু যাবাল (রাঃ) এলেন। তখন সে লোকটি আবূ মূসা (রাঃ) এর কাছে ছিল। তিনি মু’আয (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, এর কি হয়েছে? তিনি বললেনঃ ইসলাম গ্রহণ করেছিল। অতঃপর ইহুদী হয়ে গেছে। মু’আয (রাঃ) বললেনঃ একে হত্যা না করে আমি বসব না। আল্লাহ ও তার রাসুলের বিধান (এটাই)।

৬৬৭২ আদম (রহঃ) আব্দুর রহমান ইবনু আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আবূ বাকরা (রাঃ) তাঁর ছেলেকে লিখে পাঠালেন- সে সময় তিনি সিজিস্থানে অবস্হানরত ছিলেন যে, তুমি রাগের অবস্হায় বিবদমান দু-ব্যাক্তির মাঝে ফায়সালা করো না। কেননা, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে কোন বিচারক রাগের অবস্হায় দু-জনের মধ্যে বিচার করবে না।

৬৬৭৩ মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহর শপথ! আমি অমুক ব্যাক্তির কারণে ফজরের জামাতে উপস্থিত হই না। কেননা, তিনি আমাদেরকে নিয়ে দীর্ঘ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। আবূ মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কোন ওয়াযে সে দিনের মত অধিক রাগাম্বিত হতে আর দেখিনি। এরপর উনি বললেনঃ হে লোক সকল! তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বিরক্তির উদ্রেককারী রয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে কেউ লৌকদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে সে যেন সংক্ষিপ্ত করে। কেননা তাদেয় মধ্যে রয়েছে বয়ষ্ক, দুর্বল ও কর্মব্যস্ত লোকেরা।

৬৬৭৪ মুহাম্মাদ ইবনু আবূ ইয়াকুব কিরমানী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর স্ত্রীকে ঝতূবতী অবস্হায় তালাক দিয়েছিলেন। উমর (রাঃ) এ ঘটনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে বর্ণনা করেন। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগাম্বিত হন। এরপর তিনি বলেনঃ সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে এবং তাকে আটকিয়ে রাখে, যতক্ষন পর্যন্ত সে পবিত্র হযে পূনরায় ঋতুবতী না হয় এবং পুনরায় পবিত্র না হয়। এরপরও যদি তার তালাক দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে যেন তখন (পবিত্রাবস্হায়) তালাক দেয়। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রাঃ) বলেন- যুহরী-ই মুহাম্মাদ।

৬৬৭৫ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ একদা হিবা বিনত উতবা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহর কসম! যমীনের রক এমন কোন পরিবার ছিল না, আপনার পরিবারের চেয়ে যার লাঞ্ছনা ও অবমাননা আমার নিকট বেশি প্রিয় ও পছব্দনীয় ছিল। কিন্তু আজ আমার নিকট এরুপ হয়েছে যে, এমন কোন পরিবার যমীনের বুকে নেই, যে পরিবার আপনার পরিবারের চাইতে বেশি উত্তম ও সম্মানিত। তারপর হিন্দা (রাঃ) বলল, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) একজন ভীষণ কৃপণ লোক। কাজেই আমি আমাদের সন্তানদেরকে তার সম্পদ থেকে খাওয়াই, আমার জন্য এটা দোষের হবে কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ না, তোমার জন্য তাদেরকে খাওয়ানো কোন দোষের হবে না, যদি তা ন্যায়সঙ্গত হয়।

৬৬৭৬ মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রোম সমরাটের কাছে চিঠি লিখতে চাইলেন, তখন লোকেরা বলল, যে মহরকৃত চিঠি না হলে তারা তা পাঠ করে না। তাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি রুপার আংটি তৈরি করলেন। আনাস (রহঃ) বলেনঃ আমি এখনও যেন এর ঔজ্জল্য প্রত্যক্ষ করছি। তাতে এ-‘মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’ অংকিত ছিল।

৬৬৭৭ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু সা’দী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, উমর (রাঃ)-এর খিলাফতকালে তিনি একবার তার কাছে আসলেন। তখন উমর (রাঃ) তাকে বললেন-আমাকে কি এ মর্মে অবগত করা হয়নি যে তুমি জনগণের অনেক দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে থাক। অথচ যখন তোমাকে এর পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়, তখন তুমি তা গ্রহণ কবাকে অপছন্দ কর? আমি বললাম, হ্যা। উমর (রাঃ) বললেনঃ কি উদ্দেশ্যে তুমি এরুপ কর। আমি বললাম, আমার বহু ঘোড়া ও গোলাম রয়েছে এবং আমি ভাল অবস্হায় আছি। সুতরাং আমি চাই যে, আমার পারিশ্রমিক মুসলমান জনসাধারগের জন্য সাদাকা হিসাবে পরিগণিত হোক। উমর (রাঃ) বললেনঃ এরুপ করো না। কেননা, আমিও তোমার মত এরুপ ইচ্ছা পোষণ করতাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে কিছু দিতেন, তখন আমি বলতাম, আমার চেয়ে যার প্রয়োজন বেশি তাকে প্রদান করুন। এতে একবার তিনি আমাকে কিছু মাল দিলেন। আমি বললাম, আমার চেয়ে এ মালের প্রয়োজন যার বেশি তাকে দিন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ একে গ্রহণ করে মালদার হও এবং বৃদ্ধি করে তা থেকে সাদাকা কর। আর এই মাল সম্পদের যা কিছু তোমার নিকট এভাবে আসে, তুমি যার প্রত্যাশী নও বা প্রার্থী নও তা গ্রহণ করো। অন্যথায় তাহলে তার পিছনে নিজেকে নিরত করো না। যুহরী আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে বলেনঃ তিনি উমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যখন কিছু দান করতেন- তখন আমি বলতাম আমার চেয়ে যার প্রয়োজন বেশি তাকে দিন। এভাবে একবার তিনি আমাকে কিছু মাল দিলেন। আমি বললাম! আমার চেয়ে যার প্রয়োজন বেশি তাকে প্রদান করুন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ একে গ্রহন কর এবং বৃদ্ধি করে তা থেকে সাদাকা কর। আর এই প্রকার মালের যা কিছু তোমার কাছে এমতাবস্হায় আসে যে তুমি তার প্রত্যাশীও নও এবং প্রার্থীও নও তাহলে তা গ্রহণ করা তবে যা এভাবে আসবে না তার পিছনে নিজেকে ধাবিত করো না।

৬৬৭৮ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) সাধী ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি দু-জন (নামী-স্ত্রী) লিআনকারীকে প্রত্যক্ষ করেছি, তাদের বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। তখন আমার বয়স ছিল পনের বছর।

৬৬৭৯ ইয়াহইয়া (রহঃ) সাহল ইবনু সা-দ (রাঃ) বনূ সাঈদার ভ্রাতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, এক আনসারী ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বলল, আপনার কি রায়? যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পায় তাহলে কি সে তাকে হত্যা করবে? পরে সে ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে মসজিদে লিআন করানো হয়েছিল, তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম।

৬৬৮০ ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এল। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে ডেকে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যিনা করে ফেলেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে সে যখন নিজের ব্যাপারে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল, তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি পাগল? লোকটি বলল, না। তখন তিনি বললেনঃ একে নিয়ে যাও এবং রজম (পাথর মেরে হত্যা) কর। ইবনু শিহাব বলেন জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে যিনি শুনেছেন, তিনি আমাকে বলেছেনঃ যে, যারা তাকে জানাযা পড়ার স্থানে নিযে রজম করেছিলেন আমি তাদের মধ্যে অন্তভুক্ত ছিলাম। ইউনূস, মাহমার ও ইবনু জুরায়জ (রহঃ) জাবির (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রজম সম্পর্কে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৬৬৮১ আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমিও মানূষ ছাড়া কিছু নই। তোমরা আমার কাছে বিবাদ নিয়ে এসে থাক। হয়ত তোমাদের কেউ অন্যের তূলনার প্রমাণ উপস্থাপনের ব্যাপারে অধিক স্পষ্টবাদী। আর আমি তো যেরুপ শুনি সে ভিত্তিতেই বিচার করে থাকি। সুতরাং আমি যদি কারোর জন্য তার অপর কোন ভাইয়ের হক সম্পর্কে কোন ফায়সালা দেই, তবে সে যেন তা গ্রহণ না করে। কেননা, আমি তার জন্য যে অংশ নির্ধারিত করলাম তা তো এক টুকরা অগ্নি মাত্র।

৬৬৮২ কুতায়বা (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হুনায়নের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন শক্রপক্ষের কোন নিহত ব্যাক্তিকে হত্যা করার ব্যাপারে যার সাক্ষী আছে, সেই তার পরিত্যক্ত সম্পদ পাবে। (রাবী বলেন) আমি আমার কর্তৃক নিহত ব্যাক্তির সাক্ষী তালাশ করতে লাগলাম। কিন্তু আমার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবে এমন কাউকে দেখতে পেলাম না, সুতরাং আমি বসে গেলাম। তারপর আমার খেয়াল হল। আমি তার হত্যার বিষয়টিকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তাঁর নিকট উপবিষ্ট ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন বলল, যে নিহত ব্যাক্তির আলোচনা হচ্ছে তার হাতিয়ার আমার কাছে রয়েছে অতএব আপনি তাকে আমার পক্ষ হয়ে সন্তুষ্ট করে দিন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ কখনো না। আপনি এই পাংশু কুরাইশকে কখনো দিবেন না। আল্লাহ ও রাসুলের পক্ষে যে আল্লাহর সিংহ যুদ্ধ করছে, তাকে আপনি বঞ্চিত করবেন। রাবী বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টি অনুধাবন করলেন এবং তা (হাতিয়ার ইত্যাদি) আমাকে প্রদান করলেন। আমি তা দিয়ে একটি বাগান খরিদ করলাম। এটাই ছিল আমার প্রথম-সম্পদ, যা আমি মূলধন হিসাবে সংরক্ষন করেছিলাম। আবদুল্লাহ (রহঃ) লাইহের সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করতে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিযয়টি অনুধাবন করলেন) এর স্থলে (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়িয়ে গেলেন) বর্ণনা করেছেন। হিজাযের আলেমরা বলেনঃ শাসক তার জ্ঞানানূসারে বিচার করবে না, চাহে তা দায়িত্বকালে প্রত্যক্ষ করে থাকুক, কিংবা তার পূর্বেই- তাদের কারো কারো মতে যদি বাদী বিবাদীর কোন এক পক্ষ অপর পক্ষের হক সম্পর্কে বিচার চলাকালে তার সস্মুখেও স্বীকার করে তবুও তার ভিত্তিতে ফয়সালা করা যাবে না, যতক্ষন পর্যন্ত দু-জন সাক্ষী ডেকে সে ব্যাক্তির স্বীকারোক্তির সময় তাদের উপস্থিত না রাখবেন। কোন কোন ইরাকী আলেম বলেনঃ বিচার চলাকালে যা কিছু শুনবে বা দেখবে সে অনুযায়ি ফায়সালা করবে। তবে অন্য স্থানে যা কিছু টনবে বা দেখবে দু-জন সাক্ষী ছাড়া ফায়সালা করতে পারবে না। তাদের অন্যরা বলেন বরং সে ভিত্তিতে ফায়সালা করতে পারবে। কেননা সে তো বিশ্বস্ত। আর সাক্ষ্য গ্রহণের উদ্দেশ্য তো প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করা। সূতরাং তার জানা(সাক্ষীর) সাক্ষ্যের চেয়ে অধিক নির্ভরযোগ্য। তাদের অন্য কেউ বলেন যে, মাল সংক্রান্ত বিষয়ে বিচারক তার নিজের জানার ভিত্তিতে ফায়সালা করবে। তবে অন্য ব্যাপারে নয়। কাসেম (রহঃ) বলেন যে, অন্যের সাক্ষ্য গ্রহণ ছাড়া শাসকের নিজের জ্ঞানানূসারে ফয়সালা করা উচিত নয় যদিও তার জানাঅন্যের সাক্ষীর চেয়ে অধিক নির্ভরযোগ্য তবুও। এতে মুসলিম জনসাধারণের কাছে নিজেকে অপবাদের সন্মুখীন হতে হয় এবং তাদেরকে (মিথ্যা) সন্দেহে ফেলা হয়। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্দেহ করাকে পছন্দ করতেন না। এজন্যই তিনি পথচারীকে ডেকে বলে দিয়েছেনঃ এ হচ্ছে (আমার স্ত্রী) সাফিয়্যা।

৬৬৮৩ আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আলী ইবনু হুসাইন (রহঃ) থেকে বর্নিত। উম্মুল মুমিনীন সাফিয়্যা বিনত হুয়াই (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসেছিলেন। যখন তিনি প্রত্যাবর্তন করছিলেন তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে সাথে হাটছিলেন। এমতাবস্হায় দু-জন আনসারী ব্যাক্তি তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করল। তিনি তাঁদেরকে ডাকলেন এবং বললেনঃ এ হতে সাফিয়্যা। তাঁরা (অবাক হয়ে) বলল, সুবহানাল্লাহ (আমরা কি আপনার ব্যাপারে সন্দেহ করতে পারি?) তিনি বললেনঃ শয়তান বনী আদমের ধমনীতে বিচরণ করে থাকে। শুআয়ব সাফিয়্যা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৬৬৮৪ মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পিতা ও মু’আয ইবনু জাবালকে ইয়ামানে পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা সহজ আচরণ করো, কঠোরতা প্রদর্শন করো না, তাদের সুসংবাদ শোনাও, ভীতি প্রদর্শন করো না এবং একে অপরকে মেনে চলো। তখন আবূ মূসা (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমাদের দেশে ‘বিত’ নামক এক প্রকার পানীয় প্রস্তুত করা হয় (যা মধুর সিরকা থেকে তৈরি)। উত্তরে তিনি বললেনঃ প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তুই হারাম। নাযর আবূ দাঊদ, ইয়াযিদ ইবনু হারুন, ওকী (রহঃ) সাঈদ-এর দাদা আবূ মূসা (রাঃ) সুত্রে এ হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

৬৬৮৫ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবূ-মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বন্দীদের মুক্ত কর, আর দাওয়াতকারীর দাওয়াত কবুল কর।

৬৬৮৬ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী আসা’দ গোত্রের ইবনু রতাবিয়্যা নামক জনৈক ব্যাক্তিকে যাকাত আদায়ের জন্য কর্মচারী বানালেন। সে যখন ফিরে আসল, তখন বলল, এগুলো আপনাদের। আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। এ কথা শোনার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরের উপর দাড়ালেন। সুফিয়ান কখনো বলেনঃ তিনি মিম্বরের উপর আরোহণ করলেন এবং আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ননা করলেন। এরপর বললেনঃ কর্মকর্তার কি হল! আমি তাকে প্রেরণ করি, তারপর সে ফিরে এসে বলল, এগুলো আপনার, আর এগুলো আমার। সে তার বাপের বাড়ি কিংবা মায়ের বাড়িতে বসে থেকে দেখত যে, তাকে হাদিয়া দেওয়া হয় কিনা? যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! যা কিছুই সে (অবৈধভাবে) গ্রহণ করবে, কিয়ামতের দিন তা কাঁধে বহন করে নিয়ে উপস্থিত হবে। যদি উট হয়, তাহলে তা চিৎকার করবে, যদি গাভী হয় তাহলে তা হাম্বা হাম্বা করবে, অথবা যদি বকরী হয় তাহলে তা যা যা করবে। তারপর তিনি উভয় হাত উঠালেন। এমনকি আমরা তার উভয় কালের শুভ্র ঔজ্জ্বল্য দেখতে পেলাম। তারপর বললেনঃ শোন! আমি কি আল্লাহর কথা পৌছে দিয়েছি? এ কথাটি তিনি তিনবার বললেনঃ সুফিয়ান বলেনঃ আমাদের কাছে এ রেওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন। তবে হিশাম তার পিতার সুত্রে আবূ হুনায়দ থেকে বর্ণনা করতে আর একটু বাড়িয়ে বলেছেনঃ যে, তিনি (আবূ হুমায়দ) বলেছেনঃ আমার উভয় কান তা শুনেছে এবং দু, চোখ তা দেখেছে। যায়িদ ইবনু সাবিতকে জিজ্ঞাসা কর, সেও আমার সাথে শুনেছিল। আমি বললাম, “উভয় কান শুনেছে এবং দু, চোখ তাকে দেখেছে। ” এ কথা বলেননি।

৬৬৮৭ উসমান ইবনু সালিহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ হুযায়ফার আযাদকৃত দাস সালিম (রাঃ) মসজিদে কুবাতে প্রথম নারির মুহাজেরীন ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের ইমামতি করতেন। তাদের মাঝে আবূ বকর, উমর, আবূ সালামা, যায়িদ ও আমির ইবনু রাবীআ (রাঃ) ছিলেন।

৬৬৮৮ ইসমাঈল ইবনু আবূ ওয়ায়স (রহঃ) উরওয়া ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, মারওয়ান ইবনু হাকাম ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) তার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, হাওয়াযেনের বন্দীদেরকে আযাদ করে দেওয়ার ব্যাপারে মুসলমানরা যখন সর্বসম্মতিতে এসে অনুমতি দিলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে অনুমতি দিয়েছ, আর কে দাওনি, তা আমি বুঝতে পারিনি। অতএব তোমরা ফিরে যাও, তোমাদের প্রতিনিধিরা তোমাদের মতামত নিয়ে আমার কাছে আসবে। লোকেরা ফিরে গেল এবং তাদের প্রতিনিধিরা তাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করল। পরে তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট ফিরে এসে জানাল যে, লোকেরা খুশী মনে অনুমতি দিয়েছে।

৬৬৮৯ আবূ নুআয়ম (রহঃ) মুহাম্মদ ইবনু যায়িদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমর তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কতিপয় লোক ইবনু উমর (রাঃ)-কে বলল, আমাদের শাসকের নিকট গিয়ে তার এমন কিছু গুনগান করি, যা তার দরবার থেকে বাইরে আসার পর কবি তার চেযে ভিন্নতর। এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ আমরা এটাকেই নিফাক মনে করতাম।

৬৬৯০ কুতায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন। দ্বীমুখী লোকেরা সবচাইতে নিকৃষ্ট, তারা এদের কাছে এক চেহারা নিয়ে উপস্থিত হয় আবার ওদের কাছে আর এক চেহারা নিয়ে উপস্থিত হয়।

৬৬৯১ মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিন্দা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলল, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বড়ই কৃপন ব্যাক্তি। অতএব (তার অগোচরে) তার সম্পদ থেকে কিছু নিতে আমি বাধ্য হয়ে পড়ি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার ও সন্তানের যতটুকু প্রয়োজন হয় ন্যায়সঙ্গতভাবে সেই পরিমাণ নিতে পার।

৬৬৯২ আব্দুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিনা উম্মে সালামা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, একদা তিনি তার হুজরার দরজায় বাদানূবাদের শব্দ শুনতে পেলেন। এরপর তিনি তাদের কাছে এসে বললেনঃ আমি তো একজন মানুষ। আমার নিকট বাদী-বিবাদীরা আসো হয়ত তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যের তুলনায় বাকপটু থাকে। আমি তার কথায় হয়ত তাকে সত্যবাদী মনে করি। অতএব আমি তার পক্ষে ফায়সালা করি। কিন্তু আমি যদি অপর কোন মুসলমানের হক কারো জন্য ফায়সালা করি, তাহলে সেটা এক গুচ্ছ আগুন ছাড়া আর কিছু নয়। অতএব সে চাহে তা গ্রহন করুক অথবা রা বর্জন করুক।

৬৬৯৩ ইসমাঈল (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পত্নী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উৎবা ইবনু আর ওয়াক্কাস তার ভাই সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাসকে এ মর্মে ওসিয়ত করেন যে, যামআ-এর বাদীর গর্ভজাত সন্তানটি আমার ঔরস থেকে জন্মলাভ করেছে। অতএব তাকে তুমি তোমার তত্ত্বাবধানে নিয়ে এসো। মক্কা বিজয়ের বারে সা’দ (রাঃ) তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধরলেন এবং বললেনঃ আমার ভাই এ ছেলের ব্যাপারে আমাকে ওসিয়ত করেছিলেন। আবদ ইবনু যামআ দাড়িয়ে বলল, এ আমার ভাই, আমার পিতার বাদীর গর্ভজাত সন্তান। আমার পিতার ঔরসে তার জন্ম। তারপর তারা উভয়েই বিষয়টি নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে বিচার প্রার্থী হলেন। সা’দ বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ আমার ভাইয়ের ছেলে। আমার ভাই এ সম্পর্কে আমাকে ওসিয়ত করে গেছেন। আবদ ইবনু যামআ বলল, এ আমার ভাই, আমার পিতার বাদীর গর্ভজাত সন্তান। আমার পিতার ঔরসেই তার জন্ম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ! এ তোমারই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সন্তান বিছানার মালিকেরই আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর। পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উতবার সাথে এ ছেলেটির সা’দৃশ্য লক্ষ্য করার কারণে, সাওদা বিনত যামআ (রাঃ)-কে বললেনঃ এর থেকে পর্দা করে চলো। সে জন্য মৃত্যুর পুর্বে সে ছেলে সাওদাকে কোন দিন দেখতে পায়নি।

৬৬৯৪ ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মাল আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা কসম করে, সে আল্লাহ তাআলার সাথে এমন অবস্হায় সাক্ষাৎ করবে যে, তিনি তার প্রতি ভীষণ রাগাম্বিত থাকবেন। এ মর্মে আল্লাহ তা’আলা এই আয়াত অবতীর্ন করেছেনঃ ‘যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তূচ্ছ মূল্য বিক্রয় করে। (৩-৭৭) যখন আবদুল্লাহ (রাঃ) তাদেরকে হাদীস বর্ণনা করছিলেন, তখন আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) এলেন এবং বললেনঃ যে এই আয়াতই আমি ও অপর একটি লোক সম্পর্কে অবতীর্ন হয়েছে। একটি ফুয়ার বিষয়ে যার সাথে আমি বিবাদ করেছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তোমার কাছে প্রমাণ আছে কি? আমি বললাম- না। তিনি বললেনঃ তাহলে সে কসম করুক। আমি বললাম সে কসম খাবেই। তখন এই আয়াত অবতীর্ন হয়ঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তূচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে (৩-৭৭)।

৬৬৯৫ আবূল ইয়ামন (রহঃ) উম্মু সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দরজার পাশে ঝগড়ার শোরগোল শুনতে পেলেন। তাই তিনি তাদের কাছে বেরিয়ে গেলেন এবং বললেন?, আমি তো একজন মানুষ। বিবদমান ব্যাক্তিরা ফয়সালার জন্য আমার নিকট আসে। হয়ত তাদের কেউ অন্যের তূলনায় অধিক বাকপটু। আমি তার কথার ভিত্তিতে তার পক্ষে ফায়সালা করি এবং আমি মনে করি সে সত্যবাদী। সূতরাং আমি যদি কাউকে অন্য মুসলমানের হকের সাথে ফায়সালা করে দেই তাহলে তা (তার জন্য) একখন্ড আগুন ছাড়া কিছু নয়। সুতরাং সে চাহে তা গ্রহণ করুক অথবা ছেড়ে দিক।

৬৬৯৬ ইবনু নুমায়র (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে সংবাদ পৌছল যে, তাঁর সাহাবীদের একজন তার গোলামকে মৃত্যুর পরে কার্যকর হবে এই শর্তে আযাদ করলেন। অথচ তার এ ছাড়া আর কোন মাল ছিল না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে গোলমটিকে আটশ- দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন এবং প্রাপ্তমুল্য তার নিকট পাঠিয়ে দেন।

৬৬৯৭ মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেনাদল প্রেরণ করেন এবং উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ)-কে তাদের আমীর নিযুক্ত করেন। কিন্তু তার নেতৃত্বের ব্যাপারেঁ সমালোচনা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা যদি তার নেতৃত্বের সমালোচনা কর, তোমরা ইতিপূর্বে তার পিতার নেতৃত্বেরও সমালোচনা করেছিলে। আল্লাহর কসম! সে নেতৃত্বের উপযুক্ত ছিল। আর সে ছিল আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয়। আর তারপরে এ হল আমার কাছে সবচাইতে প্রিয়।

৬৬৯৮ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে সবচাইতে ঘৃণ্য ব্যাক্তি হল সে, যে সর্বক্ষণ ঝগড়ায় লিপ্ত থাকে।

৬৬৯৯ মাহমুদ ও নূআয়ম (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদ ইবনু ওয়ালীদকে জায়ীমা গোত্রের দিকে প্রেরণ করলেন। কিন্তু তারা উত্তমরুপে ‘আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি’ কথাটি বলতে পারল না। বরং বলল, সাবানা- ‘সাবানাঁ’ (আমরা পুরাতন ধর্ম ত্যাগ করে নতূন ধর্ম গ্রহণ করেছি)। এরপর খালিদ তাদের হত্যা ও বন্দী করতে শুরু করলেন। আর আমাদের প্রত্যেকের কাছে বাদী হাওয়ালা করলেন এবং প্রত্যেককে নিজ বন্দীকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি আমার বন্দীকে হত্যা করব না এবং আমার সঙ্গীদের কেউ তার বন্দীকে হত্যা করবে না। এরপর এ ঘটনা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে বর্ননা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! খালিদ ইবনু ওয়ালীদ যা করেছে তা থেকে আমি আপনার অব্যাহতি কামনা করছি। এ কথাটি তিনি দু-বার বললেন।

৬৭০০ আবূ নূমান (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বনী আমের গোত্রে (আত্নঘাতী) সংঘর্ষ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এ সংবাদ পৌছল। তিনি যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার পর তাদের মধ্যে মিমাংসা করার জন্য আসলেন। (আসার সময়) তিনি বিলালকে বললেনঃ যদি সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হয়ে যায় আর আমি এসে না পৌছি, তাহলে আবূ বকরকে বলবে, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে। যখন আসরের সময় হল, বিলাল (রাঃ) আযান দিলেন। অতঃপর ইকামত দিয়ে আবূ বকরকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে বললেনঃ আবূ বকর (রাঃ) সামনে গেলেন। আবূ বকর (রাঃ)-এর সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্হায়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং মানুষকে ফাঁক করে আবূ বকরের পিছনে দাড়ালেন। অর্থাৎ আবূ বকরের সংলগ্ন কাতার পর্যন্ত অগ্রসর হলেন। রাবী বলেন, লোকেরা হাততালি দিল। তিনি আরও বলেন যে, আবূ বকর (রাঃ) যখন সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করতেন তখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ না হওয়া পর্যন্ত এদিক-সেদিক তাকাতেন না। তিনি যখন দেখলেন যে, হাততালি বন্ধ হচ্ছে না তখন তিনি তাকালেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তার পিছনে দেখতে পেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের ইশারায় তাকে সালাত (নামায/নামাজ) পুর্ণ করতে বললেনঃ এবং যেভাবে আছো সে ভাবেই থাকতে বললেন। আবূ বকর (রাঃ) কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশের উপর আল্লাহর প্রশংসা করলেন। এরপর পিছনে সরে আসলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্হা দেখে সামনে গেলেন এবং লোকদের নিমে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। যখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ হল, তখন তিনি আবূ বকরকে বললেনঃ আমি যখন তোমাকে ইশারা করলাম, তখন তোমায় কি জিনিস বাধা দিল যে, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) পূর্ন করলে না। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ইমামত করার দুঃসাহস ইবনু আবূ কুহাফার কখনই নেই। এরপর তিনি লোকদের বললেনঃ সালাত (নামায/নামাজ) তোমাদের কোনরুপ জটিলতা সৃষ্টি হলে পুরুষরা সুবহানাল্লাহ বলবে আর নারীরা হাতের উপর হাত মেরে আওয়াজ দেবে।

৬৭০১ আবূ সাবিত মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রহঃ) যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন যে, আবূ বকর (রাঃ) আমার নিকট লোক পাঠালেন, ইয়ামামার যুদ্ধে শাহাদত বরণকারীদের করেণে তখন তার কাছে উমর (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ উমর (রাঃ) আমার কাছে এসে বলেছেনঃ যে, কুরআনের বহু সংখ্যক হাফিয ইয়ামামার যুদ্ধে শহীদ হয়েছে। এজন্য আমার ভয় হচ্ছে যে, আরো অনেক স্থানে যদি কুরআনের হাফিযগণ এরুপ ব্যাপক হারে শহীদ হন তাহলে কুরআনের বহু অংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সুতরাং আমি মনে করি যে, আপনি কুরআন সংকলনের নির্দেশ দিন। আমি বললাম, কি করে আমি এমন কাজ করব যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি। উমর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! এটা একটা ভাল কাজ। উমর (রাঃ) আমাকে এ ব্যাপারে বারবার বলছিলেন। এক পর্যায়ে আল্লাহ তা’আলা এ বিষয়ে আমার অন্তরে প্রশান্তি দান করলেন। যে বিষয়ে তিনি উমর (রাঃ)-এর অন্তরেও প্রশান্তি দান করেছিলেন এবং আমিও এ বিষয়ে একমত পোযণ করলাম যা উমর (রাঃ) মত পোষন করেছিলেন। যায়িদ (রাঃ) বলেন যে, এরপর আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তুমি একজন বুদ্ধিদীপ্ত যুবক, তোমার ব্যাপারে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। তাছাড়া তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওহী লিপিবদ্ধ করতে। সুতরাং কুরআনকে তুমি অনুসন্ধান কর এবং তা একত্রিত কর। যায়িদ (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! কুরআন সংগ্রহ করে একত্রিত করার আদেশ না দিয়ে যদি আমাকে একটি পাহাড়কে সরিয়ে নেওয়ার গুরু ভার অর্পণ করতো, তাও আমার জন্য ভারী মনে হত না। আমি বললাম, কি করে আপনারা এমন একটি কাজ করবেন যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর শপথ! এটি একটি ভাল কাজ। আমার পক্ষ থেকে এ কথা বারবার উন্থাপিত হতে থাকল। এক পর্যায়ে আল্লাহ তা-আলা আমার অন্তরে প্রশান্তি দান করলেন, যে বিষয়ে আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ)-এর অন্তরে প্রশান্তি দান করেছিলেন। এবং তারা যা ভাল মনে করলেন আমিও তা ভাল মনে করলাম। সুতরাং আমি কুরআন অনুসন্ধান করতে শুরু করলাম। খেজুরের ডাল, পাতলা চামড়ার টুকরা, শ্বেত পাথর ও মানুষের অন্তঃকরণ থেকে আমি কুরআনকে একত্রিত করলাম। সুরা তাওবার শেষ অংশ “ তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের কাছে এক রাসুল এসেছেন (৯-১২৮) থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত এই অংশটুকু খুযায়মা কিংবা আবূ খুযায়মার কাছে পেলাম। আমি তা সূরার সাথে সংযোজন করলাম। কুরআনের এই সংকলিত সহীফাগুলো আবূ বকরের জীবনকাল পর্যন্ত তাঁর কাছে ছিল। এরপর আল্লাহ তাঁআলা তাকে ওফাত দিলেন। পরে উমরের জীবনকাল পর্যন্ত তার নিকট ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর তা হাফসা বিনত উমর (রাঃ)-এর কাছে ছিল। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দুল্লাহ বলেনঃ হাদীসে ব্যবহাত ‘আলিলখাফু’ অর্থ হল চাঁড়া।

৬৭০২ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইসমাঈল (রহঃ) সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ও তাঁর গোত্রের কতিপয় বড় বড় ব্যাক্তি বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ও মুহাইয়াসা , ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়ে খায়বারে আসেন। একদা মুহাইয়াসা জানতে পারেন যে, আবদুল্লাহ নিহৎ হয়েছে এবং তার লাশ একটি গর্তে অথবা কুপে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি ইহুদীদের কাছে এসে বললেনঃ আল্লাহর শপথ! নিঃসন্দেহে তোমরাই তাকে হত্যা করেছ। তারা বলল, আল্লাহর কসম করে বলছি, আমরা তাকে হত্যা করিনি। তারপর তিনি তার গোত্রের নিকট এসে এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। পরে তিনি, তার বড় ভাই হুওয়াইয়াসা এবং আব্দুর রহমান ইবনু সাহল আসলেন। মুহাইয়াসা যিনি খায়বারে ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে এ ঘটনা বলার জন্য অগ্রসর হলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বড়কে কথা বলতে দাও, বড়কে কথা বলতে দাও। তিনি এতে উদ্দেশ্য করেছেন বয়সে প্রবীণকে। তখন হুওয়াইয়াসা প্রথমে ঘটনা বর্ণনা করলেন। এরপর কথা বললেনঃ মুহাইয়াসা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হয়ত তারা তোমাদের মৃত সঙ্গীর রক্তপণ আদায় করবে, না হয় তাদের সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এ মর্মে চিঠি লিখলেন। জবাবে তাদের পক্ষ থেকে লেখা হল যে, আমরা তাকে হত্যা করিনি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুওয়াইয়াসা, মুহাইয়াসা ও আব্দুর রহমানকে বললেনঃ তোমরা কি কসম খেয়ে বলতে পারবে? তাহলে তোমরা তোমাদের সাথীর রক্তপণের অধিকারী হতে পারবে। তারা বলল- না। তিনি বললেনঃ তাহলে ইহুদীরা কি তোমাদের সামনে কসম করবে? তাঁরা বলল, এরা তো মুসলিম নয়। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পক্ষ থেকে একশ, উট রক্তপণ হিসাবে আদায় করে দিলেন। শেষ পর্যন্ত উটগুলোকে ঘরে প্রবেশ করানো হল। সালে বলেনঃ একটি উট আমাকে লাথি মেরেছিল।

৬৭০৩ আদম (রহঃ) আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বর্ননা করেন যে, একজন বেদুঈন এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে বিচার করুন। তার বিবাদী পক্ষ দাঁড়িয়ে বলল, সে ঠিকই বলছে। আপনি আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে ফায়সালা করুন। তারপর বেদুঈন বলল যে, আমার ছেলে এই লোকটির এখানে মজুর হিসাবে কাজ করত। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলেছে। লোকেরা আমাকে বলল তোমার ছেলেকে রজম (প্রস্তরঘাতে হত্যার দণ্ড) করা হবে। আমি একশ- বকরী ও একটি দাসী দিয়ে আমার ছেলেকে তার থেকে মুক্ত করে এনেছি। পরে আমি এ বিষয়ে আলেমদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বললেনঃ তোমার পূত্রকে একশ- বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তরের শাস্তি ভোগ করতে হবে। (এ শুনে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। দাসী ও বকরীগুলো তুমি ফেরত পাবে। আর তোমার ছেলেকে একশ- বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তরের শাস্তি ভোগ করতে হবে। হে উনায়স! তুমি কাল এ লোকের স্ত্রীর নিকট যাও এবং তাকে রজম কর। অতঃপর উনায়স সেই স্ত্রী লোকের কাছে গিয়ে তাকে রজম করল।

৬৭০৪ আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, কুরাইশদের কাফেলা নিয়ে অবস্হানকালে সমরাট হিরাক্লিয়াস তাকে ডেকে পাঠালেন। এরপর সমরাট তার দোভাষীকে বললেনঃ তাদেরকে বল যে, আমি এ লোকটিকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। যদি সে আমার সাথে মিথ্যা বলে তাহলে তারা যেন তাকে মিথ্যাবাদী বলে। তারপর দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন। পরে হিরাক্লিয়াস তার দোভাষীকে বললেনঃ একে বলে দাও যে, সে যা বলেছে তা যদি সত্য হয়, তাহলে তিনি (মুহাম্মদ শীঘ্রই আমার পদতলের ভূমিরও মালিক হবেন।

৬৭০৫ মুহাম্মাদ (রহঃ) আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনু লুতাবিয়্যাকে বনী সুলায়ম-এর সাদাকা আদায়ের জন্য নিয়োগ করলেন। যখন সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে ফিরে আসল এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জবাবদিহি করলেন, তখন সে বলল, এই অংশ আপনাদের আর এগুলো হাদিয়ার মাল যা আমাকে হাদিয়া হিসাবে দেওয়া হয়েছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কথা যদি সত্যি হয় তাহলে তুমি তোমার বাবার ঘরে ও মায়ের ঘরে কেন বসে থাকলে না, যাতে তোমার হাদিয়া তোমার কাছে আসে? এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাড়ালেন এবং লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ এরপর আল্লাহ তাঁআলা আমার উপর যেসব দায়িত্ব ন্যাস্ত করেছেন তন্মধ্য হতে কিছু কিছু কাজের জন্য তোমাদের কতিপয় লোককে নিযুক্ত করে থাকি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এসে বলে এই অংশ আপনাদের আর এই অংশ হাদিয়া যা আমাকে প্রদান করা হয়েছে। যদি তার কথা সত্য হয় তাহলে সে তার বাবার ঘরে ও মায়ের ঘরে কেন বসে থাকল না, যাতে তার হাদিয়া তার কাছে আসে? আল্লাহব শপথ! তোমাদের কেউ যেন তা থেকে অন্যায়ভাবে কিছু গ্রহণ না করে। অন্যথায় সে কিয়ামতের দিন তা বহন করে আল্লাহর কাছে আসবে। সাবধান! আমি অবশ্যই চিনতে পারব যা নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। এক ব্যাক্তি উট নিয়ে আসবে যা চিৎকার করতে থাকবে অথবা গরু নিয়ে আসবে যে গরুটি হাম্বা হাম্বা করতে থাকবে, অথবা বকরী নিয়ে আসবে যে বকরী ভ্যা ভ্যা করতে থাকবে। তারপর তিনি দুহস্তদ্বয় উপরের দিকে এতটুকু উত্তোলন করলেন যে, আমি তার বগলের উজ্জ্বল শুভ্রতা দেখতে পেলাম। এবং বললেনঃ শোন! আমি কি (আল্লাহর বিধান তোমাদের নিকট) পৌছিয়েছি।

৬৭০৬ আসবাগ (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা কবেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহ যাকেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিসাবে প্রেরণ করেন এবং যাকেই খলীফা হিসাবে নিযুক্ত করেন, তার জন্য দু-জন করে (একান্ত) গুপ্তচর থাকে। একজন গুপ্তচর তাকে ভাল কাজের নির্দেশ দেয় এবং তাকে তৎপ্রতি অনুপ্রাণিত করে। আর একজন শুপ্তচর তাকে মন্দ কাজের পরামর্শ দেয় এবং তৎপ্রতি উৎসাহিত করে। সুতরাং মাসুম ঐ ব্যাক্তই যাকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করেন। সূলায়মান ইবনু শিহাব থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং ইবনু আবূ আতীক ও মূসা র সুত্রে ইবনু শিহাব থেকে অনুরুপ একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তাছাড়া শুআয়ব (রহঃ)-ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। আওযায়ী ও মুআবিয়া ইবনু সাল্লাম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইবনু আবূ হুসাইন ও সাঈদ ইবনু যিয়াদ (রাঃ)-ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। উবায়দুল্লাহ ইবনু আবূ জাফবু (রহঃ) আবূ অহিউব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।

৬৭০৭ ইসমাঈল (রহঃ) উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এ মর্মে বায়আত গ্রহণ করলাম যে, সুখে দুঃখে সর্বাবস্হায় আমরা তাঁর কথা শুনব ও তার আনুগত্য করব। রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধাচরণ করব না। যেখানেই থাকি না কেন সর্বদা সত্যের উপর অবিচল থাকব কিংবা বলেছিলেঃ সর্বদা সত্য কথা বলব এবং আল্লাহর পথে কোন নিন্দাকারীর নিন্দার ভয় করব না।

৬৭০৮ আমর ইবনু আলী (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শীতের এক সকালে বের হলেন। মুহাজির ও আনসাররা তখন খন্দক (পরিখা) খননের কাজে লিপ্ত ছিল। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আখেরাতের কল্যাণই তো প্রকৃত কল্যাণ, অতএব তুমি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করে দাও। তারা এর জবাবে বলল! আমরাও সেই জামাআত যারা আমরণ জিহাদ করার জন্য মুহাম্মাদ -এর হাতে বায়-আত গ্রহণ করেছি।

৬৭০৯ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে তাঁর কথা শোনা ও তার আনুগত্যের বায় আত গ্রহণ করতাম। তখন তিনি আমাদের বলতেনঃ যা তোমার সাধ্যের মধ্যে।

৬৭১০ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ লোকেরা যখন আবদুল মালিকের খিলাফতের ব্যাপারে ঐকমতে পৌছল, তখন আমইবনু উমর (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি পত্র লিখলেন যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদর্শ অনুসারে আল্লাহর বান্দা, আমীরুল মুমিনীন আবদুল মালিকের কথা যথাসাধ্য শোনা ও তার আনুগত্য করার অঙ্গীকার করছি। আমার সন্তানরাও অনুরুপ অঙ্গীকার করছে।

৬৭১১ ইয়াকুব ইবনু ইররাহীম (রহঃ) জারীর ইরন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তার কথা শোনা ও তাঁর আনুগত্য করা ও প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কল্যাণ কামনার ব্যাপারে বায় আত গ্রহণ করলাম। তিনি আমাকে এ কথা বলতে শিখিয়ে দিলেন যে! আমার সাধ্যের আওতাভুক্ত বিষয়ে।

৬৭১২ আমর ইবনু আলী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন লোকেরা আবদুল মালিকের কাছে বায়আত গ্রহন করল, তখন আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তার কাছে চিঠি লিখলেন। আল্লাহর বান্দা, আবদূল মালিক, আমীরুল মুমিনীনের প্রতি! আমি আমার সাধ্যের আওতাভুক্ত বিষয়ে আল্লাহ ও তার রাসুল -এর নির্দেশিত পন্থায় তাঁর কথা শোনা ও তার আনুগত্য করার অঙ্গীকার করছি আর আমার সন্তানরাও অনুরুপ অঙ্গীকার করছে।

৬৭১৩ আবদুল্লাহ ইরন মাসলামা (রহঃ) ইয়াযীদ ইবনু আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ- আমি সালামাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হুদায়বিয়ার দিন আপনারা কোন বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়-আত করেছিলেন? তিনি বললেনঃ মৃত্যুর উপর।

৬৭১৪ আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আসমা (রহঃ) মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমর (রাঃ) যে দলটিকে খলীফা নির্বাচনের ব্যাপারে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁরা একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে এ ব্যাপারে পরামর্শ করলেন। আবদুর রহমান (রাঃ) তাঁদেরকে বললেনঃ আমি তো এমন ব্যাক্তি নই যে এ ব্যাপারে প্রত্যাশা করব। তবে আপনারা যদি চান তাহলে আপনাদের থেকে একজনকে আমি নির্বাচিত করে দিতে পারি। তাঁরা এ দায়িত্ব আবদুর রহমানের উপর অর্পণ করলেন, যখন তারা এ বিষয়টি আবদুর রহমানের উপর অর্পন করলেন, তখন সকল লোক আব্দুর রহমানের প্রতি ঝুঁকে পড়ল। এমনকি আমি একজন লোককেও সেই দলের অনুসরণ করতে কিংবা তাঁদের পিছনে যেতে দেখলাম না। লোকেরা আব্দুর রহমানের প্রতই ঝুকে পড়ল এবং কয়েক রাত তাঁর সাথে পরামর্শ করতে থাকল। অবশেষে সেই রাত আসল, যে রাতের শেষে আমরা উসমান (রাঃ)-এর হাতে বায়আত গ্রহণ করলাম। মিসওয়ার (রাঃ) বলেনঃ রাতের একাংশ অতিবাহিত হওয়ার পর আব্দুর রহমান (রাঃ) আমার কাছে আসলেন এবং দরজা খটখটালেন। ফলে আমি জাগ্রত হয়ে গেলাম। তিনি বললেনঃ তোমাকে দেখছি ঘুমাচ্ছ আল্লাহর কসম! আমি এ তিন রাতের মাঝে খুব একটা ঘুমাতে পারিনি। যাও, যুবায়র ও সা’দকে ডেকে আন। আমি তাদেরকে তার কাছে ডেকে আনি। তিনি তাদের দু-জনের সাথে পরামর্শ করলেন। তারপর আমাকে আবার ডেকে বললেনঃ আলীকে আমার কাছে ডেকে আন। আমি তাঁকে ডেকে আনলাম। তিনি তাঁর সাথে অর্ধেক রাত পর্যন্ত চুপিচুপি পরামর্শ করলেন। তারপর আলী (রাঃ) তার কাছ থেকে উঠে গেলেন। তবে তিনি আশাবাদী ছিলেন। আর আবদুর রহমান (রাঃ) আলী (রাঃ) থেকে কিছু (বিরোধিতার) আশংকা করছিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ উসমানকে আমার কাছে ডেকে আন। তিনি তাঁর সাথে চুপিচুপি আলাপ করলেন। ফজরের সময় মু’আযযিন তাদের উভয়কে পৃথক করল অর্থাৎ আযান পর্যন্ত আলাপ করলেন লোকদেরকে যখন ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) পড়িয়ে দেয়া হলো এবং সেই। দলটি মিম্বরের কাছে একত্রিত হলো তখন তিনি মুহাজির ও আনসারদের যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে ডেকে আনতে পাঠালেন এবং প্রত্যেক সেনা প্রধানকেও ডেকে আনতে পাঠালেন এবং এরা সবাই উমরের সাথে গত হাজ্জে (হজ্জ) অংশগ্রণ করেছিলেন। যখন সকলে এসে সমবেত হল, তখন আব্দুর রহমান (রাঃ) ভাষণ শুরু করলেন। তারপর বললেনঃ হে আলী! আমি জনমত পরীক্ষা করেছি, তারা উসমানের সমকক্ষ কাউকে মনে করে না। সুতরাং তুমি তোমার জন্য অন্য পথ অবলম্বন করো না। তখন তিনি আলী ও উসমান (রাঃ)-কে সন্বোধন করে বললেনঃ আমি আল্লাহর নির্দেশ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নির্দেশিত পরায় ও তারপরবর্তী উভয় খলীফার আদর্শানূযায়ী আপনার নিকট বায়আত গ্রহণ করছি। তারপর আব্দুর রহমান (রাঃ) তাঁর কাছে বায়আত গ্রহন করলেন। এরপর মুহাজির, আনসার! সেনাপ্রধান এবং সাধারণ মুসলমান তাঁর কাছে বায়াআত গ্রহণ করলেন।

৬৭১৫ আবূ আসিম (রহঃ) সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বৃক্ষের নিচে বায়আত (বায়আতে রিদওয়ান) গ্রহণ করেছিলাম। পরে তিনি আমাকে বললেনঃ হে সালামা! তুমি বায়-আত গ্রহণ করবে না? আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি তো প্রথমবার বায়আত গ্রহন করেছি। তিনি বললেনঃ দ্বিতীয়বারও গ্রহণ কর।

৬৭১৬ আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) জাবির ইরন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে- এক বেদুইন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে ইসলামের বায়আত গ্রহন করল। তারপর সে জ্বরে আক্রান্ত হঁল। তখন সে বলল! আমার বায়ঁআত প্রত্যাহার করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করতে অস্বীকৃতি জানালেন। সে পূনরায় তার কাছে আসল। তিনি পূনরায় অস্বীকৃতি জানালেন। সে পূনরায় তার কাছে এসে বলল, আমার বায় আত ফেরত নিন। তিনি আবারও অস্বীকৃতি জানালেন! তখন সে বেরিয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা (কামারের) হাঁপরের ন্যায়, সে তার মধ্যকার আবর্জনাকে দূরীভূত করে এবং খাটিটুকু ধরে রাখে।

৬৭১৭ আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাক্ষাত লাভ করেছেন। তার মা যয়নব বিনত হুমায়দ (রাঃ) তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে নিয়ে গিয়ে বলেনঃ ইয়া-এরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! একে বায়াআত করুন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন?, সে তো ছোট। তিনি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এবং তার জন্য দোয়া করলেন। এই আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) তার পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে একটি বকরী কুরবানী করতেন।

৬৮১৮ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুঈন এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাতে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করল। মদিনায় সে জ্বরে আক্রান্ত হল। তখন সেই বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অম্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় এসে বলল, আমার বায়ঁআত প্রত্যাহার করুন। তিনি এবারও অম্বীকৃতি জানালেন। সে পূনরায় এসে বলল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। তিনি অম্বীকৃতি জানালেন। তখন বেদূঈন বেরিয়ে গেল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা হল কামারের হাপরের ন্যায়, যে তার মধ্যকার আবর্জনাকে বিদুরিত করে এবং খাটিটুকু ধরে রাখে।

৬৭১৯ আবদান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ধরনের লোকের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা কথাও বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (এক) সে ব্যাক্তি, যে বাস্তার পার্শে অতিরিক্ত পানির অধিকারী কিন্তু মূসা ফিরকে তা থেকে পান করতে দেয় না। (দুই) সে লোক যে কেবলমাত্র দুনিয়ার সার্থে ইমামের বায়-আত গ্রহণ করে। (বাদশাহ) যদি তার মনোকামনা পূর্ণ করে তাহলে সে তার বায়আত পূর্ণ করে। আর যদি তা না হয়, তাহলে বায়আত ভঙ্গ করে। (তিন) সে ব্যাক্তি যে আসরের পর অন্য লোকের নিকট দ্রব্য সামগ্রী বিক্রয় করতে যেরে এরুপ কসম খায় যে, আল্লাহর শপথ! এটী এত টাকা দাম হয়েছে। তাকে বিশ্বাস করে সে দ্রব্য ক্রয় করে নিয়ে যায়। অথচ সে দ্রব্যের এত দাম দেওয়া হয়নি।

৬৭২০ আবূল ইয়ামান (রহঃ) ও লাইছ (রহঃ) উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা এক মজলিসে বসা ছিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ তোমরা আমার নিকট এ মর্মে বায়ঁআত গ্রহণ কর যে, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না; তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না এবং কাউকে এরুপ মিথ্যা অপবাদ দেবে না, যা তোমাদেরই গড়া আর শরীয়ত সন্মত কাজে আমার নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যারা এই অঙ্গীকার পূর্ণ করবে, তার প্রতিদান আল্লাহর কাছে। আর যারা এর কোন একটি করবে এবং দুনিয়ায় এ কারনে তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে, তাহলে এটা তার কাফফারা (পাপ মোচন) হয়ে যাবে। আর যদি কেউ এর কোন একটি অপরাধ করে ফেলে আর আল্লাহ তা গোপন করে রাখেন, তাহলে তার বিযয়াট আল্লাহর উপর ন্যাস্ত থাকবে। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন আর ইচ্ছা করলে তাকে মাফ করে দিবেন। এরপর আমরা এর উপর বায়-আত গ্রহগ করলাম।

৬৭২১ মাহমূদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না”- এই আয়াত পাঠ করে স্ত্রীলোকদের কাছ থেকে বায়আত নিতেন। তিনি আরও বলেনঃ বৈধ অধিকার প্রাপ্ত মহিলা ছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাত অন্য কোন স্ত্রী লোকের হাত স্পর্শ করেনি।

৬৭২২ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট বায়আত গ্রহন করলাম। তিনি আমার সামলে পাঠ করলেনঃ স্ত্রীলোকেরা যেন আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে। এবং তিনি আমাদেরকে বিলাপ করতে নিষেধ করলেন। এমতাবস্থায় আমাদের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক তার হাত গুটিয়ে নিল এবং বলল, অমুক স্ত্রীলোক একবার আমার সাথে বিলাপে সহযোগিতা করেছে। সুতরাং আমি তার প্রতিদান দেওয়ার ইচ্ছা রাখি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু বললেন না। স্ত্রীলোকটি চলে গেল এবং পরে এসে বায়আত গ্রহন করল। তবে তাদের মধ্যে উম্মু সুলায়ম, উম্মুল আলা, আর মু’আয (রাঃ)-এর স্ত্রী আবূ সাবরা-এর কন্যা, কিংবা বলেছিলেন, আবূ সাবরা-এর কন্যা ও মু’আয-এর স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন স্ত্রীলোক এই অঙ্গীকার পূর্ণ করেনি।

৬৭২৩ আবূ নুআয়ম (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বলল, ইসলামের উপর আমার বায়আত নিন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের উপর তার বায়আত নিলেন। পরদিন সে জ্বরাক্রান্ত অবস্হায় এসে বলল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। তিনি অম্বীকৃতি জানালেন। যখন সে চলে গেল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা কামারের হাপরের ন্যায়, সে তার মধ্যকার আবর্জনাকে বের করে এবং খাটিটুকু ধরে রাখে।

৬৭২৪ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আয়িশা (রাঃ) একদিন বললেনঃ হায়! আমার মাথা। (এ কথা শুনে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার জীবদ্দশায় যদি তা ঘটে, তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব এবং তোমার জন্য দোয়া করব। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় সর্বনাশ! আল্লাহর শপথ! আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যু পছন্দ করছেন। হ্যা, যদি এমনটি হয়, তাহলে আপনি সেদিনের শেষে অপর কোন স্ত্রীর সাথে বাসর যাপন করবেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি বলছি আক্ষেপ আমার মাথা ব্যথা। অথচ আমি সংকচ করেছি কিংবা রাবী বলেছেনঃ- ইচ্ছে করেছি যে, আবূ বকর ও তার পূত্রের কাছে লোক পাঠাব এবং (তার খিলাফতের) অসিয়্যাত করে যাব, যাতে এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে না পারে। কিংবা কোন প্রত্যাশী এ ব্যাপারে কোনরুপ প্রত্যাশা করতে না পারে। (কিন্তু ভেবে চিন্তে) পরে বললাম (আবূ বকরের পরিবর্তে অন্য কারো খলীফা হওয়ার বিষয়টি) আল্লাহ তা অস্বীকার করবেন এবং মুমিনরাও তা প্রত্যাখ্যান করবে। কিংবা বলেছিলেনঃ আল্লাহ প্রত্যাখ্যান করবেন এবং মুমিনরা তা অস্বীকার করবে।

৬৭২৫ মুহাম্মাদ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমর (রাঃ)-কে বলা হল, আপনি কি (আপনার পরবর্তী) খলীফা মনোনীত করে যাবেন না? তিনি বললেনঃ যদি আমি খলীফা মনোনীত করি, তাহলে আমার চেয়ে যিনি শ্রেষ্ট ছিলেন তিনি খলীফা মনোনীত করে গিয়ে ছিলেন, অর্থাৎ আবূ বকর। আর যদি মনোনীত না করি, তাহলে আমার চেয়ে যিনি শ্রেষ্ট্র ছিলেন তিনি খলীফা মনোনীত করে যাননি। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এতে লোকেরা তার প্রশংসা করল। তারপর তিনি বললেনঃ কেউ এ ব্যাপারে আকাঙ্ক্ষী আর কেউ ভীত। আর আমি পছন্দ করি আমি যেন এ থেকে মুক্তি পাই সমানে সমান, না পূরস্কার না শাস্তি। আমি জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে এর দায়িত্ব বহন করতে পারব না।

৬৭২৬ ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্গিত। তিনি উমর (রাঃ)-এর দ্বিতীয় ভাষণটি শুনেছেন যা তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পরদিন মিম্বরে বসে দিয়েছিলেন। তিনি ভাষণ শুরু করলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) কোন কথা না বলে চুপ রয়েছেন। তিনি বলেনঃ আমি তো আশা করছিলাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন এবং আমাদের পিছনে যাবেন। এ থেকে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল যে, তিনি সবার শেষে ইন্তেকাল করবেন। তবে মুহাম্মাদ যদিও ইন্তেকাল করেছেন, তবে আল্লাহ তা-আলা তোমাদের মাঝে এমন এক নূর রেখেছেন, যার দ্বারা তোমরা হেদায়াত পাবে। আল্লাহ তাঁআলা মুহাম্মাদ -কে (এ নুর দিয়ে) হেদায়াত করেছিলেন। আর আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন তাঁর সঙ্গী এবং দুঁজনের দ্বিতীয় জন। তোমাদের এ দায়িত্ব বহনের জন্য মুসলমানদের মধ্যে তিনই সর্বোত্তম। সুতরাং তোমরা উঠ এবং তার হাতে বায়ঁআত গ্রহণ কর। অবশ্য এক জামাআত ইতিপূর্বে বনী সাঈদা গোত্রের ছায়ানীড়ে তার হাতে বায়-আত গ্রহণ করেছিল। আর সাধারণ বায়ঁআত হয়েছিল মিম্বরের উপর। যুহরী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি সেদিন উমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি আবূ বকর (রাঃ)-কে বলছেন, মিন্বরে আরোহণ করুন। তিনি বারবার এ কথা বলতে বলতে অবশেষে আবূ বকর (রাঃ) মিম্বরে আরোহণ করলেন। অতঃপর তাঁর কাছে লোকেরা সাধারণ বায়ঁআত গ্রহণ করল।

৬৭২৭ আব্দুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) যুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক স্ত্রীলোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে আসল এবং কোন এক ব্যাপারে তার সাথে কথা বলল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পূনরায় আসার নির্দেশ দিলেন। স্ত্রীলোকটি বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি পূনরায় এসে যদি আপনাকে না পাই? স্ত্রীলোকটি এ বলে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর) ইন্তেকালের কথা বোঝাতে চাই ছিল। তিনি বললেনঃ যদি আমাকে না পাও, তাহলে আবূ বকরের কাছে আসবে।

৬৭২৮ মূসা’দ্দাদ (রহঃ) আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বুযাখা প্রতিনিধিদলকে বলেছিলেন যতদিন না আল্লাহ তাআলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খলীফা ও মুহাজিরীনদের এমন একটা পথ দেখিয়ে দেন যাতে তারা তোমাদের ওযর গ্রহন করেন, ততদিন পর্যন্ত তোমরা উটের লেজের পিছনে লেগে থাকবে (অর্থাৎ যাযাবর জীবন যাপন করবে)।

৬৭২৯ মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, বারজন আমীর হবে। এরপর তিনি একটি কথা বলছিলেন যা আমি শুনতে পারিনি। তবে আমার পিতা বলেছেনঃ যে, তিনি বলেছিলেন সকলেই কুরাইশ গোত্র থেকে হবে।

৬৭৩০ ইসমাঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ করে বলছি! আমার ইচ্ছা হয় যে আমি জালানি কাঠ সংগ্রহের নির্দেশ দেই। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর আযান দেওয়ার জন্য হুকুম করি এবং একজনকে লোকদের ইমামত করাতে বলি। এরপর আনি জামায়াতে আসে নাই সেসব লোকদের কাছে যাই আর তাদেরসহ তাদের ঘরগুলো জালিয়ে দেই। আমার প্রাণ যে সত্তার হাতে তার শপথ করে বলছি, যদি তারা জানত যে, একটি মাংসল হাড় কিংবা দুটি বকরীর ক্ষুর পাবে তাহলে তারা এগুলোর জামাআতে অবশ্যই হাযির হত। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ ‘মারমাহ’ অর্থ বকরীর ক্ষুরের মধ্যবর্তী গোশত।

৬৭৩১ ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) আব্দুর রহমান ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কাঁব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু কাব ইবনু মালিক (রাঃ), কাব (রাঃ) অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর সন্তানদের থেকে তিনি তাঁকে (কাঁব) পথ দেখাতেন। তিনি বলেনঃ আমি কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন যে, যখন তিনি তাবুকের যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যোগদান না করে রয়ে গেলেন। তারপর তিনি পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করে বললেনঃ যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদেরকে আমাদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দিলেন। ফলে পঞ্চাশ রাত আমরা এভাবে অবস্হান করলাম। এরপর আল্লাহ তাআলা আমাদের তওবা কবুল করেছেন বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিলেন।

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: আহকাম
আহকাম
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/10/Ahkaq.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/10/Ahkaq.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy