অংশিদার

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬০. আহার্য, পাথেয় এবং দ্রব্য সামগ্রীতে শরীক হওয়া। মাপ ও ওজনের জিনিসপত্র কিভাবে বিতরন করা হবে? অনুমানের ভিত্তিতে না কি মুটো মুটো করে। যেহেতু মুসলিমগণ পাথেয়তে এটা দোষের মনে করে না যে, কিছু ইনি খাবেন আর কিছু উনি খাবেন (অর্থাৎ যার যা ইচ্ছা সে সেটা খাবে) তেমনিভাবে সোনা ও রূপা অনুমানের ভিত্তিতে বণ্টন করা এবং এক সঙ্গে জোড়া জোড়া খেজুর খাওয়া

২৩২১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমুদ্র তীর অভিমুখে বাহিনী প্রেরণ করেন এবং আবূ উবায়দা ইবন জাররাহ (রাঃ) কে তাদের সেনাপতি নিয়োগ করলেন। এ বাহিনীতে তিনশ’ লোক ছিলেন। আমি তাদের মধ্যে ছিলাম। আমরা রওয়ানা হলাম। কিন্তু মাঝখানেই আমাদের পাথেয় শেষ হয়ে গেল। তখনআবূ উবায়দা (রাঃ) দলের সকলকে নিজ নিজ খাদ্যদ্রব্য এক জায়গায় জমা করার নির্দেশ দিলেন। তাই সমস্ত খাদ্য দ্রব্য জমা করা হল। এতে মোট দু’থলে খেজুর জমা করা হল। আবূ উবাযদা (রাঃ) প্রতি দিন আমাদের এই খেজুর থেকে কিছু কিছু খেতে দিতেন। অবশেষে তাও শেষ হওয়ার উপক্রম হল এবং জন প্রতি একটি করে খেজুর ভাগে পড়তে লাগলো।

(রাবী বলেন) আমি (জাবির (রাঃ) কে) বললাম, একটি খেজুর কি যথেষ্ট হত। তিনি বললেন, তার মূল্য তখন বুঝতে পারলাম, যখন তাও শেষ হয়ে গেল। তিনি বলেন, এরপর আমরা সমুদ্র পর্যন্ত পৌছে গেলাম। হঠাৎ ছোট পাহাড়ের ন্যায় একটা মাছ আমরা পেয়ে গেলাম। এবং এ বাহিনী আঠারো দিন পর্যন্ত এই মাছ থেকে খেলো। তারপর আবূ উবাযদা (রাঃ) এর আদেশে সে মাছের পাঁজর থেকে দুটো কাঁটা দাঁড় করানো হল। তারপর তিনি হাওদা লাগাতে বললেন। হাওদা লাগানো হল। এরপর উট তার পাঁজরের নীচ দিয়ে চলে গেলো কিন্তু উটের দেহ সে দুটো কাঁটা স্পর্শ করল না।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬০. আহার্য, পাথেয় এবং দ্রব্য সামগ্রীতে শরীক হওয়া। মাপ ও ওজনের জিনিসপত্র কিভাবে বিতরন করা হবে? অনুমানের ভিত্তিতে না কি মুটো মুটো করে। যেহেতু মুসলিমগণ পাথেয়তে এটা দোষের মনে করে না যে, কিছু ইনি খাবেন আর কিছু উনি খাবেন (অর্থাৎ যার যা ইচ্ছা সে সেটা খাবে) তেমনিভাবে সোনা ও রূপা অনুমানের ভিত্তিতে বণ্টন করা এবং এক সঙ্গে জোড়া জোড়া খেজুর খাওয়া

২৩২২। বিশর ইবনু মারহুম (রহঃ) ... সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন এক সফরে লোকদের পাথেয় কমে গিয়েছিল এবং তারা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়লেন। তখন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাদের উট যবেহ করার অনুমতি দেয়ার জন্য এলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের অনুমতি দিলেন। তারপরে তাদের সঙ্গে উমর (রাঃ) এর সাক্ষাত হলে তারা তাঁকে এ খবর দিলেন। তিনি বললেন, উট শেষ হয়ে যাবার পর তোমাদের বাঁচার কি উপায় থাকবে? তারপর উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উট শেষ হয়ে যাবার পর বাঁচার কি উপায় হবে?

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকদের কাছে ঘোষণা করে দাও যে, যাদের কাছে অতিরিক্ত যে খাদ্য সামগ্রী আছে, তা যেন আমার কাছে নিয়ে আসে। এর জন্য একটা চামড়া বিছিয়ে দেওয়া হল। তারা সেই চামড়ার উপর তা রাখলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে তাতে বরকতের জন্য দু’আ করলেন। এরপর তিনি তাদেরকে তাদের পাত্রগুলো নিয়ে আসতে বললেন, লোকেরা দু’হাত ভর্তি করে করে নিল। সবার নেওয়া শেষ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই এবং নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর রাসূল।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬০. আহার্য, পাথেয় এবং দ্রব্য সামগ্রীতে শরীক হওয়া। মাপ ও ওজনের জিনিসপত্র কিভাবে বিতরন করা হবে? অনুমানের ভিত্তিতে না কি মুটো মুটো করে। যেহেতু মুসলিমগণ পাথেয়তে এটা দোষের মনে করে না যে, কিছু ইনি খাবেন আর কিছু উনি খাবেন (অর্থাৎ যার যা ইচ্ছা সে সেটা খাবে) তেমনিভাবে সোনা ও রূপা অনুমানের ভিত্তিতে বণ্টন করা এবং এক সঙ্গে জোড়া জোড়া খেজুর খাওয়া

২৩২৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে উট যবেহ করতাম। তারপর সে গোশত দশ ভাগে ভাগ করা হত এবং সূর্যাস্তের পূর্বেই আমরা রান্না করা গোশত খেয়ে নিতাম।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬০. আহার্য, পাথেয় এবং দ্রব্য সামগ্রীতে শরীক হওয়া। মাপ ও ওজনের জিনিসপত্র কিভাবে বিতরন করা হবে? অনুমানের ভিত্তিতে না কি মুটো মুটো করে। যেহেতু মুসলিমগণ পাথেয়তে এটা দোষের মনে করে না যে, কিছু ইনি খাবেন আর কিছু উনি খাবেন (অর্থাৎ যার যা ইচ্ছা সে সেটা খাবে) তেমনিভাবে সোনা ও রূপা অনুমানের ভিত্তিতে বণ্টন করা এবং এক সঙ্গে জোড়া জোড়া খেজুর খাওয়া

২৩২৪। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) ... আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আশ’আরী গোত্রের লোকেরা যখন জিহাদে গিয়ে অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়ে বা মদিনাতেই তাদের পরিবার পরিজনদের খাবার কম হয়ে যায়, তখন তারা তাদের যা কিছু সম্বল থাকে, তা একটা কাপড়ে জমা করে। তারপর একটা পাত্র দিয়ে মেপে তা নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে নেয়। কাজেই তারা আমার এবং আমি তাদের।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬১. যেখানে দু'জন অংশীদার থাকে যাকাতের ক্ষেত্রে তারা উভয়ে নিজ নিজ অংশ হিসাবে নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান করে নিবে

২৩২৫। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... আনাস (ইবনু মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাতের বিধান হিসাবে যা নির্দিষ্ট করেছিলেন, আবূ বকর (রাঃ) তা আমাকে লিখে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, যেখানে দু’জন অংশীদার থেকে (যাকাত প্রদানের পর) তারা দু’জনে নিজ নিজ অংশ আদান-প্রদান করে নেবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬২. বকরী বণ্টন

২৩২৬। আলী ইবনু হাকাম আনসারী (রহঃ) ... রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুল-হুলায়ফাতে ছিলাম। সাহাবীগণ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন, তারা কিছু উট ও বকরী পেলেন। রাফি’ (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দলের পিছনে ছিলেন। তারা তাড়াহুড়া করে গনীমতের মাল বন্টনের পূর্বে সেগুলোকে যবেহ করে পাত্রে চড়িয়ে দিলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে পাত্র উলটিয়ে ফেলা হল। তারপর তিনি (গনীমতের মাল) বন্টন শুরু করলেন। তিনি একটি উটের সমান দশটি বকরী নির্ধারণ করেন। হঠাৎ একটি উট পালিয়ে গেল। সাহাবীগণ উটকে ধরার জন্য ছুটলেন, কিন্তু উটটি তাঁদেরকে ক্লান্ত করে ছাড়ল। সে সময় তাঁদের নিকট অল্প সংখ্যক ঘোড়া ছিল।

অবশেষে তাঁদের মধ্যে একজন সেটির প্রতি তীর ছুড়লেন। তখন আল্লাহ উটটাকে থামিয়ে দিলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই পলায়নপর বন্য জন্তুদের মত এ সকল চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে কতক পলায়নপর করবে। (রাবী বলেন), তখন আমার দাদা [রাফি’ (রাঃ)] বললেন, আমরা আশংকা করছিলাম যে, কাল শত্রুর সাথে মুকাবিলা হবে। আর আমাদের নিকট কোন ছুরি ছিল না। তাই আমরা ধারলো বাঁশ দিয়ে যবেহ করতে পারব কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে বস্তু রক্ত প্রবাহিত করে এবং যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, সেটা তোমরা আহার করতে পার। কিন্তু দাঁত বা নখ দিয়ে যেন যবেহ না করা হয়। আমি তোমাদেরকে এর কারণ বলে দিচ্ছি। দাঁত তো হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৩. এক সঙ্গে খেতে বসলে সাথীদের অনুমতি ব্যতীত এক সঙ্গে দুটো করে খেজুর খাওয়া

২৩২৭। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এক সাথে খেতে বসে) সঙ্গীদের অনুমতি ব্যতীত কাউকে এক সঙ্গে দুটো করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৩. এক সঙ্গে খেতে বসলে সাথীদের অনুমতি ব্যতীত এক সঙ্গে দুটো করে খেজুর খাওয়া

২৩২৮। আবূল ওয়ালিদ (রহঃ) ... জাবালা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা মদিনায় ছিলাম। একবার আমরা দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হলাম। তখন ইবনু যুবায়র (রাঃ) আমাদেরকে (প্রত্যহ) খেজুর খেতে দিতেন। একদিন ইবনু উমর (রাঃ) আমাদের কাছে দিয়ে যাচ্ছিলেন। (আমাদের খেজুর খেতে দেখে) তিনি বললেন, তোমরা এক সাথে দু’টো করে খেজুর খেও না। কেননা, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে তার ভাইয়ের অনুমতি ব্যতীত দু’টো করে খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৪. কয়েক শরীকের ইজমালী বস্তুর ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ

২৩২৯। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (শরীকী) গোলাম থেকে কেউ নিজের অংশ আযাদ করে দিলে এবং তার কাছে গোলামের ন্যায্য মূল্য পরিমাণ অর্থ থাকলে সে গোলাম (সম্পূর্ণ) আযাদ হয়ে যাবে (তবে আযাদকারী ন্যায্যমূল্যে শরীকদের ক্ষতিপূরণ দিবে) আর সে পরিমাণ অর্থ না থাকলে যতটুকু সে আযাদ করবে ততটুকুই আযাদ হবে। (রাবী আইয়ুব) বলেন,عَتَقَ مِنْهُ مَا عَتَقَ বাক্যটি নাফি (রহঃ)-এর নিজস্ব উক্তি, না নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীসের অংশ, তা আমি বলতে পারছি না।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৪. কয়েক শরীকের ইজমালী বস্তুর ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ

২৩৩০। বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ তার (শরীক) গোলাম থেকে নিজের অংশ আযাদ করে দিলে তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে নিজস্ব অর্থে সেই গোলামকে পূর্ণ আযাদ করা। যদি তার প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকে, তাহলে গোলামের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। তারপর (অন্য শরীকদের অংশ পরিশোধের জন্য) তাকে উপার্জন যেতে হবে, তবে তার উপর অতিরিক্ত কষ্ট চাপানো যাবে না।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৫. কুরআর মাধ্যমে বণ্টন ও অংশ নির্ধারণ করা যাবে কি?

২৩৩১। আবূ নুআঈম (রহঃ) ... নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে মহান আল্লাহর নির্ধারিত সীমার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং যে সীমা লংঘন করে, তাদের দৃষ্টান্ত সেই যাত্রীদলের মত, যারা কুরআর মাধ্যমে এক নৌযানে নিজেদের স্থান নির্ধারণ করে নিল। তাদের কেউ স্থান পেল উপর তলায় আর কেউ নীচ তলায় (পানির ব্যবস্থা ছিল উপর তলায়) কাজেই নীচের তলার লোকেরা পানি সংগ্রহ কালে উপর তলার লোকদের ডিঙ্গিয়ে যেত। তখন নীচ তলার লোকেরা বলল, উপর তলার লোকদের কষ্ট না দিয়ে আমরা যদি নিজেদের অংশে একটি ছিদ্র করে নেই (তবে ভাল হত) এমতাবস্থায় তারা যদি এদেরকে আপন মর্জির উপর ছেড়ে দেয় তাহলে সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি তারা এদের হাত ধরে রাখে (বিরত রাখে) তবে তারা এবং সকলেই রক্ষা পাবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৬. ইয়াতীম ও ওয়ারীসদের অংশীদারিত্ব

২৩৩২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ আমিরী ওয়াইসী ও লাইস (রহঃ) ... উরওয়া ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি একবার আয়িশা (রাঃ) কে আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না তাহলে অন্য মহিলাদের মধ্য থেকে তোমাদের পছন্দ মত দু’জন বা তিনজন কিংবা চারজনকে বিয়ে করতে পারবে (৪ঃ ৩) এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমার ভাগিনা! এ হচ্ছে সেই ইয়াতীম মেয়ের কথা, যে অভিভাবকের আশ্রয়ে থাকে এবং তার সম্পদে অংশীদার হয়। এদিক মেয়ের ধন-রূপে মুগ্ধ হয়ে তার অভিভাব মহরানার ব্যাপারে সুবিচার না করে অর্থাৎ অন্য কেউ যে পরিমাণ মহরানা দিতে রাযী হত, তা না দিয়েই তাকে বিয়ে করতে চাইত। তাই প্রাপ্য মহরানা আদায়ের মাধ্যমে সুবিচার না করা পর্যন্ত তাদেরকে আশ্রিতা ইয়াতীম বালিকাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং পছন্দমত অন্য মহিলাদেরকে বিয়ে করতে বলা হয়েছে।

উরওয়া বলেন, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, পরে সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (মহিলাদের সম্পর্কে) ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করলেন তখন আল্লাহ তা’আলা আয়াত নাযিল করেন। তারা আপনর নিকট মহিলাদের সম্পর্কে ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করে, আল্লাহ্‌ই তাদের সম্পর্কে তোমাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আর ইয়াতিম মেয়ে সম্পর্কে কিতাব থেকে তোমাদেরকে পাঠ করে শোনান হয় যে, তাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ রয়েছে, তা তোমরা তাদের দাও না অথচ তাদের তোমরা বিয়ে করতে চাও। (৪ঃ ১২৭)।

يُتْلَى عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِবলে আল্লাহ তা’আলা পূর্বোক্ত আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে- আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচর করতে পারবে না, তাহলে অন্য নারীদের মধ্যে থেকে তোমাদের পছন্দ মত দু’জন বা তিনজন কিংবা চারজন বিয়ে করতে পারবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আর অপর আয়াতে আল্লাহ তা’আলার ইরশাদ এর মর্ম হল ধন ও রূপের স্বল্পতা হেতু তোমাদের আশ্রিতা ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি তোমাদের অনাগ্রহ। তাই ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি অনাগ্রহ সত্ত্বেও শুধু ধন-রূপের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাদের বিয়ে করতে নিষেধ করা হয়েছে। অবশ্য ন্যায়সঙ্গত মহরানা আদায় করে বিয়ে করতে পারে

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৭. জমি ইত্যাদিতে অংশীদারিত্ব

২৩৩৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে সব (স্থাবর) সম্পত্তি এখনো বণ্টিত হয়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুফ’আ এর (তথা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার) বিধান দিয়েছেন। এরপর সীমানা নির্ধারিত করা হলে এবং পথ আলাদা করে নেওয়া হলে শুফ’আর অধিকার থাকে না।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৮. শরীকগণ বাড়ীঘর বা অন্যান্য সম্পত্তি বণ্টন করে নেওয়ার পর তাদের তা প্রত্যাহারের বা শুফ'আর অধিকার থাকে না

২৩৩৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব ধরনের অবন্টিত স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে শুফ’আর ফায়সালা দিয়েছেন। এরপর সীমান নির্ধারণ করে পথ আলাদা করে নেওয়া হলে শুফ’আর অধিকার থাকে না।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৬৯. সোনা ও রূপা বিনিময় যোগ্য মুদ্রার অংশীদার হওয়া

২৩৩৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) ... আবূ মুসলিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূল মিনহাল (রহঃ) কে মুদ্রার নগদ বিনিময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমি এবং আমার এক অংশীদার একবার কিছু মুদ্রা নগদে ও বাকীতে বিনিময় করেছিলাম। এপর বারা’ ইবনু আযিব (রাঃ) আমাদের কাছে এলে আমারা তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমি এবং আমার অংশীদার যায়িদ ইবনু আরকাম (রাঃ) এরূপ করেছিলাম। পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, নগদে যা বিনিময় করেছো, তা বহাল রাখো, আর বাকীতে যা বিনিময় করেছো, তা প্রত্যাহার করো।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭০. কৃষিকাজে যিম্মী ও মুশরীকদের অংশীদার করা

২৩৩৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের জমি এ শর্তে ইয়াহুদীদের দিয়েছিলেন যে, তারা নিজেদের শ্রমে তাতে চাষাবাদ করবে, তার বিনিময়ে উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক তাদের হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭১. ছাগল বণ্টন করা ও তাতে ইনসাফ করা

২৩৩৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর কিছু বকরী সাহাবীদের মাঝে বন্টনের জন্য তাকে (দায়িত্ব) দিয়েছেলেন। বন্টন শেষে এক বছর বয়সী একটা ছাগল ছানা রয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সে কথা জানালে তিনি ইরশাদ করলেন, ওটা তুমিই কুরবানী করো।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭২. খাদ্য-দ্রব্য ইত্যাদিতে অংশীদারিত্ব।

وَيُذْكَرُ أَنَّ رَجُلاً سَاوَمَ شَيْئًا فَغَمَزَهُ آخَرُ فَرَأَى عُمَرُ أَنَّ لَهُ شَرِكَةً

বর্ণিত আছে যে, জনৈক ব্যক্তি কোন জিনিসের দাম করছিলো এমন সময় এক ব্যক্তি তাকে চোখের ইশারায় (অংশীদারিত্বের প্রস্তাব) করলো। এ ঘটনায় উমর (রাঃ) দ্বিতীয় ব্যক্তির অনুকুলে অংশীদারিত্বের রায় দিলেন।


২৩৩৮। আসবাগ ইবনু ফারজ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাক্ষাত পেয়েছিলেন। তার মা যায়নাব বিনতে হুমাইদ (রাঃ) একবার তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! একে বায়আত করে নিন। তিনি বললেন সে তো ছোট। তখন তিনি তার মাথায় হাত বুলালেন এবং তার জন্য দু'আ করলেন। একই সনদে যুহরা ইবন মা'বাদ (রহঃ) থেকে আরো বর্ণিত আছে যে, তার দাদা আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) তাকে নিয়ে বাজারে যেতেন, খাদ্য সামগ্রী খরিদ করতেন। পথে ইবনু উমর (রাঃ) ও ইবনু যুবায়েরর সাথে দেখা হলে তারা তাকে বলতেন (আপনার সাথে ব্যবসায়) আমাদেরও শরীক করে নন। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার জন্য বরকতের দু’আ করেছেন। এ কথায় তিনি তাদের শরীক করে নিতেন। অনেক সময় (লভ্যাংশ হিসাবে) এক উট বোঝাই মাল তিনি ভাগে পেতেন আর তা বাড়ীতে পাঠিয়ে দিতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭৩. গোলাম বাঁদিতে অংশীদারিত্ব

২৩৩৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (শরীকী) গোলাম থেকে কেউ নিজের অংশ আযাদ করে দিলে সেই গোলামের সম্পূর্ণটা আযাদ করা তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে। যদি তার কাছে সেই গোলামের মূল্য পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে নায্যমূল্য নির্ধারিত করে অংশীদারদের তাদের প্রাপ্য অংশ পরিশোধ করা হবে এবং আযাদ কৃত গোলামের পথ ছেড়ে দেওয়া হবে।

  •  

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭৩. গোলাম বাঁদিতে অংশীদারিত্ব

২৩৪০। আবূ নু’মান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ (শরীকী) গোলাম থেকে একটা অংশ আযাদ করে দিলে সম্পূর্ণ গোলামটাই আযাদ হয়ে যাবে। যদি তার কাছে (প্রয়োজনীয়) অর্থ থাকে (তাহলে সেখান থেকে অন্য অংশীদারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে) অন্যথায় অতিরিক্ত কষ্ট না চাপিয়ে তাকে উপার্জন করতে বলা হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭৪. কুরবানীর পশু ও উট শরীক হওয়া এবং হাদী রওয়ানা করার পর কেউ কাউকে শরীক করলে তার বিধান

২৩৪১। আবূ নু’মান (রহঃ) ... জাবির ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ ৪ঠা যিলহাজ্জ ভোরে শুধু হাজ্জের ইহরাম বেধে মক্কায এসে পৌছলেন। কিন্তু আমরা মক্কায় এসে পৌছালে তিনি আমাদেরকে হাজ্জের ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিবর্তিত করার আদেশ দিলেন। তখন আমরা হাজ্জ (হজ্জ) কে উমরায় পরিবর্তিত করলাম। তিনি আমাদেরকে স্ত্রীদের সাথে সহবাসেরও অনুমতি দিলেন। এ বিষয়ে কেউ কথা ছড়ালো। (অধস্তন রাবী) আতা (রহঃ) বলেন, জাবির (রাঃ) বলেছেন আমাদের মধ্যে কেউ কেউ স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে মিনায় যাবে। এ কথা বলে জাবির (রাঃ) নিজের হাত লজ্জাস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কানে পৌছলে তিনি দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন।

আমি শুনতে পেয়েছি যে, লোকেরা এটা সেটা বলছে। আল্লাহর কসম! আমি তাদের চেয়ে অধিকা পরহেযগার এবং অধিক আল্লাহভীরু। পরে যা জেনেছি তা আগে ভাগে জানতে পারলে হাদী (হাজ্জের কুরবানীর জন্তু) সাথে নিয়ে আসতাম না। আর সাথে হাদী না থাকলে আমিও ইহরাম থেকে হালালা হয়ে যেতাম।

তখন সুরাকা ইবনু মালিক ইবনু জুসুম (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ হুকুম শুধু আমাদের জন্য না, এটা সর্বকালের জন্য। (রাবী আতা) বলেন, পরে আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) (ইয়ামান থেকে) মক্কায় এলন দুই রাবীর একজন বলেন যে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুরূপ ইহরাম বাধলাম। অপরজনের মতে তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুরূপ ইহরাম বাধলাম। ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ইহরাম অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিলেন এবং তাকেও হাদী এর মধ্যে শরীক করে দিলেন

পরিচ্ছেদঃ ১৫৭৫. যে ব্যক্তি বণ্টনকালে দশটি বকরীকে একটা উটের সমান মনে করে

২৩৪২। মুহাম্মদ (রহঃ) ... রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিহামার অন্তর্গত যুলহুলায়ফা নামক স্থানে আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে অবস্থান করছিলাম। সে সময আমরা (গনীমতের অংশ হিসেবে) কিছু বকরী কিংবা উট পেয়ে গেলাম। সাহাবীগণ (অনুমতির অপেক্ষা না করেই) তাড়াহুড়া করে পাত্রে গোশত চড়িয়ে দিলেন। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে পাত্রগুলো উল্টিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন। (বন্টনকালে) প্রতি দশটি বকরীকে তিনি একটি উটের সমান ধার্য করলেন। ইতিমধ্যে একটি উট পালিয়ে গেলো। সে সময় দলে ঘোড়ার সংখ্যাো ছিল খুব অল্প। তাই একজন তীড় ছুঁড়ে সেটাকে আটকালেন।

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দেখো, পলায়নপর বন্যজন্তুদের মতো এই গৃহপালিত পশুদেরও মধ্যে কোন কোনটা পলায়নপর স্বভাব বিশিষ্ট। কাজেই সেগুলোর মধ্যে যেটা তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠবে তার সাথে এরূপই করবে। (রাবী আবায়াহ) বলেন, আমার দাদা বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আশংকা করি; আগামীকাল হয়ত আমরা শত্রুদের মুখোমুখি হবো। আমাদের সাথে তো কোন ছুরি নেই। এমতাবস্থায় আমরা কি বাঁশের ধারলো কুঞ্চি দিয়ে যবেহ করতে পারি? তিনি বললেন, যে রক্ত বের করে দেয় তা দিয়ে, দ্রুত করো। যা আল্লাহর নাম দিয়ে যবেহ হয়, তা তোমরা খেতে পারো। তবে তা যেন দাঁতা বা নখ না হয। তোমাদের আমি এর কারণ বলছি, দাঁত তো হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।

 

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: অংশিদার
অংশিদার
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/09/shareholder.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/09/shareholder.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy