পরিচ্ছেদঃ ১৭০৬. ওয়াসিয়াত প্রসঙ্গে এবং নাবী (ﷺ)-এর বাণী, মানুষের অসীয়াত তার নিকট লিখিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তোমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়, সে যদি কিছু ধন-সম্পদ ত্যাগ করে যায়, তবে তা ন্যায্য পন্থায় তার পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের জন্য ওয়াসীয়াত করার বিধান.... পক্ষপাতিত্ব পর্যন্ত”। (আল-বাক্বারা : ২:১৮০-১৮২) جَنَفًا অর্থ- ঝুঁকে যাওয়া, পক্ষপাতিত্ব করা مُتَجَانِفٌ ঐ ব্যক্তি, যে ঝুঁকে পড়ে, পক্ষপাতিত্ব করে।
২৫৫১।
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, কোন মুসলিম ব্যাক্তির উচিত
নয় যে, তার অসীয়াতযোগ্য কিছু
(সম্পদ) রয়েছে সে দু’রাত কাটাবে অথচ তার কাছে তার অসীয়াত লিখিত থাকবে না। মুহাম্মদ
ইবনু মুসলিম (রহঃ) এ বর্ণনায় মালিক (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। এ সনদে আমর (রহঃ) ইবনু
উমর (রাঃ) এর মাধ্যমে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৬. ওয়াসিয়াত প্রসঙ্গে এবং নাবী
(ﷺ)-এর বাণী, মানুষের
অসীয়াত তার নিকট লিখিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তোমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময়
উপস্থিত হয়, সে যদি কিছু ধন-সম্পদ
ত্যাগ করে যায়, তবে তা ন্যায্য পন্থায় তার
পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের জন্য ওয়াসীয়াত করার বিধান.... পক্ষপাতিত্ব পর্যন্ত”।
(আল-বাক্বারা : ২:১৮০-১৮২) جَنَفًا অর্থ- ঝুঁকে যাওয়া, পক্ষপাতিত্ব
করা مُتَجَانِفٌ
ঐ ব্যক্তি, যে ঝুঁকে পড়ে, পক্ষপাতিত্ব করে।
২৫৫২।
ইবরাহীম ইবনু হারিস (রহঃ) ... রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শ্যালক
অর্থাৎ উম্মুল মুমিনীন জুওয়াইরিয়া বিনত হারিসের ভাই আমর ইবনুুর হারিস (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাঁর ইনিতকালের সময় তাঁর সাদা খচ্চরটি, তাঁর
হাতিয়ার এবং সে জমি যা তিনি সাদকা করেছিলেন, তাছাড়া
কোন স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা,
কোন
দাস-দাসী কিংবা কোন জিনিস রেখে যাননি।’
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৬. ওয়াসিয়াত প্রসঙ্গে এবং নাবী
(ﷺ)-এর বাণী, মানুষের
অসীয়াত তার নিকট লিখিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তোমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময়
উপস্থিত হয়, সে যদি কিছু ধন-সম্পদ
ত্যাগ করে যায়, তবে তা ন্যায্য পন্থায় তার
পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের জন্য ওয়াসীয়াত করার বিধান.... পক্ষপাতিত্ব পর্যন্ত”।
(আল-বাক্বারা : ২:১৮০-১৮২) جَنَفًا অর্থ- ঝুঁকে যাওয়া, পক্ষপাতিত্ব
করা مُتَجَانِفٌ
ঐ ব্যক্তি, যে ঝুঁকে পড়ে, পক্ষপাতিত্ব করে।
২৫৫৩।
খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... তালহা ইবনু মুসাররিফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি
আবদুল্লাহ ইবনু আদিফা (রাঃ) এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি অসীয়াত করেছিলেন? তিনি
বলেন, না। আমি বললাম, তাহলে কিভাবে লোকদের উপর অসীয়াত ফরয করা হল
কিংবা ওয়াসীয়াতের নির্দেশ দেওয়া হল? তিনি
বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কিতাবের (অনুযায়ী আমল করার) অসীয়াত করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৬. ওয়াসিয়াত প্রসঙ্গে এবং নাবী
(ﷺ)-এর বাণী, মানুষের
অসীয়াত তার নিকট লিখিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তোমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময়
উপস্থিত হয়, সে যদি কিছু ধন-সম্পদ
ত্যাগ করে যায়, তবে তা ন্যায্য পন্থায় তার
পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের জন্য ওয়াসীয়াত করার বিধান.... পক্ষপাতিত্ব পর্যন্ত”।
(আল-বাক্বারা : ২:১৮০-১৮২) جَنَفًا অর্থ- ঝুঁকে যাওয়া, পক্ষপাতিত্ব
করা مُتَجَانِفٌ
ঐ ব্যক্তি, যে ঝুঁকে পড়ে, পক্ষপাতিত্ব করে।
২৫৫৪।
আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) ... আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবীগণ
আয়িশা (রাঃ) এর কাছে আলোচনা করলেন যে, আলী
(রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওয়াসী ছিলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন
‘তিনি কখন তাঁর প্রতি অসীয়াত করলেন? অথচ
আমি তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার বুকে অথবা বলেছেন আমার
কোলে হেলান দিয়ে রেখেছিলাম। তখন তিনি পানির তস্তুরি চাইলেন, তারপর আমার কোলে ঝুকে পড়লেন। আমি বুঝতেই
পারিনি যে, তিনি ইন্তেকাল করেছেন।
অতএব তাঁর প্রতি কখন অসীয়াত করলেন?
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৭. ওয়ারিসদেরকে অন্যের নিকট হাত
পাতা অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে মালদার রেখে যাওয়া শ্রেয়
২৫৫৫।
আবূ নু‘আইম (রহঃ) ... সাদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাকে রোগাক্রান্ত অবস্থায় দেখতে আসেন। সে
সময় আমি মক্কায় ছিলাম। কোন ব্যাক্তি যে স্থান থেকে হিযরত করে, সেখানে মৃত্যু বরণ করাকে তিনি অপছন্দ করতেন।
এজন্য তিনি বলতেন, আল্লাহ রহম করুক ইবনু
আফরা-এর উপর। আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি
আমার সমুদয় মালের ব্যবহারের অসীয়াত করে যাব? তিনি
বললেন, না। আমি আরজ করলাম, তবে অর্ধেক? তিনি
ইরশাদ করলেন, না। আমি আরজ করলাম, তবে এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশও অনেক।
ওয়ারিসগণকে দরিদ্র পরমুখাপেক্ষী করে রেখে যাওয়ার চেয়ে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া
শ্রেয়। তুমি যখনই কোন খরচ করবে,
তা
সাদকারূপে গন্য হবে। এমনকি সে লোকমাও যা তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে। হয়ত আল্লাহ
পাক তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং লোকেরা তোমার দ্বারা উপকৃত হবেন, আবার কিছু লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সে সময় তার
একটি মাত্র কন্যা ছাড়া কেউ ছিল না।
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৮. এক তৃতীয়াংশ অসীয়াত করা
প্রসঙ্গে। হাসান বাসরী (র) বলেন,
যিম্মির
জন্য এক তৃতীয়াংশের বেশী অসীয়াত করা বৈধ নয়। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তিনি যেন আল্লাহর
নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী যিম্মিদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন : “ তাদের
মধ্যে ফয়সালা কর, আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান
অনুযায়ী”। (আল-মায়িদাহ : ৫:৪৯)
২৫৫৬।
কুতাইবা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকেরা
যদি এক চতুর্থাংশে নেমে আসত (তবে ভাল হতো) কেননা, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক
তৃতীয়াংশ এবং তৃতীয়াংশই বিরাট অথবা তিনি বলেছেন বেশ।
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৮. এক তৃতীয়াংশ অসীয়াত করা
প্রসঙ্গে। হাসান বাসরী (র) বলেন,
যিম্মির
জন্য এক তৃতীয়াংশের বেশী অসীয়াত করা বৈধ নয়। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তিনি যেন আল্লাহর
নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী যিম্মিদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন : “ তাদের
মধ্যে ফয়সালা কর, আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান
অনুযায়ী”। (আল-মায়িদাহ : ৫:৪৯)
২৫৫৭।
মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) ... আমির ইবনু সাদ (রাঃ) এর পিতা সাদ ইবনু আবূ
ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি
বলেন, আমি (একবার) অসুস্থ হয়ে
পড়লে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন, তিনি যেন আমাকে পেছন দিকে ফিরিয়ে না নেন।’
তিনি বললেন, ‘আশা করি আল্লাহ তোমার
মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার দ্বারা লোকদের উপকৃত করবেন।’ আমি বললাম, আমি অসীয়াত করতে চাই। আমার তো একটি মাত্র
কন্যা রয়েছে।’ আমি আরো বললাম,
আমি
অর্ধেক অসীয়াত করতে চাই।’ তিনি বললেন, অর্ধেক
অনেক বেশী। আমি বললাম, এক তৃতীয়াংশ। তিনি বললেন, আচ্ছা এক তৃতীয়াংশ এবং এক তৃতীয়াংশ বেশী বা
তিনি বলেছেন বিরাট। সাদ (রাঃ) বলেন, এরপর
লোকেরা এক তৃতীয়াংশ অসীয়াত করতে লাগল। আর তা-ই বৈধ হল।
পরিচ্ছেদঃ ১৭০৯. অসীর প্রতি অসীয়তকারীর
উক্তিঃ তুমি আমার সন্তানাদির প্রতি খেয়াল রাখবে, আর
অসীর জন্য কেমন দাবী জায়িয
২৫৫৮।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
সহধর্মীনি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, উতবা ইবনু আবূ ওয়াক্কাস
(রাঃ) তাঁর ভাই সাদ ইবনু আবূ ওয়াককাস (রাঃ) কে এই বলে অসীয়াত করেন যে, যামআর দাসীর ছেলেটি আমার ঔরসজাত। তাকে তুমি
তোমার অধিকারে আনবে। মক্কা বিজয়ের বছর সাদ (রাঃ) তাকে নিয়ে নেন এবং বলেন, সে আমার ভাতিজা (আমার ভাই) আমাকে এর ব্যাপারে
অসীয়াত করে গেছেন। আবদ ইবনু যামআ (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, সে আমার ভাই এবং আমার পিতার দাসীর পুত্র।
আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম হয়েছে। তারা উভয়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসেন।
সাদ
(রাঃ) বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমার
ভাইয়ের পুত্র এবং তিনি আমাকে তার সম্পর্কে অসীয়াত করে গেছেন। আবদ ইবনু যামআ (রাঃ)
বললেন, সে আমার ভাই এবং আমার
পিতার দাসীর পুত্র। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবদ ইবনু যামআ, সে তোমারই প্রাপ্য। কেননা যার বিছানায় সন্তান
জন্মেছে, সে-ই সন্তানের অধিকারী।
ব্যাভিচারীর জন্য রয়েছে পাথর। তারপর তিনি সাওদা বিনতে যামআ (রাঃ) কে বললেন, ‘তুমি এই ছেলেটি থেকে পর্দা কর।’ কেননা তিনি
ছেলেটির সঙ্গে উতবা’র সাদৃশ্য দেখতে পান। ছেলেটির আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়া
পর্যন্ত সে কখনো সাওদা (রাঃ) কে দেখেনি।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১০. কোন রোগাক্রান্ত ব্যক্তি
মাথা দিয়ে স্পষ্টভাবে ইশারা করলে তা গ্রহণযোগ্য
২৫৫৯।
হাসসান ইবনু আবূ আববাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ইয়াহুদী একটি মেয়ের মাথা দুইটি পাথরের
মাঝে রেখে তা থেতলে ফেলে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কে
তোমাকে এমন করেছে? কি অমুক না অমুক ব্যাক্তি? অবশেষে যখন সেই ইয়াহুদীর নাম নেওয়া হল তখন
মেয়েটি মাথা দিয়ে ইশারা করল,
হ্যাঁ।
তারপর সেই ইয়াহুদীকে নিয়ে আসা হল এবং তাকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে সে
স্বীকার করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন। সে
মতে পাথর দিয়ে তার মাথা থেঁতলিয়ে দেওয়া হল।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১১. ওয়ারিসের জন্য অসীয়াত নেই
২৫৬০।
মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (সেকালে) উত্তরাধিকারী হিসাবে সম্পদ পেতো সন্তান আর
পিতা-মাতার জন্য ছিল অসীয়াত। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁর পছন্দ মোতাবেক এ বিধান রহিত
করে ছেলের অংশ মেয়ের দ্বিগুন,
পিতামাতা
প্রত্যেকের জন্য এক ষষ্ঠামাংশ,
স্ত্রীর
জন্য (যদি সন্তান থাকে) এক অষ্টমাংশ, (না থাকলে) এক চতুর্থাংশ, স্বামীর
জন্য (সন্তান না থাকলে) অর্ধেক,
(থাকলে)
এক চতুর্থাংশ নির্ধারণ করেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১২. মৃত্যুর সময় দান খায়রাত করা
২৫৬১।
মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক
ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উত্তম সাদকা কোনটি? তিনি বলেন, সুস্থ
এবং সম্পদের প্রতি অনুরাগ অবস্থায় দান খায়রাত করা, যখন
তোমার ধনী হওয়ার আকাঙখা থাকে এবং তুমি দারিদ্রের আশংকা রাখ, আর তুমি এভাবে অপেক্ষা থাকবে না যে, যখন তোমার প্রাণ কন্ঠাগত হয়ে আসে, তখন তুমি বলবে, অমুকের
জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু অথচ তা
অমুকের জন্য হয়েই গেছে।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ “ঋণ আদায়
ও অসীয়াত পূর্ণ করার পর... (মৃতের সম্পত্তি ভাগ হবে)” (আন-নিসা : ৪:১২)।
وَيُذْكَرُ أَنَّ شُرَيْحًا وَعُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ وَطَاوُسًا وَعَطَاءً وَابْنَ أُذَيْنَةَ أَجَازُوا إِقْرَارَ الْمَرِيضِ بِدَيْنٍ وَقَالَ الْحَسَنُ أَحَقُّ مَا تَصَدَّقَ بِهِ الرَّجُلُ آخِرَ يَوْمٍ مِنْ الدُّنْيَا وَأَوَّلَ يَوْمٍ مِنْ الْآخِرَةِ وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ وَالْحَكَمُ إِذَا أَبْرَأَ الْوَارِثَ مِنْ الدَّيْنِ بَرِئَ وَأَوْصَى رَافِعُ بْنُ خَدِيجٍ أَنْ لَا تُكْشَفَ امْرَأَتُهُ الْفَزَارِيَّةُ عَمَّا أُغْلِقَ عَلَيْهِ بَابُهَا وَقَالَ الْحَسَنُ إِذَا قَالَ لِمَمْلُوكِهِ عِنْدَ الْمَوْتِ كُنْتُ أَعْتَقْتُكَ جَازَ وَقَالَ الشَّعْبِيُّ إِذَا قَالَتْ الْمَرْأَةُ عِنْدَ مَوْتِهَا إِنَّ زَوْجِي قَضَانِي وَقَبَضْتُ مِنْهُ جَازَ وَقَالَ بَعْضُ النَّاسِ لَا يَجُوزُ إِقْرَارُهُ لِسُوءِ الظَّنِّ بِهِ لِلْوَرَثَةِ ثُمَّ اسْتَحْسَنَ فَقَالَ يَجُوزُ إِقْرَارُهُ بِالْوَدِيعَةِ وَالْبِضَاعَةِ وَالْمُضَارَبَةِ وَقَدْ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ وَلَا يَحِلُّ مَالُ الْمُسْلِمِينَ لِقَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آيَةُ الْمُنَافِقِ إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا فَلَمْ يَخُصَّ وَارِثًا وَلَا غَيْرَهُ فِيهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
উল্লেখ
করা হয়েছে যে, শুরাইহ, উমার ইবনু আব্দুল আযীয, তাউস, আত্বা
ও ইবনু উয়ায়না (র) রোগগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণের স্বীকারোক্তিকে বৈধ বলেছেন। হাসান
(রহঃ) বলেন, দুনিয়ার শেষ দিনে এবং
আখিরাতের প্রথম দিনে উপনীত হওয়া মানুষ যে স্বীকারোক্তি করে তাই অধিক গ্রহণযোগ্য।
ইবরাহীম ও হাকাম (রহঃ) বলেন,
উত্তরাধিকারী
যদি ঋণ মাফ করে দেয়, তবে সে মুক্ত হয়ে যাবে।
রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) অসীয়াত করেন যে, যে
সকল মাল ফাযারিয়া গোত্রের তার স্ত্রীর ঘরে আবদ্ধ রয়েছে, তা যেন বের করা না হয়। হাসান (রহঃ) বলেন, কেউ যদি মৃত্যুর সময় তার ক্রীতদাসকে বলে, আমি তোমাকে আযাদ করেছি তবে তা বৈধ। শা’বী
(রহঃ) বলেন, যদি কোন স্ত্রী মৃত্যুকালে
বলে, আমার স্বামী আমার হক আদায়
কের দিয়েছেন এবং আমি তা নিয়েছি,
তবে
তা বৈধ।
কেউ কেউ বলেন যে, ওয়ারিস সম্পর্কে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য নয়, কেননা তাতে তার সম্বন্ধে কুধারণা হতে পারে। অত:পর ইসতিহসান করে বলেন যে, রোগাক্রান্ত ব্যক্তির আমানত, পুঁজি ও শরীকী ব্যবসা সম্বন্ধীয় স্বীকারোক্তি বৈধ। অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, তোমরা খারাপ ধারণা থেকে বেঁচে থাক, কেননা খারাপ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। কোন মুসলিমের মাল হালাল নয়; কেননা, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের আলামত হল- তার নিকট কিছু আমানত রাখার হলে সে তার খেয়ানত করে। আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “... তোমরা আমানত তার হকদারের নিকট অবশ্যই ফিরিয়ে দিবে...”- (আন-নিসা : ৪:৫৮) এতে উত্তরাধিকারী কিংবা অন্য কাউকে নির্দিষ্ট করেননি। এই প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৫৬২।
সুলাইমান ইবনু দাউদ আবূ রাবী‘ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি-যখন কথা বলে মিথ্যা
বলে, আমানত রাখলে তা খিয়ানত করে
এবং প্রতিশ্রুতি দিলে তা ভঙ্গ করে।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৪. মহান আল্লাহর বাণীঃ “ঋণ আদায়
ও অসীয়াত পূর্ণ করার পর... (মৃতের সম্পত্তি ভাগ হবে)” (আন-নিসা : ৪:১২) এর
ব্যাখ্যা।
وَيُذْكَرُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَضَى بِالدَّيْنِ قَبْلَ الْوَصِيَّةِ وَقَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا فَأَدَاءُ الْأَمَانَةِ أَحَقُّ مِنْ تَطَوُّعِ الْوَصِيَّةِ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا صَدَقَةَ إِلَّا عَنْ ظَهْرِ غِنًى وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَا يُوصِي الْعَبْدُ إِلَّا بِإِذْنِ أَهْلِهِ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعَبْدُ رَاعٍ فِي مَالِ سَيِّدِهِ
উল্লেখ রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসীয়াতের পূর্বে ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহর বাণীঃ “আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারের নিকট ফিরিয়ে দিবে”- (আন-নিসা : ৫৮)। কাজেই নফল অসীয়াত পূরণ করার আগে আমানত আদায়ের অগ্রাধিকার দিতে হবে। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘স্বচ্ছলতা ব্যতীত সদাকাহ নাই’। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, গোলাম তার মালিকের অনুমতি ব্যতীত অসীয়াত করবে না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, গোলাম তার মালিকের সম্পদের হিফাজতকারী।
২৫৬৩।
মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আমি সাওয়াল করলাম, তিনি আমাকে দান করলেন। তারপর তিনি আমাকে
বললেন, ‘হে হাকীম! এই ধন-সম্পদ, সবুজ-শ্যামল, মধুর।
যে ব্যাক্তি দানশীলতার মনোভাব নিয়ে তা গ্রহণ করবে, তাতে
তার বরকত হবে। আর যে ব্যাক্তি প্রতিক্ষা কাতর অন্তরে তা গ্রহণ করবে, তাতে তার বরকত হবে না। সে ঐ ব্যাক্তির মত যে
খায়; কিন্তু তৃপ্ত হয় না। উপরের
(দাতার) হাত নীচের (গ্রহীতার) হাতের চাইতে উত্তম।’ হাকীম (রাঃ) বলেন, তারপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলআল্লাহ! সে স্বত্বার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আপনার পরে আমি দুনিয়া থেকে বিদায়ের আগে আর
কারো কিছু চাইব না। (কোন কিছু নেব না)
এরপর
আবূ বকর (রাঃ) কিছু দান করার জন্য হাকীমকে আহবান করেন, কিন্তু হাকীম (রাঃ) তাঁর কাছ থেকে কিছু গ্রহণ
করতে অস্বীকার করেন। তারপর উমর (রাঃ)-ও হাকীম (রাঃ) কে কিছু দান করার জন্য ডেকে
পাঠান, কিন্তু তাঁর কাছ থেকেও
কিছু গ্রহণ করতে তিনি অস্বীকার করেন। তখন উমর (রাঃ) বলেন, হে মুসলিম সমাজ! আমি আল্লাহ প্রদত্ত গনীমতের
মাল থেকে প্রাপ্য তার অংশ তাঁর সামনে পেশ করেছি, কিন্তু
তিনি তা নিতে অস্বীকার করেছেন;
হাকীম
(রাঃ) তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে আর কারো
নিকট কিছু চাননি।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৪. মহান আল্লাহর বাণীঃ “ঋণ আদায়
ও অসীয়াত পূর্ণ করার পর... (মৃতের সম্পত্তি ভাগ হবে)” (আন-নিসা : ৪:১২) এর
ব্যাখ্যা।
২৫৬৪।
বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি তোমরা প্রত্যেকেই
দায়িত্ববান এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। তাই
শাসক হলেন দায়িত্ববান, তার দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে
জিজ্ঞাসা করা হবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্ববান এবং তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরের সম্পদের দায়িত্ববান, তার সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। গোলাম
তার মালিকের ধন-সম্পদের দায়িত্ববান, তাকে
তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। রাবী বলেন, আমার
মনে হয় তিনি এও বলেছেন যে, পুত্র তার পিতার সম্পদের
দায়িত্ববান।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৫. যখন আত্মীয়-স্বজনের জন্য
ওয়াকফ বা অসীয়াত করা হয় এবং আত্মীয় কারা? সাবিত
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে,
নাবী
(সাঃ) আবূ ত্বালহাকে বলেন, তুমি তোমার গরীব
আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে দাও। অত:পর তিনি বাগনটি হাসসান ও উবাই ইবনু কা’বকে দিয়ে দেন।
আনসারী (র) বলেন, আমার পিতা সুমামা এর
মাধ্যমে আনাস (রাঃ) থেকে সাবিত এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর রসূল (সাঃ)
বলেছেন, বাগানটি তোমার গরীব
আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে দাও। আনাস (রাঃ) বলেন, আবু
ত্বালহা (রাঃ) বাগনটি হাসসান ও উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) কে দিলেন আর তারা উভয়েই আমার
চেয়ে তার নিকটাত্মীয় ছিলেন। আবু ত্বালহা (রাঃ)-এর সঙ্গে হাসসান এবং উবাই (রাঃ)এর
সম্পর্ক ছিল এরূপ: আবূ ত্বালহা (রাঃ) নাম- যায়দ ইবনু সাহল ইবনু আসওয়াদ ইবনু হারাম
ইবনু আমর ইবনু যায়দ যিনি ছিলেন মানাত ইবনু আদী ইবনু আমর ইবনু মালিক ইবনু নাজ্জার।
(হাসসানের বংশ পরিচয় হলো:) হাসসান ইবনু সাবিত ইবনু মুনযির ইবনু হারাম। কাজেই হারাম
নামক পুরুষে মিলিত হন। যিনি তৃতীয় পিতৃপুরুষ ছিলেন এবং হারাম ইবনু আমর ইবনু যায়দ
যিনি মানাত ইবনু আদী ইবনু আমর ইবনু মালিক ইবনু নাজ্জার। অতএব হাসসান, আবু ত্বালহা ও উবাই (রাঃ) ষষ্ট পুরুষে এসে
আমর ইবনু মালিকের সঙ্গে মিলিত হন। আর উবাই হলেন উবাই ইবনু কা’ব ইবনু কায়স ইবনু
উবাইদ ইবনু যায়দ ইবনু মুআবিয়াহ ইবনু আমর ইবনু মালিক ইবনু নাজ্জার। কাজেই আমর ইবনু
মালিক এসে হাসসান আবূ ত্বালহা ও উবাই একত্র হয়ে যায়। কারো কারো মতে নিজের
আত্মীয়-স্বজনের জন্য অসীয়াত করলে তা তার মুসলিম পিতা-পিতামহের জন্য প্রযোজ্য হবে।
২৫৬৫।
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালহা (রাঃ) কে বলেন আমার মত হল, তোমার বাগানটি তোমার আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে
দাও। আবূ তালহা (রাঃ) বলেন, আমি তা-ই করব ইয়া
রাসূলাল্লাহ! তাই আবূ তালহা (রাঃ) তার বাগানটি তার আত্মীয়-স্বজন ও চাচাতো ভাইয়ের
মধ্যে ভাগ করে দেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যখন
এই আয়াতটি নাযিল হলঃ (হে মুহামমদ) আপনার নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দেন। (২৬ঃ
১৪)। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরায়শ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন
গোত্রদের ডেকে বললেন, হে বানু ফিহর, হে বানূ আদী, তোমরা
সতর্ক হও। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, যখন
কুরআনের এই আয়াত নাযিল হলঃ (হে মুহাম্মদ) আপনি আপনার নিকটবর্গকে সতর্ক করে দিন
(২৬ঃ ২১৪)। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে কুরায়শ সম্প্রদায়।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৬. স্ত্রীলোক ও সন্তান-সন্ততি (অসীয়তের
ক্ষেত্রে) আত্মীয় স্বজনের অন্তর্ভুক্ত হবে কি?
২৫৬৬।
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, যখন আল্লাহ তায়ালা কুরানের
এই আয়াতটি নাযিল করলেন, (হে মুহাম্মদ) আপনি আপনার
নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দিন (২৬ঃ ২১৪) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং বললেন,
‘হে
কুরায়শ সম্প্রদায়! কিংবা অনুরূপ শব্দ বললেন, তোমরা
(আল্লাহর আযাব থেকে) আত্মরক্ষা কর। আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন
উপকার করতে পারব না। হে বানূ আবাদ মানাফ! আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি
তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে আব্বাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব! আল্লাহর আযাব
থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে সাফিয়্যা! রাসূলুল্লাহর
ফুফু, আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা
করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ! আমার ধন-সম্পদ
থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে
পারব না।
আসবাগ
(রহঃ) ইবনু ওয়াহব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনায় আবূল ইয়ামান
(রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৭. ওয়াকফকারী তার কৃত ওয়াকফ দ্বারা
উপকার হাসিল করতে পারে কি? উমার (রাঃ) শর্তারোপ
করেছিলেন, যে ব্যক্তি ওয়াকফের
মুতাওয়াল্লী হবে, তার জন্য তা থেকে কিছু
খাওয়াতে কোন দোষ নেই। ওয়াকফকারী নিজেও মুতাওয়াল্লী হতে পারে, আর অন্য কেউ ও হতে পারে। অনুরূপ যে ব্যক্তি
উট বা অন্য কিছু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে তার জন্যও তা থেকে নিজে উপকৃত হওয়া বৈধ, যেমন অন্যদের জন্য তা থেকে উপকৃত হওয়া বৈধ, শর্তারোপ না করলেও।
২৫৬৭।
কুতাইবা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন দেখতে পেলেন যে, এক ব্যাক্তি কুরবানীর উট হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে বললেন, এর উপর সওয়ার হও। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটি তো কুরবানীর উট।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৃতীয়বার বা চতুর্থবার তাকে বললেন, তার উপর সওয়ার হয়ে যাও, দুর্ভোগ তোমার জন্য কিংবা বললেন, তোমার প্রতি আফসোস।
পরিচ্ছেদঃ ১৭১৭. ওয়াকফকারী তার কৃত ওয়াকফ
দ্বারা উপকার হাসিল করতে পারে কি?
উমার
(রাঃ) শর্তারোপ করেছিলেন, যে ব্যক্তি ওয়াকফের
মুতাওয়াল্লী হবে, তার জন্য তা থেকে কিছু
খাওয়াতে কোন দোষ নেই। ওয়াকফকারী নিজেও মুতাওয়াল্লী হতে পারে, আর অন্য কেউ ও হতে পারে। অনুরূপ যে ব্যক্তি
উট বা অন্য কিছু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে তার জন্যও তা থেকে নিজে উপকৃত হওয়া বৈধ, যেমন অন্যদের জন্য তা থেকে উপকৃত হওয়া বৈধ, শর্তারোপ না করলেও।
২৫৬৮।
ইসমাঈল (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে দেখতে পেলেন যে, সে একটি কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে বললেন, এর উপর সওয়ার হও। লোকটি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটি তো কুরবানীর উট। তিনি
দ্বিতীয়বার কিংবা তৃতীয়বার বললেন,
এর
উপর সওয়ার হও, দুর্ভোগ তোমার জন্য।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২০. যদি কেউ বলে যে, আমার এই জমিটি কিংবা বাগানটি আমার মায়ের পক্ষ
থেকে আল্লাহর ওয়াস্তে সদাকাহ তবে তা জাইয, যদিও
তা কার জন্য তা ব্যক্ত না করে
بَاب إِذَا وَقَفَ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَدْفَعَهُ إِلَى غَيْرِهِ فَهُوَ جَائِزٌ
لِأَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَوْقَفَ وَقَالَ لَا جُنَاحَ عَلَى مَنْ وَلِيَهُ أَنْ يَأْكُلَ وَلَمْ يَخُصَّ إِنْ وَلِيَهُ عُمَرُ أَوْ غَيْرُهُ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي طَلْحَةَ أَرَى أَنْ تَجْعَلَهَا فِي الْأَقْرَبِينَ فَقَالَ أَفْعَلُ فَقَسَمَهَا فِي أَقَارِبِهِ وَبَنِي عَمِّهِ
১৭১৮.
পরিচ্ছেদঃ যখন কেউ কোন কিছু ওয়াকফ করে এবং তা অন্যের হাওয়ালা না করে, তবুও তা জায়িয।
কেননা, উমার(রাঃ)এই রকম ওয়াকফ করেছিলেন এবং বলেছিলেন, মুতাওয়াল্লীর জন্য তা থেকে কিছু খেতে দোষ নেই। তিনি নিজে মুতাওয়াল্লী হবেন না অন্য কেউ তা তিনি নির্দিষ্ট করেননি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামআবূ ত্বালহা(রাঃ)-কে বলেন, আমার অভিমত এই যে, তুমি তা (তোমার সাদকাকৃত বাগানটি) নিকটাত্মীয়দের দিয়ে দাও। আবূ ত্বালহা(রাঃ)বলেন, আমি তা-ই করব। অত:পর তিনি তাঁর নিকটাত্মীয় ও চাচাত ভাইদের মধ্যে তা বন্টন করে দেন।
بَاب إِذَا قَالَ دَارِي صَدَقَةٌ لِلَّهِ وَلَمْ يُبَيِّنْ لِلْفُقَرَاءِ أَوْ غَيْرِهِمْ فَهُوَ جَائِزٌ
وَيَضَعُهَا فِي الْأَقْرَبِينَ أَوْ حَيْثُ أَرَادَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَبِي طَلْحَةَ حِينَ قَالَ أَحَبُّ أَمْوَالِي إِلَيَّ بَيْرُحَاءَ وَإِنَّهَا صَدَقَةٌ لِلَّهِ فَأَجَازَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَلِكَ وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَا يَجُوزُ حَتَّى يُبَيِّنَ لِمَنْ وَالْأَوَّلُ أَصَحُّ
১৭১৯.
যদি কেউ বলে যে, আমার বাড়ীটি আল্লাহর
ওয়াস্তে সদাকাহ এবং ফকীর বা অন্য কারো কথা উল্লেখ না করে তবে তা জায়িয।
সে তা আত্মীয়দের মধ্যে কিংবা যাদের ইচ্ছা দান করতে পারে।আবূ ত্বালহা(রাঃ)বললেন যে, আমার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ হল বায়রূহা বাগানটি এবং আমি তা আল্লাহর উদ্দেশে সদাকাহ করলাম। তখন নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতা জায়িয রেখেছেন। কোন কোন ফকীহ বলেছেন, যতক্ষণ না কারো জন্য তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা জায়ীয হবে না। কিন্তু প্রথম অভিমতটি অধিকতর সহীহ।
২৫৬৯।
মুহাম্মদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সাদ ইবনু উবাদা (রাঃ)-এর মা মারা গেলেন এবং
তিনি সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। পরে সাদ বললেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! আমার মা আমার অনুপস্থিতিতে মারা যান। আমি যদি তার পক্ষ থেকে কিছু
সাদকা করি, তা হলে কি তা তাঁর কোন উপকারে আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
সাদ (রাঃ) বললেন, ‘তাহলে আমি আপনাকে সাক্ষী
করছি আমার মিকরাফ নামক বাগানটি তাঁর জন্য সাদকা করলাম।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২১. কেউ যদি তার আংশিক সম্পদ
কিংবা কতিপয় গোলাম অথবা কিছু জন্তু জানোয়ার সাদকা করে বা ওয়াকফ করে তবে তা জায়িয
২৫৭০।
ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি
বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার
তাওবা (কবুলের শুকরিয়া) হিসাবে আমি আমার যাবতীয় মাল আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলুল্লাহ
এর উদ্দেশ্যে সাদকা করে মুক্ত হতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, কিছু মাল নিজের জন্য রেখে
দাও, তা তোমার জন্য উত্তম। আমি
বললাম, তা হলে আমি আমার খায়বারের
অংশটি নিজের জন্য রেখে দিলাম।’
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৩. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
মীরাসের মাল ভাগাভাগির সময় যদি কোন আত্মীয়, ইয়াতীম
ও মিসকীন হাজির থাকে, তাহলে তা থেকে তাদেরও কিছু
দান করেব।
(৪ঃ
৮)
بَاب مَنْ تَصَدَّقَ إِلَى وَكِيلِهِ ثُمَّ رَدَّ الْوَكِيلُ إِلَيْهِ
وَقَالَ إِسْمَاعِيلُ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ لَا أَعْلَمُهُ إِلَّا عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ جَاءَ أَبُو طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ يَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي كِتَابِهِ لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ وَإِنَّ أَحَبَّ أَمْوَالِي إِلَيَّ بَيْرُحَاءَ قَالَ وَكَانَتْ حَدِيقَةً كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْخُلُهَا وَيَسْتَظِلُّ بِهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا فَهِيَ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَإِلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرْجُو بِرَّهُ وَذُخْرَهُ فَضَعْهَا أَيْ رَسُولَ اللَّهِ حَيْثُ أَرَاكَ اللَّهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَخْ يَا أَبَا طَلْحَةَ ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ قَبِلْنَاهُ مِنْكَ وَرَدَدْنَاهُ عَلَيْكَ فَاجْعَلْهُ فِي الْأَقْرَبِينَ فَتَصَدَّقَ بِهِ أَبُو طَلْحَةَ عَلَى ذَوِي رَحِمِهِ قَالَ وَكَانَ مِنْهُمْ أُبَيٌّ وَحَسَّانُ قَالَ وَبَاعَ حَسَّانُ حِصَّتَهُ مِنْهُ مِنْ مُعَاوِيَةَ فَقِيلَ لَهُ تَبِيعُ صَدَقَةَ أَبِي طَلْحَةَ فَقَالَ أَلَا أَبِيعُ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ بِصَاعٍ مِنْ دَرَاهِمَ قَالَ وَكَانَتْ تِلْكَ الْحَدِيقَةُ فِي مَوْضِعِ قَصْرِ بَنِي حُدَيْلَةَ الَّذِي بَنَاهُ مُعَاوِيَةُ
১৭২২.
পরিচ্ছেদঃ যে ব্যাক্তি তার উকিলকে সাদকা প্রদান করল, তারপর
উকিল সেটি তাকে ফিরিয়ে দিল।
ইসমাঈল
(রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি
বলেছেন, যখন নাযিল হলঃ তোমরা যা
ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত কখনো পূণ্য লাভ করতে পারবে না। (৩: ৯২) তখন
আবূ তালহা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ আল্লাহ তাঁর কিতাবে বলেছেন, (لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ) এবং
আমার কাছে সব চাইতে প্রিয় সম্পদ হল বায়রুহা। আনাস (রাঃ) বলেন, এটি সে বাগান যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশরীফ নিয়ে ছায়ায় বসতেন এবং এর পানি পান করতেন। আবূ তালহা
(রাঃ) বলেন এটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর উদ্দেশ্যে দান করা। আমি এর বিনিময়ে ছাওয়াব
ও আখিরাতের সঞ্চয়ের আশা রাখি। ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ আপনাকে যেখানে ব্যয় করার
নির্দেশ দেন সেখানে তা ব্যয় করুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বেশ, হে
আবূ তালহা। এটি লাভজনক সম্পদ। আমি তোমার কাছ থেকে তা গ্রহণ করলাম এবং তোমাকে
ফিরিয়ে দিলাম। তা তুমি তোমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বন্টন করে দাও। তারপর আবূ তালহা
(রাঃ) তা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সাদকা করে দিলেন। আনাস (রাঃ) বলেন যে, এদের মধ্যে উবাই এবং হাসসান (রাঃ)ও ছিলেন।
হাসসান তাঁর অংশ মুআবিয়া (রাঃ)-এর কাছে বিক্রি করে দেন। জিজ্ঞাসা করা হল, তুমি কি আবূ তালহা (রাঃ)-এর সাদকাকৃত সম্পদ
বিক্রি করে দিচ্ছ? হাসসান (রাঃ) বললেন, আমি কি এক সা দিরহামের বিনিময়ে এক সা খেজুর
বিক্রি করব না? আনাস (রাঃ) বলেন, বাগানটি ছিল বনূ হুদায়লা প্রাসাদের স্থানে
অবস্থিত, যা মুআবিয়া (রাঃ) নির্মাণ
করেন।
২৫৭১।
আবূ নুমান মুহাম্মদ ইবনু ফাযল (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকদের
ধাররা, উক্ত আয়াতটি মানসুখ হয়ে
গেছে; কিন্তু আল্লাহর কসম।
আয়াতটি মানসূখ হয়নি; বরং লোকেরা এর উপর আমল
করতে অনীহা প্রকাশ করছে। আত্মীয় দু’ ধরনের-এক, আত্মীয়
যারা ওয়ারিস হয়, এবং তারা উপস্থিতদের কিছু
দিবে। দুই, এমন আত্মীয় যারা ওয়ারিস নয়, তারা উপস্থিতদের সঙ্গে সদালাপ করবে এবং বলবে, আমাদের অধিকার কিছু নেই, যা তোমাদের দিতে পারি।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৪. হঠাৎ কেউ মারা গেলে তারপক্ষ
থেকে দান-সাদকা করা মুস্তাহাব আর মৃতের পক্ষ থেকে তার মান্নত আদায় করা
২৫৭২।
ইসমাঈল (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একজন
সাহাবী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, আমার মা হঠাৎ মারা যান। আমার ধারনা যে, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন, তাহলে সাদক করতেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে
সাদকা করে দিতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে সাদকা কর।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৪. হঠাৎ কেউ মারা গেলে তারপক্ষ
থেকে দান-সাদকা করা মুস্তাহাব আর মৃতের পক্ষ থেকে তার মান্নত আদায় করা
২৫৭৩।
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সাদ ইবনু উবাদা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জানতে চাইলেন যে, আমার মা মারা গেছেন এবং তার উপর মান্নত ছিল, রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, তুমি তার পক্ষ থেকে তা
আদায় কর।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৫. ওয়াকফ, সাদকা ও অসীয়তে সাক্ষী রাখা
২৫৭৪।
ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বানূ সাইদার নেতা সাদ ইবনু উবাদা (রাঃ)-এর মা
মারা গেলেন। তখন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তারপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন,
‘ইয়া
রাসূলাল্লাহ! আমার মা আমার অনুপস্থিতিতে মারা গেছেন। এখন আমি যদি তার পক্ষ থেকে
সাদকা করি, তবে তা কি তার কোন উপকারে
আসবে? তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ। সাদ (রাঃ) বললেন, ‘তাহলে আপনাকে সাক্ষী করে আমি আমার মিখরাফের
বাগানটি তাঁর উদ্দেশ্যে সাদকা করলাম।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৬. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে দিবে এবং ভালোর সঙ্গে মন্দ বদল করবে না। তোমাদের
সঙ্গে তাদের সম্পদ মিশিয়ে গ্রাস করবে না, তা
মহাপাপ। তোমরা যদি আশংকা কর যে,
ইয়াতীম
মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে
বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে, যাকে তোমাদের ভাল লাগে।
(৪ঃ ২-৩)
২৫৭৫।
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... উরওয়া ইবনু যুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, তিনি
আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেনঃوَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম
মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে
বিয়ে করবে, যাকে তোমাদের ভাল লাগে (৪ঃ
৩)। আয়াতটির অর্থ কি? আয়িশা (রাঃ) বললেন, এখানে সেই ইয়াতীম মেয়েদের উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যে তার অভিভাবকের লালন-পালনে থাকে। এরপর সে
অভিভাবক তার রূপ-লাবন্য ও ধন-সম্পদের আকৃষ্ট হয়ে, তার
সমমানে মেয়েদের প্রচলিত মাহর থেকে কম দিয়ে তাকে বিয়ে করতে চায়। অতএব যদি মাহর
পূর্ণ করার ব্যাপারে এদের প্রতি ইনসাফ করতে না পারে তবে ঐ অভিভাবকদেরকে নিষেধ করা
হয়েছে এদের বিবাহ করতে এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের ছাড়া তোমরা অন্য মেয়েদের
বিবাহ করতে।
আয়িশা
(রা বলেন, এরপর লোকেরা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আল্লাহ তাআলা এই
আয়াত নাযিল করেনঃوَيَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ এবং লোকে আপনার কাছে মহিলাদের বিষয়ে জানতে
চায়। বলুন, আল্লাহ তোমাদের তাদের
সম্বন্ধে ব্যবস্থা জানোাচ্ছেন (৪ঃ ১২৭)। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা এই আয়াতে বর্ণনা করেন যে, ইয়াতীম মেয়েরা সুন্দর ও সম্পদশালী হলে
অভিভাবকেরা তাদের বিয়ে করতে আগ্রহী হয়, কিন্তু
পূর্ণ মাহর প্রদান করে না। আবার ইয়াতীম মেয়েরা গরীব হলে এবং সুশ্রী না হলে তাদের
বিয়ে করতে চায় না বরং অন্য মেয়ে তালাশ করে। আয়িশা (রাঃ) বলেন যে, আকর্ষনীয় না হলে তারা যেমন ইয়াতীম মেযেদের
পরিত্যাগ করে, তেমনি আকর্ষনীয় মেয়েদেরও
তারা বিয়ে করতে পারবে না, যদি তাদের ইনসাফ মাফিক
পূর্ণ মাহর প্রদান এবং তাদের হক যথাযথভাবে আদায় না করে।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৭. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
তোমরা ইয়াতীমদের যাচাই করবে,
যে
পর্যন্ত না তারা বিবাহযোগ্য হয় এবং তাদের মধ্যে ভাল-মন্দ বিচারের জ্ঞান দেখলে
তাদের সম্পদ তাদের ফিরিয়ে দেবে। তারা বড় হয়ে যাবে বলে অন্যায়ভাবে ঐ সম্পদ হতে
তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যে অভাবমুক্ত সে যেন তাদের সম্পদ হতে নিবৃত্ত থাকে এবং যে
অভাবগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। ... এক নির্ধারিত অংশ পর্যন্ত। (৪ঃ ৬-৭)
حسيبا
অর্থ যথেষ্ট আর অসী ইয়াতীমের মাল কিভাবে ব্যবহার করবে এবং তার শ্রমের অনুপাতে কী
পরিমাণ সে ভোগ করতে পারবে
২৫৭৬।
হারূন (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে উমর (রাঃ) নিজের কিছু সম্পত্তি সাদকা
করেছিলেন, তা ছিল, ছামাগ নামে একটি খেজুর বাগান। উমর (রাঃ) বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি একটি সম্পদ পেয়েছি, যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি সেটি সাদকা
করতে চাই।’ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মূল সম্পদটি এ শর্তে সাদকা কর, যে, তা
বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং কেউ
ওয়ারিস হবে না, বরং তার ফল (আল্লাহর পথে)
দান করা হবে। তারপর উমর (রাঃ) সেটি এভাবেই সাদকা করলেন। তার এ সাদকা ব্যয় হবে
আল্লাহর রাস্তায়, দাস মুক্তির ব্যাপারে, মিসকীন, মেহমান, মূসাফির ও আত্মীয়দের জন্য। এর যে মুতাওল্লালী
হবে তার জন্য তা থেকে সঙ্গত পরিমাণ আহার করলে কিংবা বন্ধু বান্ধবকে খাওয়ালে কোন
দোষ নেই। তবে তা সঞ্চয় করতে পারেব না।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৭. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ
তোমরা ইয়াতীমদের যাচাই করবে,
যে
পর্যন্ত না তারা বিবাহযোগ্য হয় এবং তাদের মধ্যে ভাল-মন্দ বিচারের জ্ঞান দেখলে
তাদের সম্পদ তাদের ফিরিয়ে দেবে। তারা বড় হয়ে যাবে বলে অন্যায়ভাবে ঐ সম্পদ হতে
তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যে অভাবমুক্ত সে যেন তাদের সম্পদ হতে নিবৃত্ত থাকে এবং যে
অভাবগ্রস্ত সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। ... এক নির্ধারিত অংশ পর্যন্ত। (৪ঃ ৬-৭)
حسيبا
অর্থ যথেষ্ট আর অসী ইয়াতীমের মাল কিভাবে ব্যবহার করবে এবং তার শ্রমের অনুপাতে কী পরিমাণ
সে ভোগ করতে পারবে
২৫৭৭।
উবাইদ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (আল্লাহ তাআলার বাণীঃ) যে বিত্তবান সে যেন বিরত থাকে আর যে
বিত্তহীন সে যেন সঙ্গত পরিমাণ ভোগ করে (৪: ৬)। আয়াতটি ইয়াতীমের অভিভাবক সম্বন্ধে
নায়িল হয়েছে। অভিভাবক যদি অভাবগ্রস্ত হয়, তাহলে
বিধি মোতাবেক ইয়াতীমের সম্পত্তি থেকে প্রয়োজন পরিমাণ খেতে পারবে।
পরিচ্ছেদঃ ১৭২৮. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যারা
ইয়াতীমের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, তারা
তাদের উদরে অগ্নি ভক্ষন করে,
তারা
জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে। (৪ঃ ১০)
২৫৭৮।
আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্নিত,
তিনি
বলেন, সাতটি ধ্বংসকারী বিষয় থেকে
তোমরা বিরত থাকবে। সাহাবীগন বললেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! সেগুলো কি? তিনি বললেন, (১) আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা। (২) যাদু (৩)
আল্লাহ তাআলা যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন, শরীয়ত
সম্মত ব্যতীরেকে তাকে হত্যা করা (৪) সুদ খাওয়া (৫) ইয়াতীমের মাল গ্রাস করা (৬)
রণক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং (৭) সরল প্রকৃতির সতী মুমিন নারীদের অপবাদ দেওয়া।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩০. আবাসে কিংবা প্রবাসে
ইয়াতীমদের থেকে খেদমত গ্রহন করা,
যখন
তা তাদের জন্য কল্যাণকর হয় এবং মা ও মায়ের স্বামী কর্তৃক ইয়াতীমের প্রতি
স্নেহদৃষ্টি রাখা
بَاب قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى وَيَسْأَلُونَكَ عَنْ الْيَتَامَى قُلْ إِصْلَاحٌ لَهُمْ خَيْرٌ وَإِنْ تُخَالِطُوهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنْ الْمُصْلِحِ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَأَعْنَتَكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
لَأَعْنَتَكُمْ لَأَحْرَجَكُمْ وَضَيَّقَ وَعَنَتِ خَضَعَتْ وَقَالَ لَنَا سُلَيْمَانُ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ قَالَ مَا رَدَّ ابْنُ عُمَرَ عَلَى أَحَدٍ وَصِيَّةً وَكَانَ ابْنُ سِيرِينَ أَحَبَّ الْأَشْيَاءِ إِلَيْهِ فِي مَالِ الْيَتِيمِ أَنْ يَجْتَمِعَ إِلَيْهِ نُصَحَاؤُهُ وَأَوْلِيَاؤُهُ فَيَنْظُرُوا الَّذِي هُوَ خَيْرٌ لَهُ وَكَانَ طَاوُسٌ إِذَا سُئِلَ عَنْ شَيْءٍ مِنْ أَمْرِ الْيَتَامَى قَرَأَ وَاللَّهُ يَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنْ الْمُصْلِحِ وَقَالَ عَطَاءٌ فِي يَتَامَى الصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ يُنْفِقُ الْوَلِيُّ عَلَى كُلِّ إِنْسَانٍ بِقَدْرِهِ مِنْ حِصَّتِهِ
১৭২৯.
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ লোকেরা আপনাকে ইয়াতীমদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।
বলুন তাদের সুব্যাবস্থা করা উত্তম। তোমরা যদি তাদের সাথে একত্রে থাক, তবে তারা তো তোমাদের ভাই। আল্লাহ্ জানেন কে
হিতকারী আর কে অনিষ্টকারী। আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে এ বিষয়ে তোমাদের কষ্টে ফেলতে
পারতেন। (২ঃ ২২০)
لأَعْنَتَكُمْ এর অর্থ তোমাদের ক্ষতিগ্রস্ত এবং কষ্টে ফেলতে পারতেন। عَنَتْ শব্দের অর্থ হল নত হল। (ইমাম বুখারী বলেন) সুলায়মান (রহঃ) ... নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত, ইবনু উমর (রাঃ) কখনো কারো অসীয়াত প্রত্যাখ্যান করেন নি। ইবনু সীরিন (রহঃ)-এর কাছে ইয়অতীমের মাল সম্পর্কে সবচাইতে প্রিয় বিষয় ছিল, অভিভাবক ও শুভাকাঙ্খীদের একত্রিত হওয়া, যাতে তার কল্যাণের কথা বিবেচনা করে। তাউস (রহঃ)-এর কাছে ইয়াতীমের ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পাঠ করতেন: (وَاللَّهُ يَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنَ الْمُصْلِحِ) আল্লাহ জানেন কে হিতকারী আর কে অনিষ্টকারী (বাকারাঃ ২২০)। আতা (রহঃ) বলেন, ইয়াতীম ছোট হোক কিংবা বড়, অভিভাবক তার অংশ থেকে প্রত্যেকের জন্য পরিমাণ মত ব্যয় করতে পারবে।
২৫৭৯।
ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় এলেন, তখন
তাঁর কোন খাদিম ছিল না। আবূ তালহা (রাঃ) আমার হাত ধরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আমাকে নিয়ে গেলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আনাস একজন বুদ্ধিমান ছেলে।
সে আপনার খেদমত করবে।’ এরপর প্রবাসে ও আবাসে আমি তাঁর খেদমত করেছি। আমার কৃত কোন
কাজ সম্পর্কে তিনি কখনো বলেন নি,
তুমি
এরূপ কেন করলে? কোন কাজ না করলে তিনি বলেন
নি, তুমি এটি এরূপ কেন করলে
না।?
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩১. যখন কোন জমি ওয়াকফ করে এবং
সীমা নির্ধারণ না করে তা বৈধ। অনুরুপ সাদ্কাও
২৫৮০।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মদিনায় আনসাদের মধ্যে তালহার খেজুর বাগান-সম্পদ
সবচাইতে বেশী ছিল। আর সকল সম্পদের মধ্যে তার কাছে সবচাইতে প্রিয় সম্পদ ছিল মসজিদের
(নববীর) সামনে অবস্থিত বায়রুহা বাগানটি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সে বাগানে যেতেন এবং এর সুস্বাদু পানি পান করতেন। আনাস (রাঃ) বলেন, যখন নাযিল হলঃلَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ তোমরা যা ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা
পর্যন্ত তোমরা নেকী হাসিল করতে পারবে না। আবূ তালহা (রাঃ) দাঁড়িয়ে বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ বলেছেনঃ তোমরা যা
ভালবাস, তা থেকে ব্যয় না করা
পর্যন্ত তোমরা কখনো নেকী হাসিল করতে পারবে না। আমার কাছে সবচাইতে প্রিয় সম্পদ হল
বায়রুহা। সেটি আল্লাহর নামে সাদকা। আমি আল্লাহর কাছে এর নামে সওয়াব ও কিয়ামতের
সঞ্চয়ের আশা করি। আল্লাহর মর্জি অনুযায়ী আপনি তা ব্যয় করুন।’
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘বেশ, এটি লাভজনক সম্পদ অথবা
(বললেন), অস্থায়ী সম্পদ।’ ইবনু
মাসলামা সন্দেহ পোষণ করেন। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন)
তুমি যা বলেছ, আমি তা শুনেছি। আমার মতে
তুমি তা তোমর আত্মীয়দের মধ্যে বন্টন করে দাও। আবূ তালহা (রাঃ) বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তা-ই করব।’ তারপর তা
তিনি তাঁর আত্মীয় ও চাচাতো ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। ইসমাঈল, আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ, ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রাঃ) মালিক (রহ) এর
(সন্দেহ ছাড়াই)رَايِحٌ (অস্থায়ী) বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩১. যখন কোন জমি ওয়াকফ করে এবং
সীমা নির্ধারণ না করে তা বৈধ। অনুরুপ সাদ্কাও
২৫৮১।
মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলেন এবং তার মা মারা গেছেন। তার পক্ষ থেকে যদি আমি
সাদকা করি তাহলে তা কি তার উপকারে আসবে? তিনি
বললেন, হ্যাঁ। সাহাবী বললেন, আমার একটি বাগান আছে, আপনাকে সাক্ষী রেখে আমি তার পক্ষ থেকে সাদকা
করলাম।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩২. একদল লোক যদি তাদের কোন
শরীকী জমি ওয়াক্ফ করে তা হলে তা জায়িয
২৫৮২।
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মসজিদ তৈরীর নির্দেশ দিলেন। তারপর বললেন, হে
বানূ নাজ্জার, তোমরা এই বাগানটির মূল্য
নির্ধারণ করে আমার কাছে বিক্রি কর। তারা বলল, এরূপ
নয়। আল্লাহর কসম! আমরা একমাত্র আল্লাহর কাছেই এর মূল্যের আশা রাখি।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৩. ওয়াক্ফ কিভাবে লেখা হবে?
২৫৮৩।
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, উমর (রাঃ) খায়বারে কিছু
জমি লাভ করেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, আমি এমন ভাল একটি জমি পেয়েছি, যা ইতিপূর্বে কখনো পাইনি। আপনি এ সম্পর্কে
আমাকে কি নির্দেশ দেন? তিনি বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে আসল জমিটি ওয়াকফ করে তার
উৎপন্ন সাদকা করতে পার। উমর (রাঃ) এটি গরীব, আত্মীয়-স্বজন, গোলাম আযাদ, আল্লাহর
পথে, মেহমান ও মূসাফিরদের জন্য
এ শর্তে সাদকা করলেন যে, আসল জমি বিক্রি করা যাবে
না, কাউকে দান করা যাবে না, কেউ এর উত্তরাধিকারী হবে না। তবে যে এর
মুতাওয়াল্লী হবে তার জন্য তা থেকে সঙ্গত পরিমাণ খেতে বা বন্ধু বান্ধবকে খাওয়ানোতে
কোন দোষ নেই। তবে এ থেকে সঞ্চয় করবে না।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৪. অভাবগ্রস্ত, ধনী ও মেহমানদের জন্য ওয়াক্ফ করা
২৫৮৪।
আবূ আসিম (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর
(রাঃ) খায়বারে কিছু সম্পদ লাভ করেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
কাছে এসে তাঁকে অবহিত করেন। তিনি বললেন, তুমি
ইচ্ছা করলে সেটি সাদকা করতে পার। তারপর সেটি তিনি অভাবগ্রস্ত, মিসকীন, আত্মীয়-স্বজন
ও মেহমানদের মধ্যে সাদকা করে দেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৫. মসজিদের জন্য জমি ওয়াক্ফ
করা
২৫৮৫।
ইসহাক (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় এলেন তখন মসজিদ নির্মানের নির্দেশ দিলেন এবং তিনি
বললেন, ‘হে বানূ নাজ্জার! মূল্য
নির্ধারিত করে তোমাদের এই বাগানটি আমার কাছে বিক্রি করে দাও।’ তারা বলল, ‘এরূপ নয়, আল্লাহর
কসম! একমাত্র আল্লাহর কাছেই আমরা এর মূল্যের আশা রাখি।’
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৬. জন্তু জানোয়ার, ঘোড়া, আসবাবপত্র
ও সোনারূপা ওয়াকফ করা।
قَالَ الزُّهْرِيُّ فِيمَنْ جَعَلَ أَلْفَ دِينَارٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، وَدَفَعَهَا إِلَى غُلاَمٍ لَهُ تَاجِرٍ يَتْجُرُ بِهَا، وَجَعَلَ رِبْحَهُ صَدَقَةً لِلْمَسَاكِينِ وَالأَقْرَبِينَ، هَلْ لِلرَّجُلِ أَنْ يَأْكُلَ مِنْ رِبْحِ ذَلِكَ الأَلْفِ شَيْئًا، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ جَعَلَ رِبْحَهَا صَدَقَةً فِي الْمَسَاكِينِ قَالَ لَيْسَ لَهُ أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا
যুহরী (রহঃ) এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, যে আল্লাহর পথে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা দান করল এবং তার এক ব্যবসায়ী গোলামকে তা দিল, সে যেন তা দিয়ে ব্যবসা করে আর লভ্যাংশটি মিসকিন ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সদকা করে দিল। লোকটি সেই এক হাজার মুদ্রার লভ্যাংশ থেকে খেতে পারবে কি? যদিও সে এর লভ্যাংশ মিসকিনদের জন্য সদকা করে নি। যুহরী (রহঃ) বলেন, তা থেকে সে নিজে খেতে পারবে না।
২৫৮৬।
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, উমর
(রাঃ) এক ব্যাক্তিকে তাঁর একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে দেন, যেটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে আরোহণ করার জন্য দিয়েছিলেন, তিনি
এক ব্যাক্তিকে আরোহণ করার জন্য দিলেন। উমর (রাঃ) কে জানোান হল যে, ঘোড়াটি সে ব্যাক্তি বিক্রির জন্য রেখে
দিয়েছে। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ক্রয় করার ব্যাপারে
জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন,
‘তুমি
তা ক্রয় করবে না এবং যা সাদকা করে দিয়েছে তা আর ফিরিয়ে নিবে না।’
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৭. ওয়াক্ফের তত্ত্বাবধায়কের
খরচ
২৫৮৭।
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, ‘আমার উত্তরাধিকারীরা কোন
স্বর্ণ মুদ্রা এবং রোপ্য মুদ্রা ভাগাভাগি করবে না, বরং
আমি যা কিছু রেখে গেলাম তা থেকে আমার সহধর্মিনীদের খরচ এবং কর্মচারীদের পারিশ্রমিক
দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তা সাদকা।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৭. ওয়াক্ফের তত্ত্বাবধায়কের
খরচ
২৫৮৮।
কুতাইবা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর (রাঃ) তাঁর ওয়াকফে এই শর্তারোপ করেন যে, মুতাওয়াল্লী তা থেকে নিজে খেতে পারবে এবং
বন্ধু বান্ধবকেও খাওয়াতে পারবে,
তবে
সম্পদ সঞ্চয় করতে পারবে না।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৩৯. ওয়াক্ফকারী যদি বলে, আমি একমাত্র আল্লাহর কাছে এর মূল্যের আশা
করি, তবে তা জায়িয
بَاب إِذَا وَقَفَ أَرْضًا أَوْ بِئْرًا وَاشْتَرَطَ لِنَفْسِهِ مِثْلَ دِلَاءِ الْمُسْلِمِينَ
وَأَوْقَفَ أَنَسٌ دَارًا فَكَانَ إِذَا قَدِمَهَا نَزَلَهَا وَتَصَدَّقَ الزُّبَيْرُ بِدُورِهِ وَقَالَ لِلْمَرْدُودَةِ مِنْ بَنَاتِهِ أَنْ تَسْكُنَ غَيْرَ مُضِرَّةٍ وَلَا مُضَرٍّ بِهَا فَإِنْ اسْتَغْنَتْ بِزَوْجٍ فَلَيْسَ لَهَا حَقٌّ وَجَعَلَ ابْنُ عُمَرَ نَصِيبَهُ مِنْ دَارِ عُمَرَ سُكْنَى لِذَوِي الْحَاجَةِ مِنْ آلِ عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ عَبْدَانُ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ حِينَ حُوصِرَ أَشْرَفَ عَلَيْهِمْ وَقَالَ أَنْشُدُكُمْ اللَّهَ وَلَا أَنْشُدُ إِلَّا أَصْحَابَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلَسْتُمْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ حَفَرَ رُومَةَ فَلَهُ الْجَنَّةُ فَحَفَرْتُهَا أَلَسْتُمْ تَعْلَمُونَ أَنَّهُ قَالَ مَنْ جَهَّزَ جَيْشَ الْعُسْرَةِ فَلَهُ الْجَنَّةُ فَجَهَّزْتُهُمْ قَالَ فَصَدَّقُوهُ بِمَا قَالَ وَقَالَ عُمَرُ فِي وَقْفِهِ لَا جُنَاحَ عَلَى مَنْ وَلِيَهُ أَنْ يَأْكُلَ وَقَدْ يَلِيهِ الْوَاقِفُ وَغَيْرُهُ فَهُوَ وَاسِعٌ لِكُلٍّ
১৭৩৮.
পরিচ্ছেদঃ যখন কেউ জমি বা কূপ ওয়াকফ করে এবং অন্যান্য মুসলিমদের মত সে নিজেও পানি
নেয়ার শার্তারোপ করে।
আনাস (রাঃ) একটি ঘর ওয়াকফ করেন। যখন তিনি সেখানে আসতেন, তখন তাতে অবস্থান করতেন। যুবায়র (রাঃ) তার ঘর সাদকা করে তার কন্যাদের মধ্যে যারা তালাকপ্রাপ্তা তাদের সম্পর্কে বলেছিলেন যে, কোন প্রকার ক্ষতিসাধন না করে তারা এখানে বসবাস করতে পারবে; এবং তাদেরও যেন কষ্ট দেওয়া না হয়। তবে তারা যদি স্বামী গ্রহন করে অভাবমুক্ত হয়ে যায় তাহলে সেখানে তাদের হক থাকবে না। ইবনু উমর (রাঃ) তার পিতা উমর (রাঃ)-এর ওয়ারিশ হিসাবে যে ঘরটি পেয়েছিলেন সেটি তার অভাবগ্রস্থ বংশধরদের বসবাসের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছিলেন। আবদান (রহঃ) আব্দুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উসমান (রাঃ) অবরুদ্ধ হলে তিনি উপর থেকে সাহাবীদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে বললেন, আমি অআপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আর আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীদেরকেই আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আপনারা কি জানেন না যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, যে ব্যাক্তি রূমার কূপটি খনন করে দিবে সে জান্নাতি এবং আমি তা খনন করে দিয়েছি। আপনারা কি জানেন না যে, তিনি বলেছিলেন, যে ব্যাক্তি তাবুকের যুদ্ধে সেনাদের সামগ্রী ব্যবস্থা করে দিবে, সে জান্নাতি এবং আমি তা ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, সাহাবীগণ তাঁর কথা সত্য বলে স্বীকার করলেন। উমর (রাঃ) তাঁর কথা সম্পর্কে বলেছিলেন, মুতাওয়াল্লাীর জন্য তা থেকে আহার করতে কোন দোষ নেই। ওয়াকফকারী কখনো নিজে মুতাওয়াল্লী হয় আবার কখনো অপর ব্যাক্তি হয়। এ ব্যাপারে সকলের জন্য অবকাশ রয়েছে।
২৫৮৯।
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে
বানূ নাজ্জার! তোমাদের বাগানটি মূল্য নির্ধারণ করে আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তারা
বলল, আমরা এর মূল্য একমাত্র
আল্লাহর কাছে আশা রাখি।
পরিচ্ছেদঃ ১৭৪১. অসীয়াতকারী কৃর্তক মৃতের
ওয়ারিসদের অনুপস্থিতিতে মৃতের ঋণ পরিশোধ করা
بَاب قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمْ الْمَوْتُ حِينَ الْوَصِيَّةِ اثْنَانِ ذَوَا عَدْلٍ مِنْكُمْ أَوْ آخَرَانِ مِنْ غَيْرِكُمْ إِنْ أَنْتُمْ ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَأَصَابَتْكُمْ مُصِيبَةُ الْمَوْتِ تَحْبِسُونَهُمَا مِنْ بَعْدِ الصَّلَاةِ فَيُقْسِمَانِ بِاللَّهِ إِنْ ارْتَبْتُمْ لَا نَشْتَرِي بِهِ ثَمَنًا وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى وَلَا نَكْتُمُ شَهَادَةَ اللَّهِ إِنَّا إِذًا لَمِنْ الْآثِمِينَ فَإِنْ عُثِرَ عَلَى أَنَّهُمَا اسْتَحَقَّا إِثْمًا فَآخَرَانِ يَقُومَانِ مَقَامَهُمَا مِنْ الَّذِينَ اسْتُحِقَّ عَلَيْهِمْ الْأَوْلَيَانِ فَيُقْسِمَانِ بِاللَّهِ لَشَهَادَتُنَا أَحَقُّ مِنْ شَهَادَتِهِمَا وَمَا اعْتَدَيْنَا إِنَّا إِذًا لَمِنْ الظَّالِمِينَ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يَأْتُوا بِالشَّهَادَةِ عَلَى وَجْهِهَا أَوْ يَخَافُوا أَنْ تُرَدَّ أَيْمَانٌ بَعْدَ أَيْمَانِهِمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاسْمَعُوا وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ الْأَوْلَيَانِ وَاحِدُهُمَا أَوْلَى وَمِنْهُ أَوْلَى بِهِ عُثِرَ أُظْهِرَ أَعْثَرْنَا أَظْهَرْنَا
১৭৪০.
পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে মুমিনগণ! তেমাদের কারো যখন মৃত্যুর সময়
উপস্থিত হয় তখন অসীয়াত করার সময় তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে অথবা অন্যদের মধ্য থেকে
দু'জন সাক্ষী নিযুক্ত করবে।
আল্লাহ তা'আলা ফাসিকদের হিদায়াত করেন
না। আলী ইবনু আবদুল্লাহ্ (রহঃ) ... ইবনু অব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহম
গোত্রের এক ব্যক্তি তামীম দারী ও আদী ইবনু বাদ্দা (রহঃ) এর সঙ্গে সফরে বের হন এবং
সাহম গোত্রের লোকটি এমন এক জায়গায় মারা যান, যেখানে
কোন মুসলিম ছিল না। তারা দু’জন তার পরিত্যক্ত জিনিষ পত্র নিয়ে ফিরে আসলে মৃতের
আত্মীয়- স্বজন তার মধ্যে স্বর্ণখচিত একটি রুপার পেয়ালা পেলেন না। এ সম্পর্কে তাদের
দু’জনকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কসম করালেন। তারপর তারা
পেয়ালাটি মক্কায় পেল। (যাদের কাছে পাওয়া গেল) তারা বলল, আমরা এটি তামীম আদী (রহঃ) এর নিকট থেকে ক্রয়
করেছি। এরপর মৃতের আত্মীয়দের মধ্য থেকে দু’ব্যক্তি দাঁড়িয়ে কসম করে বলে, এ দু’জনের সাক্ষ্য তেকে আমাদের সাক্ষ্যাদিক
গ্রহণীয়। নিশ্চয়ই এ পেয়ালাটি তাদের আত্মীয়ের। বর্ণনাকারী বলেন, তাদের সম্বন্ধে এই আয়াতটি বর্ণিত হয়ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا شَهَادَةُ بَيْنِكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ
তারপর
বললেন, তোমার পাওনাদারদের ডাক।
তিনি মেপে মেপে তাদের পাওনা আদায় করতে লাগলেন এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ আমার পিতার
সমস্ত ঋণ আদায় করে দিলেন। আর আল্লাহর কসম, আমি
এতেই সন্তুষ্ট যে, আমার পিতার ঋণ আল্লাহ
পরিশোধ করে দেন এবং আমি আমার বোনদের কাছে একটি খেজুরও নিয়ে না ফিরি। কিন্তু আল্লাহর
কসম! সমস্ত স্তুপই যেমন ছিল তেমন রয়ে গেল। আমি সেই স্তুপটির দিকে বিশেষ ভাবে
তাকিয়ে ছিলাম, যার উপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে ছিলেন। মনে হল যে, তা থেকে একটি খেজুরও কমেনি।
আবূ
আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন,أُغْرُوا بِي এর অর্থ হলهِيجُوا بِي অর্থাৎ আমার কাছে জোর তাগাদা করতে লাগল। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘আমি
তাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্ধেষ জাগরুক রেখেছি। ’’ (৫: ১৪)