হেবা করা

পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই

২৩৯৬। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে মুসলিম মহিলাগণ! কোন মহিলা প্রতিবেশিনী যেন অপর মহিলা প্রতিবেশিনী (প্রদত্ত হাদিয়া) তুচ্ছ মনে না করে, এমন কি স্বল্প গোশত বিশিষ্ট বকরীর হাঁড় হলেও।

পরিচ্ছেদঃ পরিচ্ছেদ নাই

২৩৯৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ –উওয়াসী (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি একবার উরওয়া (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন, বোনপো। আমরা (মাসের) নতুন চাঁদ দেখতাম, আবার নতুন চাঁদ দেখতাম। এভাবে দু’মাসে তিনটি নতুন চাঁদ দেখতাম। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন ঘরেই আগুন জ্বালানো হতো না। (উরওয়া (রহঃ) বলেন) আমি জিজ্ঞাসা করলাম, খালা। আপনারা তাহলে কিভাবে বেঁচে থাকতেন? তিনি বললেন, দু’টি কালো জিনিস অর্থাৎ খেজুর আর পানিই শুধু আমাদের বাঁচিয়ে রাখতো। অবশ্য কয়েক ঘর আনসার পরিবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিবেশী ছিল। তাঁদের কিছু দুধালো উটনী ও বকরী ছিল। তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য দুধ হাদিয়া পাঠাত। তিনি আমাদেরকে তা পান করতে দিতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬০৭. সামান্য পরিমাণ হিবা করা।

২৩৯৮। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আমাকে হালাল পশুর পায়া বা হাতা খেতে আহবান করা হয়, তবু তা আমি গ্রহণ করব আর যদি আমাকে পায়া বা হাতা হাদিয়া দেওয়া হয়, তবে আমি তা গ্রহণ করব।

পরিচ্ছেদঃ ১৬০৮. কেউ যদি তার সাথীদের কাছে কোন কিছু চায়। আবূ সাঈদ (রা.) বলেন, নবী () বললেন, তোমাদের সাথে আমার জন্য এক অংশ রেখো।

২৩৯৯। ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) ... সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক মুহাজির মহিলার কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোক পাঠালেন। তাঁর এক গোলাম ছিল কাঠ মিস্ত্রী। তিনি তাকে বললেন, তুমি তোমার গোলামকে বল, সে যেন আমাদের জন্য একটা কাঠের মিম্বর বানিয়ে দেয়। তিনি তার গোলামকে নির্দেশ দিলেনসে গিয়ে এক প্রকার গাছ কেটে এনে মিম্বার তৈরী করল। কাজ শেষ হলে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, গোলাম তার কাজ শেষ করেছে। তিনি বললেন, সেটা আমার কাছে পাঠিয়ে দাও। তখন লোকেরা সেটা নিয়ে এলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটা বহন করে সেখানে স্থাপন করলেন, যেখানে তোমরা (এখন) দেখতে পাচ্ছ।

পরিচ্ছেদঃ ১৬০৮. কেউ যদি তার সাথীদের কাছে কোন কিছু চায়। আবূ সাঈদ (রা.) বলেন, নবী () বললেন, তোমাদের সাথে আমার জন্য এক অংশ রেখো।

২৪০০। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ কাতাদা সালামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন মক্কার পথে কোন এক মনযিলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কয়েকজন সাহাবীর সঙ্গে বসা ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অগ্রবর্তী কোন যমীনে অবস্থান করেছিলেন। সবাই ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। আমি শুধু ইহরাম ছাড়া ছিলাম। তাঁরা একটি বন্য গাধা দেখতে পেলেন। আমি তখন আমার জুতা মেরামত করছিলাম। তাঁরা আমাকে সে সম্পর্কে অবহিত করেন নি। অথচ সেটি আমার নযরে পড়ুক তাঁরা তা চাচ্ছিলেন। আমি হঠাৎ সেদিকে তাকালাম, সেটা আমার নযরে পড়লো। তখন আমি উঠি ঘোড়ার দিকে এগিয়ে গেলাম এবং জ্বীন লাগিয়ে তাতে সাওয়ার হলাম। কিন্তু চাবুক ও বর্শা নিতে ভুলে গেলাম। তখন তাঁদের বললাম, চাবুক এবং বর্শাটা আমাকে তুলে দাও। কিন্তু তাঁরা বললেন, আল্লাহর কসম! গাধা শিকার করার ব্যাপারে আমরা তোমাকে কোন সাহায্যই করবো না।

আমি তখন রাগ করে নেমে এলাম এবং সে দু’টি তুলে নিয়ে সাওয়ার হলাম। আর গাধাটা আক্রমণ করে যখম করলাম। এতে সেটি মারা গলে। এরপর সেটাকে নিয়ে আসলাম। (পাকানোর পর) তারা সেই গাধার গোশত খেতে লাগলেন। পরে তাদের মনে ইহরাম অবস্থায় তা খাওয়া নিয়ে সন্দেহ দেখা দিল। কিছু সময় পর আমরা যাত্রা শুরু করলাম এক ফাকে আমি আমার কাছে গাধার একটি হাতা লুকিয়ে রেখেছিলাম। (পথে) আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাক্ষাত পেযে সেই গোশত সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তোমাদের সাথে সেটার গোশতের কিছু আছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ আছে। এরপর হাতাখানা তাঁকে দিলে তিনি ইহরাম অবস্থায় তার সবটুকু খেলেন। এ হাদীসটি যায়দ ইবনু আসলাম আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) এর মাধ্যমে আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬০৯. পানি চাওয়া। সাহল (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী () আমাকে বললেন, আমাকে পান করাও।

২৪০১। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এই ঘরে আগমন করেন এবং কিছু পান করতে চাইলেন। আমরা আমাদের একটা বকরীর দুধ দোহন করে তাতে আমাদের এই কুয়ার পানি মিশালাম। তারপর তা সম্মুখে পেশ করলাম। এ সময় আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন তাঁর বামে, উমর (রাঃ) ছিলেন তাঁর সম্মুখে, আর এক বেদুঈন ছিলেন তাঁর ডানে। তিনি যখন পান শেষ করলেন, তখন উমর (রাঃ) বললেন, ইনি আবূ বকর (তাঁকে দিন); কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেদুঈনকে তার অবশিষ্ট পানি দান করলেন। এরপর বললেন, ডান দিকের লোকদেরই (অগ্রাধিকার) ডান দিকের লোকদের (অগ্রাধিকার) শোন! ডান দিক থেকেই শুরু করবে। আনাস (রাঃ) বলেন, এই সুন্নাত। এই সুন্নাত, তিনবার বললেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১০. শিকারের গোশত হাদিয়াস্বরূপ গ্রহন কর। আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে নবী () শিকারকৃত পশুর একটি বাহু গ্রহন করে ছিলেন।

২৪০২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (মক্কার অদূরে) মাররায্ যাহারান নামক স্থানে আমরা একটি খরগোশ তাড়া করলাম। লোকেরা সেটার পিছনে ধাওয়া করে ক্লান্ত হয়ে পড়ল। অবশেষে আমি সেটাকে নাগালে পেয়ে ধরে আবূ তালহা (রাঃ) এর কাছে নিয়ে গেলাম। তিনি সেটাকে যবেহ্ করে তার পাছা অথবা রাবী বলেন, দু’ উরু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে পাঠালেন। শু’বা (রহঃ) বলেন, দু’টি উরুই পাঠিয়ে ছিলেন, এ শব্দের বর্ণনায় কোন সন্দেহ নেই। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গ্রহন করেছিলেন। রাবী বলেন, আমি শু’বা (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কি তা খেয়েছিলেন? তিনি বললেন। হ্যাঁ, খেয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গ্রহণ করেছিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১০. শিকারের গোশত হাদিয়াস্বরূপ গ্রহন কর। আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে নবী () শিকারকৃত পশুর একটি বাহু গ্রহন করে ছিলেন।

২৪০৩। ইসমাঈল (রহঃ) ... সাআব ইবনু জাসসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি (সাআব ইবনু জাসসামা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একটি বন্য গাধা হাদিয়া পাঠালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আবওয়া কিংবা ওযাদ্দান নামক স্থানে ছিলেন। তিনি হাদিয়া তাকে ফেরত পাঠালেন। পরে তার মুখমন্ডলের বিষন্নতা লক্ষ্য করে বললেন, শুন! আমরা ইহরাম অবস্থায় আছি, তা না হলে তোমার হাদিয়া ফেরত দিতাম না।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১১. হাদিয়া গ্রহন করা

২৪০৪। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, লোকেরা তাদের হাদিয়া পাঠাবার জন্য ‘আয়িশা (রাঃ) এর নির্ধারিত দিনের অপেক্ষা করত। এতে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করত।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১১. হাদিয়া গ্রহন করা

২৪০৫। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনু আব্বাসের খালা উম্মূ হুফায়দ (রাঃ) একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে পনীর, ঘি ও দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) হাদিয়া পাঠালেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু পনীর ও ঘি খেলেন আর দব্ব রুচি বিরুদ্ধ হওয়ার কারণে রেখে দিলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তরখানে (দব্ব) খাওয়া হয়েছে। যদি তা হারাম হতো তা হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তরখানে তা খাওয়া হত না।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১১. হাদিয়া গ্রহন করা

২৪০৬। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে কোন খাবার আনা হলে তিনি জানতে চাইতেন, এটা হাদিয়া, না সাদকা? যদি বলা হতো, সাদকা তা হলে সাহাবীদের তিনি বলতেন, তোমরা খাও। কিন্তু তিনি খেতেন না। আর যদি বলা হল হাদিয়া। তাহলে তিনিও হাত বাড়াতেন এবং তাদের সাথে খাওয়ায় শরীক হতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১১. হাদিয়া গ্রহন করা

২৪০৭। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে কিছু গোশত আনা হল এবং বলা হল যে, এটা আসলে বারীরার কাছে সাদকারূপে এসেছিল। তখন তিনি বললেন, এটা তার জন্য সাদকা আর আমাদের জন্য হাদিয়া।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১১. হাদিয়া গ্রহন করা

২৪০৮। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বারীরা (রাঃ)-কে (আযাদ করার উদ্দেশ্যে) খরিদ করার ইচ্ছা করলেও তার মালিক পক্ষ ওয়ালার শর্তারোপ করল। তখন বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে আলোচিত হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাকে খরিদ করে আযাদ করে দাও। কেননা যে আযাদ করবে, সেই ওয়ালা লাভ করবে। ‘আয়িশা (রাঃ) এর জন্য কিছু গোশত হাদিয়া পাঠানো হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হল যে, এ গোশত বারীরকে সাদকা করা হয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তার জন্য সাদকা আর আমাদের জন্য হাদিয়া। তাকে (বারীরাকে তার স্বামীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার) ইখতিয়ার দেওয়া হল। (রাবী) আবদুর রাহমান (রহঃ) বলেন, তার স্বামী তখন আযাদ কিংবা গোলাম ছিল? শু’বা (রহঃ) বলেন, পরে আমি আবদুর রহমান (রহঃ) কে তার স্বামী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আমি জানিনা, সে আযাদ ছিল না গোলাম ছিল।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১১. হাদিয়া গ্রহন করা

২৪০৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) ... উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ) এর ঘরে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কাছে খাবার কিছু আছে কি? তিনি বললেন, না; তবে সে বকরীর কিছু গোশত উম্মু আতিয়্যা পাঠিয়েছেন, যা আপনি তাকে সাদকা স্বরূপ পাঠিয়েছেন। তিনি বললেন, সাদকা তো যথাস্থানে পৌছে গিয়েছে (অর্থাৎ এটা এখন তার মালিকানায়, সুতরাং আমাদের জন্য সেটা সাদকা নয়, হাদিয়া)।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১২. সঙ্গীদের হাদিয়া দিতে গিয়ে তার কোন স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত দিনে অপেক্ষা করা

২৪১০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকেরা তাদের হাদিয়া পাঠাবার বিষয় আমার জন্য নির্ধারিত দিনের অপেক্ষা করত। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আমার সতিনগণ (এ বিষয় নিয়ে আমার ঘরে) একত্রিত হলেন। ফলে উম্মু সালামা (রাঃ) বিষয়টি তাঁর কাছে উত্থাপন করলেন, কিন্তু তিনি জওয়াব দিলেন না।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১২. সঙ্গীদের হাদিয়া দিতে গিয়ে তার কোন স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত দিনে অপেক্ষা করা

২৪১১। ইসমাইল (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীগণ দু’দলে বিভক্ত ছিলেন। একদলে ছিলেন আয়িশা, হাফসা, সাফিয়্যা ও সাওদা (রাঃ) অপর দলে ছিলেন উম্মু সালামা (রাঃ) সহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যান্য স্ত্রীগণ। আয়িশা (রাঃ) এর প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিশেষ ভালোবাসার কথা সাহাবীগণ জানতেন। তাই তাদের মধ্যে কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু হাদিয়া পাঠাতে চাইলে তা বিলম্বিত করতেন। যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ) এর ঘরে অবস্থান করতেন। যেদিন হাদিয়া দানকারী ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আয়িশা (রাঃ) এর ঘরে তা পাঠিয়ে দিতেন। উম্মু সালামা (রাঃ) এর দল তা নিয়ে আলোচনা করলেন।

উম্মু সালামা (রাঃ) কে তাঁরা বললেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে (এ বিষয়ে) আপনি আলাপ করুন। তিনি যেন লোকদের বলেন যে, যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হাদিয়া পাঠাতে চান, তারা যেন তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেন, যে স্ত্রীর ঘরেই তিনি থাকুননা কেন। উম্মু সালামা (রাঃ) তাদের প্রস্তাব নিয়ে তাঁর সাথে আলাপ করলেন। কিন্তু তিনি তাঁকে কোন জওয়ার দিলেন না। পরে সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না। তখন তাঁরা তাকে বললেন, আপনি তার সাতে আবার আলাপ করুন। (আয়িশা) বলেন, যেদিন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর (উম্মু সালামার) ঘরে গেলেন, সেদিন তিনি আবার তাঁর কাছে আলাপ তুললেন। সেদিনও তিনি তাকে কিছু বললেন না।

তারপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তিনি বললেন, আমাকে তিনি কিছুই বলেন নি। তখন তাঁরা তাঁকে বললেন, তিনি কোন জওয়াব না দেওয়া পর্যন্ত আপনি বলতে থাকুন। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার ঘরে গেলে আবার তিনি তাঁর কাছে সে প্রসঙ্গ তুললেন। একবার তিনি তাকে বললেন, আয়িশা (রাঃ) এর ব্যাপার নিয়ে আমাকে কষ্ট দিও না। মনে রেখো, আয়িশা (রাঃ) ছাড়া আর কোন স্ত্রী বস্ত্রাচ্ছাদনে থাকা অবস্থায় আমার উপর ওহী নাযিল হয়নি। (আয়িশা (রাঃ) বলেন, একথা শুনে তিনি (উম্মু সালামা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে কষ্ট দেওয়ার (অপরাধ) থেকে আমি আল্লাহর কাছে তওবা করছি।

তারপর সকলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) কে এনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একথা বলার জন্য পাঠালেন যে, আপনার স্ত্রীগণ আল্লাহর দোহাই দিয়ে আবূ বকর (রাঃ) এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানোাচ্ছেন। (ফাতিমা (রাঃ) তাঁর কাছে বিষয়টি তুলে ধরলেন। তখন তিনি বললেন, প্রিয় কন্যা! আমি যা পছন্দ করি, তাই কি তুমি পছন্দ কর না? তিনি বললেন, অবশ্যই করি। তারপর তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে (আদ্যোপান্ত) অবহিত করলেন। তারা তাকে বললেন, তুমি আবার যাও। কিন্তু এবার তিনি যেতে অস্বীকার করলেন।

তখন তারা যায়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ) কে পাঠালেন। তিনি তাঁর কাছে গিয়ে কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেন, এবং বললেন, আপনার স্ত্রীগণ! আল্লাহর দোহাই দিয়ে ইবনু আবূ কুহাফার [আবূ বকর (রাঃ)] এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানোাচ্ছেন। এরপর তিনি গলার স্বর উচু করলেন। এমনকি আয়িশা (রাঃ) কে জড়িয়েও কিছু বললেন। আয়িশা (রাঃ) সেখানে বসা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা (রাঃ) এর দিকে তাকিয়ে দেখছিলেন। তিনি কিছু বলেন কিনা।

(রাবী উরওয়া) বলেন, আয়িশা (রাঃ) যয়নাব (রাঃ) এর কথার প্রস্তুতি বাদে কথা বলতে শুরু করলেন এবং তাকে চুপ করে দিলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আয়িশা (রাঃ) এর দিকে তাকিয়ে বললেন, এ হচ্ছে আবূ বকর (রাঃ) এর কন্য। আবূ মারওয়ান গাসসানী (রাঃ) হিশাম এর সূত্রে উরওয়া (রহঃ) থেকে বলেন, লোকেরা তাদের হাদিয়াসমূহ নিয়ে আয়িশা (রাঃ) এর জন্য নির্ধারিত দিনের অপেক্ষা করত। অন্য সনদে হিশাম (রহঃ) মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রাহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম, এমন সময় ফাতিমা (রাঃ) অনুমতি চাইলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৩. যে সব হাদিয়া ফিরিয়ে দিতে চাই

২৪১২। আবূ মা’মার (রহঃ) ... আযরা ইবনু সাবিত আনসারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদিন ছুমামা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) এর কাছে গেলাম, তিনি আমাকে সুগন্ধি দিলেন এবং বললেন আনাস (রাঃ) কখনো সুগন্ধি দ্রব্য ফিরিয়ে দিতেন না। তিনি আরো বলেন, আর আনাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুগন্ধি ফিরিয়ে দিতেন না।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৪. যে বস্তু কাছে নেই, তা হিবা করা যিনি জাইয মনে করেন

২৪১৩। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) ... মিসওযার ইবনু মাখরামা (রাঃ) ও মারওয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তারা বলেন, হাওয়াবিন গোত্রের প্রতিনিধি দল যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তখন তিনি লোকদের সামনে ভাষন দিতে দাঁড়িয়ে আল্লাহ্ পাকের যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। এরপর বললেন, তোমার ভাইয়েরা আমাদের কাছে তওবা করে (মুসলমান হয়ে) এসেছে। আমি তাদেরকে ফেরত দিয়ে তাদের যুদ্ধবন্দীদের দেওয়া সঙ্গত মনে করছি। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা সন্তুষ্টচিত্তে করতে চায় তারা যেন তা করে। আর যে নিজের অংশ রেখে দিতে চায়, এভাবে প্রথম যে ফায় আল্লাহ্ আমাদের দান করবেন সেখান থেকে তার হিসসা আদায় করে দিব। (সে যেন তা করে) তখন সকলেই বললেন, আমরা আপনার সন্তুষ্টির জন্য তা করলাম।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৫. হিবার প্রতিদান দেওয়া

২৪১৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিয়া কবুল করতেন এবং তার প্রতিদানও দিতেন। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ওয়াকী ও মুহাযির (রহঃ) হিশাম তার পিতা সূত্রে আয়িশা (রাঃ) থেকে উল্লেখ করেন নি।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৬. সন্তানকে কোন কিছু দান করা। কোন এক সন্তানকে দান করা বৈধ হবে না, যতক্ষন না ইনসাফের সাথে অন্য সন্তানদের সমভাবে দান করা হয়। অবশ্য এ ক্ষেত্রে উক্ত পিতার বিরুদ্ধে কারো সাক্ষী দেওয়া চলবে না। নবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, সন্তানদেরকে কিছু দেওয়ার ব্যাপারে তোমরা ইনসাফপূর্ণ আচরণ করো। কিছু দান করে পিতার পক্ষে ফেরত নেওয়া বৈধ কি? পুত্রের সম্পদ থেকে ন্যায় সঙ্গতভাবে পিতা খেতে পারবে, তবে সীমা লঙ্ঘন করবে না। নবী (সাঃ) একবার উমর (রাঃ) এর কাছ থেকে একটি উট খরিদ করলেন, পরে ইবন উমরকে তা দান করে বললেন, এটা যে কোন কাজে লাগাতে পারো।

২৪১৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... নু’মান বিন বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতা তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হলেন এবং বললেন, আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। তখন (তিনি) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার সব ছেলেকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ। তিনি বললেন, না (তা করিনি)? তিনি বললেন, তবে তুমি তা ফেরত নাও।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৭. হিবার ক্ষেত্রে সাক্ষী রাখা

২৪১৬। হামীদ ইবনু উমর (রহঃ) ... আমির (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি নু’মান ইবনু বশীর (রাঃ) কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছি যে, আমার পিতা আমাকে কিছু দান করেছিলেন। তখন (আমার মাতা) আমরা বিনত রাওয়াহা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাক্ষী রাখা ছাড়া (এ দানে) সম্মত নই। তখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হাযির হয়ে আরয করলেন, আমরা বিনতে রাওয়াহার গর্ভজাত আমার পুত্রকে কিছু দান করেছি। কিন্তু ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে আমাকে বলেছে, আপনাকে সাক্ষী রাখতে। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার সব ছেলেকেই কি এ ধরনে দান করেছ? তিনি (বশীর) বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে আল্লাহকে ভয় করো এবং আপন সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা করো। [নু’মান (রাঃ)] বলেন, এরপর তিনি ফিরে এসে তার দান প্রত্যাহার করলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৮. স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে এবং স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে দান করা।

قَالَ إِبْرَاهِيمُ جَائِزَةٌ وَقَالَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ لَا يَرْجِعَانِ وَاسْتَأْذَنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءَهُ فِي أَنْ يُمَرَّضَ فِي بَيْتِ عَائِشَةَ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعَائِدُ فِي هِبَتِهِ كَالْكَلْبِ يَعُودُ فِي قَيْئِهِ وَقَالَ الزُّهْرِيُّ فِيمَنْ قَالَ لِامْرَأَتِهِ هَبِي لِي بَعْضَ صَدَاقِكِ أَوْ كُلَّهُ ثُمَّ لَمْ يَمْكُثْ إِلَّا يَسِيرًا حَتَّى طَلَّقَهَا فَرَجَعَتْ فِيهِ قَالَ يَرُدُّ إِلَيْهَا إِنْ كَانَ خَلَبَهَا وَإِنْ كَانَتْ أَعْطَتْهُ عَنْ طِيبِ نَفْسٍ لَيْسَ فِي شَيْءٍ مِنْ أَمْرِهِ خَدِيعَةٌ جَازَ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى فَإِنْ طِبْنَ لَكُمْ عَنْ شَيْءٍ مِنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ

ইবরাহীম (রহঃ) বলেছেন, এরূপ দান বৈধ। আর উমর ইবন আবদুল আযীয (রহঃ) বলেছেন, (এ ধরনের দান পরে) তারা প্রত্যাহার করতে পারবে না। নবী (সাঃ) তার স্ত্রীগণের কাছে আয়শা (রাঃ) এর ঘরে সেবা শুশ্রূষা গ্রহণের অনুমতি চেয়েছিলেন। নবী (সাঃ) বলেছেন, যে আপন দান ফিরত নেয় সে ঐ কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে পুনরায় খায়। ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে, আমাকে তোমার মাহরের কিছু অংশ বা সবটুকু দান করে দাও। অথচ সে দান করার কিছু (দিন বা সময়) পরেই তাকে তালাক দিয়ে বসে, আর স্ত্রীও তার দান ফেরত দাবি করে তাহলে তাকে তা ফেরত দিতে হবে; যদি প্রতারণার উদ্দেশ্যে এরূপ করে থাকে। আর যদি সে খুশি মনে দান করে থাকে, আর স্বামীর আচরণেও প্রতারনা না থাকে তাহলে বৈধ। আল্লাহ্‌ তা'আলা বলেনঃ পরে যদি তারা তার কিছু অংশ দান করে দেয় তবে স্বাচ্ছন্দে ও তৃপ্তিভরে তা আহার কর। (৪ঃ ৪)


২৪১৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং তাঁর কষ্ট বেড়ে গেল! তখন তিনি তাঁর স্ত্রীগণের কাছে আমার ঘরে সেবা-শুশ্রূষা লাভের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তারা তাকে সম্মতি দিলেন। তারপর একদিন দু’ ব্যাক্তির উপর ভর করে বের হলেন, তখন তার উভয় কদম মুবারক মাটি স্পর্শ করছিল। তিনি আব্বাস (রাঃ) ও আরেক ব্যাক্তির মাঝে ভর দিয়ে চলছিলেন। উবায়দুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন, আয়িশা (রাঃ) যা বললেন, তা আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে আরয করলাম, তিনি তখন আমাকে বললেন, জানো, আয়িশা (রাঃ) যার নাম উল্লেখ করলেন না, তিনি কে? আমি বললাম, না; (জানি না)। তিনি বললেন, তিনি হলেন আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৮. স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে এবং স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে দান করা।

২৪১৮। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে তার দান ফেরত নেয়, সে ঐ কুকুরের ন্যায়, যে বমি করে এরপর পুনরায় খায়।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৯. মহিলার জন্য স্বামী থাকা অবস্থায় স্বামী ছাড়া অন্য কাউকে দান করা বা গোলাম আযাদ করা; যদি সে নির্বোধ না হয় তবে জাইয, আর নির্বোধ হলে জাইয নয়। আল্লাহ্‌ তা'আলা বলেনঃ নির্বোধদের হাতে তোমরা নিজেদের সম্পদ তুলে দিও না। (৪ঃ ৫)

২৪১৯। আবূ আসিম (রহঃ) ... আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যুবায়ের (রাঃ) আমার কাছে যে ধন-সম্পদ রাখেন, সেগুলো ছাড়া আমার নিজস্ব কোন ধন-সম্পদ নেই। এমতাবস্থায় আমি কি (তা থেকে) সাদকা করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ সাদকা করতে পার। লুকিয়ে রাখবে না। তাহলে তোমার ক্ষেত্রে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) লুকিয়ে রাখা হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৯. মহিলার জন্য স্বামী থাকা অবস্থায় স্বামী ছাড়া অন্য কাউকে দান করা বা গোলাম আযাদ করা; যদি সে নির্বোধ না হয় তবে জাইয, আর নির্বোধ হলে জাইয নয়। আল্লাহ্‌ তা'আলা বলেনঃ নির্বোধদের হাতে তোমরা নিজেদের সম্পদ তুলে দিও না। (৪ঃ ৫)

২৪২০। উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আল্লাহর পথে) খরচ করো, আর হিসাব করতে যেওনা, তাহলে আল্লাহ্ তোমার বেলায় হিসাব করে দিবেন। লুকিয়ে রাখবে না, তবে আল্লাহ্ও তোমার বেলায় লুকিয়ে রাখবেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৯. মহিলার জন্য স্বামী থাকা অবস্থায় স্বামী ছাড়া অন্য কাউকে দান করা বা গোলাম আযাদ করা; যদি সে নির্বোধ না হয় তবে জাইয, আর নির্বোধ হলে জাইয নয়। আল্লাহ্‌ তা'আলা বলেনঃ নির্বোধদের হাতে তোমরা নিজেদের সম্পদ তুলে দিও না। (৪ঃ ৫)

২৪২১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... মায়মূনা বিনত হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুমতি না নিয়ে তিনি আপন বাদীকে আযাদ করে দিলেন। তারপর তার ঘরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থানের দিন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি জানেন আমি আমার বাদী আযাদ করে দিয়েছে? তিনি বললেন, তুমি কি তা করেছ? মায়মূনা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, শুনো! তুমি যদি তোমার মামাদেরকে এটা দান করতে তাহলে তোমার জন্য তা অধিক পুণ্যের হত।

পরিচ্ছেদঃ ১৬১৯. মহিলার জন্য স্বামী থাকা অবস্থায় স্বামী ছাড়া অন্য কাউকে দান করা বা গোলাম আযাদ করা; যদি সে নির্বোধ না হয় তবে জাইয, আর নির্বোধ হলে জাইয নয়। আল্লাহ্‌ তা'আলা বলেনঃ নির্বোধদের হাতে তোমরা নিজেদের সম্পদ তুলে দিও না। (৪ঃ ৫)

২৪২২। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের ইচ্ছা করলে স্ত্রীদের মাঝে কুরআর প্রক্রিয়া গ্রহন করতেন। যার নাম আসতো তিনি তাঁকে নিয়েই সফরে বের হতেন। এছাড়া প্রত্যেক স্ত্রী অন্য একদিন এক রাত নির্ধারিত করে দিতেন। তবে সাওদা বিনতে যাম’আ (রাঃ) নিজের অংশের দিন ও রাত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী আয়িশা (রাঃ) কে দান করেছিলেন। এর দ্বারা তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্তুষ্টি কামনা করতেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২০. হাদিয়া দানের ক্ষেত্রে কাকে প্রথমে দিবে?

وَقَالَ بَكْرٌ عَنْ عَمْرٍو، عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ مَيْمُونَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَعْتَقَتْ وَلِيدَةً لَهَا فَقَالَ لَهَا وَلَوْ وَصَلْتِ بَعْضَ أَخْوَالِكِ كَانَ أَعْظَمَ لأَجْرِكِ

বকর (রহঃ) ... ইবন আব্বাস (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী মায়মুনা (রাঃ) তার এক বাঁদিকে আযাদ করে দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে বললেন, তুমি যদি একে তোমার মামাদের কাউকে দিয়ে দিতে তবে তোমার সাওয়াব বেশী হত


২৪২৩। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে। এ দু’জনের কাকে আমি হাদিয়া দিব? তিনি ইরশাদ করলেন, এ দুয়ের মাঝে যার দরজা অধিক নিকটবর্তী।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২১. কোন কারণে হাদিয়া গ্রহন না করা।

وَقَالَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ كَانَتِ الْهَدِيَّةُ فِي زَمَنِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَدِيَّةً، وَالْيَوْمَ رِشْوَةٌ

উমর ইবন আবদুল আযীয (রহঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে হাদিয়া (প্রকৃতই) হাদিয়া ছিল, কিন্তু আজকাল তা উৎকোচে পরিনত হয়েছে।


২৪২৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একজন সাহাবী সাআব ইবনু জাছ্ছামা লাইছী (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তিনি একটি বন্য গাধা হাদিয়া দিয়েছিলেন। তিনি তখন ইহরাম অবস্থায় আবওয়াহ কিংবা ওয়াদ্দান নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তাই তিনি তা ফিরিয়ে দিলেন। সাআব (রাঃ) বলেন, যখন তিনি আমার চেহারায় হাদিয়া ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করলেন, তখন তিনি বললেন, আমরা ইহরাম অবস্থায় আছি। এ কারণ ব্যতীত তোমার হাদিয়া ফিরিয়ে দেওয়ার কোন কারন নেই।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২১. কোন কারণে হাদিয়া গ্রহন না করা।

২৪২৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আযদ গোত্রের ইবনু উতবিয়া নামক এক ব্যাক্তিকে (সাদকা সংগ্রহের কাজে নিয়োগ করেছিলেন। তিনি ফিরে এসে বললেন, এগুলো আপনাদের (অর্থাৎ সাদকার মাল) আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে কেন বসে থাকল না? তখন সে দেখত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয়া কিনা? যার হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, সাদকার মাল থেকে সামান্য পরিমানও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কিয়ামতের দিন হাযির হবে। সে মাল যদি উট হয় তাহলে তা তার আওয়াজে, আর যদি গাভী হয় তাহলে হাম্বা হাম্বা রবে আর বকরী হয় তাহলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ রবে (আওয়াজ করতে থাকবে)। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দু’হাত এতটুকু উত্তোলন করলেন যে, আমরা তার উভয় বগলের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তিনি তিন বার বললেন, হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি। হে আল্লাহ্ আমি কি পৌছে দিয়েছি?

পরিচ্ছেদঃ ১৬২২. হাদিয়া পাঠিয়ে কিংবা পাঠানোর ওয়াদা করে তা পৌঁছানোর আগেই মারা গেলে।

وَقَالَ عَبِيدَةُ إِنْ مَاتَ وَكَانَتْ فُصِلَتْ الْهَدِيَّةُ وَالْمُهْدَى لَهُ حَيٌّ فَهِيَ لِوَرَثَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ فُصِلَتْ فَهِيَ لِوَرَثَةِ الَّذِي أَهْدَى وَقَالَ الْحَسَنُ أَيُّهُمَا مَاتَ قَبْلُ فَهِيَ لِوَرَثَةِ الْمُهْدَى لَهُ إِذَا قَبَضَهَا الرَّسُولُ

আবীদা (রহঃ) বলেন, দানকারী ব্যক্তি হাদিয়া সামগ্রী পৃথক করে হাদিয়া প্রাপকের জীবদ্দশায় মারা গেলে তা হাদিয়া প্রাপকের ওয়ারিসদের হক হবে। (যদি প্রাপক ইতিমধ্যে মারা গিয়ে থাকে) আর পৃথক না করে থাকলে হাদিয়া দাতার ওয়ারীসদের হক হবে। আর হাসান (রহঃ) বলেছেন, উভয়ের যে কোন একজন মারা গেলে এবং প্রাপক কর্তৃক নিয়োজিত ব্যক্তি উক্ত হাদিয়া সামগ্রী নিজ অধিকারে নিয়ে নিলে তা প্রপকের ওয়ারীসদের হক হবে।

২৪২৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, বাহরাইন থেকে (জিযিয়া লব্ধ) মাল এসে পৌছলে তোমাকে আমি এভাবে (অঞ্জলী ভরে) তিন বার দিব, কিন্তু বাহরাইনের মাল আসার পূর্বেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত হল। পরে আবূ বকর (রাঃ) এর নির্দেশে জনৈক ঘোষক ঘোষনা দিল; নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে কারো জন্য কোন প্রতিশ্রুতি থাকলে কিংবা কারো কোন ঋণ থাকলে সে যেন আমার কাছে আসে। এ ঘোষনা শুনে আমি তার কাছে গিয়ে বললাম, আমাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বাহরাইনের সম্পদ এলে কিছু) প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তখন তিনি আমাকে অঞ্জলি ভরে তিনবার দান করলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৩. গোলাম বা অন্যান্য সামগ্রী কিভাবে অধিকারে আনা যায়। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, আমি এক অবাধ্য উটের উপর সাওয়ার ছিলাম। নবী () সেটি খরিদ করে বললেন, হে আবদুল্লাহ! এটি তোমার।

২৪২৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার কিছু কবা’ (পোষাক বিশেষ) বন্টন করলেন। কিন্তু মাখরামাকে তা থেকে একটিও দিলেন না। মাখরামা (রাঃ) তখন (ছেলেকে) বললেন, প্রিয় বৎস! আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে নিয়ে চল। (মিসওয়ার (রাঃ) বলেন) আমি তার সঙ্গে গেলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, যাও ভেতরে গিয়ে তাঁকে আমার জন্য আহ্বান জানাও। (মিসওয়ার (রাঃ) বলেন, এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আহ্বান জানালাম। তিনি বেরিয়ে এলেন। তখন তার কাছে একটি করা ছিল। তিনি বললেন, এটা আমি তোমার জন্য হিফাযত করে রেখে দিয়েছিলাম। মাখরামা (রাঃ) সেটি তাকিয়ে দেখলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মাখরামা খুশী হয়ে গেছে।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৪. হাদিয়া পাঠালে অপরজন গ্রহন করলাম (একথা) না বলেই যদি তা নিজ অধিকারে নিয়ে নেয়

২৪২৮। মুহাম্মদ ইবনু মাহবুব (রহঃ) ... আবূ হরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল এবং বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তা কি? সে বলল, রমাযানে (দিবাভাগে) আমি স্ত্রী সম্ভোগ করেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি কোন গোলামের ব্যবস্থা করতে পারবে? সে বলল না, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি একাধারে দু’মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? সে বলল না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে তুমি কি ষাট জন মিসকীকে খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। বর্ণনাকারী বলেন, ইতিমধ্যে জনৈক আনসারী এক আরক খেজুর নিয়ে হাযির হল। আরক হল নির্দিষ্ট মাপের খেজুরপাত্র। তখন তিনি বললেন, যাও, এটা নিয়ে গিয়ে সাদকা কর দাও। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্থ কাউকে সাদকা করে দিব? যিনি আপনাকে সত্যাসহ পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম কংকরময় মরুভূমির মধ্যবর্তী স্থানে (অর্থাৎ মদিনায়) আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্থ কোন ঘর নেই। শেষে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা, যাও এবং তা তোমার পরিবার-পরিজনদের খাওয়াও।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৫. এক ব্যক্তির কাছে প্রাপ্য ঋণ অন্য কে দান করে দেওয়া। শু'বা (রহঃ) হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, তা জায়িয। হাসান ইবন আলী (রাঃ) তার পাওনা টাকা এক ব্যক্তিকে দান করেছিলেন। নবী () বলেছেন, কারো যিম্মায় কোন হক থাকলে তার কর্তব্য সেটা পরিশোধ করে দেওয়া, কিংবা হকদারের নিকট থেকে মাফ করিয়ে নেয়া। জাবির (রাঃ) বলেন, আমার পিতা ঋণগ্রস্ত অবস্থায় শহীদ হলেন। তখন নবী (সাঃ) আমার বাগানের খেজুরের বিনিময়ে তার পিতাকে ঋণ থেকে অব্যাহতি দিতে পাওনাদারদেরকে বললেন

২৪২৯। আবদান (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধে তার পিতা শহীদ হলেন। পাওনাদাররা তাদের পাওনা আদায়ের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করল। তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে হাযির হয়ে তাকে এ বিষয়ে বললাম। তখন তিনি তাদেরকে আমার বাগানের খেজুর নিয়ে আমার পিতাকে অব্যাহতি দিতে বললেন। কিন্তু তারা অস্বীকার করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বাগান তাদের দিলেন না এবং তাদের ফল কাটতেও দিলেন না। বরং তিনি বললেন, আগামীকাল ভোরে আমি তোমাদের কাছে যাব।

জাবির (রাঃ) বলেন, পরদিন ভোরে তিনি আমাদের কাছে আগমন করলেন এবং খেজুর বাগানে ঘুরে ঘুরে ফলে বরকতের জন্য দু’আ করলেন। এরপর আমি ফল কেটে এনে তাদের পাওনা পরিশোধ করলাম। তারপরও সেই ফলের কিছু অংশ রয়ে গেল। পর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হয়ে তাঁকে সে সম্পর্কে অভহিত করলাম। তখন তিনি বসা ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরকে বললেন, শোন হে উমর! তখন তিনিও সেখানে বসা ছিলেন। উমর (রাঃ) বললেন, আমরা কি আগে থেকেই জানিনা যে, আপনি আল্লাহর রাসূল? আল্লাহর কসম, নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৬. একজন কর্তৃক এক দলকে দান করা। আসমা কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ এবং ইবনু আবূ আতীক (র) কে বলেছেন, আমি আমার বোন আয়িশাহ এর নিকট হতে উত্তরাধিকারসূত্রে গানাহ নামক স্থানে কিছু সম্পত্তি পেয়েছি। আর মু‘আবিয়াহ আমাকে (এর বিনিময়ে) এক লাখ দিরহাম দিয়েছিলেন। এগুলো তোমাদের দু’জনের।

২৪৩০। ইয়াহইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) ... সাহল ইবনু সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু পানীয় হাযির করা হল। সেখান থেকে কিছু তিনি নিজে পান করলেন। তার ডান পার্শ্বে ছিল এক যুবক আর বাম পার্শ্বে ছিলেন বয়োবৃদ্ধগণ। তখন তিনি যুবককে বললেন, তুমি আমাকে অনুমতি দিলে এদেরকে আমি দিতে পারি। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার (বরকত) থেকে আমার প্রাপ্য হিসসার ব্যাপারে আমি অন্য কাউকে অগ্রাধিকার দিতে পারি না। তখন তনি তার হাতে পাত্রটি সজোরে রেখে দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৭. দখলকৃত বা দখল করা হয় নি এবং বন্টিনকৃত বা বন্টন করা হয় নি এমন সম্পদ দান করা। নবী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ হাওয়াযিন গোত্রের নিকট থেকে যে গণিমত লাভ করেছিলেন, তা বণ্টনকৃত না হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে তা দান করে দিয়েছিলেন। সাবিত (রাঃ) ...... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃ) এর কাছে মসজিদে উপস্থিত হলাম, তিনি আমাকে (পূর্বের মূল্য) পরিশোধ করলেন এবং আরো অতিরিক্ত দিলেন ।

২৪৩১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সফরে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উট বিক্রি করলাম। মদিনায় ফিরে এসে তিনি আমাকে বললেন, মসজিদে আস, দু’ রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। তারপর তিনি (উটের মূল্য) ওযন করে দিলেন রাবী শু’বা (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, তারপর তিনি আমাকে ওযন করে (উটের মূল্য) দিলেন এবং বলেন, তিনি ওযনে প্রাপ্যের অধিক দিলেন। হাররা যুদ্ধের সময় সিরিয়াবাসীরা ছিনিয়ে নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমার কাছে ঐ মালের কিছু না কিছু অবশিষ্ট ছিল।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৭. দখলকৃত বা দখল করা হয় নি এবং বন্টিনকৃত বা বন্টন করা হয় নি এমন সম্পদ দান করা। নবী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ হাওয়াযিন গোত্রের নিকট থেকে যে গণিমত লাভ করেছিলেন, তা বণ্টনকৃত না হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে তা দান করে দিয়েছিলেন। সাবিত (রাঃ) ...... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃ) এর কাছে মসজিদে উপস্থিত হলাম, তিনি আমাকে (পূর্বের মূল্য) পরিশোধ করলেন এবং আরো অতিরিক্ত দিলেন ।

২৪৩২। কুতায়রা (রহঃ) ... সাহল ইবনু সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু পানীয় হাযির করা হল। তখন তাঁর ডানপাশে ছিল এক যুবক আর বামপাশে ছিল কতিপয় বৃদ্ধ লোক। তিনি যুবককে বললেন, তুমি কি আমাকে এই পানীয় এদের দেওয়ার অনুমতি দিবে? যুবক বলল, না, আল্লাহর কসম! আপনার (বরকত) থেকে আমার প্রাপ্য অংশের ব্যাপারে আমি কাউকে অগ্রাধিকার দিব না। তখন তিনি পান পাত্র তার হাতে সজোরে রেখে দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৭. দখলকৃত বা দখল করা হয় নি এবং বন্টিনকৃত বা বন্টন করা হয় নি এমন সম্পদ দান করা। নবী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ হাওয়াযিন গোত্রের নিকট থেকে যে গণিমত লাভ করেছিলেন, তা বণ্টনকৃত না হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে তা দান করে দিয়েছিলেন। সাবিত (রাঃ) ...... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃ) এর কাছে মসজিদে উপস্থিত হলাম, তিনি আমাকে (পূর্বের মূল্য) পরিশোধ করলেন এবং আরো অতিরিক্ত দিলেন ।

২৪৩৩। আবদুল্লাহ ইবনু উসমান ইবন জাবালা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তির কিছু ঋণ পাওনা ছিল। (তাগাদা করতে এসে সে অশোভন আচরণ শুরু করলে) সাহাবীগণ তাকে কিছু করতে চাইলেন। তিনি তাদের বললেন, তাকে ছেড়ে দাও, পাওনাদারের কিছু বলার অধিকার আছে। তিনি তাদের আরও বললেন, তাকে এক বছর বয়সী একটি উট খরিদ করে দাও। সাহাবীগন বললেন, আমরা তো তার দেওয়া এক বছর বয়সী উটের মত পাচ্ছি না, বরং তার চেয়ে ভালো উট পাচ্ছি। তিনি বললেন, তবে তাই কিনে তাকে দিয়ে দাও। কেননা যে উত্তরূপে ঋণ পরিশোধ করে, সে তোমাদের সর্বোত্তম ব্যাক্তিদের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা তিনি বলেছেন সে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৮. একদল অপর দলকে অথবা এক ব্যক্তি এক দলকে দান করলে তা জায়িয

২৪৩৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়ব (রহঃ) ... মারওয়ান ইবনু হাকাম (রহঃ) ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহনের পর প্রতিনিধি হিসাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল এবং তাদের সম্পদ ও যুদ্ধবন্দী ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানালো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেন, তোমরা দেখতে পাচ্ছ আমার সঙ্গে আরো লোক আছে। আমার নিকট সত্য কথা হল অধিক প্রিয়। তোমরা যুদ্ধবন্দী অথবা সম্পদ এ দুয়ের একটি বেছো নাও। আমিতো তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। (রাবী বলেন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফ থেকে ফিরে প্রায় দশ রাত তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যখন তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টির যেকোন একটিই শুধু তাদের ফিরিয়ে দিবেন, তখন তারা বলল, তবে তো আমরা আমাদের বন্দী (স্বজন)-দেরই পছন্দ করব।

তারপর তিনি মুসলিমদের সামনে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহার যথাযোগ্য প্রশংসা করে বললেন, আম্মাবাদ। তোমাদের এই ভায়েরা তাওবা করে আমাদের কাছে এসেছে, আর আমি তাদেরকে তাদের বন্দী (স্বজনদের) ফিরিয়ে দেওয়া সঙ্গত মনে করছি, কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা সন্তুষ্টচিত্তে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া পছন্দ করে, তারা যেন তা করে। আর যারা নিজেদের হিসসা পেতে পছন্দ করে এরূপভাবে যে, আল্লাহ আমাকে প্রথমে যে, ফায় সম্পদ দান করবেন, তা থেকে তাদের প্রাপ্য অংশ আদায় করে দিব, তারা যেন তা করে। সকলেই তখন বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা সন্তুষ্টচিত্তে তা মেনে নিলাম।

তিনি তাদের বললেন, তোমাদের মধ্যে কারা অনুমতি দিলে আর কারা দিলে না, তা-তো আমি বুঝতে পারলাম না। কাজেই তোমরা ফিরে যাও। তোমাদের নেতারা তোমাদের মতামত আমার কাছে পেশ করবে। তারপর লোকেরা ফিরে গেলো এবং তাদের নেতারা তাদের সাথে আলোচনা করল। পরে তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এসে তাকে জানাল যে, সন্তুষ্টচিত্তে অনুমতি দিয়েছে। হাওয়াযিনের বন্দী সম্পর্কে আমাদের কাছে এতটুকুই পৌছেছে। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এই শেষ অংশটুকু ইমাম যুহরী (রহঃ) এর বক্তব্য।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৯. সঙ্গীদের মাঝে কাউকে হাদিয়া করা হলে সেই তার হকদার। ইবনু আববাস হতে উল্লেখ করা হয়েছে, সঙ্গীরাও শরীক থাকবে, কিন্তু তা সহীহ নয়।

২৪৩৫। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দিষ্ট বয়সের একটি উট ধার নিয়েছিলেন। কিছুদিন পর উটের মালিক এসে তাগাদা দিল। সাহাবীগণও তাকে কি বললেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পাওনাদারদের কিছু বলার অধিকার আছে। তারপর তিনি তাকে তার (দেওয়া) উটের চেয়ে উত্তম উট পরিশোধ করলেন এবং বললেন, ভালভাবে ঋণ পরিশোধকারী ব্যাক্তিই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।

পরিচ্ছেদঃ ১৬২৯. সঙ্গীদের মাঝে কাউকে হাদিয়া করা হলে সেই তার হকদার। ইবনু আববাস হতে উল্লেখ করা হয়েছে, সঙ্গীরাও শরীক থাকবে, কিন্তু তা সহীহ নয়।

২৪৩৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সফরে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন এবং তখন তিনি (ইবনু উমর) উমর (রাঃ) এর একটি অবাধ্য উটে সাওয়ার ছিলেন। উটটি বারবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগে যাচ্ছিল। আর তার পিতা উমর (রাঃ) তাকে বলছিলেন, হে আবদুল্লাহ! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগে আগে চলা কারো জন্য উচিত নয়। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে [উমর (রাঃ)] কে বললেন, এটা আমার কাছে বিক্রি কর। উমর (রাঃ) বললেন, এটাতো আপনার। তখন তিনি সেটা খরিদ করে বললেন, হে আবদুল্লাহ! এটা (এখন থেকে) তোমার। কাজেই এটা দিয়ে তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পার।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩১. এমন কিছু হাদিয়া করা, যা পরিধান করা অপছন্দনীয়

بَاب إِذَا وَهَبَ بَعِيرًا لِرَجُلٍ وَهُوَ رَاكِبُهُ فَهُوَ جَائِزٌ

وَقَالَ الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ وَكُنْتُ عَلَى بَكْرٍ صَعْبٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِعُمَرَ بِعْنِيهِ فَابْتَاعَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ لَكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ

১৬৩০. পরিচ্ছেদঃ উটের পিঠে আরোহী কোন ব্যক্তিকে সেই উটটি দান করা জায়িয।

হুমায়দী (রহঃ) .... ইবনু উমার(রাঃ)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম আর আমি (আমার পিতার) একটি অবাধ্য উটের উপর সাওয়ার ছিলাম। তখন নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামউমারকে বললেন, এটা আমার কাছে বিক্রি করে দাও। তিনি তা বিক্রি করলেন। এরপর নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতাকে বললেন, হে আবদুল্লাহ, এটা তোমার।


২৪৩৭। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাঃ) মসজিদের দ্বার প্রান্তে একজোড়া রেশমী বস্ত্র (বিক্রি হতে) দেখে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এটা যদি আপনি খরিদ করে নেন এবং তা জুমআর দিনে ও প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ে পরিধান করতেন। তখন তিনি বললেন, এ তো সেই পরিধান করে, আখিরাতে যার কোন হিসসা নেই। পরে (কোন এক সময়) কিছু রেশমী জোড়া আসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে উমর (রাঃ) কে এক জোড়া দান করলেন। তখন উমর (রাঃ) বললেন আপনি এটা আমাকে পরিধান করতে দিলেন অথচ (কয়েকদিন আগে) রেশমী কাপড় সম্পর্কে আপনি যা বলার বলেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তো এটা তোমাকে নিজে পরিধান করার জন্য দেইনি। তখন উমর (রাঃ) তা মক্কায় বসবাসকারী তার এক মুশরিক ভাইকে দিয়ে দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩১. এমন কিছু হাদিয়া করা, যা পরিধান করা অপছন্দনীয়

২৪৩৮। মুহাম্মদ ইবনু জা’ফর (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ফাতিমার ঘরে গেলেন। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ না করে (ফিরে এলে) আলী (রাঃ) ঘরে এলে তিনি তাকে ঘটনা জানালেন। তিনি আবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বিষয়টি আরয করলেন। তখন তিনি বললেন, আমি তার দরজায় নকশা করা পর্দা ঝুলতে দেখেছি। দুনিয়ার চাকচিক্যের সঙ্গে আমার কি সম্পর্ক? আলী (রাঃ) এর কাছে এসে ঘটনা খুলে বললেন। (সব শুনে) ফাতিমা (রাঃ) বললেন, তিনি আমাকে এ সম্পর্কে যা ইচ্ছা নির্দেশ দিন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অমুক পরিবারের অমুকের কাছে এটা পাঠিয়ে দাও; তাদের বেশ প্রয়োজন আছে।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩১. এমন কিছু হাদিয়া করা, যা পরিধান করা অপছন্দনীয়

২৪৩৯। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) ... আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে একজোড়া রেশমী কাপড় দিলেন। আমি তা পরিধান করলাম। তার মুখমন্ডলে অসস্তুষ্টির ভাব দেখতে পেয়ে আমি আমার (আত্মীয়া) মহিলাদের মাঝে তা ভাগ করে দিয়ে দিলাম।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩২. মুশরিকদের দেয়া হাদিয়া গ্রহণ করা।

وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَاجَرَ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلَام بِسَارَةَ فَدَخَلَ قَرْيَةً فِيهَا مَلِكٌ أَوْ جَبَّارٌ فَقَالَ أَعْطُوهَا آجَرَ وَأُهْدِيَتْ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَاةٌ فِيهَا سُمٌّ وَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَهْدَى مَلِكُ أَيْلَةَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَغْلَةً بَيْضَاءَ وَكَسَاهُ بُرْدًا وَكَتَبَ لَهُ بِبَحْرِهِمْ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন যে, ইবরাহীম (আঃ) (স্ত্রী) সারাকে নিয়ে হিজরাতকালে এমন এক জনপদে উপস্থিত হলেন, যেখানে ছিল এক বাদশাহ অথবা রাবী বলেন, প্রতাপশালী শাসক। সে বলল, সারার কাছে উপহার স্বরূপ হাজিরাকে দিয়ে দাও।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষ মিশানো বকরীর গোশত হাদিয়া দেয়া হয়েছিল।

আবূ হুমাইদ (রহঃ) বলেন, আয়েলার শাসক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি সাদা খচ্চর উপহার দিয়েছিলেন, প্রতিদানে তিনি তাকে একটি চাদর দিয়েছিলেন আর সেখানকার শাসক হিসাবে তাকে নিয়োগ পত্র লিখে দিয়েছিলেন।


২৪৪০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি রেশমী জুব্বা হাদিয়া দেওয়া হল। অথচ তিনি রেশমী কাপড় ব্যবহারে নিষেধ করতেন। এতে সাহাবীগণ খুশী হলেন। তখন তিনি বললেন, সেই সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, জান্নাতে সাদ ইবনু মু’আযের রুমালগুলো এর চেয়ে উৎকৃষ্ট। সাঈদ (রহঃ) কাতাদা (রহঃ) এর মাধ্যমে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে দুমার উকাইদির নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাদিয়া দিয়েছিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩২. মুশরিকদের দেয়া হাদিয়া গ্রহণ করা।

২৪৪১। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহুদী মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এলো। সেখান থেকে কিছু অংশ তিনি খেলেন এবং (বিষক্রিয়া টের পেয়ে) মহিলাকে হাযির করা হল। তখন বলা হল, আপনি কি একে হত্যার আদেশ দিবেন না? তিনি বললেন, না। আনাস (রাঃ) বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (মুখ গহবরের) তালুতে আমি বরাবরই বিশ ক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩২. মুশরিকদের দেয়া হাদিয়া গ্রহণ করা।

২৪৪২। আবূ নু’মান (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (কোন এক সফরে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আমরা একশ ত্রিশজন লোক ছিলাম। সে সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কারো সাথে কি খাবার আছে? দেখা গেল, এক ব্যাক্তির সঙ্গে এক সা কিংবা তার কমবেশী পরিমান খাদ্য (আটা) আছে। সে আটা গোলানো হল। তারপর দীর্ঘ দেহী এলোমেলো চুল বিশিষ্ট এক মুশরিক এক পাল বকরী হাকিয়ে নিয়ে এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন। বিক্রি করবে, না, উপহার দিবে? সে বলল না, বরং বিক্রি করব। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছ থেকে একটা বকরী কিনে নিলেন। একশ ত্রিশজনের প্রত্যেককে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই কলিজার কিছু কিছু করে দিলেন। যে উপস্থিত ছিল, তাকে হাতে দিলেন; আর যে অনুপস্থিত ছিলো, তার জন্য তুলে রাখলেন। তারপর দু’টি পাত্রে তিনি গোশত ভাগ করে রাখলেন। সবাই তৃপ্তির সাথে খেলেন। আর উভয় পাত্রে কিছু উদ্বৃত্ত থেকে গেল। সেগুলো আমরা উটের পিঠে উঠিয়ে নিলাম। অথবা রাবী যা বললেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৩. মুশরিকদেরকে হাদিয়া দেওয়া। আল্লাহ তাআলার ইরশাদঃ (মুশরিকদের মধ্যে) দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদের কে স্বদেশ থেকে বের করে নি, তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়নদেরকে ভালোবাসেন। (সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ৬০:৮)

২৪৪৩। খলিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাঃ) জনৈক ব্যাক্তিকে রেশমী কাপড় বিক্রি করতে দেখে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, এ জোড়াটি খরিদ করে নিন। জুম্মার দিন এবং যখন আপনার খিদমতে কোন প্রতিনিধি দল আসে, তখন তা পরিধনা করবেন। তিনি বললেন, এসব তো তারাই পরিধান করে, যাদের আখিরাতে কোন হিসসা নেই। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কয়েক জোড়া রেশমী কাপড় এলো। সেগুলো থেকে একটি জোড়া তিনি উমর (রাঃ) এর কাছে পাঠালেন। তখন উমর (রাঃ) বলেন, এটা আমি কিভাবে পরিধান করব। অথচ এ সম্পর্কে আপনি যা বলার বলেছেন। এতে তিনি বললেন, এটা তোমাকে আমি পরিধান করার জন্য দেইনি। হয় এটা বিক্রি করে দিবে, নয় কাউকে দিয়ে দিবে। তখন উমর (রাঃ) সেটা মক্কায় বসাবাসকারী তার এক (দুধ) ভাইকে ইসলাম গ্রহনের আগে হাদিয়া পাঠালেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৩. মুশরিকদেরকে হাদিয়া দেওয়া। আল্লাহ তাআলার ইরশাদঃ (মুশরিকদের মধ্যে) দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি এবং তোমাদের কে স্বদেশ থেকে বের করে নি, তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়নদেরকে ভালোবাসেন। (সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ৬০:৮)

২৪৪৪। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আসমা বিনতে আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় আমার আম্মা মুশরিক অবস্থায় আমার কাছে এলেন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে ফাতওয়া চেয়ে বললাম তিনি আমার প্রতি খুকই আকৃষ্ট, এমতাবস্থায় আমি কি তার সাথে সদাচরন করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ তুমি তোমার মায়ের সঙ্গে সদাচারন করবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৪. দান বা সদাকাহ করার পর তা ফিরিয়ে নেয়া কারো জন্য বৈধ নয়

২৪৪৫। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দান করার পর যে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ ব্যাক্তির মতই, যে বমি করে তা আবার খায়।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৪. দান বা সদাকাহ করার পর তা ফিরিয়ে নেয়া কারো জন্য বৈধ নয়

২৪৪৬। আবদুর রহমান ইবনু মুবারক (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিকৃষ্ট উপমা দেওয়া আমাদের জন্য শোভনীয় নয় (তবু বলতে হয়), যে দান করে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে তা আবার খায়।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৪. দান বা সদাকাহ করার পর তা ফিরিয়ে নেয়া কারো জন্য বৈধ নয়

২৪৪৭। ইয়াহ্হইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) ... উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যাক্তিকে আমি আমার একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্তায় আরোহনের কন্য দান করলাম। ঘোড়াটি যার কাছে ছিল, সে তার চরম অযত্ন করল। তাই সেটা আমি তার কাছ থেকে কিনে নিতে চাইলাম, আমার ধারনা চিল যে, সে তা কম দামে বিক্রি করবে। এ সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, এক দিরহামের বিনিময়েও যদি সে তোমাকে তা দিতে রাযী হয় তবু তুমি তা কিনবে না। কেননা, সাদকা করার পর যে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে তা আবার খায়।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৫. পরিচ্ছেদ নাই

২৪৪৮। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উবায়দুল্লাহ্ ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ইবন জুদ’আনের আযাদকৃত গোলাম সুহাইবের সন্তান দু’টি ঘর ও একটি কামরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুহায়ব (রাঃ) কে দান করেছিলেন বলে দাবী জানান। (মদিনার গভর্নর) মারওয়ান (রহঃ) তখন বললেন, এ ব্যাপারে তোমাদের পক্ষে কে সাক্ষী দিবে? তারা বলল, ইবনু উমর (রাঃ) (আমাদের হয়ে সাক্ষী দিবেন) মারওয়ান (রহঃ) তখন ইবনু উমর (রাঃ) কে ডেকে পাঠালেন। তিনি এ মর্মে সাক্ষী দিলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুহায়ব (রাঃ)-কে দু’টি ঘর ও একটি কামরা দান করেছিলেন। তাদের স্বপক্ষে ইবনু উমরের সাক্ষী অনুযায়ী মারওয়ান ফায়সালা করলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৬. উমরা ও রুকবা عُمْرَى رقْبَى সম্পর্কে যা বলা হয়েছে أَعْمَرْتُهُ الدَّارَ অর্থাৎ বাড়ীটি তাকে (তার জীবনকাল পর্যন্ত) দান করে দিলাম। আল্লাহর বাণীঃ তোমাদেরকে তিনি তাতে বসবাস করিয়েছেন। (সূরা হৃদঃ ১১ঃ ৬১)

২৪৪৯। আবূ নু’আঈম (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরা (বস্তু) সম্পর্কে ফায়সালা দিয়েছেন যে, যাকে দান করা হয়েছে, সেই সেটার মালিক হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৬. উমরা ও রুকবা عُمْرَى رقْبَى সম্পর্কে যা বলা হয়েছে أَعْمَرْتُهُ الدَّارَ অর্থাৎ বাড়ীটি তাকে (তার জীবনকাল পর্যন্ত) দান করে দিলাম। আল্লাহর বাণীঃ তোমাদেরকে তিনি তাতে বসবাস করিয়েছেন। (সূরা হৃদঃ ১১ঃ ৬১)

২৪৫০। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উমরা জায়িয। আতা (রহঃ) বলেন, জাবির (রাঃ) আমাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস শুনিয়েছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৭. কারো কাছ থেকে যে ব্যক্তি ঘোড়া, চতুস্পদ জন্তু বা অন্য কিছু ধার নেওয়া

২৪৫১। আদম (রহঃ) ... কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, মদিনায় একবার শত্রুর আক্রমনের ভয় ছড়িয়ে পড়ল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আবূ তালহা (রাঃ) এর কাছ থেকে একটি ঘোড়া ধার নিলেন এবং তাতে সাওয়ার হলেন। ঘোড়াটির নাম ছিল মানূদব। তারপর (মদিনা টহল দিয়ে) ফিরে এসে তিনি বললেন, কিছুই তো দেখতে পেলাম না, তবে এই ঘোড়াটিকে আমি সমূদ্রের তরঙের মত পেয়েছি।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৮. বাসর সজ্জার সময় নব দম্পতির কিছু ধার করা

২৪৫২। আবূ ন’আইম (রহঃ) ... আয়মান (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর নিকট আমি হাযির হলাম। তার গায়ে তখন পাঁচ দিরহাম মূল্যের মোটা কাপড়ের কমিজ ছিল। তিনি আমাকে বললেন, আমার এ বাদীটার দিকে চোখ তুলে একটু তাকাও, ঘরের ভিতরে এটা পরতে সে অপছন্দ করে। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় মদিনায় মেয়েদের মধ্যে আমারই শুধু একটি কামিজ ছিল। মদিনায় কোন মেয়েকে বিয়ের সাজে সাজাতে গেলেই আমার কাছে কাউকে পাঠিয়ে ঐ কামিজটি চেয়ে নিত (সাময়িক ব্যবহারের জন্য)।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৯. মানীহা অর্থাৎ দুধ পানের জন্য উট বা বকরি দেওয়ার ফাযীলত

২৪৫৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়ব (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানীহা হিসাবে অধিক দূধেল উটনী ও অধিক দুধেল বকরী কতইনা উত্তম, যা সকালে বিকালে, পাত্র ভর্তি দূধ দেয়।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৯. মানীহা অর্থাৎ দুধ পানের জন্য উট বা বকরি দেওয়ার ফাযীলত

২৪৫৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইসমাঈল (রহঃ) ... হাদীসটি মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, এতে তিনি বলেন, সাদকা হিসাবে কতইনা উত্তম (দুধেল উটনী, যা মানীহা হিসাবে দেওয়া হয়)।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৯. মানীহা অর্থাৎ দুধ পানের জন্য উট বা বকরি দেওয়ার ফাযীলত

২৪৫৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময় মুহাজিরদের হাতে কোন কিছু ছিল না। অন্য দিকে আনসারগণ ছিলেন জমি ও ভূসম্পত্তির অধিকারী। তাই আনসারগণ এই শর্তে মুহাজিরদের সাথে ভাগাভাগি করে নিলেন যে, প্রতি বছর তারা (মুহাজিররা) এর উৎপন্ন ফল ও ফসলের একটা নির্দিষ্ট পরিমান তাদের (আনসারদের) দিবেন আর তারা এ কাজে শ্রম দিবে ও দায়দায়িত্ব নিবে। আনাসের মা উম্মু সুলাইম (রাঃ) ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনু আবূ তালহার মা। আনাসের মা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (ফল ভোগ করার জন্য) কয়েকটি খেজুর গাছ দিয়ে ছিলেন। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলো তার আযাদকৃত বাদী উসামা ইবন যায়দের মা উম্মু আয়মানকে দান করে দিয়েছিলেন।

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারে ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে লড়াই শেষে মদিনায় ফিরে এলে মুহাজিরগণ আনাসারদেরকে তাদের অস্থায়ী দানের সম্পত্তি ফিরিয়ে দিলেন; যেগুলো ফল ও ফসল ভোগ করার জন্য তারা মুহাজিরদের দান করেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার (আনাসের) মাকে তার খেজুর গাছগুলো ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মু আয়মানকে ঐ গাছগুলোর পরিবর্তে নিজ বাগানের কিছু অংশ দান করলেন। আহমদ ইবনু শাবীব (রহঃ) বলেন, আমার পিতা আমাদেরকে ইউনুসের সূত্রে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন এবংحَائِطِهِ এর স্থলেخَالِصِهِ বলেছেন, যার অর্থ নিজ ভূমি থেকে।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৯. মানীহা অর্থাৎ দুধ পানের জন্য উট বা বকরি দেওয়ার ফাযীলত

২৪৫৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আল্লাহ্ তা’আলার বিশেষ প্রিয়) চল্লিশটি স্বভাবের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট হল দুধ পান করার জন্য কাউকে বকরী দেওয়া। কোন বান্দা যদি সওয়াবের আশায় এবং পুরষ্কার দানের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস রেখে উক্ত চল্লিশ স্বভাবের যে কোন একটির উপরে আমল করে তবে আল্লাহ অবশ্যই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। হাসসান (রহঃ) বলেন, দুধেল বকরী মানীহা দেওয়া ছাড়া আর যে, কয়টি স্বভাব আমরা গণনা করলাম, সেগুলো হল সালামের উত্তর দেওয়া, হাচি দাতার হাচির উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা, (চলাচলের) পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো ইত্যাদি। কিন্তু আমরা পনেরটি স্বভাবের বেশী গণনা করতে সক্ষম হলাম না।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৯. মানীহা অর্থাৎ দুধ পানের জন্য উট বা বকরি দেওয়ার ফাযীলত

২৪৫৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু লোকের অতিরিক্ত ভূসম্পত্তি ছিল। তারা পরস্পর পরামর্শ করে ঠিক করলো যে এগুলো আমরা তিন ভাগের এক ভাগ, চার ভাগের এক ভাগ বা অর্ধেক হিসাবে ইজারা দিব। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কারো অতিরিক্ত জমি থাকলে হয় সে নিজেই চাষ করবে, কিংবা তার ভাইকে তা (চাষ করতে) দিবে। আর তা না করতে চাইলে তা নিজের কাছেই রেখে দিবে। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে হিজরত সম্পর্কে জানতে চাইল। তিনি তাকে বললেন, থাম! হিজরতের ব্যাপার সুকঠিন। (তার চেয়ে বরং বল) তোমার কি উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, তুমি কি এর সাদকা (যাকাত) আদায় করে থাক? সে বললাম, হ্যা। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি দুধ পানের জন্য এগুলো মানীহা হিসাবে দিয়ে থাকো সে বলল, হ্যাঁ। আবার তিনি প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা! পানি পান করানেরর (ঘাটে সমবেত অভাবী লোকদের মাঝে বিতরনের জন্য) উটগুলো দোহন করো কি? সে বলল হ্যাঁ। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, এ যদি হয় তাহলে সাগরের ওপারে হলেও অর্থাৎ তুমি যেখানে থাক আমল করতে থাক। আল্লাহ তোমার আমলের প্রতিদানে কম করবেন না।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৩৯. মানীহা অর্থাৎ দুধ পানের জন্য উট বা বকরি দেওয়ার ফাযীলত

২৪৫৮। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার এক জমিতে গেলেন, যার ফসলগুলো আন্দোলিত হচ্ছিল। তিনি জানতে চাইলেন, কার (ফসলের) জমি? লোকেরা বলল, (অমুক ব্যাক্তির কাছে থেকে) অমুক ব্যাক্তি এটি ইজারা নিয়েছে। তিনি বললেন, জমিটার নির্দিষ্ট ভাড়া গ্রহন না করে সে যদি তাকে সাময়িকভাবে তা দিয়ে দিত তবে সেটাই হতো তার জন্য উত্তম।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৪০. প্রচলিত অর্থে কেউ যদি কাউকে বলে এই বাঁদিটি তোমার সেবার জন্য দান করছি, তা হলে তা জায়িয। কোন কোন ফিকাহ্ বিশারদ বলেন, এটা আরিয়ত হবে। তবে কেউ যদি বলে, এ কাপড়টি তোমাকে পরিধান করতে দিলাম, তবে তা হিবা হবে।

২৪৫৯। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণিত গ্রন্থ হতে বলেছেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) (স্ত্রী) সারাকে সাথে নিয়ে হিজরত করলেন। (পথে এক জনপদের) লোকেরা সারার উদ্দেশ্যে হাজিরাকে হাদিয়া দিলেন। তিনি ফিরে এসে (ইবরাহীমকে) বললেন, আপনি কি জেনেছেন; কাফিরকে আল্লাহ পরাস্ত করেছেন এবং সেবার জন্য একটি বালিকা দান করেছেন। ইবনু সীরীন (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে, বর্ণনা করেন, তারপর (সেই কাফির) সারার সেবার উদ্দেশ্যে হাজিরাকে দান করলো।

পরিচ্ছেদঃ ১৬৪১. কেউ কাউকে আরোহণের জন্য ঘোড়া দান করলে তা উমরা (عُمْرَى) ও সাদকা বলেই গণ্য হবে। আর কোন কোন ফিকাহ বিশারদ বলেন, দাতা তা ফিরিয়ে নিতে পারে।

২৪৬০। হুমায়দী (রহঃ) ... উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি একটি লোককে আল্লাহর পথে বাহন হিসাবে একটি ঘোড়া দিলাম। কিন্তু পরে তা বিক্রি হতে দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, এটা খরিদ করো না এবং সাদকাকৃত মাল ফিরিয়ে নিও না।

 

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: হেবা করা
হেবা করা
সহী আকীদা
https://soheeaqida.blogspot.com/2020/09/heba.html
https://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/09/heba.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy