পরিচ্ছেদঃ ১২৭৭. মহান আল্লাহ্ তায়ালার এই বাণী সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে (ইরশাদ করছেন): সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং মহান আল্লাহ্ তায়ালার অনুগ্রহ সন্ধান করবে ও মহান আল্লাহ্ তায়ালাকে অধিক স্মরন করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও। যখন তারা দেখল ব্যাবসায় কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। বলুন, মহান আল্লাহ্ তায়ালার নিকট যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যাবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। মহান আল্লাহ্ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা। (৬২:১০-১১)। আর মহান আল্লাহ্ তায়ালার বানী: তোমরা নিজেদের মধ্যে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করোনা। কিন্তু তোমাদের পরস্পর রাযী হয়ে ব্যাবসা করা বৈধ।
وَقَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ
وَحَرَّمَ الرِّبَا
وَقَوْلُهُ إِلَّا أَنْ تَكُونَ تِجَارَةً حَاضِرَةً تُدِيرُونَهَا
بَيْنَكُمْ
এবং
মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ: মহান আল্লাহ্ তা’আলা বেচা-কেনাকে বৈধ এবং সুদকে অবৈধ
করেছেন। (২:২৭৫)
এবং
মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ কিন্তু তোমরা পরস্পর যে ব্যবসায় নগদ আদান-প্রদান
কর......।
১৯১৯. আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আপনারা বলে থাকেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বেশী বেশী হাদীস বর্ননা করে থাকে এবং আরো বলেন, মুহাজির ও আনসারদের কি হল যে, তারা তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ননা করেন না? (কিন্তু ব্যাপার হল এই যে) আমার মুহাজির ভাইগন বাজারে কেনা-বেচায় ব্যাস্ত থাকতেন আর আমি কোন প্রকারে আমার পেটের চাহিদা মিটিয়ে (খেয়ে না খেয়ে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে পড়ে থাকতাম। তাঁরা যখন (কাজের ব্যাস্ততায়) অনুপস্থিত থাকতেন, আমি তখন উপস্থিত থাকতাম। তাঁরা যা ভুলে যেতেন, আমি তা সংরক্ষন করতাম। আর আমার আনসার ভাইয়েরা নিজেদের ক্ষেত-খামারের কাজে ব্যাপৃত থাকতেন।
আমি
ছিলাম আসহাবে সুফফার মিসকীনদের এক মিসকীন। তাঁরা যা ভুলে যেতেন, আমি তা সংরক্ষন করতাম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এক বর্ননায় বললেন, আমার এ কথা শেষ না হওয়া
পর্যন্ত যে কেউ তার কাপড় বিছিয়ে দিবে এবং পরে নিজের শরীরের সাথে তার কাপড় জড়িয়ে
নেবে, আমি যা বলছি সে তা স্মরণ
রাখতে পারবে। [আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন] আমি আমার গায়ের চাঁদরখানা বিছিয়ে দিলাম, যতক্ষন না রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কথা শেষ করলেন, পরে আমি তা আমার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলাম। ফলে আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সে কথার কিছুই ভুলি নি।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৭. মহান আল্লাহ্ তায়ালার এই বাণী সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে (ইরশাদ করছেন):
সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং মহান আল্লাহ্ তায়ালার অনুগ্রহ
সন্ধান করবে ও মহান আল্লাহ্ তায়ালাকে অধিক স্মরন করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও। যখন
তারা দেখল ব্যাবসায় কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান
অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। বলুন, মহান আল্লাহ্ তায়ালার নিকট যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যাবসা
অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। মহান আল্লাহ্ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।
(৬২:১০-১১)। আর মহান আল্লাহ্ তায়ালার বানী: তোমরা নিজেদের মধ্যে অন্যের অর্থ-সম্পদ
অন্যায়ভাবে গ্রাস করোনা। কিন্তু তোমাদের পরস্পর রাযী হয়ে ব্যাবসা করা বৈধ।
১৯২০.
আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্নিত।
তিনি বলেন, আমরা যখন মদিনায় আসি, তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার এবং সাদ ইবনু রাবী’ (রাঃ) এর মাঝে ভ্রাতৃত্ব
বন্ধন করে দেন। পরে সাদ ইবনু রাবী’ বললেন, আমি আনসারদের মাঝে অধিক ধন-সম্পত্তির অধিকারী। আমার অর্ধেক
সম্পত্তি তোমাকে ভাগ করে দিচ্ছি এবং আমার উভয় স্ত্রীকে দেখে যাকে তোমার পছন্দ হয়, বল আমি তাকে তোমার জন্য
পরিত্যাগ করব। যখন সে ইদ্দত পূর্ন করবে, তখন তুমি তাকে বিবাহ করে নিবে। আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, এ সবে আমার কোন প্রয়োজন নেই।
বরং (আপনি বলুন) ব্যাবসা বানিজ্য করার মতো কোন বাজার আছি কি? তিনি বললেন, কায়নুকার বাজার আছে।
পরের
দিন আবদুর রাহমান (রাঃ) সে বাজারে গিয়ে পনীর ও ঘি (খরিদ করে) নিয়ে আসলেন। এরপর ক্রমাগত
যাওয়া আসা করতে থাকেন। কিছুকাল পরে আবদুর রাহমান (রাঃ) এর কাপড়ে বিয়ের মেহেদী দেখা
গেল। এতে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি বিবাহ করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সে কে? তিনি বললেন, জনৈকা আনসারী মহিলা। তিনি
জিজ্ঞাসা করলেন, কী পরিমান মোহর দিয়েছ? আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, খেজুরের এক আটি পরিমান
স্বর্ণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও ওয়ালীমা
কর।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৭. মহান আল্লাহ্ তায়ালার এই বাণী সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে (ইরশাদ করছেন):
সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং মহান আল্লাহ্ তায়ালার অনুগ্রহ
সন্ধান করবে ও মহান আল্লাহ্ তায়ালাকে অধিক স্মরন করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও। যখন
তারা দেখল ব্যাবসায় কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান
অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। বলুন, মহান আল্লাহ্ তায়ালার নিকট যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যাবসা
অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। মহান আল্লাহ্ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।
(৬২:১০-১১)। আর মহান আল্লাহ্ তায়ালার বানী: তোমরা নিজেদের মধ্যে অন্যের অর্থ-সম্পদ
অন্যায়ভাবে গ্রাস করোনা। কিন্তু তোমাদের পরস্পর রাযী হয়ে ব্যাবসা করা বৈধ।
১৯২১.
আহমদ ইবনু ইউনুছ (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)
মদিনায় আগমন করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ও সাদ ইবনু
রাবী’ আনসারীর মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন করে দেন। সাদ (রাঃ) ধনী ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি
আবদুর রাহমান (রাঃ)-কে বললেন, আমি তোমার উদ্দেশ্যে আমার
সম্পত্তি অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিতে চাই এবং তোমাকে বিবাহ করিয়ে দিতে চাই। তিনি
বলেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা তোমার
পরিবার ও সম্পদে বরকত দান করুন। আমাকে বাজার দেখিয়ে দাও। তিনি বাজার হতে মুনাফা
করে নিয়ে আসলেন পনীর ও ঘি। এভাবে কিছু কাল কাটালেন।
একদিন
তিনি এভাবে আসলেন যে, তাঁর গায়ে বিয়ের মেহেদীর
রংয়ের চিহ্ন লেগে আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা
করলেন, কী ব্যাপার। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি জনৈকা
আনসারী মহিলাকে বিবাহ করেছি। তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] জিজ্ঞাসা
করলেন, তুমি তাকে কি দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুরের আটি পরিমান স্বর্ণ।
তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও ওয়ালীমা কর।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৭. মহান আল্লাহ্ তায়ালার এই বাণী সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে (ইরশাদ করছেন):
সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং মহান আল্লাহ্ তায়ালার অনুগ্রহ
সন্ধান করবে ও মহান আল্লাহ্ তায়ালাকে অধিক স্মরন করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও। যখন
তারা দেখল ব্যাবসায় কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান
অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। বলুন, মহান আল্লাহ্ তায়ালার নিকট যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যাবসা
অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। মহান আল্লাহ্ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।
(৬২:১০-১১)। আর মহান আল্লাহ্ তায়ালার বানী: তোমরা নিজেদের মধ্যে অন্যের অর্থ-সম্পদ
অন্যায়ভাবে গ্রাস করোনা। কিন্তু তোমাদের পরস্পর রাযী হয়ে ব্যাবসা করা বৈধ।
১৯২২।
আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উকায, মাজিন্না ও যুল-মাজায (নামক
স্থানে) জাহিলিয়্যাতের যুগে বাজার ছিল। ইসলামের আবির্ভাবের পরে লোকেরা ঐ সকল
বাজারে যেতে গুনাহ্ মনে করতে লাগল। ফলে (আল কুরআন মজীদের) আয়াত নাজিল হলঃ তোমাদের
রবের অনুগ্রহ সন্ধানে তোমাদের কোন পাপ নেই। (২ঃ ১৯৮) ইবনু আব্বাস (রাঃ) (আয়াতের
সঙ্গে) হাজ্জের (হজ্জ) মওসুমে কথাটুকুও পড়লেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৮. হালাল সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট, উভয়ের মাঝে অস্পষ্ট বিষয়
রয়েছে।
১৯২৩.
মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না, আলী ইবনু আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ও
মুহাম্মাদ ইবনু কাছীর (রহঃ) ... নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও
সুস্পষ্ট, উভয়ের মাঝে বহু অস্পষ্ট বিষয়
রয়েছে। যে ব্যাক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ পরিত্যাগ করে, সে ব্যাক্তি যে বিষয়ে গুনাহ
হওয়া সুস্পষ্ট, সে বিষয়ে অধিকতর
পরিত্যাগকারী হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যাক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ করতে দুঃসাহস
করে, সে ব্যাক্তির সুস্পষ্ট
গুনাহের কাজে পতিত হবার যথেষ্ট আশংকা রয়েছে। গুনাহসমূহ মহান আল্লাহ্ তা’আলার
সংরক্ষিত এলাকা, যে জানোয়ার সংরক্ষিত এলাকার
চার পাশে চরতে থাকে, তার ঐ সংরক্ষিত এলাকায়
প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৯. সন্দেহজনক কাজের ব্যাখ্যা। হযরত হাসসান ইবন আবু সিনান (রঃ) বলেন, আমি পরহেযগারী থেকে বেশী সহজ
কাজ দেখতে পাইনি। (তা হলো) যা তোমার কাছে সন্দেহযুক্ত মনে হয়, তা পরিত্যাগ করে সন্দেহমুক্ত
কাজ করো।
১৯২৪.
মুহাম্মাদ ইবনু কাছীর (রহঃ) ... উকবা ইবনু হারিছ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একজন কালো মেয়েলোক এসে দাবী
করল যে, সে তাদের উভয় (উকবা ও তার
স্ত্রী)-কে দুধপান করিয়েছে। তিনি এ কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ননা করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার
থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং মুচকি হেসে বললেন, কিভাবে? অথচ এমনটি বলা হয়ে গেছে। তার
স্ত্রী ছিলেন আবূ ইহাব তামীমীর কন্যা।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৯. সন্দেহজনক কাজের ব্যাখ্যা। হযরত হাসসান ইবন আবু সিনান (রঃ) বলেন, আমি পরহেযগারী থেকে বেশী সহজ
কাজ দেখতে পাইনি। (তা হলো) যা তোমার কাছে সন্দেহযুক্ত মনে হয়, তা পরিত্যাগ করে সন্দেহমুক্ত
কাজ করো।
১৯২৫.
ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উতবা ইবনু আবূ ওয়াক্কাস তার
ভাই সাদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) কে ওসীয়ত করে যান যে, যাম’আর বাঁদীর গর্ভস্থিত
পুত্র আমার ঔরসজাত, তুমি তাকে (ভ্রাতুষ্পুত্র
রুপে) তোমার অধীনে নিয়ে আসবে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, মক্কা বিজয়ের কালে ঐ ছেলেটিকে সাদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)
নিয়ে নিলেন এবং বললেন, এ আমার ভাইয়ের পুত্র। তিনি
আমাকে এর সম্পর্কে ওসীয়ত করে গেছেন। এদিকে যাম’আর পুত্র ‘আবদ দাবী করে যে, এ আমার ভাই, আমার পিতার বাঁদীর পুত্র, তার [পিতার] শয্যা সঙ্গিনীর
গর্ভে জন্মগ্রহন করেছে। তারপর উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
কাছে গেলেন।
সাদ
বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ আমার
ভাইয়ের পুত্র, সে এর ব্যাপারে আমাকে ওসীয়ত
করে গেছে। এবং ‘আবদ ইবনু যাম’আ বললেন, আমার ভাই। আমার পিতার দাসীর পুত্র, তাঁর সঙ্গে শায়িনীর গর্ভে
জন্মগ্রহন করেছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে ‘আবদ ইবনু যাম’আ, এ ছেলেটি তোমার পাপ্য। তারপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শয্যা যার, সন্তান তার। ব্যভিচারী যে, বঞ্চিত সে। এরপর তিনি নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিনী সাওদা বিনত যাম’আ (রাঃ) কে বললেন, তুমি ঐ ছেলেটি থেকে পর্দা
করবে। কারন তিনি ঐ ছেলেটির মধ্যে উতবার সা’দৃশ্য দেখতে পান। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঐ
ছেলেটি আর সাওদা (রাঃ) কে দেখেনি।
পরিচ্ছেদঃ
১২৭৯. সন্দেহজনক কাজের ব্যাখ্যা। হযরত হাসসান ইবন আবু সিনান (রঃ) বলেন, আমি পরহেযগারী থেকে বেশী সহজ
কাজ দেখতে পাইনি। (তা হলো) যা তোমার কাছে সন্দেহযুক্ত মনে হয়, তা পরিত্যাগ করে সন্দেহমুক্ত
কাজ করো।
১৯২৬.
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পার্শ্বফলা বিহীন তীর (দ্বারা শিকার) সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, যদি তীরের ধারালো পার্শ্ব
আঘাত করে, তবে সে (শিকারকৃত জানোয়ারের
গোশত) খাবে, আর যদি এর ধারহীন পার্শ্বের
আঘাতে মারা যায়, তবে তা খাবেনা। কেননা তা
প্রহারে মৃত। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি
বিসমিল্লাহ্ পড়ে আমার (শিকারী) কুকুর ছেড়ে দিয়ে থাকি। পরে তার সাথে শিকারের কাছে
(অনেক সময়) অন্য কুকুর দেখতে পাই, যার উপর আমি বিসমিল্লাহ্
পড়িনি এবং আমি জানিনা যে, উভয়ের মধ্যে কে শিকার ধরেছে।
তিনি বললেন, তুমি তা খাবেনা। তুমি তো
তোমার কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ্ পড়েছ, অন্যটির উপর পড় নাই।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮০. সন্দেহযুক্ত থেকে বাঁচা
১৯২৭.
কাবীসা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একবার) পথ অতিক্রমকালে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পড়ে থাকা একটি খেজুর দেখে বললেন, যদি এটা সাদকার খেজুর বলে
সন্দেহ না হতো, তবে আমি তা খেতাম। আবূ
হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে হাম্মাম (রহঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমার বিছানায় পড়ে থাকা খেজুর
আমি পাই।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮১. ওয়াসওয়াসা ইত্যাদিকে যে সন্দেহ বলে গন্য করে না
১৯২৮.
আবূ নু’আঈম (রহঃ) ... আব্বাদ ইবনু তামীমের চাচা (আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু আসিম)
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক ব্যাক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, সালাত (নামায/নামাজ)
আদায়কালে তার উযূ (ওজু/অজু/অযু) ভঙ্গের কিছু হয়েছে বলে মনে হয়, এতে কি সে সালাত ছেড়ে দেবে? তিনি বলেন, না, যতক্ষন না সে আওয়াজ শুনে বা
দুর্গন্ধ টের পায় অর্থাৎ নিশ্চিত হয়। ইবনু আবূ হাফসা (রহঃ) যুহরী (রহঃ)
থেকে বর্ননা করেন, তুমি গন্ধ না পেলে অথবা
আওয়াজ না শুনলে উযূ করবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮১. ওয়াসওয়াসা ইত্যাদিকে যে সন্দেহ বলে গন্য করে না
১৯২৯.
আহমদ ইবনু মিকদাম ইজলী (রহঃ) ... উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কিছু সংখ্যক লোক বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বহু লোক
আমাদের কাছে গোশত নিয়ে আসে, আমরা জানি না, তারা বিসমিল্লাহ্ পড়ে যবেহ্
করেছিলো কিনা? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা এর উপর মহান আল্লাহ্
তা’আলার নাম লও এবং তা খাও (ওয়াসওয়াসার শিকার হয়োনা)।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮২. মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার বাণীঃ যখন তারা দেখল ব্যাবসা ও কৌতুক
তখন তারা সে দিকে ছুটে গেল। (৬২:১১)
১৯৩০.
তালক ইবনু গান্নাম (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একবার আমরা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়
করছিলাম। তখন সিরিয়া হতে একটি ব্যাবসায়ী কাফেলা খাদ্য নিয়ে আগমন করল। লোকজন সকলেই
সে দিকে চলে গেলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মাত্র বারোজন থেকে গেলেন। এ প্রসঙ্গে নাযিল হলঃ যখন
তারা দেখল ব্যাবসা ও কৌতুক তখন তারা সে দিকে ছুটে গেল।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৩. যে ব্যক্তি কোথা থেকে সম্পদ উপার্জন করল, তার পরোয়া করে না
১৯৩১.
আদম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবেনা যে, সে কোথা থেকে অর্জন করল, হালাল থেকে না হারাম থেকে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৪. কাপড় ও অন্যান্য দ্রব্যের ব্যাবসা।
وَقَوْلِهِ: (رِجَالٌ لاَ تُلْهِيهِمْ تِجَارَةٌ وَلاَ بَيْعٌ عَنْ
ذِكْرِ اللَّهِ). وَقَالَ قَتَادَةُ كَانَ الْقَوْمُ يَتَبَايَعُونَ،
وَيَتَّجِرُونَ، وَلَكِنَّهُمْ إِذَا نَابَهُمْ حَقٌّ مِنْ حُقُوقِ اللَّهِ لَمْ
تُلْهِهِمْ تِجَارَةٌ وَلاَ بَيْعٌ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ، حَتَّى يُؤَدُّوهُ إِلَى
اللَّهِ
মহান
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ সে সব লোক যাদেরকে ব্যাবসা-বানিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় মহান
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের যিকির থেকে বিরত রাখেনা। (সূরা নূর: ৩৭০)
কাতাদা (রহঃ) বলেন, লোকেরা ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যাবসা-বানিজ্য করতেন এবং যখন তাদের সামনে মহান আল্লাহ্ তা’আলার কোন হক এসে উপস্থিত হতো, তখন তাদেরকে ব্যাবসা-বানিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় মহান আল্লাহ্ তা’আলার স্মরন থেকে বিরত রাখতোনা, যতক্ষন না তারা মহান আল্লাহ্ তা’আলার সমীপে তা আদায় করে দিতেন।
১৯৩২.
আবূ আসিম (রহঃ) ... মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সোনা-ও রূপার ব্যাবসা
করতাম। এ সম্পর্কে আমি যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ফাযল ইবনু ইয়া’কুব (রহঃ) অন্য সনদে ... আবূল মিনহাল
(রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বারা ইবনু আযিব ও যায়দ
ইবনু আরকাম (রাঃ) কে সোনা-রূপার ব্যাবসা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা উভয়ে বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ব্যাবসায়ী ছিলাম। আমরা তাঁকে সোনা-রূপার
ব্যাবসা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, যদি হাতে হাতে (নগদ) হয়, তবে কোন দোষ নেই, আর যদি বাকী হয় তবে দুরস্ত নয়।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৫. ব্যাবসা-বানিজ্যের উদ্দেশ্যে বের হওয়া। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমরা
পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহের সন্ধান করো। (৬২:১০)
১৯৩৩.
মুহাম্মাদ (রহঃ) ... উবায়দুল্লাহ ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) উমর
ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, সম্ভবতঃ তিনি কোন কাজে
ব্যাস্ত ছিলেন। তাই আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) ফিরে আসেন। পরে উমর (রাঃ) পেরেশান হয়ে
বললেন, আমি কি আবদুল্লাহ ইবনু কায়েস
(আবূ মূসা আশআরীর নাম) এর আওয়াজ শুনতে পাইনি? তাঁকে আসতে বলো। কেউ বলল, তিনি তো ফিরে চলে গেছেন। উমর (রাঃ) তাঁকে ডেকে পাঠালেন।
তিনি (উপস্থিত হয়ে) বললেন, আমাদের এরুপই নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে।
উমর
(রাঃ) বললেন, তোমাকে এর উপর সাক্ষী পেশ
করতে হবে। আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) ফিরে গিয়ে আনসারদের এক মজলিসে পৌঁছে তাদের এ বিষয়ে
জিজ্ঞাসা করলেন। তাঁরা বললেন, এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে
সর্বকনিষ্ঠ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-ই সাক্ষ্য দেবে। তিনি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে
নিয়ে গেলেন। তিনি [উমর (রাঃ) (তার কাছ থেকে সে হাদীসটি শুনে)] বললেন, (কি আশ্চর্য) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ কি আমার কাছ থেকে গোপন রয়ে গেল? (আসল ব্যাপার হল) বাজারের ক্রয়-বিক্রয় অর্থাৎ ব্যাবসায়ের
জন্য বের হওয়া আমাকে অনবহিত রেখেছে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৭. মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যখন তারা দেখল ব্যাবসা ও কৌতুক তখন তারা আপনাকে
দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। (৬২:১১) এবং মহান আল্লাহ্ তা’আলার বানী: সে
সব লোক, যাদেরকে ব্যাবসা-বানিজ্য ও
ক্রয়-বিক্রয় মহান আল্লাহ্ তা’আলার যিকির থেকে গাফিল রাখেনা। হযরত কাতাদা (রাঃ)
বলেন, সাহাবীগন (রাঃ)
ব্যাবসা-বানিজ্য করতেন বটে, কিন্তু যখন তাদের সামনে মহান
আল্লাহ্ তা’আলার কোন হক এসে উপস্থিত হতো, যতক্ষন না তাঁরা এ হক মহান আল্লাহ্ তা’আলার সমীপে আদায় করে
দিতেন, ততক্ষন ব্যাবসা-বানিজ্য ও
ক্রয়-বিক্রয় মহান আল্লাহ্ তা’আলার যিকির থেকে গাফেল করতে পারতনা।
باب التِّجَارَةِ فِي الْبَحْرِ
وَقَالَ مَطَرٌ لاَ بَأْسَ بِهِ وَمَا ذَكَرَهُ اللَّهُ فِي
الْقُرْآنِ إِلاَّ بِحَقٍّ ثُمَّ تَلاَ: (وَتَرَى الْفُلْكَ مَوَاخِرَ فِيهِ
وَلِتَبْتَغُوا مِنْ فَضْلِهِ) وَالْفُلْكُ السُّفُنُ، الْوَاحِدُ وَالْجَمْعُ
سَوَاءٌ
وَقَالَ مُجَاهِدٌ تَمْخَرُ السُّفُنُ الرِّيحَ وَلاَ تَمْخَرُ
الرِّيحَ مِنَ السُّفُنِ إِلاَّ الْفُلْكُ الْعِظَامُ
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ عَبْدِ
الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنْ رَسُولِ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلاً مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ،
خَرَجَ فِي الْبَحْرِ فَقَضَى حَاجَتَهُ. وَسَاقَ الْحَدِيثَ
১২৮৬.
পরিচ্ছেদ: সমুদ্রে/নৌপথে ব্যাবসা-বাণিজ্য করা।
মাতার
(রঃ) বলেন, এতে কোন দোষ নেই এবং তা
যথাযথ বলেই মহান আল্লাহ্ তা’আলা কুরআনে এর উল্লেখ করেছেন। তারপর তিনি তিলাওয়াত
করলেনঃ এবং তোমরা এতে নৌযানকে দেখতে পাও তার বুক চিরে চলাচল করে, বা এজন্য যে, তাঁর অনুগ্রহের অনুসন্ধান
করতে পার। (১৬ : ১৪) আয়াতে উল্লেখিত (الفلك) ‘আল-ফুলক’ শব্দের অর্থ নৌযান। একবচন ও বহুবচন সমভাবে ব্যাবহৃত
হয়। মুজাহিদ (রঃ) বলেন, নৌযান, বায়ু বিদীর্ন করে চলে এবং
নৌযানের মধ্যে বৃহৎ নৌযানই বায়ুতে বিদীন করে চলে। লাইছ (রঃ) ...
আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্ণিত যে, তিনি বনী ইসরাঈলের জনৈক
ব্যক্তির আলোচনায় বলেন, সে নদীপথে বের হলো এবং নিজের
প্রয়োজন সেরে নিল। এরপর রাবী পুরো হাদীসটি বর্ণনা করেন।
১৯৩৪. মুহাম্মাদ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে জুমআর দিন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম। এমন সময় এক বানিজ্যিক কাফেলা এসে হাযির হয়, তখন বারোজন লোক ছাড়া সকলেই কাফেলার দিক ছুটে যান। তখন এই আয়াত নাযিল হয়ঃ যখন তারা দেখল ব্যাবসা ও কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। (৬২:১০)
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৮. মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমরা যা উপার্জন কর, তন্মধ্যে উৎকৃষ্ট থেকে
ব্যায় কর। (২:২৬৭)
১৯৩৫.
উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন মহিলা তার ঘরের
খাদ্য থেকে ফাসাদের উদ্দেশ্য ছাড়া ব্যয় করে তখন তার জন্য সাওয়াব রয়েছে তার খরচ
করার, তার স্বামীর জন্য সাওয়াব
রয়েছে তার উপার্জনের এবং সংরক্ষনকারীর জন্যও অনুরূপ রয়েছে। তাদের কারো কারনে কারোর
সাওয়াব কিছুই কম হবেনা।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৮. মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমরা যা উপার্জন কর, তন্মধ্যে উৎকৃষ্ট থেকে
ব্যায় কর। (২:২৬৭)
১৯৩৬.
ইয়াহইয়া বিন জাফর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন কোন মহিলা তার স্বামীর
উপার্জন থেকে তার অনুমতি ছাড়াই ব্যায় করবে, তখন তার জন্য অর্ধেক সাওয়াব রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৮৯. যে ব্যক্তি জীবিকায় বৃদ্ধি কামনা করে
১৯৩৭.
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ ইয়াকুব কিরমানী (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি পছন্দ করে যে, তার জীবিকা বৃদ্ধি হোক অথবা
তার মৃত্যুর পরে সুনাম থাকুক, তবে সে যেন আত্নীয়ের সঙ্গে
সদাচরন করে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯০. রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক বাকীতে খরিদ করা
১৯৩৮.
মুয়াল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ইবরাহীম (রহঃ) এর
কাছে বাকীতে ক্রয়ের জন্য বন্ধক রাখা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করছিলাম। তখন তিনি বলেন, আসওয়াদ (রহঃ), আয়িশা (রাঃ) থেকে আমার কাছে
বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ইহুদীর নিকট থেকে নির্দিষ্ট মেয়াদে মূল্য পরিশোধের শর্তে
খাদ্য ক্রয় করেন এবং তার নিকট নিজের লোহার বর্ম বন্ধক রাখেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯০. রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক বাকীতে খরিদ করা
১৯৩৮.
মুয়াল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) ... আমাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন ইবরাহীম (রহঃ) এর
কাছে বাকীতে ক্রয়ের জন্য বন্ধক রাখা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করছিলাম। তখন তিনি বলেন, আসওয়াদ (রহঃ), আয়িশা (রাঃ) থেকে আমার কাছে
বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ইহুদীর নিকট থেকে নির্দিষ্ট মেয়াদে মূল্য পরিশোধের শর্তে
খাদ্য ক্রয় করেন এবং তার নিকট নিজের লোহার বর্ম বন্ধক রাখেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯০. রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক বাকীতে খরিদ করা
১৯৩৯.
মুসলিম ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাওশাব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, একবার তিনি যবের আটা ও
পুরোনো গন্ধযুক্ত চর্বি নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট
উপস্থিত হলেন। রাবী বলেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, মদিনায় অবস্থান কালে তাঁর
বর্ম জনৈক ইহুদীর নিকট বন্ধক রেখে তিনি নিজ পরিবারের জন্য তার থেকে যব খরিদ করেন।
[রাবী কাতাদা (রহঃ) বলেন] আমি তাঁকে [আনাস (রাঃ) কে] বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারের কাছে এক সা’ পরিমান গম বা এক সা’ পরিমান আটাও থাকত
না, অথচ সে সময় তাঁর নয়জন
সহধর্মিনী ছিলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯১. লোকের উপার্জন এবং নিজ হাতে কাজ করা
১৯৪০.
ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আবূ বকর সিদ্দিক
(রাঃ)-কে খলীফা বানানো হল, তখন তিনি বললেন, আমার কাওম জানে যে, আমার উপার্জন আমার পরিবারের
ভরন পোষনে অপর্যাপ্ত ছিলো না। কিন্তু এখন আমি জনগনের কাজে সার্বক্ষনিক ব্যাপৃত হয়ে
গেছি। অতএব আবূ বকরের পরিবার এই রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে খাদ্য গ্রহন করবে এবং আবূ
বকর (রাঃ) মুসলিম জনগনের সম্পদের তত্ত্বাবধান করবে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯১. লোকের উপার্জন এবং নিজ হাতে কাজ করা
১৯৪১.
মুহাম্মাদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগন নিজেদের কাজ-কর্ম নিজেরা করতেন। ফলে তাদের শরীর
থেকে ঘামের গন্ধ বের হতো। সেজন্য তাদের বলা হল, যদি তোমরা গোসল করে নাও (তবে ভালো হয়)। হাম্মাম (রহঃ) ...
আয়িশা (রাঃ) থেকে হাদীসটি বর্ননা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯১. লোকের উপার্জন এবং নিজ হাতে কাজ করা
১৯৪২.
ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... মিকদাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিজ হাতে উপার্জিত জীবিকার
খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাদ্য কখনো কেউ খায়না। আল্লাহর নাবী দাউদ (আলাইহিস সালাম) নিজ
হাতে উপার্জন করে খেতেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯১. লোকের উপার্জন এবং নিজ হাতে কাজ করা
১৯৪৩.
ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর নাবী দাউদ (আলাইহিস সালাম) নিজ হাতে উপার্জন থেকেই
খেতেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯১. লোকের উপার্জন এবং নিজ হাতে কাজ করা
১৯৪৪.
ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারো পক্ষে এক বোঝা
লাকড়ী সংগ্রহ করে পিঠে বহন করে নেওয়া উত্তম, কারো কাছে সাওয়াল করার চাইতে। (যার কাছে যাবে) সে দিতেও
পারে অথবা নাও দিতে পারে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯১. লোকের উপার্জন এবং নিজ হাতে কাজ করা
১৯৪৫.
ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) ... যুবাইর ইবনু আওয়াম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারো পক্ষে তার রশি
নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে বের হওয়া তার সাওয়াল করা থেকে উত্তম।
আবূ
নুআঈম (রহঃ) বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু সাওয়াব ও
ইবনু নুমাইর (রহঃ), হিশাম (রহঃ) এর মাধ্যমে তার
পিতা থেকে হাদীসটি বর্ননা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯২. ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতা ও সদ্ব্যবহার। আর যে ব্যক্তি তার পাওনার তাগাদা করে সে
যেন অন্যায় বর্জন করে তাগাদা করে।
১৯৪৬.
আলী ইবনু আইয়্যাশ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি ক্রয়-বিক্রয় এবং
পাওনা তাগাদায় নম্র ব্যাবহার করে, মহান আল্লাহ্ তা’আলা তার উপর
রহম করেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৩. সচ্ছল ব্যক্তিকে অবকাশ দেওয়া
১৯৪৭.
আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তিগণের
মধ্যে এক ব্যাক্তির রুহের সাথে ফেরেশতা সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি কোন নেক কাজ করেছ? লোকটি উত্তর দিল, আমি আমার কর্মচারীদের আদেশ
করতাম যে, তারা যেন সচ্ছল ব্যাক্তিকে
অবকাশ দেয় এবং তার উপর পীড়াপীড়ি না করে। রাবী বলেন, তিনি বলেছেন, ফেরেশতারাও তাঁকে ক্ষমা করে দেন।
আবূ
মালিক (রহঃ) রিবঈ ইবনু হিরাশ (রহঃ) সূত্রে বর্ননা করেন, আমি সচ্ছল ব্যাক্তির
ব্যাপারে সহজ করতাম এবং অভাবগ্রস্থকে অবকাশ দিতাম। শু’বা (রহঃ), আবদুল মালিক (রহঃ) থেকে
অনুরূপ বর্ননা করেন। আবূ আওয়ানা (রহঃ), আবদুল মালিক (রহঃ) সূত্রে বর্ননা করেন, আমি সচ্ছলকে অবকাশ দিতাম এবং
অভাবগ্রস্থকে মাফ করে দিতাম এবং নুআঈম ইবনু আবূ হিনদ (রহঃ), রিবঈ (রহঃ) সূত্রে বলেন, আমি সচ্ছল ব্যাক্তি থেকে
গ্রহন করতাম এবং অভাবগ্রস্থকে ক্ষমা করে দিতাম।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৪. অভাবগ্রস্থকে অবকাশ প্রদান করা
১৯৪৮.
হিশাম ইবনু আম্মার (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জনৈক ব্যাবসায়ী ঋন দিত। কোন
অভাবগ্রস্থকে দেখলে সে তার কর্মচারীদের বলত, তাকে মাফ করে দাও, হয়তো মহান আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের মাফ করে দিবেন। এর ফলে
মহান আল্লাহ্ তা’আলা তাকে মাফ করে দেন।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৫. ক্রেতা-বিক্রেতা কর্তৃক কোন কিছু গোপন না করে পন্যের পূর্ন অবস্থা বর্ননা
করা এবং একে অন্যের কল্যান কামনা করা। আদ্দা ইবন খালিদ (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) আমাকে
লিখে দেন যে, এটি রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ)
আদ্দা ইবন খালিদ থেকে ক্রয় করলেন। এ হলো এক মুসলিমের সঙ্গে আর এক মুসলিমের
ক্রয়-বিক্রয়। এতে নেই কোন খুঁত, কোন অবৈধতা এবং গায়িলা।
কাতাদা (রঃ) বলেন, গায়িলা অর্থ ব্যভিচার, চুরি ও পালানোর অভ্যাস।
ইবরাহীম নাখয়ী (রঃ) কে বলা হলো, কোন কোন দালাল খুরাসান ও
সিজিস্তান এর খাসবারশি নাম উচ্চারন করে এবং বলে, এটি কালকে এসেছে খুরাসান থেকে, আর এটি আজ এসেছে সিজিস্তান
থেকে। তিনি এরুপ বলাকে খুবই গর্হিত মনে করলেন। উকবা ইবন আমির (রঃ) বলেন, কোন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে, সে কোন পন্য বিক্রি করছে এবং
এর দোষ-ত্রুটি জেনেও তা প্রকাশ করেনা।
১৯৪৯.
সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ... হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষন
পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়, ততক্ষন তাদের ইখতিয়ার থাকবে।
যদি তারা সত্য বলে এবং অবস্থা ব্যক্ত করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে আর যদি
মিথ্যা বলে এবং দোষ গোপন করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে যাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৬. মিশ্রিত খেজুর বিক্রি করা
১৯৫০.
নুআঈম (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের মিশ্রিত খেজুর দেওয়া
হতো, আমরা তার দু’সা এক সা’-এর
বিনিময়ে বিক্রি করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এক সা’ এর পরিবর্তে দু’সা
এবং এক দিরহামের পরিবর্তে দু’দিরহাম বিক্রি করবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৭. গোশত বিক্রেতা ও কসাই প্রসঙ্গে
১৯৫১.
উমর ইবনু হাফস (রহঃ) ... আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ শুআইব নামক জনৈক আনসারী
এসে তার কসাই গোলামকে বললেন, পাঁচ জনের উপযোগী খাবার তৈরী
কর। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহ পাঁচজনকে দাওয়াত করতে যাই।
তাঁর চেহারায় আমি ক্ষুধার চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। তারপর সে লোক এসে দাওয়াত দিলেন।
তাদের সঙ্গে আরেকজন অতিরিক্ত এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, এ আমাদের সঙ্গে এসেছে, তুমি ইচ্ছা করলে একে অনুমতি
দিতে পার, আর তুমি যদি চাও সে ফিরে যাক, তবে সে ফিরে যাবে। সাহাবী
বললেন, না, বরং আমি তাকে অনুমতি দিলাম।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৮. মিথ্যা বলা ও দোষ গোপন করায় ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত নষ্ট হওয়া
১৯৫২.
বদল ইবনু মুহাব্বার (রহঃ) ... হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যতক্ষন বিচ্ছিন্ন না হবে
ততক্ষন ক্রেতা-বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকবে। যদি তাঁরা সত্য বলে ও যথাযথ অবস্থা বর্ননা
করে, তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত
হবে, আর যদি পন্যের প্রকৃত অবস্থা
গোপন করে ও মিথ্যা বলে, তবে ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে
যাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১২৯৯. মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ হে মু’মিনগন, তোমরা চক্র বৃদ্ধি হারে সুদ খেয়োনা এবং মহান আল্লাহ্
তা’আলা-কে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
(৩:১৩০)
১৯৫৩.
আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের উপর এমন এক যুগ
অবশ্যই আসবে যখন মানুষ পরোয়া করবেনা যে কিভাবে সে মাল অর্জন করল, হালাল থেকে নাকি হারাম থেকে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০০. সুদ গ্রহনকারী, তার সাক্ষী ও লেখক। মহান
আল্লাহ্ তা’আলার বানী: যারা সুদ খায়, তারা সেই ব্যক্তিরই ন্যায় দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা
পাগল করে। এ জন্য যে, তারা বলে, বেচাকেনা সুদের মতো .....
তারা অগ্নির অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
(২:২৭৫)
১৯৫৪.
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সূরা বাকারার শেষ
আয়াতগুলি নাযিল হল, তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা মসজিদে পড়ে শোনালেন। তারপর মদের ব্যাবসা হারাম
বলে ঘোষনা করেন।
•
পরিচ্ছেদঃ
১৩০০. সুদ গ্রহনকারী, তার সাক্ষী ও লেখক। মহান
আল্লাহ্ তা’আলার বানী: যারা সুদ খায়, তারা সেই ব্যক্তিরই ন্যায় দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা
পাগল করে। এ জন্য যে, তারা বলে, বেচাকেনা সুদের মতো .....
তারা অগ্নির অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
(২:২৭৫)
১৯৫৫.
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাতে আমি স্বপ্ন দেখেছি
যে, দু’ব্যাক্তি আমার নিকট এসে
আমাকে এক পবিত্র ভূমিতে নিয়ে গেল। আমরা চলতে চলতে এক রক্তের নদীর কাছে পৌঁছলাম।
নদীর মধ্যস্থলে এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং আরেক ব্যাক্তি নদীর তীরে, তার সামনে পাথর পড়ে রয়েছে।
নদীর মাঝখানের লোকটি যখন বের হয়ে আসতে চায়, তখন তীরের লোকটি তার মুখে পাথর খন্ড নিক্ষেপ করে তাকে
স্বস্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এভাবে যতবার সে বেরিয়ে আসতে চায় ততবারই তার মুখে পাথর
নিক্ষেপ করছে আর সে স্বস্থানে ফিরে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ কে? সে বলল, যাকে আপনি নদীতে (রক্তের)
দেখেছেন, সে হল সুদখোর।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০১. সুদদাতা। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ হে মু’মিনগন, তোমরা মহান আল্লাহ্ তা’আলাকে
ভয় কর এবং সুদের যা বকেয়া আছে, তা ছেড়ে দাও। ........
কর্মফল পুরোপুরি দেওয়া হবে আর তাদের প্রতি কোনরুপ অন্যায় করা হবেনা। (২:২৭৮-৭৮১)
ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন। এটিই শেষ আয়াত, যা রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর উপর নাযিল হয়েছে।
১৯৫৬.
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... আওন ইবনু আবূ জুহাইফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আমার পিতাকে দেখেছি, তিনি এক গোলাম খরিদ করেন, যে শিঙ্গা লাগানোর কাজ করত।
তিনি তার শিঙ্গার যন্ত্রপাতি সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন এবং তা ভেঙ্গে ফেলা হল। আমি এ
ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য
এবং রক্তের মূল্য গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন, আর দেহে দাগ দেওয়া ও লওয়া থেকে নিষেধ করেছেন। সুদ খাওয়া ও
খাওয়ানো নিষেধ করেছেন আর ছবি অংকনকারীর উপর লা’নত করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০২. (মহান আল্লাহ্ তা’আলার বানী) : মহান আল্লাহ্ তা’আলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন
এবং দানকে বর্ধিত করেন। মহান আল্লাহ্ তা’আলা কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালোবাসেন না। (২:
২৭৬)
১৯৫৭.
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মিথ্যা কসম পন্য চালু করে দেয় বটে, কিন্তু বরকত নিশ্চিহ্ন করে
দেয়।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৩. ক্রয়-বিক্রয়ে কসম খাওয়া নিষিদ্ধ
১৯৫৮.
আমর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যাক্তি বাজারে পন্য
আমদানী করে মহান আল্লাহ্ তা’আলার নামে কসম খেল যে, এর এতো দাম লাগানো হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তা কেউ বলেনি। এতে তার উদ্দেশ্য সে যেন
কোন মুসলমানকে পন্যের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলতে পারে। এ প্রসঙ্গে আয়াত নাযিল হয়, যারা মহান আল্লাহ্ তা’আলার
সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রি করে। (৩ঃ ৭৭)
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৪. স্বর্নকার প্রসঙ্গে। তাউস (রঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, মক্কার কাঁচা ঘাস কাটা
যাবেনা। আব্বাস (রাঃ) বললেন, কিন্তু ইযখির ঘাস ব্যতীত।
কেননা তা মক্কাবাসীদের কর্মকারদের ও তাদের ঘরের কাজে ব্যাবহৃত হয়। রাসূলূল্লাহ্
(সাঃ) বলেন, আচ্ছা, ইযখির ঘাস ব্যতীত।
১৯৫৯.
আবদান (রহঃ) ... হুসাইন ইবনু আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ননা করেন, আলী (রাঃ) বলেছেন, (বদর
যু্দ্ধের) গনীমতের মাল থেকে আমার অংশের একটি উটনী ছিল এবং রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর খুমস্ থেকে একটি উটনী আমাকে দান করলেন। যখন
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) এর সঙ্গে
বাসর রাত যাপনের ইচ্ছা করলাম, সে সময়ে আমি কায়নুকা গোত্রের
একজন স্বর্নকারের সাথে এই চুক্তি করেছিলাম যে, সে আমার সঙ্গে (জংগলে) যাবে এবং ইযখির ঘাস বহন করে আনবে এবং
তা স্বর্নকারদের নিকট বিক্রি করে তার মূল্য দ্বারা আমার বিবাহের ওয়ালীমার
ব্যাবস্থা করব।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৪. স্বর্নকার প্রসঙ্গে। তাউস (রঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, মক্কার কাঁচা ঘাস কাটা
যাবেনা। আব্বাস (রাঃ) বললেন, কিন্তু ইযখির ঘাস ব্যতীত।
কেননা তা মক্কাবাসীদের কর্মকারদের ও তাদের ঘরের কাজে ব্যাবহৃত হয়। রাসূলূল্লাহ্
(সাঃ) বলেন, আচ্ছা, ইযখির ঘাস ব্যতীত।
১৯৬০.
ইসহাক (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কা বিজয়ের
দিন) বলেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা মক্কায়
(রক্তপাত) হারাম করে দিয়েছেন। আমার আগেও কারো জন্য মক্কা হালাল করা হয়নি এবং আমার
পরেও কারো জন্য হালাল করা হবেনা আমার জন্য শুধুমাত্র দিনের কিছু অংশে মক্কায়
(রক্তপাত) হালাল হয়েছিল। মক্কার কোন ঘাস কাটা যাবেনা, কোন গাছ কাটা যাবেনা। কোন
শিকারকে তাড়ানো যাবেনা। ঘোষনাকারী ব্যতীত কেউ মক্কার যমীনে পড়ে থাকা মাল উঠাতে
পারবেনা।
তখন
আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) বললেন, কিন্তু ইযখির ঘাস, যা আমাদের স্বর্নকারদের ও আমাদের ঘরের ছাদের জন্য ব্যাবহৃত, তা ব্যতীত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইযখির ঘাস ব্যতীত। রাবী ইকরামা (রহঃ) বলেন, তুমি জানো শিকার তাড়ানোর
অর্থ কি? তা হল, ছায়ায় অবস্থিত শিকারকে
তাড়িয়ে তার স্থানে নিজে বসা। আবদুল ওহাব (রহঃ), খালিদ (রহঃ) সূত্রে বলেছেন, আমাদের স্বর্নকারদের জন্য ও আমাদের কবরের জন্য।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৫. তীরের ফলক প্রস্তুতকারী ও কর্মকার প্রসঙ্গে
১৯৬১.
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে আমি
কর্মকারের পেশায় ছিলাম। ‘আস ইবনু ওয়াইলের কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল, আমি তার কাছে তাগাদা করতে
গেলে সে বলল, যতক্ষন তুমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অস্বীকার না করবে ততক্ষন আমি তোমাকে তোমার
পাওনা দিবনা। আমি বললাম, মহান আল্লাহ্ তা’আলা তোমাকে
মৃত্যু দিয়ে তারপর তোমাকে পুনরুত্থিত করা পর্যন্ত আমি তাঁকে অস্বীকার করবো না। সে
বলল, আমি মরে পুনরুত্থিত হওয়া
পর্যন্ত আমাকে অব্যাহতি দাও। শীগগীরই আমাকে সম্পদ ও সন্তান দেওয়া হবে, তখন আমি তোমার পাওনা পরিশোধ
করব। এ প্রসঙ্গে এই আয়াত নাযিল হলঃ তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখান
করে এবং বলে আমাকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততী দেওয়া হবেই (১৯ঃ ৭৭)।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৬. দরজী প্রসঙ্গে
১৯৬২.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক দরজী খাবার তৈরী করে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করলেন। আনাস ইবনু মালিক
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে রুটি এবং সুরুয়া যাতে কদু ও গোশতের টুকরা ছিল, পেশ করলেন। আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখতে পেলাম যে, পেয়ালার পার্শ্ব থেকে তিনি কদুর টুকরা খোঁজ করে নিচ্ছেন।
সেদিন থেকে আমি সর্বদা কদু ভালোবাসতে থাকি।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৭. তাঁতী প্রসঙ্গে
১৯৬৩.
ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... সাহল ইবনু সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক মহিলা একটি বুরদা আনলেন।
সাহল (রাঃ) বললেন, তোমরা জানো বুরদা কি? তাকে বলা হয়, হ্যাঁ, তা হল এমন চাঁদর, যার পাড় বুনানো। মহিলা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে
পরিধান করানোর জন্য আমি এটি নিজ হাতে বুনে নিয়ে এসেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গ্রহন করলেন এবং তাঁর এর প্রয়োজন ছিল। তারপর তিনি তা
তহবন্দরুপে পরিধান করে আমাদের সামনে এলেন। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে একজন বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা আমাকে
পরিধান করতে দিন। তিনি বললেন, আচ্ছা।
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষন মজলিসে বসে পরে ফিরে গেলেন। তারপর
চাঁদরটি ভাঁজ করে সেই লোকটির কাছে পাঠিয়ে দিলেন। লোকজন সে ব্যাক্তিকে বললেন, তুমি ভালো কাজ করনি, তুমি তাঁর কাছে চাঁদরটি চেয়ে
ফেললে, অথচ তুমি জানো যে, তিনি কোন সাওয়ালকারীকে
ফিরিয়ে দেন না। সে লোকটি বললেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলার কসম, আমি চাঁদরটি এ জন্যই সাওয়াল
করেছি যে, তা যাতে আমার মৃত্যুর পর
আমার কাফন হয়। রাবী সাহল (রাঃ) বলেন, সেটি তার কাফন হয়েছিল।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৮. সূত্রধর প্রসঙ্গে
১৯৬৪.
কুতাইবা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, কিছু লোক সাহল ইবনু সাদ
(রাঃ) এর কাছে এসে মিম্বরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন (আনসারী) মহিলা সাহল (রাঃ) যার নাম উল্লেখ করেছিলেন তার
কাছে সংবাদ পাঠালেন যে, তোমার সূত্রধর গোলামকে বল, সে যেন আমার জন্য কাঠ দিয়ে
একটি মিম্বর তৈরি করে দেয়। লোকদের সাথে কথা বলার সময় যার উপর আমি বসতে পারি। সেই
মহিলা তার গোলামকে গাবা নামক স্থানের কাঠ দিয়ে মিম্বর বানানোর নির্দেশ দিলেন।
তারপর গোলামটি তা নিয়ে এলো এবং সেই মহিলা এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁর নির্দেশক্রমে তা স্থাপন করা হল, পরে তার উপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপবেশন করলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৮. সূত্রধর প্রসঙ্গে
১৯৬৫.
খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একজন আনসারী মহিলা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি
আপনার জন্য এমন একটি জিনিস তৈরী করে দিবনা, যার উপর আপনি উপবেশন করবেন? কেননা, আমার একজন সূত্রধর গোলাম
আছে। তিনি বললেন, যদি তুমি ইচ্ছা কর।
বর্ননাকারী বলেন, তারপর সে মহিলা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য মিম্বর বানিয়ে দিলেন। যখন জুম’আর দিন হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই মিম্বরের উপরে বসলেন। সে সময় যে খেঁজুর গাছের কান্ডের উপর
ভর দিয়ে তিনি খুতবা দিতেন, সেটি এমনভাবে চিৎকার করে
উঠল, যেন তা ফেটে পড়বে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেমে এসে তাকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে
ধরলেন। তখন সেটি ফোঁপাতে লাগল, যেমন ছোট শিশুকে চুপ করানোর
সময় ফোঁপায়। অবশেষে তা স্থির হয়ে গেল। (রাবী বলেন) খেঁজুর কান্ডটি যে যিকির-নসীহত
শুনত, তা হারানোর কারনে কেঁদেছিল।
পরিচ্ছেদঃ
১৩০৯. ইমাম কর্তৃক নিজেই প্রয়োজনীয় বস্তু খরিদ করা।
وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا اشْتَرَى النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَمَلاً مِنْ عُمَرَ. وَقَالَ عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا جَاءَ مُشْرِكٌ بِغَنَمٍ،
فَاشْتَرَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهُ شَاةً.
وَاشْتَرَى مِنْ جَابِرٍ بَعِيرًا
ইবন উমর (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট থেকে একটি উট খরিদ করেছিলেন। আবদুর রাহমান ইবন আবু বকর (রাঃ) বলেন, জনৈক মুশরিক তার ছাগল পাল নিয়ে আসলে রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে একটি বকরী খরিদ করেন। আর তিনি জারির (রাঃ) থেকে একটি উট খরিদ করেছিলেন।
১৯৬৬.
ইউসুফ ইবনু ঈসা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ইহুদী থেকে বাকীতে খাদ্য ক্রয় করেন এবং নিজের লৌহ বর্ম তার
কাছে বন্ধক রাখেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১০. জন্তু ও গাধা খরিদ করা। জন্তু বা উট খরিদ কালে বিক্রেতা যদি তার পিঠে আরোহী
অবস্থায় থাকে, তবে তার অবতরনের পূর্বেই কি
ক্রেতার হস্তগত হয়েছে বলে গন্য হতে পারে? হযরত ইবন উমর (রাঃ) বর্ননা করেন যে, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) উমর
(রাঃ) কে বললেন, আমার কাছে তা অর্থাৎ অবাধ্য
উটটি বিক্রয় করে দাও।
১৯৬৭.
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক যুদ্ধে আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। আমার উটটি অত্যন্ত ধীরে চলছিল বরং
চলতে অক্ষম হয়ে পড়েছিল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমার কাছে এলেন এবং বললেন, জাবির? আমি বললাম, জী। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার অবস্থা কি? আমি বললাম, আমার উট আমাকে নিয়ে অত্যন্ত
ধীরে চলছে এবং অক্ষম হয়ে পড়ছে। ফলে আমি পিছনে পড়ে গেছি। তখন তিনি নেমে চাবুক দিয়ে
উটটিকে আঘাত করতে লাগলেন। তারপর বললেন, এবার আরোহন কর। আমি আরোহন করলাম। এরপর অবশ্য আমি উটটিকে এমন
পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অগ্রসর হওয়ায় বাধা দিতে হয়েছিল।
তিনি
জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি বিবাহ করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী না বিবাহিতা? আমি বললাম, বিবাহিতা। তিনি বললেন, তরুনী বিবাহ করলেনা কেন? তুমি তার সাথে হাসি-তামাসা
এবং সে তোমার সাথে পূর্নভাবে হাসি-তামাসা করত। আমি বললাম, আমার কয়েকটি বোন রয়েছে, ফলে আমি এমন মহিলাকে বিবাহ
করতে পছন্দ করলাম, যে তাদেরকে মিল-মহব্বতে
রাখতে, তাদের পরিচর্যা করতে এবং
তাদের উপর উত্তমরুপে কর্তৃত্ব করতে সক্ষম হয়। তিনি বললেন, শোন, তুমি তো বাড়ীতে পৌঁছবে? যখন তুমি পৌঁছবে তখন তুমি
বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবে। তিনি বললেন, তোমার উটটি বিক্রি করবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তা এক উকীয়ার*
বিনিময়ে আমার নিকট থেকে কিনে নিলেন।
তারপর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার আগে (মদিনায়) পৌঁছলেন এবং আমি (পরের
দিন) ভোরে পৌঁছলাম। আমি মসজিদে নববীতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে দরজার সামনে পেলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এখন এলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমার উটটি রাখ এবং মসজিদে
প্রবেশ করে দু’রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। আমি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত
(নামায/নামাজ) আদায় করলাম। তারপর তিনি বিলাল (রাঃ) কে উকীয়া ওযন করে আমাকে দিতে
বললেন। বিলাল (রাঃ) ওযন করে দিলেন এবং আমার পক্ষে ঝুঁকিয়ে দিলেন। আমি রওনা হলাম।
যখন
আমি পিছন ফিরেছি তখন তিনি বললেন, জাবিরকে আমার কাছে ডাক। আমি
ভাবলাম, এখন হয়তো উটটি আমাকে ফিরিয়ে
দেবেন। আর আমার কাছে এর চাইতে অপছন্দনীয় আর কিছুই ছিল না। তিনি বললেন তোমার উটটি
নিয়ে যাও এবং তার মূল্যও তোমার।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১১. জাহিলী যুগে যে সকল বাজার ছিল এরপর ইসলামী যুগে সেগুলোতে লোকদের বেচাকেনা
করা
১৯৬৮.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উকায, মাজান্না ও যুল-মাজায জাহিলী
যুগের বাজার ছিল, ইসলামের আবির্ভাবের পরে
লোকেরা তথায় ব্যাবসা করা গুনাহের কাজ মনে করল। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ তা’আলা
নাযিল করলেনঃ তোমাদের উপর কোন গুনাহ নাই (অর্থাৎ) হাজ্জের (হজ্জের) মওসুমে। ইবনু
আব্বাস (রাঃ) এরূপ পড়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১২. অতি পিপাসাকাতর অথবা চর্মরোগে আক্রান্ত উট ক্রয় করা। হায়িম অর্থ সকল বিষয়ে
মধ্যপন্থা বিরোধী
১৯৬৯.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আমর ইবনু দ্বীনার (রহঃ) বলেন, এখানে নাওওয়াস নামক এক
ব্যাক্তি ছিল। তার নিকট অতি পিপাসা রোগে আক্রান্ত একটি উট ছিল। ইবনু উমর (রাঃ) তার
শরীকের কাছ থেকে সে উটটি কিনে নেন। পরে তার শরীক তার নিকট উপস্থিত হলে বলল, সে উটটি বিক্রি করে দিয়েছি।
নাওওয়াস জিজ্ঞাসা করলেন, কার কাছে বিক্রি করেছ? সে বলল, এমন আকৃতির এক বৃদ্ধের কাছে।
নাওওয়াস বলে উঠলেন, আরে কি সর্বনাশ! আল্লাহর কসম, তিনি তো ইবনু উমর (রাঃ)
ছিলেন। এরপর নাওওয়াস তাঁর নিকট এলেন এবং বললেন, আমার শরীক আপনাকে চিনতে না পেরে আপনার কাছে একটি
পিপাসাক্রান্ত উট বিক্রি করেছে। তিনি বললেন, তবে উটটি নিয়ে যাও। সে যখন উটটি নিয়ে যেতে উদ্যত হল, তখন তিনি বললেন, রেখে দাও। আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ফায়সালায় সন্তুষ্ট যে, রোগে কোন সংক্রমন নেই।
সুফয়ান (রহঃ), আমর (রহঃ) থেকে উক্ত হাদীসটি
শুনেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৩. ফিতনার সময় বা অন্য সময়ে অস্ত্র বিক্রি করা। ইমরান ইবন হুসাইন (রাঃ) ফিতনার সময়
অস্ত্র বিক্রি করাকে ভালো মনে করেন নি।
১৯৭০.
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে হুনায়নের যু্দ্ধে গেলাম। তখন তিনি আমাকে
একটি বর্ম দিয়েছিলেন। আমি সেটি বিক্রি করে তার মূল্য দ্বারা বনূ সালিমা গোত্রের
এলাকায় অবস্থিত একটি বাগান খরিদ করি। এ ছিল ইসলাম গ্রহনের পর আমার প্রথম স্থাবর
সম্পত্তি অর্জন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৪. আতর বিক্রেতা ও মেশক বিক্রি করা।
১৯৭১.
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সৎ সঙ্গী
ও অসৎ সঙ্গীর উদাহরন মেশক বিক্রেতা ও কর্মকারের
হাপরের ন্যায়। আতর বিক্রেতার থেকে তুমি রেহাই পাবেনা। হয় তুমি আতর খরিদ করবে, না হয় তার সুঘ্রান পাবে। আর
কর্মকারের হাপর হয় তোমার ঘর অথবা কাপড় পুড়িয়ে দেবে, না হয় তুমি তার দুর্গন্ধ পাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৫. শিংগা লাগানো
১৯৭২.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আবূ তায়বা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে শিঙ্গা লাগালেন, তখন তিনি তাকে এক সা’ পরিমান খেজুর দিতে আদেশ করলেন এবং তার
মালিককে তার দৈনিক পারিশ্রমিকের হার কমিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৫. শিংগা লাগানো
১৯৭৩.
মূসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগালেন এবং যে তাঁকে শিঙ্গা লাগিয়েছে, তাকে তিনি মজুরী দিলেন। যদি
তা হারাম হতো তবে তিনি তা দিতেন না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৬. পুরুষ এবং মহিলার জন্য যা পরিধান করা নিষিদ্ধ তার ব্যাবসা করা
১৯৭৪.
আদম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট একটি রেশমী চাঁদর পাঠিয়ে দেন, পরে তিনি তা তার গায়ে দেখতে
পেয়ে বলেন, আমি তা তোমাকে এ জন্য দেইনি
যে, তুমি তা পরিধান করবে। অবশ্য
তা তারাই পরিধান করে, যার (আখিরাতে) কোন অংশ নেই।
আমি তো তা তোমার কাছে এজন্যই পাঠিয়েছি যে, তুমি তা দিয়ে উপকৃত হবে অর্থাৎ তা
বিক্রি করবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৬. পুরুষ এবং মহিলার জন্য যা পরিধান করা নিষিদ্ধ তার ব্যাবসা করা
১৯৭৫.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন যে, তিনি একটি ছবিযুক্ত বালিশ
খরিদ করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখতে পেয়ে দরজায়
দাঁড়িয়ে গেলেন, ভিতরে প্রবেশ করলেন না। আমি
তাঁর চেহারা মুবারকে অসন্তুষ্টির ভাব দেখতে পেলাম। তখন বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি মহান
আল্লাহ্ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের কাছে তাওবা করছি। আমি কি অপরাধ করেছি? তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বালিশের কী সমাচার? আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আমি এটি আপনার জন্য খরিদ
করেছি, যাতে আপনি হেলান দিয়ে বসতে
পারেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই ছবিওয়ালাদেরকে কিয়ামতের
দিন আযাব দেওয়া হবে। তাদের বলা হবে, তোমরা যা বানিয়েছিলে, তা জীবিত করো। তিনি আরো বলেন, যে ঘরে এ সব ছবি থাকে, সে ঘরে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৭. পন্যের মালিক মূল্য বলার অধিক হকদার
১৯৭৬.
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে বানু নাজ্জার, আমাকে তোমাদের বাগানের মূল্য
বল। বাগানটিতে ঘরের ভাঙা চুরা অংশ ও খেঁজুর গাছ ছিল।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৮. (ক্রেতা-বিক্রেতার) খিয়ার কতক্ষন পর্যন্ত থাকবে?
১৯৭৭.
সাদাকা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষন
বিচ্ছিন্ন না হবে, ততক্ষন তাদের বেচা-কেনার
ব্যাপারে উভয়ের ইখতিয়ার থাকবে। আর যদি খিয়ারের শর্তে ক্রয়-বিক্রয় হয় (তাহলে পরেও
ইখতিয়ার থাকবে)। নাফি’ (রহঃ) বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) কোন পন্য ক্রয়ের পর তা পছন্দ হলে মালিক থেকে
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তেন।
খিয়ার خيار অর্থ ইখতিয়ার, অধিকার স্বাধীনতা। যে কোন
কাজ-কারবার ও লেন-দেনে উভয় পক্ষের স্বাধীনতা থাকা স্বতঃসিদ্ধ কথা। ক্রয়-বিক্রয়ে
সাধারনতঃ কয়েক ধরনের খিয়ার থকে। প্রথমতঃ ক্রয়-বিক্রয়ের প্রস্তাবে অপর পক্ষের গ্রহন
করা না করার ইখতিয়ার, একে خيار قبول খিয়ারুল কবুল বলে। দ্বিতীয়তঃ
লাভ লোকসান সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য ক্রয়-বিক্রয় কালীন শর্তারোপ করতঃ
অবকাশের সুযোগ গ্রহন করা। অধিকাংশের মতে এটা তিন দিনের মেয়াদে হয়। একে خيار شرط খিয়ারুশ শরত বলে।
باب كَمْ يَجُوزُ
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৮. (ক্রেতা-বিক্রেতার) খিয়ার কতক্ষন পর্যন্ত থাকবে?
১৯৭৮.
হাফস ইবনু উমর (রহঃ) ... হাকীম বিন হিযাম (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যতক্ষন
ক্রেতা-বিক্রেতা বিচ্ছিন্ন না হবে ততক্ষন তাদের খিয়ারের অধিকার থাকবে। আহমদ (রহঃ)
বাহয (রহঃ) সূত্রে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, হাম্মাম (রহঃ) বলেন, আমি আবূ তাইয়্যাহ (রহঃ) কে এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করেছিলাম। তিনি বললেন, আবদুল্লাহ ইবনু হারিছ যখন এই
হাদীসটি আবূ খলীলকে বর্ননা করেন, তখন আমি তার সঙ্গে ছিলাম।
পরিচ্ছেদঃ
১৩১৯. খিয়ারের সময়-সীমা নির্ধারন না করলে ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হবে কি?
১৯৭৯.
আবূ নু’মান (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত
ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের খিয়ার থাকবে অথবা এক পক্ষ অপর পক্ষকে বলবে, গ্রহন করে নাও। রাবী অনেক
সময় বলেছেন, অথবা খিয়ারের শর্তে
ক্রয়-বিক্রয় হলে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২০. ক্রেতা-বিক্রেতা বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের উভয়ের ইখতিয়ার থাকবে। ইবন
উমর (রাঃ), শুরাইহ্, শা’বী, তাউস ও ইবন আবু মুলায়কা (রঃ)
এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
১৯৮০.
ইসহাক (রহঃ) ... হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা বিচ্ছিন্ন
না হওয়া পর্যন্ত তাদের উভয়ের ইখতিয়ার থাকবে। যদি তারা উভয়ে সত্য কথা বলে ও (পন্যের
দোষত্রুটি) যথাযথ বর্ণনা করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে, আর যদি তারা মিথ্যা বলে ও
(দোষ) গোপন করে, তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত
বিনষ্ট হয়ে যাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২০. ক্রেতা-বিক্রেতা বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের উভয়ের ইখতিয়ার থাকবে। ইবন
উমর (রাঃ), শুরাইহ্, শা’বী, তাউস ও ইবন আবু মুলায়কা (রঃ)
এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
১৯৮১.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা প্রত্যেকের
একে অপরের উপর ইখতিয়ার থাকবে, যতক্ষন তারা বিচ্ছিন্ন না
হবে। তবে খিয়ার এর শর্তে ক্রয়-বিক্রয়ে (বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরও ইখতিয়ার থাকবে)।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২১. ক্রয়-বিক্রয় শেষে এক অপরকে ইখতিয়ার প্রদান করলে ক্রয়-বিক্রয় সাব্যস্ত হয়ে
যাবে।
১৯৮২.
কুতায়বা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন দু’ব্যাক্তি ক্রয়-বিক্রয়
করে, তখন তাদের উভয়ে যতক্ষন
বিচ্ছিন্ন না হবে অথবা একে-অপরকে ইখতিয়ার প্রদান না করবে, ততক্ষন তাদের উভয়ের ইখতিয়ার
থাকবে। এভাবে তারা উভয়ে যদি ক্রয়-বিক্রয় করে তবে তা সাব্যস্ত হয়ে যাবে। আর যদি
তারা উভয়ে ক্রয়-বিক্রয়ের পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তাদের কেউ যদি তা পরিত্যাগ না
করে তবে ক্রয়-বিক্রয় সাব্যস্ত হয়ে যাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২২. বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকলে ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হবে কি?
১৯৮৩.
মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে যতক্ষন
বিচ্ছিন্ন না হবে, ততক্ষন তাদের মাঝে কোন
ক্রয়-বিক্রয় সাব্যস্ত হবে না। অবশ্য ইখতিয়ার এর শর্তে ক্রয়-বিক্রয় হলে তা সাব্যস্ত
হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২২. বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকলে ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হবে কি?
১৯৮৪.
ইসহাক (রহঃ) ... হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতার ইখতিয়ার
থাকবে উভয়ের বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত। যদি তারা উভয়ে সত্য কথা বলে এবং (পন্যের
দোষগুন) যথাযথ বর্ণনা করে, তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত
দেওয়া হবে, আর যদি তারা মিথ্যা বলে এবং
গোপন করে, তবে হয়ত খুব লাভ করবে কিন্তু
তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত মুছে যাবে।
অপর
সনদে হাম্মাম ... আবদুল্লাহ ইবনু হারিছ (রহঃ) হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) সূত্রে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীসটি বর্ননা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৪. ক্রয়-বিক্রয়ে প্রতারনা করা দোষনীয়
بَابُ إِذَا اشْتَرَى شَيْئًا فَوَهَبَ مِنْ سَاعَتِهِ قَبْلَ أَنْ
يَتَفَرَّقَا وَلَمْ يُنْكِرِ الْبَائِعُ عَلَى الْمُشْتَرِي، أَوِ اشْتَرَى
عَبْدًا فَأَعْتَقَهُ
وَقَالَ طَاوُسٌ فِيمَنْ يَشْتَرِي السِّلْعَةَ عَلَى الرِّضَا ثُمَّ
بَاعَهَا وَجَبَتْ لَهُ، وَالرِّبْحُ لَهُ
وَقَالَ الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو،
عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم فِي سَفَرٍ فَكُنْتُ عَلَى بَكْرٍ صَعْبٍ لِعُمَرَ، فَكَانَ يَغْلِبُنِي
فَيَتَقَدَّمُ أَمَامَ الْقَوْمِ، فَيَزْجُرُهُ عُمَرُ وَيَرُدُّهُ، ثُمَّ يَتَقَدَّمُ
فَيَزْجُرُهُ عُمَرُ وَيَرُدُّهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعُمَرَ
" بِعْنِيهِ ". قَالَ هُوَ لَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ
" بِعْنِيهِ ". فَبَاعَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " هُوَ لَكَ يَا عَبْدَ
اللَّهِ بْنَ عُمَرَ تَصْنَعُ بِهِ مَا شِئْتَ
قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي عَبْدُ
الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ،
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ بِعْتُ مِنْ أَمِيرِ
الْمُؤْمِنِينَ عُثْمَانَ مَالاً بِالْوَادِي بِمَالٍ لَهُ بِخَيْبَرَ، فَلَمَّا
تَبَايَعْنَا رَجَعْتُ عَلَى عَقِبِي حَتَّى خَرَجْتُ مِنْ بَيْتِهِ، خَشْيَةَ
أَنْ يُرَادَّنِي الْبَيْعَ، وَكَانَتِ السُّنَّةُ أَنَّ الْمُتَبَايِعَيْنِ
بِالْخِيَارِ حَتَّى يَتَفَرَّقَا، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ فَلَمَّا وَجَبَ بَيْعِي
وَبَيْعُهُ رَأَيْتُ أَنِّي قَدْ غَبَنْتُهُ بِأَنِّي سُقْتُهُ إِلَى أَرْضِ
ثَمُودٍ بِثَلاَثِ لَيَالٍ وَسَاقَنِي إِلَى الْمَدِينَةِ بِثَلاَثِ لَيَالٍ
১৩২৩.
পরিচ্ছেদঃ পন্য খরিদ করে উভয়ের বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে সে মূহুর্তেই দান করে দিল, এবং ক্রেতার উপর বিক্রেতা
কোন আপত্তি করলনা অথবা একটি গোলাম খরিদ করে তাকে আযাদ করে দিল।
তাউস
(রঃ) বলেন, স্বেচ্ছায় পন্য ক্রয় করে পরে
তা বিক্রি করে দিলে তা সাব্যস্ত হয়ে যাবে এবং মুনাফা সেই (প্রথম ক্রেতা যে পরে
বিক্রি করল) পাবে।
হুমায়দী
(রঃ) ... ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রাসূলূল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। আমি (আমার পিতা) উমর (রাঃ) এর
একটি অবাধ্য জওয়ান উটের উপর সাওয়ার ছিলাম। উটটি আমার নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গিয়ে
যাচ্ছিল। উমর (রাঃ) তাকে তাড়িয়ে ফিরিয়ে আনছিলেন। আবার সে আগে বেড়ে যাচ্ছিল, আবার উমর (রাঃ) তাকে তাড়িয়ে
ফিরিয়ে আনছিলেন। তখন রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) কে
বললেন, এটি আমার কাছে বিক্রি করে
দাও। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্!, এটা আপনারই। রাসূলূল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এটি আমার কাছে বিক্রি কর। তখন তিনি সেটি রাসূলূল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বিক্রি করে দিলেন। রাসূলূল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবন উমর, এটি তোমার, তুমি এটি দিয়ে যা ইচ্ছা তা
কর।
লাইস (রঃ) ... আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমীরুল মু’মিনীন উসমান ইবন আফফান (রাঃ) এর খায়বারের যমীনের বিনিময়ে আমি ওয়াদীর যমীন তাঁর কাছে বিক্রি করলাম। আমরা যখন ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করলাম, তখন আমি পিছনের দিকে ফিরে তাঁর ঘর হতে এই ভয়ে বের হয়ে গেলাম যে, তিনি হয়তো আমার এ বিক্রয় রদ করে দিবেন। সে সময়ে এ রীতি প্রচলিত ছিল যে, বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকব। আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, যখন আমার ও তাঁর মাঝের ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত হয়ে গেল তখন আমি চিন্তা করে দেখলাম যে, আমি এভাবে তাঁকে ঠকিয়েছি। আমি তাঁকে ছামূদ ভূখন্ডের তিন দিনের পথের দূরত্বের পরিমান পৌঁছিয়ে দিয়েছি আর তিনি আমাকে মদীনার তিন দিনের পথের দূরত্বের পরিমান পৌঁছে দিয়েছেন।
১৯৮৫.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলেন যে, তাকে ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা
দেওয়া হয়। তখন তিনি বললেন, যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে
তখন বলে নিবে কোন প্রকার ধোঁকা নেই।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর
জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বানিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস
(রাঃ) বলেন আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয়
গাফেল করে রেখেছে।
১৯৮৬.
মুহাম্মাদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (পরবর্তী যামানায়) একদল সৈন্য
কা’বা (ধ্বংসের উদ্দেশ্যে) অভিযান চালাবে। যখন তারা বায়দা নামক স্থানে পৌঁছবে, তখন তাদের আগের-পিছের সকলকে
যমীনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাদের
অগ্রবাহিনী ও পশ্চাৎবাহিনী সকলকে কিভাবে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে, অথচ সে সেনাবাহিনীতে তাদের
বাজারের (পন্য সামগ্রী বহনকারী) লোকও থাকবে এবং এমন লোকও থাকবে যারা তাদের দলভুক্ত
নয়, তিনি বললেন, তাদের আগের-পিছের সকলকে
ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। তারপর (কিয়ামতের দিবসে) তাদের নিজেদের নিয়্যাত অনুযায়ী উত্থান
করা হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর
জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বানিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস
(রাঃ) বলেন আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয়
গাফেল করে রেখেছে।
১৯৮৭.
কুতায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারো জামাআতে সালাত
(নামায/নামাজ) আদায় নিজ ঘরের সালাতের চাইতে বিশ গুনেরও অধিক মর্তবা রয়েছে। কারন সে
যখন উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে মসজিদে আসে, সালাত আদায় ছাড়া অন্য কোন অভিপ্রায়ে আসে না, সালাত ছাড়া অন্য কিছুই তাকে
উদ্বুদ্ধ করেনা। এমতাবস্থায় তার প্রতি কদমে এক মর্তবা বৃদ্ধি করা হবে এবং একটি
গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর ফেরেশতাগন তোমাদের সে ব্যাক্তির জন্য (এ মর্মে)
দু’আ করতে থাকবেন, যতক্ষন সে যেখানে সালাত আদায়
করেছে, সেখানে থাকবেঃ আয় আল্লাহ, আপনি তার প্রতি অনুগ্রহ করুন, তার প্রতি রহম করুন। যতক্ষন
না সে তথায় উযূ ভঙ্গ করে, যতক্ষন না সে তথায় কাউকে
কষ্ট দেয়। তিনি আরো বলেছেন, তোমাদের সে ব্যাক্তি সালাতরত
গন্য হবে, যতক্ষন সে সালাতের অপেক্ষায়
থাকে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর
জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বানিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস
(রাঃ) বলেন আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয়
গাফেল করে রেখেছে।
১৯৮৮.
আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় বাজারে ছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি বললেন, হে আবূল কাসিম! রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালে তিনি বললেন, আমি তো তাকে ডেকেছি। তখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমার নামে নাম রাখ কিন্তু আমার কুনিয়াতে কুনিয়াত রেখো
না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর
জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বানিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস
(রাঃ) বলেন আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয়
গাফেল করে রেখেছে।
১৯৮৯.
মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, এক সাহাবী বাকী’ নামক স্থানে
আবূল কাসিম বলে (কাউকে) ডাক দিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তার দিকে তাকালেন। তিনি বললেন, আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করিনি।
তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার নামে নাম রাখ
কিন্তু আমার কুনিয়াতে কারো কুনিয়াত রেখোনা।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর
জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বানিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস
(রাঃ) বলেন আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয়
গাফেল করে রেখেছে।
১৯৯০.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা দাওসী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিনের এক অংশে বের হলেন, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেন নি এবং আমিও তাঁর সঙ্গে কথা বলি
নি। অবশেষে তিনি বানু কায়নুকা বাজারে এলেন। (সেখান থেকে ফিরে এসে) ফাতিমা (রাঃ) এর
ঘরের আঙিনায় বসে বললেন, এখানে খোকা [হাসান (রাঃ)]
আছে কি? এখানে খোকা আছে কি? ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে কিছুক্ষন
দেরী করালেন। আমার ধারনা হল, তিনি তাঁকে পুতির মালা
সোনা-রুপা ছাড়া, যা বাচ্চাদের পরানো হতো, পরাচ্ছিলেন বা তাকে গোসল
করালেন। তারপর তিনি দৌড়িয়ে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন এবং চুমু খেলেন। তখন তিনি বললেন, আয় আল্লাহ, তুমি তাঁকে (হাসানকে) মহব্বত
কর এবং তাঁকে যে ভালবাসবে তাকেও মহব্বত কর। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, আমার কাছে উবায়দুল্লাহ
বর্ননা করেছেন যে, তিনি নাফি ইবনু জুবায়রকে এক
রাকাত মিলিয়ে বিতর আদায় করতে দেখেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৫. বাজার সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা মদীনায় আগমনের পর
জিজ্ঞাসা করলাম, এমন কোন বাজার আছে কি, যেখানে ব্যাবসা বানিজ্য হয়? সে বলল, কায়নুকার বাজার আছে। আনাস
(রাঃ) বলেন আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমাকে বাজারের রাস্তা দেখিয়ে দাও। হযরত উমর (রাঃ) বলেন, আমাকে বাজারের ক্রয়-বিক্রয়
গাফেল করে রেখেছে।
১৯৯১.
ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তারা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে বানিজ্যিক দলের কাছ থেকে (পথিমধ্যে) খাদ্য
খরিদ করতেন। সে কারনে খাদ্য-দ্রব্য বিক্রয়ের স্থানে তা স্থানান্তর করার আগে, বনিক দলের কাছ থেকে ক্রয়ের
স্থলে বেচা-কেনা করতে নিষেধ করার জন্য তিনি তাদের কাছে লোক পাঠাতেন। রাবী বলেন, ইবনু উমর (রাঃ) আরো বর্ণনা
করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্নভাবে অধিকারে আনার আগে খরিদ করা পন্য বিক্রয় করতে নিষেধ
করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৬. বাজারে চীৎকার করা অপছন্দনীয়
১৯৯২.
মুহাম্মাদ ইবনু সিনান (রহঃ) ... আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু
আস (রাঃ) কে বললাম, আপনি আমাদের কাছে তাওরাতে
বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গুনাবলী বর্ননা করুন। তিনি
বললেন, আচ্ছা। আল্লাহর কসম, কুরআনে বর্ণিত তাঁর কিছু
গুনাবলী তাওরাতেও উল্লেখ করা হয়েছেঃ হে নাবী! আমি আপনাকে সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয়
প্রদর্শনকারী রূপে প্রেরন করেছি এবং উম্মীদের রক্ষক হিসাবেও। আপনি আমার বান্দা ও
আমার রাসূল। আমি আপনার নাম মুতাওয়াক্কিল (আল্লাহর উপর ভরসাকারী) রেখেছি। তিনি মন্দ
স্বভাবের নন, কঠোর হৃদয়ের নন এবং বাজারে
চীৎকারকারীও নন। তিনি অন্যায়কে অন্যায় দ্বারা প্রতিহত করেন
না বরং মাফ করে দেন, ক্ষমা করে দেন। মহান আল্লাহ্
তা’আলা তাঁকে ততক্ষন মৃত্যু দিবেন না, যতক্ষন না তাঁর দ্বারা বিকৃত মিল্লাতকে ঠিকপথে আনেন অর্থাৎ যতক্ষন
না তারা (আরববাসীরা) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর ঘোষনা দিবে। আর এ কালিমার মাধ্যমে
অন্ধ-চক্ষু, বধির-কর্ন ও আচ্ছাদিত হৃদয়
খুলে যাবে।
আবদুল
আযীয ইবনু আবূ সালামা (রহঃ) হিলাল (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ননায় ফুলাইহ (রহঃ) এর
অনুসরন করেছেন। সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু সালাম (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ননা করেছেন। আবূ
আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, যে সকল বস্তু আবরনের মধ্যে
থাকে, তাকেغُلْفٌ বলে। তার একবচনأَغْلَفُ যেমন, বলা হয়,سَيْفٌ أَغْلَفُ কোষবদ্ধ তরবারি।قَوْسٌ غَلْفَاءُ কোষবদ্ধ ধনুক।رَجُلٌ أَغْلَفُ খাতনা না করা পুরুষ।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৭. মেপে দেওয়ার দায়িত্ব বিক্রেতা ও দাতার উপর।
لِقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: (وَإِذَا كَالُوهُمْ أَوْ وَزَنُوهُمْ
يُخْسِرُونَ) يَعْنِي كَالُوا لَهُمْ وَوَزَنُوا لَهُمْ كَقَوْلِهِ:
(يَسْمَعُونَكُمْ) يَسْمَعُونَ لَكُمْ. وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اكْتَالُوا حَتَّى تَسْتَوْفُوا». وَيُذْكَرُ عَنْ عُثْمَانَ
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ
لَهُ: إِذَا بِعْتَ فَكِلْ، وَإِذَا ابْتَعْتَ فَاكْتَلْ
মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যখন তারা লোকদের মেপে দেয় অথবা ওযন করে দেয় তখন কম দেয়। (৮৩ : ৩) এখানে كَالُوهُمْ অর্থাৎ كَالُوا لَهُمْ এবং وَزَنُوهُمْ অর্থাৎ وَزَنُوا لَهُمْ যেমন বলা হয় يَسْمَعُونَكُمْ অর্থাৎ يَسْمَعُونَ لَكُمْ রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঠিকভাবে মেপে নিবে। উসমান (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, যখন তুমি বিক্রি করবে তখন মেপে দিবে আর যখন খরিদ করবে তখন মেপে নিবে।
১৯৯৩.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি খাদ্য খরিদ করবে, সে তা পুরোপুরি আয়ত্ত্বে না
এনে বিক্রি করবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৭. মেপে দেওয়ার দায়িত্ব বিক্রেতা ও দাতার উপর।
১৯৯৪.
আবদান (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) সূত্রে বর্নিত, (আমার
পিতা) আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু হারাম (রাঃ) ঋনী অবস্থায় মারা যান। পাওনাদারেরা যেন
তাঁর কিছু ঋন ছেড়ে দেয়, এজন্য আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সাহায্য চাইলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে কিছু ঋন ছেড়ে দিতে বললে, তারা তা করল না। তখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, যাও, তোমার প্রত্যেক ধরনের
খেজুরকে আলাদা আলাদা কর রাখ। আজওয়া আলাদা এবং আযকা যায়দ আলাদা করে রাখ। পরে আমাকে
খবর দিও। [জাবির (রাঃ) বলেন] আমি তা করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে খবর দিলাম। তিনি এসে খেজুরের (স্তুপ এর) উপরে বা তার মাঝখানে বসলেন।
তারপর বললেন, পাওনাদারদের মেপে দাও। আমি
তাদের মেপে দিতে লাগলাম, এমনকি তাদের পাওনা পুরোপুরী
দিয়ে দিলাম। আর আমার খেজুর এরূপ থেকে গেল, যেন এ থেকে কিছুই কমেনি।
ফিরাস
(রহঃ) শা’বী (রহঃ) সূত্রে জাবির (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ পর্যন্ত মেপে দিতে থাকলেন যে, তাদের ঋন পরিশোধ করে দিলেন।
হিশাম (রহঃ) ওহাব (রহঃ) সূত্রে জাবির (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন গাছ থেকে খেজুর কেটে নাও এবং পুরোপুরী আদায় করে দাও।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৮. মেপে দেওয়া মুস্তাহাব
১৯৯৫.
ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের খাদ্য মেপে
নিবে, তাতে তোমাদের জন্য বরকত হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৯. রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) এর সা’ ও মুদ এর বরকত। এ প্রসঙ্গে আয়িশা ছিদ্দিকা (রাঃ) সূত্রে
হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
১৯৯৬.
মূসা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)
মক্কাকে হারাম ঘোষনা করেছেন ও তার জন্য দু’আ করেছেন। আমি মদিনাকে হারাম ঘোষনা
করেছি, যেমন ইবরাহীম (আলাইহিস
সালাম) মক্কাকে হারাম ঘোষনা করেছেন এবং আমি মদিনার এক মুদ ও সা’ এর জন্য দুআ
করেছি। যেমন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কার জন্য দুআ করেছিলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩২৯. রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) এর সা’ ও মুদ এর বরকত। এ প্রসঙ্গে আয়িশা ছিদ্দিকা (রাঃ) সূত্রে
হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
১৯৯৭.
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইয়া আল্লাহ, আপনি তাদের মাপের পাত্রে
বরকত দিন এবং তাদের সা’ ও মুদ-এ বরকত দিন অর্থাৎ মদিনাবাসীদের।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩০. খাদ্য বিক্রি ও মজুতদারী সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়।
১৯৯৮.
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, যারা অনুমানে (না মেপে) খাদ্য
খরিদ করে নিজের স্থানে পৌঁছানোর আগেই বিক্রি করতো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে আমি
দেখেছি যে, তাদেরকে মারা হতো।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩০. খাদ্য বিক্রি ও মজুতদারী সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়।
১৯৯৯.
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য (খরিদ করে) পুরোপুরী আয়ত্বে না এনে বিক্রি করতে নিষেধ
করেছেন। রাবী তাউস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে
জিজ্ঞাসা করলাম, এ কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বললেন, এ এভাবে হয়ে থাকে যে, দিরহাম এর বিনিময়ে দিরহাম
আদান-প্রদান হয়, অথচ পন্যদ্রব্য অনুপস্থিত
থাকে। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আয়াতে বর্ণিতمُرْجَئُونَ অর্থ যারা মহান আল্লাহ্
তা’আলার নির্দেশ পালনে বিলম্বিত করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩০. খাদ্য বিক্রি ও মজুতদারী সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়।
২০০০.
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খাদ্য খরিদ করে কেউ যেন তা
হস্তগত করার পূর্বে বিক্রি না করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩০. খাদ্য বিক্রি ও মজুতদারী সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়।
২০০১.
আলী (রহঃ) ... মালিক ইবনু আওস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি ঘোষনা দিলেন যে, কে সারফ এর বেচা-কেনা (দিরহাম এর বিনিময়ে দ্বীনার) করবে? তালহা (রাঃ) বললেন, আমি করব। অবশ্য আমার পক্ষের
বিনিময় প্রদানে আমার হিসাব রক্ষক গা’বা (এলাকা) থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত দেরী হবে।
(বর্ননাকারী) সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, আমি যুহরী (রহঃ) থেকে এটুকু
মনে রেখেছি, এর থেকে বেশী নয়। এরপর যুহরী
(রহঃ) বলেন, মালিক ইবনু আওস (রাঃ) আমাকে
বলেছেন যে, তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)
কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ননা করতে শুনেছেন যে, তিনি বলেছেন, নগদ হাতে হাতে বিনিময় ছাড়া
সোনার বদলে সোনা বিক্রি, গমের বদলে গম বিক্রি, খেজুরের বদলে খেজুর বিক্রি, যবের বদলে যব বিক্রি করা সুদ
হিসাবে গণ্য।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩১. অধিকারে আনার পূর্বে খাদ্য বিক্রি করা এবং যে পন্য নিজের নিকট নেই তা বিক্রি
করা
২০০২.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিষেধ করেছেন, তা হল অধিকারে আনার পূর্বে খাদ্য বিক্রয় করা। ইবনু আব্বাস
(রাঃ) বলেন, আমি মনে করি, প্রত্যেক পন্যের ব্যাপারে
অনুরূপ নির্দেশ প্রযোজ্য হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩১. অধিকারে আনার পূর্বে খাদ্য বিক্রি করা এবং যে পন্য নিজের নিকট নেই তা বিক্রি
করা
২০০৩.
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খাদ্য খরিদ করে পুরোপুরী
মেপে না নিয়ে রাবী ইসমাঈল (রহঃ) আরো বলেন, খাদ্যদ্রব্য খরিদ করে নিজের অধিকারে না এনে কেউ যেন তা
বিক্রি না করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩২. অনুমানে পরিমান ঠিক করে খাদ্যদ্রব্য খরিদ করে নিজের ঘরে না এনে তা বিক্রয়
করা যিনি বৈধ মনে করেননা এবং এরুপ করা শাস্তিযোগ্য।
২০০৪.
ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে দেখেছি যে, লোকেরা খাদ্য আনুমানিক পরিমানের ভিত্তিতে বেচা-কেনা করত, পরে তা সেখানেই নিজেদের ঘরে
তুলে নেওয়ার আগেই বিক্রি করলে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হতো।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৩. যদি কোন ব্যক্তি দ্রব্য সামগ্রী বা জানোয়ার খরিদ করে হস্তগত করার পূর্বে তা
বিক্রতার নিকটই রেখে দেয়, এরপর বিক্রেতা সে পন্য
বিক্রি করে দেয় বা বিক্রেতা মারা যায়। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, যদি বিক্রয়কালে বিক্রিত পশু
জীবিত ও যথাযথ অবস্থায় থাকে (এবং পরে তার কোন ক্ষতি হয়) তবে তা ক্রেতার মাল নষ্ট
হয়েছে বলে গন্য হবে।
২০০৫.
ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, এমন দিন খুব কমই গিয়েছে, যে দিন সকালে বা বিকালে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার পিতা) আবূ বকর (রাঃ) এর ঘরে
আসেন নি। যখন তাঁকে (মহান আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে) মদিনার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার
অনুমতি দেওয়া হল, তখন তিনি একদিন দুপুরের সময়
আগমন করায় আমরা শংকিত হয়ে পড়লাম। আবূ বকর (রাঃ) কে এ সংবাদ জানানো হলে তিনি বলে
উঠলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বিশেষ কোন ঘটনার কারনেই অসময়ে আগমন করেছেন। যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন, তখন তিনি আবূ বকর (রাঃ)-কে
বললেন, যারা তোমার কাছে আছে তাদের
সরিয়ে দাও।
আবূ
বকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরা তো
আমার দুই কন্যা ‘আয়িশা ও আসমা’। তিনি বললেন, তুমি কি জানো, আমাকে তো বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আপনার সফর সঙ্গী হওয়া আমার
কাম্য ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি আমার সফর সঙ্গী হবে।
আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে
দুটি উটনী রয়েছে, যা আমি হিজরতের জন্য
প্রস্তুত রেখেছি। এর একটি আপনি গ্রহন করুন। তিনি বললেন, আমি মূল্যের বিনিময়ে তা
গ্রহন করলাম।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৪. কেউ যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে, দর-দাম করার উপর দর-দাম না
করে যতক্ষন সে তাকে অনুমতি না দেয় বা ত্যাগ না করে।
২০০৬.
ইসমাঈল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন তার ভাইয়ের
ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয় না করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৪. কেউ যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে, দর-দাম করার উপর দর-দাম না
করে যতক্ষন সে তাকে অনুমতি না দেয় বা ত্যাগ না করে।
২০০৭.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসী কর্তৃক বিক্রয় করা থেকে নিষেধ করেছেন
এবং তোমরা প্রতারনামূলক দালালী করবে না। কোন ব্যাক্তি যেন তার ভাইয়ের
ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে। কেউ যেন তার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর
প্রস্তাব না দেয়। কোন মহিলা যেন তার বোনের (সতীনের) তালাকের দাবী না করে, যাতে সে তার পাত্রে যা কিছু
আছে, তা নিজেই নিয়ে নেয়।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৫. নিলামের মাধ্যমে বিক্রি। আতা (রঃ) বলেন, আমি লোকদের (সাহাবায়ে কিরামকে) দেখেছি যে, তারা গনীমতের মাল অধিক মূল্য
দানকারীর কাছে বিক্রি করাতে দোষ মনে করতেন না।
২০০৮.
বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্নিত, এক ব্যাক্তি তার মৃত্যুর পর
তার গোলাম আযাদ হবে বলে ঘোষনা দিল। তারপর সে অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়ল। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোলামটিকে নিয়ে নিলেন এবং বললেন, কে একে আমার নিকট থেকে খরিদ
করবে? নুআঈম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)
(তাঁর কাছ থেকে) সেটি এত এত মূল্যে খরিদ করলেন। তিনি গোলামটি তার হাওলা করে দিলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৬. প্রতারনামূলক দালালী এবং এরুপ ক্রয়-বিক্রয় জায়িজ নয় বলে যিনি অভিমত ব্যক্ত
করেছেন। ইবন আবু আওফা (রাঃ) বলেন, দালাল হলো সুদখোর, খিয়ানতকারী। আর দালালী হলো
প্রতারনা, যা বাতিল ও অবৈধ।
রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, প্রতারনার ঠিকানা জাহান্নাম।
যে এরুপ আমল করে যা আমাদের শরীআতের পরিপন্থী, তা পরিত্যাজ্য।
২০০৯.
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতারনামূলক দালালী থেকে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৭. প্রতারনামূলক বিক্রি এবং গর্ভস্থিত বাচ্চা গর্ভ থেকে খালাস হওয়ার পর তা
গর্ভবতী হয়ে বাচ্চা প্রসব করা পর্যন্ত মেয়াদে বিক্রি।
২০১০.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম গর্ভস্থিত বাচ্চার গর্ভের প্রসবের মেয়াদের উপর বিক্রি নিষেধ
করেছেন। এ এক ধরনের বিক্রয়, যা জাহিলিয়াতের যুগে প্রচলিত
ছিল। কেউ এ শর্তে উটনী ক্রয় করত যে, এই উটনীটি প্রসব করবে পরে ঐ শাবক তার গর্ভ প্রসব করার পর তার
মূল্য দেওয়া হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৮. স্পর্শের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এরুপ
বেচা-কেনা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০১১.
সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুনাবাযা পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন। তা হল, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ক্রেতা
কাপড়টি উল্টানো-পাল্টানো অথবা দেখে নেওয়ার আগেই বিক্রেতা কর্তৃক তা ক্রেতার দিকে
নিক্ষেপ করা। আর তিনি মুলামাসা পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় করতেও নিষেধ করেছেন। মুলামাসা
হল কাপড়টি না দেখে স্পর্শ করা (এতেই বেচা-কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলে গন্য হতো।)
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৮. স্পর্শের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এরুপ
বেচা-কেনা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০১২.
কুতায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, দুই ধরনের পোশাক পরিধান করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তা হলো
একটি কাপড় শরীরে জড়িয়ে তার এক পার্শ্ব কাঁধের উপর তুলে দেওয়া এবং দুই ধরনের
বেচা-কেনা হতে নিষেধ করা হয়েছে, স্পর্শের এবং নিক্ষেপের
বেচা-কেনা।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৯. পারস্পরিক নিক্ষেপের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করা। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এরুপ
ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন।
২০১৩.
ইসমাঈল (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পর্শ ও
নিক্ষেপের পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৩৯. পারস্পরিক নিক্ষেপের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করা। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এরুপ
ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন।
২০১৪.
আইয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ধরনের পোশাক পরিধান এবং স্পর্শ ও নিক্ষেপ এরূপ দু’ধরনের
(পদ্ধতিতে) বেচা-কেনা নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪০. বিক্রেতার প্রতি নিষেধ যে, উটনী, গাভী ও বকরী এবং প্রত্যেক
দুগ্ধবতী জন্তুর দুধ সে যেন জমা করে না রাখে। মুসাররাত সে জন্তুকে বলা হয়, যার দুধ কয়েক দিন দোহন না
করে আটকিয়ে এবং জমা করে রাখা হয়। তাসরিয়ার মূল অর্থ: পানি আটকিয়ে রাখা। এ থেকে বলা
হয় صَرَّيْتُ الْمَاءَ আমি পানি আটকিয়ে রেখেছি বলবে, যখন তুমি পানি আটকিয়ে রাখবে।
২০১৫.
ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা উটনী ও বকরীর দুধ
(স্তন্যে) আটকিয়ে রেখ না। যে ব্যাক্তি এরূপ পশু খরিদ করবে, সে দুধ দোহনের পরে দু’টি
অধিকারের যেটি তার পক্ষে ভালো মনে করবে, তাই করতে পারবে। যদি সে ইচ্ছা করে তবে ক্রীত পশুটি রেখে
দিবে আর যদি ইচ্ছা করে তবে তা ফিরত দিবে এবং এর সাথে এক সা’ পরিমান খেজুর দিবে।
আবূ
সালিহ মুজাহিদ, ওয়ালীদ ইবনু রাবাহ ও মূসা
ইবনু ইয়াসার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে এক সা’ খেজুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। কেউ কেউ ইবনু সীরীন (রহঃ) সূত্রে এক সা’
খাদ্যের কথা বলেছেন্ এবং ক্রেতার জন্য তিন দিনের ইখতিয়ার থাকবে। আর কেউ কেউ ইবনু
সীরীন (রহঃ) সূত্রে এক সা’ খেজুরের কথা বলেছেন, তবে তিন দিনের ইখতিয়ারের কথা উল্লেখ করেন নি। [ইমাম বুখারী
(রহঃ)] বলেন, অধিকাংশ বর্ননায় খেজুরের
উল্লেখ রয়েছে)।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪০. বিক্রেতার প্রতি নিষেধ যে, উটনী, গাভী ও বকরী এবং প্রত্যেক
দুগ্ধবতী জন্তুর দুধ সে যেন জমা করে না রাখে। মুসাররাত সে জন্তুকে বলা হয়, যার দুধ কয়েক দিন দোহন না
করে আটকিয়ে এবং জমা করে রাখা হয়। তাসরিয়ার মূল অর্থ: পানি আটকিয়ে রাখা। এ থেকে বলা
হয় صَرَّيْتُ الْمَاءَ আমি পানি আটকিয়ে রেখেছি বলবে, যখন তুমি পানি আটকিয়ে রাখবে।
২০১৬.
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি (স্তনে) দুধ
আটকিয়ে রাখা বকরী খরিদ করে তা ফেরত দিতে চায়, সে যেন এর সঙ্গে এক সা’ পরিমান খেজুরও দেয়। আর নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (পন্য খরিদ করার জন্য) বনিক দলের সাথে (শহরে
প্রবেশের পূর্বে পথিমধ্যে) সাক্ষাৎ করতে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪০. বিক্রেতার প্রতি নিষেধ যে, উটনী, গাভী ও বকরী এবং প্রত্যেক
দুগ্ধবতী জন্তুর দুধ সে যেন জমা করে না রাখে। মুসাররাত সে জন্তুকে বলা হয়, যার দুধ কয়েক দিন দোহন না
করে আটকিয়ে এবং জমা করে রাখা হয়। তাসরিয়ার মূল অর্থ: পানি আটকিয়ে রাখা। এ থেকে বলা
হয় صَرَّيْتُ الْمَاءَ আমি পানি আটকিয়ে রেখেছি বলবে, যখন তুমি পানি আটকিয়ে রাখবে।
২০১৭.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা (পন্যবাহী) কাফেলার
সাথে (শহরে প্রবেশের পূর্বে) সাক্ষাৎ করবে না। তোমাদের কেউ যেন
কারো ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে। তোমরা প্রতারনামূলক দালালী করবে না।
শহরবাসী তোমাদের কেউ যেন গ্রামবাসীদের পক্ষে বিক্রয় না করে। তোমরা বকরীর দুধ
আটকিয়ে রাখবে না। যে এরূপ বকরী খরিদ করবে, সে দুধ দোহনের পরে এ দু’টির মধ্যে যেটি ভালো মনে করবে, তা করতে পারে। সে যদি এতে
সন্তুষ্ট হয়, তবে বকরী রেখে দিবে, আর যদি সে তা অপছন্দ করে তবে
ফেরৎ দিবে এবং এক সা’ পরিমান খেজুর দিবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪১. দুধ আটকিয়ে রাখা পশুর ক্রেতা ইচ্ছা করলে ফেরত দিতে পারে এবং দোহিত দুধের
বিনিময়ে এক সা’ পরিমান খেজুর দিবে।
২০১৮.
মুহাম্মাদ ইবনু আমর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি (স্তনে) দুধ
আটকিয়ে রাখা বকরী খরিদ করে, তবে দোহনের পরে যদি ইচ্ছা
করে তবে সেটি রেখে দেবে আর যদি অপছন্দ করে তবে দোহিত দুধের বিনিময়ে এক সা’ খেজুর
দিবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪২. ব্যভিচারী গোলামের বিক্রয়। (কাযী) শুরায়হ (রঃ) বলেন, ক্রেতা ইচ্ছা করলে
ব্যভিচারের দোষের কারনে গোলাম ফেরত দিতে পারে।
২০১৯.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি বাঁদী ব্যভিচার করে এবং
তার ব্যভিচার প্রমানিত হয়, তবে তাকে বেত্রাঘাত করবে, আর তিরস্কার করবে না। তারপর
যদি আবার ব্যভিচার করে তাকে বেত্রাঘাত করবে, তিরস্কার করবে না। এরপর যদি তৃতীয়বার ব্যভিচার করে তবে তাকে
বিক্রি করে দিবে, যদি পশমের রশির (ন্যায়
সামান্য বস্তুর) বিনিময়েও হয়।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪২. ব্যভিচারী গোলামের বিক্রয়। (কাযী) শুরায়হ (রঃ) বলেন, ক্রেতা ইচ্ছা করলে
ব্যভিচারের দোষের কারনে গোলাম ফেরত দিতে পারে।
২০২০.
ইসমাঈল (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবিবাহিতা দাসী যদি ব্যভিচার করে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হলে তিনি বলেন, যদি সে ব্যভিচার করে, তবে তাকে বেত্রাঘাত কর। আবার
যদি সে ব্যভিচার করে আবার বেত্রাঘাত কর। এরপর যদি ব্যভিচার করে তবে তাকে রশির
বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে দাও। রাবী ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, একথা তৃতীয় বারের না চতুর্থ
বারের পর বলেছেন, তা আমার ঠিক জানা নাই।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৩. মহিলার সাথে ক্রয়-বিক্রয়
২০২১.
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে
প্রবেশ করলেন তখন আমি তাঁর নিকট (বারীরা নাম্নী দাসীর খরিদ সংক্রান্ত ঘটনা) উল্লেখ
করলাম। তিনি বললেন, তুমি খরিদ কর এবং আযাদ করে
দাও। কেননা, যে আযাদ করবে ওয়ালা (আযাদ
সূত্রে উত্তরাধিকার) তারই। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিকালের দিকে
(মসজিদে নববীতে) দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ্ তা’আলার যথাযথ প্রশংসা বর্ননা করে বললেন, লোকদের কী হল যে, তারা এরূপ শর্তারোপ করে, যা মহান আল্লাহ্ তা’আলার
কিতাবে নেই। কোন ব্যাক্তি যদি এমন শর্তারোপ করে, যা মহান আল্লাহ্ তা’আলার কিতাবে নেই, তা বাতিল, যদিও সে শত শত শর্তারোপ করে।
মহান আল্লাহ্ তা’আলার শর্তই সঠিক ও সুদৃঢ়।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৩. মহিলার সাথে ক্রয়-বিক্রয়
২০২২.
হাসসান ইবনু আবূ আব্বাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্নিত, আয়িশা (রাঃ) বারীরার দরদাম
করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ)-এর উদ্দেশ্যে বের
হয়ে যান। যখন ফিরে আসেন তখন আয়িশা (রাঃ) তাঁকে বললেন যে, তারা (মালিক পক্ষ) ওয়ালা
(আযাদ সূত্রে উত্তরাধিকার) এর শর্ত ছাড়া বিক্রি করতে রাযী নয়। নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওয়ালা তো তারই, যে আযাদ করে। রাবী হাম্মাম
(রহঃ) বলেন, আমি নাফি (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা
করলাম, বারীরার স্বামী আযাদ ছিল, না দাস? তিনি বললেন, আমি কি করে জানব?
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৪. পারিশ্রমিক ছাড়া শহরবাসী কি গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় করতে পারে? সে কি তার সাহায্য এবং উপকার
করতে পারে? রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের
সাহায্য কামনা করে, তখন সে যেন তার উপকার করে। এ
বিষয়ে আতা (রঃ) অনুমতি প্রদান করেছেন।
২০২৩.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... জারীর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদুর
রাসূলল্লাহ’–এ কথা সাক্ষ্য দেওয়ার, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করার, যাকাত দেওয়ার, আমীরের কথা শোনার ও মেনে
চলার এবং প্রত্যেক মুসলমানের হিত কামনা করার উপর বায়আত করেছিলাম।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৪. পারিশ্রমিক ছাড়া শহরবাসী কি গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় করতে পারে? সে কি তার সাহায্য এবং উপকার
করতে পারে? রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের
সাহায্য কামনা করে, তখন সে যেন তার উপকার করে। এ
বিষয়ে আতা (রঃ) অনুমতি প্রদান করেছেন।
২০২৪.
সালত ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা পন্যবাহী কাফেলার সাথে
(শহরে প্রবেশের পূর্বে সস্তায় পন্য খরিদের উদ্দেশ্যে) সাক্ষাৎ করবে
না এবং শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে। রাবী তাউস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে
জিজ্ঞাসা করলাম, শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর
পক্ষে বিক্রয় না করে, তাঁর একথার অর্থ কী? তিনি বললেন, তার হয়ে যেন সে প্রতারনামূলক
দালালী না করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৫. পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর বিক্রয় করা, যারা নিষিদ্ধ মনে করেন।
২০২৫.
আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ্ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর
বিক্রয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। ইবনু আব্বাস
(রাঃ)-ও এই মত পোষন করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৬. দালালীর মাধ্যমে শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে। ইবন সীরীন ও
ইবরাহীম (নাখয়ী) (রঃ) ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য তা নাজায়েজ বলেছেন। ইবরাহীম (রঃ)
বলেন, আরববাসী বলে, بِعْ لِي ثَوْبًا তারা এর অর্থ গ্রহন করে খরিদ
করার, অর্থাৎ আমাকে
একটি কাপড় খরিদ করে দাও
২০২৬.
মক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ যেন তার ভাইয়ের
কেনা-বেচার উপরে খরিদ না করে। আর তোমরা প্রতারনামূলক দালালী করবে না এবং শহরবাসী
যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রি না করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৬. দালালীর মাধ্যমে শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে। ইবন সীরীন ও
ইবরাহীম (নাখয়ী) (রঃ) ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য তা নাজায়েজ বলেছেন। ইবরাহীম (রঃ)
বলেন, আরববাসী বলে, بِعْ لِي ثَوْبًا তারা এর অর্থ গ্রহন করে খরিদ
করার, অর্থাৎ আমাকে
একটি কাপড় খরিদ করে দাও
২০২৭.
মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর
বিক্রয় করা থেকে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৭. (শহরে প্রবেশের পূর্বে কমমূল্যে খরিদের আশায়) বনিক দলের সাথে সাক্ষাৎ করা
নিষেধ। এরুপ ক্রয় করা প্রত্যাখ্যাত। কেননা এরুপ ক্রেতা অন্যায়কারী ও অপরাধী হবে, যদি তা জ্ঞাত থাকে।
ক্রয়-বিক্রয়ে এ এক রকমের ধোঁকা, আর ধোঁকা জায়িয নয়।
২০২৮.
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, শহরে প্রবেশের পূর্বে বনিক
দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা এবং গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর বিক্রয় করা
থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৭. (শহরে প্রবেশের পূর্বে কমমূল্যে খরিদের আশায়) বনিক দলের সাথে সাক্ষাৎ করা
নিষেধ। এরুপ ক্রয় করা প্রত্যাখ্যাত। কেননা এরুপ ক্রেতা অন্যায়কারী ও অপরাধী হবে, যদি তা জ্ঞাত থাকে।
ক্রয়-বিক্রয়ে এ এক রকমের ধোঁকা, আর ধোঁকা জায়িয নয়।
২০২৯.
আইয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) ... তাউস (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে
গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসী বিক্রয় করবে না, এ উক্তির অর্থ কি, তা জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তার পক্ষে দালালী করবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৭. (শহরে প্রবেশের পূর্বে কমমূল্যে খরিদের আশায়) বনিক দলের সাথে সাক্ষাৎ করা
নিষেধ। এরুপ ক্রয় করা প্রত্যাখ্যাত। কেননা এরুপ ক্রেতা অন্যায়কারী ও অপরাধী হবে, যদি তা জ্ঞাত থাকে।
ক্রয়-বিক্রয়ে এ এক রকমের ধোঁকা, আর ধোঁকা জায়িয নয়।
২০৩০.
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, যে ব্যাক্তি স্তনে দুধ
আটকিয়ে রাখা বকরী-গাভী বা উটনী খরিদ করে (তা ফেরত দিলে) সে যেন তার সাথে এক
সা’(খেজুরও) ফেরত দেয়। তিনি আরো বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বণীক দলের সাথে
(শহরে প্রবেশের পূর্বে) সাক্ষাৎ করতে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৭. (শহরে প্রবেশের পূর্বে কমমূল্যে খরিদের আশায়) বনিক দলের সাথে সাক্ষাৎ করা
নিষেধ। এরুপ ক্রয় করা প্রত্যাখ্যাত। কেননা এরুপ ক্রেতা অন্যায়কারী ও অপরাধী হবে, যদি তা জ্ঞাত থাকে।
ক্রয়-বিক্রয়ে এ এক রকমের ধোঁকা, আর ধোঁকা জায়িয নয়।
২০৩১.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ কারো
ক্রয়-বিক্রয়ের উপর যেন ক্রয়-বিক্রয় না করে এবং তোমরা পন্য ক্রয় করো না তা বাজারে
উপস্থাপিত না করা পর্যন্ত।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৮. (বনিক দলের সাথে) সাক্ষাতের সীমা
২০৩২.
মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, আমরা বণিক দলের সঙ্গে
সাক্ষাৎ করে তাদের থেকে খাদ্য খরিদ করতাম। নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্যের বাজারে পৌঁছানোর পূর্বে আমাদের তা খরিদ
করতে নিষেধ করেছেন। আবূ আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেন, তা হল বাজারের প্রান্ত সীমা।
উবায়দুল্লাহ (রহঃ) এর বর্ণিত হাদীসে এ বর্ণনা রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৮. (বনিক দলের সাথে) সাক্ষাতের সীমা
২০৩৩.
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, লোকেরা বাজারের প্রান্ত
সীমায় খাদ্য খরিদ করে সেখানেই বিক্রি করে দিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম স্থানান্তর না করে সেখানেই বিক্রি করতে তাদের নিষেধ করলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৯. ক্রয়-বিক্রয়ে এমন শর্ত করা যা অবৈধ
২০৩৪.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, বারীরা (রাঃ) আমার কাছে এসে
বলল, আমি আমার মালিক পক্ষের সাথে
নয় উকিয়া দেওয়ার শর্তে মুকাতাবা* করেছি। প্রতি বছর যা থেকে এক উকিয়া* করে দেওয়া
হবে। আপনি (এ ব্যাপারে) আমাকে সাহায্য করুন। আমি বললাম, যদি তোমার মালিক পক্ষ পছন্দ
করে যে, আমি তাদের একবারেই তা পরিশোধ
করব এবং তোমার ওয়ালা (আযাদ সূত্রে উত্তরাধিকার) এর অধিকার আমার হবে, তবে আমি তা করব। তখন বারীরা
(রাঃ) তার মালিকদের নিকট গেল এবং তাদের তা বলল। তারা তা অস্বীকার করল। বারীরা
(রাঃ) তাদের নিকট থেকে (আমার কাছে) এলো। আর তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সে বলল আপনার কথা তাদের কাছে পেশ করেছিলাম।
কিন্তু তারা নিজেদের জন্য ওয়ালার অধিকার সংরক্ষন ছাড়া রাযী হয়নি।
নবী
করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনলেন, আয়িশা (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তা
সবিস্তারে জানালেন। তিনি বললেন, তুমি তাকে নিয়ে নাও এবং
তাদের জন্য ওয়ালার শর্ত মেনে নাও। কেননা, ওয়ালা এর হক তারই, যে আযাদ করে। আয়িশা (রাঃ) তাই করলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসমুক্ষে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ্ তা’আলার হামদ ও
সানা বর্ননা করলেন।
তারপর
বললেন, লোকদের কী হল যে, তারা এমন শর্ত আরোপ করে, যা মহান আল্লাহ্ তা’আলার
বিধানে নেই। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বিধানে যে শর্তের উল্লেখ নেই, তা বাতিল বলে গন্য হবে, শত শর্ত হলেও। মহান আল্লাহ্
তা’আলার ফায়সালাই সঠিক, মহান আল্লাহ্ তা’আলার শর্তই
সুদৃঢ়। ওয়ালার হক তো তারই, যে আযাদ করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৪৯. ক্রয়-বিক্রয়ে এমন শর্ত করা যা অবৈধ
২০৩৫.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, আয়িশা (রাঃ) একটি দাসী খরিদ
করে তাকে আযাদ করার ইচ্ছা করেন। দাসীটির মালিক পক্ষ বলল, দাসীটি এ শর্তে বিক্রি করব
যে, তার ওয়ালার (আযাদ সূত্রে
উত্তরাধিকার) হক আমাদের থাকবে। তিনি একথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন, এতে তোমার বাধা হবে না। কেননা, ওয়ালা তারই, যে আযাদ করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫০. খেজুরের বিনিময়ে খেজুর বিক্রি করা
২০৩৬.
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হাতে হাতে (নগদ নগদ) ছাড়া
গমের বদলে গম বিক্রি করা সুদ, নগদ নগদ ছাড়া যবের বদলে যব
বিক্রয় করা সুদ, নগদ নগদ ব্যতীত খেজুরের
বিনিময়ে খেজুর বিক্রয় সুদ।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫১. কিসমিসের বিনিময়ে কিসমিস ও খাদ্য দ্রব্যের বিনিময়ে খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করা
২০৩৭.
ইসমাঈল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা নিষেধ করেছেন। তিনি [ইবনু উমর (রাঃ)] বলেন, মুযাবানা হল তাজা খেজুর
শুকনো খেজুরের বদলে ওজন করে বিক্রয় করা এবং কিসমিস তাজা আঙ্গুরের বদলে ওজন করে
বিক্রি করা।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫১. কিসমিসের বিনিময়ে কিসমিস ও খাদ্য দ্রব্যের বিনিময়ে খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করা
২০৩৮.
আবূ নুমান (রহঃ) ... উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা নিষেধ
করেছেন। তিনি বলেন, মুযাবানা হল-শুকনো খেজুর
তাজা খেজুরের বিনিময়ে ওযন করে বিক্রি করা, বেশি হলে তা আমার প্রাপ্য, কম হলে তা পূরন করা আমার দায়িত্ব। রাবী বলেন, আমাকে যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)
বলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমান করে আরায়া এর অনুমতি দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫২. যবের বিনিময়ে যব বিক্রি করা
২০৩৯.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... মালিক ইবনু আওস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি একবার এক দ্বীনারের
বিনিময়ে সারফ* এর জন্য লোক সন্ধান করছিলেন। তখন তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ (রাঃ)
আমাকে ডাক দিলেন। আমরা বিনিময় দ্রব্যের পরিমান নিয়ে আলোচনা করতে থাকলাম। অবশেষে
তিনি আমার সঙ্গে সারফ করতে রাযী হলেন এবং আমার থেকে স্বর্ন নিয়ে তার হাতে
নাড়া-চাড়া করতে করতে বললেন, আমর খাযান্জী গাবা (নামক
স্থান) হতে আসা পর্যন্ত (আমার জিনিস পেতে) দেরী করতে হবে। ঐ সময়ে উমর (রাঃ) আমাদের
কথা-বার্তা শুনছিলেন। তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহর কসম, তার জিনিস গ্রহন না করা পর্যন্ত তুমি তার থেকে বিচ্ছিন্ন
হতে পারবে না। কারন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নগদ নগদ না হলে স্বর্নের
বদলে স্বর্নের বিক্রয় রিবা (সুদ) হবে। নগদ নগদ ছাড়া গমের বদলে গমের বিক্রয় রিবা
হবে। নগদ নগদ ছাড়া যবের বদলে যবের বিক্রয় রিবা হবে। নগদ নগদ না হলে খেজুরের বদলে
খেজুরের বিক্রয় রিবা হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৩. স্বর্নের বিনিময়ে স্বর্ন বিক্রয় করা
২০৪০.
সাদাকা ইবনু ফযল (রহঃ) ... আবূ বাকরা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সমান সমান ছাড়া তোমরা সোনার
বদলে সোনা বিক্রয় করবে না। অনুরূপ রূপার বদলে রূপা সমান সমান ছাড়া (বিক্রি করবে
না)। রূপার বদলে সোনা এবং সোনার বদলে রূপা তোমরা যেরূপ দাও, ক্রয়-বিক্রয় করতে পারো।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৪. রৌপ্যের বিনিময়ে রৌপ্য বিক্রয়
২০৪১.
উবায়দুল্লাহ ইবনু সাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্নিত, আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (আবূ বাকরার হাদীসের) অনুরূপ একটি
হাদীস তাঁর কাছ বর্ননা করেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তাঁর [আবূ সাঈদ (রাঃ) এর]
সঙ্গে দেখা করে বললেন, হে আবূ সাঈদ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আপনি কী হাদীস বর্ণনা করে থাকেন? আবূ সাঈদ (রাঃ) সারফ
(মুদ্রার বিনিময়) সম্পর্কে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি যে, সোনার বদলে সোনার বিক্রয় সমান পরিমান হতে হবে। রূপার বদলে
রূপার বিক্রয় সমান হতে হবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৪. রৌপ্যের বিনিময়ে রৌপ্য বিক্রয়
২০৪২.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সমান পরিমান ছাড়া তোমরা
সোনার বদলে সোনা বিক্রি করবে না, একটি অপরটি থেকে কম-বেশী
করবে না। সমান ছাড়া তোমরা রূপার বদলে রূপা বিক্রি করবে না ও একটি অপরটি থেকে
কমবেশী করবে না। আর নগদ মুদ্রার বিনিময়ে বাকী মুদ্রা বিক্রি করবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৫. দীনারের বিনিময়ে দীনার বাকীতে ক্রয়-বিক্রয় করা।
২০৪৩.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ সালিহ যায়য়াত (রহঃ) থেকে সূত্রে বর্ণিত, আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) কে
বলতে শুনলাম, দ্বীনারের বদলে দ্বীনার এবং
দিরহামের বদলে দিরহাম (সমান সমান) বিক্রি করবে। এতে আমি তাঁকে বললাম, ইবনু আব্বাস (রাঃ) তো তা
বলেন না? উত্তরে আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে [ইবনু আব্বাস
(রাঃ) কে] জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, আপনি তা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট শুনেছেন, না মহান আল্লাহ্ তা’আলার কিতাবে পেয়েছেন? তিনি বললেন, এর কোনটি বলিনি। আপনারাই তো
আমার চাইতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বেশী জানেন। অবশ্য
আমাকে উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) জানিয়েছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বাকী বিক্রয় ব্যতীত রিবা হয়
না। আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেন, এ কথার অর্থ আমাদের মতে এই যে, সোনা-রূপার বিনিময়ে, গম যবের বিনিময়ে কম-বেশী
বেচাকেনা করাতে দোষ নেই, যদি নগদ নগদ হয়। কিন্তু বাকী
বেচা-কেনাতে কোন মঙ্গল নেই।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৬. বাকীতে স্বর্নের বিনিময়ে রৌপ্যের ক্রয়-বিক্রয়
২০৪৪.
হাফস ইবনু উমর (রহঃ) ... আবূ মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আমি বারা ইবনু আযিব ও যায়দ
ইবনু আরকাম (রাঃ) কে সারফ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তাঁরা উভয়ে (একে অপরের
সম্পর্কে) বললেন, ইনি আমার চাইতে উত্তম। এরপর
উভয়েই বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাকীতে রূপার বিনিময়ে সোনার ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৭. নগদ-নগদ রৌপের বিনিময়ে স্বর্ন বিক্রয়
২০৪৫.
ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) ... আবূ বাকরা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমান সমান ছাড়া রূপার বদলে রুপার ক্রয়-বিক্রয় এবং সোনার বদলে
সোনার ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন এবং তিনি রূপার বিনিময়ে সোনার বিক্রয়ে এবং
সোনার বিনিময়ে রূপার বিক্রয়ে আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী অনুমতি দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৮. মুযাবানা ক্রয়-বিক্রয়। এর অর্থ হলোঃ তাজা খেজুরের বিনিময়ে শুকনা খেজুর, তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে
কিসমিসের ক্রয়-বিক্রয় করা আর আরায়া এর ক্রয়-বিক্রয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) মুযাবানা
ও মুহাকালা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০৪৬.
ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উপযোগিতা প্রকাশ না পাওয়া
পর্যন্ত তোমরা ফল বিক্রি করবে না এবং শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি
করবে না। রাবী সালিম (রহঃ) বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) যায়দ ইবনু সাবিত
(রাঃ) সূত্রে আমার কাছে বর্ননা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে তাজা বা
শুকনো খেজুরের বিনিময়ে আরিয়্যা বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। আরিয়্যা ব্যতীত অন্য
কিছুতে এরূপ বিক্রির অনুমতি দেন নি।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৮. মুযাবানা ক্রয়-বিক্রয়। এর অর্থ হলোঃ তাজা খেজুরের বিনিময়ে শুকনা খেজুর, তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে
কিসমিসের ক্রয়-বিক্রয় করা আর আরায়া এর ক্রয়-বিক্রয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) মুযাবানা
ও মুহাকালা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০৪৭.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা থেকে নিষেধ করেছেন। মুযাবানার অর্থ হল মেপে শুকনো
খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর এবং মেপে কিসমিসের বিনিময়ে আঙ্গুর ক্রয় করা।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৮. মুযাবানা ক্রয়-বিক্রয়। এর অর্থ হলোঃ তাজা খেজুরের বিনিময়ে শুকনা খেজুর, তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে
কিসমিসের ক্রয়-বিক্রয় করা আর আরায়া এর ক্রয়-বিক্রয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) মুযাবানা
ও মুহাকালা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০৪৮.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা ও মুহাকালা নিষেধ করেছেন। মুযাবানার অর্থ হল- শুকনো
খেজুরের বিনিময়ে গাছের মাথায় অবস্থিত তাজা খেজুর ক্রয় করা।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৮. মুযাবানা ক্রয়-বিক্রয়। এর অর্থ হলোঃ তাজা খেজুরের বিনিময়ে শুকনা খেজুর, তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে
কিসমিসের ক্রয়-বিক্রয় করা আর আরায়া এর ক্রয়-বিক্রয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) মুযাবানা
ও মুহাকালা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০৪৯.
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালা ও মুযাবানা নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৮. মুযাবানা ক্রয়-বিক্রয়। এর অর্থ হলোঃ তাজা খেজুরের বিনিময়ে শুকনা খেজুর, তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে
কিসমিসের ক্রয়-বিক্রয় করা আর আরায়া এর ক্রয়-বিক্রয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) মুযাবানা
ও মুহাকালা থেকে নিষেধ করেছেন।
২০৫০.
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... যায়দ ইবনু ছাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরিয়্যা এর মালিককে তা অনুমানে বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৯. স্বর্ন ও রৌপ্যের বিনিময়ে গাছের মাথায় ফল বিক্রি করা
২০৫১.
ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপযোগী হওয়ার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। (এবং এও বলেছেন
যে) এর কিছুই দ্বীনার ও দিরহাম এর বিনিময় ব্যতীত বিক্রি করা যাবে না, তবে আরায়্যার হুকুম এর
ব্যতিক্রম।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৯. স্বর্ন ও রৌপ্যের বিনিময়ে গাছের মাথায় ফল বিক্রি করা
২০৫২.
আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহহাব (রহঃ) ... বলেন যে, আমি মালিকের কাছে শুনেছি, উবায়দুল্লাহ ইবনু রাবী (রহঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আবূ সুফিয়ান সূত্রে আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে দাউদ (রহঃ) এই হাদীস কি আপনার কাছে বর্ননা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচ ওসাক* অথবা পাঁচ ওসাকের কম পরিমান আরিয়্যা বিক্রয়ের অনুমতি
দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৫৯. স্বর্ন ও রৌপ্যের বিনিময়ে গাছের মাথায় ফল বিক্রি করা
২০৫৩.
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুকনা খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং
আরিয়্যা এর ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছেন। তা হল তাজা ফল অনুমানে বিক্রি করা, যাতে (ক্রেতা) তাজা খেজুর
খাওয়ার সুযোগ লাভ করতে পারে। রাবী সুফিয়ান (রহঃ) আর একবার এভাবে বর্ননা করেছেন, অবশ্য তিনি (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরিয়্যা এর ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছেন যে, ফলের মালিক অনুমানে তাজা
খেজুর বিক্রয় করে, যাতে তারা (ক্রেতাগন) তাজা খেজুর
খেতে পারে। রাবী বলেন, এ কথা পূর্বের কথা একই এবং
সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, আমি তরুন বয়সে (আমার উস্তাদ)
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) কে বললাম, মক্কাবাসীগন তো বলে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়্যা এর
ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বললেন, মক্কাবাসীদের তা কিসে অবহিত করল? আমি বললাম, তারা জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ননা করে থাকেন। এতে তিনি নীরব হয়ে গেলেন। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, আমার কথার মর্ম এই ছিল যে, জাবির (রাঃ) মদিনাবাসী।
সুফিয়ান (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, এ হাদীসে এ কথাটুকু নাই যে, উপযোগিতা প্রকাশের আগে ফল বিক্রি নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬০. আরিয়্যা এর ব্যাখ্যা। ইমাম মালিক (রঃ) বলেন, আরিয়্যা এর অর্থ-কোন একজন কর্তৃক কাউকে খেজুর গাছ (তার ফল
খাওয়ার জন্য) দান করা। পরে ঐ ব্যক্তির বাগানে প্রবেশের কারনে সে বিরক্তিবোধ করে, ফলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয় যে, সে শুকনো ফলের বিনিময়ে
গাছগুলো (এর ফল) ঐ ব্যক্তির নিকট থেকে খরিদ করে নিবে।১ মুহাম্মাদ ইবন ইদরীস (ইমাম
শাফিঈ (রঃ) বলেন শুকনো খেজুর এর বিক্রি নগদ নগদ এবং মাপের মাধ্যমে হবে, অনুমানে হবেনা। (ইমাম বুখারী
(রঃ) বলেন) ইমাম শাফিঈ (রঃ) এর মতের সমর্থন পাওয়া যায় সাহল ইবন আবু হাসমা (রাঃ) এর
এ উক্তির দ্বারা بِالأَوْسُقِ الْمُوَسَّقَةِ সুনির্দিষ্ট মাপের মাধ্যমে।
ইবন ইসহাক (রঃ), নাফি’ (রঃ) এর সুত্রে ইবন
উমর (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, মালিক কর্তৃক তার বাগান থেকে
একটি বা দু’টি খেজুর গাছ দান করাকে আরায়্যা বলা হয়। সুফিয়ান ইবন হুসায়ন (রঃ)
ইয়াযীদ (রঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আরায়্যা হলো কিছু সংখ্যক
খেজুর গাছ, গরীব-মিসকিনদের দান করা হতো, কিন্তু তারা খেজুর পাকা
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারতনা বিধায় তাদের অনুমতি দেওয়া হতো যে, তারা যে পরিমান খেজুরের
ইচ্ছা, তা বিক্রি করে দিবে।
২০৫৪.
মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) ... যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরায়্যার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন যে, ওযন করা খেজুরের বদলে গাছের
অনুমানকৃত খেজুর বিক্রি করা যেতে পারে। মূসা ইবনু উকবা (রহঃ) বলেন, আরায়্যা বলা হয়, বাগানে এসে কতকগুলো
নির্দিষ্ট গাছের খেজুর (শুকনো খেজুরের বদলে) খরিদ করে নেওয়া।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬১. ফলের উপযোগিত প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে তা বিক্রয় করা। লাইস (রঃ) ... যায়দ ইবন
সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর সময়ে
লোকেরা (গাছের) ফলের বেচা-কেনা করত। আবার যখন লোকদের ফল পাড়ার এবং তাদের মূল্য
দেওয়ার সময় হতো, তখন ক্রেতা ফলে পোকা ধরেছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে, শুকিয়ে গিয়েছে এসব
অনিষ্টকারী আপদের কথা উল্লেখ করে ঝগড়া করত। তখন এ ব্যাপারে রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর
নিকটে অনেক অভিযোগ পেশ হতে লাগল, তখন তিনি বললেন, তোমরা যদি এ ধরনের বেচা-কেনা
বাদ দিতে না চাও, তবে ফলের উপযোগিতা প্রকাশ
পাওয়ার পর তার বেচা-কেনা করবে। অনেক অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার কারনে তিনি এ কথাটি
পরামর্শ স্বরুপ বলেছেন। রাবী বলেন, হযরত খারিজা ইবন যায়দ (রঃ) আমাকে বলেছেন যে, হযরত যায়দ ইবন ছাবিত (রাঃ)
সুরাইয়্যা তারকা উদিত হওয়ার পর ফলের হলুদ ও লাল রংয়ের পূর্ন প্রকাশ না হ্ওয়া
পর্যন্ত তাঁর বাগানের ফল বিক্রি করতেননা। আবু আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রঃ)] বলেন, আলী ইবন বাহর (রঃ) ... যায়দ
(রাঃ) থেকে এ হাদীস বর্ননা করেছেন।
২০৫৫.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফলের উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে ক্রেতা ও
বিক্রেতাকে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬১. ফলের উপযোগিত প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে তা বিক্রয় করা। লাইস (রঃ) ... যায়দ ইবন
সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর সময়ে
লোকেরা (গাছের) ফলের বেচা-কেনা করত। আবার যখন লোকদের ফল পাড়ার এবং তাদের মূল্য
দেওয়ার সময় হতো, তখন ক্রেতা ফলে পোকা ধরেছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে, শুকিয়ে গিয়েছে এসব
অনিষ্টকারী আপদের কথা উল্লেখ করে ঝগড়া করত। তখন এ ব্যাপারে রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর
নিকটে অনেক অভিযোগ পেশ হতে লাগল, তখন তিনি বললেন, তোমরা যদি এ ধরনের বেচা-কেনা
বাদ দিতে না চাও, তবে ফলের উপযোগিতা প্রকাশ
পাওয়ার পর তার বেচা-কেনা করবে। অনেক অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার কারনে তিনি এ কথাটি
পরামর্শ স্বরুপ বলেছেন। রাবী বলেন, হযরত খারিজা ইবন যায়দ (রঃ) আমাকে বলেছেন যে, হযরত যায়দ ইবন ছাবিত (রাঃ)
সুরাইয়্যা তারকা উদিত হওয়ার পর ফলের হলুদ ও লাল রংয়ের পূর্ন প্রকাশ না হ্ওয়া
পর্যন্ত তাঁর বাগানের ফল বিক্রি করতেননা। আবু আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রঃ)] বলেন, আলী ইবন বাহর (রঃ) ... যায়দ
(রাঃ) থেকে এ হাদীস বর্ননা করেছেন।
২০৫৬.
ইবনু মুকাতিল (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর ফল পোখতা হওয়ার আগে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। আবূ
আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেন অর্থাৎ লালচে হওয়ার আগে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬১. ফলের উপযোগিত প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে তা বিক্রয় করা। লাইস (রঃ) ... যায়দ ইবন
সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর সময়ে
লোকেরা (গাছের) ফলের বেচা-কেনা করত। আবার যখন লোকদের ফল পাড়ার এবং তাদের মূল্য
দেওয়ার সময় হতো, তখন ক্রেতা ফলে পোকা ধরেছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে, শুকিয়ে গিয়েছে এসব
অনিষ্টকারী আপদের কথা উল্লেখ করে ঝগড়া করত। তখন এ ব্যাপারে রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) এর
নিকটে অনেক অভিযোগ পেশ হতে লাগল, তখন তিনি বললেন, তোমরা যদি এ ধরনের বেচা-কেনা
বাদ দিতে না চাও, তবে ফলের উপযোগিতা প্রকাশ
পাওয়ার পর তার বেচা-কেনা করবে। অনেক অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার কারনে তিনি এ কথাটি
পরামর্শ স্বরুপ বলেছেন। রাবী বলেন, হযরত খারিজা ইবন যায়দ (রঃ) আমাকে বলেছেন যে, হযরত যায়দ ইবন ছাবিত (রাঃ)
সুরাইয়্যা তারকা উদিত হওয়ার পর ফলের হলুদ ও লাল রংয়ের পূর্ন প্রকাশ না হ্ওয়া
পর্যন্ত তাঁর বাগানের ফল বিক্রি করতেননা। আবু আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রঃ)] বলেন, আলী ইবন বাহর (রঃ) ... যায়দ
(রাঃ) থেকে এ হাদীস বর্ননা করেছেন।
২০৫৭.
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফলের রং পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন।
রাবী বলেন, অর্থাৎ লালচে
বর্ণের বা হলুদ বর্ণের না হওয়া পর্যন্ত এবং তা খাওয়ার যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬২. খেজুর উপযোগী হওয়ার পূর্বে তা বিক্রয় করা
২০৫৮.
আলী ইবনু হায়সাম (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফলের উপযোগিত প্রকাশ হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন
এবং খেজুরের রং ধরার আগে (বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন) জিজ্ঞাসা করা হল, রং ধরার অর্থ কী? তিনি বলেন, লাল বর্ণ বা হলুদ বর্ণ ধারন
করা।
আবূ
আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেন, আমি মু’য়াল্লা ইবনু মনসুর (রহঃ) থেকে হাদীস লিপিবদ্ধ করেছি।
কিন্তু এ হাদীস তার থেকে লিখিনি।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৩. ফলের উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার পূর্বে বিক্রি করার পরে যদি তাতে মড়ক দেখা দেয়, তবে তা বিক্রেতার হবে।
২০৫৯.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম রং ধারন করার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। জিজ্ঞাসা করা হল, রং ধারন করা অর্থ কী? তিনি বললেন, লাল বর্ণ ধারন করা। পরে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দেখ, যদি মহান আল্লাহ্ তা’আলা ফল
ধরা বন্ধ করে দেন, তবে তোমাদের কেউ (বিক্রেতা)
কিসের বদলে তার ভাইয়ের মাল (ফলের মূল্য) নিবে?
লাইস
(রহঃ) ... ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন ব্যাক্তি যদি ফলের
উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার পূর্বে তা খরিদ করে, পরে তাতে মড়ক দেখা দেয়, তবে যা নষ্ট হবে তা মালিকের উপর বর্তাবে। যুহরী (রহঃ) বলেন, আমার কাছে সালিম ইবনু
আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার
পূর্বে তোমরা ফল খরিদ করবে না এবং শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করবে
না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৪. নির্ধারিত মেয়াদে বাকীতে খাদ্য ক্রয় করা
২০৬০.
উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) ... আ'মাশ
(রহঃ) থেকে বর্ণিত, ইবরাহীম (রহঃ) এর কাছে, বন্ধক রেখে বাকীতে ক্রয় করার
ব্যাপারে আলোচনা করলাম। তিনি বললেন, এতে কোন দোষ নেই। এরপর তিনি আসওয়াদ (রহঃ) সূত্রে আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দিষ্ট মেয়াদে (মূল্য বাকী রেখে) জনৈক ইহুদীর নিকট থেকে
খাদ্য খরিদ করেন এবং তাঁর বর্ম বন্ধক রাখেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৫. উৎকৃ্ষ্ট খেজুরের বিনিময়ে খেজুর বিক্রি করতে চাইলে
২০৬১.
কুতায়বা (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে খায়বারে তহসীলদার নিযুক্ত করেন। তিনি জানীব নামক
(উত্তম) খেজুর নিয়ে উপস্থিত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জিজ্ঞাসা করলেন, খায়বারের সব খেজুর কি এ
রকমের? সে বলল, না, মহান আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরূপ নয়, বরং আমরা দুই সা’ এর
পরিবর্তে এ ধরনের এক সা’ খেজুর নিয়ে থাকি এবং তিন সা’ এর পরিবর্তে এর দুই সা’। তখন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এরূপ করবে না। বরং মিশ্রিত খেজুর দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি
করে দিরহাম দিয়ে জানীব খেজুর খরিদ করবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৬. তাবীরকৃত খেজুর গাছ অথবা ফসলকৃত জমি বিক্রয় করলে বা ভাড়ায় নিলে।
قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ لِي إِبْرَاهِيمُ أَخْبَرَنَا
هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي مُلَيْكَةَ،
يُخْبِرُ عَنْ نَافِعٍ، مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ أَنَّ أَيُّمَا، نَخْلٍ بِيعَتْ قَدْ
أُبِّرَتْ لَمْ يُذْكَرِ الثَّمَرُ، فَالثَّمَرُ لِلَّذِي أَبَّرَهَا، وَكَذَلِكَ
الْعَبْدُ وَالْحَرْثُ. سَمَّى لَهُ نَافِعٌ هَؤُلاَءِ الثَّلاَثَ
আবু আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রঃ)] বলেন, ইবরাহীম (রঃ) .... ইবন উমর (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম নাফি (রহঃ) থেকে বর্নিত যে, তাবীরকৃত খেজুর গাছ ফলের উল্লেখ ব্যতীত বিক্রি করলে যে তাবীর করেছে সে ফলের মালিক হবে। তেমনি গোলাম ও জমির ফসলও মালিকেরই থাকবে। রাবী নাফি (রঃ) এই তিনটিরই উল্লেখ করেছেন।
২০৬২.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ তাবীর করার পরে খেজুর
গাছ বিক্রি করলে বিক্রেতা সে ফলের মালিক থাকবে, অবশ্য ক্রেতা যদি (ফল লাভের) শর্ত করে, তবে সে পাবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৭. মাপে খাদ্যের বদলে ফসল বিক্রি করা
২০৬৩.
কুতায়বা (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা নিষেধ করেছেন, আর তা হল বাগানের ফল বিক্রয় করা। খেজুর হলে মেপে শুকনা
খেজুরের বদলে, আঙ্গুর হলে মেপে কিসমিসের
বদলে, আর ফসল হলে মেপে খাদ্যের
বদলে বিক্রি করা। তিনি এসব বিক্রি নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৮. মূল খেজুর গাছ বিক্রি করা
২০৬৪.
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি খেজুর গাছে
তাবীর করার পরে মূল গাছ বিক্রি করল, সে গাছের ফল যে তাবীর করেছে তারই থাকবে, অবশ্য ক্রেতা যদি ফলের শর্ত
করে (তবে সে পাবে)।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৯. কাঁচা ফল ও শস্য বিক্রি করা
২০৬৫.
ইসহাক ইবনু ওহাব (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালা[1], মুখাদ্বারা[2], মুলামাসা, মুনাবাযা ও মুযাবানা নিষেধ
করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৬৯. কাঁচা ফল ও শস্য বিক্রি করা
২০৬৬.
কুতায়বা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাকার পূর্বে ফল
বিক্রি নিষেধ করেছেন। (রাবী বলেন) আমরা আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, ফল পাকার অর্থ কী? তিনি বললেন, লালচে বা হলদে হওয়া।
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) বলত, মহান আল্লাহ্ তা’আলা যদি ফল
নষ্ট করে দেন, তবে কিসের বদলে তোমার ভাইয়ের
মাল গ্রহন করবে?
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭০. খেজুরের মাথি বিক্রয় করা এবং খাওয়া
২০৬৭.
আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদুল মালিক (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম, তিনি সে সময়ে খেজুরের মাথি
খাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, গাছের মধ্যে এমনও গাছ আছে, যা মু’মিন ব্যাক্তির সদৃশ।
আমি বলতে ইচ্ছা করলাম যে, তা হল খেজুর গাছ। কিন্তু আমি
লক্ষ্য করলাম যে, আমি সকলের মাঝে বয়:কনিষ্ঠ
(তাই লজ্জায় বলি নাই)। কেউ উত্তর না দেওয়ায়, তিনি বললেন, তা খেজুর গাছ।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭১. ক্রয়-বিক্রয়, ইজারা, মাপ ও ওজন ইত্যাদির ব্যাপারে
বিভিন্ন শহরে প্রচলিত রেওয়াজ ও নিয়ম গ্রহনীয়। এ বিষয়ে তাদের নিয়্যত ও প্রসিদ্ধ
পন্থা-ই অবলম্বন করা হবে। শুরাইহ (রঃ) তাঁতী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মাঝে প্রচলিত
নিয়ম-নীতি (তোমাদের কাজ-কারবারে) গ্রহনযোগ্য। আবদুল ওহাব (রঃ) আয়্যুব (রঃ) সূত্রে
মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন (রঃ) থেকে বর্ননা করেন, দশ টাকায় ক্রীত বস্তু এগার টাকায় বিক্রি করতে কোন দোষ নেই, খরচের জন্য লাভ গ্রহন করা
যায়। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) [আবু সুফিয়ান (রাঃ) এর স্ত্রী] হিন্দাকে বলেছিলেন, তোমার ও তোমার সন্তানাদির
জন্য যা প্রয়োজন, তা বিধিসম্মতভাবে গ্রহন করতে
পার। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, যে অভাবগ্রস্থ, সে যেন সংগত পরিমানে ভোগ করে
(৪:৬)। একবার হাসান বসরী (রঃ) আবদুল্লাহ ইবন মিরদাস (রঃ) থেকে গাধা ভাড়া করেন এবং
জিজ্ঞাসা করেন, ভাড়া কত? ইবন মিরদাস (রঃ) বলেন, দুই দানিক। এরপর তিনি এতে
আরোহন করেন। দ্বিতীয় বার এসে তিনি বলেন, গাধাটি আন। এরপর তিনি গাধায় আরোহন করলেন, কিন্তু কোন ভাড়া ঠিক করলেন
না। পরে অর্ধ দিরহাম (৩ দানিক) পাঠিয়ে দিলেন (তিনি দয়া করে এক দানিক বেশী দিলেন)।
২০৬৮.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ তায়বা রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শিঙ্গা লাগালেন। তিনি এক সা’ খেজুর দিতে বললেন
এবং তার উপর থেকে দৈনিক আয়কর কমানোর জন্য তার মালিককে আদেশ দিলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭১. ক্রয়-বিক্রয়, ইজারা, মাপ ও ওজন ইত্যাদির ব্যাপারে
বিভিন্ন শহরে প্রচলিত রেওয়াজ ও নিয়ম গ্রহনীয়। এ বিষয়ে তাদের নিয়্যত ও প্রসিদ্ধ
পন্থা-ই অবলম্বন করা হবে। শুরাইহ (রঃ) তাঁতী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মাঝে প্রচলিত
নিয়ম-নীতি (তোমাদের কাজ-কারবারে) গ্রহনযোগ্য। আবদুল ওহাব (রঃ) আয়্যুব (রঃ) সূত্রে
মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন (রঃ) থেকে বর্ননা করেন, দশ টাকায় ক্রীত বস্তু এগার টাকায় বিক্রি করতে কোন দোষ নেই, খরচের জন্য লাভ গ্রহন করা
যায়। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) [আবু সুফিয়ান (রাঃ) এর স্ত্রী] হিন্দাকে বলেছিলেন, তোমার ও তোমার সন্তানাদির
জন্য যা প্রয়োজন, তা বিধিসম্মতভাবে গ্রহন করতে
পার। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, যে অভাবগ্রস্থ, সে যেন সংগত পরিমানে ভোগ করে
(৪:৬)। একবার হাসান বসরী (রঃ) আবদুল্লাহ ইবন মিরদাস (রঃ) থেকে গাধা ভাড়া করেন এবং
জিজ্ঞাসা করেন, ভাড়া কত? ইবন মিরদাস (রঃ) বলেন, দুই দানিক। এরপর তিনি এতে
আরোহন করেন। দ্বিতীয় বার এসে তিনি বলেন, গাধাটি আন। এরপর তিনি গাধায় আরোহন করলেন, কিন্তু কোন ভাড়া ঠিক করলেন
না। পরে অর্ধ দিরহাম (৩ দানিক) পাঠিয়ে দিলেন (তিনি দয়া করে এক দানিক বেশী দিলেন)।
২০৬৯.
আবূ নাঈম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুআবিয়া (রাঃ) এর মা হিন্দ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে বললেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) একজন কৃপন
ব্যাক্তি। এমতাবস্থায় আমি যদি তার মাল থেকে গোপনে কিছু গ্রহন করি, তাতে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার ও সন্তানদের
প্রয়োজনানুসারে যথাযথভাবে গ্রহন করতে পার।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭১. ক্রয়-বিক্রয়, ইজারা, মাপ ও ওজন ইত্যাদির ব্যাপারে
বিভিন্ন শহরে প্রচলিত রেওয়াজ ও নিয়ম গ্রহনীয়। এ বিষয়ে তাদের নিয়্যত ও প্রসিদ্ধ
পন্থা-ই অবলম্বন করা হবে। শুরাইহ (রঃ) তাঁতী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মাঝে প্রচলিত নিয়ম-নীতি
(তোমাদের কাজ-কারবারে) গ্রহনযোগ্য। আবদুল ওহাব (রঃ) আয়্যুব (রঃ) সূত্রে মুহাম্মাদ
ইবনে সীরীন (রঃ) থেকে বর্ননা করেন, দশ টাকায় ক্রীত বস্তু এগার টাকায় বিক্রি করতে কোন দোষ নেই, খরচের জন্য লাভ গ্রহন করা
যায়। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) [আবু সুফিয়ান (রাঃ) এর স্ত্রী] হিন্দাকে বলেছিলেন, তোমার ও তোমার সন্তানাদির
জন্য যা প্রয়োজন, তা বিধিসম্মতভাবে গ্রহন করতে
পার। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, যে অভাবগ্রস্থ, সে যেন সংগত পরিমানে ভোগ করে
(৪:৬)। একবার হাসান বসরী (রঃ) আবদুল্লাহ ইবন মিরদাস (রঃ) থেকে গাধা ভাড়া করেন এবং
জিজ্ঞাসা করেন, ভাড়া কত? ইবন মিরদাস (রঃ) বলেন, দুই দানিক। এরপর তিনি এতে
আরোহন করেন। দ্বিতীয় বার এসে তিনি বলেন, গাধাটি আন। এরপর তিনি গাধায় আরোহন করলেন, কিন্তু কোন ভাড়া ঠিক করলেন
না। পরে অর্ধ দিরহাম (৩ দানিক) পাঠিয়ে দিলেন (তিনি দয়া করে এক দানিক বেশী দিলেন)।
২০৭০.
ইসহাক ও মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুরআনের আয়াতঃ যে অভাবমুক্ত
সে যেন নিবৃত্ত থাকে এবং যে অভাবগ্রস্থ সে যেন সঙ্গত পরিমানে ভোগ করে (৪ঃ ৬)।
ইয়াতীমের ঐ অভিভাবক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়, যে তার তত্ত্বাবধান করে ও তার সম্পত্তির পরিচর্যা করে, সে যদি অভাবগ্রস্থ হয়, তবে তা থেকে নিয়মমাফিক খেতে
পারবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭২. এক শরীকের অপর শরীক থেকে ক্রয় করা
২০৭১.
মাহমুদ (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি, নবী করমীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে শুফআ* এর অধিকার প্রদান করেছেন। যখন সীমানা নির্ধারিত হয়ে
যাবে এবং রাস্তা ভিন্ন করা হয়, তখন আর শুফআ এর অধিকার থাকবে
না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৩. এজমালী সম্পত্তি, বাড়িঘর ও আসবাবপত্রের বিক্রয়
২০৭২.
মুহাম্মাদ ইবনু মাহবুব (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি, তার মধ্যে শুফআ লাভের ফায়সালা প্রদান করেছেন। তারপর যখন
সীমানা নির্ধারিত হয়ে যায় এবং স্বতন্ত্র করা হয় তখন আর শুফআ এর অধিকার থাকবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৩. এজমালী সম্পত্তি, বাড়িঘর ও আসবাবপত্রের বিক্রয়
২০৭৩.
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবদুল ওয়াহিদ (রহঃ) সূত্রে বর্নিত, যে সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি
(তাতে শুফআ)। হিশাম (রহঃ) মামার (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ননায় মুসাদ্দাদের অনুসরন
করেছেন। আবদুর্ রাজ্জাক (রহঃ) বলেছেন, যে সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি, সে সব সম্পদেই (শুফআ রয়েছে)। হাদীসটি আবদুর্ রাহমান ইবনু
ইসহাক (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৪. বিনা অনুমতিতে অন্যের জন্য কিছু খরিদ করার পর সে রাযী হলে।
২০৭৪.
ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা তিন ব্যাক্তি হেঁটে
চলছিল। এমন সময় প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে তারা এক পাহাড়ের গুহায় প্রবেশ করে। হঠাৎ একটি
পাথর গড়িয়ে তাদের গুহার মুখ বন্ধ করে দেয়। তাদের একজন আরেকজনকে বলল, তোমরা যে সব আমল করেছ, তার মধ্যে উত্তম আমলের
ওয়াসীলা করে মহান আল্লাহ্ তা’আলার কাছে দুআ কর।
তাদের
একজন বলল, ইয়া আল্লাহ্! আমার পিতামাতা
অতিবৃদ্ধ ছিলেন, আমি (প্রত্যহ সকালে) মেষ
চরাতে বের হতাম। তারপর ফিরে এসে দুধ দোহন করতাম। এবং এ দুধ নিয়ে আমার পিতামাতার
নিকট উপস্থিত হতাম ও তাঁরা তা পান করতেন। তারপরে আমি শিশুদের, পরিজনদের এবং আমার স্ত্রীকে
পান করতে দিতাম। একরাত্রে আমি আটকা পড়ে যাই। তারপর আমি যখন এলাম তখন তাঁরা দুজনে
ঘুমিয়ে পড়েছেন। সে বলল, আমি তাদের জাগানো পছন্দ
করলামনা। আর তখন শিশুরা আমার পায়ের কাছে (ক্ষুধায়) চীৎকার করছিল।
এ অবস্থায় আমার এবং পিতামাতার ফজর হয়ে গেল। ইয়া আল্লাহ্! আমি যদি তা শুধুমাত্র
আপনার সন্তুষ্টি লাভের আশায় করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদের গুহার মুখ এতটুকু ফাঁক করে দিন, যাতে আমরা আকাশ দেখতে পারি।
বর্ননাকারী বলেন, তখন একটু ফাঁকা হয়ে গেল।
আরেকজন
বলল, ইয়া আল্লাহ্! আপনি জানেন যে, আমি আমার এক চাচাতো বোনকে
এতো চরম ভালোবাসতাম, যা একজন পুরুষ নারীকে
ভালোবেসে থাকে। সে বলল, তুমি আমার থেকে সে মনস্কামনা
সিদ্ধ করতে পারবে না, যতক্ষন আমাকে একশত দ্বীনার
না দেবে। আমি চেষ্টা করে তা সংগ্রহ করি। তারপর যখন আমি তার পদদ্বয়ের মাঝে উপবেশন
করি, তখন সে বলল আল্লাহকে ভয় কর।
বৈধ অধিকার ছাড়া মোহরকৃত বস্তুর সীল ভাঙবে না। এতে আমি তাকে ছেড়ে উঠে পড়ি। ইয়া
আল্লাহ! আমি যদি তা আপনারই সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করে থাকি, তবে আমাদের থেকে পাথরখানা
আরো একটু ফাঁক করে দিন। তখন তাদের থেকে (গুহার মুখের) দুই-তৃতীয়াংশ ফাঁক হয়ে গেল।
অপরজন
বলল, ইয়া আল্লাহ্! আপনি জানেন যে, এক ফারাক* (পরিমান) শস্য
দানার বিনিময়ে আমি একজন মজুর রেখেছিলাম। আমি তাকে তা দিতে গেলে সে গ্রহন করতে
অস্বীকার করল। তারপর আমি সে এক ফারাক শস্য দানা দিয়ে চাষ করে ফসল উৎপন্ন করি
এবং তা দিয়ে গরু খরিদ করি ও রাখাল নিযুক্ত করি। কিছুকাল পরে সে মজুর এসে বলল, হে আল্লাহর বান্দা, আমাকে আমার পাওনা দিয়ে দাও।
আমি বললাম, এই গরুগুলো ও রাখাল নিয়ে
যাও। সে বলল, তুমি কি আমার সাথে উপহাস করছ? আমি বললাম, আমি তোমার সাথে উপহাস করছি
না বরং এসব তোমার। ইয়া আল্লাহ! আমি যদি তা শুধুমাত্র আপনারই সন্তুষ্টির জন্যই করে
থাকি, তবে আমাদের থেকে গুহার মুখ
খুলে দিন। তখন তাদের থেকে গুহার মুখ খুলে গেল।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৫. মুশরিক ও শত্রুপক্ষের সাথে বেচা-কেনা।
২০৭৫.
আবূ নু'মান (রহঃ) ... আবদুর রহমান
ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। এ সময়ে এলোমেলো লম্বা লম্বা চুল বিশিষ্ট এক
মুশরিক ব্যাক্তি তার বকরী হাঁকিয়ে উপস্থিত হল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, এটা কি বিক্রির জন্য, না দান হিসেবে, অথবা তিনি বললেন, না হেবা হিসাবে? সে বলল, বরং বিক্রির জন্য। তখন তিনি
তার কাছ থেকে একটি বকরী খরিদ করলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৬. শত্রুপক্ষ থেকে গোলাম খরিদ করা, হেবা করা এবং আযাদ করা। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) সালমান ফারসী
(রাঃ) কে বলেন, (তোমার মনিবের সাথে) মুক্তির
জন্য চুক্তি কর। সালমান (রাঃ) আসলে স্বাধীন ছিলেন, লোকেরা তাকে অন্যায়ভাবে গোলাম বানিয়ে বিক্রি করে দেয়।
আম্মার, সুহাইব ও বিলাল (রাঃ) কে
বন্দী করে গোলাম বানানো হয়েছিল। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: মহান আল্লাহ্ তা’আলা
জীবনোপকরনে তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া
হয়েছে, তারা তাদের অধীনস্থ
দাস-দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরন থেকে এমন কিছু দেয়না, যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান
হয়ে যায়। তবে কি ওরা মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহ অস্বীকার করে? (১৬:৭১)
২০৭৬.
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তাঁর স্ত্রী সারাকে নিয়ে হিজরত
করলেন এবং এমন এক জনপদে প্রবেশ করলেন, যেখানে এক বাদশাহ ছিল, অথবা বললেন, এক অত্যাচারী শাসক ছিল। তাকে বলা হল যে, ইবরাহীম (নামক এক ব্যাক্তি)
এক পরমা সুন্দরী নারীকে নিয়ে (আমাদের এখানে) প্রবেশ করেছে। সে তখন তাঁর কাছে লোক
পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করল, হে ইবরাহীম, তোমার সাথে এ নারী কে? তিনি বললেন, আমার বোন। তারপর তিনি সারার
কাছে ফিরে এসে বললেন, তুমি আমার কথা মিথ্যা
প্রতিপন্ন করো না। আমি তাদেরকে বলেছি যে, তুমি আমার বোন। আল্লাহর কসম দুনিয়াতে (এখন) তুমি আর আমি
ছাড়া আর কেউ মুমিন নেই। সুতরাং আমি ও তুমি দ্বীনী ভাই-বোন।
এরপর
ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) (বাদশাহর নির্দেশে) সারাকে বাদশাহর কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
বাদশাহ তাঁর দিকে অগ্রসর হল। সারা উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে সালাত (নামায/নামাজ)
আদায়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং এ দুআ করলেন, হে আল্লাহ! আমিও তোমার উপর এবং তোমার রাসূলের উপর ঈমান
এনেছি এবং আমার স্বামী ছাড়া সকল থেকে আমার লজ্জাস্থানের সংরক্ষন করেছি। তুমি এই
কাফিরকে আমার উপর ক্ষমতা দিওনা। তখন বাদশাহ বেহুঁশ হয়ে পড়ে মাটিতে পায়ের আঘাত করতে
লাগল।
তখন
সারা বললেন, আয় আল্লাহ্! এ যদি মারা যায়, তবে লোকে বলবে, স্ত্রীলোকটি একে হত্যা
করেছে। তখন সে সংজ্ঞা ফিরে পেল। এভাবে দুইবার বা তিনবারের পর বাদশাহ বলল, আল্লাহর কসম, তোমরা আমার নিকট এক শয়তানকে
পাঠিয়েছ। একে ইবরাহীমের কাছে ফিরিয়ে দাও এবং তার জন্য হাজেরাকে হাদীয়া স্বরুপ দান
কর। সারা (রাঃ) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর নিকট ফিরে এসে বললেন, আপনি জানেন কি, মহান আল্লাহ্ তা’আলা কাফিরকে
লজ্জিত ও নিরাশ করেছেন এবং সে এক বাঁদি হাদীয়া হিসাবে দেয়।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৬. শত্রুপক্ষ থেকে গোলাম খরিদ করা, হেবা করা এবং আযাদ করা। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) সালমান ফারসী
(রাঃ) কে বলেন, (তোমার মনিবের সাথে) মুক্তির
জন্য চুক্তি কর। সালমান (রাঃ) আসলে স্বাধীন ছিলেন, লোকেরা তাকে অন্যায়ভাবে গোলাম বানিয়ে বিক্রি করে দেয়।
আম্মার, সুহাইব ও বিলাল (রাঃ) কে
বন্দী করে গোলাম বানানো হয়েছিল। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: মহান আল্লাহ্ তা’আলা
জীবনোপকরনে তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া
হয়েছে, তারা তাদের অধীনস্থ
দাস-দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরন থেকে এমন কিছু দেয়না, যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান
হয়ে যায়। তবে কি ওরা মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহ অস্বীকার করে? (১৬:৭১)
২০৭৭.
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, সাদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস ও আবদ
ইবনু যামআ উভয়ে এক বালকের ব্যাপারে বিতর্ক করেন। সাদ (রাঃ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ এ-তো আমার
ভাই উৎবা ইবনু আবূ ওয়াক্কাসের পুত্র। সে তার পুত্র
হিসাবে আমাকে ওয়াসিয়্যত করে গেছে। আপনি ওর সাদৃশ্যের প্রতি লক্ষ করুন। আবদ ইবনু
যামআ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর গর্ভে
জন্মগ্রহন করেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চেহারার দিকে
তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে, উতবার সাথে তার পরিস্কার সাদৃশ্য
রয়েছে। তিনি বললেন, এ ছেলেটি তুমি পাবে, হে আবদ ইবনু যামআ। বিছানা যার, সন্তান তার। ব্যভিচারীর জন্য
রয়েছে বঞ্চনা। হে সাওদা বিনত যামআ, তুমি এর থেকে পর্দা কর। ফলে সাওদা (রাঃ) কখনও তাকে দেখেননি।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৬. শত্রুপক্ষ থেকে গোলাম খরিদ করা, হেবা করা এবং আযাদ করা। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) সালমান ফারসী
(রাঃ) কে বলেন, (তোমার মনিবের সাথে) মুক্তির
জন্য চুক্তি কর। সালমান (রাঃ) আসলে স্বাধীন ছিলেন, লোকেরা তাকে অন্যায়ভাবে গোলাম বানিয়ে বিক্রি করে দেয়।
আম্মার, সুহাইব ও বিলাল (রাঃ) কে
বন্দী করে গোলাম বানানো হয়েছিল। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: মহান আল্লাহ্ তা’আলা
জীবনোপকরনে তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া
হয়েছে, তারা তাদের অধীনস্থ
দাস-দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরন থেকে এমন কিছু দেয়না, যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান
হয়ে যায়। তবে কি ওরা মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহ অস্বীকার করে? (১৬:৭১)
২০৭৮.
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ... আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি সুহায়ব (রাঃ) কে বলেন, আল্লাহকে ভয় কর। তুমি নিজ
পিতা ছাড়া অন্যকে নিজের পিতা বলে দাবী করো না। এর উত্তরে সুহায়ব (রাঃ) বলেন, আমি এতে আনন্দবোধ করবনা যে, এতো এতো সম্পদ হোক আর আমি
আমার পিতৃত্বের দাবী অন্যের প্রতি আরোপ করি, বরং (আসল ব্যাপার) আমাকে শিশুকালে চুরি করে নিয়ে যাওয়া
হয়েছিল।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৬. শত্রুপক্ষ থেকে গোলাম খরিদ করা, হেবা করা এবং আযাদ করা। রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) সালমান ফারসী
(রাঃ) কে বলেন, (তোমার মনিবের সাথে) মুক্তির
জন্য চুক্তি কর। সালমান (রাঃ) আসলে স্বাধীন ছিলেন, লোকেরা তাকে অন্যায়ভাবে গোলাম বানিয়ে বিক্রি করে দেয়।
আম্মার, সুহাইব ও বিলাল (রাঃ) কে
বন্দী করে গোলাম বানানো হয়েছিল। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: মহান আল্লাহ্ তা’আলা
জীবনোপকরনে তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া
হয়েছে, তারা তাদের অধীনস্থ
দাস-দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরন থেকে এমন কিছু দেয়না, যাতে ওরা এ বিষয়ে তাদের সমান
হয়ে যায়। তবে কি ওরা মহান আল্লাহ্ তা’আলার অনুগ্রহ অস্বীকার করে? (১৬:৭১)
২০৭৯.
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ!
আপনি বলুন, আমি জাহিলিয়া যুগে দান, খায়রাত, গোলাম আযাদ ও আত্নীয়-স্বজনের
সাথে সদ্ব্যবহার ইত্যাদি যে সব নেকীর কাজ করেছি, এতে কি আমি সাওয়াব পাব? হাকীম (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অতীতের সৎ কর্মসহ
তুমি ইসলাম গ্রহন করেছ। অর্থাৎ তুমি যে সব নেকী করেছ, তার পুরোপুরি সাওয়াব লাভ
করবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৭. পাকা করার পূর্বে মৃত জন্তুর চামড়ার ব্যাবহার
২০৮০.
যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একবার) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এক মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা এর চামড়া কাজে লাগাওনা
কেন? তারা বললেন, এ তো মৃত। তিনি বললেন, শুধু তার গোশত খাওয়া হারাম
করা হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৮. শুকর হত্যা করাঃ জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) শুকর বিক্রয় হারাম করেছেন।
২০৮১.
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রান।
অচিরেই তোমাদের মাঝে ন্যায় বিচারক রূপে মারয়াম তনয় [ঈসা (আঃ)] অবতরন করবেন। তারপর
তিনি ক্রুশ ভেংগে ফেলবেন, শুকর হত্যা করবেন, জিযয়া রহিত করবেন এবং
ধন-সম্পদের এরূপ প্রাচুর্য হবে যে, কেউ তা গ্রহন করবে না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৯. মৃত জন্তুর চর্বি গলানো বৈধ নয় এবং তার তেল বিক্রি করাও বৈধ নয়। জাবির (রাঃ)
রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) থেকে তা বর্ণনা করেছেন।
২০৮২.
হুমাইদী (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর নিকট
সংবাদ পৌঁছল যে, অমুক ব্যাক্তি শরাব বিক্রি
করেছে। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা অমুকের
বিনাশ করুন। সে কি জানেনা যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা
ইহুদীদের সর্বনাশ করুন, তাদের জন্য চর্বি হারাম করা
হয়েছিল, কিন্তু তারা তা গলিয়ে বিক্রি
করে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৭৯. মৃত জন্তুর চর্বি গলানো বৈধ নয় এবং তার তেল বিক্রি করাও বৈধ নয়। জাবির (রাঃ)
রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) থেকে তা বর্ণনা করেছেন।
২০৮৩.
আবদান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ইহুদীদের বিনাশ করুন।
তাদের জন্য চর্বি হারাম করা হয়েছে। তারা তা (গলিয়ে) বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করে।
আবূ আবদুল্লাহ(ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, قَاتَلَهُمْ اللَّهُ এর অর্থ আল্লাহ তাদের বিনাশ করুনقُتِلَ অর্থ বিনাশ করা গেলالْخَرَّاصُونَ এর অর্থ মিথ্যাবাদী।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮০.প্রাণী ব্যতীত অন্য বস্তুর ছবি বিক্রয় এবং এ সম্পর্কে যা নিষিদ্ধ।
২০৮৪.
আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ) ... সাঈদ ইবনু আবূল হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর
নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, হে আবূ আব্বাস, আমি এমন ব্যাক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি
এ সব ছবি তৈরি করি। ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাকে বলেন, (এ
বিষয়ে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি
বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি কোন ছবি তৈরি
করে মহান আল্লাহ্ তা’আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষন না সে তাতে প্রান সঞ্চার করে। আর সে তাতে কখনো প্রান
সঞ্চার করতে পারবে না।
(একথা শুনে) লোকটি ভীষনভাবে
ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহেরা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এ কাজ না-ই ছাড়তে
পার, তবে এ গাছ-পালা এবং যে সকল
জিনিসে প্রান নেই, তা তৈরী করতে পার। আবূ
আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, সাঈদ (রহঃ) বলেছেন, আমি নযর ইবনু আনাস (রহঃ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) হাদীস
বর্ননা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ইমাম বুখারী (রহঃ) আরো বলেন, সাঈদ ইবনু আবূ আরুবাহ (রহঃ)
একমাত্র এ হাদীসটি নযর ইবনু আনাস (রহঃ) থেকে শুনেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮১. শরাবের ব্যাবসা হারাম। জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) শরাব বিক্রি করা হারাম করেছেন।
২০৮৫.
মুসলিম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সূরা বাকারার শেষ
আয়াতগুলো নাযিল হলো, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বের হয়ে বললেন, শরাবের ব্যাবসা হারাম করা
হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮২. আযাদ মানুষ বিক্রেতার পাপ
২০৮৬.
বিশর ইবনু মারহুম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা ঘোষনা
করেছেন যে, কিয়ামতের দিবসে আমি নিজে তিন
ব্যাক্তির বিরুদ্ধে বাদী হবো। এক ব্যাক্তি, যে আমার নামে ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে। আরেক ব্যাক্তি, যে কোন আযাদ মানুষকে বিক্রি
করে তার মূল্য ভোগ করল। আর এক ব্যাক্তি, যে কোন মজুর নিয়োগ করে তার থেকে পুরো কাজ আদায় করে এবং তার
পারিশ্রমিক দেয় না।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৩. গোলামের বিনিময়ে গোলাম এবং জানোয়ারের বিনিময়ে জানোয়ার বাকীতে বিক্রয়। ইবন
উমর (রাঃ) চারটি উটের বিনিময়ে পাপ্য একটি আরোহনযোগ্য উট এই শর্তে খরিদ করেন যে, মালিক তা ‘রাবাযা’ নামক
স্থানে হস্তান্তর করবে। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, অনেক সময় একটি উট দুটি উট অপেক্ষা উত্তম হয়। রাফি ইবন খাদীজ
(রাঃ) দুটি উটের বিনিময়ে একটি উট খরিদ করে দুটি উটের একটি (তখনই) দিলেন আর বললেন, আর একটি উট ইনশাআল্লাহ্
আগামীকাল যথারীতি দিয়ে দিব। ইবন মুসাইয়্যিব (রঃ) বলেন, জানোয়ারের মধ্যে কোন ‘রিবা’
হয়না। দুই উটের বিনিময়ে এক উট, দুই বকরীর বিনিময়ে এক বকরী
বাকীতে বিক্রয় করলে সুদ হয়না। ইবন সীরীন (রঃ) বলেন, দুই উটের বিনিময়ে এক উট এবং এক দিরহামের বিনিময়ে এক দিরহাম
বাকী বিক্রি করাতে কোন দোষ নেই।
২০৮৭.
সুলাইমান ইবনু হারব (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাফিয়্যা (রাঃ) বন্দীদের
অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি দিহয়া কালবী (রাঃ) এর ভাগে পড়েন, এর পরে তিনি নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধীনে এসে যান।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৪. গোলাম বিক্রয় করা
২০৮৮.
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলেন, তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা বন্দী দাসীর সাথে সংগত হই। কিন্তু
আমরা তাদের (বিক্রয় করে) মূল্য হাসিল করতে চাই। এমতাবস্থায় আযল (নিরুদ্ধ সঙ্গম)
সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তোমরা কি এরূপ করে থাক? তোমরা যদি তা (আযল) না কর, তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই।
কারন মহান আল্লাহ্ তা’আলা যে সন্তান জন্ম হওয়ার ফায়সালা করে রেখেছেন, তা অবশ্যই জন্মগ্রহন করবে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৫. মুদাব্বার গোলাম বিক্রয় করা
২০৮৯.
ইবনু নুমাইর (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুদাব্বার* গোলাম বিক্রি করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৫. মুদাব্বার গোলাম বিক্রয় করা
২০৯০.
কুতায়বা (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুদাব্বার বিক্রি করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৫. মুদাব্বার গোলাম বিক্রয় করা
২০৯১.
যুহাইর ইবনু হারব (রহঃ) ... যায়দ ইবনু খালিদ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবিবাহিত ব্যভিচারিণী দাসী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তাঁকে বলতে শুনেছেন যে, ব্যভিচারিনীকে বেত্রাঘাত কর।
সে আবার ব্যভিচার করলে আবার বেত্রাঘাত কর। এরপর তাকে বিক্রি করে দাও, তৃতীয় বা চতুর্থবারের পরে।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৫. মুদাব্বার গোলাম বিক্রয় করা
২০৯২.
আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের কোন দাসী ব্যভিচার করলে এবং তার ব্যভিচার প্রমানিত
হলে তাকে ‘হদ’ স্বরূপ বেত্রাঘাত করবে, কিন্তু তাকে ভৎসনা করবে না। এরপর যদি সে আবার
ব্যভিচার করে তাকে ‘হদ’ হিসাবে বেত্রাঘাত করবে, কিন্তু তাকে ভৎসনা করবেনা। তারপর সে যদি তৃতীয়বার
ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার প্রমানিত হয়, তবে তাকে বিক্রি করে দেবে, যদিও তা চুলের রশির (তুচ্ছ মূল্যের) বিনিময়ে হয়।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৬. ইসতিবরা অর্থাৎ জরায়ু গর্ভমুক্ত কি-না তা জানার পূর্বে বাঁদীকে
নিয়ে সফর করা। হাসান বসরী (রঃ) তাকে চুম্বন করা বা তার সাথে মিলামিশা করায় কোন দোষ
মনে করেননা। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, সহবাসকৃত দাসীকে দান বা
বিক্রি বা আযাদ করলে এক হায়য পর্যন্ত তার জরায়ু মুক্ত কি-না দেখতে হবে। কুমারীর
বেলায় ইসতিবরার প্রয়োজন নেই। আতা (রঃ) বলেন, (অপর
কর্তৃক) গর্ভবতী নিজ দাসীকে যৌনাঙ্গ ব্যতীত ভোগ করতে পারবে। মহান আল্লাহ্ তা’আলার
বাণীঃ নিজেদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত বাঁদী ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয়
হবেনা......। (২৩:৬)
২০৯৩.
আবদুল গাফফার ইবনু দাউদ (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার গমন করেন। যখন মহান আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর পক্ষে দুর্গের
বিজয় দান করেন, তখন তাঁর সামনে সাফিয়্যা
(রাঃ) বিনত হুয়ায়্যি ইবনু আখতাব এর সৌন্দর্যের আলোচনা করা হয়। তাঁর স্বামী নিহত হয়
এবং তিনি তখন ছিলেন নব-বিবাহিতা। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁকে নিজের জন্য গ্রহন করে নেন। তিনি তাঁকে নিয়ে রওয়ানা হন। যখন আমরা
সাদ্দা রাওহা নামক স্থানে উপনীত হলাম, তখন সাফিয়্যা (রাঃ) পবিত্র হলেন। তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে মিলিত হন।
তারপর
চামড়ার ছোট দস্তরখানে খাদ্য (খেজুরের ছাতু ও ঘি মিশ্রিত) তৈরী করে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আশেপাশের লোকদের উপস্থিত হওয়ার জন্য খবর দিয়ে দাও। এই
ছিল সাফিয়্যা (রাঃ) এর বিবাহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক
ওলীমা। এরপর আমরা মদিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখতে পেলাম যে, তাঁকে নিজের আবা’ দিয়ে ঘেরাও করে দিচ্ছেন। তারপর তিনি তাঁর
উটের পাশে বসে হাঁটু মোবারক সোজা করে রাখলেন, পরে সাফিয়্যা (রাঃ) তাঁর হাঁটুর উপর পা দিয়ে ভর করে আরোহন
করলেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৭. মৃত জন্তু ও মূর্তি বিক্রয়
২০৯৪.
কুতায়বা (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মক্কা বিজয়ের বছর মক্কায় অবস্থানকালে বলতে
শুনেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা ও তাঁর রাসূল শরাব, মৃত জন্তু, শুকর ও মূর্তি কেনা-বেচা
হারাম করে দিয়েছেন। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! মৃত জন্তুর চর্বি সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তা দিয়ে তো নৌকায় প্রলেপ
দেওয়া হয় এবং চামড়া তৈলাক্ত করা হয়, আর লোকে তা দ্বারা চেরাগ জ্বালিয়ে থাকে। তিনি বললেন, না, তাও হারাম।
তারপর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা ইহুদীদের বিনাশ করুন। আল্লাহ যখন তাদের
জন্য মৃতের চর্বি হারাম করে দেন, তখন তারা তা গলিয়ে বিক্রি
করে মূল্য ভোগ করে। আবূ আসিম (রহঃ) আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির (রাঃ) কে
(হাদীসটি) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৮. কুকুরের মূল্য
২০৯৫.
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, ব্যভিচারের বিনিময় এবং গনকের
পারিতোষিক (গ্রহন করা) থেকে নিষেধ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ
১৩৮৮. কুকুরের মূল্য
২০৯৬.
হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) ... আউন ইবনু আবূ জুহায়ফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে দেখেছি যে, তিনি একটি শিঙ্গা লাগানেওয়ালা গোলাম কিনলেন। তিনি তার
শিঙ্গা লাগানোর যন্ত্র ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দিলে তা ভেঙ্গে ফেলা হল। আমি তাঁকে এ
বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তের মূল্য, কুকুরের মূল্য, দাসীর (ব্যভিচারের মাধ্যমে)
উপার্জন করা থেকে নিষেধ করেছেন। আর তিনি শরীরে উল্কি অংকনকারী ও উল্কি গ্রহনকারী, সুদখোর ও সুদ-দাতার উপর এবং
(জীবের) ছবি অংকনকারীর উপর লানত করেছেন।