পরিচ্ছেদঃ ১৫০৩. ঋণগ্রস্তকে স্থানান্তরিত করা এবং মুসলিম ও ইয়াহুদীর মধ্যে কলহ-বিবাদ
২২৫০। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক ব্যাক্তিকে একটি আয়াত পড়তে শুনেলাম। অথচ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (আয়াতটি) অন্যরূপ পড়তে শুনেছি। আমি তার হাত ধরে তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে এলাম। তিনি বললেন, তোমরা উভয়েই ঠিখ পড়েছ। শু’বা (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেনঃ তোমরা বাদানুবাদ করো না। কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তীরা বাদানুবাদ করে ধ্বংস হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৩. ঋণগ্রস্তকে স্থানান্তরিত করা এবং মুসলিম ও ইয়াহুদীর মধ্যে কলহ-বিবাদ
২২৫১। ইয়াহ্ইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ দু’ব্যাক্তি একে অপরকে গালি দিয়েছিল। তাদের একজন ছিল মুসলিম, অন্যজন ইয়াহুদী। মুসলিম লোকটি বলল, তাঁর কসম, যিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সমস্ত জগতের মধ্যে ফযীলত প্রদান করেছেন। আর ইয়াহুদী লোকটি বলল, সে সত্তার কসম, যিনি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে সমস্ত জগতের মধ্যে ফযীলত দান করেছেন। এ সময় মুসলিম ব্যাক্তি নিজের হাত উঠিয়ে ইয়াহুদীর মুখে চড় মারল। এতে ইয়াহুদী ব্যাক্তিটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে তার এবং মুসলিম ব্যাক্তিটির মধ্যে যা ঘটেছিল, তা তাঁকে অবহিত করল।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম ব্যাক্তিটিকে ডেকে আনলেন এবং এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। সে ঘটনা বলল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আমাকে মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিও না। কারণ কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বেহুঁশ হয়ে পড়বে, তাদের সাথে আমিও বেহুঁশ হয়ে পড়ব। তারপর সকলের আগে আমার হুঁশ আসবে, তখন (দেখতে পাবো) মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশের একপাশ ধরে রয়েছেন। আমি জানিনা, তিনি বেহুঁশ হয়ে আমার আগে হুঁশ এসেছে অথবা আল্লাহ তা’আলা যাদেরকে বেহুঁশ হওয়া থেকে রেহাই দিয়েছেন, তিনি তাঁদের মধ্যে ছিলেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৩. ঋণগ্রস্তকে স্থানান্তরিত করা এবং মুসলিম ও ইয়াহুদীর মধ্যে কলহ-বিবাদ
২২৫২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা ছিলেন, এমন সময় এক ইয়াহুদী এসে বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার এক সাহাবী আমার মুখে আঘাত করেছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কে? সে বলল, একজন আনসারী। তিনি বললেন, তাকে ডাক। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি ওকে মেরেছ? সে বলল, আমি তাকে বাজারে শপথ করে বলতে শুনেছিঃ শপথ তাঁর, যিনি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে সকল মানুষের উপর ফযীলত দিয়েছেন। আমি বললাম, হে খবীস, বল মুহাম্মদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরও কি?
এতে আমার রাগ এসে গিয়েছিল, তাই আমি তার মুখের উপর আঘাত করি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা নাবীদের একজনকে অপরজনের উপর ফযীলত দিও না। কারণ, কিয়ামতের দিন সকল মানুষ বেহুঁশ হয়ে পড়বে। তারপর যমীন ফাটবে এবং যারাই উঠবে, আমিই হব তাদের মধ্যে প্রথম। তখন দেখতে পাব মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশের একটি পায়া ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জানিনা, তিনিও বেহুঁশ লোকদের মধ্যে ছিলেন, না তাঁর পূর্বেকার (তুর পাহাড়ের) বেহুঁশীই তাঁর জন্য যথেষ্ট হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৩. ঋণগ্রস্তকে স্থানান্তরিত করা এবং মুসলিম ও ইয়াহুদীর মধ্যে কলহ-বিবাদ
২২৫৩। মূসা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ইয়াহুদী একটি দাসীর মাথা দু’টি পাথরের মাঝখানে রেখে থেঁতলিয়ে দিয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কে তোমাকে এরূপ করেছে? অমুক ব্যাক্তি, অমুক ব্যাক্তি? যখন জনৈক ইয়াহুদীর নাম বলা হল- তখন সে দাসী মাথার দ্বারা হ্যাঁ সূচক ইশারা করল। ইয়াহুদীকে ধরে আনা হল। সে অপরাধ স্বীকার করল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন। তখন তার মাথা দু’টি পাথরের মাঝখানে রেখে থেঁতলিয়ে দেওয়া হল।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৪. যিনি বোকা ও নির্বোধ ব্যক্তির লেন-দেন করা প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও ইমাম (কাযী) তার লেন-দেনে বাধা আরোপ করেননি। জাবির (রা) থেকে বর্ণিত যে, সাদকা দানকারীকে নিষেধ করার পূর্বে সে যে সাদকা করছিল, রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাকে তা ফেরত দিয়েছেন। এরপর (অনুরূপ অবস্থায়) তাকে সাদকা করা থেকে নিষেধ করেছেন। ইমাম মালি (র) বলেন, কারো উপর যদি ঋণ থাকে এবং তার কাছে একটি গোলাম ছাড়া আর কিছুই না থাকে, আর সে যদি গোলামটি আযাদ করে তবে তার এ আযাদ করা জায়িয নয়। যে ব্যক্তি কোন নির্বোধ বা এ ধরনের কোন লোকের সম্পত্তি বিক্রি করে এবং বিক্রি মূল্য তাকে দিয়ে দেয় ও তাকে তার অবস্থার উন্নতি ও অর্থকে যথাযথ ব্যবহার করতে নির্দেশ দেয়। এরপর যদি সে তার অর্থ নষ্ট করে দেয় তাহলে সে তাকে অর্থ ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখবে। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সা) সম্পদ বিনষ্ট করতে নিষেধ করেছেন। যে লোককে ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা দেওয়া হত, তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলে দিবে, ধোঁকা দিবে না। আর রাসূলুল্লাহ্ (সা) তার মাল গ্রহণ করেন নি।
২২৫৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে এক ব্যাক্তিকে ধোঁকা দেওয়া হত। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যখন বেচা-কেনা কর তখন বলে দেবে যে, ধোঁকা দিবে না। এরপর সে এ কথাই বলত।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৪. যিনি বোকা ও নির্বোধ ব্যক্তির লেন-দেন করা প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদিও ইমাম (কাযী) তার লেন-দেনে বাধা আরোপ করেননি। জাবির (রা) থেকে বর্ণিত যে, সাদকা দানকারীকে নিষেধ করার পূর্বে সে যে সাদকা করছিল, রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাকে তা ফেরত দিয়েছেন। এরপর (অনুরূপ অবস্থায়) তাকে সাদকা করা থেকে নিষেধ করেছেন। ইমাম মালি (র) বলেন, কারো উপর যদি ঋণ থাকে এবং তার কাছে একটি গোলাম ছাড়া আর কিছুই না থাকে, আর সে যদি গোলামটি আযাদ করে তবে তার এ আযাদ করা জায়িয নয়। যে ব্যক্তি কোন নির্বোধ বা এ ধরনের কোন লোকের সম্পত্তি বিক্রি করে এবং বিক্রি মূল্য তাকে দিয়ে দেয় ও তাকে তার অবস্থার উন্নতি ও অর্থকে যথাযথ ব্যবহার করতে নির্দেশ দেয়। এরপর যদি সে তার অর্থ নষ্ট করে দেয় তাহলে সে তাকে অর্থ ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখবে। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সা) সম্পদ বিনষ্ট করতে নিষেধ করেছেন। যে লোককে ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা দেওয়া হত, তাকে রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলে দিবে, ধোঁকা দিবে না। আর রাসূলুল্লাহ্ (সা) তার মাল গ্রহণ করেন নি।
২২৫৫। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি তার গোলাম আযাদ করে দিয়েছিল। তার কাছে এ ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গোলাম আযাদ করে দেয়া রদ করে দিলেন। পরে সে গোলামটি তার থেকে নুআইম ইবনু নাহ্হাম ক্রয় করে নিলেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৫. বিবাদমানদের পরস্পরের কথাবর্তা
২২৫৬। মুহাম্মদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি যদি কোন মুসলিমের অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা শপথ করে, তা হলে সে আল্লাহর সমীপে এমন অবস্থায় হাযির হবে যে, আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত থাকবেন। আশআস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম। এটা আমার সম্পর্কেই ছিল, আমার ও এক ইয়াহুদী ব্যাক্তির সাথে যৌথ মালিকানায় এ খন্ড জমি ছিল। সে আমার মালিকানার অংশ অস্বীকার করে বসল। আমি তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তোমার কোন সাক্ষী আছে কি? আমি বললাম, না। তখন তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়াহুদীকে বললেন, তুমি কসম কর। আমি তখন বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সে তো কসম করবে এবং আমার সম্পত্তি নিয়ে নেবে। তখন আল্লাহ তা’আলা (এ আয়াত) নাযিল করেনঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রি করে ...... আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৩ঃ ৭৭)।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৫. বিবাদমানদের পরস্পরের কথাবর্তা
২১৫৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি মসজিদের মধ্য ইবনু আবূ হাদরাদের কাছে তার প্রাপ্য কর্জের তাগাদা করেন। তাদের আওয়াজ বুলন্দ হয়ে গিয়েছিল, এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ঘর থেকে তা শুনতে পেলেন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হুজরার পর্দা তুলে বাইরে এলেন এবং হে কা’ব। বলে ডাকলেন। কা’ব (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি হাযির। তিনি ইশারায় তাকে কর্জের অর্ধেক মাফ করে দিতে বললেন। কা’ব (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি মাফ করে দিলাম, তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইবনু আবূ হাদরাদকে বললেন, উঠ, কর্জ পরিশোধ করে দাও।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৫. বিবাদমানদের পরস্পরের কথাবর্তা
২২৫৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনু হাকীম ইবনু হিযামকে সূরা ফুরকান আমি যেভাবে পড়ি তা থেকে ভিন্ন পড়তে শুনলাম। আর যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এ সূরা পড়িয়েছেন। আমি তাড়াতাড়ি তাকে বাধা দিতে চাচ্ছিলাম। কিন্তা তার সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। এরপর তার গলায় চাঁদর পেঁচিয়ে তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে এলাম এবং বললাম, আপনি আমাকে যা পড়তে শিখিয়েছেন, আমি তাকে তা থেকে ভিন্ন পড়তে শুনেছি।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ছেড়ে দিতে আমাকে বললেন। তারপর তাকে পড়তে বললেন, সে পড়ল। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এরূপ নাযিল হয়েছে। এরপর আমাকে পড়তে বললেন, আমিও তখন পড়লাম। আর তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এরূপই নাযিল হয়েছে। কারআন সাত হরফে নাযিল হয়েছে। তাই যেরূপ সহজ হয় তোমরা সেরূপেই তা পড়।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৫. বিবাদমানদের পরস্পরের কথাবর্তা
২২৫৯। মুহাম্মদ ইবনু বাশ্শার (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ইচ্ছা করেছিলাম যে, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার আদেশ করব। সালাত (নামায/নামাজ) দাঁড়িয়ে গেলে পর যে সম্প্রদায় সালাতে উপস্থিত হয় না, আমি তাদের বাড়ী গিয়ে তা জ্বালিয়ে দেই।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৭. মৃত ব্যক্তির ওসী হওয়ার দাবী
২২৬০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আব্দ ইবনু যামআ ও সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) যামআর দাসীর পুত্র সংক্রান্ত বিবাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করলেন। সা’দ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার ভাই আমাকে ওয়াসীয়াত করে গেছেন যে, আমি (মক্কায়) পৌঁছলে যেন যামআর দাসীর পুত্রের প্রতি লক্ষ্য রাখি, দেখতে পেলে যেন তাকে হস্তগত করে নেই। কেননা সে তার পুত্র। আব্দ ইবনু যামআ (রাঃ) বললেন, সে আমার ভাই এবং আমার পিতার দাসীর পুত্র। আমার পিতার ঔরসে তার জন্ম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্বার সাথে তার চেহারা-সুরতের স্পষ্ট মিল দেখতে পেলেন, তখন তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমিই তার হক্দার। হে আবদ ইবনু যামআ! সন্তান যার ঔরসে জন্ম গ্রহণ করে তারই হয়। হে সাওদা, তুমি তার থেকে পর্দা কর।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৮. কারো দ্বারা অনিষ্ট হওয়ার আশংকা থাকলে তাকে বন্দী করা। কুরআন, সুন্নাহ্ ও ফরযসমূহ শিখাবার উদ্দেশ্যে ইব্ন আব্বাস (রা) ইকরিমাকে পায়ে বেড়ী দিয়ে আটকিয়ে রাখতেন
২২৬১। কুতায়বা (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজদের দিকে এক অশ্বারোহী সেনাদল পাঠালেন। তারা ইয়ামামাবাসীদের সরদার বণূ হানীফা গোত্রের সুমামা ইবনু উসাল নামের একজন লোককে গ্রেফতার করে এনে মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, সুমামা তোমার কি খবর? সে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমার কাছে ভাল খবর আছে। সে (বর্ণনাকারী) সম্পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সুমামাকে ছেড়ে দাও।
পরিচ্ছেদঃ ১৫০৯. হারাম শরীফে (কাউকে) বেঁধে রাখা এবং বন্দী করা। নাফি ইব্ন আবদুল হারিস (রা) কয়েদখানা বানাবার উদ্দেশ্যে মক্কায় সাফওয়ান ইব্ন উমাইয়ার কাছ থেকে এই শর্তে একটি ঘর ক্রয় করেছিলেন যে, যদি উমর (রা) রাযী হন তবে ক্রয় পূর্ণ হবে। আর যদি তিনি রাযী না হন তা হলে সাফওয়ান চারশত দিনার পাবে। ইব্ন যবায়র (রা) মক্কায় বন্দী করেছেন
২২৬২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজদে একদল অশ্বারোহী সেনাদল পাঠালেন। তারা বণূ হানীফা গোত্রের সুমামা ইবনু উসাল নামক ব্যাক্তিকে নিয়ে এল এবং তাকে মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখল।
পরিচ্ছেদঃ ১৫১০. (ঋণদাতা ঋণী ব্যক্তির) পিছনে লেগে থাকা
২২৬৩। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবদুল্লাহ ইবনু আবূ হাদরাদ আসলামী (রাঃ) এর কাছে তাঁর কিছু পাওনা ছিল। তিনি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করলেন এবং পিছনে লেগে থাকলেন। তাঁরা উভয় কথা বলতে লাগলেন, এমনকি এক পর্যায়ে তাঁদের উভয়ের আওয়াজ উঁচু হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গেলেন এবং বললেন, হে কা’ব, উভয় হাত দিয়ে তিনি ইশারা করলেন; যেন অর্ধেক (গ্রহণ করার কথা) বুঝিয়েছিলেন। তাই তিনি (কা’ব) তার ঋণের অর্ধেক গ্রহণ করলেন এবং অর্ধেক ছেড়ে দিলেন।
পরিচ্ছেদঃ ১৫১১. ঋণের তাগাদা করা
২২৬৪। ইসহাক (রহঃ) ... খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহেলী যুগে আমি ছিলাম একজন কর্মকার। আস ইবনু ওয়ায়লের কাছে আমার কিছু দিরহান পাওনা ছিল। আমি তাঁর কাছে তাগাদা করতে গেলাম। সে আমাকে বলল, যতক্ষণ না তুমি মুহাম্মদকে অস্বীকার করছ ততক্ষণ আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করব না। আমি বললাম, তা হতে পারে না, আল্লাহর কসম, যে পর্যন্ত না আল্লাহ তোমার মৃত্যু ঘটায় এবং তোমার পুনরুত্থান না হয় সে পর্যন্ত আমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অস্বীকার করব না। সে বলল, ঠিক আছে, যতক্ষণ না আমার মৃত্যু হয় এবং পুনরুত্থান না হয় আমাকে অব্যাহতি দাও। তখন আমাকে মাল ও সন্তান দেয়া হবে এরপর তোমার পাওনা পরিশোধ করে দেব। এ প্রসঙ্গে এ আয়াত নাযিল হয়ঃ তুমি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছ, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে, আমাকে অবশ্যই ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেওয়া হবে (১৯ঃ ৭৭)।