৫৪০১। আবূ কুরায়ব মুহাম্মদ ইবনু আলা ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বাকী নামক স্থানে এক ব্যক্তি আর এক ব্যক্তিকে ডাক দিল, হে আবূল কাসিম! তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন। সে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করিনি; আমি তো অমুককে ডেকেছি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেলেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখ; তবে আমার কুনিয়াত অনুসারে তোমরা কুনিয়াত নামকরণ কর না।
৫৪০২। ইবরাহীম ইবনু যিয়াদ (যার উপাধি সাবলান) (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ
আমার নিকট তোমাদের নামগুলোর মাঝে সর্বাধিক প্রিয় নাম আবদুল্লাহ ও আবদুর রাহমান।
৫৪০৩। উসমান ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের মধ্যে এক ব্যক্তির একটি পূত্র জনা নিল। সে
তার নাম রাখল মুহাম্মাদ। তখন তার গোত্রের লোকেরা তাকে বলল, আমরা
তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামে নাম রাখার অবকাশ দিব
না। সে তখন তার ছেলেটিকে পিঠে বয়ে নিয়ে চলল এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার একটি ছেলের জনা হলে আমি
তার নাম রাখলাম মুহাম্মাদ। তাতে আমার গোত্রের লোকেরা আমাকে বলছে, আমরা
তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামে নাম রাখার অবকাশ দিব
না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমার নামে নাম
রাখ, তবে
আমার কুনিয়াত অনুসারে কুনিয়াত গ্রহণ করবে না। কেননা আমি হলাম বণ্টনকারী; (আল্লাহ
প্রদত্ত সম্পদ) তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে থাকি।
৫৪০৪। হান্নাদ ইবনু সারী (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বললেন, আমাদের
মধ্যে এক ব্যক্তির পূত্র ভূমিষ্ঠ হিয়। সে তার নাম রাখল মুহাম্মাদ। আমরা বললাম, তোমাকে
আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নামের দ্বারা তোমার কুনিয়াত
রাখব না, যতক্ষন
না তুমি তাঁর অনুমতি নাও। রাবী বলেনঃ তখন সে তাঁর কাছে গিয়ে বলল যে, আমার একটি
ছেলে জনানিয়েছে। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামে তার নাম
রেখেছি। ওদিকে আমার গোত্রের লোকেরা সেই নাম দিয়ে আমার কুনিযাত বলতে অস্বিকৃতি
জানাল। (তারা বলল),
যতক্ষন না তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর অনুমতি গ্রহণ
কর। তখন বললেনঃ তোমরা আমারনামে নাম রাখ, তবে আমার কুনিয়াত গ্রহণ করো না। কেননা আমি তো
কাসিম, (বণ্টনকারী)
রুপে প্রেরিত হয়েছি;
তোমারদের মাঝে বন্টন করার দায়িত্ব পালন করি।
৫৪০৫। রিফাআ ইবনু হায়সাম ওয়াসিতী (রহঃ) হুসায়ন (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে-হাদীস
বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি আমি তো বণ্টনকারীরুপে প্রেরিত হয়েছি; তোমাদের
মাঝে বণ্টনের দায়িত্ব পালন করি – অংশটূকু উল্লেখ করেননি।
৫৪০৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ সাঈদ আশাজ্জ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
তোমরা আমার নামে নাম রাখ, আর আমার কুনিয়াত অনুসারে কুনিয়াত রেখ না। কেননা
আমিই হলাম “আবূল কাসিম ! তোমাদের মাঝে বণ্টন করে থাকি। রাবী আবূ বাকর (রহঃ) বর্ণিত
রিওয়ায়াতে- ‘লা তাকুনু’ স্হলে ‘লা তাকতানু’ রয়েছে।
৫৪০৭। আবূ কুরায়ব (রহঃ) আ’মাশ (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে রিওয়ায়াত করেছেন। তবে
সে হাদীসে রয়েছে, তিনি
বলেছেনঃ আমাকে কাসিম,
(বণ্টনকারী) বানানো হয়েছে; তোমাদের মাঝে আমি বণ্টন করে থাকি।
৫৪০৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক আনসারী ব্যক্তির একটি ছেলে জনা নিলে সে
তার নাম মুহাম্মাদ রাখার ইচ্ছা করল। তখন সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেনঃ আবূ সারীরা উত্তম কাজ করেছেন তোমরা আমার
নামে নাম রাখ, আমার
কুনিয়াত গ্রহণ কর না।
৫৪০৯। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না, মুহাম্মাদ
ইবনু আমর ইবনু জাবালা,
ইবনু মূসান্না,
বিশর ইবনু খালিদ,
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী ও ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ইতিপূর্বে আমরা বাঁদের
হাদীস উল্লেখ করেছি,
তাঁদের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে শুবা (রহঃ) সুত্রে বর্ণিত হাদীসে
নাযর (রহঃ) বলেছেনঃ যে, এতে হুসায়ন ও সুলায়মান (রহঃ) আরো কিছু অতিরিক্ত
বলেছেন। হুসায়ন (রহঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেছেন, আমি
তো বণ্টনকারীরুপে প্রেরিত হয়েছি; ‘আমি তোমাদের মাঝে বণ্টন করে থাকি। আর সূলায়মাল
(রহঃ) বলেছেন, আমিই
তো হনাম বণ্টনকারী,
তোমাদের মাঝে বণ্টন করে থাকি।
৫৪১০। আমরুন-নাকিদ ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নূমায়র (রহঃ) জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের মধ্যে এক ব্যক্তির ছেলে জনা নিলে
সে তার নাম রাখল কাসিম। আমরা বললাম, আমরা তোমাকে “আবূল কাসিম (কাসিমের বাবা)
কুনিয়াভে ডাকব না এবং তোমার চোখ শীতল করব না। সে তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে এসে ঐ বিষয়টি বলল। তিনি বললেন, তোমার
ছেলের নাম রাখ “আবদুর রাহমান।
৫৪১১। উমাইয়া ইবনু বিসতাম, আলী ইবনু হুজর (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে ইবনু
উয়ায়না (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি “তোমার চোখ শীতল
করব না কথাটি উল্লেখ করেননি।
৫৪১২। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আমরুন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নূমায়র (রহঃ) আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃআবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখ, তবে আমার কুনিয়াত অনুসারে কুনিয়াত রেখ না। আমর
(রহঃ) তার রিওয়ায়াতে বলেছেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আর তিনি আমি
বলতে শুনেছি- কথাটি বলেননি।
৫৪১৩। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র, আবূ সাঈদ
আশাজ্জ ও মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না আনাযী (রহঃ)। মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি যখন নাজরান গেলাম, তখন সেখানকার লোকেরা আমাকে জিজ্ঞাসা করল, আপনারা
(আন-কুরআনে) (হে হারীনের বোন) অর্থাৎ ঈসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মা মারইয়াম পড়ে
থাকেন; অথচ
. মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছিলেন . ঈসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এত দিন আগে? সুতরাং
মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ভাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারুন (আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) ঈসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অনেক আগের যুগের। মারইরাম তার বোন হন
কিভাবে? রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে পরে যখন ফিরে এলাম, তখন তাঁকে
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তারা (ইয়াহূদী-নাসারারা) তাদের পূর্ববর্তী নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সালিহগণের নামে (সন্তানের) নাম রাখত।
৫৪১৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা (রহঃ) সামুরা ইবনু
জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
চারটি নাম দ্বারা আমাদের গোলামদের নামকরণ করতে নিষেধ করেছেনঃ আফলাহ, রাবাহ, ইয়াসার ও
নাফি।
৫৪১৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) সামূরা ইবনু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা গোলামের নাম রাবাহ, ইয়াসার, আফলাহ ও
নাফি রেখ না।
৫৪১৬। আহমাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ইউনুস (রহঃ) সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর
নিকট অধিকতর প্রিয় কালাম চারটি। ‘সুব হানাআল্লাহ’ আল্লাহ নিঙ্কলুষ পবিত্র, ‘আল
হামদুলিল্লাহ’ হামদ আল্লাহর ‘অলাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (এক)আল্লাহব্যতীত আর ইলাহ নেই
এবং ‘আল্লাহু আকবার’ আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ। এগুলোর যে কোনটি দিয়ে তুমি শুরু কর, তাতে তোমার
কোন ক্ষতি নেই। আর কখনো তোমার গোলামের নাম ইয়াসার, রাবাহ, নাজীহ ও আফলাহ রাখবে না। কারণ, তুমি হয়ত
ডাকবে- “ওখানে সে আছে কি?- আর সে (তখন সেখানে না ও থাকতে পারে। তখন কেউ
বলবে, না-
এখানে নেই। (এ উত্তরে কুধারণা সৃষ্টি হতে পারে)। (রাবী বলেন), নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ চারটি নাম বলেছেন। সুতরাং কেউ যেন আমার মাধ্যমে
এর চাইতে বেশি যোগ না করে।
৫৪১৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, উমাইয়া ইবনু বিসতাম, মুহাম্মাদ
ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) মানসূর (রহঃ) থেকে যুহায়র (রহঃ)-এর অনুসারে
হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। তবে জারীর (রহঃ) ও রাওহ (রহঃ) বর্ণিত হাদীস যুহায়র (রহঃ)
বর্ণিত পূর্ণ ঘটনার বিবরণ সম্বলিত হাদীসের অনুরুপ। কিন্তু শুবা (রহঃ)-এর হাদীসে
শুধু ছেলের নামকরণের কথা উল্লেখ রয়েছে। তিনি (চার-এর) কথাটি উল্লেখ করেননি।
৫৪১৮। মুহাম্মদ ইবনু আহমদ ইবনু আবূ খালফ জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ালা, বারাকাহু, আফলাহ, ইয়াসার ও
নাফি এবং এ ধরনের নাম রাখতে নিষেধ করার ইচ্ছা করেছিলেন। তারপর তাঁকে আমি দেখলাম যে, এ বিষয়ে
তিনি নীরব রইলেন, কিছু
বললেননা। এমতাবস্হায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ইন্তেকাল হল
এবং তিনি তা (কঠোরভাবে) নিষেধ করেননি। পরে উমার (রাঃ) তা নিষেধ করার ইচ্ছা করলেন
পরে তিনিও তা থেকে বিরত রইলেন।
৫৪১৯। আহমদ ইবনু হাম্বল, যুহায়র ইবনু হারব, মুহাম্মাদ
ইবনু মূসান্না, উবায়দুল্লাহ
ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আছিয়া’ (অবাধ্য)-এর নাম পরিবর্তন করে দিলেন এবং
বললেন তুমি ‘জামিলা’ সুন্দরী। রাবী আহমদ (রহঃ) সনদের ‘আখবারানি’ -এর স্হলে ‘আন’
দ্বারা বর্ণনা করেছেন।
৫৪২০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমার
(রাঃ)-এর এক কন্যাকে,
‘আসিয়াহ’ নামে ডাকা হত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তার নামকরণ করলেন, ‘জামীলা’।
৫৪২১। আমরুন-নাকিদ ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ (উম্মুল মুমিনীন) জুয়ায়রিয়া (রাঃ)-এর আসল নাম ছিল বাররাহ- (পুণ্যবতী), রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখলেন জুয়ায়রিয়াহ (স্বেহময়ী
কিশোরী)। কারণ বাররাহ (পুণ্যবতী)-এর কাছে থেকে বের হয়ে এসেছেন- এমন বাক্য তিনি
অপছন্দ করতেন। ইবনু আবূ উমার (রাঃ)-এর হাদীসে কুরায়ব (রহঃ) সুত্রে ‘আল ইবনু
আব্বাস’ -এর স্থলে ‘সামিয়তু ইবনু আব্বাস’ বর্ণিত হয়েছে।
৫৪২২। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না, মুহাম্মদ
ইবনু বাশশার ও উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (ব) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যায়নাব
(রাঃ)-এর আসল নাম ছিল ‘বাররাহ’। তাই বলা হল, তিনি নিজ পবিত্রতার দাবি করেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাম রাখলেন ‘যায়নাব’।
৫৪২৩। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) যায়নাব বিনত উম্মূ সালামা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার নাম ছিল ‘বাররাহ’। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমার নাম রাখলেন ‘যায়নাব’। তিনি বলেনঃ যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) তাঁর
(নাবী-এর) কাছে এল। তার (-ও) নাম ছিল ‘বাররাহ’ তার নামও তিনি ‘যায়নাব’ রাখলেন।
৫৪২৪। আমরুন-নাকিদ (রহঃ) মুহাম্মদ ইবনু আমর ইবনু আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ আমার মেয়ের নাম রাখলাম ‘বাররাহ’। তখন যায়নাব বিনূত আবূ সালামাহ (রাঃ) আমাকে
বললেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এ নামটি নিষেধ করেছেন। আমার নাম রাখা হয়েছিল
“বাররাহ- (পূণ্যবতী)। তাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ
তোমরা (আপনাকে ভাল বলে) নিজে নিজকে পবিত্র দাবি কর না। আল্লাহ তাআলাই তোমাদের
মাঝের পূণ্যবানদের অধিকতর জানেন। তারা বলল আমরা তার কি নাম রাখব? তিনি বললেন, তার নাম
রাখ যায়নাব।
৫৪২৫। সাঈদ ইবনু আমর আশআসী, আহমদ ইবনু হাম্বল ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ আল্লাহ পাকের কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত নাম ঐ ব্যক্তির, যার নাম
মালিকুল আমলাক– (রাজাধিরাজ) রাখা হয়। ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) তাঁর রিওয়ায়াতে অধিক
বর্ণনা করেছেন, “আল্লাহ
ব্যতীত আর কেউ -মালিক- ও অধিপতি নেই। আশ আসী (রহঃ) বলেনঃ রাবী সুফিয়ান (রহঃ)
বলেছেন, এ
শব্দ (ফারসী ভাষায়) “শাহানশাহ–এর অনুরুপ। আর আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ
আমর (রহঃ)-কে -এর অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ’আও দায়ু’ নিকৃষ্ট।
৫৪২৬। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ এ গুলো আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে আমাদের কাছে রিওয়ায়াত করেছেন। এরপর তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করলেন। সেগুলোর
মধ্যে একটি হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন
আল্লাহ জন্যর অধিকতর গোস্যার কারণ এবং অধিকতর নিফৃষ্ট, অধিকতর
ক্রোধাম্বনের সম্মুখীন হবে সেই ব্যক্তি, যার নাম রাখা হয়েছে মালিকুল মুলক- (রাজাধিরাজ-সমরাট)।
আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ মালিক- (সমরাট) নেই।
৫৪২৭। আব্দুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ আবদুল্লাহ ইবনু আবূ তালহা আনসারী-এর জনাকালে আমি তাকে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে নিয়ে গেলাম। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ‘আবা’ গায়ে তাঁর উটের শরীরে মালিশ করছিলেন।
তিনি জিজ্ঞাসা করলেন,
তোমার সঙ্গে কি খেজুর আছে? আমি বললাম, হ্যা। এরপর আমি তাঁর হাতে কয়েকটি খেজুর দিলাম।
তিনি সেগুলো তাঁর মুখে দিয়ে চিবালেন। পরে শিশুটির মুখ ফাঁক করে তার মুখে দিয়ে
দিলেন। শিশুটি তা চুষতে লাগল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেনঃ আনসারীদের প্রিয় খেজুর আর তিনি তার নাম রাখলেন, আবদুল্লাহ।
৫৪২৮। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃআবূ তালহা (রাঃ)-এর এক ছেলে রোগে ভুগছিল। (একদিন)আবূ তালহা (রাঃ) (তাঁর কাজে)
বেরিয়ে যাওয়ার পর শিশুটি মারা যায়। যখন আবূ তালহা (রাঃ) ফিরে এলেন, (স্ত্রীকে)
জিজ্ঞাসা করলেন, আমার
ছেলে কি করছে? স্ত্রী
উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, সে আগের চাইতে শান্ত আছে। এরপর তিনি তাঁকে
রাতের খাবার দিলেন,
তিনি তা খেলেন,
তারপর তার সঙ্গে মিলিত হলেন। এরপর তিনি অবসর হলে উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, শিশুটিকে
দাফন করে এস। সকাল হলে আবূ তালহা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে এসে তাঁকে (সব) ঘটনা বললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি
আজ রাতে মিলিত হয়েছ?
তিনি বললেন, হ্যা।
তিনি (দুঁআ করে) বললেন, ইয়া আল্লাহ। তাদের উভয়ের জন্য বরকত দিন। এরপর
তার একটি ছেলে জন্ম গ্রহণ করে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে বললেন, তাকে
(কোলে) ভুলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে নিয়ে যাও। উম্মু
সুলায়ম (রাঃ) তার সাথে কয়েকটি খেজুর দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাকে (শিশুটিকে) হাতে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তার সাথে
কিছু আছে কি? তারা
বললেন, হ্যা, কয়েকটি
খেজুর। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলো নিয়ে চিবালেন। এরপর তা
তাঁর মুখ থেকে নিয়ে শিশুটির মুখে দিলেন। তারপর তার জন্য বরকতের দু*আ করলেন এবং
তারনাম রাখলেন আবদুল্লাহ।
৫৪২৯। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে এ কিসসা সহকারে রাবী
ইয়াযীদ (রহঃ)-এর হাদীসের অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৪৩০। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আশ আরী ও আবূ কুরায়ব
(রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার একটি ছেলের জনা হলে আমি তাকে
নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে হাযির হলাম। তিনি তার নাম
রাখলেন ইবরাহীম এবং একটি খেজুর চিবিয়ে তিনি তাকে বরকত দিলেন।
৫৪৩১। হাকাম ইবনু মূসা আবূ সালিহ (রহঃ) উরওয়া ইবনু যুবায়র ও ফাতিমা বিনত
মুনযির ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেনঃ আসমা বিনত আবূ বাকর (রাঃ) যখন
হিজরত করলেনঃ তখন তিনি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে গর্ভে ধারণ করছিলেন। কুবায়
পৌছলে আবদুল্লাহকে প্রসব করলেন। প্রসবের পর তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে গেলেন, যেন তিনি তাকে (নবজাতককে) খেজুর চিবিয়ে বরকত
দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুটিকে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে
নিজের কোলে রাখলেন। তারপর একটি খেজুর আনতে বললেন। রাবী বলেনঃ আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ তা
পাওয়ার পূর্ব খুঁজে সংগ্রহ করতে আমাদের কিছু সময় বিলম্ভ হল। এরপর তিনি তা চিবিয়ে
নিজ মুখ থেকে তার মুখে দিয়ে দিলেন। সূতরাং তার পেটে প্রথম যা ঢুকল, তা ছিল
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর লালা। আসমা (রাঃ) আরও বলেছেন, তারপর তাকে
হাত বুলিয়ে দিলেন এবং তার জন্য দুআ করলেন, আর তার নাম রাখলেন আবদুল্লাহ অতঃপর সাত কিংবা
আট বাহব বয়সে সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে বায়আত
হওয়ার জন্য এল। (পিতা) যুবায়র (রাঃ) তাকে তা করার উপদেশ দিয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে মৃদু হাসলেন। এরপর
তাকে বায় আত করে নিলেন।
৫৪৩২। আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি
মক্কায় (থাকাকালে) আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেনঃ
আমি (মক্কা থেকে) মদিনায় (হিজরাত উদ্দেশ্যে) বের হলাম। তখন আমার গর্ভকাল পূর্ণ হয়ে
আসছে। আমি মদিনায় এসে কুবায় অবতরণ করলাম এবং কুনায় তাকে জন্ম দিলাম। অতঃপর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে গেলাম। তিনি তাকে
(নবজাতককে) তাঁর কোলে রাখলেন, তারপর একটি খেজুর আনিয়ে তা চিবুলেন, তারপর তাঁর
মুখ থেকে লালাসহ তার (শিশুটির) মুখে দিলেন। সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর লালাই ছিল প্রথম জিনিস, যা তার পেটে প্রবেশ করল। এরপর খেজুর চিবিয়ে তার
মুখে দেওয়ার পর তার জন্য দুআ করলেন এবং তাকে বরকত (-এর দুআ) দিলেন। এ শিশুই ছিল
(মদিনায়) হিজরতের পর ইসলামের প্রথম নবজাতক।
৫৪৩৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আসমা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে
বর্ণিত যে, আবদুল্লাহ
ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে গর্ভে ধারণকৃত অবস্হায় হিজরত করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে পৌছলেন। তারপর তিনি উসামা (রাঃ)-এর হাদীসের অনুরুপ
বর্ণনা করেন।
৫৪৩৪। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে (নবজাতক) শিশুদের নিয়ে আসা হতো। তিনি
তাদের জন্য বরকতের দুআ করতেন এবং খেজুর চিবিয়ে তাদের মুখে দিতেন।
৫৪৩৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রকে
তার মুখে খেজুর চিবিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে এলাম। অতঃপর আমরা একটি খেজুর তালাশ করলাম
এবং এর অম্বেষণ করা আমাদের জন্য কঠিন ছিল।
৫৪৩৬। মুহাম্মদ ইবনু সাহব তামীমী ও আবূ বাকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) সাহব ইবনু সা’দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুনযির ইবনু আবূ উসায়দ (রাঃ)-কে তাঁর জনা কালে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে নিয়ে আসা হল। নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার রানের উপরে রাখলেন। আবূ উসায়দ (রাঃ)
(পাশে) বসা ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সামনের কোন কিছুতে
মনোনিবেশ করলেন। আবূ উসায়দ (রাঃ) তার ছেলের বিষয়ে (কাউকে) নির্দেশ করলেন। তাকে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর থেকে তুলে নেয়া হল। তারা তাকে
তুলে নেয়ার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সচেতন হলেন এবং বললেন, শিশুটি
কোথায়? আবূ
উসায়দ (রাঃ) বললেন,
ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা তাকে সরিয়ে নিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তার নাম কি? তারা বলল, অমূক ইয়া
রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ না, বরং তার নাম মুনযির। এভাবে সেদিন তিনি তার নাম
রাখলেন।
৫৪৩৭। আবূ রাবী সুলায়মান ইবনু দাঊদ আতাকী ও শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) আনাস
ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ছিলেন মানুষের মধ্যে চরিত্র গুণে সর্বোত্তম। আমার একটি ভাই ছিল, যাকে আবূ
উমায়র বলে ডাকা হতো। রাবী বলেনঃ আমি ধারণা করি তিনি বলেছিলেন যে, সে দুধ
ছাড়ানো (বয়সের) ছিল। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই
(আমাদের বাড়িতে) আসতেন, তখন তাকে দেখে বলতেন, হে আবূ
উমায়র! কি করেছ নূগায়র (চড়ইছানা)? তিনি এভাবে তার সাথে খেলা করতেন।
৫৪৩৮। মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ শুবারী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে বৎস!।
৫৪৩৯। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) মুগীসা ইবনু শু’বা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে
দাজ্জাল, সম্পর্কে
আমার চেয়ে অধিক কেউ জিজ্ঞাসা করেননি। তিনি আমাকে বললেন, হে স্নেহের
পূত্র! তার কোন ব্যাপার তোমাকে মূশকিলে ফেলছে? সে কিছুতেই তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। সাহাবী
বলেনঃ আমি বললাম, তারা
তো বলে থাকে যে, তার
সাথে পানির নহর সমূহ এবং রুটির পাহাড় সমুহ থাকবে। তিনি বললেনঃ তা আল্লাহর কাছে তার
চেয়ে সহজতর।
৫৪৪০। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র, সুরায়জ ইবনু ইউনূস, ইসহাক ইবনু
ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ইসমাঈল (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে হাদীস বর্ণনা
করেছেন। তবে তাঁদের মধ্যে ইয়াযীদ (রহঃ) বর্ণিত হাদীস ব্যতীত কারো হাদীসে মুগীরা
(রাঃ)-এর প্রতি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উক্তি হে স্নেহের পুত্র
নেই।
৫৪৪১। আমর ইবনু মুহাম্মদ ইবনু বুকায়র নাকিদ (রহঃ) বুসর ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ
আমি মদিনার আনসারীদের একটি মজলিসে বসা ছিলাম। তখন আবূ মূসা (রাঃ) অস্থির হয়ে, কিংবা রাবী
বলেছেন, সন্ত্রস্ত
হয়ে আমাদের কাছে এলেন। আমরা বললাম, আপনার কি হয়েছে? তিনি বললেন, উমার (রাঃ) আমার কাছে লোক পাঠালেন, যেন আমি
তাঁর কাছে যাই। আমি তাঁর দরজায় তিনবার সালাম করলাম। তিনি আমাকে জবাব দিলেন না। তাই
আমি ফিরে এলাম। পরে আমাকে (ডেকে নিয়ে) তিনি বললেন, আমার কাছে আসার ব্যাপারে কোন বিষয় তোমাকে বাধা
দিল? আমি
বললাম, আমি
আপনার কাছে এসেছিলাম এবং আপনার দরজায় (দাঁড়িয়ে) তিনবার সালাম করেছিলাম। কিন্তু
তারা (বাড়ির কেউ) আমাকে সালামের জবাব দিলেন না। তাই আমি ফিরে গেলাম। আর
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি তিনবার
অনুমতি চায়, আর
তাকে অনুমতি দেয়া না হয়, তাহলে সে যেন ফিরে আসে। তখন উমার (রাঃ) বললেনঃ
এ বিষয়ে প্রমাণ দাও। অন্যথায় তোমাকে আঘাত করব। তখন উবাই ইবনু কাব (রাঃ) বললেন, তার সঙ্গে
কাওমের সব চাইতে কম বয়সের ছেলেই যাবে। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, আমি কাওমের
কনিষ্ঠতম। তিনি বললেন,
তবে একে নিয়ে যাও।
৫৪৪২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) ইয়াযীদ খুসায়ফা (রহঃ) থেকে
উল্লিখিত সনদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। তবে ইবনু আবূ উমার (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে
তিনি বলেছেন যে, আবূ
সাঈদ (রাঃ) বলেনঃ তখন আমি তাঁর সাথে উঠে দাঁড়ালাম এবং উমার (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে
সাক্ষ্য দিলাম।
৫৪৪৩। আবূ তাহির আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা উবাই ইবনু
কাব (রাঃ)-এর কাছে একটি মজলিসে ছিলাম। তখন আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) রাগাবিত অবস্হায়
এসে দাঁড়িয়ে বললেন,
আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমাদের মধ্যে কেউ কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছ যে, ‘অনুমতি গ্রহণ’ তিনবার, তাতে যদি
তোমাকে অনুমতি দেওয়া হয়, ভাল, অন্যথায় তুমি ফিরে আস। উবাই (রাঃ) বললেন এতে কী
হয়েছে? তিনি
বললেন, গতকাল
(খলীফা) উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর কাছে আমি তিনবার অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি
দেওয়া হলো না, তাই
আমি ফিরে এলাম। পরে আজ তাঁর কাছে গেলাম এবং তার কাছে প্রবেশ করে তাঁকে খবর দিলাম
যে, আমি
গতকাল এসেছিলাম এবং তিনবার সালাম করে (জবাব না পেয়ে) ফিরে গিয়েছিলাম। তিনি বললেন, আমরা তোমার
আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম, তবে তখন আমরা ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তোমাকে
অনুমতি দেওয়া পর্যন্ত তুমি অনুমতি চাইতে থাকলে না কেন? তিনি বললেন, আমি তো
তেমন অনুমতি চেয়েছি,
যেমন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি। উমার (রহঃ)
বললেন, আল্লাহর
কসম! তোমর পিঠে ও পেটে আঘাত করব; কিংবা তুমি এমন লোক উপস্থিত করবে, যে এ বিষয়ে
তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। তখন উবাই ইবনু কাব (রাঃ) বললেন, আল্লাহর
কসম! আমাদের সবচে তরুণ বয়সের ব্যক্তই তোমার সাথে যাবে। হে আবূ সাঈদ তখন আমি
দাঁড়ালাম এবং উমার (রাঃ)-এর কাছে এসে বললাম, আমি অবশ্যই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে একথা বলতে শুনেছি।
৫৪৪৪। নাসর ইবনু আলী আল-জাহযামী (রহঃ) আবূ সাঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ মূসা
(রাঃ) উমর (রাঃ) এর দরজায় এসে অনুমতি চাইলেন। উমর (রাঃ) (আওয়াজ শুনে মনে মনে) বলেন, একবার হল।
তারপর দ্বিতীয়বার অনুমতি চাইলেন। উমর (রাঃ) বললেন, দু’বার হল। তারপর তৃতীয়বার অনুমতি চাইলেন। উমর
(রাঃ) বললেন, তিনবার
হল। তারপর তিনি ফিরে গেলেন। পড়ে [উমর (রাঃ)] তাঁর পিছনে লোক পাঠিয়ে তাকে ফিরিয়ে
আনলেন এবং বললেন, এটি
যদি এমন বিষয় হয় যা তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্মরণ
রেখেছে, তাহলে
তা (প্রমানসহ) পেশ কর। অন্যথায় তোমাকে আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিব। আবূ সাঈদ
(রাঃ) বলেন, তখন
তিনি আমাদের কাছে এসে বললেন, তোমরা জান না যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ অনুমতি গ্রহন তিনবার। রাবী (আবূ সাঈদ) বলেন, লোকেরা তখন (এ কথা শুনে) হাসাহাসি করতে লাগল।
রাবী বলেন, আমি
বললাম, তোমাদের
কাছে আমদের একজন মুসলমান ভাই এসেছেন, যাকে সন্ত্রস্ত করা হয়েছে, আর তোমরা
হাসছ? (আমি
তাকে বললাম) চলুন! এ শাস্তিতে আমি আপনার শরীক রয়েছি। তখন তিনি (আমাকে সঙ্গে নিয়ে)
তাঁর কাছে গিয়ে বললেন,
এই যে! আবূ সাঈদ (আমার সাক্ষী)।
৫৪৪৫। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না, ইবনু বাশশার ও আহমাদ ইবনু হাসান ইবনু খারাশ
(রহঃ) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে আবূ মাসলামা (রহঃ) থেকে গৃহীত বিশর ইবনু মুফাযযাল
(রহঃ) বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীস রিওয়ায়াত করেন।
৫৪৪৬। মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। (খলীফা)
উমর (রাঃ) – এর কাছে আবূ মূসা (রাঃ) তিনবার অনুমতি চাইলেন। তখন (জবাব না পেয়ে)
তিনি যেন তাঁকে ব্যস্ততায় নিমগ্ন মনে করে ফিরে গেলেন। তখন উমর (রাঃ) বললেন, আমরা কি
আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (আবূ মূসা) – এর আওয়ায শুনিনি? তাকে অনুমতি দাও! তখন তাকে উমরের কাছে ডাকা হল।
তখন তিনি তাঁকে বললেন,
এরূপ করতে তোমাকে কিসে উদ্বুদ্ধ করেছে? তিনি বললেন, আমাদের এরূপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি
বললেন, অবশ্যই
তুমি এ বিষয়ে প্রমাণ পেশ করবে, অন্যথায় আমি অবশ্যই এমন করব(শাস্তি দিব)। তিনি
বেরিয়ে গিয়ে আনসারীদের এক মজলিসে পৌঁছেলেন। তাঁরা বললেন, আমাদের মাঝের
সবচে’ কম বয়সের ব্যক্তই এ বিষয়ে তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। তখন আবূ সাঈদ (রাঃ)
উঠলেন এবং বললেন, আমাদের
এরূপই নির্দেশ দেয়া হয়। তখন উমর (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –
এর এ বিষয়টি আমার কাছে গুপ্ত (অজ্ঞাত) রয়েছে। (কারন) বাজারের ব্যবসায় আমাকে এ বিষয়
থেকে গাফিল রেখেছে।
৫৪৪৭। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার ও হুসায়ন ইবনু হুরায়স (রহঃ) ইবনু জ্যুারায়জ (রহঃ)
থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে রাবী নাযর (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে
বাজারের বেচাকেনা আমাকে এ বিষয় থেকে গাফিল রেখেছে বাক্যটি উল্লেখ করেননি।
৫৪৪৮। হুসায়ন ইবনু বুরায়স আবূ আম্মার (রহঃ) আবূ বুরদা (রাঃ) সূত্রে আবূ মূসা
আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ বুরদা (রহঃ) বলেনঃআবূ মূসা (রাঃ) উমার ইবনু খাত্তাব
(রাঃ)-এর কাছে এসে বললেন, আলসালামূ আলাইকুম- এ (আমি) আবদুল্লাহ ইবনু
কায়স। কিন্তু তিনি তাঁকে অনুমতি দিলেন না। তখন (আবার) বললেন, আলসালামু
আলাইকুম-এই যে,আবূ
মূসা। আস সালামু আলাইকুম-এই যে আশআরী। এরপর (জবাব না পেয়ে) তিনি ফিরে গেলেন। তখন
উমার (রাঃ) বললেন,
(তাকে) আমার কাছে ফিরিয়ে আন, আমার কাছে ফিরিয়ে আন। ফিরে এলে তিনি বললেন, কিসে
তোমাকে ফিরিয়ে দিল,
হে আবূ মূসা? আমরা
কোন কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে আমি বলড়ে শুনেছি অনুমতি চাওয়া তিনবার। এতে তোমাকে অনুমতি দেওয়া হলে ভাল, অন্যথায়
ফিরে যাও। ঊমার (রাঃ) বললেন, এ বিষয়ে অবশ্যই তুমি আমার কাছে প্রমাণ নিয়ে
আসবে। অন্যথায় আমি এমন করব তেমন করব, (শাস্তি দিব)। তখন আবূ মূসা (রাঃ) চলে গেলেন।
উমার (রাঃ) বললেন, প্রমাণ
সংগ্রহ করতে পারলে,
বিকালে তাকে তোমরা মিম্বারের কাছে দেখতে পারে, আর যদি প্রমাণ না পায়, তা হলে
তোমরা তাকে দেখতে পাবে না। বিকালে তিনি এলে তাঁরা তাঁকে (মিম্বারের কাছে দেখতে)
পেল। উমার (রাঃ) বললেন, হে আবূ মূসা! কি বলছ? প্রমাণ
পেয়েছ? তিনি
বললেন, হ্যা
উবাই ইবনু কা”ব! তিনি বললেন, ইনি বিশ্বস্ত!। তখন উবাই ইবনু কাব (রাঃ)-কে
লক্ষ্য করে বললেনঃ হে আবূ তুফায়ল কী বলেন? বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-কে এরুপ বলতে আমি শুনেছি হে ইবনু খাত্তাব! আপনি কখনো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীগণের জন্য আযাব স্বরুপ হয়ে পড়বেন না। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ!
(আমি তা কখনো চাই না)। আমি তো একটি বিষয় শোনার পর সে সম্পর্কে সুনিশ্চিত হতে আমার
আগ্রহ হয়।
৫৪৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু উমার ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আবান (রহঃ) তালহা ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) থেকে এ সনদে রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, উমার (রাঃ)
(উবাইকে লক্ষ্য করে) বললেনঃ হে আবূল মুনযির আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে একথা শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যা। তবে, হে ইবনু খাত্তাব! আপনি রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীদের জন্য আযাব স্বরুপ হবেন না। কিন্তু
উমার (রাঃ)-এর সূবহানাল্লাহ ও পরবর্তী উক্তি উল্লেখ করেননি।
৫৪৫০। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর গৃহে এসে
তাঁকে ডাকলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, এ কে”? আমি বললাম, -আমি-। রাবী
জাবির (রাঃ) বলেনঃ তখন তিনি বের হয়ে এলেন এবং বলছিলেন, আমি! আমি!।
৫৪৫১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) জাবির ইবনু
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-এর কাছে অনুমতি চাইলাম। তিনি বললেন, “এ কে? আমি বললাম, আমিঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, আমি!
আমি!
৫৪৫২। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও আব্দুর রাহমান ইবনু
বিশর (রহঃ) সকলেই শুবা (রহঃ) সুত্রে উক্ত সনদে হাদীস রিওয়াসাত করেছেন। তবে তাঁদের
বর্ণিত হাদীসে রয়েছে,
তিনি যেন তা (আমি- আমি বলা) অপছন্দ করলেন।
৫৪৫৩। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, মুহাম্মদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ)
সাহল ইবনু সা’দ আস সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর দরজার একটি ছিদ্র দিয়ে তাকাল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর কাছে একটি চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি তাঁর মাথা চুলকাতেন। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ আমি যদি জানতাম যে, তুমি আমাকে
দেখছ, তা
হলে অবশ্যই তা দিয়ে তোমার চোখে আঘাত করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আরও বললেনঃ চোখের কারণেই তো অনুমতির (বিধান) করা হয়েছে।
৫৪৫৪। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, সাহব ইবনু
সা’দ আনসারী (রাঃ)তাকে বলেছেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর গৃহের একটি ছিদ্র দিয়ে তাকাল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -এর হাতে একটি চিরনি ছিল, যা দিয়ে তিনি তাঁর মাথা চুলকাচ্ছিলেন। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, আমি যদি
জানতাম যে, তুমি
দেখছ, তাহলে
এটা দিয়ে তোমার চোখে আঘাত করতাম। চোখের কারণেই আল্লাহ অনুমতির বিধান করেছেন।
৫৪৫৫। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আমরুন- নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব, ইবনু আবূ
উমার ও আবূ কামিল জাহদারী (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আল লায়স (রহঃ) ও ইউনূস (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের
অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৪৫৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ কামিল ফূযায়ল ইবনু হুসায়ন ও কুতায়বা ইবনু
সাঈদ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর কোন হুজরার অভ্যন্তরে তাকাল। তিনি তখন তাকে লক্ষ্য করে একটি তীরের
ফলক কিংবা রাবীর সন্দেহ কয়েকটি ফলক নিয়ে দাঁড়ালেন। আমি যেন (এখনও ঐ দৃশ্য) দেখছি
যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে তার অসতর্কতার অবকাশ
খুজছিল।
৫৪৫৭। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে, ব্যক্তি কোন কাওমের ঘরে তাদের অনুমিত ব্যতিরেকে
উকি-ঝুঁকি মারে, তা
হলে তার চোখ ফুড়ে দেওয়া তাদের জন্য বৈধ হয়।
৫৪৫৮। ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি বিনা অনুমতিতে তোমার
প্রতি উকি ঝুঁকি মারে,
আর তুমি তাকে কংকর মেরে তার চোখ ফুঁড়ে দাও, তাহলে তোমার কোন দোষ নেই।
৫৪৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ,আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে হঠাৎ দৃষ্টি পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে
নির্দেশ দিলেন- আমি যেন আমার চোখ ফিরিয়ে নই।
৫৪৬০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইউনূস (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে অনুরুপ হাদীস
রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৬৬৭। আবূ তাহির (রহঃ) আবূ
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম -কে আমি বলতে শুনেছি, মহীয়ান গরীয়ান আল্লাহ বলেনঃ
আদম সন্তান সময় ও কালকে গাল-মন্দ করে, অথচ
আমিই সময়, আমার (কুদুরতী) হাতেই রাত ও
দিন (-এর বিবর্তন সাধিত হয়)।
৫৬৬৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও
ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহীয়ান গরীয়ান আল্লাহ বলেনঃ আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়, সে সময়কে গালি দেয়, অথচ আমিই সময় রাত ও দিন আমিই বিবর্তিত করে
থাকি।
৫৬৬৯। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহীয়ান-গরীয়ান আল্লাহ বলেনঃ আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়, সে বলে, হায়
সময়ের ফের-দুর্ভাগ্যা (আমার সময় মন্দ)! তোমাদের কেউ যেন হায় সময়ের ফের না বলে।
কেননা আমিই তো সময়; আর রাত ও দিন আমিই পরিবর্তিত
করে থাকি; যখন আমি ইচ্ছা করি, তখন তাদের দু’টিকে সংকুচিত করে দেই।
৫৬৭০। কুতায়বা ইবনু সাঈদ
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন ‘হায়! সময়ের ভোগ’ না
বলে। কেননা আল্লাহ, তিনি সময় (নিয়ন্ত্রক)।
৫৬৭১। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ তোমরা সময়কে গালমন্দ করো না। কেননা আল্লাহ, তিনই
সময়।
৫৬৭২। হাজ্জাজ ইবনু শাইর
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ সময়কে গালি দিবে না। কেননা আল্লাহ, তিনই সময়। আর তোমাদের কেউ আঙ্গুরকে (বুঝানর
জন্য) ‘আল গিনাবু’ -এর পরিবর্তে ‘আল কারামু’ বলবে না। কেননা ‘আল কারামু’ (বদান্যতা
ও মর্যাদাশীল) হল মুসলমান ব্যক্তি।
৫৬৭৩। আমরুন- নাকিদ ও ইবনু
আবূ উমার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমরা (আঙ্গুরকে) ‘আল-কারম’ বল না কেননা কারম, হল ‘মুমিনের কালব’।
৫৬৭৪। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ আঙ্গুরকে ‘আল কারামা’, নাম দিও না। কেননা ‘আলকারমা’
হল মুসলিম ব্যক্তি।
৫৬৭৫। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ (আংগুরকে) অবশ্যই ‘আল-কারাম’ বলবে না। কেননা ‘আলকারাম’
হল মুমিনের কালব।
৫৬৭৬। ইবনু রাফি (রহঃ)
হাম্মাম ইবনু মুনাববিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এ হল সে সব হাদীস যা আবূ
হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে
রিওয়ায়াত করেছেন। এ কথা বলে তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করে। সে সবের একটি হল
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের কেউ আংগুরকে ‘আল
গানাবু’ না বলে) কখনো ‘আল কারাম’ বলবে না। আল কারাম তো মুসলিম ব্যক্তি।
৫৬৭৭। আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ)
আলকামা ইবনু ওয়ায়ল তাঁবু পিতা সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমরা (আংগুরকে)- আলকারাম, বল
না, বরং ‘হাবলাহ’ (আলহাবলাহ) বল। (রাবী বলেন)
আলকামা ইবনু ওয়াইল (রহঃ)-কে তাঁর পিতা সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ তোমরা (আংগুরকে) আল-কারম- বল না। তবে বল
আলহাবালাহ ও আলইনাব।
৫৬৭৮। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ আমার আবদ ও আমাত (আমার বান্দা, আমার বাদী) বলবে না। কেননা তোমাদের প্রত্যেক
পূরুষই আল্লাহর বান্দা এবং তোমাদের প্রত্যেক মহিলাই আল্লাহর বাদী। বরং বলবে, গোলামী, ওয়া
জারিয়াতী, ওয়া ফাতায়া, ওয়া ফাতাতী (অর্থাৎ আমার সেবক, আমার সেবিকা)।
৫৬৭৯। যুহায়র ইবনু হারব
(রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ অবশ্যই আমার দাস- বলবে না। কেননা তোমাদের
প্রত্যেকেই আল্লাহর দাস ও বান্দা। তবে সে বলবে ‘আমার সেবক’। আর আবদ তার মনিবকে
আমার ‘রব্ব’ বলবে না বরং বলবে আমার সায়্যিদ (মনিব ও নেতা)।
৫৬৮০। আবূ বকর ইবনু আবূ
শায়বা, আবূ কুরায়ব ও আবূ সাঈদ
আশাজ্জ (রহঃ) আ’মাশ (রহঃ) থেকে উল্লিখিত সনদে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তাদের
দাজনের রিওয়ায়াতে রয়েছে গোলাম তার সায়্যিদ ও মনিবকে ‘আমার মাওলা’ বলবে না এবং
(প্রথম সনদের) রাবী আবূ মুআবিয়া (রহঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে অতিরিক্ত উল্লেখ করেছেন যে, কেননা তোমাদের মাওলা হলেন আল্লাহ।
৫৬৮১। মুহাম্মদ ইবনু রাফি
(রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এ হল সে সব হাদীস, যা আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে রিওয়ায়াত করেছেন। একথা বলে তিনি কয়েকখানি
হাদীস উল্লেখ করেছেন। (সে সবের একখানি হল) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেনঃ তোমাদের কেউ (মনিব সমন্ধে এভাবে) বলবে না যে, তোমার রব্বকে পান করাও, তোমার রব্বকে খাবার দাও, তোমার রব্বকে উযু করাও। তিনি আরও বলেনঃ
তোমাদের কেউ (নিজেও) বলেছেনঃ আমার রব্ব বরং বলবে আমার সায়্যিদ- সরদার বা নেতা, আমার মাওলা-মনিব। আর তোমাদের কেউ বলবে না, আমার বান্দা আমার বাঁদী, বরং বলবে, আমার
সেবক আমার সেবিকা।
৫৬৮২। আবূ বাকর ইবনু আবূ
শায়বা, আবূ কুরায়ব মূহাম্মাদ ইবনু
আলা (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ নিজেকে (দূরবস্হা প্রকাশে) বলবে না, আমার মন খবীস (পিশাচ ইতর নিকৃষ্ট) হয়ে গিয়েছে, বরং বলবে আমার মন সংকুচিত ও বিমর্ষ হয়ে গিয়েছে।
এ ভাষ্য আবূ কুরায়ব (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের। আর আবূ বকর (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা বর্ণনা করেছেন তাতে ‘লাকুন’ শব্দটির উল্লেখ নেই।
৫৬৮৩। আবূ কুরায়ব (রহঃ) আবূ
মুআবিয়া (রহঃ) থেকে উল্লেখিত সনদে ঐ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
৫৬৮৪। আবূ তাহির ও হারামালা
(রহঃ) আবূ উমামা ইবনু সাহব ইবনু হুনায়ফ (রহঃ) তাঁর পিতা সাহব (রাঃ) সুত্রে বর্ণনা
করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ আমার আত্না খবীস হয়ে গিয়েছে, বলবে না, আমার
মন সংকুচিত ও বিমর্ষ হয়ে গিয়েছে বলবে।
৫৬৮৫। আবূ বাকর ইবনু আবূ
শায়বা (রহঃ) আবূ সাঈদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বনী ইসরাঈলের বেটে আকৃতির একটি স্ত্রীলোক দু-জন স্ত্রীলোকের
সাথে হেঁটৈ চলছিল। সে (উচু হওয়ার জন্য) এবং লোকদের চোখে ধরা না পড়ার উদ্দেশ্যে
কাঠের দুটি পা বানিয়ে নিল এবং সোনা দিয়ে মূখ বন্ধ একটি বড় সড় আংটি বানিয়ে পরে তার
ভিতরে মেশক ভরে দিল। আর তা হব সুগন্ধি কুলের সেরা সুগন্ধি। পরে সে ঐ দুই
স্ত্রীলোকের মাঝে থেকে চলতে লাগলো এবং লোকেরা তাকে চিনতে পারল না। তখন সে তার হাত
দিয়ে এভাবে ঝাড়া দিল। (এ কথা বলে) রাবী শুবা (রহঃ) তাঁর হাত ঝাড়া দিলেন (এবং
স্ত্রীলোকটির হাত ঝাড়ার ভঙ্গী নকল করলেন)।
৫৬৮৬। আমরুন-নাকিদ (রহঃ) আবূ
সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী ইসরাঈলের
এক মহিলার কথা উল্লেখ করলেন, যে তার আংটি মেশক দিয়ে ভরে
রেখেছিল। (এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন), আর
মেশক হল সেরা সুগন্ধি।
৫৬৮৭। আবূ বাকর ইবনু শায়বা ও
যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কারো কাছে কোন কুল পেশ করা হলে সে যেন তা
প্রত্যাখ্যান না করে। কেননা এর বোঝা হালকা এবং মান উত্তম।
৫৬৮৮। হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী, আবূ তাহির ও আহমদ ইবনু ঈসা (রহঃ) নাফি (রহঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইবনু উমার (রাঃ) অভ্যস্ত ছিলেন যে, যখন তিনি সুগন্ধি জ্বালাতেন, তখন (খাটি) উদ আগর, তার সাথে অন্য কোন সুগন্ধি না মিশিয়ে জালাতেন, আবার (কখনো) আগরের সাথে কর্পূর ঢেলে দিতেন।
এরপর বলতেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ভাবে সুগন্ধি জ্বালিয়ে
ব্যবহার করতেন।