পানি সিঞ্চন বা বন্টন

পরিচ্ছেদঃ ১৪৬৬. পানি বণ্টনের হুকুম।

وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى وَجَعَلْنَا مِنْ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ وَقَوْلِهِ جَلَّ ذِكْرُهُ أَفَرَأَيْتُمْ الْمَاءَ الَّذِي تَشْرَبُونَ أَأَنْتُمْ أَنْزَلْتُمُوهُ مِنْ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنْزِلُونَ لَوْ نَشَاءُ جَعَلْنَاهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ الْأُجَاجُ الْمُرُّ الْمُزْنُ السَّحَابُ بَاب فِي الشُّرْبِ وَمَنْ رَأَى صَدَقَةَ الْمَاءِ وَهِبَتَهُ وَوَصِيَّتَهُ جَائِزَةً مَقْسُومًا كَانَ أَوْ غَيْرَ مَقْسُومٍ وَقَالَ عُثْمَانُ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَشْتَرِي بِئْرَ رُومَةَ فَيَكُونُ دَلْوُهُ فِيهَا كَدِلَاءِ الْمُسْلِمِينَ فَاشْتَرَاهَا عُثْمَانُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আর আমি প্রাণবান সবকিছু সৃষ্টি করলাম পানি থেকে, তবুও কি তারা ঈমান আনবে না? (২১ : ৩০) আল্লাহ্‌ তা'আলা আরো ইরশাদ করেছেন, তোমরা যে পানি পান কর, তা সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরাই কি তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছা করলে তা লবনাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? (৫৬ : ৬৮–৭০)। কিছু লোকের মতে পানি খায়রাত করা ও ওসীয়াত করা জায়িয, তা বণ্টন করা হউক বা না হউক। المزن মেঘ الأجاج লবনাক্ত, فراتا মিষ্ট। উসমান (রা.) বলেন, নবী (সঃ) বলেছেন, রূমার কূপটি কে খরিদ করবে? তারপর তাতে বালতি দ্বারা পানি তোলার অধিকার তার ততোটুকুই থাকবে, যতটুকু সাধারণ মুসলিমের থাকবে (অর্থা কূপটি ক্রয় করে জনসাধারণের জন্য ওয়াক্‌ফ করে দিবে)। এ কথার পর উসমান (রা.) কূপটি ক্রয় করেন (এবং ওয়াক্‌ফ করে দেন)।

________________________________________

২১৯৭। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) ... সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি পিয়ালা আনা হল। তিনি তা থেকে পান করলেন। তখন তাঁর ডান দিকে ছিল একজন বয়ঃকনিষ্ঠ বালক আর বয়স্ক লোকেরা ছিলেন তাঁর বাম দিকে। তিনি বললেন, হে বালক! তুমি কি আমাকে অবশিষ্ট (পানিটুকু) বয়স্কদেরকে দেওয়ার অনুমতি দিবে? সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার অবশিষ্ট পানির ব্যাপারে আমি কাউকে প্রাধান্য দিব না। এরপর তিনি তা তাকে দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৬৬. পানি বণ্টনের হুকুম।

২১৯৮। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একটি বকরীর দুধ দোহন করা হল। তখন তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর ঘরে অবস্থান করছিলেন এবং সেই দুধের সঙ্গে আনাস ইবনু মালিকের বাড়ীর কূপের পানি মিশানো হল। তারপর পাত্রটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেওয়া হল। তিনি তা থেকে পান করলেন। পাত্রটি তাঁর মুখ থেকে আলাদা করার পর তিনি দেখলেন যে, তাঁর বাঁদিকে আবূ বকর ও ডান দিকে একজন বেদুঈন রয়েছে। পাত্রটি তিনি হয়ত বেদুঈনকে দিয়ে দেবেন এ আশংকায় উমর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আবূ বকর (রাঃ) আপনার পাশেই, তাকে পাত্রটি দিন। তিনি বেদুঈনকে পাত্রটি দিলেন, যে তাঁর ডানপাশে ছিল। তারপর তিনি বললেন, ডানদিকের লোক বেশী হক্‌দার।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৬৭. যিনি বলেন, পানির মালিক পানি ব্যাবহারের বেশী হকদার, তার জমি পরিসিঞ্চিত না হওয়া পর্যন্ত। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে যেন কাউকে নিষেধ করা না হয়

২১৯৯। আবদুল্লাহ‌ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঘাস উপাদন থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি রুখে রাখা যাবে না।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৬৭. যিনি বলেন, পানির মালিক পানি ব্যাবহারের বেশী হকদার, তার জমি পরিসিঞ্চিত না হওয়া পর্যন্ত। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে যেন কাউকে নিষেধ করা না হয়

২২০০। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অতিরিক্ত ঘাসে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত পানি রুখে রাখবে না।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৬৮. কেউ যদি নিজের জায়গায় কুপ খনন করে (এবং তাতে যদি কেউ পড়ে মারা যায়) তা হলে মালিক তার জন্য দায়ী নয়

২২০১। মাহমূদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খনি ও কূপে কাজ করা অবস্থায় অথবা জন্তু-জানোয়ারের আঘাতে মারা গেলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না এবং বিকাযে (খনিজ দ্রব্যে) পঞ্চমাংশ দিতে হবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৬৯. কূপ নিয়ে বিবাদ এবং এ ব্যাপারে ফয়সালা।

২২০২। আবদান (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানদের অর্থ সম্পদ (যা তার জিম্মায় আছে) আত্মসা করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা কসম খায়, সে আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় মিলিত হবে যে, আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট থাকবেন। এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেনঃ যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এ নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে--- এর শেষ পর্যন্ত (৩ঃ ৭৭)। এরপর আশআস (রাঃ) এসে বলেন, আবূ আবদুর রাহমান (রাঃ) তোমার নিকট কি হাদীস বর্ণনা করছিলেন? এ আয়াতটি তো আমার সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। আমার চাচাতো ভাইয়ের জায়গায় আমার একটি কূপ ছিল। (এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে বিবাদ হওয়ায়) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তোমার সাক্ষী পেশ কর। আমি বললাম, আমার স্বাক্ষী নেই। তিনি বললেন তাহলে তাকে কসম খেতে হবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে তো কসম করবে। এ সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীস বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ তা’আলা তাকে সত্যায়িত করে এই আয়াতটি নাযিল করেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭০. যে ব্যক্তি মুসাফিরকে পানি দিতে অস্বীকার করে, তার পাপ

২২০৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি আল্লাহ তা’আলা দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। এক ব্যাক্তি- যার নিকট প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি আছে, অথচ সে মুসাফিরকে তা দিতে অস্বীকার করে। অন্য একজন ব্যাক্তি, যে ইমামের হাতে একমাত্র দুনিয়ার স্বার্থে বায়আত হয়। যদি ইমাম তাকে কিছু দুনিয়ারী সুযোগ দেন, তা হলে সে খুশী হয়। আর যদি না দেন তবে সে অসন্তুষ্ট হয়। অন্য একজন সে ব্যাক্তি, যে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর তার জিনিসপত্র (বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে) তুলে ধরে আর বলে যে, আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবূদ নেই, আমার এই দ্রব্যের মূল্য এতো এতো দিতে আগ্রহ করা হয়েছে। (কিন্তু আমি বিক্রি করিনি) এতে এক ব্যাক্তি তাকে বিশ্বাস করে (তা ক্রয় করে নেয়)। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রয় করে (৩ঃ ৭৭)।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭১. নদী-নালায় বাঁধ দেওয়া

২২০৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক আনসারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যুবাইর (রাঃ) এর সঙ্গে হাররার নালার পানির ব্যাপারে ঝগড়া করলো, যে পানি দ্বারা খেজুর বাগান সিঞ্চন করত। আনসারী বলল, নালার পানি ছেড়ে দিন, যাতে তা (প্রবাহিত থাকে) কিন্তু যুবাইর (রাঃ) তা দিতে অস্বীকার করেন। তারা দুজনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এই নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবাইর (রাঃ) কে বললেন, হে যুবাইর! তোমার যমীনে (প্রথমে) সিঞ্চন করে নেও। এরপর তোমার প্রতিবেশীর দিকে পানি ছেড়ে দাও।

এতে আনসারী অসন্তুষ্ট হয়ে বলল, সে তো আপনার কুফাত ভাই। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারায় অসন্তুষ্টির লক্ষণ প্রকাশ পেল। এরপর তিনি বললেন, হে যুবাইর! তুমি নিজের জমি সিঞ্চন কর। এরপর পানি আটকিয়ে রাখ, যাতে তা বাঁধ পর্যন্ত পেৌছে। যুবাইর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, আমার মনে হয়, এ আয়াতটি এ সম্পর্কে নাযিল হয়েছেঃ (فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ) কিন্তু না, তোমার রবের কসম! তারা মু’মিন হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ বিসম্বাদের বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করে (৪ঃ ৬৫)।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭২. নীচু জমির আগে উঁচু জমিতে সিঞ্চন

২২০৫। আবদান (রহঃ) ... উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যুবায়র (রাঃ) এক আনসারীর সঙ্গে ঝগড়া করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে যুবায়র! জমিতে পানি সেচের পর তা ছেড়ে দাও। এতে আনসারী বলল, সে তো আপনার কুফাত ভাই। একথা শুনে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে যুবায়র! পানি বাঁধে পৌঁছা পর্যন্ত সেচ দিতে থাক। তারপর বন্ধ করে দাও। যুবায়র (রাঃ) বলেন, আমার ধারণা এ আয়াতটি এ সম্পর্কে নাযিল হয়েছেঃ (فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ) তোমার রবের কসম, তারা মু’মিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার-ভার আপনার উপর অর্পণ না করে (৪ঃ ৬৫)।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৩. উঁচু জমির মালিক পায়ে টাখনু পর্যন্ত পানি ভরে নিবে

২২০৬। মুহাম্মদ (রহঃ) ... উরওয়া ইবনু যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন আনসারী হাররার নালার পানি নিয়ে যুবাইরের সাথে ঝগড়া করল, যে পানি দিয়ে তিনি খেজুর বাগান সেচ দিতেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে যুবাইর, সেচ দিতে থাক। তারপর নিয়ম-নীতি অনুযায়ী তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন, তারপর তা তোমার প্রতিবেশীর জন্য ছেড়ে দাও। এতে আনসারী বলল, সে আপনার ফুফাত ভাই তাই। একথায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারক বিবর্ণ হয়ে গেল। তখন তিনি বললেন, সেচ দাও, পানি ক্ষেতের বাঁধ পর্যন্ত পৌঁছে গেলে বন্ধ করে দাও। যুবাইরকে তিনি তার পুরা হক দিলেন। যুবাইর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, এ আয়াত এ সম্পর্কে নাযিল হয়ঃفَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ তোমার প্রতিপালকের কসম, তারা মুমিন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার-ভার আপনার উপর অর্পণ না করে। বর্ণনাকারী বলেন, ইবনু শিহাবের বর্ণনা হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ কথা পানি নেয়ার পর বাঁধ অবধি পৌঁছা পর্যন্ত তা বন্ধ রাখ। আনসার এবং অন্যান্য লোকেরা এর পরিমাণ করে দেখেছেন যে, তা টাখনু পর্যন্ত পৌঁছে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৪. পানি পান করানোর ফযীলত

২২০৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন লোক রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে তার ভীষন পিপাসা লাগলো। সে কূপে নেমে পানি পান করল। এরপর সে বের হয়ে দেখতে পেল যে, একটা কুকুর হাপাচ্ছে এবং পিপাসায় কাতর হয়ে মাটি চাটছে। সে ভাবল, কুকুরটারও আমার মত পিপাসা লেগেছে। সে কূপের মধ্যে নামল এবং নিজের মোজা ভরে পানি নিয়ে মুখ দিয়ে সেটি ধরে উপরে উঠে এসে কুকুরটিকে পানি পান করাল। আল্লাহ্ পাক তার আমল কবূল করলেন এবং আল্লাহ তার গোনাহ মাফ করে দেন। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! চতুষ্পদ জন্তুর উপকার করলেও কি আমাদের সাওয়াব হবে? তিনি বললেন, প্রত্যেক প্রাণীর উপকার করাতেই সাওয়াব রয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৪. পানি পান করানোর ফযীলত

২২০৮। ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) ... আসমা বিন্‌ত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য গ্রহণের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর বললেন, দোযখ আমার নিকটবর্তী করা হলে আমি বললাম, হে রব, আমিও কি এই দোযখীদের সাথী হবো? এমতাবস্থায় একজন মহিলা আমার নযরে পড়ল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, তিনি বলেছেন, বিড়াল তাকে (মহিলা খামছাচ্ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ মহিলার কি হল? ফেরেশতারা জবাব দিলেন, সে একটি বিড়াল বেঁধে রেখেছিল, যার কারণে বিড়ালটি ক্ষুধায় মারা যায়।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৪. পানি পান করানোর ফযীলত

২২০৯। ইসমাঈল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেওয়া হয়। সে বিড়ালটি বেঁধে রেখেছিল, অবশেষে বিড়ালটি ক্ষুধায় মারা যায়। এ কারণে মহিলা জাহান্নামে প্রবেশ করলো। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ ভালো জানেন, বাঁধা থাকাকালীন তুমি তাকে না খেতে দিয়েছিলে, না পান করতে দিয়েছিলে এবং না তুমি তাকে ছেড়ে দিয়ে ছিলে, তা হলে সে যমীনের পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকত।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৫. যাদের মতে হাউজ ও মশ্‌কের মালিক, সে পানির অধিক হক্‌দার

২২১০। কুতায়বা (রহঃ) ... সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি পানির পেয়ালা আনা হল। তিনি তা থেকে পান করলেন। তাঁর ডানদিকে একজন বালক ছিলো, সে ছিলো লোকদের মধ্যে সবচাইতে কম বয়স্ক এবং বয়োজ্যেষ্ঠ লোকেরা তার বাঁদিকে ছিল। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে বালক! তুমি কি আমাকে জ্যেষ্ঠদের এটি দিতে অনুমতি দিবে? সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার উচ্ছিষ্টের ব্যাপারে নিজের উপর কাউকে প্রাধান্য দিতে চাই না। এরপর তিনি তাকেই সেটি দিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৫. যাদের মতে হাউজ ও মশ্‌কের মালিক, সে পানির অধিক হক্‌দার

২২১১। মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি নিশ্চয়ই (কিয়ামতের দিন) আমার হাউজ (কাওসার) থেকে কিছু লোকদের এমনভাবে তাড়াব, যেমন অপরিচিত উট হাউজ হতে তাড়ান হয়।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৫. যাদের মতে হাউজ ও মশ্‌কের মালিক, সে পানির অধিক হক্‌দার

২২১২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) এর মা হাজিরা (আলাইহিস সালাম) এর উপর আল্লাহ রহম করুন। কেননা যদি তিনি যমযমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দিতেন অথবা তিনি বলেছেন, যদি তা হতে অঞ্জলে পানি না নিতেন, তা হলে তা একটি প্রবাহিত ঝরনায় পরিণত হত। জুরহাম গোত্র তাঁর নিকট এসে বলল, আপনি কি আমাদেরকে আপনার নিকট অবস্থান করার অনুমতি দিবেন? তিনি (হাজিরা) বললেনঃ হ্যাঁ। তবে পানির উপর তোমাদের কোন অধিকার থাকবে না। তারা বললঃ ঠিক আছে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৫. যাদের মতে হাউজ ও মশ্‌কের মালিক, সে পানির অধিক হক্‌দার

২২১৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না এবং তাদের প্রতি তাকাবেনও না। (এক) যে ব্যাক্তি কোন মাল সামানের ব্যাপারে মিথ্যা কসম খেয়ে বলে যে, এর দাম এর চেয়ে বেশী বলে ছিলো কিন্তা তা সত্ত্বেও সে তা বিক্রি করেনি। (দুই) যে ব্যাক্তি আসরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর একজন মুসলমানের মাল-সম্পত্তি আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা কসম করে। (তিন) যে ব্যাক্তি তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি মানুষকে দেয় না।

আল্লাহ তা’আলা বলবেন (কিয়ামতের দিন) আজ আমি আমার অনুগ্রহ থেকে তোমাকে বঞ্চিত রাখব। যেরূপ তুমি তোমার প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি থেকে বঞ্চিত রেখে ছিলে অথচ তা তোমার হাতের তৈরী নয়। আলী (রহঃ) আর সালিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি হাদীসের সনদটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৬. সংরক্ষিত চারণভূমি রাখা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) ছাড়া আর কারো অধিকার নেই

২২১৪। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... সা’ব ইবনু জাস্‌সামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ চারণভূমি সংরক্ষিত করা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া আর কারো অধিকারে নেই। তিনি বলেনঃ আমাদের নিকট রিওয়ায়াত পৌছেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাকী’র চারণভূমি (নিজের জন্য) সংরক্ষিত করেছিলেন, আর উমর (রাঃ) সারাফ ও রাবাযার চারণভূমি সংরক্ষণ করেছিলেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৭. নহর থেকে মানুষ ও চতুস্পদ জন্তুর পানি পান করা

২২১৫। আবদুল্লাহ‌ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঘোড়া একজনের জন্য সাওয়াব, একজনের জন্য ঢাল এবং আরেকজনের জন্য পাপ। সাওয়াব হয় তার জন্য, যে আল্লাহর রাস্তায় তা জিহাদের উদ্দেশ্যে বেঁধে রাখে এবং সে ঘোড়ার রশি চারণভূমি বা বাগানে লম্বা করে দেয়। এমতাবস্থায়, সে ঘোড়া চারণ ভূমি বা বাগানের তার রশির দৈর্ঘ্য পরিমাণ যতটুকু চরবে, সে ব্যাক্তির জন্য সে পরিমাণ সওয়াব হবে। যদি তার রশি ছিড়ে যায় এবং সে একটি কিংবা দুটি টিলা অতিক্রম করে, তাহলে তার প্রতিটি পদচিহ্ন ও তার গোবর মালিকের জন্য জন্য সাওয়াবে গণ্য হবে। আর যদি তা কোন নহরের পাশ দিয়ে যায় এবং মালিকের ইচ্ছা ব্যতিরেকে সে তা থেকে পানি পান করে, তাহলে এ জন্য মালিক সাওয়াব পাবে।

আর ঢাল স্বরূপ সে লোকের জন্য যে মুখাপেক্ষী ও ভিক্ষা নির্ভরতা থেকে বাঁচার জন্য তাকে বেঁধে রাখে। তারপর এর পিঠে ও গর্দানে আল্লাহর নির্ধারিত হক আদায় করতে ভুল করে না। গুনাহ্‌র কারণ সে লোকের জন্য, যে তাকে অহংকার ও লোক দেখাবার কিংবা মুসলমানদের প্রতি শত্রুতার উদ্দেশ্যে বেঁধে রাখে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার প্রতি কোন আয়াত নাযিল হয়নি। তবে এ ব্যাপারে একটি পরিপূর্ণ ও অনন্য আয়াত রয়েছে। (তা হল আল্লাহ তা’আলার বাণী) কেউ অনুপরিমাণ সকর্ম করলে সে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসকর্ম করলে সে তাও দেখতে পাবে (৯৯ঃ ৭-৮)।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৭. নহর থেকে মানুষ ও চতুস্পদ জন্তুর পানি পান করা

২২১৬। ইসমাঈল (রহঃ) ... যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একজন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে পড়ে থাকা জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেনঃ থলেটি এবং তার মুখের বন্ধনটি চিনে রাখো। তারপর এক বছর পর্যন্ত তা ঘোষণা করতে থাক। যদি তার মালিক এসে যায় তো ভালো। তা নাহলে সে ব্যাপারে তুমি যা ভাল মনে কর তা করবে। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, হারানো বকরি কি করব? তিনি বললেন, সেটি হয় তোমার, না হয় তোমার ভাইয়ের, না হয় নেকড়ে বাঘের। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, হারানো উট হলে করব? তিনি বললেন, তাতে তোমার প্রয়োজন কি? তার সঙ্গে তার মশ্‌ক ও খুর রয়েছে। সে জলাশয়ে উপস্থিত হয়ে গাছ-পেলা খাবে, শেষ পর্যন্ত তার মালিক তাকে পেয়ে যাবে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৮. শুকনো লাকড়ী ও ঘাস বিক্রি করা

২২১৭। মুয়াল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) ... যুবাইর ইবনু আওয়াম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ রশি নিয়ে লাকড়ীর আটি বেঁধে তা বিক্রি করে, এতে আল্লাহ তা’আলা তার সম্মান রক্ষা করেন, এটা তার জন্য মানুষের কাছে ভিক্ষা করার চাইতে উত্তম! লোকজনের নিকট এমন চাওয়ার চেয়ে, যে চাওয়ায় কিছু পাওয়া যেতে পরে বা নাও পারে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৮. শুকনো লাকড়ী ও ঘাস বিক্রি করা

২২১৮। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু বুকাইর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কারো নিকট সাওয়াল করা, যাতে সে তাকে কিছু দিতেও পারে আবার নাও দিতে পারে, এর চেয়ে পিঠে বোঝা বহন করা (তা বিক্রি করা) উত্তম।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৮. শুকনো লাকড়ী ও ঘাস বিক্রি করা

২২১৯। ইব্‌রাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদরের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আমি মালে গণীমত হিাবে একটি উট লাভ করি। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আরো একটি উট দেন। একদিন আমি উট দুটিকে একজন আনসারীর ঘরের দরজায় বসাই। আমার ইচ্ছা ছিলো এদের উপর ইযখির (এক ধরনের ঘাস) চাপিয়ে তা বিক্রি করতে নিয়ো যাবো। আমার সাথে বণূ কায়নুকার একজন স্বর্ণকার ছিলো। আমি এর (ইয্‌খির বিক্রি লব্ধ টাকা) দ্বারা ফাতিমা (রাঃ) এর ওলীমা করতে সমর্থ হব।

সে ঘরে হামযা ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) শরাব পান করছিলেন। আর তাঁর সাথে একজন গায়িকাও ছিল। সে বলল, হে হামযা! তৈরী হও, মোটা উটগুলোর উদ্দেশ্যে। এরপর হামযা (রাঃ) উট দু’টোর দিকে তরবারি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তাদের কুজ দু’টিও কেটে নিলেন এবং পেট ফেঁড়ে উভয়ের কলিজা বের করে নিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি ইবনু শিহাব (রহঃ) জিজ্ঞাসা করি, কুজ কি করা হল? তিনি বলেন, সেটি কেটে নিয়ে গেলেন।

ইবনু শিহাব বলেন, আলী বলেছেন, এই দৃশ্য দেখলাম এবং তা আমাকে ঘাবড়িয়ে দিল। এরপর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলাম। তাঁর নিকট তখন যায়দ ইবনু হারিসা (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। আমি তাঁকে খবর বললাম। তিনি বের হলেন এবং তাঁর সঙ্গে ছিলেন যায়দ (রাঃ)। আমিও তাঁর সঙ্গে গেলাম। তিনি হামযা (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলেন এবং তার প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করলেন। হামযা দৃষ্টি উঁচু করে তাঁদের দিকে তাকালেন। আর বললেন, তোমরা আমার বাপ-দাদার দাস বটে। হামযা (রাঃ) এর এ অবস্থা দেখেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছনে সরে তাদের নিকট থেকে চলে আসলেন। ঘটনাটি শরাব হারাম হওয়ার আগেকার।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৭৯. জায়গীর

২২২০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদেরকে বাহরাইনে কিছু জায়গীর দিতে চাইলেন। তারা বলল, আমাদের মুহাজির ভাইদেরও আমাদের মতো জায়গীর না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের জন্য জায়গীর দিবেন না। তিনি বলেন, আমার পর শীঘ্রই তোমরা দেখবে, তোমাদের উপর অন্যদেরকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তখন তোমরা সবর করবে, যে পর্যন্ত না তোমরা আমার সঙ্গে মিলিত হও।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৮১. পানির কাছের উটের দুধ দোহন করা

بَاب كِتَابَةِ الْقَطَائِعِ

وَقَالَ اللَّيْثُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْأَنْصَارَ لِيُقْطِعَ لَهُمْ بِالْبَحْرَيْنِ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ فَعَلْتَ فَاكْتُبْ لِإِخْوَانِنَا مِنْ قُرَيْشٍ بِمِثْلِهَا فَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْنِي

১৪৮০. পরিচ্চেদঃ জায়গীর লিখে দেওয়া।

লাইস (রহঃ) .... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনাসদেরকে বাহরাইনে জায়গীর দেওয়ার জন্য ডাকলেন। তারা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আপনি যদি তা করেন, তা হলে আমাদের কুরায়েশ ভাইদের জন্যও অনুরূপ জায়গীর লিখে দেন। কিন্ত রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তখন তা ছিলো না। তারপর তিনি বলেন, আমার পর শীঘ্রই দেখবে, তোমাদের উপর অন্যদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তখন তোমরা সবর করবে, আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া (মৃত্যু) পর্যন্ত।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৮২. খেজুরের বা অন্য কিছুর বাগানে কোন লোকের চলার পথ কিংবা পানির কূপ থাকা। রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি খেজুর গাছের তাবীর (স্ত্রী পুষ্পরেণু সংমিশ্রনের পর) করার পর ও তা বিক্রি করে, তা হরে তার ফল বিক্রেতার, চলার পথও পানির কূপ বিক্রেতার, যতক্ষণ ফল তুলে নেওয়া না হয়। আরিয়্যার মালিকেরও এই হুকুম।

২২২২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি খেজুর গাছ তা’বীর করার পর বিক্রয় করে, তার ফল বিক্রেতার। কিন্তু ক্রেতা শর্ত করলে তা তারই। আর যদি কেউ গোলাম বিক্রয় করে। এবং তার সম্পদ থাকে তবে সে সম্পদ যে বিক্রি করর তার। কিন্তু যদি ক্রেতা শর্ত করে তাহলে তা হবে তার।

মালিক (রহঃ) ... উমর (রাঃ) থেকে গোলাম বিক্রয়ের ব্যাপারে অনুরূপ বর্ণিত রয়েছে।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৮২. খেজুরের বা অন্য কিছুর বাগানে কোন লোকের চলার পথ কিংবা পানির কূপ থাকা। রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি খেজুর গাছের তাবীর (স্ত্রী পুষ্পরেণু সংমিশ্রনের পর) করার পর ও তা বিক্রি করে, তা হরে তার ফল বিক্রেতার, চলার পথও পানির কূপ বিক্রেতার, যতক্ষণ ফল তুলে নেওয়া না হয়। আরিয়্যার মালিকেরও এই হুকুম।

২২২৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমান করে শুকনো খেজুরের বিনিময়ে আরায়্যা বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৮২. খেজুরের বা অন্য কিছুর বাগানে কোন লোকের চলার পথ কিংবা পানির কূপ থাকা। রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি খেজুর গাছের তাবীর (স্ত্রী পুষ্পরেণু সংমিশ্রনের পর) করার পর ও তা বিক্রি করে, তা হরে তার ফল বিক্রেতার, চলার পথও পানির কূপ বিক্রেতার, যতক্ষণ ফল তুলে নেওয়া না হয়। আরিয়্যার মালিকেরও এই হুকুম।

২২২৪। আবদুল্লাহ ইবনু মহাম্মদ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখাবারা, মুহাকালা ও শুকনো খেজুরের বিনিময়ে গাছের খেজুর বিক্রি করা এবং ফল উপযুক্ত হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। গাছে থাকা অবস্থায় ফল দিনার বা দিরহামের বিনিময়ে ছাড়া যেন বিক্রি করা না হয়। তবে আরায়্যার অনুমতি দিয়েছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৮২. খেজুরের বা অন্য কিছুর বাগানে কোন লোকের চলার পথ কিংবা পানির কূপ থাকা। রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি খেজুর গাছের তাবীর (স্ত্রী পুষ্পরেণু সংমিশ্রনের পর) করার পর ও তা বিক্রি করে, তা হরে তার ফল বিক্রেতার, চলার পথও পানির কূপ বিক্রেতার, যতক্ষণ ফল তুলে নেওয়া না হয়। আরিয়্যার মালিকেরও এই হুকুম।

২২২৫। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমান করে শুকনো খেজুরের বিনিময়ে পাঁচ ওসাক কিংবা তার চাইতে কম আরায়ার বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন। বর্ণনাকারী দাউদ এ বিষয়ে সন্দেহ করেছেন।

পরিচ্ছেদঃ ১৪৮২. খেজুরের বা অন্য কিছুর বাগানে কোন লোকের চলার পথ কিংবা পানির কূপ থাকা। রাসূলুল্লাহ্‌ () বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি খেজুর গাছের তাবীর (স্ত্রী পুষ্পরেণু সংমিশ্রনের পর) করার পর ও তা বিক্রি করে, তা হরে তার ফল বিক্রেতার, চলার পথও পানির কূপ বিক্রেতার, যতক্ষণ ফল তুলে নেওয়া না হয়। আরিয়্যার মালিকেরও এই হুকুম।

২২২৬। যাকারিয়া ইবনু ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ) ... রাফি’ ইবনু খাদীজ ও সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুযাবানা অর্থা গাছে ফল থাকা অবস্থায় তা শুকনা ফলের বিনিময়ে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু যারা আরায়্যা করে, তাদের জন্য তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন।

নাম

আর্টিকেল,25,ডাউনলোড,1,বুখারী,81,মাসায়ালা,16,মুসলিম,54,
ltr
item
সহী আকীদা: পানি সিঞ্চন বা বন্টন
পানি সিঞ্চন বা বন্টন
সহী আকীদা
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/09/blog-post_89.html
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/
http://soheeaqida.blogspot.com/2020/09/blog-post_89.html
true
2725583972515071055
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy